#দ্বিতীয়_সূচনা
#পর্ব_৩৩
লেখা – আফরোজা আক্তার
(কোনোক্রমেই কপি করা যাবে না)
রাত দুইটা প্রায় ছুঁই ছুঁই। ফারহানের চোখে ঘুম নেই। সে এপাশ ওপাশ করছে। কেন যেন অস্বস্তি বোধ করছে ফারহান। অয়নন্দিতা ফারহানের এমন অবস্থা দেখে শোয়া থেকে উঠে বসে। ফারহান সিগারেটে আগুন জ্বালায়। অয়নন্দিতা ফারহানের পাশে এসে বসে। ফারহান তখন সিগারেট টানছে। এত রাতে ফারহানকে যে কেন সিগারেট টানতে হয় এটাই অয়নন্দিতা বোঝে না। সকাল নয়টা থেকে শুরু করে রাত দশটা পর্যন্ত সে যে কয়টা সিগারেট টানে তার হিসাব রাখা মুশকিল। কিন্তু মাঝে মাঝে গভীর রাতে যে কেন সিগারেট টানতে হয় তাকে এটাই অয়নন্দিতার বুঝে আসে না।
অয়নন্দিতাকে নিজের পাশে বসতে দেখে ফারহান চোখ তুলে তাকায় অয়নন্দিতার দিকে। দেখতে পায় অয়নন্দিতা তার পাশে বসে তাকে দেখছে। ফারহান বুঝতে পারছে অয়নন্দিতার মনে এখন কী চলছে। সে এটাও বুঝতে পেরেছে যে, অয়নন্দিতা মনে মনে ভাবছে এত রাতে কেন সে সিগারেট টানছে। অয়নন্দিতার ঘুমে যাতে ডিস্টার্ব না হয় সে জন্য সে ঘর থেকে বের হয়ে বারান্দায় এসে বসেছিল কিন্তু অয়নন্দিতা কীভাবে যেন টের পেয়ে ঘুম থেকে উঠে যায়।
অয়নন্দিতা পাশে বসেই প্রশ্ন করে,
‘এত রাতেও সিগারেট টানা লাগে?’
‘ঘুম আসছিল না। তাই ভাবলাম এখানে বসে হাওয়া খাই আর সাথে সঙ্গী হিসেবে সিগারেট তো আছেই।’
ফারহানের কথা শুনে অয়নন্দিতাও বুঝতে পারে জায়গা নাড়া পড়ায় হয়তো ফারহানের ঘুম হচ্ছে না। কী মনে করে সে আজ এখানে এসেছে সেটা তো সে নিজেই জানে। অয়নন্দিতা গলা ঝাড়া দিয়ে বলে,
‘এখানে শুধু শুধু আসতে গেলেন কেন? এখন তো ঠিক মতো থাকতে পারছেন না।’
‘তোমায় কে বলল যে, আমি এখানে আসায় ঠিক মতো থাকতে পারছি না। আমি কি একবারের জন্যও অভিযোগ করেছি?’
‘নাহ।’
‘তবে?’
‘এই যে রাতের বেলায় না ঘুমিয়ে চুপচাপ বারান্দায় বসে বসে সিগারেটের সঙ্গে নিজেকে পোড়াচ্ছেন। এতে কি বোঝা যায় না যে, আপনি ঠিক নেই।’
অয়নন্দিতার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে ফারহান। বোঝার চেষ্টা করছে অয়নন্দিতার চোখের ভাষা। মেয়েটা তাকে যে বেশ ভালো বুঝতে পারে এতে সন্দেহ নেই। ফারহান কিছু না বলে হালকা হেসে জ্বলন্ত সিগারেটটা নিজের ঠোঁটে ছোঁয়ায়। অয়নন্দিতা ফারহানের ঠোঁট থেকে সিগারেটটা নিয়ে নিজের হাতে রাখে। জ্বলন্ত সিগারেট পর্যবেক্ষণ করছে অয়নন্দিতা। ফারহান গালে হাত দিয়ে অয়নন্দিতাকে দেখছে। অয়নন্দিতা এমন ভাবে সিগারেটটাকে দেখছিল মনে হচ্ছিল সে আগে কখনও সিগারেট দেখেনি। সিগারেটটা মুখের সামনে ধরে আছে অয়নন্দিতা।
ফারহান সিগারেট নিতে চাইলে অয়নন্দিতা হাত সরিয়ে নেয়।
‘ওয়েট, আমি একটু পরীক্ষা করছি।’
‘আরেহ, কী পরীক্ষা করছ তুমি? শেষ হয়ে যাচ্ছে তো।’
‘আগে বলুন এটা খেলে কী হয়?’
‘কিছুই হয় না। দাও।’
‘নাহ, দেব না।’
‘কেন, দেবে না কেন?’
‘আমার ইচ্ছা।’
‘অয়নন্দিতা, প্লিজ সিগারেটটা দাও। বিরক্ত কোরো না।’
‘নাহ। আমিও টানব?’
‘কী টানবা?’
‘সিগারেট।’
‘তুমি সিগারেট টানবা?’
‘হ্যাঁ।’
ফারহান জানে, অয়নন্দিতা মজা করছে। সে আর যাই করুক, সিগারেট টানবে না। তাই সেও বলে,
‘ওকে। টানো তাহলে। দেখি কেমন টানতে পারো।’
‘হ্যাঁ। টানব।’
‘টানো।’
অয়নন্দিতা সিগারেটটা যেই না ঠোঁটে ছোঁয়াতে তখনই অয়নন্দিতার ঠোঁট জোড়া ফারহানের দখলে চলে যায়।
চলবে………………………