ধূসর অনুভূতি পর্ব-১০

0
1109

#ধূসর_অনুভূতি
পর্ব:১০
মা বললো, মেহেদী ভাইয়ার চাকরি চলে গেছে।কথাটা আমার কানে পৌঁছেও যেন পৌঁছালো না।ভাইয়াই আমাদের সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।বাবা আগে ছোট খাটো ব্যবসা করতো কিন্তু,ভাইয়া চাকরি পাওয়ার পর থেকে আর কিছু করে না। শারীরিক ভাবেও তিনি ততো সুস্থ নন। ভাইয়া মোটামুটি একটা ভালো অঙ্কের টাকাই বেতন পেতো।যদিও চাকরি টা সরকারি নয়।তবে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হলেও হুটহাট করে কর্মীদের ঝেড়ে ফেলা হয় না সেখানে।আর, ভাইয়া তো ভালো পোস্টে ছিল,কাজের প্রতিও তার যথেষ্ট সিনসিয়ারিটি ছিল।
আমি মাকে জিজ্ঞেস করলাম, কিন্তু ভাইয়ার দোষ টা কি মা?
মা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, তোর ভাইয়া নাকি পাগল হয়ে গেছে।ডাক্তার বলেছে। অফিসে বেশ কয়েকটা কম্পিউটার ভেঙে ফেলেছে সে। ডিসথমনিয়া না কি যেন বললো একটা মেন্টাল ডিসঅর্ডার….
আমার বিস্ময়ের ঘোর যেন কাটছেই না।আমি বললাম, ভাইয়া কোথায় এখন মা?
মা বললো,ক্লিনিকে আছে।অফিস থেকে পাঠাইছে।
আমি অবাক হয়ে রইলাম। ভাইয়ার একি অবস্থা।না চাইতেও চোখের জল গড়িয়ে পরলো।
আমি বললাম,মা..আমি ভাইয়ার কাছে যাবো।
মা বললেন,যা।আমি কি ধরে রাখছি?
কি নির্লিপ্ত ভাবে কথা বলছে মা।যেন আমি কোন বান্ধবীর বাসায় যেতে চাইছি।
মায়ের থেকে জেনে আমি চলে গেলাম হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে দেখি বাবা আছে, মেহেদী ভাইয়া আর আরমান আংকেলও আছে।বাবা কাঁদছে আস্তে আস্তে। মেহেদী ভাইয়া বাবাকে শান্তনা দিচ্ছে।
আমাকে দেখে বাবা আরো জোরে কান্না করে ফেললো।উঠে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
আমি বললাম,বাবা ভাইয়ার কিছুই হবে না।
ভাইয়াকে ঘুমের ওষুধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছে।ডাক্তার বলেছেন, ভাইয়া অত্যাধিক মানসিক কষ্ট পেয়েছে যেটা সহ্য করা তার পক্ষে সম্ভব হয় নি। এরপর, তিনি ঠিকমতো না ঘুমিয়ে, নিজের যত্ন না নিয়ে রোগটাকে ডাল-পালা গজাতে সাহায্য করেছে।
যখন কেউ মানসিক কষ্টের মাঝে দিয়ে যায় তখন সবার উচিৎ সেই মানুষটাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করা,সময় দেওয়া।বড় কষ্ট পাওয়ার পরও যখন মানুষ হাসে, স্বাভাবিক জীবন যাপন করে নিজে থেকেই তখনি বুঝতে হবে ঘাপলা আছে। শরীরের যেমন যত্ন নিতে হয় মনেরও তেমন যত্ন নিতে হয়।
আমি ডাক্তারকে থামিয়ে বললাম, আমার ভাই কি পাগল হয়ে গেছে?
ডাক্তার বললো,হয়নি। তবে,কিছুদিন ভর্তি থাকতে হবে। পর্যবেক্ষনে রাখা হবে তার আচার আচরণ সবকিছু।
আমার মনে হচ্ছিল আমি যেন চারপাশ অন্ধকার দেখছি। দরজার উপরে থাকা কাঁচের অংশ দিয়ে তাকালাম। দেখলাম, ভাইয়া নিষ্পাপ শিশুর মতো ঘুমিয়ে আছে।
রুমের মধ্যে ঢুকতে আর মন চাইলো না।
ক্লিনিকের বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম।
একসময় দেখি মেহেদী ভাইয়া এসে দাঁড়িয়েছে আমার পাশে।
মাথা নিচু করে বললো,মন খারাপ করো না যুথি। বাদশাহ ভাইয়া ঠিক হয়ে যাবে।
আমি বললাম,ঠিক যদি হয়েই যাবে তাহলে চাকরি চলে গেল কেন?
মেহেদী ভাইয়া বললো,কারণ ঠিক হওয়াটা একটু সময়ের ব্যাপার তাই। প্রাইভেট কোম্পানির কি এতো সময় আছে…তবে ঠিক যে হবে এইটা শিওর।
আমি বললাম,একটু সময় বলতে কত সময় সত্যি করে বলবেন প্লীজ….
মেহেদী ভাইয়া করুন চোখে তাকালো।বললো,হয়তো একমাস হয়তো বা একবছর।
আমি মুচকি হেসে বললাম, ধন্যবাদ ভাইয়া।সত্যিটা বলার জন্য।
এরপর বললাম, ঝিনুক আপু বলেছে আপনি যেন তার সাথে কালকে একটু ঘুরতে যান। তিনি খুশি হবে।
লক্ষ্য করলাম, ঝিনুক আপুর নাম শুনে মেহেদী ভাইয়ার বিষন্ন মুখে এক মুহুর্তের জন্য আনন্দের রেখা ঝিলিক দিলো।
পরক্ষনেই বললো, কিন্তু বাদশাহ ভাইয়ের এই অবস্থা….
আমি বললাম,এক ঘন্টার জন্য যাইয়েন। আপুর মনটাও খারাপ।মনটা ফুরফুরে হবে একটু।
মেহেদী ভাইয়া হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ল।হ্যা ঠিকই বলেছো।
জানি না কেন একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো আমার বুক থেকে।
কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এলো।খানিকটা ধমকের স্বরে বললো, মানসিক রোগীর সাথে আত্মীয়দের দেখা করানো হয় না।তাই, দাঁড়িয়ে থেকে লাভ নেই।
আমরা যেন বাসায় যাই। তিনদিন পর আসি।উনারা তিন দিন রোগীর কাছে কাউকে এলাউ করবেন না।
আমি বাড়ি ফিরে এলাম ভগ্ন হৃদয় নিয়ে।
বাবা ক্লিনিকের বাইরে বসেই রইলো।আসলো না কিছুতেই। মেহেদী ভাইয়া তার সাথে রইলো।
আমি চলে এলাম। হাসপাতাল আমার দোজখের মতো লাগে।উফ কি কষ্ট…কি ভীষন অসহ্য আহাজারি-আর্তনাদ মানুষের।ডাক্তার-নার্স গুলো কি হৃদয়হীন। আমাদের মতো ভাঙা হৃদয়ের মানুষদের ধমক দিয়ে কথা বলে…
বাসে করে বাসায় ফিরছি।এক উগ্র ধরণের লোক আমার পাশের সিটে বসলো। চুল খানিকটা বড়, হাতের দশ আঙুলে দশটা আংটি।লাল চোখ আর পরণে কেমন ধরণের ছিড়াফাড়া পোশাক। এইগুলো তো আবার আজকালকার যুগের ফ্যাশন।লোকটা সিগারেট ফুঁকছে আর ফোনে কার সাথে যেন ঝগড়া করছে।
আমি বললাম,ভাই পিছনের সিট খালি ওখানে বসেন।
লোকটা প্রচুর বিরক্তি নিয়ে আমার দিকে তাকালো। তার,লাল চোখ দু’টো যেন বলছে,এতো সমস্যা হলে প্রাইভেট কারে চলাফেরা করবেন।আমি উঠবো না।
কত ধরণের হ্যারাসমেন্টের স্বিকার হয়েছি এইরকম বাসে।আহ!এতো কষ্ট কেন আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের জীবনে? সিটের আরো কোনায় চলে গেলাম আমি।
এসব ভাবার সময় না এখন। আমার ভাইয়াকে নিয়ে ভাববো শুধু। আমাদের সব আবদারের কথা ভাইয়াকে বলতাম নির্দ্বিধায়। তখন ভাইয়া চাকরিও করতো না।টিউশনি করতো।সেই টিউশনির এক টাকাও নিজের জন্য খরচ করে নি।সব আমার আর ঝিনুক আপুর পিছনে খরচ করেছে।যা খেতে মন চাইতো,যা কিনতে মন চাইতো,যেখানে যেতে মন চাইতো সব বলতাম ভাইয়ার কাছে।আর,ভাইয়াও সব ইচ্ছা পূরণ করে দিতো।আর,কার কাছে আমরা আবদার করবো?
কে আমাকে আগলে রাখবে?কে বলবে,যুথি কাউকে ভয় পাবি না। রাস্তাঘাটে কোনো পোলাপান কিছু বললে আমারে বলবি একদম ঠ্যাঙ ভেঙে দিবো ঐ পোলাপানের। নিজের অজান্তেই ডুকরে কেঁদে উঠলাম। অনেক চেষ্টা করলাম কান্না থামানোর। কিন্তু, পারলাম না।
আমার পাশে বসা অসভ্য লোকটা হঠাৎ আমাকে অবাক করে দিয়ে খুব উতলা হয়ে গেলো।”কি হইছে আপা কাঁন্দেন কেনো? আইচ্ছা আমি উইঠা যাইতাছি কান্দা থামান”…
উনি উঠে গেলেন সিট থেকে। চলন্ত বাসে দাঁড়িয়েই গেলেন বাকিটা পথ।
আমি বললাম বসতে। কিন্তু,উনি আর বসলেন না।
বলতে লাগলো, সমস্যা নাই বইন সমস্যা নাই।দশমিনিটের রাস্তা।
আমি মন থেকে উনাকে ভাইয়া ডাকলাম। বললাম, ভাইয়া আপনি অনেক ভালো মানুষ।
উনি হেসে বললেন,আরে না..না।আমি ভালা না।

বাসায় ফিরে দেখি মা চিৎকার করে কাঁদছে। কিছুক্ষণ আবার চুপ রইলো। আবার চিৎকার করে কেঁদে উঠলো। আর মালিহা ভাবীকে গালিগালাজ করতে লাগলো। আবার কিছু ক্ষন চুপ থাকেন আবার চেঁচামেচি করেন। চক্রাকারে এটাই চলছে।
আমি মাকে বললাম,মা ভাইয়া কি মরে গেছে? তুমি এমন করছো কেন?ডাক্তার তো বলেইছে ঠিক হয়ে যাবে।
মা বললো,তুই বুঝবি না.. বাদশাহ আর ঠিক হইতো না।মা’র মনের চেয়ে কি ডাক্তার বেশি জানে? মায়ের মনে যেইটা বারি খায় ঐটাই হয়।
ঝিনুক আপু পাশের ঘর থেকে বললো,মা তোমার মন কোন মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করছে?

আমি পাশের ঘরে গেলাম। গিয়ে দেখি ঝিনুক আপু শুয়ে আছে তখনো। চোখ গুলো ছোট হয়ে গেছে কান্নার কারণে।তবুও আমার সামনে হাসি দেওয়ার ভাণ করে আছে।
কপালে হাত দিয়ে দেখি গা পুড়ে যাচ্ছে জ্বরে।
নিজের শরীরেও কোনো রকম শক্তি পাচ্ছি না।
কিন্তু, কিছু রান্নাবান্না তো করতে হবে।সবাই খাবে কি… কিচেনে যেতে যেতেই মেহেদী ভাইয়া বাবাকে নিয়ে ফিরে এলো।
মেহেদী ভাইয়া রেস্টুরেন্ট থেকে খাওয়ার জন্য অনেক কিছু কিনে নিয়ে এসেছে।
কিন্তু, কারোরই খাওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই। মেহেদী ভাইয়া জোর করে আমাকে আর বাবাকে খাওয়ালো।
মাকে অনেক জোর করতে লাগলো খাওয়ার জন্য।মা তো কিছুই খাবে না।আমি বললাম,থাক ভাইয়া জোর কইরেন না।মা যেটা না করে সেটা সবসময় না ই থাকে।
মেহেদী ভাইয়া তবুও মাকে জোর করতে লাগলো।বলতে লাগলো, আপনি তো আমার মায়ের মতোই, আমার একটা কথাও কি শুনবেন না? বাদশাহ ভাইয়া বললেও কি আপনি না খেয়ে থাকতেন? আমিও আজ সকাল থেকে কিছুই খাইনি। আপনি যদি না খান এখনো আমার খাওয়া হবে না।
মা বললো, তোমার খাওয়া তুমি খাও.. আমার সাথে তোমার কি সম্পর্ক?আমি খাবো না বলছি না।
মেহেদী ভাইয়া বললো,প্লীজ খেয়ে নেন না মা!
মা অবাক চোখে মেহেদী ভাইয়ার দিকে তাকালো। মেহেদী ভাইয়া বললো,আমার মা নেই আন্টি। আমি কাউকে মা ডাকলাম দীর্ঘ একযুগ পর। আপনি আমার কথা শুনবেন না?
মেহেদী ভাইয়া চোখের পানি মুছলো। মায়ের চোখেও পানি চলে আসলো।
মা খেতে রাজি হলেন। খাওয়া দাওয়া করে বাদশাহ ভাইয়ার রুমে গিয়ে আলো নিভিয়ে শুয়ে রইলেন।
আমি তিতলিকে খাওয়ালাম। হঠাৎ মনে পরলো,আপু তো খায়নি।
তিতলিকে ওর দাদার রুমে রেখে আমি আমাদের রুমে গেলাম।দরজায় দাঁড়িয়ে দেখি মেহেদী ভাইয়া খাবার নিয়ে বসে আছে আপুর মাথার কাছে।
– ওঠো খেয়ে ওষুধ খাও ঝিনুক। একজন অসুস্থ হইছে ঐটাই যথেষ্ট। আবার, তুমি কেন অসুখ বাঁধাতে চাইছো?
ঝিনুক আপু বললো, চুপ থাক গাধা ভূত কোথাকার। আমাকে খাইয়ে দিতে বললাম ঐটা শুনছিস না কেন?
কান নেই তোর?
– তুমি আমাকে তুই তুকারি করছো কেন?
– তো?এই ডাকিনী কি তোর মতো গাধা ভূত কে আপনি আজ্ঞে করবে?শখ কত হুহ….
– তাহলে স্বীকার করছো তো তুমি ই ডাকিনী?
আমি দরজার আড়াল থেকে ওদের দুজনকে দেখছিলাম। মেহেদী ভাইয়া ঝিনুক আপুকে খাইয়ে দিচ্ছিলো।কি সুন্দর লাগছে দুইজনকে… আমার ভাল্লাগলো,কেন জানি একটু কষ্টও হলো।
খাওয়ার পর আপুকে ওষুধ খাইয়ে মেহেদী ভাইয়া চলে যেতে লাগলো।আপু উনার হাত ধরে বললো,যাইস না রে প্লিইজ…
মেহেদী ভাইয়া বললো, কেন?
আপু বললো,কারণ একবার যেতে দিলে এমন মেন্দি পাতা আরতো পাবো না।
বলেই আপু হাসলো।
মেহেদী ভাইয়াও হেসে ফেললো। আবার, ঝিনুক আপুর পাশে বসলো।
ঝিনুক আপু মেহেদী ভাইয়ার কোলে মুখ গুঁজে ফেললো।
মেহেদী ভাইয়া বললো, ঝিনুক জ্বরের ঘোরে কি করছো?কেউ যদি এই খানে এখন আসে?
ঝিনুক আপু বললো, চুপ গাধা ভূত…আমি কালকে ঘুরতে যাবো ঠিকাছে…
– তোমার তো অনেক জ্বর ঝিনুক..
-আমার হলো ভালুকের জ্বর।কাল সকালেই গায়েব হয়ে যাবে।
আমি হঠাৎ আমার ঘাড়ে কারো নিঃশ্বাস অনুভব করলাম। তাকিয়ে দেখি,মা….
আমার হৃৎপিণ্ড থেমে যাওয়ার উপক্রম হলো।আজকে মা তান্ডব বইয়ে দিবেন।
মা ঠান্ডা চোখে কিছু ক্ষন দেখে চলে গেলো। কিছুই বললো না।এ যেন অষ্টম আশ্চর্য।
পরদিন সকালে খুব ভালো একটা ঘটনা ঘটলো।ক্লিনিক থেকে ফোন আসলো।আমি ধরলাম। একজন নার্স বিরস মুখে বললো,নিন রোগীর সাথে কথা বলুন।
হঠাৎ, বাদশাহ ভাইয়ার গলা শুনতে পেলাম।
– কিরে যুথি আমাকে এখানে রেখে গেছিস কেন?
আমি ভাইয়ার সাথে কথা বললাম। মা-বাবাও বললো। ভাইয়া একদমই স্বাভাবিক।
পরে,ডাক্তার বললো, চিন্তা করবেন না। তিন-চার দিনের মধ্যেই উনি ঠিক হয়ে যাবে।
নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।সত্যিই আমাদের ভাগ্য এতো ভালো?নাকি…….
……..
……..
ঝিনুক ঠিকই বলেছে।ওর জ্বর আসলেই ভালুক জ্বর।রাতে কি ভীষণ জ্বর ছিল, এখন আর নেই।
মেহেদী আর ঝিনুক ঘুরতে এসেছে।কি সুন্দর ছবির মতো একটা জায়গা….আসলে এটা একটা নার্সারি। শহরের সবচেয়ে বড় নার্সারি এটা। চারপাশে শুধু গাছ গাছ আর গাছ। ফুল,ফল,ঔষধি,মশলা,কাঠ সব ধরনের গাছই আছে।
লাল রঙের জামা পরেছে বলেই ঝিনুক কে কেমন বউ বউ মনে হচ্ছে। বিশেষ করে, মাথায় ঘোমটা দেয়ার কারণে।
মেহেদী তাকিয়ে থাকে ঝিনুকের দিকে।একদিনের জ্বরেই কেমন রোগা আর দূর্বল লাগছে মেয়েটাকে।অবশ্য এর জন্য আরো বেশি মায়াবী লাগছে….
ঝিনুক হঠাৎ বললো, তাকিয়ে আছেন কেন? জীবনে মেয়ে দেখেন নি?
মেহেদী কি বলবে ভেবে পেলো না।
ঝিনুক বললো, আপনি আমাকে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন কোন মতলবে বলবেন?
– তুমি ই তো আসতে চাইছো।
– কখন?জ্বরের ঘোরে কি না কি বলেছি আপনি সত্যি ধরে বসে আছেন?জ্বর এলে আগে আমি আমার মাকে ভাবী ডাকতাম। আমার মাথা আউলায় যায় বুঝলেন?
– কিন্তু,আমাকে তো যুথি বললো তুমি নাকি আমার সাথে ঘুরতে যেতে চাও।
ঝিনুক বিরক্ত হয়ে যায়।এই গাধা যুথিটাও না….
নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,আমি বললেই আমাকে নিয়ে আপনি আসবেন কেনো?কোনো মেয়ে বললেই আপনি তাকে নিয়ে ঘুরতে যান?
– কোনো মেয়ে আর তুমি কি এক?
– ওমা আলাদা হবো কেন? আমার মাথায় কি শিং আছে?
মেহেদী হাসলো।
~তুমি নিজেই বুঝো ঝিনুক কেন তুমি আলাদা?
– না তো আমি তো বুঝি না। বলেন কেনো?
~তুমি যে বুঝো সবকিছু আমি জানি।স্বিকার করলেই হয়, আমার মুখ থেকে শুনতে চাও….
……….
চলবে,
.
লেখক: শাপলা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here