জ্বিনের ভালোবাসা পর্ব_১

0
8009

জ্বিনের ভালোবাসা
#পর্ব_১
লেখিকাঃ Mahiya Akter Priya
Story Credit: Mahiya Akter Priya

রাত ১২ টার সময় একা ছাদে বসে আছে প্রিয়া। সে প্রায় এটা করে। রাতের আকাশ তার খুব ভালো লাগে। মনে হয় তারা গুলো তার সাথে কথা বলছে। আর চাদ তো আছেই। খুব গভীর ভাবে যখন খেয়াল করে তখন চাদের মধ্যে অদ্ভুত কালো দাগ গুলো দেখা যায়। অনেক ভালো করে খেয়াল করে সে। সে যখন একবার ভাবনার জগতে পা রাখে নিজের জগতকে ভুলে যায়। তার মা তাকে অনেকবার বলেছে এত রাতে ছাদে যাওয়া ঠিক না। এমন সময় জ্বীন বাইরে থাকে। মায়ের কথা হেসে উড়িয়ে দেয় সে। এমন না যে সে বিশ্বাস করে না জ্বিন আছে।জ্বিন বিশ্বাস না করার কোন কারণ নেই যেহেতু কুরআনে জ্বীনের কথা আছে। কিন্তু রাতের বেলা ঘুরে বেড়ানো টা প্রিয়ার অদ্ভুত লাগে।

প্রিয়া রাতে বসে আছে এমন সময় বাতাসে প্রিয়ার চুল মুখের উপর পড়েছে আর সে বিরক্ত হয়ে সেগুলো পিছনে নিয়ে যাচ্ছে। এমন সময় হঠাৎই খুব সুন্দর কন্ঠে কেউ বলল, যখন চুল গুলো সরতে চাইছে না তাহলে কেন সরাতে চাইছেন? কথাটা শুনে প্রিয়া ভয় পেয়ে যায়। এত রাতে ছাদে সে ছাড়া তো আর কেউ নেই। এদিক সেদিক খুজতে থাকে। আবার আওয়াজ কিছু খুজছেন? সে এবার উঠে পুরো ছাদ টা দেখল। কোথাও কেউ নেই। সে বুঝতে পেরেছে এটা নিশ্চয়ই তার মায়ের কাজ। তাকে ভয় দেখানোর জন্য কাউকে দিয়ে এটা করাচ্ছে যেন সে আর ছাদে না আসে। কিন্তু ভয় পাওয়ার পাত্রী তো সে নয়। কিছু একটা সে করবেই।

ওমনি আবার আওয়াজ। কি ভাবছেন? প্রিয়া বলল, কে? কে আপনি? সামনে আসুন। আওয়াজ টা থেমে গেল। আর কোনো শব্দ হচ্ছে না। কিন্তু ফুলের সুগন্ধ পাচ্ছে সে। কিন্তু শুধু তাদের ছাদে কেন দুর দুরান্ত পর্যন্ত কারো ছাদেই কোনো ফুল গাছ নেই। আর গন্ধ টা অদ্ভুত। তার মনে হয় না এমন গন্ধ সে আগেও পেয়েছে। কিন্তু তাও কিভাবে বুঝলো যে এটা ফুলের গন্ধ। সে ভাবল আজ নিচে যাই, কাল একে ধরার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে আসব। সে যেই নিচে নামতে যাবে ওমনি দেখে নিচে কিছু একটা আছে সে ভয় পেয়ে পরে যাবে এমন সময় পরে না। মনে হয় কেউ তাকে ধরল। কিন্তু এখানে তো কেউ নেই।

হঠাৎই দেখল সেখানে একটা বালতি। নিজেকে নিজে গালি দিতে দিতে রুমের মধ্যে ঢুকলো। সে শুয়ে আছে। যদিও সে নিশ্চিত তার মা হয়তা এটা করেছে কিন্তু তার মাথায় আসছে না যে পুরো ছাদ দেখার পরেও কিভাবে পেলো না? আর সে যখন পড়ে যাচ্ছিল তখন তাকে কে ধরল? ভাবে কোনো কুল কিনারা পায় না। হঠাৎই সে মিষ্টি গন্ধ টা আবার পায়। কিছু দেখতে পারে না কিন্তু সেই মিষ্টি কন্ঠ টা বলে উঠে, কি আমার কথা ভাবছেন বুঝি? হঠাৎই উঠে লাইট জ্বালায় প্রিয়া। কিন্তু কোথাও কিছু নেই। সে ভাবল হয়তো অতিরিক্ত চিন্তার কারনে সে এসব শুনছে। গন্ধটা তখনও যায় নি। সে ঘুমিয়ে পড়ল হঠাৎই অনুভব করল, কেউ তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।

সে হাত টা ধরে ফেলল, কিন্তু অদ্ভুত হাত টা অনেক ঠান্ডা। মনে হয় ফ্রিজ থেকে বের করা হয়েছে। তার থেকেও অদ্ভুত, হাত টা কেমন যেন হাওয়ায় মিশে যাচ্ছে। আস্তে আস্তে মিশে গেলো হাত টা। কিছুই বুঝতে পারছে না প্রিয়া। লাইট অন করতেই দেখল কিছু নেই। হাত টা ধরার সময় মিষ্টি যে সুগন্ধ টা পাচ্ছিল সেটাও এখন নেই। কিছু বুঝতে পারছে না। মায়ের নিয়ে আসা লোকটা কি যাদু জানে? এভাবে কিভাবে উধাও হয়ে গেলো? নাকি আসলেই জ্বীন? জ্বীনে অবিশ্বাস না থাকায় এই কথাটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারল না। সে ঘুমিয়ে পড়ল। সকালে উঠে আবার কলেজে যেতে হবে। ঘুমাতে ঘুমাতে তার পরিচয় টা দেওয়া যাক।

ওর নাম প্রিয়া। এবার ইন্টার প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তার একটা বড় ভাই ও একটা বড় বোন আছে। ও সবার ছোট। যা চায় তাই পায়। বিশেষ করে ওর সব আবদার ওর ভাইয়া আর ভাবির আছে। আর বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। পরিবারে, মা, বাবা, ভাই, ভাবি থাকে। ছয়মাস আগে ভাইয়ের বিয়ে হয়েছে। ছোট হওয়ায় ওর থেকে বেশি সুবিধা আর কার? যখন যা চায় তাই পায়।

সকালে ঘুম থেকে উঠে কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে। রাতের ঘটনা সব তো প্রায় ভুলেই গেছে। ওর আবার এত কিছু মনে রাখার অভ্যাস নেই। সে খেয়ে দেয়ে কলেজে চলে গেল। কলেজ থেকে আসার সময় হলো বিপদ। রাস্তা ক্রস করার সময়, হঠাৎই একটা ট্রাক আসতে থাকে। কি করবে বুঝতে পারে না। হঠাৎই কেউ ওর হাত ধরে টান দেয় আর ও সরে আসে কিন্তু রাস্তায় তখনো কেউ ছিলো না। এটা মনের ভুল হতেই পারে না। কিছু একটা নিশ্চয়ই আছে।

এসব ভাবতে ভাবতে সে বাসায় চলে আসে। বাসায় এসে গোসল করে খাওয়া দাওয়া করে নেয়। দুপুরে ভাবতে থাকে ২ দিন ধরে তার সাথে কি হচ্ছে? তার মা জিগ্যেস করে কি হয়েছে? সে উত্তরে বলে কিছু হয় নি। পড়ার চাপ টা বেশি। প্রতিদিনের মত আজ রাতেও ছাদে যায়। আর এর রহস্য বের করেই ছাড়বে। দোলনায় বসে বসে হিন্দি গান শুনছে হঠাৎই সে মিষ্টি গন্ধ টা আবার পায় সে। সে বলে, হিন্দি গান কেন শুনছেন? বাংলায় কি খারাপ আছে? এবার প্রিয়া রেগে গিয়ে বলল, কে আপনি? সামনে আসুন। এতই যদি কথা বলার ইচ্ছা থাকে তাহলে সামনে এসে কথা বলুন। আর আমি কি গান শুনবো না শুনবো সেটা আমার ব্যআপার। হঠাৎই আবার আওয়াজ এলো, আরে! রেগে যাচ্ছেন কেন? ভাষা শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমরা বাংলা ভাষা পেয়েছি। তাই বাঙালি হিসাবে বাংলা গান শোনা উচিত আমাদের। প্রিয়া বলল, এই কে বলুন তো আপনি? তখন থেকে জ্ঞান দিয়ে যাচ্ছেন। সে বলল,

( বানান ভুল হলে ক্ষমা করবেন। আসা করি গল্পটা আপনাদের ভালো লাগবে।)

লেখিকাঃ Mahiya Akter Priya

চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here