নিরব রদনে পব-১০

0
1085

#নীরব_রোদনে
#আলো_রহমান—Alo Rahman
#পর্ব:১০
.
.
.
সুরমার সারারাত কাটলো ভীষণ উৎকন্ঠায়। শাদাব তার ম্যাসেজটা পড়েছে কিনা, সে চিন্তায় সারারাত তার দু চোখের পাতা এক হলো না। বিছানায় এপাশ ওপাশ করার ফাঁকে ফাঁকে বারবার সে দেখছিল মোবাইল ফোনটার দিকে। যদি শাদাবের ফোন আসে! কিন্তু গোটা রাতটা কেটে গেলেও সুরমার কাছে শাদাবের কোনো ডাক এলো না। উৎকন্ঠা আর অপেক্ষার যন্ত্রণায় পুরো রাত ছটফট করার পর ভোরের দিকে সুরমার চোখ লেগে এসেছিল।
ঘুম ভাঙলো চিৎকার চেঁচামেচি শুনে। সুরমা চোখ টেনে খুললো। ঘুম কাটিয়ে কিছুটা ধাতস্থ হতেই চিৎকারটা স্পষ্ট হলো সুরমার কানে। সে পড়িমরি করে বিছানায় উঠে বসলো। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো সকাল আটটা বেজেছে। চিৎকার করছেন তার খালা। উনি অনবরত চিৎকার করে বলছেন,
–সুরমা, নীলয়, তোরা তাড়াতাড়ি আয়। মানুষটা মরে গেল। তোরা কিছু কর।
সুরমা তাড়াহুড়ো করে বিছানা ছেড়ে নামলো। গায়ে ওড়না জড়িয়ে দৌড়ে বাইরে গেল। কলিমউদ্দিন সাহেব সোফায় শুয়ে আছেন। উনার মাথাটা কোলে নিয়ে আয়েশা অনবরত কাঁদছেন। অপর একজন ব্যক্তিকেও সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। সুরমার যতদূর মনে পরছে এই ব্যক্তি কলিমউদ্দিন সাহেবের কোনো এক রাইস মিলে ম্যানেজার হিসেবে আছেন। বহুদিনের পুরানো লোক, কলিমউদ্দিন সাহেবের বিশ্বস্ত। সুরমা দৌড়ে কাছে গেল। জিজ্ঞেস করলো,
–খালা, কি হয়েছে? তুমি এভাবে কাঁদছো কেন? খালুজানের কি হয়েছে?
পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ভদ্রলোক বললেন,
–তোমার খালুজান জ্ঞান হারিয়েছেন, মা।
সুরমা এবার তাড়াতাড়ি রান্নাঘরের দিকে গেল। এক গ্লাস পানি নিয়ে ফিরে এলো। সোফার সামনে হাঁটু গেরে বসে কলিমউদ্দিন সাহেবের চোখেমুখে পানি ছিটিয়ে দিলো। গালে হাত রেখে ডাকলো,
–খালুজান, শুনছেন? চোখ খুলুন।
সুরমা আরও একবার পানি ছিটালো। কলিমউদ্দিন সাহেবের চোখের পাতা কিছুটা নড়ে উঠলো। ধীরে ধীরে উনি চোখ খুললেন। সুরমা উৎকন্ঠা নিয়ে জানতে চাইলো,
–খালুজান, আপনি ঠিক আছেন?
আয়েশা বেগম পাগলের মতো বলতে লাগলেন,
–তুমি ঠিক আছ? তোমার শরীর কি বেশি খারাপ লাগছে? আমাকে বলো। কি অসুবিধা হচ্ছে? বলো।
কলিমউদ্দিন সাহেব ধীরে ধীরে উঠে বসলেন। ক্ষীণ গলায় বললেন,
–আমি ঠিক আছি। তোমরা অস্থির হইয়ো না।
সুরমা মেঝে থেকে উঠে তার খালুজানের পাশে বসে বলল,
–খালুজান, পানি খাবেন?
কলিমউদ্দিন সাহেব দু’দিকে মাথা নাড়িয়ে না বোঝালেন। তারপর সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে বললেন,
–তুমি এখন এসো, ম্যানেজার।
–জ্বি, স্যার। আসসালামু আলাইকুম।
–ওয়া আলাইকুম সালাম।
ভদ্রলোক চলে গেলেন। সুরমা জানতে চাইলো,
–কি হয়েছিল, খালা? খালুজান হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গেলেন কেন?
আয়েশা চোখ মুছতে মুছতে বললেন,
–তোর খালুজান ম্যানেজারকে দায়িত্ব দিয়েছিল কঙ্কা যে ছেলের সাথে পালিয়েছে তার খোঁজ নেওয়ার। উনি আজ এসে বলছেন কঙ্কা নাকি কোনো এক খারাপ ছেলের পাল্লায় পরেছে। সে নাকি কঙ্কাকে বিয়ে করে নি। কঙ্কাকে নাকি সে….
আয়েশা বেগম কথা শেষ করতে পারলেন না। মুখে আঁচল চাপা দিয়ে কেঁদে ফেললেন। সুরমার বুকের ভেতর ধুক করে উঠলো। তার মুখ কালিবর্ণ হয়ে গেল। সে এভাবে ভেবে দেখে নি। সত্যিই তো আবির ছেলেটা ভালো নয়। যদি ছেলেটা সত্যিই কঙ্কাকে বিয়ে না করে থাকে, তাহলে ও এখন কোথায়? সুরমার মাথার ভেতরে চিনচিন করে উঠলো।
কলিমউদ্দিন সাহেব বড় করে নিঃশ্বাস ফেলে বললেন,
–না, আয়েশা। আমার মেয়ে এত বড় বোকামি করতে পারে না। ম্যানেজারের নিশ্চয়ই কোথাও ভুল হয়েছে। ভুল হয়েছে।
আয়েশা কাঁদতে কাঁদতেই বললেন,
–এখনো? এখনো এত বিশ্বাস মেয়ের উপরে? একবার তো বিশ্বাস ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিয়েছে। দিয়েছে তো বিশ্বাসের প্রতিদান! তাও এত বিশ্বাস? কে জানে মেয়েটা বেঁচে আছে কিনা!
সুরমা তাড়াহুড়ো করে বলল,
–খালা, এসব কি বলছো? এসব কথা বলো না। সব ঠিক হয়ে যাবে। চলো, ঘরে চলো। এসো।
সুরমা তার খালা আর খালুজানকে ঘরে নিয়ে গেল। দুজনকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বলল,
–তোমরা বসো। বিশ্রাম নাও। আমি নাস্তা বানিয়ে আনছি।
সুরমা বেরিয়ে এলো ঘর থেকে। বাথরুমে চলে গেল ফ্রেশ হতে। রাতে ভালো করে ঘুম না হওয়ায় মাথার ভেতর দপদপ করছিল। তার উপর এতদিকের এত দুঃশ্চিন্তা। সে অনেকক্ষণ সময় নিয়ে মাথায় পানি ঢাললো। বাথরুম থেকে বেরিয়ে মাথা মুছতে মুছতে ড্রয়িং রুমে গেল সুরমা। সেখানে নীলয় বসে আছে। সুরমা যেতেই সে বলল,
–আপা, চাচা চাচী কোথায়?
সুরমা গম্ভীর গলায় বলল,
–ঘরে আছে। তুই চা খাবি? অপেক্ষা কর, দিচ্ছি।
নীলয় আমতা আমতা করে বলল,
–বাসায় কি কিছু হয়েছে, আপা? সব কেমন যেন থমথমে।
সুরমা হাত থেকে তোয়ালে রাখতে রাখতে বলল,
–খালুজানের এক ম্যানেজার এসেছিলেন। উনাকে কঙ্কার খোঁজ খবর নিতে বলেছিলেন খালুজান। উনি এসে বলেছেন, কঙ্কা যার সাথে পালিয়েছে সে চরিত্রহীন। সে এর আগেও অনেক মেয়েকে নিয়ে এভাবে পালিয়েছে। কিন্তু বিয়ে করে নি। কঙ্কাকেও হয়তো….
নীলয় হকচকিয়ে উঠে দাঁড়ালো। বলল,
–কঙ্কা…!
সুরমা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
–আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। যাই হোক, তুই বস। চা খাবি তো?
নীলয় হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লো। তারপর জড়সড় হয়ে সোফায় বসলো। সুরমা রান্নাঘরে গিয়ে ঢুকলো। রান্নাঘরে অর্ধেক রুটি বানিয়ে রাখা আছে। আর কিছুটা একপাশে পরে আছে। সম্ভবত তার খালা রুটি বানাচ্ছিলেন। খালুজান হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলায় বাকিটা আর শেষ করা যায় নি। সুরমা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কাজে মন দিলো। তখনই নীলয় রান্নাঘরের দরজায় গিয়ে দাঁড়ালো। মৃদু স্বরে বলল,
–আপা, ঘরে বোধহয় তোমার ফোনটা বাজছে।
সুরমা চমকে উঠলো। তবে কি শাদাব তাকে ফোন করেছে! সুরমা তাড়াতাড়ি নীলয়ের হাতে এক কাপ চা ধরিয়ে দিলো। তারপর প্রায় ছুটে ঘরে গেল। ফোন হাতে নিতেই সমস্ত উৎসাহ, সমস্ত আনন্দ ধূলিসাৎ হলো তার। কারণ শাদাব ফোন করে নি। ফোন এসেছে একটা অচেনা নাম্বার থেকে। সুরমা বিরক্তি নিয়েই ফোন ধরলো। বলল,
–কে বলছেন?
ফোনের ওপাশ থেকে ক্ষীণ আওয়াজে ভেসে এলো দুটো শব্দ,
–আপা, আমি।
সুরমা চমকে উঠলো। এ তো কঙ্কার গলা! সুরমা ভেতরের আবেগের অতিরিক্ত ধাক্কাকে সহসা সামলাতে পারলো না। সে ধপ করে বিছানায় বসে পরলো। নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,
–কঙ্কা! তুই কোথায় আছিস, বোন? কেমন আছিস? কোথা থেকে ফোন করছিস?
–আপা, আমি ঠিক আছি। বাবাকে বলে দিস যে আমি একদম ঠিক আছি। আমার জন্য যেন চিন্তা না করে।
–তুই খালুজানের সাথে কথা বল, কঙ্কা। দাঁড়া, আমি ফোনটা দিচ্ছি।
–না, আপা। বাবার সাথে কথা বলার মুখ নেই আমার।
–এসব বলিস না। মানুষটা তোর চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পরেছে। তুই একবার কথা বললে খালুজানের মন শান্ত হবে।
–না, আপা৷ তুই শুধু বাবাকে বল যে আমি ভালো আছি।
সুরমা এবার একটু থেমে জিজ্ঞেস করলো,
–কঙ্কা, তুই বিয়ে করেছিস?
–হ্যাঁ, আপা। বিয়ে করেছি।
–ছে..ছেলেটা এখনো তোর সাথে আছে?
কঙ্কা হেসে বলল,
–থাকবে না কেন? আছে।
সুরমার চোখে জল এলো। সে কোনোমতে জিজ্ঞেস করলো,
–তুই বাসায় ফিরবি না, কঙ্কা?
–না, আপা। আমি জেনেশুনে আগুনে ঝাঁপ দিয়েছি। এই আগুনে তোমাদের কাউকে আমি ফেলতে চাই না। তোমরা ভালো থেকো, আপা। দুলাভাইয়ের সাথে সুন্দর করে সংসার করো।
সুরমা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
–আর সংসার!
কঙ্কা মৃদু হেসে বলল,
–দুলাভাইয়ের সাথে তোমার কোনো সমস্যা হয়েছে, সেটা আমি সেদিনই বুঝেছিলাম। সব মিটমাট করে নাও, আপা। দুলাভাই তোমাকে খুব ভালোবাসে।৷ আমি জানি তুমিও বাসো। আমি রাখছি, আপা। বাবা মাকে একটু দেখে রেখো।
–কঙ্কা, শোন। কঙ্কা!
কঙ্কা শুনলো না। সে ইতোমধ্যে কল কেটে দিয়েছে। সুরমা সাথে সাথে সেই নাম্বারে ডায়াল করলো। কিন্তু নাম্বারটা এবার বন্ধ বলছে। সুরমা কিছুক্ষণ থম মেরে বসে থাকলো। তারপর ধীরে ধীরে তার খালা আর খালুজানের ঘরে গেল। দরজায় টোকা দিয়ে বলল,
–খালা, আসবো?
আয়েশা বেগম কান্নাকাটি করতে করতে ঘুমিয়ে পরেছিলেন। কলিমউদ্দিন সাহেব বললেন,
–মা, ভেতরে আসো।
সুরমা দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলো। খালুজানের সামনে দাঁড়ালো। একবার একটু ইতস্তত করে বলল,
–খালুজান, ক..কঙ্কা ফোন করেছিল।
কলিমউদ্দিন সাহেব হতচকিত হয়ে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালেন। অস্থির হয়ে বললেন,
–কি বলল কঙ্কা? কেমন আছে ও?
–বলেছে, ও ভালো আছে। ঠিক আছে। আপনারা যেন চিন্তা না করেন।
কলিমউদ্দিন সাহেবের মুখ মলিন হয়ে গেল। উনি প্রশ্ন করলেন,
–কোথায় আছে সেটা বলে নি, মা?
–না, বলে নি। শুধু বলল ও বিয়ে করেছে। আর ভালো আছে।
–ও! আচ্ছা, মা। তুমি যাও।
সুরমা ধীরে ধীরে ঘর থেকে বেরিয়ে এলো। দরজার পাশে দাঁড়িয়ে উঁকি মেরে তার খালুজানকে দেখতে লাগলো। উনি আজ আবার কাঁদছেন। হাউমাউ করে কাঁদছেন। কাঁদছেন আর বলছেন,
–আমার আম্মাজান ভালো আছে। আমার কলিজা ঠিক আছে।
স্বামীর কান্নার আওয়াজ শুনে আয়েশা বিছানায় উঠে বসলেন। অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলেন সেদিকে। কেন যে উনি কাঁদছেন কিছুই বুঝতে পারলেন না তিনি। সুরমার চোখেও জল এসে গেছে। সে দ্রুত পায়ে সেখান থেকে সরে গেল।
__________________
প্রায় দুপুর হয়ে এসেছে। কঙ্কা বিছানায় পাশ ফিরে শুয়ে কাঁদছিল। আবির মাথা মুছতে মুছতে ঘরে ঢুকলো। শার্ট গায়ে দিতে দিতে বলল,
–কঙ্কা, খেতে দাও।
কঙ্কা সেভাবে শুয়ে থেকেই জবাব দিলো,
–খাবার ঢেকে রাখা আছে দেখো। খেয়ে নাও।
আবির কঙ্কার দিকে তাকালো। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর ধীরে ধীরে বলল,
–কঙ্কা, তুমি কি কাঁদছো?
কঙ্কা কথা বলল না। আবির কঙ্কার পাশে গিয়ে বসলো। কঙ্কাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে জানতে চাইলো,
–কি হয়েছে?
কঙ্কা চোখ মুছতে মুছতে বলল,
–মা বাবার কথা খুব মনে পড়ছে।
আবির কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল,
–মা বাবার কাছে যেতে চাও?
কঙ্কা চোখ ছোট ছোট করে আবিরের দিকে তাকালো। নাক ফুলিয়ে বলল,
–আমি চলে গেলে তোমার খুব সুবিধা হয়, তাই না?
আবির হেসে ফেলে বলল,
–সেই চলে যাওয়ার কথা বলছি না।
কঙ্কা ভ্রু কুঁচকে বলল,
–তাহলে?
আবির কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল,
–মাকে ফোন করেছিলাম আমি। মা বলেছে তোমাকে তোমার বাবার বাসায় রেখে আসা হবে। তারপর ধুমধাম করে একটা আয়োজন করে তোমাকে নিয়ে আসা হবে।
কঙ্কার বুক কেঁপে উঠলো। মা ছেলে মিলে তাকে চিরকালের জন্য বাবার বাসায় রেখে আসার পরিকল্পনা করছে না তো? সে তাড়াহুড়ো করে বলল,
–না, আমি কখনো আমার বাবার বাসায় যেতে পারবো না।
–কিন্তু কঙ্কা, মা যে বলেছে এমনি এমনি তোমাকে নিয়ে বাড়ি যাওয়া যাবে না। যদি যাই তাহলে মা আমাদের দুজনকেই বাসা থেকে বের করে দেবেন।
কঙ্কা কোনোকিছু না ভেবেই বলল,
–তুমি আগে আমাকে নিয়ে তো চলো। তারপর আমি সব সামলে নেবো।
আবির ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলে বলল,
–আচ্ছা, বেশ। এখন খেতে এসো।
আবির পাটি পেতে খেতে বসে গেল। কঙ্কা চিন্তায় পরে গেল। সে সামলে নেবে বলল ঠিকই। কিন্তু সত্যিই যদি আবিরের মা তাকে মেনে না নেয় তখন কি হবে? কোথায় যাবে সে? আবির তাকে তালাক দিয়ে দেবে না তো? কোনদিকে যাচ্ছে তার জীবন?
__________________
শাদাব বাসায় ফিরলো বিকালে। সুরমার সাথে কথা বলতে চাওয়ার ইচ্ছাকে বহু চেষ্টায় দমিয়ে রেখেছে সে। এত সহজে সুরমার কাছে সে ধরা দেবে না। সুরমা সত্যিই তাকে ভালোবাসে কিনা সেটা বুঝে নেওয়ার প্রয়োজন আছে। সারাদিন নিজেকে কাজের মধ্যে ডুবিয়ে রেখেছিল শাদাব। একরাশ ক্লান্তি নিয়ে বাসায় ফিরেছে সে।
ক্লান্ত পায়ে হেঁটে এসে বেলের সুইচ টিপলো শাদাব। দরজা খুলে দিলেন সাবিনা বানু। শাদাবকে দেখে তিনি মুখ ঢেকে হেসে ফেললেন। তারপর বললেন,
–এসেছিস? আয়।
শাদাব ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলল,
–তুমি এভাবে হাসছো কেন, মা?
–কিছু না। এমনি হাসছি। তুই ভেতরে আয়।
শাদাব ভেতরে ঢুকলো। সাবিনা বানু দরজা বন্ধ করে দিয়ে বললেন,
–যা, ঘরে যা। হাতমুখ ধুয়ে আয়।
কথাটা বলে সাবিনা বানু হাসতে হাসতেই চলে গেলেন। শাদাব অবাক হলো। তার মা এভাবে হাসছে কেন?
ধীর পায়ে নিজের ঘরে গিয়ে ঢুকতেই শাদাব বড়সড় রকমের ধাক্কা খেলো। বিছানায় সুরমা বসে আছে। শাদাব হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। সত্যিই কি সুরমা এসেছে! নাকি সে ভুল দেখছে? শাদাব চোখ বন্ধ করে ফেললো। সুরমার গলা কানে ভেসে এলো তার। সুরমা বলছে,
–চোখ খুলুন। আমি সত্যিই এসেছি। আপনি ভুল দেখছেন না।
শাদাব চকিত হয়ে চোখ খুললো। ততক্ষণে সুরমা তার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। শাদাব বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে রইলো সুরমার মুখের দিকে।কোনো কথাই বলতে পারলো না। সুরমা একেবারে তার বুকের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো। চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,
–মেরেই ফেলুন আমাকে। এত কষ্ট আর সহ্য হয় না।
.
#চলবে…….
(এত অপেক্ষা করানোর জন্য দুঃখিত। নানুবাড়ি এসেছি। একে তো নেটওয়ার্কের সমস্যা। তার উপর মামাতো বোন এক মুহূর্তের জন্য তার আপুকে মানে আমাকে ছাড়ছে না। 😑
লেখা তো দূর, অনলাইনেই আসতে পারছিলাম না। দুঃখিত আবারও।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here