নিবেদিত_প্রেম_আরাধনা ||৫ম পর্ব||

নিবেদিত_প্রেম_আরাধনা
||৫ম পর্ব||
-ঈপ্সিতা শিকদার
মাথা ভর্তি ডিম নিয়ে কাঠ ফাটা রৌদ্রে এক পা উঁচু করে কান ধরে দাঁড়িয়ে আছে সুখ। কাঁচা ডিমের গন্ধে পেট গোলাচ্ছে তার বারবার। রাগে, বিরক্তিতে, ব্যর্থতায় আবরাহামকে গালি দিচ্ছে সে। আবরাহাম মুচকি হাসির সহিত গায়ের পোশাক বদলাতে বদলাতে গ্লাস ডোর দিয়ে দেখছে সুখকে।

তখন সুখ সামনে আসতেই হাত ধরে তাকে নিজের ঘরে নিয়ে এসে মাথায় চার-চারটে ডিম ভেঙে বারান্দায় দাঁড় করিয়ে রেখে লক করে দেয় সে। তবে একটা বিষয় খেয়াল করতেই কপালে ভাজ পড়ে তার, মেয়েটা অনবরত ঠোঁট নাড়ছে।

“এই মেয়ে আবার কী বলছে?”
কৌতূহলী হয়ে আবরাহাম শার্ট গায়ে এঁটে বাটন লাগাতে লাগাতে বারন্দার দরজা খুলে এগিয়ে যায় সুখের দিকে।

সুখ তখন মাথা নিচু করে বকতে ব্যস্ত তাই আর খেয়াল করেনি তাকে। একদম কাছাকাছি এসে নাক কুঁচকে দাঁড়াতেই সে শুনতে পায় সুখ বিড়বিড়াচ্ছে,

“খাটাশ একটা! না, না, গন্ডার মার্কা হাইব্রিড ষাঁড়! উনার কোনোদিন ভালো হবে না। উনার চুলে চুয়িংগাম লেগে যাক। উনার খাবার তেলাপোকা পড়ে যাক। উনার কষা (কোষ্ঠকাঠিন্য) হয়ে যাক! উনার পেটে ভাল্লুকের মতোন চুল হোক!”

“আর কিছু?” অত্যন্ত শান্ত তবে ক্ষুব্ধ কণ্ঠ আবরাহামের।

হুট করে এমন ভার গলা শুনে চমকে উঠে সুখ। ভীতিগ্রস্ত চোখে আবরাহামের দিকে তাকায়। বিমুগ্ধ হয়, আকৃষ্টও, ফর্সা পেটানো গা জুড়ে ফোঁটা ফোঁটা জল। তার কিশোরচিত্তের নিকট স্বপ্নীয় এক পুরুষের এক নাটকীয় দৃশ্য বলা চলে।

আবরাহাম এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে “হোয়াট” বলে ধমক দিয়ে উঠে। সতর্ক হয় কিশোরী। আতঙ্কিত মুখে একটু হাসার চেষ্টা করে। কিন্তু আবরাহামের সরু চোখজোড়ার দিকে তাকিয়ে আর পারে না।

ভাবে,
-এবার না জানি কী শাস্তি দেয় বজ্জাত ষাঁড়টা!

“হোয়াট ওয়ার ইউ সেয়িং? আমি ষাঁড়? না, না, গন্ডার মার্কা ষাঁড়।”

“কই? কিচ্ছু বলিনি তো আমি। আপনি হয়তো ভুলভাল শুনেছেন।”

“জাস্ট শাঠ আপ কিডোহ্! আমি সেই কখন থেকে দেখছি তুমি বিড়বিড়াচ্ছো, এখন আবার মিথ্যে বলছো?”

সচকিত হয়ে ব্যালকনির এদিক-ওদিক দৃষ্টি ফেলে সে। কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে প্রশ্ন করে,
“আ-আপনার এখানে কি ক্যামেরা ফিক্সড্ করা আছে? দেখলেন কী করে?”

“গ্লাস ডোর দিয়ে।”

“এটা দিয়ে তো কিছু দেখা যায় না। আমি তো আপনাকে দেখিনি।”

“এটা ওয়ান ওয়ে মিরোর। যাকগে আজকে ছেড়ে দিচ্ছি আমায় অফিস যেতে হবে। বাট আর কোনোদিন এমন করলে… ইউ নো হোয়াট আই মিন। নাউ গো!”

সুখ কান ধরেই দৌড় দেয় এই বাড়ি থেকে বের হওয়ার উদ্দেশ্যে। আবরাহামও তার পিছন পিছন ঘড়ি পরতে পরতে নামতে শুরু করে।

নিচ তলায় দাঁড়িয়ে সুখকে আবরাহামের ঘর থেকে বের হতে দেখেন মনিশা সরদারও। সাথে সাথেই রাগে তাঁর নাকের পাটা ফুলে যায়। আবরাহাম সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসে।

তাকে দেখেই টিপ্পনী কাটেন,
“এসব শিক্ষাহীন, যা তা মেয়েদের আমার স্বামীর তৈরি পবিত্র সরদার ভিলায় ঢুকানো যাবে না৷ কথাটা যেন লাট সাহেবের মাথায় থাকে।”

আবরাহাম টোল পড়া হাসি দিয়ে দাদীজানকে জড়িয়ে ধরে। শুধায়,
“ওহ মাই সুইঠু জানু। এত ঈর্ষা কেন তোমার? চিন্তা কোরো না তোমার বয়ফ্রেন্ড এই আবরাহাম সরদার এডউইন তোমার মতো রূপসী কন্যা সামনে থাকতে কারো দিকে তাকাতে পারে? মেয়েটাকে শাস্তি দিতে এনেছিলাম, আমার উপর ময়লা পানি ফেলেছিল তাই। নাথিং ইলজ্!”

নাতির কথায় এক চিলতে হাসি ফুটে উঠে মনিশা সরদারের মুখশ্রীতে। তবুও চেহারা গম্ভীর রাখার অদম্য চেষ্টা। আবরাহাম চলে যেতেই গভীর ভাবনায় ডুবেন তিনি।

তিনি সুখকে আর তার পিতা-মাতাকে খুব ভালো করেই চেনেন৷ তাদের চরিত্র সম্পর্কেও অনেকটা স্পষ্ট ধারণা তাঁর। এজন্যই সুখকে অপছন্দ তাঁর। যেমন বাবা-মা তেমনই তো হবে মেয়ে, একজন ভালো হলেও একটা কথা ছিল। তাঁর ধারণা এই মেয়ের স্বভাবও বড়লোক ছেলে পটানোর।

পাক ধরা চুলে শক্ত করে খোঁপা বাধতে বাধতে মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন,
“আমার নাতি থেকে এই মেয়েকে দূরে রাখতে হবে। নাহলে আমার নাতির জীবনও তছনছ করে দিবে এই বে*র মেয়ে, যেমনটা এই বিদেশিনী করেছিল আমার ছেলের জীবনকে!”

___

নিবেদিতা অফিসের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বেরিয়েছে। আজ বেশ লেট সে। কয়েক ব্লক হেঁটে যেতেই তার পাশে আরাধ্যের গাড়ি এসে থামে। তা দেখে ভেঙচি কাটে রমণী।

আরাধ্য জানালার গ্লাস নামিয়ে ডাক দেয়,
“নিবেদিতা সোনা, শোনো না? ও পাখি, সোনা, মনা?”

নিবেদিতা না শোনার ভান করে ফুটপাথ বেয়ে হেঁটে যায়। আরাধ্যও গাড়ি ধীরগতিতে তার পাশ দিয়ে চালাতে চালাতে আরও জোরে জোরে গলা ছেড়ে গাইতে শুরু করে,
“ও বউ কান দিয়ে শুন না রে,
আমি যে ডাকছি তোরে।
উত্তর দেস না তুই আমারে,
বুকের ভিতর আগুন জ্বলে।”

নিবেদিতা খেয়াল করে রাস্তার সবাই অন্যদিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে। উঠতি বয়সী বিদ্যালয়গামী ছেলে-মেয়েরা তো নির্লজ্জের মতো চোখ বড় বড় করে দেখছে আর হাসছে।

সে না পারতেই “স্টপ!” বলে আরাধ্যের গাড়ির দিকে এগিয়ে যায়। আরাধ্য গাড়ি থামায়। আরাধ্যের পাশের যাত্রী আসনে বসে।

“কী সমস্যা? এগুলো কী নাটক লাগিয়ে দিয়েছো সবার সামনে?”

“তুমিই তো বলে বেড়াও আমি রোমান্টিক না, তোমাকে উপেক্ষা করি, অবজ্ঞা করি। তাই একটু টিনেজারদের মতোন নিব্বা প্রেমিক হওয়ার চেষ্টা করলাম। এটেনশনই তো চাও তুমি।”

কিছুটা দুষ্টুমির আভাস আরাধ্যের কথাবার্তায়। নিবেদিতা আহত হয়। সিক্ত হয় তার চোখজোড়া। মানুষটার কাছে তার আবেগ-অনুভূতির যন্ত্রণাগুলোও কতটা মূল্যহীন, গুরুত্বহীন!

আরাধ্যের চোখে চোখ রেখে বলে,
“তোমার কাছে আমার কষ্ট, যন্ত্রণা সবকিছুই ওভাররিয়েক্টিং তাই না? আমি এটেনশনসিকার! তুমি তো জানো না-ই, আবার বুঝতেও চাও না আমি একটা বছর কতোটা মানসিক যন্ত্রণার উপর দিয়ে গিয়েছে। তুমি বলেছিলে মানুষের কথা থেকে তুমি আমাকে রক্ষা করবে। সারাটা সময় সর্বদা মানুষ আমাকে শুনিয়েই গিয়েছে, নিচু বোধ করিয়েছে তোমার থেকে।

হীনমন্যতা যখন আমার অন্তরটাকে ক্ষত-বিক্ষত করছিল তখন কোথায় ছিলে তুমি? আমি তোমাকে কখনোই আমার যন্ত্রণা থেকে বাঁচার ঢাল হিসেবে পাইনি। তুমি কখনো হেসেছো তাদের কথার বিপরীতে, তো কখনো চুপ থেকেছো বা কানেই তুলোনি। আর গতকাল কী বললে আমাদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক তো ছিল?

পতিতার দেহও কোনো না কোনো পুরুষ স্পর্শ করে গভীর ভাবে, আবার প্রেয়সীর দেহও পুরুষই ছোঁয়। তবে প্রথম ক্ষেত্রে শুধুই কামণা আর চাহিদা থাকে, দ্বিতীয় ক্ষেত্রে থাকে ভালোবাসা, আবেগ, অনুভূতিও।

তুমি খুঁজে নেও তুমি আমাকে একটি মাংসপিণ্ড হিসেবে কাছে টেনে নিয়েছিল না কি স্ত্রী হিসেবে। শুধুমাত্র রাতের আঁধারে কাছে টানলেই দাম্পত্য হয় না। সুখ-দুঃখের সঙ্গী হতে হয়, হতে হয় কথা বলার সঙ্গী। তুমি এটা বলতে পারবে ঐদিন বিয়েতে আমি কোন রঙের পোশাক পরেছিলাম? না, এতটাই ধ্যান তোমার আমাতে। আর হ্যাঁ, ভুলেও আমাকে কল, টেক্সট দিবে না।”

গাড়ি থেকে নেমে পড়ে নিবেদিতা। তার কম্পিত কণ্ঠ, অশ্রুসিক্ত কপোল সবটা দেখেই দহন হচ্ছে আরাধ্যের হৃদয়ে। সে তো সবটা শোধরাতে এসেছিল। বিগড়ে ফেললো কী করে?

___

নিবেদিতা মাথা নত করে অফিসে ঢুকে তাড়াহুড়ো করে ওয়াশরুমের দিকে অগ্রসর হয়৷ ওয়াশরুমের এই দিকটা ফাঁকাই থাকে তাই খেয়াল না করেই বড় বড় পদচারণায় এগিয়ে যায়। বেখেয়ালিতে শক্ত এক শরীরের সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যেতে নেয়। মানুষটি কোমর জড়িয়ে ধরে আগলে নেয় তাকে।

ত্রাসিত নিবেদিতা চোখজোড়া বন্ধ করে ফেলেছে। আবরাহাম অনিমেষ নেত্রে ভীতু হরিণীর ন্যায় এই রমণীকে পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছে। উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণের মুখশ্রীতে এক জোড়া হালকা টানা টানা চোখ, প্লাক না করা ভ্রু, সিক্ত কপোল, তীখালো নাক, পুরু অধরজোড়া। এমন মেয়েদের কবি-লেখকেরা মায়াবতী নামই দিয়েছে।

কোনোরূপ প্রতিক্রিয়া না বোধ করতে পেরে ধীরে ধীরে চোখ তুলে তাকায় নিবেদিতা। সামনের অনস্বীকার্য সুদর্শন পুরুষটির এমন চাহনি অপ্রস্তুত করে তুলে তাকে।

“স্যার?”

ঘোর ভাঙে যুবকের৷ সরে দাঁড়ায় সে। অস্বস্তি এড়াতে ভাজ হীন ব্লেজার, আঁচড়ানো চুল ঠিক করতে শুরু করে।

নিবেদিতা ধীর কণ্ঠে “সরি” উচ্চারণ করে ওয়াশরুমে ঢোকার দরজার দিকে পা বাড়ায়। তার দৃষ্টি নত।

“আপনাকে দেখে মনে হলো কাঁদছিলেন?”

উত্তর দেয় না নিবেদিতা। আবরাহাম নিজের মতোই শুধায়,
“জানেন, শ্বেতাঙ্গ মেয়েদের কাঁদলে মায়াবী লাগে, আর শ্যামাঙ্গিনীদের বিদঘুটে। তাদের যে চামড়া লাল হয়ে উঠে না কাঁদলে, হয় আরও কালচে।”

“অপমান করছেন?” তিরিক্ষ মেজাজে তার দিকে ঘুরে নিবেদিতা।

মুচকি হাসে আবরাহাম। আজও নিবেদিতার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তার কুচকুচে কালো তিলটা। অবশ্য শুধু নিবেদিতার নয়, প্রতিটি নর-নারীরই করে। সৌন্দর্য চোখে বাজে না এমন মানুষ পৃথিবীতে নেই-ই বলতে গেলে।

“না, না, সাহেবা। আমার সেই ক্ষমতা আছে না কি? আমি তো শুধু আমার উপলব্ধি বললাম। আরেকটা উপলব্ধি…”

“কেউ জানতে চায়নি।”

উপেক্ষিত হয় নিবেদিতা।
“শ্যামাঙ্গিনীরা আরও মাত্রাতিরিক্ত মায়াবি হয়ে উঠে কান্নার পরমুহূর্ত থেকেই, যেমন বর্ষণের পর মোহনীয় হয়ে পড়ে গোটা প্রকৃতি।”

আবরাহাম হাসিমাখা মুখে সেখান থেকে চলে যায়। নিবেদিতা একগাল হেসে তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
“আবরাহাম সাহেব, মন ভালো করতে জানে ভীষণ!”

___

আজ শুক্রবার, ছুটি থাকায় বাড়িতে বিছানায় আধশোয়া হয়ে সমরেশ মজুমদারের কালবেলা উপন্যাস পড়ছে নিবেদিতা। তবে এত আসক্তিকর একটা উপন্যাসেও মন টিকছে না আজ তার।

রমণীর মন যে আজ বড়োই বিষণ্ণ। সে নাহয় রোষে বলেই ফেলেছে যোগাযোগ না করার কথা, তাই বলে কি সত্যিই যোগাযোগ বন্ধ করে দিবে না কি!

এমন সময় দরজায় করা নাড়ে নাদিরা খানোম। দরজার দিকে তাকিয়ে মাকে দেখে আলতো হাসে নিবেদিতা।

“আবার নক করছো কেন আম্মো? আসো ভিতরে।”

“আরে মা তোর জন্য সারপ্রাইজ নিয়ে এসেছি। সারপ্রাইজ!”

নাদিরা খানোমের পিছন থেকে সামনে এসে দাঁড়ায় মোকশেদা বেগম। তাঁকে দেখেই বিছানা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে মাথায় ওড়না দেয় নিবেদিতা।

“আম্মা আপনি…?”

“তোমায় চমকে দিতে এসেছি মা। সাথে নিতেও।”

মুখটা ম্লান করে ফেলে নিবেদিতা। তবে মায়ের সম্মুখে কিছু বলে না। নাদিরা খানোম শ্বাশুড়ি-পুত্রবধূকে একান্তে কথা বলার সুযোগ দিতে বিদায় নেন।

মোকশেদা বেগম খাটে যেয়ে বসেন।
“তুমিও বসো, মা। কালবেলা উপন্যাসটা পড়ছিলে? তোমার শ্বশুরের অনেক প্রিয় ছিল এই বইটা, আমার চেয়েও হয়তো।”

দীর্ঘশ্বাস ফেললেন মোকশেদা বেগম। নিবেদিতা বসে। আমতা আমতা করে শুধায়,
“আপনি তো সব জানেনই মা, তবে নিতে কেন…?”

“আমি জানি মা। বুঝি তোমার রাগ, মান-অভিমান। সবই জায়েজ, তবে মা তো ছেলেটার চেহারার দুদিনে নাজেহাল অবস্থা হয়ে গিয়েছে৷ আমি আর এভাবে ওকে দেখতে পারছি না। আমার বিশ্বাস এবার ও তোমার সাথে ন্যায্য আচারণই করবে। তোমাকে আমি অনুরোধ করছি মা, রাগ মাটি করে ফিরে চলো।”

মধ্যবয়স্ক নারীটির কণ্ঠস্বর বেশ মমতাময়। এমন আবেদন কী করে ফেরানো যায়? তবে নিজের এক বছরের মানসিক যন্ত্রণাও তো ভুলা সহজ নয়।

___

সুখের দু’দিন ধরে ঘুম হারাম। সারা রাত্রি কেটে যায় এপিঠ-ওপিঠ করতে করতে। মানুষটির ভাবনা তাকে প্রতি মুহূর্ত পোড়ায়। উঠতে বসতে তার নেশা লাগে আবরাহাম নামক মানুষটির। কেমন নেশায় আসক্ত তাকে করেছে কে জানে? শুধু জানে প্রচণ্ড পরিমাণে আকৃষ্ট করে তাকে এই পুরুষটি। মোহগ্রস্ত সে খুব করে।

আজকাল আর নিজের ক্রাশ জাস্টিন বিইবার বা রবার্ট প্যাটিনসনকেও অত ভালো লাগে না, আগ্রহ জন্মায় না। তার সবকিছু যেন আবরাহাম নামক মানুষটিকে জুড়ে। তার এখন রোজকার রুটিন তৈরি হয়েছে আবরাহামের ব্যালকনিতে উঁকিঝুঁকি দিয়ে তাকে দেখা। বিশেষ করে আবরাহামের ব্যায়াম করার সময়টা নিষ্পলক দেখে সে।

আজও বারান্দার দোলনায় বসে তা-ই করছিল সুখ। তখনই আবরাহাম হাসি মুখে বলে,
“এই পিচ্চি, কেমন আছো? আর কী দেখো এদিকে?”

আবরাহামের টোলের দিকে তাকিয়ে ঢোক গিলে সুখ। বিড়বিড়ায়,
“আপনার টোলকে থাল বানিয়ে তার ভিতর কেক রেখে খাবো মি.আবরাহাম ষাঁড়।”

আবরাহাম ভ্রু কুঁচকে যায় কিশোরীর এমন অদ্ভুৎ আচারণে। পানি পান করতে করতে আবার একই প্রশ্ন করে সে। যুবকের দিকে একপলক তাকিয়ে হুড়মুড়িয়ে উঠে দাঁড়িয়ে ঘরে পালায় সে।

আবরাহাম অবাক। তার চোখজোড়া কোটর থেকে বের হওয়ার উপক্রম। নাক-কপাল কুঁচকে সে উচ্চারণ করে,
“Stupid!”

চলবে…
সিরিয়ালের পঞ্চম পর্বের শুভেচ্ছা 😅

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here