তুমি আমার স্বপ্নচারিণী
উম্মে হাবিবা এ
Part:48
অপলা আজ বড্ড বেশি চুপচাপ হয়ে আছে।মাহিম দেখছে।যখনই অপলা তাকাচ্ছে চোখাচোখি হয়ে যাচ্ছে আর অপলা ছোট করে হেসে আবার অন্যদিকে ঘুরে কি যেনো দেখছে।ওর চোখ দুটো আজ বড় কৌতূহলী হয়ে উঠেছে কিছু একটা দেখার আশায়।কিন্তু সেটা অপলার অজানা।মাহিম রুনু ঝুনুকে খেলতে বলে অপলার দিকে গেলো।অপলার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো।অপলা মাহিমের উপস্থিতি টের পেয়ে পিছনে তাকিয়ে আবার হেসে ঘুরে যেতে নিল।মাহিম দুহাতে অপলার কাধে হাত রেখে ওর দিকে ঘুরিয়ে দাড় করালো।অপলা মাহিমের দিকে তাকিয়ে আছে ওর কথারা আবার হারিয়ে গেছে মাহিমের স্পর্শে।
– কি হয়েছে তোমার?
– কোথায়?
– আজ যে খুব চুপ হয়ে আছো?
– নতুন জায়গাতো দেখছি।
– তুমি কি কোনো কারণে আপসেট?
– না।
– তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে কিছু খুজছো।
– না,কি খুজবো..(বলে আবার ঘুরে যেতে নিলে মাহিম বাধা দিয়ে আগের মত দাড় করিয়ে দিল)
– আমার দিকে তাকাও।
– (অপলা চোখ তুলে তাকালো)
– বল তোমার কি হয়েছে?
– আমার খুব অস্থির লাগছে।
– কেনো?
– জানি না।
– আমাকে বলবে না?
– আমি নিজেই বুঝতে পারছি না।
– আমাকে বলো তোমার ঠিক কি নিয়ে অস্থির লাগছে?
– জানিনা।
– তোমার যা মনে হচ্ছে তাই বলো।
– আমার বারবার মনে হচ্ছে এইখানে কেউ আমার জন্য অপেক্ষা করে আছে।আর সেই অজানা অনুভুতিরা আমার ভিতরে তোলপাড় করছে যত সময় যাচ্ছে তত অস্থিরতা বাড়ছে।
– মাঝে মাঝে আমাদের এমন হয় কোনো কারণ ছাড়াই।আবার মাঝে মাঝে হয় কারণে।তোমার সাথে যেদিন আমার সামনাসামনি দেখা হলো সেদিন তোমার মত আমারও এই অনুভূতি হয়।কিন্তু তোমার এমন মনে হচ্ছে কেনো?হয়তো এমনিতেই।এইখানকার সবার কথা শুনে তোমার মনে সবার জন্য আলাদা মায়া তৈরি হয়েছে তাই।
– জানিনা।তবে বারবার মনে হচ্ছে আমার সেই অপেক্ষার পালা শেষ হলেই হয়তো কিছু হারিয়ে ফেলবো।হাহাকার লাগছে।এই অস্থিরতার কি মানে আমি জানিনা।আমার খুব ভয় হচ্ছে।
– (অপলার হাত দুটো ওর হাতের মধ্যে নিল)এত ভয় পাচ্ছো কেন?আমি তোমার পাশে আছিতো।সব সামলে নিবো।
অপলা মাহিমের দিকে তাকিয়ে আছে।অপলও শক্ত করে হাত আকড়ে ধরে দাড়িয়ে আছে।হ্যাঁ,ও ভরসা পাচ্ছে।মাহিমের চোখে ভরসা খুঁজে পাচ্ছে ও।মাহিমের মাঝে ডুব দিয়ে ও সব ভুলে থাকতে পারবে সারাজীবন।
– জানো আমার মনে একটা অদ্ভুদ ভাবনা কাজ।যার কোন মানে নেই।আমার কেনো যেনো মনে হয় বাবা মা আমার সত্যিকারের মা বাবা নয়,আমি জানি এরকম ভাবার কোনো কারণ নেই তবুও আপনাতেই এই ভাবনা চলে আসে।কিন্তু কাল রাতে আমার সেই ধারণাটা কেন যেনো সত্যি মনে হচ্ছে।
– (মাহিম খুব মনোযোগ দিয়ে কথাগুলো শুনছে।কোন প্রশ্ন না করে অপলার হাতটা শক্ত করে ধরে।হাত ধরে রাখার জন্যই বুঝতে পারছে এই কথা গুলো বলার সময় কতটা কেপে কেপে উঠছে ও )
– (একটু থেমে অপলা আবার বললো)কাল রাতে মা বাবা মাঝরাতে আমার ঘরে আসে।মা আমায় খুব আদর করে আর পাগলের মতো কান্না করছিলো আর বলছিলো তুই আমার মেয়ে।অন্য আর কারোর না।সারাজীবন তোকে আমার বুকেই আগলে রাখব।ভয় পাসনা মা আমিই তোর মা আমার বুকেই তোকে রাখবো।কেউ নিতে পারবে না আমার থেকে তোকে।(অপলা নিরবে কাদঁছে)
– (মাহিম হাত দুটো ছেড়ে দিয়ে দুহাতে অপলার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল,মুখটা ওর দিকে তুলে ধরলো)তাকাও আমার দিকে,কিছু হবে না।তুমি হয়তো স্বপ্ন দেখছো।বোকা মেয়ে এই জন্য এত ভয় পেতে হবে?
– (অপলাও মাহিমের দিকে তাকিয়ে আছে।ও খুব করে চাইছে এইটা যেনো স্বপ্নই হয়)
– (মাহিম চায় এই কথা গুলো এইখানেই শেষ হয়ে যাক,যদি ওর ফ্যামিলির কেউ জানে তাহলে বড় কোনো ঝামেলা তৈরি হবে।)
রুদ্রর ডাকে দুজনই চোখ সরিয়ে রুদ্রর দিকে তাকালো।রুদ্র ওদের দিকেই এগিয়ে এসে মাহিমকে একটু দূরে সরিয়ে কিছু একটা বললো।এখন মাহিমকেও রুদ্রর মত চিন্তিত মনে হচ্ছে।সিরিয়াস কোনো কিছু নিয়ে কথা বলছে বলে মনে হচ্ছে।অপলা একবার ভাবলো সামনে গিয়ে শুনবে কি বলছে।কিন্তু পরক্ষণেই মনে হলো ওর শুনার মত হলেতো ওর সামনেই বলতো।তাই যেখানে দাড়িয়ে ছিল সেখানেই দাড়িয়ে রইলো।কিছুক্ষণ পর মাহিম এগিয়ে এসে বলল,তুমি সবার সাথে থাকো আমি একটু আসছি।
অপলার উত্তরের অপেক্ষা না করে দ্রুত হাঁটতে শুরু করলো রুদ্রকে নিয়ে।রিজভীকেও ডেকে পাঠালো।খুব বেশি সিরিয়াস কিছু একটা ঘটেছে কিন্তু কি?ও কি একবার ভিতরে যাবে?ওর খুব করে ইচ্ছে হচ্ছে ভিতরে যেতে।ওর বাবাকে মাহিমের সাথে কথা বলতে দেখে আরেকটু এগিয়ে গেলো।কি বলছে শুনতে।কিন্তু ওর মা হটাৎই এসে বলল,চল পুকুরের ঐদিকটায় যাই।মা পরে যাই আমি একটু ভিতরে যাবো।ভিতরে পরে যাবো একসাথে এখন চল পুকুরের দিকে যাই।ইচ্ছে না সত্বেও ওকে যেতে হলো।কিন্তু কেনো যেনো বারবার ইচ্ছে করছে ভিতরে ছুটে যেতে।কিন্তু কেনো??
মাহিমদের হন্তদন্ত হয়ে ভিতরে যেতে দেখে হিশাম আহমেদ এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন কিছু হয়েছে কিনা?মাহিম তাড়াহুড়া করে বলল,আংকেল ভিতরে একজন খুব অসুস্থ,এক্ষুনি হয়তো হসপিটালে নেওয়া লাগবে।মাহিম আর সেখানে না দাড়িয়ে ভিতরে গেলো।সত্যিই অনেক খারাপ অবস্থা।শ্বাস উঠে গেছে।বারবার কিছু একটা বলতে চাইছে কিন্তু সবাই মিলে চুপ করিয়ে দিচ্ছে।এখন কথা বললে কষ্ট হবে তাই।মাহিমরা এগিয়ে গিয়ে বললো,আণ্টি আপনার কথা সবাই শুনবো তার আগে আমাদের সাথে হসপিটালে চলুন,আপনি সুস্থ হলে আপনার সব কথা শুনবো।কিন্তু উনি বারবার ইশারায় বারণ করছে।উনি কোথাও যেতে চান না।আর অস্পষ্ট গোঙানির স্বরে কিছু বলছে।শুধু রা..নু শব্দটা হটাৎ হটাৎ শুনা যাচ্ছে।উনার সন্তানের নাম।শেষ সময়ে এসেও হয়তো সন্তানকে মনে করছেন।উনার সন্তানের খোজ এইখানের কেউ জানে না।শুধু নামটা উনার মুখে শুনেছে।বেঁচে আছে নাকি তাও অজানা।উনাকে এইখানে কে নিয়ে এসেছে তাও কেউ সঠিকভাবে জানেনা।লোকমুখে কেউ কেউ শুনেছে মালিক পক্ষের কেউ বা কারা অনেকবছর আগে রেখে গেছে।এইটুকুই উনার সম্পর্কে সবাই জানে।
হিশাম আহমেদ দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছেন অনেকক্ষণ।রানু নামটা শুনেই উনার ভিতরটা কেপে উঠছে।এত বছর পরও এই নামটা শুনবে ভাবেননি।ভিতরে যাওয়ার সাহস পাচ্ছেননা যদি উনাকে দেখে আরও কিছু বলে ফেলে?যদি মৃত্যু পথযাত্রী এক মা তার সন্তানকে শেষবার দেখতে চায় তার কাছে?তাহলে উনি কি করবেন?এইসবই ভাবছিলেন।তখনই মাহিম পিছন ঘুরে উনাকে গেটের সামনে দাড়িয়ে থাকতে দেখে ভিতরে আসতে বলল।মাহিমের শব্দ উনার কানে পৌঁছেছে ঠিকই কিন্তু মাহিম সরে যাওয়ায় রোমানার দৃষ্টি হিশাম আহমেদ এর উপস্থিতি টের পেয়ে গেছে।
উনাকে দেখে রোমানা খুব ছটফট করতে থাকে।খুব বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়ে।উঠে বসার চেষ্টা করছেন উনি।উনাকে আটকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু উনি কংকালসার হাত দুটো নেরে কিছু বলতে চাইছে।উপস্থিত সবাই কিছুটা ভরকে গেছে।কিন্তু হিশাম আহমেদ ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন।উনি জানেন এই উত্তেজনার মানে।এত বছর পরও কেউ কিছু ভুলে যায়নি।হয়তো আজই তাকে এক কঠিন পরীক্ষার সামনে দাড়াতে হবে।হয়তো এত চেষ্টা করেও তিনি একটা ভয়ংকর অতীতকে মুছতে পারেন নি।হয়তো আজই সবাই সবটা জেনে যাবে।সত্যি যে কখনো গোপন থাকে না।তার মোকাবিলা একদিন না একদিন করতেই হবে।তিনি শুধু অপলার কথা ভাবছে।এই কঠিন সত্যিটা মানতে পারবেতো?সেই ভয়ঙ্কর অন্ধকার অতীতটা কি সবার সামনে চলে আসবে???
চলবে…………..
তুমি আমার স্বপ্নচারিণী
উম্মে হাবিবা তনু
Part:49
ওল্ডহোম ম্যানেজমেন্ট এর একজনও সেখানে ছিল।হিশাম আহমেদকে দেখে এগিয়ে এসে একটু আড়াল হয়ে বলল,স্যার ভোর রাতের দিকে উনার শরীর খারাপ বাড়তে থাকে কিন্তু উনি কিছুতেই হসপিটালে যাবেন না।হিশাম আহমেদ প্রচন্ড রেগে গেলেন।একপ্রকার গর্জন করে বললেন,তোমরা আমাকে কেনো জানাওনি?লোকটি মাথা নিচু করে বলল,স্যার আপনি এইখানে আজ আসবেন তাই আর বিরক্ত করিনি।হিশাম আহমেদ এর প্রচন্ড রাগ হচ্ছে।উনি গটগট করে সেখান থেকে চলে যেতে নিয়েও কি ভেবে যেনো রোমানার ঘরে ঢুকলেন।হোমের প্রায় সবাই এইখানে আছে।তিনি ভিতরে ঢুকে সবাইকে অগ্রাহ্য করে রোমানার দেখাশুনার যে নার্সকে রাখা হয়েছে তাকে ধমক দিয়ে বলল,এইখানে এত ভীড় কেনো?নার্স আমতা আমতা করে বলল,স্যার সবাই উনাকে দেখতে এসেছেন।তিনি এইবার আরও কঠিন হয়ে বললেন,এত শব্দ হইহট্টগোল হলে রোগীর আরো কষ্ট হবে।ভীড় কমাও এইখান থেকে।নার্স তাই করল।মাহিমরাও বের হয়ে গেল।
এখন ঘরে শুধু হিশাম আহমেদ আর নার্স আছে।উনি নার্সকে বললেন,ম্যানেজারকে ডেকে আনতে।নার্স হিশাম আহমেদ এর কথা মত বের হয়ে গেল।হিশাম আহমেদ একটা চেয়ার টেনে রোমানার সামনে বসলো।কি বলতে চাচ্ছো তুমি আমি বুঝতে পারছি।এত বছর পরও তুমি সেখানেই দাঁড়িয়ে আছো বোকার মতো।বর্তমানে তোমার মেয়ে বলে কেউ নেই।রানু নামের কোনো অস্তিত্বও এখন কারো কাছে বেঁচে নেই।তাহলে কেনো শুধু শুধু অতীত টেনে আনছো?তোমার চিকিৎসার সব ব্যবস্থা এইখানেই করা হবে।তোমাকে কোথাও যেতে হবে না।এই হোমের বাইরে তোমাকে বের করা যাবেনা।খুব ভালো অতীত তো তোমার(তিরস্কারে ভাষায় বললেন কথাটা)।রোমানা নামের কংকালসার মহিলার দুচোখ গড়িয়ে অশ্রুফোঁটা গড়িয়ে পড়ল।তিনিতো নিজ হাতে সে অতীতে পা দেয়নি।পরিস্থিতি তাকে সেখানে ঠেলে দিয়েছিল।তার পাপের ফল তো এত বছর ধরে সে পাচ্ছে,নিজের মেয়েটাকে চোখের দেখাও দেখতে পারে না।
অপলা আর ওর মা পুকুর পাড়ে অনেকক্ষণ হাঁটল।অপলার মন বড্ড অশান্ত হয়ে আছে।ওর খুব ইচ্ছে করছে রাতের কথাটা মাকে জিজ্ঞেস করতে।কিন্তু পারছে না অসস্তি হচ্ছে যদি স্বপ্ন হয় তাহলে মা কি ভাববে?ওর মা ওর হাত ধরে হাঁটছে।ওর মা খুব স্বাভবিকভাবেই কথা বলছে।তাহলে হয়তো কাল রাতে স্বপ্নই দেখেছিলাম ভেবে কিছুটা নিশ্চিন্ত হলেও পুরোপুরি পারছে না।মোমেনা চৌধুরী অনেকক্ষণ রেহনুমা আহমেদকে খুঁজছেন।মা মেয়েকে হাঁটতে দেখে এগিয়ে এলেন তিনি।মা মেয়েতে কি এত কথা হচ্ছে?রেহনুমা আহমেদ বললেন,এমনি হাঁটছিলাম।অপলা হাসলো।অপলা মা তুমি যাও লিপিদের সাথে গল্প করো ওরা ঐদিকে আছে।অপলা যেনো এই সুযোগের অপেক্ষায় ছিল।ওর মা ইতস্তত করছিল কিন্তু অপলা খুশি মনে জি আণ্টি বলেই চলে গেল।
বয়স্কমতন একজন লোক খুব বিনীত ভঙ্গিতে রোমানার ঘরে প্রবেশ করলো।বুঝাই যাচ্ছে মালিকের প্রতি অত্যন্ত অনুগত্য তিনি।ইনি এইখানকার ম্যানেজার বখশি সাহেব। বিনীতভাবে সালাম দিলো মালিককে।কিন্তু হিশাম আহমেদ তার কোনো জবাব না দিয়ে বললেন,হসপিটাল টীমকে খবর পাঠাও।এইখানেই ওর চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করো।বখশী সাহেব আবার বিনীত ভঙ্গিতে মাথা নেড়ে সায় দিলেন।হিশাম আহমেদ হাতে ইশারায় উনাকে যেতে বললেন।বখশী সাহেব গেট পর্যন্ত গিয়ে আবার ফিরে এলেন,মাথা নিচু করে মালিকের সামনে দাড়িয়ে আছেন।তার ভঙ্গি বলছে তিনি কিছু বলতে চান।হিশাম আহমেদ উনার দিকে তাকালেন।তিনি জানেন ম্যানেজার দরকার ছাড়া বিশেষ কথা বলেন না।প্রভুভক্ত দাসের মত মালিকের আদেশের অপেক্ষায় থাকে।এরা খুব বিশ্বস্ত প্রকৃতির।হিশাম আহমেদ উনাকে যথেষ্ট বিশ্বাস করেন।
– কিছু বলবে?
– জি স্যার।
– বলো কি বলবে?
– স্যার কিছু মনে করবেন না আমি ছোট মাপের মানুষ ঠিক ভুল বিশেষ বুঝি না।
– এত কথা না বলে যা বলার তাই বল।
– স্যার ওর এখন চিকিৎসার বোধ হয় দরকার হবে না।
– (সরু চোখে তাকালেন)তোমার কথা বুঝলাম না।
– স্যার আমার মনে হয় ওর সামনে অন্তিমকাল উপস্থিত।চিকিৎসা করে আর কিছু হবে কি?
– তুমি কি বলতে চাইছো একে এইভাবে ফেলে রাখতে!
– না স্যার আমি সে কথা বলছি না।
– তুমি কি আদেও কিছু বলবে?
– স্যার আপনি অনুমতি দিলে একটা কথা বলবো।
– বলো।
– আমার মনে হয় একবার যদি অপলা ম্যাডামকে ওর সামনে আনা….
– যা বলছো সেটা এইখানেই শেষ।
– কিন্তু স্যার ওর মেয়েকে ও এই শেষ সময়ে দেখবে না?
– কে ওর মেয়ে?অপলা আমার মেয়ে।
– স্যার সত্যিটা তো ভুলে গেলে হবেনা একদিন না একদিন সামনে…
– এই ব্যাপারে আর কোনো কথা শুনতে চাইনা।তুমি এক্ষুনি আমার চোখের সামনে থেকে বিদায় হও।
– স্যার আর একটা কথা ছিল।
– এই ব্যাপারে কিছু শুনতে চাইনা।
– রোমানা একটা ডাইরি আমার কাছে দিয়ে রাখছে।
– কিসের ডাইরি?
– আমাকে সেটা বলেনি আর আমি কখনো খুলেও দেখিনি।
– তাহলে দিয়েছে কেনো?
– বলেছে ও যখন মারা যাবে তখন যেনো আপনার হাতে দেই আর বলি যেনো রানু মানে অপলা ম্যাডামকে দিতে বলি।
– (হিশাম আহমেদ রাগে গজগজ করতে লাগলেন)ওই ডাইরি পুড়ে ফেলো আর আমার সামনে যেনো তোমাকে না দেখি।
– জি স্যার।
মাথা নিচু করে বখশী সাহেব সেখান থেকে চলে গেলেন।উনি যাবার আগেই সেখান থেকে দুজোড়া অশ্রুসজল চোখ আড়ালে লুকিয়ে গেলো।
চলবে……….
সকল পর্বের লিংক
https://m.facebook.com/chayabithi.11/photos/a.158674299705436/158673836372149/?type=3