গল্প —- ধর্ষিতা বউ
লেখক —- মাহমুদ
১ম পর্
*******************************************
সকালে শোয়া থেকে উঠতে পারছিলো না প্রাপ্তি।ব্যথার পুরোটা শরীর মনে হচ্ছে যেনো মরার মতো হয়ে আছে।তারপরেও কষ্ট করে উঠে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নিলো!তারপর নিচে গিয়ে নাস্তা বানালো।সকাল ৭ টা বাজে।নাস্তা বানানো শেষ করে প্রাপ্তি ড্রইং রুমে সোফায় বসে ছিলো।বসে বসে ভাবছিলো তার অতীত জীবনের কথা, তার বিয়ের আগে তার জীবনটা কতোই না সুন্দর ছিলো।কেনো যে সায়ানের সাথে ওর বিয়ে হলো!!এসব ভাবতে ভাবতেই কখন যে প্রাপ্তির চোখ লেগে গেলো সে টেরই পেলো না।
-প্রাপ্তি…..প্রাপ্তি.. এই প্রাপ্তি…
হঠাৎ করেই প্রাপ্তির ঘুম ভেঙে গেলো।সায়ান ডাকছে।অস্থির হয়ে দৌড়ে গেলো সায়ানের রুমে।
-কিরে তোরে এতো ডাকি শুনতে পাস না??কি করিস সারাদিন তুই?খালি ঘুম ছাড়া আর কোনো কাজ নাই নাকি তোর?
প্রাপ্তি চুপ।
-আমি শাওয়ারে যাচ্ছি আমার শার্ট প্যান্ট গুলো আয়রন করে রাখ।মিটিং আছে আজকে।
বলেই সায়ান শাওয়ারে চলে গেলো।প্রাপ্তি সায়ানের কাপড়গুলো আয়রন করে নিচে গেলো। নাস্তা রেডি করে টেবিলে রাখলো। সায়ান শাওয়ার শেষ করে এসেই নাস্তা করে তাড়াতাড়ি অফিসে চলে গেলো!!সারাদিন প্রাপ্তি বাসায় একা থাকে।আর ওর সাথে থাকে ওর একাকিত্ব আর সায়ানের অত্যাচারের নির্বাক চিৎকার।ও চাইলেও কারো কাছে ওর মনের কথাগুলো খুলে বলতে পারে না।সকাল ৯ টায় বাসার দারোয়ান শফিক বাজার করে দিয়ে গেলো।প্রাপ্তি সবগুলো বাজার কেটেকুটে ফ্রিজে ভরে রাখলো আর যেগুলো রান্না করার সেগুলো রান্না করে নিলো।১২ টায় বুয়া এসে ছুটা কাজগুলো করে দিয়ে গেলো।বুয়া শুধু ঘর ঝাড়ু আর কাপড় ধোয়ার কাজ করে চলে যায়।দুপুরে সব কাজ শেষ করে প্রাপ্তি জোহরের নামাজ সেরে নিলো তারপর খাওয়া দাওয়া করে এসে ড্রইং রুমে সোফায় শুয়ে ছিলো।
সারাদিন এই ড্রইং রুমেই তাকে থাকতে হয়।এতো বড় বাড়িতে চারটা রুম থাকার পরেও ড্রইং রুমই তার থাকার জায়গা।কারন সবগুলো রুমের মুখোমুখি এই রুম।সায়ানের রুম থেকে ডাক দিলে সহজেই শোনা যায় ড্রইং রুম থেকে।একটু দেরি হলেই গালাগালি শুরু করে সায়ান।তাই প্রাপ্তি এখানেই থাকে সারাক্ষন।
দুপুরেই সায়ানের ফেরার কথা।কিন্তু ফিরলো না।বিকালে ৫ টায় সায়ান ফিরে আসলো।ওর সাথে একটা মেয়ে ছিলো ফর্সা করে লম্বা,পাতলা গড়ন,খোলা মাঝারি চুল,একটা হাতা কাটা বেগুনী রঙের ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরা।মেয়েটা সায়ানকে জান বাবু বলে ডাকছিলো।সায়ানও মেয়েটিকে বেবি বলছিলো।খুব খারাপ লাগছিলো তাদের অবস্থা দেখে।সায়ান ড্রিঙ্ক করে এসেছিলো।সায়ান মেয়েটির কাধের উপরে হাত দিয়ে ভর করে ছিলো।মেয়েটি সায়ানকে রুমে নিয়ে যাচ্ছিলো,যে রুমে কিনা আমার অধিকার। তাও কিচ্ছু বললাম না।যাওয়ার সময় সায়ান বলে গেলো,ও আজকে বাসায় থাকবে তাই রাতে খাবার ব্যবস্থা কর।
প্রাপ্তি ফ্রিজ থেকে মাছ মাংস বের করে রান্নাবান্না করে নিলো।রান্না করতে করতে ভাবছে-হয়তো গরীব হয়ে জন্মানোটা আমাদের জন্য পাপ।তাই তার প্রায়শ্চিত্ত এইভাবে করতে হচ্ছে।
রাতে খাবার টেবিলে মেয়েটি সায়ানকে জিজ্ঞেস করছিলো আমি কে।
সায়ান উত্তর দিলো
-আরে আমাদের বাসার কাজের লোক।মা যাওয়াদ সময় রেখে গেছে আমাকে দেখাশুনো করার জন্য।(কথাটা প্রাপ্তির বুকে গিয়ে বিধলো,মুহুর্তেই ওর চোখে পানি এসে পড়লো)
-My Goodness Shayan…এতো সুন্দর একটা মেয়ে ঘরে থাকলে তুমি ঠিক থাকতে পারো?
– Come on Riya babe…তুমি আছো না আমার লাইফে।আর যত সুন্দরী মেয়েই থাকুক না কেনো তুমি থাকলে আর কিছু লাগেনা।Love you babe..
কথাগুলো প্রাপ্তির কাছে খু যন্ত্রণাদায়ক মনে হচ্ছিলো।নিতে পারছিলোনা সে।তাই ওখানে থেকে ড্রইং রুমে গিয়ে বসলো।
সায়ান আর রিয়ার খাওয়া শেষে তারা রুমে চলে গেলো!প্রাপ্তি এসে খাওয়া দাওয়া করে সব গুছিয়ে রাখলো!
রাতে সায়ানের রুমের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় প্রাপ্তি রুমের ভেতর থেকে রিয়ার শব্দ শুনতে পেলো!প্রাপ্তির আর বুঝতে বাকী রইলো না তারা যৌনমিলনে লিপ্ত ছিলো।
দূ’ফোটা চোখের জল ফেলে ড্রইং রুমে এসে প্রাপ্তি শুয়ে পড়লো!
সকালে উঠে নাস্তা বানালো।সায়ান আর রিয়া নাস্তা করে একসাথে বেরিয়ে গেলো!যাওয়ার সময় সায়ান বলে গেলো
-আমার আজকে ফিরতে দেরি হবে।তুই দেখিস বাইরে কোথাও যাস নে আবার।আর কারো সাথে ফোন এ কথা বলবি না।
বলেই চলে গেলো!
সারাদিনের কাজকর্ম শেষ করে প্রাপ্তি সোফায় বসে টিভি দেখছিলো।হঠাৎ করেই তার অতীতের কথা মনে পড়লো।
সায়ানের সাথে প্রাপ্তির বিয়ে হলো আজ ৫ মাস।এই ৫ মাসে কতকিছুই না হলো এখনো হচ্ছে!প্রাপ্তি ইন্টারের পরীক্ষা শেষ করা মাত্রই তার দাদী বলল সায়ানের সাথে প্রাপ্তিকে বিয়ে দিবে।সায়ান প্রাপ্তির ফুফাতো ভাই।সায়ানের মা সালেহা খাতুনের প্রস্তাবেই প্রাপ্তির দাদি প্রাপ্তির বাবাকে বিয়ের কথা বললেন।বোনের এমন একটা চাওয়াতে প্রাপ্তির বাবা আসিফ সাহেব না বলতে পারেন নি!তাই পারিবারিক ভাবেই ধুম ধাম করেই সায়ান আর প্রাপ্তির বিয়েটা হলো।
সায়ান গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে এখন নিজেদের ব্যবসা সামলায়,আর প্রাপ্তি তো ইন্টার শেষ করলো।স্বপ্ন ছিলো উকিল হবে।কিন্তু এমন কিছুর তার জীবনে ঘটে গেলো যে তার আর উকিল হয়ে ওঠা হলোনা।
বিয়ের দিন রাতে মানে বাসর ঘরে সায়ান প্রাপ্তিকে খুব শাসাচ্ছিলো
-মায়ের ইচ্ছাতেই আমাদের বিয়েটা হয়েছে।আমি তোকে মন থেকে বউ হিসেবে মেনে নিতে পারবোনা,কখনোই না।কথাটা মাথায় ঢুকিয়ে নিস।আর আমার রুমে আমার অনুমোতি ছাড়া কখনোই আসবি না।আমি যখন ডাকবো তখন আসবি।তার আগে না।
প্রাপ্তি এগুলোকে কিছুতেই মেনে নিতে পারলোনা।ভেতরে ভেতরে সে গুমড়ে গুমড়ে কাঁদছে। সবশেষে রাতের খাওয়া দাওয়া করার পরে প্রাপ্তি রুমেই ছিলো।ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছিলো।পাশেই বিছানা ছিলো।পরক্ষনেই সায়ান এসে এক ধাক্কা দিয়ে প্রাপ্তিকে বিছানার উপরে ফেলে দিলো!তারপর প্রাপ্তির উপরে স্বামীর অধিকার খাটালো।বৈধ ধর্ষণ যাকে বলে।নিজের বিয়ে করা বউকে বৈধভাবে ধর্ষণ করছে সায়ান।তার মনের ক্ষুধা না মেটা পর্যন্ত সে প্রাপ্তিকে এইভাবেই ধর্ষণ করে গেলো!প্রাপ্তি চিৎকার করছিলো কিন্তু সায়ান ওর মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরেছিলো।সায়ানের ক্ষুধা মিটে যাওয়ার পর প্রাপ্তিকে টেনে বিছানা থেকে উঠিয়ে বলল
-যা মেঝেতে গিয়ে ঘুমা।এই বিছানা আমার একান্তই আমার।আর কারো না।
প্রাপ্তির ইচ্ছা করছিলো ওখানেই সায়ানের গালে একটা চড় লাগিয়ে দেয়।কিন্তু সে কিছু না বলে মেঝেতে বিছানা করে শুয়ে পড়লো।
চলবে……….