#তোর_জন্য
#sumaiya_moni
#পার্টঃ১৭
.
.
.
আদ্রিয়ান ঃ তুমি তো মিসেস. তেলাপোকা হয়ে যাবে😳।
আমিঃ ওরেহ বাটপার। একদম আমাকে জরাবেন না।
আপনার অন্য যারা যারা আছে তাদেরকে মিসেস. তেলাপোকা, টিকটিকি, গিরগিটি, কুমির, এলিয়েন,,,,,,,আর আর (মুখে এক আঙুল দিয়ে ভাবছি)
আদ্রিয়ান ঃ আরও বাকি আছে??(অবাক হয়ে)
আমিঃ হ্যা অনেক নাম আছে। কিন্তু এখন মনে পড়ছে না। যখন পড়বে তখন বলে দিবো।
আদ্রিয়ান কথা শুনে ঘরবাড়ি ছেড়ে হিমালয়ে যেয়ে সন্ন্যাসী হবার অবস্থায়।
আমিঃ এভাবে সন্ন্যাসগিরি দেখালে কিছু হবেনা। আমি সত্যি কথাই বলছি মি. লাল ইদুর
আদ্রিয়ান ঃ লাল ইদুঁর!!! (অবাক হয়ে)
আমিঃ হ্যা! লাল ইদুঁর। ওই যে ছোট ছোট ইদুঁরের বাচ্চা।
একদম না জানার ভান ধরবেননা জিরাফ কোথাকার।
আদ্রিয়ান ঃ সব চিড়িয়াখানার আত্নীয়-স্বজন কি আমাদের বাসায়!!(আমতাআমতা করর বললো। কারন, এখন যদি অন্য কিছু বলে তাহলে নেহাত আরো আজগুবি নাম শোনা লাগবে)
আমিঃ আপনিই তো আস্ত চিড়িয়াখানা।
আদ্রিয়ান ঃ কিইইইইইই(চোখ বড়বড় করে)
আমিঃ কেন!!কানে কম শুনেন নাকি!! আপনাকেই বলছি। এভাবে চিল্লানোর কিছু নাই।
আদ্রিয়ান ঃ এই তোমার ম্যাগাজিন। কান ধরলাম আর কখনোই এভাবে কেড়ে নিবোনা।
আমিঃ বাহ! বুদ্ধি আছে তাহলে!!
আদ্রিয়ান ঃ আমার মাথায় কি বুদ্ধি ছিলোনা!!🥺
আমিঃ যখন আমার থেকে ম্যাগাজিন কেড়ে নিছেন তখন তো ভাবছি পুরাই হানির মত।
কিন্তু এখন আমার ম্যাগাজিন আমায় দিছেন তাই ভাবছি একটু হলেও বুদ্ধি আছে।
আদ্রিয়ান ঃ এই হানি টা কে আবার!!!(আমতাআমতা করে)
আমিঃ এত ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আপনার মত আমার এত বাবুসোনা নাই।
এটা কার্টুনের হানির কথা বলছি।
আদ্রিয়ান ঃ আমার আবার কখন বাবুসোনা ছিলো(অবাক হয়ে)
আমিঃ আবারও সন্ন্যাসগিরি শুরু করছেন!!
আদ্রিয়ান বেবী আদ্রিয়ান বেবী যখন ডাকতো তখন তো বেশ মজা নিতেন। এখন ভুলে গেলে হয়!!ভাবনার আব্বু।
( কথাটি বলেই জিহবায় কামড় দিলাম) কথার শেষে মনে পড়ছে আমি কি বলছি।
আদ্রিয়ান ঃ( হোহো করে হেসে দিলো)
অবশেষে বউ ভাবনার আব্বু ভাবলো আমায়(চোখ টিপ দিয়ে)।
আমিঃ কেন! অন্য কেউ ভাববে??(নিজের পায়ে যখন নিজেই কুড়োল মারলাম। তাই এড়িয়ে তো আর যাওয়া যায়না)
আদ্রিয়ান ঃ (থতমত খেয়ে) অন্য কেউ কেন ভাববে বউ।
আমিঃ বউ ডাকবেন না একদম আমায়😤।
আদ্রিয়ান ঃ আচ্ছা ভাবনার আম্মু
আমিঃ ওই মিয়া আমি কিছু হইনা আপনার(রেগে)।
অন্য অনেকে আছে তাদের সবরকম আত্নীয়-স্বজন বানিয়ে গেষ্ট সেবা করুন।
আদ্রিয়ান ঃ 😬
তুমিই তো ভাবনার আম্মু। আমি যখন একবার ঠিক করছি তো তুমিই ভাবনার আম্মু হবে।
অন্য কেউ না বউউউউউউউউউউ।
আমিঃ কান আমার ঝালাপালা হয়ে গেল এই বজ্জাতের জ্বালায়।
এত জোরে চিল্লান কেন!
আদ্রিয়ান ঃ তো কি করবো বউ☺।
তুমি তো শুনছোইনা আমার কথা,,,,,।
আমিঃ মাফ চাই ক্ষেমা দেন।
আমি ভাবনার আম্মু তবুও এত জোরে চিল্লাচিল্লি করবেন না। সবাই বাসায় আছে এমনিতেই(করুন ভাবে)
আদ্রিয়ান ঃ ভাবনার আম্মু!!
কি আনন্দ লাগছে শেষমেশ ভাবনার আব্বু তো হতে পারলাম।
দড়জা ঠোকার শব্দ পেয়ে,,,,
আমিঃ ভাবনার আত্নীয়-স্বজন আসছে মনে হয়। শুধু শুধু আমার কান ঝালাপালা করবেন না এখন।
বলেই আমি দড়জা খুলতে গেলাম।
আদ্রিয়ান ঃ আচ্ছা ভাবনার আম্মু
দুজনে দুজনার মুখের দিকে তাকাচ্ছি। রোহানা আন্টি এই বজ্জাতের কথা শুনতে পেল। আল্লাহ জানে এখন কোন অবস্থায় পরতে হয় আমার।
এমন একটা বজ্জাত কেন আমার কপালে পরলো😭
আদ্রিয়ান মিটমিট করে হাসছে।
রোহানা আন্টি রুমে ঢুকে আমাদের দুজনের দিকেই তাকাচ্ছে।
কিছুক্ষন পর্যবেক্ষণ করে আন্টি বললেন,,,,,
ব্রেকফাস্ট এর সময় হইছে।
আমি ঃ জ্বী আন্টি আসছি(আমতাআমতা করে বললাম)
আজকে আন্টি যদি কিছু শুনে ফেলেন তো আমি শেষ।
রক্ষা করো, রক্ষা করো,,,,(মনে মনে)
আন্টি দড়জার কাছে যেয়ে আবার আমার দিকে একবার তাকালেন।আর মুচকি হাসি দিলেন।
তার হাসির আগামাথা কিছুই বুঝতে পারলাম না।
আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে দেখি সেও মিটমিট করে হাসছে।
আজকে মনে হয় আমি শেষ।
এবার মনে হয় সত্যি সত্যিই এক গ্লাস পানিতে ডুব দিয়ে তিন ঘন্টা জ্ঞান হারাতে হবে।
ও বউউউউউউ
আমিঃ আবারো চিল্লানো শুরু করছেন(চোখ রাঙিয়ে)।আজকে যদি উল্টাপাল্টা কিছু হইছেনা বাসায়!! তাহলে আপনার একদিন কি আমার দশদিন।
কথাগুলো বলেই আমি নিচে আসলাম।
আর বজ্জাত জামাইকেও আসতে বললাম।
নিচে আসা মাত্রই সবাই আমার দিকে অন্যরকম ভাবে তাকাচ্ছে।
রোহানা আন্টিঃ আরে মা! তুই নিচে আসলি কেন!!
আমি ভুলে গেছিলাম যে তোকে নিচে আসতে বারন করবো।
সবকিছু গুছিয়ে রাখছি উপরেই খাবার দিয়ে আসতাম এখন।
আমিঃ কেন আন্টি!! আমার হাত-পা সবকিছুই তো ঠিক আছে।
নিচে আসতে পারবোনা কেন!!(অবাক হয়ে)
রোহানা আন্টিঃ এত কিছু ভাবতে হবেনা। বড়দের কথা শুনতে হবে এখন থেকে।
রোহানা আন্টি আমার কপালে চুমু খেয়ে, আদ্রিয়ানকে ধমক দিলেন।
~অসুস্থ মেয়েটাকে একাএকা নিচে আসতে দিলি(রেগে)এতদিন সব বাদরামো সহ্য করছি। এখন থেকে কোনো কথা শুনছিনা।
আদ্রিয়ান ঃ আমি কি করলাম!!আর কে অসুস্থ ! কখন অসুস্থ হলো(অবাক হয়ে তাকিয়ে)
রোহানা আন্টি ঃ চুপ কর(ধমক দিয়ে)
এই অসুস্থ মেয়েটি একা নিচে আসছে। যদি পরে যেত!! তাহলে তো সবকিছু শুরু হবার আগেই শেষ হয়ে যেত😭।
আদ্রিয়ান ঃ আরে আরেহ!! এ অসুস্থ কখন হলো। একটু আগেই তো ভালো ছিলো।
আর পরে যাবে কেন!!
সিঁড়ি ভয় পায় একে। তাই পরে যাবার আগেই সিঁড়ি ভয়ে ধরে ফেলবে। পরে যাবার কোনো প্রশ্নই উঠেনা।
রোহানা আন্টি ঃ আবার ফাজলামো শুরু করছো(রেগে)।
আদ্রিয়ান ঃ 😳
আমি এতক্ষন তাদের কথাগুলো শুনছিলাম।আমিতো একদম ঠিক আছি। অসুস্থ কিভাবে হলাম।
যাইহোক, রোহানা আন্টির ধমক খেয়ে আদ্রিয়ানের মুখটা দেখার মত ছিলো। কিন্তু নিজের হাসিকে মঙ্গলগ্রহে পাঠিয়ে চুপচাপ শান্ত হয়ে রইলাম।
এই সিরিয়াস মুহুর্তে হাসলে রোহানা আন্টি বেশ ক্ষেপে যাবেন।
রোহানা আন্টিঃ এত কি ভাবছিস😊।
আমি খাইয়ে দিচ্ছি,,,,!
আমি অবাক হয়ে আছি। আমি তো পুরাই ঠিক আছি৷ সিঁড়ি থেকে নামতে পারবোনা। আবার খাইয়েও দিচ্ছে।
কি হচ্ছে ব্যাপারটা!!!
চারপাশে তাকিয়ে দেখি সবাই মিটমিট করে হাসছে। শুধু মোহনা আপু বাদে।
আমিও আর কিছু না ভেবে আন্টির হাতেই যত্নসহকারে খেতে নিলাম। কিন্তু এত খাবার কে খাবে!!! আমি তো পারবোনা।
অনেক ভয়ে ভয়ে আন্টিকে বললাম,,,কিন্তু খাবারের সাথে ধমকও খেলাম।
~আন্টি এখন খেতে পারবোনা। তাহলেই বমি দিয়ে দিবো।
রোহানা আন্টিঃ এসময়ে বমি হবেই😊খেয়ে নে
আমিঃ পরিমানের থেকে বেশি খেলে তো বমি হবেই। তাই তো আমি খেতে চাচ্ছিনা।
রোহানাঃ আবার পাকনামো!!(চোখ রাঙিয়ে)
আমি করুনভাবে তাকালাম,,,
রোহানা আন্টিঃ আচ্ছা ঠিক আছে। একটু পরে খেয়ে নিবি আবার।
এখন শান্তি খাওয়া থেকে তো বাচলাম।
কিন্তু এ কি হচ্ছে আজকে!! মাসুদ আংকেল মিষ্টির বন্যা বসিয়ে দিচ্ছেন।
আজকে কি কোনো অনুষ্ঠান!! কিছু তো শুনলাম না।
রোহানা আন্টি মিষ্টির প্যাকেট থেকে মিষ্টি এনেই আমার মুখের সামনে ধরলেন।
আমি কিছু বলার আগেই রোহানা আন্টি আমার মুখে পুরা একটা মিষ্টি দিয়ে দিলেন।
আদ্রিয়ানের অবস্থাও আমার মতোই হলো, কিন্তু রোহানা আন্টির ধমকের কারনে তিনি মিষ্টি খেতে বাধ্য হলেন।
কি হচ্ছে আজকে!! সবকিছু মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
আশিক ও নিবিড় ভাইয়া আদ্রিয়ানের কানের কাছে এসে ফিসফিসিয়ে কি যেন বললেন।
পরক্ষণেই আদ্রিয়ান আমার দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হেসে একটা চোখ টিপ দিলেন।
রোহানা আন্টি ও এনা আপু আমাকে রুমে দিয়ে গেলেন। সাথে মোহনা আপুওছিলো।আমি নাকি একা আসতে পারবোনা। মোহনা আপু মুখ গোমড়া করে আছেন।
রোহানা আন্টি চলে যাবার পরে এনা আপু যা বললেন। তার কথা শুনে আমার মঙ্গল গ্রহে যেয়ে একাএকা থাকতে ইচ্ছা করছে।
এই বজ্জাতটির জন্য আজকে আমার এই বেহাল অবস্থা।
#চলবে