নীল চিরকুট
লেখনীতে- নৌশিন আহমেদ রোদেলা
৬৮.
রাত এগারোটা কী বারোটা বাজে। আষাঢ় মাস। চারদিক অন্ধকার করা বৃষ্টি। শহরজুড়ে লোডশেডিং। ল্যাম্পপোস্টের আলো জ্বলছে না। রাস্তায় হাঁটু পানি জল। পথঘাট ফাঁকা। গাড়ি-ঘোড়া পাওয়া দুষ্কর। এমন আষাঢ়ে নিঝুম রাতে রিকশায় বসে আছে আরফান। রিকশার পাতলা কাগজ জড়িয়েও লাভ বিশেষ হচ্ছে না। হাতের ঘড়ি, ফোন সব ভিজে একাকার। ভেজা চুল থেকে টুপটাপ জল গড়াচ্ছে। রিকশা চালক উদ্দাম গতিতে ছুটছে। আশেপাশে কিছু দেখছে বলে মনে হচ্ছে না। আধা হাত জলে ঢাকা রাস্তায় টর্চ লাইটের অল্প আলোতে কীভাবে রাস্তা নির্ধারণ করা হচ্ছে জানা নেই আরফানের। আরফান দীর্ঘশ্বাস ফেলল। ঝড়ের গতি বাড়ছে। যেকোনো সময় দূর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তিনগুণ টাকা দিয়ে ভাড়া করা রিকশাটা ছিটকে গিয়ে পড়তে পারে বিশাল কোনো নর্দমায়। আরফান কপাল কুঁচকে ঘড়ি দেখার চেষ্টা করল, দেখা যাচ্ছে না। ঘড়িটা এখনও ঠিকঠাক সময় দিচ্ছে কী-না সেও ভালো বুঝা যাচ্ছে না। রিকশা চালকের বয়স অল্প। ছটফটে কথা বলার অভ্যাস। ঝড়ের ঝাপটা পাড়ি দিতে দিতেই চেঁচিয়ে বলল সে,
‘ এই ঝড়, বৃষ্টির রাইতে বাড়াইছেন ক্যান স্যার? আপনের জন্যে আমারও আইতে হইল। একটা ঠাডা পড়লেই কেল্লা ফতে। আজকাল বৃষ্টির থাইকা ঠাডার খবরই শুনি বেশি। এই ঝড়ের মধ্যে বাইর হওন উচিত হয় নাই।’
আরফান জবাব দিল না। তার কপাল কুঁচকে আছে। মাথায় চলছে অসংখ্য চিন্তা। তার মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চিন্তা হলো, নম্রতা। নম্রতা রাতে ভয় পায়। নিশ্চয় এই ঝড়-বৃষ্টির রাতে ভয়ে সিটিয়ে আছে সে? মেয়েটা ভীষণ জেদী। ভয় পাবে তবু নিচে নামবে না। মায়ের কাছে বসবে না। ভয় নিয়েই আরফানের জন্য অপেক্ষা করবে। আরফান পৌঁছানোর পর ইচ্ছেমতো রাগ দেখিয়ে মায়ের কাছে ঘুমোতে যাবে। নম্রতা কোথায় ঘুমাচ্ছে তা নিয়ে আরফানের বিন্দুমাত্র মাথা ব্যথা নেই। তার আসল মাথা ব্যথাটা নিজের ঘুম নিয়ে। বিয়ের পর ভীষণ বাজে একটা অভ্যাস হয়েছে তার। নম্রতা আশেপাশে না থাকলে ঘুম হয় না। হাসফাস লাগে। মন ছটফট করে। সকাল হতেই মাথা ভার। মেজাজ খারাপ। প্রচন্ড হ্যাডেক। বিগত দুই বছরে সমস্যাটা তরতর করে বাড়ছে। এই নিয়ে, বিয়ের ছয় মাসের মাথায় বাজে একটা কান্ডও ঘটিয়ে ফেলেছিল আরফান। নম্রতা তখন বাবার বাড়ি থাকছে। আরফান প্রথম রাত ঠিকঠাক কাটাল। দ্বিতীয় রাতে নম্রতার সাথে চাপা রাগ দেখাল। তৃতীয় দিনে, রাত দুটোর সময় পৌঁছে গেল শ্বশুর বাড়ি। নুরুল সাহেব হতবাক হয়ে চেয়ে রইলেন। মেহরুমাও বিস্মিত। বাড়ির জামাই মাঝরাতে বউ নিতে চলে এসেছে, কী আশ্চর্য! আরফান লজ্জায় মাথা তুলতে পারছে না। এদিকে নম্রতার হাসি থামে না। আরফানের সে-কি রাগ। আরফানের হঠাৎ মন খারাপ হয়ে গেল। আজও নিশ্চয় ভয়ানক রেগে আছে নম্রতা? গটগট করে মায়ের কাছে চলে যাবে আবার? উফ, যন্ত্রণা! আরফান দীর্ঘশ্বাস ফেলল। অশান্ত মনটা ভীষণ চঞ্চল হয়ে বিরবির করল, প্রিয় অর্ধাঙ্গীনী, তোমাকে ছাড়া ঘুমটা আমার অসম্ভব টু দি পাওয়ার ইনফিনিটি।
আরফান যখন ভেজা জবজবে শরীরে বাড়ি পৌঁছাল তখন প্রায় একটা বাজে। ছাদের পটাতনে টলটলে বৃষ্টির পানি। ঝড়ের তালে তালে অল্প অল্প ঢেউ। অন্ধকার ছাদে নূরের মতো আলো ছড়াচ্ছে অসংখ্য বেলীফুল। বৃষ্টিকন্যার আদর পেয়েই লজ্জাবতী কিশোরীর মতো কেঁপে কেঁপে উঠছে কচি পাতা। ঝমঝমে, নিরন্তর বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে ঘরের চালা। ভীষণ অন্ধকারে এক টুকরো হলদে আলো ছড়াচ্ছে দেয়ালে টাঙানো হারিকেন। আরফান ছাদের দরজায় গিয়ে দাঁড়াল। মুগ্ধ দৃষ্টিজোড়া গিয়ে পড়ল বারান্দার দ্বারে। বারান্দার দ্বার ঘেঁষে, উদাসী ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে নম্রতা। হারিকেনের হলদে আলো এসে পড়ছে তার ডান গালে, অগোছালো শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে। আরফানের শরীর শিরশির করে উঠল। বৃষ্টিতে গা ভাসিয়ে দিয়ে ধীর পায়ে এগিয়ে গেল বারান্দার দিকে। নম্রতা আগের মতোই স্থির দাঁড়িয়ে রইল। ফিরেও তাকাল না। আরফান ভেজা জবজবে শরীর নিয়ে বারান্দায় উঠে আসতেই তীক্ষ্ণ কন্ঠে ডেকে উঠল ডাকপাখি,
‘ কে তুমি? কে তুমি? পাজি! পাজি!’
আরফান হতাশ চোখে চাইল। ডাকপাখিটা আজকাল খুব বেয়াদব হচ্ছে। নম্রতা তাকে উদ্ভট উদ্ভট কথা শেখাচ্ছে। সেই কথাগুলো আরফানকে দেখামাত্রই উগরে দেওয়া হয়ে উঠেছে ডাকপাখির ভৃত্যগত দায়িত্ব। আরফান মাথাটা হালকা ঝুঁকিয়ে আলতো ফু দিল নম্রতার কানে। আরফানের চেষ্টা ব্যর্থ হলো, নম্রতার সাড়া পাওয়া গেল না। আরফান ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে, ভেজা হাত বাড়িয়ে নম্রতার কপালের চুলগুলো কানের পাশে গুজল। ভিজে যাওয়া ডাক্তারী ব্যাগটা পাশে রেখে মৃদু কন্ঠে বলল,
‘ খুব বেশি রেগে আছেন, ম্যাডাম?’
নম্রতা উত্তর দিল না। ডাকপাখি কী বুঝে বরংবার একই শব্দ আওড়াতে লাগল,
‘ মন খারাপ। মন খারাপ। মন খারাপ।’
আরফান ভ্রু কুঁচকে তাকাল। ডাকপাখি তার বিরক্তি ধরতে পারল বলে মনে হলো না। আরফান দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
‘ হঠাৎ ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। রাতের ডিউটি না হলেও কাজ থাকে না বলুন? হঠাৎ ইমার্জেন্সি পড়লে তো পেশেন্ট রেখে আসা যায় না নম্রতা।’
নম্রতা উত্তর দিল না। আরফান আচমকা তার হাত টেনে নিজের দিকে ফেরাল। হালকা কাছে টেনে ভেজা হাতটা নম্রতার গালের উপর রাখল। ছোট্ট করে বলল,
‘ আমি সরি। আর হবে না৷ খুব বেশি ভয় পেয়েছিলেন?’
নম্রতা হাতটা সরিয়ে দিয়ে ঘরের দিকে পা বাড়াতেই পেছন থেকে আঁচল টেনে ধরল আরফান। ভেজা শরীরেই দুই বাহু বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরে বলল,
‘ এই মহারাণী? কথা বলছেন না কেন? বললাম তো, আর হবে না। ব্যারেস্টার সাহেবের মেয়েকে অন্তরের অন্তস্তল থেকে সরি জানাচ্ছে এই মাসুম, নিরাপরাদ ডাক্তার। এবারের মতো ক্ষমা করুন প্লিজ।’
নম্রতার মন গলল না। আরফানের শক্ত বাঁধন ছাড়িয়ে চুপচাপ ঘরে ঢুকে গেল সে। আরফান খুব ভালো করেই জানে, বউ আজ ঘরে থাকবে না। দেরী করার শাস্তি স্বরূপ ছাতা হাতে সুর সুর করে শাশুড়ীর ঘরে বিছানা পাতবে। আরফান দ্রুত ভাবার চেষ্টা করল। নম্রতা ছাতা হাতে বেরিয়ে দেখল, আরফান নেই। বারান্দা পেরিয়ে ছাদে এসে দাঁড়াল। অন্ধকারেই আশেপাশে চোখ বুলাল। কোথায় গেল আরফান? নম্রতাকে চমকে দিয়ে আচমকাই পেছন থেকে পাঁজাকোলে তুলল আরফান। নম্রতার হাতের ছাতা সরে গেল। ঝমঝমে বৃষ্টিতে ভিজে গেল সারা গা। নম্রতা চোখ-মুখ কুঁচকে চেঁচিয়ে উঠল,
‘ আরেহ! কী করছেন? নামান। ভিজে গেলাম।’
আরফান নম্রতাকে কোলে নিয়েই দুই একটা চক্কর দিল ছাদে। ছপছপ করে উঠল জমে থাকা জল। নম্রতা বেকায়দায় পড়ে ছাতা ফেলে দুইহাতে গলা জড়িয়ে ধরল। বৃষ্টির দাপটে চোখদুটো ছোট ছোট করে বলল,
‘ কী হচ্ছে?’
আরফান আচমকা চুমু খেল নম্রতার ঠোঁটে। নম্রতা অবাক চোখে চেয়ে রইল। এলোমেলো হয়ে গেল চিন্তা। আরফান ঠোঁট টিপে হাসল। দ্বিতীয় চুমুটা দিয়ে ফিসফিস করে বলল,
‘ আপনার জন্য টানা দেড় ঘন্টা ধরে বৃষ্টিতে ভিজছি ম্যাডাম। এতো সহজে ছেড়ে দেব, ভাবলেন কী করে? আজ সারারাত বর্ষণ চলবে। সহ্য করার দায় আপনার।’
নম্রতা কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে হাত-পা ছুড়াছুড়ি জুড়ে দিল। দুই একটা শক্ত ধাক্কা লাগল আরফানের বুকে। তার বিদ্রোহী মন এতো সহজে হার মানবে? কিছুতেই না। নম্রতার বাচ্চামোতে হেসে ফেলল আরফান। নম্রতাকে নামিয়ে দিয়ে বিদ্রোহী হাতদুটোকে এক হাতে পিছুমোড়া করে চেপে ধরল আরফান। ভ্রু নাচিয়ে বলল,
‘ এতো লাফালাফি করে লাভ নেই সুন্দরী। আপনাকে বাঁচানোর জন্য কোনো রাজকুমার ছুটে আসবে না। তার থেকে বরং রাজদ্রোহীকেই মেনে নিন। রাজদ্রোহীও কম সুদর্শন নয় মহারাণী। একটা সুযোগ অন্তত দিন।’
কথাটা বলে হাসল আরফান। নম্রতা ভাব নিয়ে বলল,
‘ এতো সহজ? মহারাণীকে মুক্ত করে তো দেখুন। রাজদ্রোহীর গর্দান যাবে।’
আরফান উত্তর দিল না। নম্রতার ভেজা জবজবে চুলগুলোতে আঙ্গুল বুলাল। চুলগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে গোছাল। দুই আঙ্গুলের ডগা দিয়ে পাশের গাছ থেকে দুটো বেলীফুল তুলে এনে খুব যত্ন করে গুজে দিল নম্রতার কানের পাশে। আরও কিছু ফুল ছিঁড়ে নিয়ে আলতো চুমু খেলো নম্রতার কপালে। নম্রতার হাতদুটো মুক্ত করে ভেজা চুলে একের পর এক ফুল গুজতে লাগল আরফান। কালো চুলগুলো শুভ্র ফুলে সাজাতে ব্যস্ত আরফানের দিকে মুগ্ধ চোখে চেয়ে রইল নম্রতা। অসম্ভব সুন্দর চোখদুটোর কুঞ্চন, প্রসারণে বিমোহিত হলো দৃষ্টি। রাগ, অভিমান ধুয়ে গেল। অন্যরকম অনুভূতিতে ধুকপুক করে উঠল বুক। প্রেয়সীকে মন মতো সাজিয়ে নিয়ে চোখ তুলে তাকাল আরফান। মিষ্টি হেসে চুমু খেল প্রিয়তমার চোখে। নম্রতা চোখ বোজল। ছাড়া পেয়েও নম্রতাকে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বাঁকা হাসল আরফান। শিকার বস মেনেছে বুঝতে পেরে, ঘাড় নুইয়ে ফিসফিস করে বলল,
‘ মুক্ত করেছি। গর্দান নিবেন না, মহারাণী?’
নম্রতা এক পলক চেয়েই মাথা নিচু করল। ভীষণ লাজুক মুখটি তুলে বলল,
‘ উহু। মহারাণী গর্দান নয়, বর্ষণ চাই।’
আরফানের হাসি বিস্তৃত হলো। ভেজা, শীতল হাতদুটো নম্রতার মসৃন কোমরের উপর রাখল। নম্রতাকে কাছে টেনে নিতে নিতে আষাঢ়ে আকাশের দিকে চাইল। পরমুহূর্তেই চোখ ফিরিয়ে চোখ রাখল প্রিয়তমার চোখে। ফিসফিসিয়ে বলল, প্রেমময় বর্ষণ এতো সুন্দর কেন শ্যামলতা?
_
ঘড়িতে দশটা বাজে। আরফান বিছানা ছেড়েছে প্রায় ঘন্টাখানেক হলো। অথচ নম্রতার খবর নেই। সারা বিছানাজুড়ে এলোমেলো ঘুমোচ্ছে। আরফান হাসপাতালের জন্য তৈরি হয়ে নম্রতার মাথার কাছে বসল। কয়েক সেকেন্ড চুপচাপ চেয়ে থেকে কাঁথা টেনে ঢেকে দিল নিরাবরণ গা। আরফান মাথা নুইয়ে জুতো পরতে পরতে নরম কন্ঠে ডাকল,
‘ নম্রতা? নম্রতা উঠুন। বেলা হয়েছে। মা নিচে অপেক্ষা করছে।’
নম্রতার সাড়া নেই। আরফান আবার ডাকতেই নড়েচড়ে উঠল নম্রতা। ঘুমঘুম কন্ঠে বলল,
‘ আরেকটু ঘুমাব, প্লিজ।’
‘ আপনার অফিস নয়টায়। এখন দশটা বাজছে। চাকরী থাকবে?’
নম্রতা চোখ পিটপিট করে তাকাল। আলস্য নিয়ে উঠে বসে মৃদু হাসল। আরফানের জুতো পরা শেষ। নম্রতার মুখোমুখি পকেটে হাত দিয়ে দাঁড়িয়েছে ততক্ষণে। নম্রতার দিকে কিছুক্ষণ নিঃশব্দে চেয়ে থেকে মৃদু গলা খাঁকারি দিল আরফান। দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ে আবারও চাইল। ভ্রু নাচিয়ে বলল,
‘ ব্যাপার কী?’
‘ ব্যাপার ভয়াবহ। ভাবছি চাকরীটা ছেড়ে দেব। চাকরী-বাকরী ভালো লাগছে না। দুই বছর চাকরী করে শখ মিটে গিয়েছে। ভাবছি কিছুদিন বরের টাকায় খাব। চলবে না?’
আরফান হেসে ফেলল। বিছানার পাশ থেকে সরে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। টাই ঠিক করতে করতে নম্রতার দিকে তাকাল,
‘ হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত?’
নম্রতা আবারও হাত-পা ছড়িয়ে শুয়ে পড়ল। কাঁথায় নাক-মুখ ঢেকে আবারও উঁকি দিল বাইরে। ঠোঁট উল্টে অলস ভঙ্গিতে বলল,
‘ আপনি ট্রিপিক্যাল হাজবেন্ড হলে জেদ ধরে চাকরি-বাকরি করা যেত। মাও ট্রিপিক্যাল না। তাই চাকরি করে মজা পাচ্ছি না। তার থেকে বরং ঘুমাই। গুড ফর হেল্থ।’
কথাটা বলেই চোখ বন্ধ করে ফেলল নম্রতা। আরফান টাই,চুল ঠিক করতে করতে আবারও নম্রতার দিকে তাকাল। বেরিয়ে যাওয়ার আগে মাথা নুইয়ে নম্রতার কপালে হালকা চুমু দিতেই চোখ মেলে হেসে ফেলল নম্রতা। আরফান নম্রতার ডান গালে আলতো স্পর্শ করে বলল,
‘ ফ্রেশ হয়ে, খাওয়া-দাওয়া সেড়ে তারপর ঘুমোন। বেশিক্ষণ বিছানায় থাকবেন না। সাড়ে দশটার আগে খাবার খাওয়া চাই৷ আমি ঠিক এগারোটায় ফোন দেব। আসছি। আল্লাহ হাফেজ।’
নম্রতা মিষ্টি করে হাসল। আরফান বেরিয়ে যেতেই কাঁথায় চোখ-মুখ ঢেকে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিল সে। ঘুম হলো না। ঘুম ঘুম পাচ্ছে অথচ ঘুম আসছে না। মহা বিপদ। নম্রতা এপাশ ওপাশ করতে করতেই হঠাৎ লাফিয়ে উঠে বসল। হুট করে মনে পড়ে গেল ডাকপিয়নের কথা। আরফান নিশ্চয় চিঠি রেখেছে আজও? নম্রতার ঘুম ছুটে গেল। আরফানের চিঠি পড়ার লোভে দৌড়ে বিছানা ছাড়ল। আচ্ছা, কী থাকতে পারে চিঠিতে?
#চলবে…..
[ বহু দেরী করে দিলাম বলে দুঃখিত। পাঠকরা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেছেন বলে ধন্যবাদ। রি-চেইক করা হয়ে উঠেনি বলে আবারও দুঃখিত।]