ডাহুক_নদীর_তীরে (পর্ব-৭) #হালিমা রহমান

#ডাহুক_নদীর_তীরে (পর্ব-৭)
#হালিমা রহমান

ডানহাতের কনুই দিয়ে সোনালীর পেটে মৃদু আঘাত করে তথা। নিচু স্বরে বলেঃ” কি বলছো এগুলো?পাগল নাকি তুমি?”

_”আরে এত সৌন্দর্য আমার হজম হয় না।ছেলেটা কি সুন্দর! ভালো করে দেখ।একদম তুর্কি নায়কদের মতো দেখতে।”

_”ছেলে বলছো কেন?আঙ্কেল বলো। তোমার চাইতে তার বয়স অনেক বেশি হবে বোধহয়। দেখলেই বুঝা যায়।”

সোনালী মুখটাকে চুপসে ফেলে।তথার হাত চেপে ধরে বলেঃ” প্রেমের ঢেউয়ে ভেসে যাবে বয়স।বয়সের কারণে এতো সুন্দর ছেলেটাকে কিছুতেই আঙ্কেল বলতে পারব না।ক্রাশকে কেউ আঙ্কেল বলে?আমি তার নাম ধরে ডাকব। আমার কোকিল কন্ঠে সহস্র মাইল দূর থেকে গলা উচিয়ে বলব-ওগো অমুক,চলো প্রণয়কাব্যের সুখী দম্পতি হই।আমাদের প্রেমের সাক্ষী হোক জগৎ-সংসার।প্রেমের জোয়ারে ভাসিয়ে ভেসে যাই আমরা,ভেসে যাক বিশ্বের সবাই।”

সোনালীর কথা বলার ভঙ্গিতে হেসে ফেলে তথা।মুখ টিপে বলেঃ ” ইঁচড়েপাকা মেয়ে।এই বয়সেই এতো! আরেকটু বড় হলে কি করবে?”

_” কি জানি।আমি বোধহয় বিশ্বপ্রেমিকা হব।রাস্তা-ঘাটে সুন্দর ছেলে দেখলেই প্রেমে পড়বো।”

ডিরেক্টর আখতার হোসেন এগিয়ে যান ইউসুফের দিকে।প্রায় পাঁচ বছর যাবৎ পরস্পর পরিচিত তারা।এই পাঁচ বছরে সম্পর্কে জোয়ার-ভাটা হয়েছে অনেকবার।কখনো উন্নতি,কখনো অবনতি।তবে,সম্পর্কটা টিকে আছে এখনো। উর্ধতন-অধস্তনের সম্পর্ক। ইউসুফের সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়ান ডিরেক্টর। ইউসুফ বয়সে ছোট হলেও তাকে তোয়াজ করে চলেন ডিরক্টর।ইউসুফের সামনে গেলেও তার হাঁটু কাঁপে।

_” মি. হোসেন, পৌঁছাতে এতো দেরি হলো যে?”

_”রাস্তায় জ্যাম ছিল,স্যার।তাছাড়া এতো দূরের রাস্তা, ব্রেক নিতে হয়েছে অনেকবার।”

_”ওহ।তা আপনার টিম মেম্বারদের সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিন।একটু আলাপ হোক। ”

_” জ্বি স্যার।”

আখতার হোসেন বার দুয়েক কাশি দিয়ে গলা পরিষ্কার করেন।সবার মনোযোগ আকর্ষণ করে বলেনঃ ” ইনি আহমেদ ইউসুফ।এই বাড়ির মালিক তিনি। আমাদের প্রজেক্টে বড় একটা এমাউন্ট ইনভেস্ট করেছেন স্যার।এখানের অর্ধেক ব্যয়ভার স্যার বহন করবেন।”

_” পার্টনারশিপের কাজ নাকি এটা?”— ডিরেক্টরের কথার শেষেই শাফিনের প্রশ্ন শোনা যায়।

_ ” হ্যাঁ। ”

_” কিন্তু এগ্রিমেন্ট পেপারে লেখা ছিল এটা একক প্রযোজনার কাজ।”

_” স্যার আনঅফিশিয়ালি ইনভেস্ট করেছেন।তাই একক প্রযোজনার কথা লেখা হয়েছে।”

_ ” এটা আবার কেমন নিয়ম?”

_” নিয়ম-কানুনের ব্যাপারে তোমার চাইতে আমি বেশি ভালো জানি, শাফিন।”— খুব কঠিন শোনায় ডিরেক্টরের গলা।

শাফিনের দিকে একবার নজর দেয় ইউসুফ। এখানে হাতেগোনা দশটা ছেলে আছে।দশটা ছেলের মাঝে পাঁচটাই ডিরেক্টরের লোক।বাকি পাঁচটা বাইরের।সবার মাঝে এই ছেলেটাকে ভিন্নরকম লাগে।অনেক মানুষের মাঝেও তার দিকেই চোখ আটকায় আগে।জীম-টীম করে বোধহয়।আকর্ষণীয় চেহারা।পোশাক-পরিচ্ছদ জানান দেয় সে অভিজাত ঘরের ছেলে।গলার স্বরটাও বেশ সুন্দর।ডিরেক্টরের উপরে রেগে যায় ইউসুফ।মনে মনে অশ্রাব্য কিছু গালি দেয়।এই ঘোড়ার শুটিংয়ের জন্য এতো সুন্দর ছেলের দরকার ছিল?শালা আসলেও একটা বলদ।

_” স্যার,আপনি কিছু বলবেন?না বললে সবাইকে ভিতরে নিয়ে যাই?অনেকটা দূরের রাস্তা অতিক্রম করে এসেছে। “— মামুনের কথায় কিছু বলে না ইউসুফ।সোজা হয়ে দাঁড়ায়।তথার দিকে আলগোছে একবার চোখ বুলায়।সুন্দর মুখটা শুকিয়ে আছে।উৎসুক চোখে এদিকেই তাকিয়ে আছে সে।ইউসুফ অনুতপ্ত হয়। আরেক ছেলের দিকে নজর দিতে যেয়ে প্রেয়সীর কষ্ট চোখে পড়লো না।বাস থেকে নেমে এতোক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে নিশ্চয়ই কষ্ট হচ্ছে তার।

_” গুড ইভিনিং। আমি আহমেদ ইউসুফ। এই বাড়িতে থাকাকালীন আপনাদের সমস্ত দায়-দায়িত্ব আমার।তাই আশা করছি কোনো সমস্যা হবে না।সমস্যা হলে আমাকে জানাবেন।আমার বাড়িতে আপনাদের স্বাগতম।ভিতরে আসুন, প্লিজ।এতোক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। ”

ইউসুফ ভিতরে পা বাড়ায়।সদর দরজা থেকে বাড়ির ভিতরের দিকে চলে গেছে এক প্রশস্ত রাস্তা।অমসৃণ পথের দু’ধারে ছোট ছোট নুড়িপাথর।তথার কাঁধে একটা মাঝারি আকারের ব্যাগ।সোনালীর কাঁধেও।বাকি সবার কাছে লাগেজ।ইউসুফের পিছে মামুনও বাড়িতে প্রবেশ করেছে।ডিরেক্টর সবার সামনে এসে দাঁড়ান।মুচকি হেসে বলেনঃ ” চলো তাহলে।তোমাদের যাত্রা শুভ হোক।”

_” এতোক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখার কোনো মানে আছে? ম্যানার্স নেই কোনো।ইউজলেস।”

পুনমের কন্ঠে বিরক্তি ঝরে পড়ে। দীর্ঘ ভ্রমণের পর এতো নিয়ম-কানুন পালন, ভদ্রতা দেখানো সত্যিই কষ্টকর।তবে পুনমের কষ্ট বা বিরক্তি কোনোটাকেই গুরুত্ব দিলেন না আখতার সাহেব।পুনমের দিকে তাকিয়ে কঠিন গলায় বললেনঃ” তোমার ধারালো জ্বিভকে সংযত করো, পুনম।এটা তোমার মামাবাড়ি নয় যে যখন আসবে তখনই তোমাকে আদর করে ঘরে তুলবে সবাই।ভিতরে এসো সবাই।”

তথার পিছু পিছু সোনালী হাঁটে।লোহার দরজার কাছে দুটো বাতি।বাতি দুটো হলেও আলো খুব কম।এই আলোতে সামনের দু-হাত দেখা যায় কেবল।তথা ফোনের আলো জ্বালে।এদিক-ওদিক ফোন ঘুরিয়ে বাড়ির সামনের দিকটা দেখে।সদর দরজা থেকে মূল বাড়িতে যাওয়ার জন্য অনেকটা পথ অতিক্রম করতে হয়।প্রশস্ত পথের দু-ধারে সাড়ি সাড়ি সুপারি গাছ।বাড়ি ও এই পথটুকুই পাকা করা।এই জায়গাটুকু দিয়ে পুরো উঠানটাকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে।উঠোনের উত্তরদিকে এক বিশাল অশ্বত্থ গাছ চোখে পড়ে।গাছের নিচে একটা বাঁশের বেঞ্চ।মাটি থেকে এর উচ্চতা তিন ফুট হবে বোধহয়।অশ্বত্থ গাছের পাশেই একটা কৃষ্ণচূড়া গাছ।বিশাল ডাল-পালা ছড়িয়ে সগর্বে দাঁড়িয়ে আছে যেন।আরো নাম না জানা অনেক গাছ আছে এখানে।বাড়িটাকে নতুন রঙ করা হয়েছে তা দেখলেই বুঝা যায়। মূল ভবনের দু’পাশে মোটা মোটা দুটো থাম।থামের সামনে উঁচু ত্রিকোণ বেদির মতো একটু জায়গা। তার উপর বিশাল এক বাজপাখি।পাখির পুরো দেহ ও ডানাদুটো হয়তো জমিদার বংশের আভিজাত্যের প্রতীক।সাত-আটটে সিড়ি বাওয়ার পর কাঠের দরজা চোখে পড়ে।মামুন ও ইউসুফ দরজার এককোনে দাঁড়িয়ে আছে।সবাই পৌঁছালে দরজা খুলে সবাইকে নিয়ে ভিতরে ঢুকে ইউসুফ। প্রথম ঘরটাই বসার ঘর।ঘরের মাঝে রং-বেরঙের বিশাল তিনটে সোফা।সোফার পিছনে উত্তর দিকের দেয়ালে একটা বিশাল তৈলচিত্র।তৈলচিত্রে শোভা পাচ্ছে এক বলিষ্ঠ সুপুরুষ । গোঁফে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। একদম জীবন্ত যেন।তথা অভিভূত হয়।অজান্তেই বলে ফেলেঃ” বাহ! খুব সুন্দর তো।ইনি কে?”

_” ইনি আমার দাদা।জমিদার আহমেদ জুলফিকার। আমাদের বংশের সর্বশেষ জমিদার।”

_” ওনাকে অনেকটা ইউরোপীয়ানদের মতো দেখায়।বিশেষ করে চোখ দুটো।নীল চোখ আমাদের দেশে সচরাচর দেখা যায় না।ওনার চোখ দুটো কিন্তু খুব সুন্দর।যেন চোখের মাঝে এক বিশাল মহাসমুদ্র ধরে রেখেছেন।”— তৈলচিত্রের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে কথাগুলো বলে তথা।

_” আমার বড়মা মানে দাদার মা ছিলেন ইউরোপীয়ান। বড়বাবা যখন জমিদার ছিলেন তখন এদিকে ঘুরতে আসেন ইংল্যান্ডের নাগরিক উইলিয়াম ফ্রেডারিক এবং তার মেয়ে ফিয়োনা।আগের জমিদারদের অবস্থা তো শুনেছেনই।ইংরেজদের সাথে বেশ শখ্যতা ছিল তাদের।বড়বাবার আতিথেয়তায় খুশি হন তারা।বড়বাবার উপর বেশ সন্তুষ্টও হন।ফ্রেডারিক খুশি হলেন আর তার মেয়ে ফিয়োনা বড়বাবার প্রেমে পড়লেন।বড়বাবাও ছিলেন অবিবাহিত। বড় মায়ের প্রস্তাব অমান্য করতে পারেননি।দুজনে শেষমেশ বিয়েই করে ফেললেন।আমার বড়মা এই বিয়ের জন্য ধর্মও ত্যাগ করেছিলেন।দাদা বড়মায়ের চোখ পেয়েছেন।তাছাড়া, পড়াশোনার জন্য তিনি বেশ কয়েক বছর তার নানার কাছে ইংল্যান্ডে ছিলেন।বুঝতেই পারছেন,চেহারায় অনেকটা বিদেশিদের ছাপ চলেই এসেছে।”

_ ” ভেরি ইন্টারেস্টিং। আপনি কি আপনার দাদাকে দেখেছেন?”

_” উঁহু। আমার জন্মের প্রায় পনেরো বছর আগে মারা গেছেন দাদা।এসব আমি বাবার কাছে শুনেছি।”

তথার আগ্রহ দেখে মুচকি হাসে ইউসুফ।নাতিকে রেখে দাদাকে পছন্দ করেছে এই মেয়ে।আশ্চর্য! ছবির মৃত সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে লাভ আছে?তার হাত কয়েক দূরেই তো জীবন্ত এক সৌন্দর্য দাঁড়িয়ে আছে। তার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হলে কি হয়?ইউসুফ কোনদিক দিয়ে কম।এরকম ছেলে কি আর কোথাও দেখেছে তথা?

_” আপনারা আমার পিছু পিছু আসুন।সবার থাকার ব্যবস্থা দোতলায় করা হয়েছে।”—মামুন সিড়ির কাছে যেয়ে দাঁড়ায়।
ডুপ্লেক্স বাড়ি।বসার ঘরের এককোনেই কাঠের সিড়ি।সিড়ির একপাশে একটা নারীমূর্তি।এই ঘরে মূর্তির অভাব নেই।এখানে-ওখানে প্রায় ছয়-সাতটা মূর্তি আছে। আছে বিশাল একটা টেবিল ও খান পাঁচেক ফুলদানী।বিশাল ঘরে তিনটে জানলা।জানলায় মোটা পর্দা টেনে দেওয়া।এককোনে একটা পিয়ানো চোখে পড়ে।তবে পিয়ানোটা বোধহয় কেউ বাজায় না।পিয়ানোর উপরটায় খানিক ধুলো জমে আছে।তথা চোখ ঘুরিয়ে পুরো ঘরটা দেখলো।আদর্শ শুটিং স্পট বটে।দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়।

মামুনের আগেই পুনম উঠে যায় সিড়ি বেয়ে।তার আচরণে বিরক্তি যেন ফুটে বেরোচ্ছে।কি অসামাজিক! তথা মুখ বাকায়।তথার পাশে থাকা সোনালীর চোখেও পুনমের এই আচরণ খট করে বাজে।তথার কানের কাছে ফিসফিস করে বলেঃ” এটা কে গো, তথা আপু?ভদ্রতা নেই নাকি?”

_” আস্তে সোনালী।এটাই নায়িকা।ওর নাম পুনম।”

_” এটাই নায়িকা! ছিঃ! কি অভদ্র।”

সোনালীর কথায় কিছুই বলে না তথা।সিড়ির এককোনে যেয়ে দাঁড়ায়।অন্যরা উপরে উঠছে।তথার বিপরীতেই ইউসুফ দাঁড়ানো।সে আড়চোখে তথার দিকে তাকায়।ঘর্মাক্ত মুখে লেপ্টানো কাজল, সাথে অগোছালো একগোছা চুল–নিতান্ত মন্দ নয়।সিল্কি চুলগুলো বিনুনি করা।মেয়েটা চুলে তেল দিতেই পারে না।তেল দিলে নাকি গরম লাগে।তাই হাজার চিরুনি চালালেও তথার চুল অগোছালো থাকবেই।এখনো চুলগুলো অগোছালো।বিনুনির বাইরে ছোট চুলগুলো বেরিয়ে আছে।কিছু চুল কপালে,কিছু চুল কানের দুলের সাথে গলার কাছে লেপ্টে আছে।মুহূর্তেই ইউসুফের মনে অবাধ্য কিছু ইচ্ছে জাগে।ইচ্ছে হয় তথার চুলগুলোতে চিরুনি চালাতে, চুলগুলো গুছিয়ে বিনুনিতে বাধতে ইচ্ছে হয়,সযত্নে লেপ্টে যাওয়া কাজল মুছে দিতে ইচ্ছে হয়,গলার কাছে -নাকের কাছের ঘামগুলো আদুরে ভঙ্গিতে মুছে দিতে ইচ্ছে হয়।শরীরে শিহরন জাগে ইউসুফের। মেয়েটা নিশ্চিত এক জাদুকরী। নাহয় পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে হঠাৎ করে বসন্ত আসবে কেন ইউসুফের জীবনে?এতোকাল কোথায় ছিল এই বসন্ত? কোথায় ছিল এতো প্রেম,এতো রঙ? মেয়েটা হুট করে সামনে এলো।একা আসেনি সে।এসেছে ঘোর বর্ষা নিয়ে।না,না বর্ষা নয়।ঘোর বসন্ত নিয়ে এসেছে সে।ইউসুফের রঙহীন জীবনে সে এসেছে বসন্তের এক দমকা হাওয়ায় চেপে।
ইউসুফের পাশ দিয়ে ধীরপায়ে সিড়িতে উঠে তথা।বাড়ির পরিবেশে অর্ধেক ক্লান্তি কেটে গেছে তার।রুমে যেয়ে এখন ঠান্ডা পানিতে গোসল করবে সে।তারপর বাড়িতে কথা বলবে। কথার শেষে একটা লম্বা ঘুম দেবে।আহ! চারদিকে শুধু শান্তি।
তথা পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ইউসুফের নাকে ধাক্কা দেয় তীব্র জেসমিনের ঘ্রাণ।এ যে তথার পারফিউমের ঘ্রাণ তাতে সন্দেহ নেই।তবে এই কৃত্রিম ঘ্রাণেও অভিভূত হয় ইউসুফ।মোহাবিষ্টের ন্যায় সেও ধীরপায়ে তথার পিছু পিছু হেঁটে চলে।সেদিকে আহাম্মকের মতো চেয়ে থাকে সোনালী।অজান্তেই ইউসুফ তার পা মাড়িয়ে দিয়েছে। ইঁচড়েপাকা সোনালীর চোখে ইউসুফের মোহ ধরা পড়ে।নগ্নভাবে ধরা পড়ে তথার জন্য ইউসুফের চোখের মুগ্ধতা।ভয়াবহ আহত হয় সোনালী।মুখটা চুপসে আসে তার। অজান্তেই মুখ ফুটে বেরিয়ে আসে আক্ষেপের সুর

_” তথা আপুতেই কেন মুগ্ধ হতে হবে ইউসুফ?আপনার জুলেখা পিছনে দাঁড়িয়ে আছে।তা কি আপনার চোখে পড়ছে না?”

_” জুলেখা বলবেন না ছোট্ট মেয়ে।স্যারের মায়ের নাম বিবি জুলেখা।আপনি যদি সেই নাম নিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেন, তাহলে দেখা যাবে স্যার আপনাকে মা বলে ডাকা শুরু করবে।আমি শুভাকাঙ্ক্ষী তাই আগেই নিষেধ করলাম।নাহয় আপনার ছোট মাথায় তো এসব ঢুকবে না।”

একগাল হেসে সিড়ি দিয়ে উপরে উঠে আয় মামুন।পিছনে ফেলে যায় হতভম্ব সোনালীকে।সে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে।ওই নাক বোচা লোকটা তাকে তাচ্ছিল্য করলো নাকি বিদ্রুপ? নাকি একসাথে দুটোই?

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here