ছায়া হয়ে থাকবো পাশে part- 25

0
1135

ছায়া হয়ে থাকব পাশে
Part ঃ 25
writer ঃ humayra khan

আহানঃ ওয়াট…..তুমি ফান করছ আমার সাথে তাইনা..তুমি সব রেখে সাইকেলে করে ঘুরতে চাইছো?
মেয়েরা তো সাধারণত বাইকে উঠা পছন্দ করে আর তুমি???
চারু ঃ বিকস আই এম ডিফরেনট….
আমার ছোটকাল থেকেই সাইকেলে করে ঘুরতে অনেক বেশি ভালো লাগত…..
আর সপ্ন দেখতাম আমার সপ্নের রাজকুমারের সাথে সাইকেলে করে পুরো পৃথিবী ঘুরে বেরাব।।।।
আহানঃ পৃথিবী ঘুরবে তা আবার সাইকেলে করে…
কথাটি বলে আহান পাগলের মত হাসতে লাগল।।।
চারু ঃ অই বএিশ টা দাত দেখানোর কি হল (রেগে)
আহানঃ তোমার জোকস শুনে…আচ্ছা চড়ই পাখি পুরো পৃথিবী কেন আমি তোমাকে চাঁদের দেশ ও নিয়ে যাব সাইকেল করে….যখন আমি সাইকেল কিনব তার পর……..আজ না হয় গাড়ি বা বাইকে করে ঘুরে আসি…
চারঃ নোন নোন নোন নো….
আমরা আজই সাইকেল এ করে ঘুরব।।। যদি আজ আমায় না নিয়ে জান তো সারা জীবন আপনাকে ভাইয়া… চাচা খালু.. এইসব বলেই ডাকব( মুখ বাকা করে)
আহানঃ আল্লাহ… একে বুঝিয়ে কোন লাভ নেই…
আচ্ছা আমিও আহান খান… সহজেই হেরে যাওয়ার পাএ আমি নই……
চারু ঃ তাই নাকি৷ চাচ্চু….(হেসে)
আহানঃ হ চাচি… এক ঘন্টার মধ্যেই আমি সাইকেল এনে তোমার সামনে হাজির করব…
ইউ জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ……
কথাটি বলে আহান চলে যায় সেইখান থেকে….
চারু ঃ আমিও দেখে নিব এতো কানা রাতে আপনি কিভাবে এরেঞ্জ করেন….
আহান নিজের রুমে মধ্যে বসে পায়চারি করছে…
আহানঃ উফফ এই রাত বারো টায় তো কোন দোকানও খোলা থাকবেনা….কি যে করি…??
আইডিয়া আহান…….।।।
আমি আরাফকে কল দেই….
কথাটি বলার সাথে সাথেই আহান ওর ফ্রেন্ড কে কল দিয়ে–
আহানঃ হ্যালো দোস্ত…..
আরাফঃ হ্যালো বল আহান( ঘুমু কন্ঠে)
আহানঃ আই নিড ইউর হেল্প দোস্ত.
আরাফঃ হ্যাঁ বল কি হেল্প লাগবে????
আহানঃ দোস্ত তোর সাইকেলটা একটু দিতে পারবি আমাকে বাসায় এসে… প্লিজ দোস্ত না করিস না..
তানাহলে যে আমার সংসারটা আয়নার মতো ভেঙে যাবে।।।
আরাফঃ শালা তুই বিয়ে কবে করলি?? তুই এইটা কিভাবে করতি পারলি আহান…আমাকে রেখেই বিয়ে করে ফেললি কত সপ্ন বুনেছিলাম তোর বিয়েতে অনেক পেট ভরে খাব.. দশ বারো টা রান চাবাবো..
দূর শালা সব সপ্নের উপর এক বদনা জল ঠেলে দিলি…
আহানঃ উফ রে কি আজাইরা কথা বলছিস কোন পাগল তোকে বলেছে আমি বিয়ে করেছি??
আরাফঃ তুই তো এখন বললি আমার সংসার ভেঙে যাবে……
আহানঃ হায়রে আমার প্রেমের সংসার ভেঙে যাওয়ার কথা বলছি….
আরাফঃ উরে বাবা… আমাদের ভদ্র ছেলে দেখি এখন প্রেমও করে…
আহানঃ হুম (নিজের মাথা চুলকিয়ে)
ওগুলো বাদ দে…. প্লিজ সাইকেল টা নিয়ে আয়না আমাদের বাসায়….
আরাফঃ দুর শালা সাইকেল তো অনেক আগেই বিক্রি করে দিয়ে বাইক কিনেছি….আজকালকার মেয়ে পটানোর জন্য বাইক থাকাটা অনেক জরুরি…
কারন মেয়েদের জন্য ভালোবাসার আরেক নামই বাইক……
আহানঃ বাট আমারটা ভিন্ন রে….
তাই তো সাইকেল এর জন্য বলছি তোকে..
কিন্তু এখন কি করব বল তো??
আরাফ ঃ আমার এক পরিচিত আংকেল এর সাইকেল এর দোকান আছে.…. কিন্তু এখন তো তার দোকানও বন্ধ…., তুই একটা কাজ কর কাল যেয়ে সাইকেল কিনে আনিস…
আহানঃ মোটেও না দোস্ত আমি কাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবনা… আজ যদি চারুকে সাইকেল করে ঘুরতে নিয়ে না যাই তাহলে আজীবন ও আমাকে ভাইয়া.. চাচা খালু বলে ডাকবে…….
আরাফ আহানের বলা কথা শুনে জোড়ে জোড়ে হাসতে থাকে…….আরাফের হাসি দেখে আহানের বেশ রাগ উঠে পরে…
আহানঃ বেশি হাসা হাসি করলে কিন্তু ফোনের ভিতরে ঠুকেই তোর বএিশ টা দাত ভেঙে গুড়ো গুড়ো করে দিব…
আরাফঃ আমার তো এিশ টা দাত তুই বএিশ টা কিভাবে ভাংবি দোস্ত.(হেসে)
আহানঃ দরকার পরলে তোর গার্লফ্রেন্ড এর বাসায় গিয়ে ওর সামনের দুইটা দাত ভেঙে দিয়ে আসব।।
তাহলেই তো হয়ে যাবে বএিশ টা…
আরাফঃ আমার গার্লফ্রেন্ড তো দেখতে এমনি ভয়ানক সামনের দুইটা দাত না থাকলে তো পুরাই শাকচুন্নি দেখাবে ওকে…….
আহানঃ হুর এইসব কথা বলার জন্য সময় আছে.. দোস্ত তুই একটা কাজ কর তোর আংলের এর বাসার এড্রেস টা আমাকে দে বাকিটা আমি সামলে নিব…
আরাফঃ আর ইউ মেড তুই এতো রাতে তাদের বাসায় যাবি.. ভাই তোর মাথা খারাপ হয়ে গেছে তুই একগ্লাস পানি মাথায় ঠেলে ঘুমিয়ে পর….
আহানঃ উফ তুই এড্রেস টা আমাকে না দিলে আমি কিন্তু এই কল রেকর্ডিং তোর গার্লফ্রেন্ড কে সেন্ট করব..
আরাফঃ হায়রে তুই ফ্রেন্ড নাকি শএু কতো কষ্ট করে একটা গার্লফ্রেন্ড নসিব এ আসছে আর তুই কিনা..
আচ্ছা আংকেল এর বাসার ঠিকানাটা তোকে সেন্ট করছি…
আহানঃ জলদি.
কথাটি বলে ফোনটা কেটে দেয় আহান……
একটু পর ওর ফ্রেন্ড মেসেজ করে তার আংকেল এর বাসার ঠিকানাটা সেন্ট করলে…
আহান তাড়াতাড়ি করে ওর গাড়ি নিয়ে বের হয়ে পরে নির্দিষট গন্তব্যে…..
বাসায় পৌছে আহান বাসার সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেল বাজালে একটা ভদ্রমহিলা এসে দরজাটা খুলে দেয়…
আহানঃ আন্টি আংকেল কে একটু ডাকবেন???
মহিলাঃ এই ছেলে তোমার চোখ এ কি সম্যসা নাকি??
আমাকে কোন দিক দিয়ে আন্টি মনে হয়???
তুমি জানো এখনো হাজারো হাজারো ছেলেরা আমার পিছনে ঘুর ঘুর করে… মৌমাছির মতো …আমার মতো সুন্দরি মেয়ে নাকি তারা জীবনেও দেখেনি( ভাব নিয়ে)
আহানঃ ওয়াট ননসেনস এই পয়এিশ চল্লিশ বছর মহিলার পিছনে ছেলেরা নাকি ঘুর ঘুর করে তা আবার মৌমাছির মত…….হয়ত ওইসব ছেলেরা পাগলাঘার থেকে ছুটে আসা পাগল তাই মেয়েদের পিছনে না ঘুরে এই আন্টির পিছনে ঘুরে…(.আনমনে)
আহানঃ উফ কোন ছেলেই বা না ঘুরবে আপনার পিছনে বলুন? আপনাকে দেখে মনে হয় আপনার বয়শ মাএ বিশ….
মহিলাঃ সত্যি আমাকে এতো ইয়াং মনে হয়??
বাই দো ওয়ে আমি তো ইয়াং ই…
আহানঃ হুম ম্যাম আপনাকে দেখে আমার নায়কা মুনমুন এর কথা মনে পরে গেছে…
মহিলাটি আহানের কথা শুনে রাগি লুক নিয়ে ওর দিক এ তাকালে–
আহানঃ সরি সরি ভুলে মুনমুন এর নাম নিয়ে ফেলেছি আপনাকে দেখতে পুরাই ক্যাটরিনা কাইফ এর মত লাগে……
মহিলাটি আহানের কথা শুনে কাবিলা মার্কা হাসি দিয়ে—
মহিলা ঃ আমাকে দেখতে ক্যাটরিনা কাইফ এর মত লাগে…..সত্যি?? .
আহানঃ হুম ম্যাম আপনি এতই সুন্দর যে ক্যাটরিনা ও ফেল আপনার সামনে( শুকনো একটা হাসি দিয়ে)
মহিলাঃ তুমি বাইরে কি করছ আসো ঘরে আস কিছু খেয়ে যাও(খুশি হয়)
আহানঃ না ম্যাম আমার একটা কাজ আছে আর আমাকে শুধু মাএ আংকেল ই হেল্প করতে পারবে।।।
আমার চড়ই পাখি বায়না ধরেছে যে আমার সাথে করে এখন সাইকেলে করে ঘুরবে কিন্তু আমার সাইকেল নেই।।
আর আংকেল এর ত সাইকেলের দোকান…
আংকেল যদি আমাকে একটু হেল্প করত।।।
মহিলাঃকি চড়ই পাখি সাইকেল এ করে ঘুরতে চায়…..
কি দিনকাল আসল পাখিরা দেখি আকাশে না উড়ে এখন সাইকেল করে ঘুরতে চাইচ্ছে(গালে হাত দিয়ে)
আহানঃ আরে ম্যাম … আপনি ভুল বুঝছেন..
আমি আমার গালফ্রেন্ড কে ভালোবেসে চড়ই পাখি ডাকি…গার্লফ্রেন্ড কে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছি কোন পাখিকে নয়…
মহিলাঃ ওও লাভ সাভ.. কিন্তু তোমার আংকেল তো গভীর ঘুমে। হাজারো ডাক দিলে উঠবেনা….
আহানঃ আপনি জাস্ট তার কাছে আমাকে নিয়ে চলুন বাকিটা আমি সামলে নিব….
মহিলাঃ আচ্ছা আসো আমার সাথে……..
মহিলাটি আহানকে তার স্বামীর কাছে নিয়ে গেলে
আহান লোকটিকে হাজারো বার ডাক দিতে থাকে…
কিন্তু লোকটি নাক ডেকে ঘুমিয়েই যাচ্ছে যেন হাজারো দিন পর ঘুমালো সে…..
মহিলাঃ দাঁড়াও আমি পারব তাকে উঠাতে….
কথাটি বলে মহিলা জোড়ে একটা চিৎকার৷ দিয়ে বসে…..
মহিলার চিৎকারটা এত জোড়ে ছিল যে তার চিৎকার এর আওয়াজে আহানের কানের বারোটা বাজিয়ে দেয়…
কিন্তু তার স্বামী ঘুম থেকে উঠার নামই নিচ্ছেনা…….
আহান তার ঘড়ি তে খেয়াল করল এক ঘন্টা হতে আর বিশ মিনিট বাকি… তাই কোন উপায় না পেয়ে–
আহানঃ ম্যাম আপনাদের ওয়াসরুম টা কোথায়….
মহিলাঃ ঔই তো(ওয়াসরুমের দিক ইশারা করে)
আহান তাড়াতাড়ি করে ওয়াসরুমে গিয়ে একমগ পানি এনে লোকটি মুখে হাল্কা একটু পানির ছিটা দেয়..
তাতেও কোন কাজ না হলে আহান পুরো একমগ পানি লোকটার মুখে ঢেলে দেয়….
সাথে সাথে লোকটি এক লাফ দিয়ে ঘুম থেকে উঠে পরে —
লোকটিঃ মা মা আমি ডুবে গেলাম ডুবে গেলাম আমি..
আহানঃ রেলেক্স আংকেল একমগ পানিতে কেউ ডুবে যায়না… আই এম সরি আমার এমন আচরনের জন্য।।
কিন্তু প্লিজ আংকেল আমাকে আজ হেল্প করতেই হবে।।
আহান অনেক আকুতি মিনতি করলে লোকটা রাজি হয় তার দোকান খুলতে …..
পরে লোকটি আর আহান ওর গাড়ি করে খুব দ্রুত লোকটির দোকান এসে পৌছায়……
লোকটি আহানকে একটা কালো কালারের সাইকেল ধরিয়ে দিলে আহান তাড়াতাড়ি করে সাইকেল টা নিজের গাড়ির মধ্যে রেখে—
লোকটাকে টাকা দিয়ে খুশিতে লোকটাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে—-
আহানঃথ্যাংকস আংকেল আপনি জানেন না কত বড় উপকার টা করলেন……..
লোকটিঃ উফ কি করছ কি ছাড়ো আমায়…
আহানঃ সরি…. আসলে অনেক খুশি তো তাই(মাথা নিচু করে)
লোকটিঃ কথা না বাড়িয়ে তাড়াতাড়ি যাও…….
আহানঃ জ্বি আংকেল……কিন্তু আসেন আপনাকে বাসায় দিয়ে আসি…
লোকটিঃ না তুমি যাও আমি চলে যেতে পারব…তোমার লেট হয়ে যাচ্ছে……
আহানঃ থ্যাংকস আংকেল….
কথাটি বলে আহান গাড়িতে উঠে তাড়াতাড়ি চলে যায় বাড়ির উদ্দেশ্য……..
বাসায় পৌছে আহান সোজা চলে যায় চারুর রুমে……
সেড লুক নিয়ে চারুর সামনে দাড়ালে—
চারু ঃ…………

চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here