#তুই আমার
#সুমাইয়া জান্নাত
#part 13
বিয়ে বাড়িতে ধুম পড়েছে,, একদিকে রান্না বান্না তো আরেকদিকে হইচই আনন্দ উল্লাস,,,, বিয়েতে কে কি করবে সেই নিয়ে যুদ্ধ,,,,, আজকে যেহেতু রঙ খেলা হবে তাই সবাইকে সাদা ড্রেস পড়তে হবে ,,,,আর এই দিকে আমাদের দুই জুটি গালে হাত দিয়ে বসে আছে,,,,,,,,,
আদুরী ঃ কিরে কিছু তো বল,,,,,
মেঘাঃ কি বলবো বুঝতে পারছি না তো,,,,
আদুরী ঃ সেই বাগান থেকে চলে আসার পর থেকে দেখছি তোর মুখটা গম্ভীর কিছুক্ষণ পরপর আবার মুচকি মুচকি হাসছিস বেপার কি,,,,,,,,,
মেঘাঃ কককই না তো আমি তো বিয়ের কথা মনে করে হাসছিলাম (তুতলিয়ে)
আদুরী ঃ ডালমে কুচতো গারবার হে,,,,, রাজ ভাইয়া কি তোকে কিছু করেছে,,,, নামানে পাপ্পি টাপ্পি দেইনি তো আমাদের মেঘা রানি কে 😂😂
(মেঘা কিছু বলতে যাবে তার আগেই রাইসা ওখানে আসে)
রাইসা ঃ হেই তোমরা কি করছো,,,
আদুরী ঃ তেমন কিছু না গল্প করছিলাম,,,
মেঘাঃ তুমিও বসো,,,,
রাইসা ঃ হুম, ,,,, তা আদুরী তোমার শরীর কেমন,,,,,
আদুরী ঃ হুম ভালো,,, কেনো বলতো,
রাইসা ঃ আরে এমনি বলছিলাম আর কি বিয়ের আগে হয় না বউ অসুস্থ বা বউ পালিয়েছে,,, তাকে বদলে অন্য একজনের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়,,,,
আদুরী ঃ তোমার কথার মানে বুঝলাম না,,,
রাইসা ঃ আরে তুমি যদি অসুস্থ হয়ে পড়ো তো তোমার বদল তখন মেঘের সাথে আমার বিয়ে হবে না,,,
মেঘাঃ এটা কেমন কথা রাইসা আপু,,, আদুরী তো একদম সুস্থ তাহলে ও কেন অসুস্থ হবে,, আর একটা কথা আমাদের আদু যতই অসুস্থ হোক না কেন অন্য কাউকে ভাইয়া কোনোদিন বিয়ে করবে নাহ,,,, একমাত্র মৃত্যু ছাড়া ভাইয়া আর আদুরী কেউ আলাদা করতে পারবেনা,,,,,,,,,,
রাইসা ঃ তাহলে না হয় মৃত্যুই হবে 😈(বিরবির করে)
মেঘাঃ কিছু বললে,,,,
রাইসা ঃ কই কিছু নাহ,, আরে আমি তো মজা করেছি আর তোমরা সিরিয়াসলি নিয়ে নিয়েছো,আর মেঘা আমার মম, ডেড এসেছে 😊তাই তোমাদের বলতে এসেছি ,, আদুরী আমি মজা করেছি তুমি আবার রাগ করোনি তো,,,,,
আদুরী ঃ না আমি রাগ করিনি,,, 😶
মেঘাঃ এ তো ভালো খবর ওনারা এসেছেন হয়েছে,, চলো আমরা বরং ড্রেস গুলো দেখি কি বলো,,,,
রাইসা ঃ রাইট ,,
আদুরী ঃ হুম,,,,,,,,
।
।
।
।
রাজঃ জানু রঙের সাথে যদি ভাঙ নিয়ে আসি তো কেমন হবে 😊
মেঘ ঃ একদম নাহ কেউ ভাঙ নিয়ে আসবি না যানিস নাহ এটা খেলে নেশা চড়ে যাবে,,,, আর তোকে না বলেছি আমায় জানু জাকবি নাহ 😬
রাজঃ রাগ করে না জানু শুধু আজকের জন্য প্রিজ,,,,
মেঘ ঃ তোর যা ইচ্ছে তুই তাই কর, ,,,,,,,, (মেঘ আর একমুহূর্ত না দাঁড়িয়ে ওয়াসরুমে চলে যায়)
রাজঃ কি মানুষ মাইরি আমি কিছু বললেই এর বাথরুম চাপে ,,,,,, (কথাটা জোরে বলায় মেঘ শুনতে পায়)
মেঘ ঃ সালা লাথি চিনস 😐(ওয়াসরুমের দরজা হালকা খুলে)
রাজঃ না ভাই তুই তোর কাজ কর আমি বরং মুখে আঙুল দিয়ে রাখি🙆♀️
,,
।
।
।
বিকাল গড়িয়ে সন্ধা হয়ে আসছে এই টাইমে কেউ রঙ খেলেনা তবে বিয়ে বাড়ি বলে কথা রঙ খেলার মজাই আলাদা,,,,,, মেঘা,, আদুরী, রাজ, আর মেঘ রেড়ি হয়ে নিচে নামে,,, মেঘা একটা সাদা গ্রাউন পড়েছে,, আর আদুরী সাদা পাথরের কাজ করা সেলুয়ার কামিজ,,, বেশ এতেই তাদের সাদা পরি লাগছে,,, আমাদের মেঘ আর রাজ কেউ কম সুন্দর লাগছে নাহ ,,, সাদা পানজাবি পায়জামা,, এতেইপুরা মিল্ক কেন্ডি লাগছে,,,,,,,,,,, ওরা একসাথে নিচে নেমে বাগানে আসে,,, বাগানেই রঙ খেলার আয়জন করা হয়েছে,,,,,
রাজঃ তোকে খুব সুন্দর লাগছে,, (মেঘার কানে ফিসফিসিয়ে,,, দুপুরের বেপারটা নিয়ে এমনিতেই মেঘা লজ্জায় আছে,, তার উপর কানের কাছে ঠোঁট নিয়ে এসেছে এতেই মেঘা পুরো ফিজ্র হয়ে গেছে)
মেঘাঃ thank you 😅
রাজঃ শুধুই ধন্যবাদ,, আর কিছু নেই ,,,,
মেঘাঃ আছে তো,,,
রাজঃ তাহলে দে,,,,
মেঘাঃ এই নিন (এই বলে মেঘা রাজের মুখে রঙ ডেলে দেয় )
রাজঃ দাড়া তোকেও দিচ্ছি (রাজ আর মেঘা রঙ খেলতে বেস্ত হয়ে পড়ে)
।
।
আদুরী ঃ আচ্ছা আমায় কেমন লাগছে (মেঘের সামনে দাঁড়িয়ে 😊)
মেঘ ঃ পুরাই উগান্ডার পেত্নীর মতো লাগছে,,,,,,
আদুরী ঃ কিহহহহ আপনি এটা বলতে পারলেন 😶আমি ভেবেছিলাম আমি আপনাকে ফাস্ট রঙ দিয়ে দিব কিন্তু আপনি আমার পুরো মুডটাই নষ্ট করে দিলেন,,,,,,,
মেঘ ঃওসব ছাড় চল একটা গেম খেলি,,,
আদুরী ঃ কি গেম
মেঘ ঃ তুই যদি আমায় ধরতে পারিস তবেই তুই আমায় রঙ মাখতে পারবি,,
আদুরী ঃ আমি পারবো নাহ,,,
মেঘ ঃ তুই পারবি কি করে,, তুই আমাকে ধরতে পারবি না তাই না কর দিচ্ছিস,
আদুরী ঃ মুটেও না
মেঘ ঃ মুটেই হ্যা
আদুরী ঃ বললাম তো না,,
মেঘ ঃ বললাম তো হ্যা,,,,
আদুরী ঃ ঠিক আছে আমি আপনাকে ধরবো,,,
মেঘ ঃ ঠিক আছে ধরে দেখা , ,,
( ,, এই বলে মেঘ আর আদুরী দৌড়াতে লাগলো,,,,,,দৌড়াদৌড়ি করে আদুরী পায় হাপিয়ে যাবে,, তখন মেঘ ব্যাপারটা বুঝতে পেরে আদুরীকে ধরা দেয় ,,,,,,,,,,)
আদুরী ঃ ধরে ফেলেছি,,,,
মেঘ ঃ ওপস আমি তো হেরে গেলাম,,,, নে রঙ আমায় লাগা,, দাড়া আমি আগে তোকে লাগাই,,,
(মেঘ আদুরী কে রঙ লাগিয়ে দেয়,, আদুরী যেই রঙ লাগাতে যাবে কোথা থেকে রাইসা এসে মেঘের গালে রঙ লাগিয়ে দেয় )
মেঘ ঃ আরে এটা তুমি কি করলে ,,,,,,
রাইসা ঃ কেন রঙ দিলাম তোমায় তুমি খুশি হওনি,,,,,,,
মেঘ ঃ তোমাকে না বলেছি আমার আশে পাশে কম আসবে,, তার পরও কেনো আসো,, আর আদুরীর জাইগায় তুমি কেন রঙ দিলে,,,, আদুরী একি আদুরী কোথায়,,,তোমার জন্য যদি আদুরী আর আমার মাঝে সমস্যা হয়,,, তবে তোমার একদিন কি আমার,,,,,,,
রাইসা ঃমেঘ আমি তোমায় ভালোবাসি,,,, তুমি কেনো বুঝতে পারো নাহ,, আমি তোমায় কতটা চাই ,,, ওই গাইয়া মেয়টার মধ্যে তুমি কি পেয়েছো যা আমার মধ্যে নেই,,,
মেঘ ঃ স্টপ রাইসা ,,, আর একটা বাজে কথা বললে এখানেই পুতে রেখেদিব,, আদুরী আমার সে যেমনি হোক না কেনো আমি ওকে ওভাবেই ভালোবাসি,,, ভালোবাসতে গেলে সুন্দর যের্র প্রয়োজন হয় না,,, ভালোবাসার মানুষ কে এমনিতেই নিজের কাছে সুন্দর লাগে,,,,
রাইসা ঃ সেটাই তো বলছি আমি আমি তোমার টাকা কে নয় তোমাকে ভালোবাসি,, আর ওই আদুরী ও তোমার টাকা কে ভালোবাসে ,,,,
মেঘ ঃ একদম আদুরীর নামে বাজে কথা বলবে নাহ,, আর একটাও বাজে কথা শুনলে আমি কি করব আমি নিজেও জানি নাহ,,,,,,, গেট আউট,,, (রাগে 😬)
( রাইসা রাগে ওখান থেকে চলে আসে সোজা নিজের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়)
।
।
আদুরী ঃ মেঘ ভাইয়া আমায় ভালোবাসে নাহ,,, শুধু বকে আর ওই রাইসার সাথে হেসে হেসে কথা বলে,, আর ওই রাইসার কাছ থেকে রঙ ও লাগিয়ে নিলো,,,,,,, বাহহ (হাতে তালি দিয়ে) 👏
রাজঃ আরে আদুরী তুমি এখানে আর এইভাবে তালি দিচ্ছো কেনো,,
আদুরী ঃ কই তালি দিচ্ছি আমি তো মশা মারছি (মাতাল হয়ে)
রাজঃ তুমি এমন করছো কেন তুমি কি কিছু খেয়েছো,,
আদুরী ঃ হ্যা খেয়েছি তো এইটা (পিছন থেকে একটা গ্লাস এগিয়ে দিয়ে )
রাজঃ আরে তুমি ভাঙ খেয়েছো,,,,,,,
আদুরী ঃ কই নাতো আমি তো জুস খেয়েছি,, খুব টেস্টি খেতে আপনি খান,,,,,
রাজঃ না না তুমি খাও আমি খাব নাহ,,,,
আদুরী ঃ এহেহেহে😭😭😭😭আমি আপনার ছোট বোনের মতো আপনি না করতে পারলেন,,,,
রাজঃ একি তুমি কাদছো কেনো কান্না থামাও,,,,,
আদুরী ঃ আপনি যদি না খান তো আমি কান্না থামাবো নাহ 😭😭,,,,,
রাজঃ আসতাগফিরুল্লা বলে কি😵
আদুরী ঃ কি হলো খান,,,,,,
রাজঃ ঠিক আছে খাচ্ছি,,,, বিসমিল্লাহ আল্লাহ (এই বলে রাজ এক গ্লাস ভাঙ খেয়ে ফেলে ,, কিছুক্ষন পর রাজের মাথা বনবন করছে,,, রাজের নেশা চড়ে গেছে আর এক গ্লাস খেয়ে রাজ দপ করে আদুরীর পাশে বসে পড়ে,,,,)
আদুরী ঃ ভালো না খেতে (খুশি হয়ে)
রাজঃ হে খুব ভালো,,, 😆
মেঘের বাবা ঃ কি হচ্ছে এখানে
রাজঃ আরে শুশুর আব্বু আ্ম্মু, আব্বু ,, আচ্ছা আপনি আমায় বলোন তো আব্বু হবেন নাকি আম্মু ,,,
মেঘের বাবা ঃ কি সব বলছো এইসব রাজ,,,,,(দমক দিয়ে)
রাজঃ 😭😭এএএ আমায় বকে আদুরী দেখো আমায় বকে
আদুরী ঃ 😫😫আপনার কান্না দেইখা আমার ও কান্না পাই তাছে
মেঘের বাবা ঃ একি তোমরা এমন করছো কেনো কি হয়েছে তোমাদের,,,,
আদুরী ঃ কই কিছু হয়নি তো আমরা তো গলা পরিষ্কার করছি,,,
মেঘের বাবা ঃ কি গলা পরিষ্কার তাও কেদে কেদে,,,,,,,
রাজঃ না না এইটা খেয়ে এইটা খেলে গলা পরিষ্কার হয় (ভাঙ দেখিয়ে)
মেঘের বাবা ঃ সত্যি এইটা খেলে গলা পরিষ্কার হয় 😀আমার ও তো গানের গলা আমি একটু খাই,,,,, (ভাঙ হাতে নিয়ে)
আদুরী ঃ হেেয়ে খাও হেবি টেস্ট 😍
রাজঃ একদম ঠিক আদুরী এইটা খেয়ে নিজেকে কেমন রাজা রাজা ফিল হচ্ছে 😆
(আদুরী আর রাজের কথায় মেঘের বাবা ভাঙ পুরোটা খেয়ে ফেলে)
।
।
।
।
আর এইদিকে,,,,,
মেঘ ঃ মেঘা রাজ কোথায়
মেঘাঃ জানি না ভাইয়া আমি তো সেই কখন থেকে রাজ কে খোজে চলছি কথাও পাচ্ছি নাহ,,,,,
মেঘ ঃ চল ওই দিকটাই যাই,,,,
মেঘাঃ হুম ,,
(মেঘ আর মেঘা কিছু দুর গিয়ে যা দেখে তার জন্য মোটেও পস্তুত ছিল না,, এইসব কি দেখছে,,, মেঘের বাবা টেভিলের উপর বসে গান গাচ্ছে,, আর রাজ বালতির উপর বসে ঢোল পিটাচ্ছে,,তার তালে তালে আদুরী কোমরে উরনা গুজে নাচ্ছে আর হাততালি দেচ্ছে,,,,, মেঘের মাথা গুরছে, মেঘার মুখটা হা হয়ে গেছে 😱😨)
মেঘাঃ ভাইয়া এ আমি কি দেখছি,,, আচ্ছা আমি যা দেখছি তুমিও কি তাই দেখছো?৷
মেঘ ঃ আমি দেখছি পাবনা থেকে আগতো পাগল আমাদের বাড়িতে কি করে 😶আর তুই
মেঘাঃ ভাইয়া আমি তো দেখছি এই প্রথম কোন জামাই শুশুরের সাথে বসে কাকের গান শুনছে,😴😴
চলবে,,,
(কেমন হয়েছে বলবেন,,, আর সবাই মেঘ আদুরী, রাজ মেঘা এদের সবার বিয়েতে গ্রিফ্ট নিয়ে আসবেন, কেমন 😉😉)