ধর্মের_দেয়াল (সিজন-২)পর্বঃ৮

0
641

#ধর্মের_দেয়াল (সিজন-২)
নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ৮

.
.
– মারিয়াম একটি অন্ধকার রুমে আসন দিয়ে বসে আছে। সামনে আগুন জ্বালানো। আগুনের মধ্য নাবিলার চিঠি এবং লকেট সহ নাবিলার সব স্মৃতি ময় সিডি আগুনে আহুতি দিল। একটু পর সেগুলো একটি সাদা ধোয়াশা পাখিতে পরিনিত হল। এবং সেটা উড়তে লাগল। এই একটাই উপায় নাফিসাকে খুজে পাওয়ার পথ। পাখির সাথেও মারিয়াম দ্রুত ভেসে উড়ে চলল।
.
.
– অন্ধকার রুমে মারিয়াম এসে থামে। ইয়েস সে নাফিসাকে পেয়ে গেছে। ঘুমন্ত নাফিসা কে দেখে মারিয়ামের চোখ জুড়িয়ে গেল। না মেয়েটা অক্ষতই রয়েছে।
.
.
.
– পরদিন সকালে সবাই মিলে নাফিসাদের গ্রামের বাড়িতে রওনা দিল।
– রাফসান ড্রাইভ করছে আর বার বার লুকিং গ্লাসে নাফিসাকে বার বার দেখছে।
.
.
– রাফসান ভাইয়া ড্রাইভিং এ মনযোগ দেন। এদিক ওদিক তাকাবেন না।
– রাফসান নাফিসার কথা শুনে বেশ লজ্জা পেয়ে গেল। এদিকে সুমির মনের অবস্থা খুবই খারাপ হতে লাগল। রাফসান কে যে টুকু পাওয়ার আশা ছিল সেটাও আর নেই বলে চোখে জল এসে গেল।
.
.
.
– প্রায় ৩ ঘন্টা পর গ্রামের বাসায় পৌছে গেল সবাই।
– রাফী বাসায় ঢুকতেই জাহানারা বেশ খুশিতে বলল কেমন আসিছ বাবা?
– মা তোমার আর বাবার জন্য surprise আছে।
.
.
.
– জাহানারা বলল কি?
– দরজার ভিতর আমি ঢুকতেই চাচী আৎকে গেল। এই মহিলা জিবনেও শুধরানোর নয়। সাথে চাচা ও।

– আমাকে দেখে যে বেশি খুশি হল তা নয়। আমি অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছি তাই এগুলো আর গায়ে মাখাইনা।
.
.
.
– ভালমন্দ জিঙ্গাসা করে রুমে গেলাম। কত লম্বা সময় পরে বাসায় আসলাম। সম্পূর্ন অপরিচিত লাগছে।
.
.
– রুমে গিয়ে দেখি বিথী ঘুমিয়ে আছে। কত্ত দিন পর ওকে দেখলাম।
– আমি ওর গায়ে হাত দিয়ে আস্তে করে কয়েক বার ডাকতেই ও ধড়পড়িয়ে উঠে বসে পড়ল।
আমার দিকে তাকিয়ে বলল আপা! তুই……..!
.
.
– কেন অন্য কাউকে বুঝি আশা করেছিলি?
– আপা আমি স্বপ্ন দেখছি নাতো!
– আমি চিমটি কেটে বললাম না একদম না। আমিতো বিথী কেই দেখছি।
.
.
.
– ও আমাকে গায়ের শক্তিতে জড়িয়ে
ধরল।
– এত জোড়ে ধরে কেউ বলে ওকেও
আমি জড়িয়ে ধরলাম।
– আমি, রাফী ভাইয়া আর বিথী
যেখানেই থাকি না কেন সেই
জায়গা মাতিয়ে রাখি।
.
.
.
– আমাকে এখানে একটা উদ্দেশ্য আনা
হয়েছে সেটা বিথীর বিয়ে উপলক্ষে।
– বাসায় হট্টোগল শুনতে পেয়ে আমি
আর বিথী বাহিরে গিয়ে দেখি
মারিয়াম দাড়িয়ে আছে।
.
.
– মারিয়াম তুমি?
– হুম নাফিসা……. ওরা বিশ্বাসই করতে
চাচ্ছেনা এতদিন তুমি আমার কাছে
ছিলে বলে ইশারা করল।
– আমিও তার কথার সাথে তাল
মিলিয়ে বললাম উনি ঠিক বলছেন।
– চাচা রুম থেকে বের হয়ে বলল ও
নাবিলার বানন্ধবী। ইয়ারপোর্ট
থেকে যখন মেহেদি এবং নাবিলা
কে আনতে গিয়েছিলাম তখন ওনাকে
দেখেছি। কিন্তু উনি সেই একই রকম
আছেন।
.
.
.
– আমি আর মারিয়াম রুমে আসলাম।
মারিয়াম আমার কপালে kiss করে বলল
কেমন আছো my princes……
.
– আমি চুপ করে রইলাম।
.
– তুমি জানো তোমায় কত খুজেছি?
.
– কেন খুজেছেন?
.
– আমি তোমার মায়ের সাথে এ দেশে
প্রথম আসি। আমি তোমার মায়ের
দাসী ছিলাম। কিন্তু উনি কখনও দাসী
মনে করেননি আমায়।
আমায় মুক্ত করে দেন এবং অনেক মায়া
বিদ্যা শেখান।
.
.
– আমি তোমার মায়ের সাথেই
থাকতাম কিন্তু কেউ দেখতো না।
তারপর সব শেষ করে দেয় ক্যাথরিন ওর
দলবল নিয়ে ফাদারের হুকুমে। আমায়
বন্দী করে ফেলে কাইফ আর ওর পরিবার।
নিজের চোখের সামনে সব পুড়ে
যেতে দেখেছি বলে কাঁদতে লাগল।
.
.
.
– নাফিসা আজ রাত থেকে ৭ দিন
অবদি ২ টা জ্বীন আসবে তোমার শক্তি
সম্পর্কে সব বিষয়ে তোমাকে অনুধাবন
করা তে। মনযোগ দিয়ে কাজ গুলো
শিখবে। আমি এসে গেছি তাই
তোমার আর কোন দিকে ভাবতে
হবেনা। জিবনে অনেক হারায়ছো আর
না।
.
.
– যে মায়া বিদ্যার জন্য নিজের
অস্তিত্বের বিসর্জন দিতে হয়েছে
সেই বিদ্যা দিয়ে আমার কাজ নেই।
.
.
– নাফিসা তুমি কি চাও তোমার
মায়ের মত তোমার পরিনিতি হোক?
তোমার মা নিজের সামনে তোমার
বাবা পুড়ে মরতে দেখেছে। তুমি কি
চাও রুপের সাথে এমন কোন ঘটনা ঘটুক?
.
.
.
– মনে রেখ জ্বীন শক্তি সম্পর্কে
তোমার ঙ্গান একদমই দুর্বল। তোমার
নিজেকে তৈরি করতে হবে। যাতে
তুমি ওদের সব নিয়ম ভেঙ্গে
স্বাভাবিক জিবন যাপন করতে পারে
তোমাদের মত শ্বেতপরী গুলো।
.
.
– আমি কিছু বুঝতে পারলাম না। আরও
শ্বেতপরী আছে?
.
.
– এমন সময় বিথী এসে বলল আপা কাল
আমার সাথে কলেজ যাবি?
.
– ইচ্ছা নেই যাওয়ার তবুও ও যাতে মন
খারাপ না করে তার জন্য রাজি হলাম।
.
.
.
– রাতে সবাই এক সাথে আড্ডা,
খাওয়া,মাস্তি সব করা হল। মনে হল
বাসায় এত দিনে প্রান ফিরে এসেছে।
.
.
– রাতে আমি মারিয়ামের কোলে
মাথা রেখে সুয়ে আছি আর ও আমার
মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। নিজেই
নিজেকে একটা নোটিশ করে বসলাম
যখন থেকে মারিয়াম আমার কাছে
এসেছে তখন থেকে রুপের কথা আমার
তেমন স্মরন হয়না । আমার নিজের ভিতর
এত পরিবর্তন কেমনে! আমি কখন ঘুমিয়ে
পড়লাম জানিনা।
.
.
.
– শীতল হাতের স্পর্শে ঘুম ভেঙ্গে
দেখি আমি শূন্যতে ভাসছি। বেশ ভয়
পেয়ে গেলাম এবং চিৎকার দিয়ে
উঠলাম।
.
– ইয়া মোটা আর লম্বা ২ টা জ্বীন
যাদের দেখে আমার পিলে চমকে
গেল। এরা নাকি আমার শিক্ষক। এদের
থেকে কি আর শিক্ষা লাভ করব! এদের
দেখেই ভয়ে আমার জিবন যাওয়া আসা
অবস্থায়।
.
.
.
– ওনারা আমার অবস্থা দেখে ভয়ঙ্কর
হাসি দিল। এত ভয় করলে শিখবে
কেমনে my son!
-বুঝলাম এরা খিষ্ট্রান।
– একজন এসে আমার গায়ে ধাক্কা দিল
আমি দুরে পরে গেলাম। আমার প্রচন্ড
রাগ হল এবং জোরে একটা সাউড
দিলাম এতে ওনার সামনে একটা রক্ষা
বলয় তৈরি করে ফেললেন। ওনার কিছুই
হলনা।
.
.
.
– নাফিসা এত দুর্বল তোমার শক্তি!
তাও রোজ নামের বন্ধুর কাছ থেকে
শিখছো বলে উনি একটা জোরে সাউড
করে ওঠেন এতে এক পলকে সেটা
হাজারো অস্ত্রের তৈরি হয়ে সামনে
থাকা একটি পাহারে আঘাত হানে।
এক নিমিষেই শেষ।
.
.
– বাবাগো এদের কি শক্তি। আমি
এদের কাছে চুনোপুঁটি মাত্র।
.
.
.
– ওনারা আমার ভিতর যা শক্তি আছে
তা সম্পর্কে ধারনা দিতে লাগল। এর
পর আমি আবার ওখানেই ঘুমিয়েই
পড়লাম।
.
.
.
– সকালে বিথী এসে আমাকে ডাকল।
আমি ওকে দেখে পাশ ফিরে আবার
ঘুমালাম।
– আপা…আপা…আপা… বলে চিৎকার
দিয়ে উঠল।
– আমি ধড়পড়িয়ে উঠলাম। কি রে কি
হইছে। বাসায় ডাকাত পড়েছে তাই
জলহস্তীর মত চেচেচ্ছিস?
.
– আপা তুই আবার আমায় জলহস্তী বলে
ডাকছিস?
– পুরনো অভ্যাস রে তাই।
.
– আজ কিন্তু আমাদের কলেজ যাওয়ার
কথা….
– বিয়ের জন্য সবাইকে Invite করতে
যাবিতো?
– তুই কেমনে বুঝলি।
– বোঝার মত একটা মন থাকতে হয়রে
পাগলি। যা রেডী হয়ে নে। বাহিরে
নাস্তা করব। জলদি কর।
.
.
– এমনি রাতে জ্বীনদের সাথে ক্লাস
করে গা ব্যাথা হয়ে গেছে এখন আবার
বাহিরে যাওয়া।
.
.
– ২০ মিনিটের মধ্য আমি রেডী হয়ে
ডাইনিং রুমে আসতেই দেখি
মারিয়াম চাচার সাথে সেই ভাব
লাগিয়েছে।
ভাইজান এটা….. ভাইজান ওটা… বলে
ডাকছে। সাজ্জাদ চাচাতো সেই খুশি।
একটা অপরুপ সুন্দরী মেয়ে তাকে
এতোটা Interest দেখাচ্ছে এই বয়সে
যেন সোনায় সোহাগা।
.
.
– একটু দুরে দাড়িয়ে জাহানারা শুধু
রাগে ফুসেই যাচ্ছে। কিন্তু কিছু বলতে
পারছেনা।
.
– আমি চাচা-চাচীর এই অবস্থায় দেখে
মুচকি মেরে হেসে উঠে বাহিরে চলে
আসলাম।
.
– এবার আর এদের রক্ষা নেই
মারিয়ামের হাত থেকে সেটা ভাল
করেই বুঝলাম।
.
– আপা দারা বলে বিথী পিছন থেকে
ডেকে উঠল।
.
– হ্যাঁ রে সেই সাজ দিয়েছিসতো।
তোর হবু বরকে আসতে বলেছিস নাকি?
.
.
– যাহ্ কি বলিস। আপা আগের থেকে তুই
অনেক স্মার্ট এবং সুন্দর হয়ে গেছিস।
প্রথমে তো তোকে দেখে চিনতেই
পারিনি।
– তোকে চিনতে হবেনা চল এখন বলে
ওর হাত ধরে টেনে আনতেই রাফসান
গাড়ি বের করল।
.
.
– এই ও আমাদের সাথে যাবে!
– ও মুচকি হেসে বলল হুম আমি ওনাকে
রাজি করিয়েছি। আর তাহলে
আমাদের টাকা খরচ হবেনা।
– Mod টাই খারাপ করে দিল। ও কি তোর
জন্য আসতে রাজি হয়েছে চান্দু! আমার
জন্য মনে মনে বল্লাম।
.
.
– রাফী ভাইয়া কে আসতে বলতি!
– ভাইয়া বিজি রে ওকেও
বলেছিলাম।
– ভাল……. বলে গাড়িতে উঠলাম
পিছের ছিটে বসলাম।
.
.
.
– রাফসানের আশায় জল ঢেলে দিলাম।
ও আমার দিকে কঠিন মুখে তাকালো।
আমি জিভ বের করে মুখ ভেংচি
দিলাম।
.
.
– এই তোদের কি আমি ডাইভার যে ২
জনেই পিছনে বসছিস?
– রাফসান ভাইয়া আজকের জন্য আপাতত
বলেই ২ জনেই হেসে উঠলাম।
– ভাইয়া ডাক শুনে চুপসে গেল।
.
.
.
– রেগে গাড়ি স্টার্ট দিল এবং আমরা
কলেজে ৪০ মিনিটের মধ্য পৌছে
গেলাম।
.
.
– বিথী কে বললাম তুই তোর ক্লাসে যা
আমি আমাদের ডির্পাটমেন্ট থেকে
ঘুরে আসি।
.
.
– রাফসান কে বললাম তুমি
সিগারেটে টান দাও। নিশ্চয় এতক্ষনে
তোমার জিবন ঝালা পালা হয়ে
গেছে বলে চলে গেলাম কলেজের
ভিতরে।
– আমার ওর বিষয়ে সব……. সব কিছু
জানা। এখন রেগে জ্বলবে আর
সিগারেট টানবে। নিজে এত বড়
ডাক্তার তবুও সিগারেট কেন যে খায়
ও ভাল যানে।
.
.
.
– স্যারদের সাথে দেখা করলাম। ২ টা
স্যার ছাড়া সব বদলি হয়ে গেছে।
.
.
– ডিপার্টমেন্ট এসে রুমে ঢুকলাম। না
কাউকে চেনার মত দেখছিনা। বের
হয়ে আসার সময় একটা ছেলেকে
দেখলাম একটা ছেলে আড়াল থেকে
আমাকে দেখছে।
.
.
-আমি কাছে গিয়ে বললাম আড়াল
থেকে না দেখে কাছে এসে দেখো
কেউ নিষেদ করেনি তো!
– আমার কথা শুনে বলল আপনি
নাফিসা? ছেলেটির সাথে আরও ৫ জন
ছেলে ছিল।
– হুম তোহ!
– না মানে বিথীর সাথে দেখেই
বুঝতে পারলাম আপনি নাফিসা হবেন।
আপনাকে এই প্রথম দেখলাম আপনি
ভারি সুন্দর একটা মেয়ে।
.
.
– Main point এ আসেন। রুপের প্রসংসা
করতে বলা হয়নি।
– বাহ্ দেখছি বেশ ঝাঝালো আপনি।
– আমি আপনাকে কত যে খুজেছি।
আপনার ফোনে দিনে নিম্ন ৫০ বার কল
দিছি। কিন্তু আজ দেখা হয়েই গেল
আপনার সাথে।
.
.
– আমি কিছুক্ষন চুপ করে থেকে আবার
বললাম কেন যাদের সামনে চ্যালেঞ্জ
করেছেন সেটা জেতার জন্য মি. আবির
চ্যাটর্জি?
.
.
– আপনিতো দেখছি সবই জানেন!
– লজ্জা করেনা নিজের বয়েসের বড়
মেয়ের সাথে লাইন করার
চিন্তাভাবনা করতে!
.
– আবির কিছু ভেবে চিন্তে কাজ কখনও
করেনা mam…
-আর নাফিসাও ভাল করে যানে
তোমাদের মত বাবার টাকার জোড়ে
বখে যাওয়া ছেলেদের কিভাবে
শায়েস্তা করতে হয়!
..
– ওহ তাই! আমাদের দেখে কি আপনার
ভয় লাগছেনা?
.
– আমি একদম আবিরের কাছে গিয়ে
বললাম ভয় দেখাচ্ছো! কিন্তু sorry
তোমাদের মত চুনোপুঁটি দের নাফিসা
ভয় পায়না।
.
– কখনও আমার চোখের সামনে আসবেনা
বেয়াদপ আবির……. নিজের চেহারার
অহংকারে মাটিতে পা পরেনা।
তোমার মত ছেলে আমার আশপাশ
দিয়ে ঘুরলেও ভুলে তাকাবনা। কথাটা
ঘটে ভাল করে ঢুকে নিও।
.
– আমি নিচে চলে আসলাম।
– এই যে mam আপনি হয়ত জানেন না
আবিরের দাপট এই কলেজে কতটা…..
– Oh really!
– আবির চ্যাটার্জি ভয় দেখায়না শুধু
কাজ করেও খোলা মাঠে দাপিয়ে
বেড়ায় বলে আমার হাত ধরল।
.
– হাত ছাড় বলছি……. এর ফলাফল কিন্তু
খুব খারাপ হবে।
– Mam….. আমিও দেখতে চাই সেই
ফলাফল টা বলে ওড়নাতে হাত দিতেই
কোথা থেকে রাফসান এসে ওর বুকে
লাথি বসিয়ে দেয়।
.
– আবির ছেলেটি ছিটকে সবার
সামনে পরে যায়।
.
.
.
– আবির রাগে কাঁপতে কাঁপতে বলল এই
উপর থেকে হকিষ্টি আর চাপাতি
মালগুলো নিয়ে আয় আজ এখানে লাশ
পড়বেই।
– কিরে মৃগীর রোগীর মত কাঁপছিস
কেন! মেয়ে মানুষের সাথে কেন আয়
আমার সাথে বলে মাটিতে একটা
লাথি দিল এবং থানায় কল দিয়ে
লোকেশন জানালো।
– আল্লাহ এখন কি হবে। আমিতো এত
মানুষের সামনে নিজের শক্তিও
প্রয়োগ করতে পারবনা। ওদিকে ৬ জন
ছেলে প্রায় সাথে সাথে দৌড়ে
এসে রাফসান কে ধরে ফেলে।
– আমি একজনকে ধাক্কা দিতেই ও
দেয়ালের সাথে বাড়ি খেয়ে পরে
গেল।
– শালীর দেখছি সেই শক্তি। এবার
বাঁচা তোর নাগর কে বলেই চাপাতি
নিয়ে রাফসানের দিকে এগিয়ে
গেল।
– আমি শেষ এবার কি করব। এদিকে
রাফসানের সাথে ছেলেগুলো
ধস্তাধস্তি শুরুকরে দিছে।
.
-৫ মিনিটেই পুলিশ এসে পরে আর আবির
কে অস্ত্র সহকারে ধরে ফেলে।
– কি হতে কি হয়ে গেল।
– রাফসান বলল ছোট শহরের দাদা হয়ে
তোর বাপের সাথে লড়তে আসিস।
নিজের ক্যারিয়ারের জন্য সব
ছেড়েছি কিন্তু ক্ষমতা সেই টপেই
আছে। দেখি তোকে জেলের ভাত
খাওয়া থেকে কে রক্ষা করে।
– এবার দেখবি আমার হাত কতদুর লম্বা।
আমি দাদাগিরিতে তোর বাপ হে…..
যা এবার দেখবি আর জেলের ভাত
গুনবি আমি কি জিনিস। আমার
কলিজাতে হাত দেওয়া!
.
.
.
– রাফসার আমার হাত ধরে টেনে
গাড়িতে বসাল এবং গাড়ি স্টার্ট
দিল।
– রাফসান আমরা কই যাচ্ছি?
-………………..?
-রাফসান বিথীকে কল দিয়ে বলল
বিথী তুই বাসায় যা আমাদের দেরি
হবে।
.
– রাফসান একটা গান শুনাবা?
– চুপপপপপপপ! মেয়ে হয়ে ওদের সাথে
কেমনে চ্যালেঞ্জ লাগিস। তুই কি
কোন দিন মানুষ হবিনা? সারা জিবন
পাগলামি! আমি না থাকলে কি হত…..
.
– কি আর হত সম্মান জলাঞ্জলি দিতে
হত।
– রাফসান এমন জোরে ব্রেক কষল আমি
ভয় পেয়ে গেলাম।
– নাম গাড়ি থেকে……..
– আমি কি সত্যি নামব?
– নামতে বলছি…..
– আকাশে খুব মেঘ কখন যেন বৃষ্টি
নামবে আর এর মাঝে আমাকে ছেড়ে
একা চলে যাবে…….
– নামবি!
.
.
– কি আর করা নেমে পড়লাম খোলা
মাঠে।
– Oh my god আমরা নদীর ধারে এসেছি।
এখানে আগে ও একবার এসেছিলাম ওর
সাথে।
.
– রাফসান ফাকা মাঠ থেকে রাস্তায়
গাড়ি নিয়ে গেল।
– ধুর যেখানে মনে সেখানে যাক বলে
জুতা খুলে ছুড়ে মারলাম এবং দৌড়ে
নদীর ধারে গেলাম। ততক্ষনে বৃষ্টি
এসে গেছে মুষুল ধারে।
.
.
– আমি চিৎকার দিয়ে উঠলাম
Yhahooooooo। রাফসান I am surprised
তোমার উপহার পেয়ে বলে মাঠের
ভিতর ছুটতে লাগলাম।
– কোথা থেকে এসে রাফসান ছাতা
ধরল এবং বলল একদম পাগলামি করবিনা।
Surprise দিছি বলে পাগলের মত ভিজবি
সেটাতো হবেনা।
– ধ্যাততেরি কার কথা কে শোনে
বলে সেখান থেকে এক দৌড়ে নদীর
বাঁধের উপর উঠে বসে পড়লাম। রাফসান
ও আমার পিছে এসে আমার সাথে বসে
পড়ল। আবার ছাতা ধরে বলল জ্বর আসবে।
এবার কথা না শুনলে কিন্তু কপালে
মাইর জুটবে বলে একহাতে কিটকাট
চকলেট আর কয়েকটা আইসক্রিম মেলে
ধরল।
– আমি খুশিতে বলে উঠলাম এগুলো
আমার জন্য! আমি ছো মেরে সেগুলো
নিয়ে খেতে লাগলাম। খুব জোরে
বৃষ্টি হচ্ছে আর আমি ছাতার নিচে
বসে চকলেট, আইসক্রিম খাচ্ছি রাফসান
হাসি মুখে ছাতা ধরে আছে।
.
– এই তুই কেন খাচ্ছিস এগুলো………
এটাতো আমার পাগলির জন্য। তুই কি
আমার পাগলি?
.
– আমি খাওয়া অফ করে দিলাম।
– কিরে অফ করলি কেন তুই কি আমার
পাগলি নস!
– জনাব এগুলো শুধু আপনার সামনের বসে
থাকা মেয়েটির জন্য কোন পাগলির
জন্য নয় বলেই আবার খেতে লাগলাম।
.
.
.
-কিরে পেত্নী একাই খাবি! আমাকে
দিবিনা বলেই চকলেটে কামড় বসে
দিল।
-উমমম্ এটা আমার বলে সরিয়ে নিলাম।
-দে বলছি বলেই কেড়ে নিল একটা।
– যাও খাবনা……
– না খা……! বলেই ও খেতে লাগল
– ভারি অদ্ভুত তোহ?
– জানিনা ও কত দিনপর এতটা খুশি এবং
সুখ পেল।
– একটা দিন ওকে খুশি দিতে পেরে
আমি নিজেও খুশি। আমি সব ঠিক করে
দিব রাফসান বলেই ওর ছাতা কেরে
নিলাম।
– নাফিসা ঠান্ডা লাগবে তো
– লাগুক বলে ওখান থেকে আবার দৌড়
দিলাম। কিন্তু এবার ও ধরে ফেলল।
– তোর সু কই।
– জানিনা কোথায় যেন ফেলে
দিছি।
– ও জুতা গুলো নিয়ে এসে বলল চল বেশ
ভিজেছিস জ্বর এসে যাবে এমনিতেই।
– না যাবনা আর একটু ভিজবো।
– কোন কথা আর বলার সুযোগ না দিয়ে
আমাকে সোজা কোলে নিয়ে
গাড়িতে বসাল। আমি কয়েকটা কিল
বসিয়ে দিলাম।
.
– আহ্ নাফিসা লাগছে তো! এত শক্তি
কই থেকে তোর আসল হুম…..
– আমি হাফ ফুলে বসে আছি। ও গাড়ি
স্টার্ট দিয়েই বিথীকে কল দিল।
– কিরে তুই বাসায় গেছিস?
-না…
– ওকে ওখানে দ্বারা আমি পিক করছি।
– বিথীর কাছে পৌছার আগ থেকে
আমার হাঁচি পড়তে শুরু করল।
– বিথীকে নিয়ে আবার বাসার পথে
রওনা দিলাম।
– আমার গায়ে কাপুনি দিয়ে জ্বর এসে
গেল কেমন জানি।
– নাফিসা ঠিক আছিস?
– একটা হাঁচি দিয়ে শুধু মাথা
নাড়ালাম।
– আপা তোরা ভিজলি কেমন করে?
– সেটা তোর না জানলেও হবে।
– রাফসানের কথা শুনে বিথী আর কিছু
না বলে চুপ করে রইল।
.
.
– বাসায় এসে পড়ল ওরা। তখনও খুব বৃষ্টি
হচ্ছিল।
– বিথী যাতো রাফী কে ডেকে
নিয়ে আয়।
– এর মধ্য নাফিসা ঘুমিয়ে পড়েছে।
রাফসান ঘুমন্ত নাফিসার কপালে
কয়েকটা kiss করল এবং বলল সময়টা যদি
এভাবেই থেমে থাকত বলে ওকে
কোলে উঠিয়ে বাসায় নিয়ে গেল।
– ভাগ্গিস ডাইনিং রুমে কেউ ছিল
না।




– রুপ exam pepar গুলো দেখছে। এমন সময়
নাফিসার খাতায় চোখ আটকে গেল
রুপের……………
চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here