ছায়া হয়ে থাকব পাশে
part ঃ 15
writer ঃ humayra khan
আহানঃ হ্যালো
অপর পাশেঃ হ্যালো।কে বলছেন? (কান্নার কণ্ঠে)
আহান ফোনে চারুর কন্ঠ শুনতে পেয়ে
আহানঃ উফ থ্যাংক গড ভুল কোন নাম্বারে কল দেইনি তাহলে।।
কিন্তু চারু এইভাবে কান্না করছে কেন?(আনমনে)
আহানঃ হ্যালো চারু আমি আহান।
চারু বেশ চমকে উঠে –
ভাইয়া আপনি??? আপনি আমার নাম্বার পেলেন কোথায়?? আমি তো আপনাকে কখনো আমার নাম্বার দেইনি।
আহানঃ সেইটা তোর না জানলেও হবে কিভাবে পেলাম। কার কাছ থেকে পেলাম। এখন বল কান্না করছিলি কেন এমন বাচ্চা দের মতো করে।
চারু ঃ কই আমি তো কান্না করছিলাম না ভাইয়া।(কান্না করে)
আহানঃ এই মেয়ে তুই পাগল নাকি কান্না করে করে কথা বলছিস। আর বলছিস আমি কান্না করছিনা
থাপ্পড় খাবি আমার সাথে মিথ্যা বললে।।
চারু ঃ ভাইয়া কেন জানি আপনাকে আমার দেখতে ইচ্ছে করছে।।। হসপিটালে যাওয়া পর থেকে আপনার সাথে আর দেখা হয়নি আমার।।।আজ ও দেখা হলনা আমাদের।
আহানঃ ইস চারু আমাকে দেখতে চাইছে। এর মানে চারু ও আমাকে ভালোবাসে।।।।আনমনে
চারু ঃ কিন্তু!
আহান চারুর কিন্তু বলা শুনে ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসে।
আহানঃ কিন্তু কি চারু??
চারু ঃ নিশ্চুপ।।।
আহানঃ মা আমার সামনে আসতে নিষেধ করেছে তোকে???
চারু ঃ আল্লাহ সে কিভাবে বুঝল? আনমনে।
আহানঃ আমারও তোকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে চারু।আনমনে।
আহহ…………
চারু ঃ ভাইয়া কি হয়েছে??? আপনি ঠিক আছেন তো।।
আহানঃ আমার পিপাসা পেয়েছে অনেক। ভুলে
ব্যথার হাত দিয়ে গ্লাস টা নিতে গিয়ে হাতটা আরও ব্যথা করছে আমার।
চারু ঃ আপনি কেন কষ্ট করতে গেলেন।
দাড়ান আমি আসছি।
কথাটি বলে ফোন কেটে দেয় চারু। আর দৌড়ে চলে আসে আহানের রুমে।।।।
চারু রুমে আসলে আহান তৃষ্ণার্ত চোখ দিয়ে তাকিয়ে থাকে চারুর দিক এ।।।
চারু ঃ ভাইয়া আপনি ঠিক আছেন।।কেন নিজ হাত দিয়ে পানির গ্লাস টা নিতে গেলেন।
আহান চারুর কথার কোন জবাব না দিলে-
চারু ঃ ভাইয়া(জোড়ে)
আহানঃ এই ভাবে চিল্লাছিস কেন।আস্তে কথা বলতে পারিসনা।।কেউ জেগে গেলে তোকে আমার রুমে মধ্যে দেখলে তো বাসার মধ্যে তুমুল কান্ড পেকে যাবে।।।।
চারু ঃ কি করব তাহলে আমি যে কোন সময় থেকে আপনাকে জিজ্ঞেস করে যাচ্ছি হাজারো প্রশ্ন। আপনি তো অন্য কোন খেয়ালেই ডুবে আছেন
আহানঃ অন্য কোন খেয়ালে না তোর নেশায় ডুবে আছি আমি।। বিড় বিড় করে
চারু ঃ কিছু বললেন??
আহানঃ কই না তো।।।
চারু ঃ তো বললেন না যে আপনি কেমন আছেন।
আহানঃ আমি তো অলওয়েসট ভালোই থাকি।
চারু ঃ ওও আপনি পানি খেতে চেয়েছিলেন?
দাড়ান আমি দিচ্ছি।।
কথাটি বলে চারু পানির গ্লাসটা আহানকে দিতে নিলে-
আহানঃ চারু খাবার খেয়েছিস রাতের???
আহানের কথা শুনে চারু পানির গ্লাসটা হাতে নিয়ে থেমে যায়।
আহানঃ বুঝতে পারসি খায়নি কিন্তু নিশ্চয়ই আমাকে বলবেনা।। তাই আমার ইস্টাইলেই ওকে খাওয়াতে হবে।
আনমনে।
চারু পানির গ্লাস টা রাখ আর আমার জন্য খাবার নিয়ে আয়।
চারু ঃ আপনি খাননি???
আহানঃ খেয়েছি কিন্তু আবারও খিদে পেয়েছে আমার।
তুই অনেক কথা বলিস রে চারু জলদি করে খাবারটা নিয়ে আয় না।।। খিদের জ্বালায় কিন্তু তোকেই খেয়ে ফেলব আমি।।
চারু ঃ কি ( ভয়ে)।।
আহানের কথা শুনে ভয় পেয়ে চারু তাড়াতাড়ি করে চলে যায় রুম থেকে।।।
আহানের বেশ হাসি পায় চারুর এইভাবে চলে যাওয়া দেখে।
আহানঃ এক দিন সুযোগ পেলে ঠিকই খেয়ে ফেলব তোকে।
কথাটি বলে নিজে নিজেই পাগলের মতো হাসতে লাগল আহান।।।।
রান্না ঘর থেকে খাবার নিয়ে চারু সোজা চলে যায় আহানের রুমে।।
চারু ঃ এই নিন খাবার।। আর খেয়ে আমাকে উদ্ধার করুন।।।খেতে পারবেন তো???
আহানঃ কেন খেতে না পারলে কি তুই খাইয়ে দিবি আদর করে(চোখ টিপি দিয়ে)
আহান এই ভাবে চোখ টিপি দেওয়ায় বেশ লজ্জায় পরে যায় চারু। তাড়াতাড়ি করে মুখ ঘুরিয়ে নেয় অন্য দিক এ
দেখুন আপনার বা হাতে ব্যথা তো ঢং না করে তাড়াতাড়ি খেয়ে নেন
আমার প্রচুর ঘুম পাচ্ছে(একটা হাম দিয়ে)
আহানঃ মানুষ বড়ই নিষ্ঠুর।।মা তো বলল না তোর ডান হাতে ব্যথা না বা হাতে ব্যথা।। ঠিকই তো নিজের হাতে খাইয়ে দিল আমায়।।।
চারু ঃ দিচ্ছি দিচ্ছি।।ইমোশোনাল ব্লাকমিল করতে হবেনা।।আপনি ডাক্তার না হয়ে অ্যাকটার হতে পারতেন।
অনেক বেশি অ্যাকটিং করতে জানেন।
আহানঃ তাই নাকি চড়ই পাখি।আগে জানলে ঠিকই ডাক্তার না হয়ে অ্যাকটার হয়ে যেতাম।
কথাটি বলে জোরে জোরে হেসে উঠে আহান।
চারু ঃ আপনার দাত কেলানো হয়ে গেছে?? নাকি আরও বাকি???
আহানঃ কি ডেন জারাস মেয়ে রে বাবা।। পুরাই রিনা খান( হেসে)
চারু ঃ আমি না আপনার মা রিনা খান।
কথাটি বলে জ্বিবে কামড় দিয়ে –
চারু ঃ কি বললি চারু। ছেলের সামনেই বলছিস তার মা রিনা খান।এখন তো ছেলে মিশা সওদাগর হয়ে যাবে।
আহানঃ কি বললে আমার মা রিনা খান?
চারু ঃ আসলে আমি( আমতা আমতা করে)
আহানঃ আমার মাকে তুমি রিনা খান বললে।তা আবার আমারই সামনে।। সাহস তো কম বড় নয় তোমার।
ভুল যেহেতু করেছো এর জন্য তোমার কঠিন শাস্তি পেতে হবে।
চারু ঃ কি কঠিন শাস্তি?? (অসহায় মুখ করে)
আহানঃ হুম কঠিন শাস্তি ( মুখ গম্ভির করে)
কানে ধর
চারু ঃ কি?
আহানঃ জ্বি।
চারু আহানের কথা শুনে দুই কান ধরে।
আহানঃ নাও উঠ বস কর
চারুঃ এ্যা…….
আহানঃ কুইকলি( ধমক দিয়ে)
চারু আহানের ধমক খেয়ে কানে ধরে উঠ বস করতে লাগে আর বিড় বিড় করে আহানকে গালি দিতে থাকে।
চারু ঃ শয়তান ; কুত্তা; বিলাই;; তোকে তো আমি দেখে নিব।
আহান খেয়াল করল চারু আহানের দিক এ তাকিয়ে রাগি দৃশটিতে বিড় বিড় করে যাচ্ছে।।
আহানঃ নিশ্চয়ই আমাকে গালি দিচ্ছি। আহহ অনেক দিন পর চারুর এই রাগি লুক টা দেখার সৌভাগ্য হল আমার।।।ভালোবাসার মানুষ টাকে রাগাতে আলাদাই একটা আনন্দ পাওয়া যায়।।।।
চারু দশ বার উঠা বসা করলে –
আহানঃ হয়েছে আর করতে হবেনা।এই বার থামো।
চারু ঃ শালা তুই আমাকে দশ বার কানে ধরিয়ে উঠ বস করিয়েছিস আম তোকে সুযোগ পেলে দশ বার নয় একশ বার উঠা বসা করাব।
আহানঃ নাও আমাকে নিজ হাত দিয়ে খাইয়ে দাও।
চারু ঃ ইস যেমন করে বলছে মনে হয় আমি উনার বউ লাগি।।।
আহানঃ হতে আর কতক্ষন( হেসে)
চারু ঃ কি বললেন?
আহানঃ কিছুনা রে বাবা।।খাইয়ে দিবা?
চারু ঃ দিচ্ছি।
তারপর চারু ভাত মেখে আহানের মুখা মুখি বসে ওকে খাইয়ে দিতে থাকে।
দুই লোকমা খাওয়ার পর-
আহানঃ উফ আর খেতে পারছিনা।পেট ভরে গেছে।
আরেকটু খেলে বেলুন এর মত ফুলে উড়ে যাব আকাশে।
চারু ঃ তো এই ভাত খেয়ে খাবে আপনি না খেলে।
আহানঃ তুই খাবি।দেখ চারু খাবারের অপচ্য় আমি মোটেও পছন্দ করিনা। তাই এই ভাত গুলো ফেলে দেওয়ার চিন্তা মোটেও করবিনা।
চারু ঃ আমি তো ভাত খেয়েছি।।।
আহানঃ নিশ্চয়ই মিথ্যা বলছে আমার সাথে।আনমনে
আমি কোন কিছুই শুনতে চাইনা আর শুনবো ও না।
তোকে এই ভাত খেতে হবে। তো হবে।
চারু আর কোন উপায় না পেয়ে খেতে শুরু করল
চারু ঃ উফ আর খেতে পারছিনা।।
আহানঃ মাইর না খাওয়ার আগে পুরো খাবার ফিনিশ কর।
চারু আহানের কথা শুনে ভাতের লানা মুখে নিতে যাবে এর আগেই গড় গড়ে করে বমি করে দেয় চারু।।।
আহান চারুর মুখামুখি বসায় পুরো বমি গুলো এসে আহানের গা এর উপর পরে।
আহানঃ এইটা কি করলি চারু????
চারু আহানের কথার উত্তর না দিয়ে আবারও বমি করে দেয় আহানের উপর।
আহান চারু দিক এ অসহায় দৃশটিতে তাকিয়ে-
আহানঃ….. আবারও (কান্নার মুখ করে)
চারু ঃ…………
চলবে….
(