তুমি আমার স্বপ্নচারিণী
উম্মে হাবিবা তনু
Part:1
আজ বিকেলটা খুব সুন্দর।আকাশে খন্ড খন্ড মেঘ দেখা যাচ্ছে।বৃষ্টি হবে হবে ভাব।অপলা একা বারান্দায় দাড়িয়ে আছে।এক দৃষ্টি তে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।
অপলা intermediate 2nd year e পরে।ভারী মায়াবী চেহারা।চোখ জোড়া টানা টানা,ঠোঁটের রং হালকা গোলাপি, গাঁয়ের রং উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণের।একবার তাকালে চোখ ফেরানো যায়না।অপলা খুব শান্ত শিষ্ট।কারো সাথে খুব একটা মিশেনা।ওর ভালো লাগেনা।প্রয়োজন ছাড়া ওর রুম থেকে বের ও হয়না।
অপলার আরো দুটি বোন আছে।ওর মা,বাবা দুজনই ওকে অনেক ভালোবাসে।তারপর ও ওর মনে হয় ওরা ওর মা বাবা না।প্রায় সব সময়ই এইটা নিয়ে ও ভাবে।ওর এইরকম ভাবার কিছু কারণ আছে।যদিও তা যুক্তি যুক্ত কারণ না।ও সেটাও বুঝে।
ওর মা বাবার সাথে রুনু ঝুনুর কত মিল।চেহারা আচরণ প্রায় সবকিছুর।কিন্তু ওর সাথে ওর মা বাবা বা রুনু ঝুনু কারোর ই কোনো মিল নেই।শুধু এইসব অমিল ই নয় আরো অনেক অমিল আছে।তাছাড়া ওর পাঁচ বছর বয়সের আগের কোনো স্মৃতি বা ছোটবেলায় কেমন ছিল বা কোনো ছবিও নেই।এইসব ব্যাপারে মা বাবা কে জিজ্ঞেস করলে এড়িয়ে যায়।কোনো কিছু দিয়ে কথা ঘুড়িয়ে নেয়।কখনওই এই ব্যাপারে তারা কথা বলেনা।ও খুব একটা জোর ও করে না।যা আড়াল করতে চায় করুক না।সত্যিটা হয়তো অনেক কঠিন।
অপলা খুব ভালো student। SSC তে যখন golden A+ পায় তখন ওর বাবা ওকে একটা নীল মলাটের ডাইরি দেয়। ও ভেবে পায়না কি লিখবে এতে।এতে কি লিখার আছে।ওর জীবনে কি এমন কিছু আছে যা লিখা যায়? ও তা জানেনা।
একদিন হঠাৎ ডাইরি খুলে বসে।ভাবে আজ সে কিছু লিখবে।কি লিখবে ভাবতে ভাবতে লিখা শুরু করে।
আমি
আমার নাম অপলা।আমি একা থাকতে পছন্দ করি।কারণ আমি কারো সাথে মিশতে পারিনা।বুঝে উঠতে পারিনা কিভাবে কথা বলবো।অনেকে ভাবে আমি অহংকারী। কলেজেও সবার সাথে মিশিনা।শুধু আমর best friend মৌনতার সাথে কথা বলি।আমার কোনো ছেলে friend নেই।এতে আমি নিজেকে lucky মনে করি।কেননা আমাদের ক্লাস এর সবার ই boy friend আছে।এমনকি আমার best friend এর ও আছে।ওর boy friend এর নাম পুলক।কিছুটা অদ্ভুদ প্রকৃতির ছেলে।তবে ওরা খুব happy। আমাকে সবসময় ওদের কথা বলে মৌনতা।মাঝে মাঝে আমার ও মনে হয় হয়ত একজন কেউ থাকা ভাল।কিন্তু সে ভাবনা সাময়িক।
আর কিছু লিখলো না।লিখার মত সত্যিই কিছু ওর জীবনে নেই।অপলা বিছানায় গা এলিয়ে দিল।সত্যিই আমার জীবনে কিছু নাই।
চলবে……
তুমি আমার স্বপ্নচারিণী
উম্মে হাবিবা তনু
Part:2
নদীর পানিতে সূর্যটা ঝলমল করছে,যেনো সূর্যের প্রতিচ্ছবি টা একটুকরো স্বর্ণ।নদীর নাম পদ্মা।নদীর ধারে আজ আনমনে বসে আছে সে।নিজেও জানে না সে কোনদিকে তাকিয়ে আছে।নদীর এই মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য্য আজ আর অভিভূত করেছেনা মাহিমকে।আনমনেই সে ভেবে চলেছে ছোট এই জীবনে যা চেয়েছে সবই সে পেয়েছে শুধু পায়নি তার স্বপ্নচারিণী কে।যাকে সে স্বপ্নে খুঁজেছে,স্বপ্নের সেই………..
হটাৎ ছোট একটা স্প্রিড বোডের শব্দে চমকে গেলো মাহিম।ভাবনায় ছেদ ঘটলো তার।সে বোডের তাকিয়ে আরো চমকে গেলো।তার চোখ আটকে গেল বোডে থাকা মেয়েটিকে দেখে। এ তো সে ,যাকে সে চেনে,বহুবার দেখেছে তাকে,কত রাত নির্ঘুম কেটেছে তার স্বপ্নে বিভোর হয়ে। হ্যা এইতো মাহিম এর স্বপ্নচারিণী।যাকে স্বপ্নে খুঁজে পায়।
হটাৎ করেই যেনো মনটা ভাল হয়ে গেল।মাহিম তার স্বপ্নচারিণীর ভাবনায় বিভোর হয়ে গেল।এতটাই বিভোর হয়ে গেল যে সে টেরই পেলনা বোডটা অনেক আগেই তার দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে গেছে।এত কাছে পেয়েও সে হারিয়ে ফেললো তার স্বপ্নচারিণীকে।
মাহিম এর যখন খুব মন খারাপ থাকে তখন সে পদ্মা নদীর একপাশে এসে বসে থাকে।তার স্বপ্নচারিণীর ভাবনায় মশগুল থাকে।ভাবে সে কি কখনো তার স্বপ্নচারিণীকে খুঁজে পাবে?সে কি তার মনের কথাগুলো বলতে পারবে?কি বলবে সে তার স্বপ্নচারিণী কে?আরো কত কী যে ভাবে।কিন্তু আজ সে ভাবছে এত কাছে পেয়েও সে তার স্বপ্নচারিণী কে হারিয়ে ফেললো!!মনে মনে নিজেকে ও অনেক…………
মাহিম ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে।বিএসসি 3rd year ।ওর ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিলো ও ইঞ্জিনিয়ার হবে।শুধুমাত্র ইচ্ছের জন্যই ওর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া।ওর বড় ভাই বাবার সাথে family business join করে।ওর বাবার ইচ্ছে ছিল মাহিম ও তাই করবে।কিন্তু ওর business ভালো লাগে না।
মাহিম বাড়ির ছোট ছেলে।সবার খুব আদরের।ওরা দুই ভাই এক বোন।ভাই সবার বড় নাম মোহন।তারপর বোন অহনা।ভাইয়ের একটা ছেলে ও আছে তূর্য।অহনার সবে বিয়ে হলো কিছুদিন হয়।
তুর্যের বয়স 3বছর।ছোট হলে কি হবে খুব পাকামো করে।মাহিম এর দিন কাটে ভার্সিটি,পড়াশুনা , বন্ধু দের সাথে বিকালে ক্লাবে আড্ডা দিয়ে।আর বাসায় তুর্যের দুষ্ট মিষ্টি পাকামো তে।বেশ চলে যায়।তবে সব পূর্ণতার মাঝে অপূর্ণতা তার স্বপ্নচারিণী।যে শুধুই স্বপ্নে আসে।
চলবে…..
সকল পর্বের লিংক
https://m.facebook.com/chayabithi.11/photos/a.158674299705436/158673836372149/?type=3