নতুন তুই আমি পর্ব-৯

0
1990

#নতুন_তুই_আমি#
💜💜💜💜💜💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
!
পর্ব:-৯…………………………
!
“সিয়াম,রৌদ…….”
“হুম….তো??”
“তুই ওকে কেনো ডাকছিস?তুই জানিস না???”
“আরে।বাদ দে না।ব্যাটা এখন আর কি করবে??তোর তো বিয়ে হয়ে গেছে এখন…….”
তামান্না রৌদের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলো।কেমন যেনো হা করে তাঁকিয়ে আছে ছেলেটা।
ওদের ই ক্লাসমেট।
তবে তামান্নাকে খুব প্যারা দেয়।এরজন্য অবশ্য সিয়ামের পেদানীও খেয়েছিলো একবার।
তবে আজ সব ফ্রেন্ডদের ট্রিট দেওয়ার সময় সিয়াম এই অর্থব টাকেও ডেকে এনেছে।
“সিয়াম,তুই যাই বলিস না কেনো??রৌদকে না ডাকলেই পারতি।শালা তো সুবিধার না…..”
“ঐশী!বাদ দে তো।তামান্নু তুই খা তো।আমি আছি না??”
মুঁচকি হাঁসলো তামান্না।
সত্যি সিয়াম টা না ভীষণ ক্যায়ারিং।ছোট বেলা থেকে আজ অবদি বাড়তি সব ঝামেলা নিজে সামলে তামান্নার জীবনটা খুব সহজ করে দিয়েছে।
.
সিয়াম বিল মিটিয়ে সব কটাকে নিয়ে বেরিয়ে আসলো রেস্টুরেন্ট থেকে।
ঐশী আর তামান্না সবার পেছনে হাঁটছে।
“ওয়াও….দোস্ত।কি বিউটিফুল রিং……”
“আরে আস্তে!!!!”
“দেখি…দেখি।কাল নিশ্চয় ও পড়াইছে??”
ঐশীর কাছ থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে তামান্না মাথা নেড়ে বলল,
“হুমমম…..”
“ইশশশশশ।।।।দোস্ত যাই বলিস না রে।সিয়াম কিন্তু তোর জন্য একদম পারফেক্ট।আঙ্কেল-আন্টি একদম ঠিক করছে…..”
“জানি না রে।”
“ইশশশশ।এমন করে বলছো,যেনো কিছু বুঝো না।বিয়ে করে নিছো তো এখন।দেখবা তোমার বেস্টু কি কি করে!!!”
“কিহ??”
“তোর কি মনে হয়??সিয়াম তোকে এমনিতে ছাইড়া দিবে নাকি??হুম???”
“কি বলছিস তুই??”
“দু দিন শাড়ি পড়ে সামনে আয় না।দেখ কি করে……. ক্রাস খাওয়া ছাড়া উপায় নেই ওর……ইভেন কাল তোর যা পিক দেখলাম….আমার তো মনে হয় কাল ই ফার্স্ট ক্রাস খেয়ে নিয়েছে…….আর বোকার মতো কি বলছি আমি!!তোর যা রূপ!!দোস্ত রিয়েলি…..দশে দশ……সিয়াম কি করে এতো কাছে পেয়েও তোকে প্রপোস করে নি এতোদিন!সেটাই আমি ভেবে পাই না।”
তামান্নার কেঁশে উঠলো।
কি বলে কি এই মেয়ে!!!
“ঐশী!!!চুপ এটা রাস্তা।।।”
“আই নো।শোন,তোকে একটা কথা বলছি।আমরা জানি তোর আর সিয়ামের মাঝে কিছু ছিলো না।কিন্তু যখন সবকিছু মেনে আল্লাহর রহমতে কাজ টা হয়ে গেছে।নিশ্চয় আল্লাহ তোদের এক করে রাখবে,তাই এতো কিছু।সো আগে যেমন-তেমন…এখন সিয়ামের উপর নিজের একটু জোর খাটাবি…..”
তামান্না অবাক হয়ে জিঙ্গাসা করলো,
“মানে??”
আর কিছু বলা হলে না ঐশীর।সজীব ডেকে নিলো তাঁকে।যার ডাকে ঐশী সারা না দিয়ে পারেই না।
.
সব ফ্রেন্ডদের বিদায় দিয়ে সিয়াম-তামান্না একসাথে হাঁটছে।পার্কিং এ গিয়ে তামান্না খেয়াল করলো ওর গাড়ি নেই।
সিয়ামের দিকে জিঙ্গাসু দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে বলল,
“গাড়ি??”
“আমি পাঠিয়ে দিয়েছি।”
“কেনো??”
“আমার সাথেই তো রোজ যাস।এখন আবার ঢং করিস কেনো??”
“গাড়িতে ফোন ছিলো আমার…..”
“হারাবে তো আর না।লাগলে আমার টা ইউজ করিস…..”
তামান্না চোখ ছোট করে তাঁকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ।
সিয়ামকে আজকে একটু অন্য রকম লাগছে।সেটাই বুঝার চেষ্ঠা করছে।
সিয়ামও তামান্নাকে দেখছে।
তবে ও বুঝার চেষ্ঠা করছে তামান্নার চোখ দুটোকে।
কি আছে ঐ চোখ দুটোতে!!!
হঠাৎ করেই তামান্নার হাতে কোনো কিছুর টান লাগতেই ভয় পেয়ে যায় তামান্না।
সাথে সাথে চিৎকার করে উঠে,
“আমার পার্স!!!!”
বাকী টা বলার আগেই সিয়াম ছুটে চলে যায়।তামান্না রীতি মতো ভড়কে আছে।
বেশিদূর যাওয়া লাগে নি।রেস্টুরেন্টের বাইরের গেইটেই সিয়াম কিছু লোকের সাহায্যে ছেলেটাকে ধরে ফেলেছে।
তামান্নাও সেখানে উপস্থিত হয়।সিয়ামের যা রাগ!!আল্লাহ্ ই জানে-আজকে ছেলেটার কি অবস্থা হয়।
কোনো কথা ছাড়াই সিয়াম ছেলেটার পেটে লাথি বসিয়ে দিলো।
একের পর এক মেরেই যাচ্ছে।
ছেলেটাকে দেখে ভদ্র মনে হয়।বুঝাই যাচ্ছে না সে একটা চুর।দামী দামী রেস্টুরেন্ট,মার্কেটে ভদ্র বসে থাকে।আর সুযোগ বুঝে হাতিয়ে নেয়।
সবাই মিলে ছেলেটাকে সিয়ামের হাত থেকে ফিরিয়ে নিলো।ম্যানেজার বুঝিয়ে শুনিয়ে বিষয় টা নিজের আয়ত্বে নিয়ে নেওয়ার পরও সিয়াম তার সাথে রাগারাগি করছে।
রেস্টুরেন্টের এরিয়ার এমন একটা ঘটনার জন্য তিনি লজ্জিত।কিন্তু তাতেও যেনো সিয়ামের রাগ কমে না।
তামান্না খুব সাহস করে এগিয়ে এসে সিয়ামের হাতে ধরে বলল,
“চল……”
সিয়াম তামান্নার দিকে রাগী চোখে তাঁকাতেই তামান্না হাত ছেড়ে দিলো।সিয়াম সবচেয়ে কাছের বন্ধু নয় শুধু সব চেয়ে কাছের জম।আর কারও রাগ যেমন তেমন….সিয়ামের রাগ সর্ম্পকে তামান্নানা পুরো বিশেষজ্ঞ।
খুব ভয় পায় সিয়ামের রাগী লোকটাকে।
সিয়ামও বুঝতে পারছে তামান্না ভয় পাচ্ছে।মাঝে মাঝে খুব অদ্ভুত লাগে সিয়ামের।তামান্না কেনো যেনো ওর রাগের সময় শিউরে উঠে।শুধু আজ নয়….যখনি সিয়াম খুব রেগে যায় তামান্নার সামনে তামান্না ভয়ে পুরো দমে যায়।সিয়াম আজও এ বিষয়ে কিছু জানতে চায় নি তামান্নার কাছে।
একবার তো রৌদকে মারার সময় তামান্না ভয়ে সেন্সলেন্সও হয়ে গেছিলো।
তারপর অবশ্য বাকীটা সিয়ামকেই সামলে হয়েছিলো।
সিয়ামের খুব হাঁসি পাচ্ছে তামান্নার ভীতুমুখটা দেখে।
না হেঁসে মাথা ঠান্ডা করে তামান্নাকে নিয়ে চলে আসলো।
.
বাসে আজও সিট পায় নি ওরা।পেছনের দিকে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে দুজনে।
সিয়াম বরাবরের মতো তামান্নাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে।পুরো রাস্তা কেউ কোনো কথা বলছে না।
কন্টাকটার এসে ভাড়া চাইলো।তামান্না ব্যাগের চেইন খোলার আগেই সিয়াম দুজনের ভাড়া মিটিয়ে দিলো।
অন্য দিকে মুখ করে মুঁচকি হাঁসলো তামান্না।
তাহলে কি ঐশীর কথা সত্যি হতে চললো নাকি??
সত্যি কি সিয়াম বদলে যাবে??
তামান্নার মা ও তো তাঁকে বলছিলো,বিয়ের পর সিয়াম অন্য রকম ভাবে ঘিরে রাখবে তার সবটা।
হয়তো তাই হচ্ছে।
বদলের রং ধরেছে সিয়ামের চরিত্রে।
তা না হলে,
সিয়াম দিচ্ছে বাস ভাড়া!!!!
ভাবতেই পারছে না তামান্না।
☺☺☺☺☺☺☺☺☺

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here