তুমি নামক প্রাপ্তি’ পর্ব-১৪

0
2044

#তুমি_নামক_প্রাপ্তি
#part:14
#Suraiya_Aayat

রুমের মধ্যে সানা বসে আছে, মুগ্ধতা ঘুমিয়ে পড়েছে অনেক আগেই ৷ অনেকক্ষণ ধরে বসে থাকার পরও আহান আসছেনা দেখে এবার মনের মাঝে থাকা চঞ্চলতার মাত্রা বৃদ্ধি পেতেই সানা পায়চারি শুরু করে দিল ৷ রুম জুড়ে পাইচারি করছে আর অপেক্ষা করছে কখন আহান বাসায় আসবে ৷ ঘড়ির কাটার দিকে তাকিয়ে দেখল রাত এগারোটা, কই অন্যদিন তো দেরি হয়না আজকে কি তাহলে কাজের চাপটা একটু বেশি ! কথাগুলো ভেবে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে আবার বিছানায় বসতেই দরজায় খটখট আওয়াজ শুনেই হুড়মুড় করে দরজার দিকে এগিয়ে গেল ৷ ও ভাবলো হয়তো আহান এসেছে, তাড়াতাড়ি করে দরজা খুলতেই দেখল আফসানা বেগম দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন , উনার চোখ মুখে একরাশ বিষণ্ণতার ছাপ , উনার চোখ মুখের এমন বিষন্ন হওয়ার কারন সানা কিছুটা হলেও অনুমান করতে পারলো যে দুপুরে যা যা ঘটেছে সবই তারই প্রভাব ৷ উনাকে দেখে খানিকটা থতমত খেয়ে বললো
” মা তুমি এত রাত্রে ! এখনো ঘুমাওনি যে ৷”

আফসানা বেগম মুখটা তুলে সামনের দিকে তাকিয়ে বলল
” রুমে আসতে পারি ?”

কথাটা শুনে সানা বলে উঠলো
” তুমি এমন টা বলছো কেন মা , এই ঘর সংসার সবই যে তোমার, যখন খুশি তুমি আসবে এতে জিজ্ঞাসা করার কিছু নেই ৷”

আফসানা বেগম তাচ্ছিল্যের একটা হাসি হেসে বললেন
” কোন কিছুই আমার না ,সবটাই একটা তাসের খেলা ঘর যেখানে সামান্য দমকা একটা হাওয়া দিলেই ভেঙ্গে পড়বে সবটুকু ৷ বিশ বছর ধরে সমস্ত দমকা হওয়া এভাবেই আটকে রেখেছি তবে আর কতদিন এইভাবে সমস্তটাকে আগলে আগলে রাখতে পারবো জানিনা ৷”

সানা মুখে একরাশ কালো মেঘ নিয়ে বললো
” এরকম বলছো কেনো কিছু হয়েছে ?”

আফসানা বেগম দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললেন
” নাহ কিছু না, আসলে অন্যদিন আহান তাড়াতাড়ি ফিরে আসে তো আর আজকে এতো রাত হয়ে গেল তাও ফিরলো না তাই দেখতে এলাম আরকি ৷”

“হ্যাঁ আজকে উনি এখনো ফেরেননি, হয়তো কোনো অপারেশন বা জরুরী কাজ পড়ে গেছে ৷ চলে আসবে চিন্তা করবেন না ৷ তুমি ঘরে এসে বসো আমি এক্ষুনি ফোন করছি ৷”

আফসানা বেগম ভাবুক সুরে বললেন
” এখন আর ফোন করার দরকার নেই হয়তো বাসায় ফিরছে গাড়ি চালাচ্ছে আর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করো চলে আসবে ৷”

সানা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো ৷

” মুগ্ধতা দিদিভাই ঘুমাচ্ছে তো ?”

” হমম, ও অনেকখন আগেই ঘুমিয়ে পড়েছে ৷”

” আচ্ছা বেশ , তুমিও অপেক্ষা করো আর কিছুক্ষণ ৷”

কথাটা বলেই পিছন ঘুরে চলে যেতে নিলেই হঠাৎ থেমে গিয়ে সানার দিকে ঘুরে বলল
” আজকে দুপুরে যা যা হয়েছে আমি জানি তুমি সবটাই জানো ৷ তাই কথাটা আমার আর তোমার মধ্যেই গোপন থাকলেই ভালো , এটা একটা সোনার সংসার নামক খেলা ঘর যা যথেষ্ট বিধ্বস্ত তাই আমি চাইনা এই কথাগুলো আমার ছেলের কান অব্দি পৌঁছোক, আমি চাইনা আমার এই সংসারটা ভেঙে যাক, আমার ছেলের তার বাবার প্রতি যতোটাও বা শ্রদ্ধা ভক্তি আছে সমস্ত টা শুনলে হয়তো তাও থাকবেনা , আমি চাইনা মানুষটা সকলের সামনে ঘৃণার পাত্র হোক ৷ আশা করি তুমি ব্যাপারটা বুঝবে ৷”

কথাটা শুনতেই সানা অবাক হলো, উনি কি করে জানলেন যে সানা সত্তিটা জানে, তাহলে উনি কি সানার উপস্থিতি টের পেয়েছিলেন নাকি ওর হাবভাব এ বুঝে গেছেন ! তবুও এই মুহূর্তে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো অর্থাৎ ও আহান কে কিছু জানাবে না৷

সানার সম্মতি পেয়ে আফসানা বেগম চলে যেতে নিলেই কোন কিছুর ভয়ে সানা কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠল
” আজকে বাবা জানতে চাইছিলেন যে আরু এখন কোথায়, আর আমি ভয়ে বলে ফেলেছি যে আরু আর্শিয়ানকে নিয়ে ইনানী বিচ গেছে ৷

কথাটা শুনে আফসানা বেগম সানার দিকে ঘুরে মুচকি হাসি দিয়ে বললেন
” পারলে নামাজের মোনাজাতে আমার মেয়েটার জন্য দোয়া করিও , যেন সে কোনো বিপদে না পড়ে ৷ তুমি অজান্তেই যে তার অনেক বড়ো ক্ষতি করেছো মা সেটা হয়তো তুমি জানোনা ৷”

কথাটা বলে আফসানা বেগম চলে গেলেন ৷ উনি এখন নামাজে বসবেন তার মেয়ে এবং নাতির জন্য দোয়া করতে ৷ তবে আরমান সাহেবের জন্য ওনার মেয়ে আর নাতির কোন ক্ষতি হয় তাহলে উনি ছেড়ে দেবেন না কাউকেই ৷

আফসানা বেগমের কথা শুনে সানার সমগ্র শরীর জুড়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো, অনেক বড় একটা ভুল করে ফেলেছে ও৷ ওর জন্য আরুর কোন ক্ষতি হলে ও নিজেকে কখনোই ক্ষমা করতে পারবে না ৷
কাঁপা কাঁপা হাতে দরজা বন্ধ করে বিছানায় বসলো , এখন ও কি করবে !

💕

কালকে আরু আর আর্শিয়ান ফিরে যাবে ঢাকায় আজকে ওদের ইনানী বিচে শেষ দিন,ইচ্ছা ছিলো কক্সবাজার ঘোরার কিন্তু এখন আর যাবেনা স্বল্প সময়ের মধ্যে ৷ আর্শিয়ান কিছুটা বড় হলে আর্শিয়ানকে নিয়ে তখন আসবে কক্সবাজার ৷

কক্সবাজার থেকে ইনানীতে আসতে গিয়ে আরু লক্ষ করেছিলো হিমছড়ি ঝরনা। হিমছড়ি পাহাড়ের চূড়া ঝরনার জলের প্রবল স্রোত সমুদ্রে এসে মিশছে ৷ হিমছড়ি থেকে সমুদ্র দেখতে অপরূপই লাগে। মাঝ পাহাড়ের লতা-পাতার ফাঁক গলিয়ে সমুদ্র দর্শন দারুণ অনুভূতির জন্ম দেই ।
আরুর পাহাড় খুব প্রিয় তাই সমুদ্র ঘুরতে এসে পাহাড় ঘুরে ফেললেও মন্দ হয় না ৷
তাই আরশিয়ানকে নিয়ে বেরিয়েছে ৷

আরুর রিসোর্ট থেকে হিমছড়ি 6 থেকে 7 কিলোমিটার দুরে ৷ সেখানে যাওয়ার জন্য আরু আর আর্শিয়ান সিএনজি তে উঠলো, যেতে বেশি সময় লাগবে না, হাতেগোনা 10 থেকে 12 মিনিট মতো লাগবে ৷
আশেপাশের অপরূপ সৌন্দর্য দেখে আর্শিয়ান বিমোহিত হচ্ছে এর আগে কখনো ও ঘুরতে আসেনি আর কখনো এতো সৌন্দর্য চোখে দেখা হয়নি ৷
আরুশিয়ান সবকিছু দেখছে আর কৌতুহলী হয়ে আরুকে এটা ওটা জিজ্ঞাসা করছে , আরুর ও ভালো লাগছে বেশ ছোট্ট একটা বাচ্চার এতো কৌতুহল দেখে ৷

” আফা আইয়া পড়ছি ৷”

আরু প্রকৃতির ঘোর কাটিয়ে বলল
” ওহহ আচ্ছা আমি খেয়াল করিনি ৷ ”

কথাটা বলে পাহাড়ে ওঠার জন্য গেটটার দিকে তাকিয়ে রইলো ৷সব মানুষ সেখান দিয়ে প্রবেশ করে পাহাড়ে উঠছে ৷

” ভাইয়া আপনার ভাড়াটা কতো ?”

” 30 টাকা করে ভাড়া আপা, আপনাদের 2 জনের 60 টাকা ভাড়া দেন ৷”

আরু টাকাটা দিয়ে সিএনজি থেকে নেমে ওনাকে জিগ্গাসা করলো
” ভাইয়া এখানে সিএনজি এভিলেবল তো !”

” হমমম আপা পাওয়া যাই কিন্ত অনেকে মাঝেমধ্যে বেশি টাকা চাই তাই একটু বুঝে শুনে উঠিয়েন ৷”

” আচ্ছা ধন্যবাদ ৷”

কথাটা বলে আর্শিয়ানের হাত ধরে রাস্তা পার করতেই ফোনে ফোন আসলো ৷
ফোনের দিকে চোখ বুলাতেই দেখলো মিনহাজ সাহেবের ফোন ৷
আরু একটু বেশ অবাক হলো , তবুও মুচকি হেসে ফোনটা ধরে বলল
” আসাসালামু ওয়ালাইকুম আঙ্কেল কেমন আছেন ?”

উনি মুচকি হেসে আরুর কথার উত্তরে বললেন
“ওয়ালাইকুম আসসালাম , এইতো ভাল আছি আমি ৷ যাক তোমার মুখে sir এর বদলে আঙ্কেল কথাটা শুনে খুশি হলাম , দ্বিতীয় বার মনে করিয়ে দিতে হলো না আরকি ৷”

কথাটা শুনে আরু একটু শব্দ করে হেসে ফেললো, এক হাতে ফোন কানে ধরে আছে আর আরেক হাতে আর্শিয়ানের হাত শক্ত করে ধরে আছে আর আর্শিয়ান এদিকে ওদিকে ঘুরে ঘুরে তাকিয়ে দেখছে সব ৷

” তোমরা তো কালকে ফিরছে তাই না !”

” হ্যাঁ স্যার, কালকে ফিরছি তবে জায়গাটার প্রতি বড্ড মায়ায় পড়ে গেছি ৷”

” কোন জিনিসের প্রতি অতিরিক্ত মায়া ভালো নয় মা , মায়া কাটাতে অনেক কষ্ট হয় ৷”

কথাটা বলে উনি একটা দীর্ঘ শ্বাস নিলেন নিয়ে বললেন
“তুমি এখন কোথায় আছো?”

” এইতো আঙ্কেল আমি আর আর্শিয়ান হিমছড়িতে এলাম , ইনানী বিচের কাছে জায়গাটা খুব সুন্দর আসার পথেও দেখলাম তাই ঘুরতে চলে এলাম আর কি !”

উনি একটু জোরেই হেসে বললেন
” তা বেশ বেশ, ভালোই করেছো ৷
ওখানে কোনরকম কোন সমস্যায় পড়লে আমাকে বলবে কেমন ৷

” আচ্ছা আঙ্কেল ৷”

কথাটা বলে ফোনটা কেটে দিলো আরু ৷ ফোনটা কেটে ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখতেই দেখল আরশিয়ান চারপাশে ঘুরে ঘুরে দেখছে ৷

কিছুটা এগিয়ে যেতেই বুঝলো যে এখানে ঢুকতে গেলে টিকিট কাটতে হয় ৷
টিকিট কাটতে গিয়ে বলল
” ভাইয়া দুটো টিকিট দেবেন ৷”

” আচ্ছা ৷ এটা কি আপনার ছেলে ?”
( আর্শিয়ানের দিকে লক্ষ করে )

” হমম ৷ কেন বলুন তো ৷”

” নাহ কিছু নাহ এমনিই ৷”

টিকিট দুটো নিয়ে চলে যেতে নিলেই টিকিটের সেই লোকটা বলে উঠলো
” আপা ওপরে উঠলে উঠতে কষ্ট হবে,যত ওপরে উঠবেন ততো অক্সিজেন কম পাবেন আর এটা শুধু আপনার সাথে না সবার সাথেই হয় তাই সকলেই টক জাতীয় কোন পানীয় বা জুস জাতীয় জিনিস নেই,তা আপনি কিছু নেবেন না !”

কথাটা শুনে আরূ অবাক হলো না কারণ এই সমস্ত ব্যাপারগুলোকে ও খুব ভালভাবেই জানে তাই ও লোকটাকে উদ্দেশ্য করে বলল
” ওগুলো এখানে কোথায় পাবো ভাইয়া?”

” ডানদিকের যে শপ দুটো দেখছেন ওখানে পাবেন ৷”

আরু ওনার কথা শুনে আর্শিয়ানের হাত ধরে দোকানের সামনে গিয়ে বলল
” ভাইয়া দুটো লেমন সোডা দিয়েন ৷”

আরুর কথা শুনে লোকটা সোডা বানাতে লাগলো ৷
তা দেখে আরু অবাক হয়ে বললো
” ভাইয়া এখন বানাচ্ছেন যে , বোতলে করে যেগুলো পাওয়া যাই আমি সেগুলো চাইছিলাম ৷”

লোকটা অদ্ভুদ একটা হাসি হেসে বলল
” নাহ ওগুলো পাওয়া যাই না ৷”
ওনার কথা শুনে আরু আর বেশি কথা বাড়ালো না , চুপচাপ সোডা নিয়ে আর্শিয়ানকে নিয়ে চলে গেল ৷

উপরের দিকে যত যাচ্ছে তত অক্সিজেনের মাত্রা কমেছে আর সামান্য নিঃশ্বাসের একটু সমস্যা হচ্ছে আরুর, আর মাঝে মাঝে হাঁপিয়ে যাচ্ছে ৷ এমনিতেই আরুর একটু নিশ্বাস এর সমস্যা ৷

হঠাৎ এমনটা হওয়াই আর্শিয়ান আরুর দিকে তাকিয়ে বলল
” মাম্মাম তোমার কষ্ট হচ্ছে !”

আরু আর্শিয়ানের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল
” না পাপা আমার কিছু হয়নি, আমি ঠিক আছি ৷”
বলে আবার চলতে শুরু করলো ৷

কিছুটা যাচ্ছে আর আরু হাপাচ্ছে , এখন যদি ওর কিছু হয় তাহলে ও কাকে সাহায্যর জন্য বলবে , এগুলো ভাবছে ৷ ফিরে যাওয়ার কথা ভাবতেই মাথায় আসলো যে এতোটা পথ যখন এতো টাকা খরচ করে এসেছে তখন পুরোটা ঘুরেই তারপর যাবে ৷

আরু ভবলো একটু বসলেই ঠিক হয়ে যাবে তাই আরো কিছুটা ওপরে গিয়ে বসার একটা জায়গায় বসে আর্শিয়ানকে পাশে বসিয়ে আরশিয়ানের ছোট্ট হাতটা চেপে ধরলো ৷

হঠাৎ করে আরুর শরীর ঝিমিয়ে যাচ্ছে দেখে ব্যাগ থেকে সোডা বার রে কিছুটা খেয়ে চোখ বন্ধ করতেই মাথাটাও কেমন ভারভার করলো, নানান ভাবনা চিন্তা ওর মাথায় ঘুরছে, তাই হয়তো এমন টাই হচ্ছে বলে যনে করলো ৷
নিমেষেই আরু রিতীমতো ঝিমিয়ে গেছে, চোখটাও বুজে আসছে দেখে আর্শিয়ান বললো
ও মাম্মাম কি হলো তোমার , কথা বলো মাম্মাম ৷”

আরু মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে, মাথার ভিতরে ভনভন করছে, কোন শব্দ শুনতে পাচ্ছে না আশেপাশের ৷
আরশিয়ান ওকে ডাকছে কিন্তু আরু রেসপন্স করছে না দেখে আর্শিয়ান এবার আরুর হাত ধরে জোরে জোরে ডাকছে ৷
” তোমার কি হলো মাম্মাম , কথা বলছো না কেন, বলো না কি হয়েছে তোমার ৷”

আর্শিয়ান এবার কাদছে , ও ছোট্ট মানুষ এই মুহুর্তে কি করা উচিত তাও জানে না ৷

আরু নেতিয়ে পড়েছে , আর্শিয়ান কাদতে কাদতে দেখলো দূরে দাঁড়িয়ে থাকা একটা লোক ওকে ডাকছে, লোকটাকে দেখে আর্শিয়ান চিনে ফেলেছে, এটা তো কালকের সেই লোকটা যে ওদের খাবার দিতে এসেছিলো, আরু টাকা দিতে যাওয়ার সময় দরজাটা খোলা রেখেছিলো সেই সুযোগে আর্শিয়ান লোকটাকে এক ঝলক দেখে ছিলো ৷ ওনাকে দেখে আর্শিয়ান ভাবলো লোকটা হয়তো তাকে সাহায্য করবে,তাই উনার ডাক পেতেই আর্শিয়ান তাড়াতাড়ি করে ছুটে গিয়ে বলল
” ও আঙ্কেল দেখোনা আমার মাম্মাম চোখ খুলছে না, আমার মাম্মাম কে ডাকো না ৷”

লোকটা আরশিয়ানকে বলল
” একমাত্র ডক্টর আঙ্কেল ই তোমার মাম্মাম কে ঠিক করতে পারবে ,চলো আমরা ওনাকে ডেকে আনি ৷”

” হমম চলো চলা, আমার মাম্মাম চোখ খুলছে না তাড়াতাড়ি চলো ৷”( আর্শিয়ান কাঁদতে কাঁদতে )

” তাহলে চম্পট দৌড় দিই ৷”
কথাটা বলে আর্শিয়ানকে নিয়ে পালিয়ে গেল ৷

আরুর আর্শিয়ান আরুর থেকে বিচ্ছিন্ন, খারাপ মানুষের ছলনায় আর্শিয়ানকে হারিয়ে ফেলল আরু ৷

💕

” এই আরুপাখি চোখ খোলো, কথা বলছো না কেন, আরুপাখি কথা বলো ৷ এই আরুপাখি, তুমি কি যানো না তোমাকে এভাবে চুপচাপ মানাই না ৷ আমি জানি আমি পৌছাতে দেরি করেছি তাই তুমি আমার ওপর রাগ করবে বলো !”

আরু কথা বলছে না ৷ অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে ৷

আরু কথা বলছে না দেখে
আরিশ এবার ডক্টরের জামার কলার ধরে বলল
” এই ডক্টর কি ইনজেকশন দিয়েছিস আমার আরুপাখি কথা বলে না ৷ বল কি দিয়েছিস, ওর জ্ঞান ফিরলো না কেনো এখনো ৷”

ডক্টর নিজেকে ছাড়িয়ে ঘাবড়ে গিয়ে বলল
” আরে শান্ত হন, উনি ঠিক হবেন, ওনার খাবারে মে বি কেউ কিছু মিশয়ে দিয়েছে ৷ওনার খেয়াল রাখুন , আর জ্ঞান.. .ফিরলে আমাকে কল করবেন ৷
বলে ডক্টর চলে গেল ৷

আরিশ চোখের জল মুছে ফোন করে বলল
” আমার ছেলে কোথায় !”

” sir ওকে নিয়ে ওরা কক্সবাজারের দিকে যাচ্ছে, আমারা পিছু নিয়েছি খুব শীঘ্রই ধরে ফেলবো ৷”

” আমার ছেলেকে আমি সুস্থ দেখতে চাই, আর যে ওর গায়ে হাত দেওয়ার সাহস দেখিয়েছে তাকে আমার কাছে পাঠাবি ৷”

” Sir কিন্ত কাজটা যে অন্য কেউ করিয়েছে ৷”

“আমি সব জানি, ওনাকে আমি .হাতেনাতে ধরবো,আর আসল কালপ্রিটকে কঠিন শাস্তি দেওয়া এখনো বাকি ৷ ”

বলে ফোনটা কেটে দিলো ৷

#চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here