ছায়া হয়ে থাকবো পাশে
part ঃ 10
Writer ঃ humayra khan
আহানঃ ভাইয়া ক্ষির টা খেলে কিন্তু মন্দ হতো না কি বলো ভাবি???(হেসে)
দিশাঃ হ্যা একবারে ঠিক বলেছো????
আবিরঃ আমাকে কি খাওয়ানোর কথা বলা হচ্ছে শুনি????
দিশাঃ মরিচের গুড়া খাওয়ার কথা বলা হচ্ছিল।
আবির চোখ রাঙিয়ে দিশার দিক এ তাকালে..
দিশাঃ ওও সরি সরি। আই মিন মধু খাওয়ার কথা বলা হচ্ছিলো।আহানের হাত থেকে মধুর কৌটা টা নিয়ে।
দিশাঃ এই নাও জানু মধু খাও। মধু খেলে হয়ত তোমার তেতো মুখটা কিছুটা মিষ্টি হবে।
আবিরঃ তাহলে ওইটা তুমিই খেয়ে নাও।
চারু রান্না ঘরে ডুকে…
উফফ ভাবি আর কতো ঝগড়া করবে তুমি আর ভাইয়া মিলে।। তোমরা আরেক বার বাচ্চাদের মতো করে ঝগড়া করলে আহান আর আমি কিন্তু চলে যাব বাসা থেকে আর আসব না এই বাসায়।
(কথাটি বলার সাথে সাথে চারু ওর মুখে হাত রেখে)
চারু ঃ খাইসে ভুলে কি বলে ফেল্লাম আমি?
চারু আহান কে আহান ভাইয়া না ডেকে শুধু আহান ডাকায় বেশ অবাক হয় দিশা আর আবির কিন্তু আহান চারুর মুখ থেকে তার নামটা শুনে তো মহা খুশি
আহানঃ আহ….. চারুর মুখ থেকে আমার নামটা শুনতে কতো ভালো লাগে….(মুগ্ধ হয়ে চারুর দিক এ তাকিয়ে)
আহানঃ আরেকবার বলবা কথাটা।
আমি শুনতে পাইনি ভালো মতো।
চারু ঃ আসলে ভাইয়া ভুলে গিয়েছি কি বলেছিলাম।
মনে পরলে বলব নে কি বলে ছিলাম।
ভাবি চল রান্না টা সেরেই নেই।
দিশাঃ হ্যা। এই তোমরা রান্না ঘর থেকে বের হও আমরা লেডিস লোক এখন রান্না করব।
আবিরঃ ইসস ইনার সাথে এই খানে দাড়াতে যেন আমার বয়েই যাচ্ছে।
কথাটি বলে চলে যায় আবির রান্না ঘর থেকে।
আহান এখনো রান্না ঘরে দাঁড়িয়ে থাকলে-
দিশাঃ কি দেবরজি।আপনাকে কি আলাদা করে বলতে হবে নাকি যাওয়ার জন্য।
আহানঃ আরেকবার আহান বলে ডাকলে কিই বা হতো তোমার।( চারুর দিক এ তাকিয়ে) আনমনে।
দিশাঃ হায়রে কার সাথে কথা বলছি আমি।।এই যে ডাক্তার সাহেব আপনি কোন দুনিয়ায় আছেন।
আহান দিশার কথা শুনে চারুর দিক থেকে মুখ সরিয়ে দিশার দিক এ তাকিয়ে।
আহানঃ জ্বি ভাবি যাচ্ছি।এতো চেচিয়ে বলার কি দরকার।
কথাটি বলার সাথে সাথে আহান রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে পরে।
দিশাঃ দুই ভাই একই নৌকার মাঝি।(হেসে)
চারু ঃঠিক বলেছো ভাবি।কিন্তু আহান ভাইয়া কিছুটা আজব। মাঝে মাঝে তার কাজকর্ম কথাবার্তা কোন কিছুই আমার এই ছোট মাথা টায় ঠুকে না।
দিশাঃ তাই নাকি।তাহলে এই ছোট মাথায় জোর দিতে যেয়োনা।তাকে বুঝতে গেলে যদি তার প্রেমে পরে যাও(হেসে)
চারু ঃআমি আবার তার প্রেমে কি যে বলোনা ভাবি তুমি।
দিশাঃ দোষ এর কি বললাম?? তোমার আর ভাইয়ার জুটি টা কিন্তু সেই মানাবে চারু।।।নাম্বার ওয়ান জোরি।
চারু ঃওরে বাবা রে। নাম্বার ওয়ান জোরি
তা আবার আমার আর আহান ভাই এর।
বুঝতে পারসি ভাবি ভাইয়ার সাথে সারা দিন ঝগড়া করতে করতে তোমার মাথা পুরো গিয়েছে।
তাই এই সব আজগবি কথা বের হচ্ছে তোমার মুখ দিয়ে।
দিশাঃ দেখে নিও তুমি এক দিন ভাইয়ার প্রেমে পরবা (হেসে)
চারু ঃ আমি তার প্রেমে পরব?(অবাক হয়ে)
দিশাঃ জাস্ট পরবেই না।সাতার ও কাটবে দেখে নিও(হেসে)
চারু ঃ উফ ভাবি রাখো তো তোমার এই সব কথা এখন।
চল রান্না টা সেরে নেই জলদি করে।
দিশাঃ যো হুকুম মেরে আকা(হেসে)
তারপর দুই জন মিলে রান্না সেরে আহান আর আবির কে ডাক দেয় খাবার টেবিল এ….
আহান আর আবির ডায়নিং টেবিল এ আসলে…
আবির গিয়ে চারুর পাশে বসতে নেয়।তখনই আহান চেচিয়ে বলে উঠে ওই সিট টা আমার।
সবাই বেশ অবাক চোখে তাকায় আহানের দিক এ…
আহান আবির কে চারুর পাশ থেকে সরিয়ে দিশার পাশে বসিয়ে দেয়।
আহানঃ তোমাদের দুইজনকে বেশ মানায় এক সাথে।তাই তোমরা দুই জন পাশা পাশি বসো।
তারপর আহান চারুর পাশে গিয়ে বসে পরে।
আবির আর দিশা অবাক হয়ে আহানের দিক এ তাকালে।
আহানঃ আমার দিক এ এই ভাবে না তাকিয়ে খাওয়ার প্রতি মনযোগ দাও তোমরা।
আহান খাবারটা মুখে দিতে যাবে।
আহানঃ আ…….
সবাই খাওয়ার ছেড়ে আহানের দিক এ তাকায়।
দিশাঃ কি হয়েছে ভাইয়া। তুমি খাওয়ার মাঝ খান দিয়ে এই ভাবে চিল্লিয়ে উঠলে কেন??
আহানঃ আসলে ভাবি আমার হাতটা ব্যথা করছে।তাই হাতটা দিয়ে খেতে পারছিনা।(অসহায় মুখ করে)
চারু ঃ ভাইয়া আপনার আবারও ব্যথা করছে???
দিশাঃ আবারও মানে???
চারু ঃ হ্যা ভাইয়ার দুপুরে ব্যথা করছিল।
দিশাঃ সে কি তাহলে তুমি ক্ষির কিভাবে খেলে নিজ হাত দিয়ে।
দিশার কথা শুনে চারু আহানের দিক এ সন্দেহ চোখে তাকায়।
আহানঃ তখন ব্যথাটা কমে গিয়েছিল।এখন আবার ব্যথা করছে।
দিশাঃ তাহলে আসেন ভাইয়া আমি খাইয়ে দেই।
আবিরঃ ইসস আমাকে কেউ ভালোই বাসেনা(মুখ গোমড়া করে।
আহানঃ কিন্তু তুমি কিভাবে খাইয়ে দিবে। তুমি কোথায় বসেছো আর আমি কোথায় বসেছি??
দিশাঃ আচ্ছা চারু তুমি তো ভাইয়ার পাশে বসে আছো তুমিই না হয় খাইয়ে দাও ভাইয়াকে।
চারু ঃ আমি???
আহানঃ না থাক ভাবি চারুর কষ্ট করা লাগবেনা।
আমি না হয় ব্যথা কমে গেলে খেয়ে নিব নিজ হাত দিয়ে।
চারু ঃ না ভাইয়া পরে খেতে হবেনা।আমার কোন সম্যসা নেই আপনাকে খাইয়ে দিতে।
আর ভাবি তুমি আবির ভাইয়াকে খাইয়ে দাও।
দেখনা কিভাবে মুখ গোমড়া করে বসে আছে।
দিশাঃ আচ্ছা।
তারপর দিশা আবিরকে আর চারু আহানকে খাইয়ে দিতে থাকে।
খাবার এর শেষ লোকমাটা খাওয়ার সময় আবির ইচ্ছা করে দিশার হাতে কামড় বসিয়ে দেয়।
দিশাঃ উফ গেল রে আমার হাত টা।
এই আপনি আমার হাতে এই ভাবে কামড় দিয়ে বসলেন কেন???
আবিরঃ আমি কি ইচ্ছে করে দিয়েছি নাকি?
দিশাঃআমি জানি আপনি ইচ্ছা করেই কামড়টা দিয়েছেন আমায়।
আবিরঃ তাহলে তোমার জানাটা ভুল।
আহানঃ আল্লাহ আবারও শুরু হয়ে গেল
দিশাঃ উফ ভাইয়াকে তো বলেছিলাম ঝগড়া করব না।
তাই ভালো ভালোই চুপ হয়ে যাই এখন।
বাট তাকে তো আমি উচিত শিক্ষা দিবই(ডেভিল হাসি হেসে).।আনমনে…
দিশাঃ আচ্ছা ভাইয়া আর কিছু বলবোনা আমি।
আপনাদের খাওয়া শেষ তো ঘুমিয়ে পরুন গিয়ে
আর আমি আর চারু খাবার খেয়ে ঘুমাতে যাব।
দিশার কথা শুনে আবির আর আহান চলে যায় ঘুমাতে।
তারপর দিশা আর চারু ডিনার করে নেয় এক সাথে।
ডিনার শেষ করে ওরা রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরে।
একটু পর দিশা ঘুম থেকে উঠে চারুর দিক এ তাকিয়ে
দিশাঃ দেখে তো মনে হচ্ছে চারু ঘুমিয়ে গেছে।যাই আমার কাজটা সেরে আসি গিয়ে।
তারপর দিশা আস্তে আস্তে মাটিতে পা ফেলে
আহান আবির এর রুমে সামনে দাঁড়িয়ে ওদের রুমে দরজা খোলা পেয়ে
উফ আজ দেখি আমার ভাগ্য আমার সাপোর্টে।
উফ লাইট টাও দেখি জালানো নেই।
ভালো হয়েছে বুদ্ধি করে মোবাইল টা সাথে করে নিয়ে আসছি। তারপর মোবাইল এর ফ্লাসলাইট টা অন করে আসতে আস্তে রুমে প্রবেশ করে দিশা।
আবির এর সামনে গিয়ে-
দিশাঃ ইস কি শান্তি ঘুম দিচ্চে গো। অনেক শান্তিতে ঘুমানো হচ্ছে তাইনা।।কতো মাসুম লাগছে আমার বেবিটাকে। আরও সুন্দর লাগানো জন্য আমি নিজ হাতেই মেকাপ করে দিব এখন।(ডেভিল হাসি হেসে).
কথাটি বলে দিশা আবির এর মুখে কিছু একটা মেখে তাড়াতাড়ি করে রুম থেকে বেরিয়ে পরে ওও।
সকালে আহান ঘুম থেকে উঠে আবিরকে দেখে জোড়ে চিৎকার দিয়ে উঠে। বেচারা আহান এতো টাই ভয় পায় যে আবিরকে দেখে ভয়ে মাটিতে পরে যায় বিছানা থেকে।
আহানের চিৎকার শুনে আবির এর ঘুম ভেঙে যায়।
সাথে চারু আর দিশাও রুমে এসে পরে ওর চিৎকার শুনে।
আবিরঃ কিরে আহান এইভাবে চিল্লাছিস কেন সকাল সকাল।।
আবিরকে দেখে চারু আর দিশা তো হেসে মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
আবিরঃ এই তোমরা পাগলের মতো হাসছো কেন।
পাগল হয়ে গেলে নাকি??
চারু ঃ ভাইয়া আমরা এমনি এমনি হাসছিনা। আপনি
কষ্ট করে আয়নায় নিজের মুখ টা দেখুন।
আবির চারুর কথা শুনে আয়নায় নিজের মুখ দেখে জোড়ে চিৎকার দিয়ে উঠে।
আবিরঃ এইটা কে।আই মিন আমার এই হাল কিভাবে হলো। পুরো ফেশ টা কালি দিয়ে মাখা।আমার এই সুন্দর ফেশ টার এই অবস্থা কেমন করে হল?(কান্নার কণ্ঠে)
দিশা আবির এর কথা শুনে জোড়ে জোড়ে হাসতে থাকে।
আবিরঃ এইটা নিশ্চয়ই তুমি করেছো আমার সাথে।
দিশাঃ হা হা প্রমান আছে কোন।
আবিরঃ দাঁড়াও প্রমান দিচ্ছি তোমাকে।
তারপর আবির দিশার পিছু ছুটতে থাকে।আর দিশাও দৌড়াতে থাকে।শেষ মেষ দিশা আহান আর চারু পিছনে গিয়ে লুকালে-
আবির দিশাকে আহান আর চারুর পিছন থেকে ধরতে গেলে
ভুলক্রমে ধাক্কা লেগে আহান চারুর উপর গিয়ে পরে।।।
ফ্লোরে আহান চারুর উপর এই ভাবে পরে যাওয়ায়
দিশা আর আবির ওদের ঝগড়া বন্ধ করে আহান আর চারুর দিক এ তাকিয়ে থাকে।
আহান চারু উপর থেকে না উঠে বরং ওর
চোখে অপলক দৃশটিতে চেয়ে থাকে।
চারু ঃ ভাইয়া আমার উপর…………
চলবে………