নিরবতা পর্ব-১৪

0
4397

#নীরবতা
#নাইমা_জাহান_রিতু
#পর্ব_১৪

খানিকক্ষন থম ধরে মেসবাহর ফ্ল্যাটের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকার পর মুন্নি সরকার পা বাড়ালো নিজের ফ্ল্যাটের দিকে। বিয়ে তো সে দেবেই দেবে। এতে যা হবে দেখা যাবে। তাছাড়া মেসবাহই বা কে বিয়ের প্রস্তাবে মানা করে দেয়ার? দরকার পড়লে গ্রামে গিয়ে উল্লাসীর বাবামার সাথে কথা বলবে সে। তবুও এই মেয়েকে হাতছাড়া করবে না। গভীর কিছু নিঃশ্বাস ছেড়ে ফোন হাতে নিয়ে মায়ের নাম্বারে ডায়াল করলো মুন্নি সরকার। অস্থির মনে অপেক্ষা করতে লাগলো ওপাশ থেকে মায়ের একটি সাড়ার।
-“আম্মা তুমিই কাল সকাল সকাল রওনা হবা। কাল দুপুরের মাঝে তোমাকে আমার বাসায় আমি দেখতে চাই। তুমি এখনি ভাইয়ারে বলো টিকেট করে রাখতে। নয়তো ঘুম নষ্ট করে ভোরে উঠে তোমাকে বাসে তুলে দেবে না ও।”
একরাশ বিরক্তি প্রকাশ করে ওপাশ থেকে শায়লা বেগম বললেন,
-“সে কী বাড়িতে আছে! পামু কই তারে আমি! রাত একটার আগে বাড়িতে আসে সেই মহারাজা?”
-“ফোন দাও। ফোন দিয়ে বলো।”
-“কেন? এত পারাপারি কিসের? কাল কেন তোর ওইখানে যাওয়া লাগবো?”
-“আরে আম্মা! তোমারে যে মেয়ের কথা বলছিলাম, ওই মেয়েকে দেখার জন্য কাল আসবা তুমি।”
-“কেন? কালকের পর কী ওই মাইয়া উইড়া যাইবো?”
চোখমুখ কুঁচকে ফেললো মুন্নি সরকার। ছটফটিয়ে বললো,
-“উফফ! তুমি বুঝবা না! তোমারে কাল আসতে বলছি তুমি আসবা। ব্যস!”
-“আচ্ছা.. দেখি।”
-“দেখাদেখি না। তোমার আসতেই হবে। আমার পছন্দ করা মেয়েকে একবার দেখলেই তুমি ফিদা হয়ে যাবা। বলবা, এরেই আমার ছেলের বউ হিসেবে চাই।”
মেয়ে যে দুই ডিগ্রি বাড়িয়ে কথা বলে তা অজানা নয়। তাই তাতে একটা পাত্তা দিলেন না শায়লা বেগম। উদ্বিগ্ন গলায় বললেন,
-“সবই বুঝলাম! কিন্তু একা একখান মাইয়া একই বাড়িতে আরেক পোলার লগে থাকে। জিনিসখান কেবা না?”
-“আরে আম্মা! ওরা তো ভাইবোন। তুমি ওভাবে ভাবছো কেনো? তাছাড়া আমি মেয়েকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, পছন্দ টছন্দ আছে নাকি বা গ্রামের কারো সাথে কিছু ছিল নাকি। কিন্তু মেয়ে তো মেয়েই! মাশাল্লাহ.. এসব বোঝেই না ও। প্রেম পিরিত তো দূরের কথা।”
-“ঠিকাছে.. ভালো হইলেই ভালো। তুই তাইলে রাখ। আমি শীতলরে ফোন দেই। দেখি টিকিটের কথা কই।”
-“আচ্ছা, রাখছি তাহলে। তুমি কিন্তু ভোরের বাসের টিকেট কাটাবা।”
ফোন রেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো মুন্নি সরকার। যাক! একটা কাজ তো এগিয়ে রাখা হলো। বাদবাকি গুলো না হয় ধীরেসুস্থে হবে!

সিগারেট হাতে অন্ধকার ব্যালকনিতে বসে চিন্তার জগতে বিচরণ করছিল মেসবাহ। বেশ খানিকক্ষন হলো খাওয়াদাওয়ার পাঠ চুকেছে তাদের। তবে উল্লাসীর সঙ্গে আজ রাগারাগি করার পর মেয়েটি একদম চুপসে গেছে। খেতে বসেও চুপচাপ খেয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত মেয়েটির উপর রাগ ঝাড়া যেনো তার অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে অভ্যাসটি পরিবর্তন করতে হবে। মেয়েটি ছোট। না বুঝে করে ফেলে একটি কাজ। অবশ্য এই পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রাখাও যায় না। কিন্তু কেনো রাখা যাবে না? সে তো স্ত্রী মানে না উল্লাসীকে। বাবার কথায় সে বিয়ে করেছে এবং একরকম বাধ্য হয়েই তাকে নিয়ে এসেছে নিজের সাথে। এবং দায়িত্ব হিসেবেই সে দেখে আসছে উল্লাসীকে। এছাড়া বেশি কিছু নয়। তাহলে উল্লাসীর বিয়ে আসুক বা অন্য কিছু তাতে তার এত মাথা গরম হবে কেনো? পরমুহূর্তেই নিজের ভাবনার উপর মেজাজ খারাপ হলো মেসবাহর। আশ্চর্য চিন্তা ভাবনা তার! ছোট হোক বা বড়.. উল্লাসী তার বিয়ে করা বউ। বাবার কথায় হোক বা বাধ্য হয়ে, তিন কবুল পড়ে তো সে বিয়ে করেছে উল্লাসীকে। আর সেই উল্লাসীর জন্য যদি কেউ বিয়ের প্রস্তাব আনে তা অবশ্যই একজন স্বামী হিসেবে চুপচাপ মেনে নেয়া যায় না। কেনোই বা মেনে নেবে সে? উল্লাসী তার দায়িত্ব হলেও সর্বপ্রথম সে তার স্ত্রী।
-“আসবো?”
দীর্ঘশ্বাস ফেললো মেসবাহ। জ্বলন্ত সিগারেট এশট্রেতে রেখে উল্লাসীর উদ্দেশ্যে বললো,
-“চেয়ার নিয়ে এসো..”
চেয়ার টেনে ব্যালকনিতে এনে মেসবাহর পাশে বসলো উল্লাসী। উদাস মনে মেঘে ঢাকা আকাশের দিকে তাকাতেই পাশ থেকে মেসবাহ বললো,
-“ব্যালকনির জন্য ডাবল সিটের চেয়ার বা দোলনা কিনলে কেমন হয়?”
-“জানি না..”
-“কেনো জানো না?”
-“জানি না…”
-“মন খারাপ?”
এপর্যায়ে মেসবাহর দিকে ফিরলো উল্লাসী। ধীর গলায় বললো,
-“আমি কখনোই আর মুন্নি ভাবির সঙ্গে কথা বলবো না। উনি এলে কখনোই দরজা খুলবো না।”
-“না, তুমি বলবে।”
-“না, আমি বলবো না। কখনোই বলবো না।”
-“না, উল্লাসী। তুমি বলবে।”
মেসবাহর এমন কথায় অবাক চোখে তার দিকে তাকালো উল্লাসী। বললো,
-“কেনো?”
-“কারণ, ওই মহিলা আজকের পর থেকে তোমার এবং আমার লাইফ হেল করে ছাড়বে। অনেক্ক্ষণ যাবৎ কলিংবেল বাজানোর পর যদি তুমি দরজা না খোলো, উনি পুরো বাসা মাথায় তুলে ফেলবে। সবাইকে ডেকে এনে দরজা ভেঙে হলেও দেখবে ভেতরে ঠিক কী চলছে! তাছাড়া নানান কথা ছড়ানো তো রয়েছেই। এ কারণেই তুমি দরজা খুলবে। তবে উনাকে দেখামাত্রই বলবে তুমি এখন ব্যস্ত আছো বা এখন তুমি গোসলে যাবে। এমন নানান এক্সকিউজ দেখাবে। অর্থাৎ দরজা খুললেও ভেতরে ঢুকতে দেবে না। এড়িয়ে চলবে। কী? বোঝাতে পারলাম তো?”
পুরোটা না বুঝলেও মাথা নেড়ে মেসবাহর কথায় সম্মতি জানালো উল্লাসী। অপরদিকে উল্লাসীর সম্মতি পেয়ে মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো মেসবাহর। মৃদু হেসে সে বললো,
-“পড়াশোনা করতে ইচ্ছে হয় তোমার?”
-“হয়.. মাঝেমাঝে। জানেন আমি যখন পড়তে বসতাম তখন সুহা আমার পাশে বসে আমার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতো।”
-“তাই?”
-“হ্যাঁ..”
উল্লাসী থেমে যেতেই হাতের ইশারায় কিছু একটা দেখিয়ে মেসবাহ বললো,
-“ওই যে দূরে খানিকটা আলো জ্বালানো একটি বিল্ডিং দেখতে পাচ্ছো, ওটার দোতলায় একটি কোচিং সেন্টার আছে। তোমায় ভাবছি ওখানটায় ভর্তি করে দেব। পড়বে ওখানটায়?”
সময় নিয়ে কিছুক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে রইলো উল্লাসী। তারপর ধীর স্বরে বললো,
-“আপনি বললে পড়বো।”
-“আমি তো বলছিই। ওখানে ক্লাস করতে থাকলে তারপর না হয় কোনো স্কুলে ঢুকিয়ে দিলাম। আর কোনো স্কুলে যদি নাও ঢোকাতে পারি তাহলে তুমি না হয় বোর্ড এক্সাম গ্রাম থেকেই দিলে। সমস্যা হবে কি?”
-“উহু..”
-“গ্রেট.. তাহলে কাল গিয়েই কথা বলে আসবো।”
আঁড়চোখে কিছুক্ষণ উল্লাসীকে দেখার পর চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো মেসবাহ। এতটা নীরব কেনো উল্লাসী? পড়াশোনার ব্যপারে কী তাহলে আগ্রহ নেই তার? নতুবা অবশ্যই উচ্ছ্বসিত হতো সে। খানিকক্ষণ বেলকনিজুড়ে পায়চারী করে আবারও চেয়ারে এসে বসতেই পাশ থেকে হতাশ গলায় উল্লাসী বললো,
-“প্রতিদিন কোচিং করতে হবে?”
-“হ্যাঁ..”
-“তারমানে প্রতিদিন আমাকে নিচে নামতে হবে?”
-“তা তো নামতেই হবে..”
মেসবাহর জবাবে চোখমুখ ছোট হয়ে এল উল্লাসীর। মেঝের দিকে তাকিয়ে সে থেমে থেমে বললো,
-“তাহলে আমি সিঁড়ি দিয়েই নামবো। ওসব দিয়ে নামবো না।”
-“কী? লিফট?”
-“হ্যাঁ.. দরজা বন্ধ হবার সাথেসাথেই আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। আর যখনই চলতে শুরু করে তখন আমার মাথা ঘুরায়। আমি সিঁড়ি দিয়েই নামবো।”
উল্লাসীর নীরবতার কারণ বুঝতে পারলো মেসবাহ। সামান্য হেসে সে বললো,
-“আমি পাশে আছি না? ভয়ের কী আছে? যখন তোমার খারাপ লাগবে তখন না হয় আমার হাত আঁকড়ে ধরবে।”

সকালে উল্লাসীকে ফেলে হাসপাতালে আসার পর থেকেই অস্থির লাগছে মেসবাহর। মুন্নি ভাবি যেমন মানুষ তাতে উল্লাসীর একার পক্ষে সবটা সামলে নেয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। নানান প্রশ্নের মুখে ফেলে পাগল করে দেবে মেয়েটাকে। তাছাড়া অদ্ভুত সব কান্ডকারখানা তো রয়েছেই। তাই হাসপাতালে চাপ কম থাকায় দুপুরে বাসায় খেতে যাবার সিন্ধান্ত নিল মেসবাহ। অবশ্য এর পেছনে আরেকটি কারণও রয়েছে। কোচিং সেন্টারে উল্লাসীর ব্যপারে কথা বলা। কোনো সমস্যা না থাকলে না হয় আজই ভর্তি করিয়ে দেয়া যাবে উল্লাসীকে। তারপর তাকে ক্লাসে বসিয়ে সে নিশ্চিন্ত মনে যেতে পারবে তার কাজে। এতে যেমন মুন্নি ভাবির হাত থেকে বাঁচা যাবে তেমন সে নিজেও শান্তিতে দু’দন্ড কাটাতে পারবে। স্বস্তি নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে কাঁচা বাজার সেরে বাসার উদ্দেশ্যে রিকশা নিল মেসবাহ। বেলা বাজে দুপুর একটা। সূর্যের প্রখর তাপ এসে লম্বভাবে পড়ছে তার শরীরে। হুডটা উঠিয়ে দিলে ভালো হত। অবশ্য রাস্তাও বেশি একটা নেই। ততক্ষণ না হয় একটু গরম সহ্য করলো…

লিফট ছেড়ে বেরিয়ে ফ্ল্যাটের সদর দরজা খোলা দেখতে পেয়ে যা বোঝার বুঝে নিল মেসবাহ। ঠিক একারণেই সকাল থেকে অস্থিরতার উপরে রয়েছে সে। এই মহিলার হাত থেকে নিস্তার পাওয়া খুব সহজ হবে মনে হচ্ছে না। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে মুন্নি সরকারের ফ্ল্যাটের দিকে এক নজর তাকিয়ে মেসবাহ দ্রুত পদে এগুলো নিজের ফ্ল্যাটের দিকে। তবে ফ্ল্যাটে ঢোকামাত্রই তার বিস্ময়ের সকল সীমা অতিক্রম করলো। মুন্নি সরকারের পাশেই বসে রয়েছে বয়স্ক এক মহিলা। যাকে প্রায়ই তার কাছে এসে থাকতে দেখেছে মেসবাহ। এবং ভুল না করলে উনিই মুন্নি সরকারের মা। মাথায় রক্ত উঠে গেল মেসবাহর। ঠিক কী করবে ভেবে না পেয়ে হাতে থাকা বাজারের ব্যাগ মেঝেতে ছুঁড়ে ফেলে চেঁচিয়ে উঠলো সে।
-“কী চলে এখানে? আপনাকে আমি কাল নিষেধ করে দিয়েছি না?”
মেসবাহর গলার স্বর শোনামাত্রই বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠলো মুন্নি সরকারের। চুপেচাপে কাজ সারতে চাইলেও মাঝ থেকে এই বান্দা কই থেকে উদয় হলো তা একদমই মাথায় আসছে না তার।
-“তারপরও আপনার এখানে কী কাজ? হোয়াই আর ইউ কামিং হেয়ার?”
উঠে দাঁড়ালো মুন্নি সরকার। পাশ ফিরে মেসবাহর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললো,
-“চিৎকার করছো কেনো? বসো.. বসে কথা বলি।”
-“কিসের বসবো? কেনো বসবো? আপনাকে আমি কাল নিষেধ করে দেই নি?”
-“শুনেই নিষেধ করে দিলে হবে নাকি? ঘরে বোন থাকলে এমন বিয়ের প্রস্তাব আসবেই। তাই বলে এমন হাইপার হওয়া যাবে?”
অস্থির মনে মেসবাহ বলো,
-“আশ্চর্য! আপনি তো প্রচন্ড ঘাড়ত্যাড়া স্বভাবের। প্লিজ আপনি বের হন।”
-“তুমি বসো, ভাই। বসে কথা বলি। তাছাড়া ভাই হিসেবে তোমার কাজ তোমার বোনের ভালো খারাপ বিবেচনা করা। তাছাড়া কেউ বিয়ের প্রস্তাব দিলেই বিয়ে হয়ে যায় নাকি? বাছবিচারের ব্যপার আছে না?”
নিজেকে শান্ত করার চেষ্টায় দু’হাতের মুঠ চেপে লম্বা একটি দম ছাড়লো মেসবাহ। তারপর শান্ত গলায় বললো,
-“ওকে বিয়ে দেবো না। কাল আপনাকে সুন্দরভাবে নিষেধ করেছিলাম। তারপরও আজ আপনি আপনার মাকে কেনো নিয়ে এসেছেন?”
-“আমিও তোমায় বারবার বলছি, মেয়ে হয়ে জন্মেছে উল্লাসী। বিয়েতো একসময় ওকে দিতেই হবে। তাহলে আজ দিলে কী দোষ?”
-“আপনি প্লিজ বুঝতে চেষ্টা করুন।”
-“তুমি বোঝো মেসবাহ। ভাই হয়ে বোনের ভালো চাওনা। এ কেমন ভাই তুমি? তাও যদি আমার ভাই কানা, বোবা বা খোড়া হতো! আমার ভাইয়ের মত ছেলে তুমি সারা জীবন খুঁজলেও উল্লাসীর জন্য পাবে না।”
আরও কিছু বলতে চাইছিল মুন্নি সরকার। হঠাৎ রান্নাঘর থেকে উল্লাসীকে বেরিয়ে আসতে দেখে থেমে গেল সে।
-“আপনি কখন এলেন?”
উল্লাসীর প্রশ্নে পিছন ফিরে তার দিকে এগিয়ে গেল মেসবাহ। চড়া গলায় বললো,
-“তোমাকে কাল রাতে কী বলেছিলাম? একে বাসায় ঢোকাতে নিষেধ করিনি? কিন্তু তুমি আজ একে বাসায় তো ঢুকিয়েইছোই সাথে আদর আপ্যায়নের জন্যও নিশ্চিত খাবার বানাচ্ছিলে।”
মেঝেতে দৃষ্টি আবদ্ধ করলো উল্লাসী। তারপর ধীর গলায় বললো,
-“উনার মা এসেছিলেন। তাই আরকি….”
-“চুপ.. একদম চুপ।”
উল্লাসীর এক হাত চেপে তাকে টেনে ড্রইং রুমে নিয়ে এল মেসবাহ। তারপর মুন্নি সরকারকে উদ্দেশ্য করে স্থির গলায় বললো,
-“আপনিই ওকে জিজ্ঞেস করুন ও বিয়ে করবে নাকি। এই উল্লাসী, তুমি বিয়ে করবা?”
এসবের আগামাথা কোনোটাই মাথায় ঢুকলো না উল্লাসীর। তবে স্বামীর কথায় সম্মতি দেয়া শ্রেয় ভেবে ঢোক চেপে হালকা মাথা নাড়লো সে।
-“কী? হলো তো? এবার দয়া করে এসব বন্ধ করুন।”
ভ্রু কুঁচকে মুন্নি সরকার বললো,
-“ও ছোট। ও এসবের কিছু বুঝবে না। ওর খারাপ ভালো দেখার দায়িত্ব ভাই হিসেবে তোমার।”
-“আমিও দিব না।”
-“দেব না বললেই হলো! ভাই হইছো কি এই কাজে?”
-“বারবার কী ভাই ভাই লাগাই রাখছেন? উল্লাসী আমার বোন না। ও আমার দুঃসম্পর্কের বউ।”
চোখমুখ কুঁচকে ফেললো মুন্নি সরকার। একরাশ বিস্ময় নিয়ে বললো,
-“দুঃসম্পর্কের বউ মানে?”
-“ওইতো.. দুঃসম্পর্কের না শুধু বউ!”

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here