#ধূসর_রঙে_আকাশ
#পর্ব_৬
লিখা: Sidratul Muntaz
নীলাভ্র যখন একনিষ্ঠতার সাথে রিম্মিকে অনুসরণ করছিল তখন একটা বিচিত্র ঘটনা ঘটে। রিম্মি আচমকা পেছনে ঘুরল আর নীলাভ্রর মাথা এক হাতে সরিয়ে ডানদিকে সোজামতো নিজের ডানহাত মেলে ধরল। চোখের পলকে ওর হাতে একটা বল এসে আটকায়। পুরো রোবটিক স্টাইল। যেন সে আগেই সব জানতো। নীলাভ্রর চোখ কোটরাগত হওয়ার উপক্রম হয়। রিম্মি অসাধারণ ভাবে বলটা ক্যাচ ধরেছে। প্রথম কয়েক সেকেন্ড নীলাভ্র কিছুই বুঝলো না। কিছু মুহুর্ত অতিবাহিত হওয়ার পর তার বুঝে আসল, রিম্মি ক্রিকেট বলটা ক্যাচ না ধরলে সেটা তার মাথায় আঘাত করতো। নীলাভ্র আস্তে আস্তে পিছনে তাকিয়ে দেখল তার মতোই অবাক হয়ে চার-পাঁচটা ছেলে তাকিয়ে আছে। ওরাও নির্বাক রিম্মির কান্ডে। প্রত্যেকের ঠোঁট মাঝ বরাবর আলাদা হয়ে গেছে। ওদের গায়ে জার্সি। রাস্তার পাশের বড় মাঠে ক্রিকেট খেলছিল তারা। রিম্মি সামনের ছেলেটিকে উদ্দেশ্য করে বলটা ছুড়ে মারল। হতবাক ছেলেটি অপ্রস্তুত হওয়া সত্ত্বেও ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ হয়নি। কয়েক সেকেন্ড সবাই হতভম্ব দৃষ্টিতে রিম্মির দিকে চেয়ে রইল। কেউ কথা বলল না।খোলা রাস্তায় পিনপতন নীরবতা। একটু পর ছেলেগুলো হাত তালি দেওয়া শুরু করল। বাহবা জানাতে লাগল। যে ছেলেটার হাতে বল ছিল সে শিষ বাজিয়ে বলল,
” জোস ক্যাচ আপি, চরম ছিল। ওয়াও!”
আরেকজন বলল,” আপু কি ক্রিকেটার?”
রিম্মি সবার উত্তরে মুচকি হাসল। তারপর সামনে হাঁটতে লাগল। ছেলেগুলো নিজেদের মধ্যে রিম্মির ক্যাচ ধরা নিয়ে আলাপ করতে থাকে। প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়। তারপর তারা খুশি খুশি মাঠে চলে যায়। নীলাভ্র কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে তখনো দেয়াল ঘেষে দাড়িয়ে ছিল। কিছুসময় পর যখন তার বিস্ময় কাটল, সে দৌড়ে গেল রিম্মিকে থ্যাংকস জানাতে। কারণ রিম্মি না থাকলে আজ সে নির্ঘাত আহত হতো। নীলাভ্র রিম্মিকে থ্যাংকস জানাতে পারল না। ততক্ষণে রিম্মি ধরা-ছোয়ার বাহিরে। সে বাসে উঠে গেছে। বাস চলেও যাচ্ছে!
সন্ধ্যায় রিম্মিদের বহুতল ভবনের পাঁচতলায় দাড়িয়ে কলিংবেল চাপে নীলাভ্র। ওর হাতে বড় বড় ব্যাগ। ব্যাগগুলো ভারী। ভিতরে আছে আচারের বয়াম।দরজা খুললেন তনিমা নাজরিন। ভদ্রমহিলার বয়স পয়তাল্লিশ কি পঞ্চাশ। নীলাভ্র মৃদু হেসে সালাম দিল,
” আসসালামু আলাইকুম আন্টি, ভালো আছেন?”
তনিমা নীলাভ্রকে দেখে এমন এক হাসি দিলেন যেন আকাশের চাঁদ দেখেছেন। দীর্ঘ হাসির রেখা মুখে ফুটিয়ে তনিমা বললেন,
” ওয়ালাইকুম আসসালাম, তিলোত্তমার দেবর না তুমি?”
” জ্বী আন্টি। ভাবী আপনার জন্য এগুলো পাঠিয়েছে। ”
” ভিতরে আসো বাবা।”
নীলাভ্রর হৃদয়ে এক দমকা শীতল বাতাস দোলা দিয়ে যায়। সে ভাবেনি তাকে ভিতরে আসতে বলা হবে। ভেবেছিল জিনিসপত্র নিয়েই হয়তো মহিলা ফটাফট দরজা আটকে দিবেন। যেহেতু উনি রিম্মির মা। হয়তো রিম্মির মতোই কনজার্ভেটিভ হবেন। কিন্তু উনাকে দেখে মনে হচ্ছে না উনি খুব কনজার্ভেটিভ। যাক ভালোই হলো, এই বাহানায় যদি রিম্মির একটু দেখা পাওয়া যায়। তনিমা নীলাভ্রকে বৈঠকঘরে নিয়ে এলেন। নীলাভ্র ভূত দেখার মতো চমকে উঠল। কারণ বৈঠকঘরের পাশেই বিরাট রান্নাঘর। চিকন, লম্বা, ছিপছিপে দেহের একটা মেয়ে গায়ে কমলা টি-শার্ট আর হাটু পর্যন্ত লম্বা প্যান্ট পড়ে নাচের অঙ্গভঙ্গি করছে। আসলে সে রান্না করছিল। তার চুলের লম্বা ঝুটিটা পিঠে তিড়িংবিড়িং করে দুলছে। নীলাভ্র চোখ পিটপিট করে আবার তাকায়। একবার মাথা ঝাড়া দিল। সে ঠিক দেখছে তো? তনিমার ডাকে নীলাভ্রর ভাবনায় চিড় ধরে। আমতাআমতা করে বলল,
” জ্বী আন্টি?”
” বসছো না কেন?।”
নীলাভ্র অযথাই হাসল,” ওহ৷ বসছি আন্টি।”
সোফায় বসেই আবার রিম্মির দিকে তাকায় সে। তনিমা নীলাভ্রর বরাবর বসেছেন। সেন্টার টেবিলের নিচের থকে অনেকগুলো সাইনবোর্ড গুছানো। প্রত্যেকটিতে সাধারণ কিছু বার্তা লেখা। তনিমা একটা সাইনবোর্ড তুলে রিম্মিকে দেখালেন। রিম্মি হাসিমুখে বৈঠকঘরের দিকে তাকালো। তারপর যেই না নীলাভ্রকে দেখল ওমনি তার মুখটা অন্ধকার হয়ে গেল। নীলাভ্র রিম্মির মনোযোগ আকর্ষণের জন্য হাসে। রিম্মি পাত্তা দেয় না। ঝড়ের গতিতে কাজ শুরু করে। তাই দেখে নীলাভ্রর চোখ ছানাবড়া। তনিমা ওর সামনে বসে কথা বলে যাচ্ছেন। উনার কথার বিষয়বস্তু সম্পর্কেও নীলাভ্র জানেনা। সে শুধু অবাকচোখে রিম্মির কান্ড দেখছে। রিম্মি ফ্রাইপ্যানে একটা ডিম ভেঙে ছাড়ল। তারপর পেছনে না ঘুরেই দুইহাতে ডিমের খোসা ছুড়ে মারল। নীলাভ্র ভাবল খোসা দুটি তার মুখে এসে পড়ছে। সরে যাওয়ারও সময় পায়না নীলাভ্র। কিন্তু অদ্ভুতভাবে ডিমের দুই খোসা নীলাভ্রর দুই কানের পাশ দিয়ে চলে যায় এবং ডাস্টবিনে সুন্দরভাবে গিয়ে পড়ে। নীলাভ্র আবার ঘাড় ঘুরিয়ে রিম্মির দিকে তাকায়। ওর চোখে তখন ঘোর বিস্ময়। রিম্মি বড় ফ্রাইপ্যানটা উচু করে ডিম ছড়িয়ে দিয়েছে। একদম বিশাল বৃত্তের আকৃতি হয়ে গেল ডিমটা। যেন কম্পাস দিয়ে কেউ সাদা খাতায় বৃত্ত এঁকেছে। এটা দেখে নীলাভ্রর চোখও ডিমের মতো গোল হয়ে যায়। রিম্মি ডিমে ঝরঝর করে মশলা ছিটাতে থাকে। মশলার কৌটা গুলো রিম্মি ধরতেই যেন খুলে যাচ্ছে। আবার মনে হচ্ছে অটোমেটিক বন্ধও হয়ে যাচ্ছে। সবজি কাটার সময় নীলাভ্র মাথা টনটন করে উঠল যখন সে দেখল প্রত্যেকটা স্লাইস একদম পারফেক্ট শেপের হচ্ছে। মেশিন দিয়ে কাটলেও এতো পারফেক্ট হয়না। নীলাভ্র একবার চোখ বুজে আবার তাকায়। ঘটনাগুলো এতোই দ্রুত হচ্ছে যে তার মস্তিষ্ক নিতে পারছে না। একটু পর মুন আসল। মেয়েটার মুখে আগের মতোই মিষ্টি হাসি। খুড়িয়ে খুড়িয়ে রান্নাঘরে ঢুকল মুন। তারপর রিম্মির হাতে একটা কালার কিউব দিল। রিম্মি মুচকি হেসে মুনের গাল টিপল। তারপর দুই সেকেন্ডে কালার কিউবের সব রঙ মিলিয়ে দিল। নীলাভ্র বিস্ময়ে নখ কামড়ে ধরে। জিনিয়াসরাও এতো জলদি পারেনা। যত জলদি রিম্মি করল। আর যখন সে কালার কিউব মিলাচ্ছিল ওর হাত যেন চড়কির মতো ঘুরছিল। নীলাভ্রর মনে হলো তার দেখার ভুল। সে হয়তো হ্যালুসিনেট করছে। কারণ সে যেগুলো দেখছে সেগুলো কখনো বাস্তব হতে পারেনা। একটা সাধারণ মানুষের আচরণ এমন কখনো হতে পারেনা। নীলাভ্রর মাথা ভনভন করছে। রিম্মি ট্রেতে খাবার সাজিয়ে নীলাভ্রর সামনে রাখল। তারপর চুল বাধতে বাধতে রুমে চলে গেল। নীলাভ্র রিম্মির রুমের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। তনিমা বললেন,
” হা করে দেখছো কি? কফিটা নাও বাবা।”
নীলাভ্রর হুশ আসল। হাসার চেষ্টা করে কফি নিল। তনিমা বললেন,
” আমার মেয়ে কফি আর এগ স্যান্ডউইচ খুব ভালো বানাতে পারে।”
নীলাভ্র কফিতে চুমুক দিতে নিয়েও দিল না। হেসে বলল,
” দেখলাম তো। আসলেই খুব দ্রুত বানায়।”
তনিমাও এবার ফিক করে হাসলেন। তারপর বললেন,
” ও আসলে একটু দ্রুত কাজই পছন্দ করে।”
কফিটা নীলাভ্রর অসাধারণ লেগেছে। এমন কফি যেন সে জীবনেও খায়নি। টেস্ট একদম অন্যরকম ৷ বেশি দুধও না বেশি চিনিও না। সবকিছুর যেন পারফেক্ট একটা মিশ্রণ। এমন পারফেকশনই তো সবাই খোঁজে। নীলাভ্র খাওয়া শেষ করে উঠে দাড়াল,
” আন্টি আজকে আসি।”
তনিমা মুখ মলিন করে বললেন,” মাত্রই তো এসেছো। এতো জলদি চলে যাবে?”
” আমার একটু কাজ আছে আন্টি, যেতে হবে।”
” আসলে আমার আরেকটা মেয়ে ছিল৷ ও একটু বাহিরে আছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে। যদি তুমি আরও দশমিনিট বসো তাহলে ওর সাথে দেখা হবে।”
নীলাভ্র মনে মনে চিন্তা করল, আন্টি তো ভালোই। তাকে সুযোগ করে দিচ্ছে। অন্যসময় হলে নীলাভ্র স্বাচ্ছন্দ্যে বসে থাকতো। রিম্মির বাসায় সারাদিন বসে থাকতেও তার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আপাতত নীলাভ্র একটু টেনশনে আছে। লাভলী আন্টি বলেছেন দ্রুত উনার সাথে দেখা করতে। দুপুর থেকে তোহার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। শপিংমলে গিয়েছিল তারপর আর ফিরেনি। নীলাভ্র লাভলিকে জানায়, তোহার সাথে শপিংমলে দেখা হয়েছিল তার। তখন লাভলী বলেছেন নীলাভ্রকে নিয়ে খুঁজতে বের হবেন। নীলাভ্রর হাতে তখন ব্যাগ ছিল। সে ব্যাগগুলো নিয়ে রিম্মিদের বাসায় আসছিল। তাই তখন লাভলী আন্টিকে অপেক্ষায় থাকতে বলে এখানে চলে এসেছে। লাভলী আন্টি নিশ্চয়ই তার অপেক্ষা করছেন। নীলাভ্রকে দ্রুত যেতে হবে। তাই সে বলল,
” আন্টি আসলে আজকে আমার জরুরী কাজ আছে। অন্য আরেকদিন আসবো। তখন সবার সাথে দেখা করবো।”
” আচ্ছা যাও। আর যাওয়ার সময় মেইন গেইটের লকটা লাগিয়ে যেও।”
” আচ্ছা আন্টি।”
তনিমা ভিতরের রুমে চলে গেলেন। নীলাভ্র যাওয়ার সময় দেখল রিম্মি বিছানায় শুয়ে চোখে চশমা লাগিয়ে বই পড়ছে। রিম্মির মাথাটা ঠিক নীলাভ্রর দিকে। আর পা গুলো দেয়ালের সাথে লাগানো৷ ওর কপালে কিছু কোকড়া চুল এলোমেলো ভাবে উড়ছে। দৃশ্যটা দেখতে সুন্দর লাগছে। মনে হচ্ছে চুলগুলো যেন হাতছানি দিয়ে নীলাভ্রকে কাছে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। নীলাভ্র আনমনে হাসল৷ ভুলে গেল জরুরী কাজের কথা। ইচ্ছে করছে রিম্মির ঘরে ঢুকে সযত্নে কপালের ওই চুলগুলো গুছিয়ে দিতে। নীলাভ্র কি যাবে? যাওয়ার সাহস হচ্ছে না। কিন্তু নিজেকে আটকাতেও পারছে না। মাথায় বুদ্ধি আসল। প্রতিরাতেই রিম্মিকে উদ্দেশ্য করে চিরকুট লিখে সে। একটা চিরকুট এখন তার পকেটেই আছে। নীলাভ্র চাইলেই রিম্মির অগোচরে ঘরে ঢুকে চিরকুটটা টেবিলে কিছু একটার সাথে চাপা দিয়ে রেখে যেতে পারে। রিম্মি যেহেতু উল্টো দিকে মুখ করে আছে, সে নীলাভ্রকে দেখবে না। কিছু বুঝবেও না। তারপর যখন নীলাভ্রর অনুপস্থিতিতে রিম্মি চিরকুটটা খুলবে, নিশ্চয়ই খুব চমকাবে। নীলাভ্র রুমে প্রবেশ করল। রিম্মি জানে এতোক্ষণ নীলাভ্র দাড়িয়ে দাড়িয়ে তাকেই দেখছিল। নীলাভ্রর মনে কি চলছে সেটাও রিম্মির তুখোড় মস্তিষ্ক জানে। সে দূর থেকে সবার মন পড়ার ক্ষমতা রাখে। নীলাভ্র এখন টেবিলের সামনে দাড়িয়ে কলম খুঁজছে। কলমের নিচে একটা চিরকুট রেখে যাবে তাই। রিম্মি নিজের মনে হাসল। সে চায় নীলাভ্র তার কাজে সফল হোক। তাই ইচ্ছে করেই বাগড়া দিল না। নীলাভ্র নিঃশব্দে যখন চলে যেতে নিচ্ছিল তখন হঠাৎ কারো পায়ের আওয়াজ ভেসে এলো। নীলাভ্র থমকে দাড়ালো। এই ঘরে কেউ আসছে। ধুপধাপ আওয়াজ হচ্ছে। জুতা পায়ে দ্রুত হেটে আসার আওয়াজ। রিম্মির সচল মস্তিষ্ক বুঝে নিল তনিমা ওর ঘরের দিকে ধেয়ে আসছে। এ অবস্থায় নীলাভ্রকে দেখলে ঘোর বিপদ। রিম্মি শোয়া থেকে সরাসরি উঠে দাঁড়িয়ে গেল। নীলাভ্র ধরা খেয়ে ইতস্ততবোধ করল। চোখের ইশারায় বুঝাতে চাইল তার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নেই। রিম্মি হঠাৎ নীলাভ্রর পায়ে পাড়া দিয়ে ওকে মেঝেতে ফেলে দেয়। নীলাভ্র সরাসরি পড়ে যায় না। চিৎ হয়ে চার হাত-পায়ে দাড়ানো থাকে। অনেকটা টেবিলের মতো। রিম্মি ঝটপট নীলাভ্রর গায়ে মোটা কুশন, সাদা চাদর তুলে দেয়। বিছানার পাশে টেবিলটা পর্যন্ত স্থানচ্যুত করে নীলাভ্রকে ঠেলে টেবিলের জায়গায় নেয়। তারপর টেবিলটা নীলাভ্রর উপরে তুলে দেয়। বিস্ময়ে নীলাভ্র ‘ না, না’ শব্দ করতে থাকে। টেবিলের নিচ ফাঁকা হওয়ায় নীলাভ্রর মাথা থেকে বুক পর্যন্ত টেবিলের নিচে এঁটে যায়। বাকি জায়গায় চাদর ছড়িয়ে রিম্মি বসে পড়ে। একদম নীলাভ্রর পেটের উপর বসে। নীলাভ্রর দম আটকে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়। হাত-পা কাপতে থাকে। রিম্মি জোরে নীলাভ্রর পায়ে পা দিয়ে আঘাত করল। নীলাভ্রর কাপাকাপি থেমে গেল। একদম স্ট্যাচুর মতো হয়ে গেল সে। তনিমা ঘরে ঢুকলেন। রিম্মি মনোযোগের সাথে নীলাভ্র নামক টুলের উপর বসে বই পড়ছে। তনিমা ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে কি একটা খোজাখুজি করলেন। খচখচ শব্দ শুনতে পায় নীলাভ্র। এভাবে পাঁচমিনিট চলল। তারপর তনিমা বের হয়ে গেলেন। একটা কথাও বলেন নি। কিছু সন্দেহও করেন নি। নীলাভ্র হাফ ছেড়ে বাঁচল। রিম্মি উঠে দাড়িয়ে সব জিনিস সরালো নীলাভ্রর উপর থেকে। নীলাভ্র তখনো নড়াচড়া করতে পারছে না। রিম্মি একটা ফু দিল। ওমনি নীলাভ্র মেঝেতে শুয়ে পড়ল। রিম্মি জোরে হেসে দিল। এদিকে নীলাভ্রর অবস্থা নাজেহাল। সে যতটা কাহিল তার চেয়েও অবাক, নির্বাক,বিস্মিত। এমন অদ্ভুত প্রতিভাসম্পন্ন মেয়ে নীলাভ্র জীবনে কোনোদিন দেখেনি।
চলবে
( এবার আপনারাই বলুন তো, আমীর একজন সাইন্টিস্ট হয়ে রিম্মিকে কেন কিডন্যাপ করতে চায়? দেখি কয়জন বলতে পারে।🤭)