নীড় পর্ব-২৯

0
1187

নীড়
রেশমী রফিক
২৯।।
দিবা এসেছে। সাথে সাইফুল। শফিকুল চৌধুরীর গাড়িতেই এসেছে সে। তবে বাসার ভেতর ঢোকেনি। শফিকুল চৌধুরী ওকে বলেছেন, যেন দিবাকে নিয়ে তার বাসায় চলে আসে। আগেভাগে কিছু বলার দরকার নেই। কেবল বলবে, ফুপাসাহেব ডেকেছেন জরুরী দরকারে। সাইফুল এরপর দিবাকে কল করেছে। দিবা মায়ের বাসায় গিয়েছিল। তুবাকে পাওয়া যাচ্ছে না এই খবরটা নিশ্চিত হবার পর থেকেই শেফালি হূলুস্থুল বাঁধিয়ে ফেলেছেন। চিৎকার-চেঁচামেচি করছেন। একে-ওকে কল করছেন পাগলের মতো। কারও কাছেই তুবার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্কুলের পর কোনো এক ছেলের সাথে দেখা করতে গেছে। কোচিংয়ের সময় ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু এরপর আর তার টিকিটি পাওয়া যায়নি।
দিদারুল সাহেব বেশ কয়েকবার কল করেছেন তুবার মোবাইলে। ফোনটা বন্ধ। দুশ্চিন্তায় কপালে বিন্দু-বিন্দু ঘাম জমেছে। মাথার ভেতর তালগোল পাকিয়ে গেছে। মেয়েকে তিনি ভালোই চেনেন। উল্টাপাল্টা কোনো কাজ করার ধাতে নেই সে। এমনিতেও মেয়ের সাথে মোটামুটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে তার। শেফালির মতো কড়া শাসন করেন না। তবে বন্ধুত্বের ছলে, কথাপ্রসঙ্গে মেয়েকে ঠিক-বেঠিক শেখান। তার মনে হয় না, তুবা কোনো ছেলের সাথে প্রেম করতে পারে। বান্ধবীদের কাছ থেকে যতটুকু জানতে পেরেছেন, অল্প কিছুদিন হলো এক ছেলের সাথে দেখাসাক্ষাৎ করছে সে। বড়জোর তিন-চারবার হবে। এর আগে কখনো এমন কিছু করেনি। নিয়মিত কলেজে যাওয়া-আসা করেছে। কোচিংয়ে গেছে। এরপর সময়মতো বাসায়ও ফিরেছে। খুব ভালো ছাত্রী না হলেও পড়াশুনায় বেশ মনোযোগী সে। সেই মেয়ের আজ কী হলো, কোথায় গেল, মোবাইলটা কেন বন্ধ করে রেখেছে, ভাবতে গেলে আউলে যাচ্ছে সবকিছু।
তুবার এখন যে বয়স, তাতে কোনো ছেলের সাথে পরিচয় হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। প্রেম হলেও অবাক হবার কিছু নেই। কিন্তু তুবার ক্ষেত্রে এসব ভাবা যাচ্ছে না। তুবা ওরকম মেয়ে নয়। প্রেমে পড়লে সবার আগে দিবাকে বলবে সে। দিবার সাথে তার বয়সের পার্থক্য বেশ খানিকটা থাকলেও দিনার ওই ঘটনার পর দুই বোন মানসিকভাবে অনেকটাই কাছাকাছি হয়ে গেছে। বিয়ের আগে দুই বোন এক ঘরে ঘুমুত। বিছানায় শুয়ে গুটুর-গুটুর গল্প করত। দিবা তার নিজের অনেক কথাই শেয়ার করেছে। সাইফুলের সম্পর্কে এই বাসায় তুবাই সবার আগে জেনেছে। তারপর বাবাকে বলেছে। দিদারুল সাহেব অবাক হলেও দিবাকে কিছু জিজ্ঞেস করেননি। মেয়ে বিব্রত হতো। তুবার কাছ থেকে যতটুকু শুনেছিলেন, তাতে মনে হয়নি সাইফুলের সাথে দিবার প্রেম চলছে। ব্যাপারটা সাইফুলের দিক থেকে একতরফা। অর্থাৎ দিবা হয় দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছে। নয়তো সাইফুলকে তার পছন্দ নয়। দিবার সাথেও দিদারুল সাহেবের খুব গভীর সম্পর্ক। এজন্য তিনি ধরেই নিয়েছিলেন, সময় হলে দিবা নিজেই ব্যাপারটা জানাবে। হয়েছিলও তাই। সাইফুল যেদিন হুট করে বাসায় চলে এসেছে, ওকে দেখামাত্র দিবা আঁতকে উঠেছিল। তারপর দৌড়ে গিয়ে তাকে জানিয়েছে। সংক্ষেপে যতটা খুলে বলা যায়, বলেছে। তুবার জীবনে এরকম কিছু ঘটলেও সেও বলত। বলেনি, তার মানেই এখানে অন্য ব্যাপার আছে।
ছেলেটা কে আসলে? হয়তো তুবাকে পছন্দ করে। কোনো এক বাহানায় দেখা করেছে। তারপর? তুবা সম্ভবত তাকে পছন্দ করেনি। হয়তো প্রত্যাখান করেছে। হতে পারে, আজই। তারপর কী হয়েছে? তুবা কেন বাড়ি ফেরেনি? নানান প্রশ্ন জট পাকিয়ে যাচ্ছে। শান্ত ভঙ্গিতে কিছুই ভাবতে পারছেন না দিদারুল সাহেব। তার মন বলছে, তুবার সাথে খারাপ কিছু ঘটেছে। বিপদে পড়েছে সে। ওই ছেলেটা কি ওর কোনো ক্ষতি করেছে?
অজানা আশঙ্কায় বুকের ভেতরটা দুরু-দুরু কাঁপছিল। শেফালি কোনোদিকে খোঁজ না পেয়ে কাঁদতে বসে গেছেন। বিলাপের সুরে তুবাকে ডাকছেন। মেয়ের ক্ষতি হবার আশঙ্কা তার ভেতরেও জেঁকে বসেছে। এর মধ্যে আদৃতা বলার চেষ্টা করেছিল, তুবা হয়তো পালিয়ে গেছে ছেলেটার সাথে। হয়তো বিয়ে করেছে ওরা। দুই-একদিন পর ঠিকই পরিবারের সাথে যোগাযোগ করবে। দিনারেরও একই মত। কিন্তু শেফালির মন মানছে না। তিনি আদৃতার কথা বিশ্বাস না করার চেষ্টা করছেন প্রাণপনে। এইটুকু মেয়ের কেন এখনই মাথায় বিয়ের চিন্তা আসবে? অভিভাবকদের ভাষ্যমতে, সে এখনো নাদান বাচ্চা। কিন্তু বয়সের দিক থেকে হিসেব করলে এখন তার কাউকে ভালোলাগার বয়স। সেই ভালোলাগায় ডালপালা ছড়াতে তো সময় লাগবে। এরপর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হবে। এখনই কেন পালিয়ে বিয়ে করার প্রসঙ্গ আসবে?
তুবার নিখোঁজ হওয়া উপলক্ষ্যে ওর বড় খালা, এক মামা আর দুই চাচা চলে এসেছেন। দিবাকেও খবর জানানো হয়েছে। পথিমধ্যে সে কিছু বলেনি। কিন্তু বাসায় পৌঁছে বলল, তুবার সঙ্গের ছেলেটা আসলে সাইফুল। তুবার ঘুরাঘুরি করার অনেক শখ। এটা জানার পর বেশ কিছুদিন ধরেই শ্যালিকাকে সাথে নিয়ে ঘুরতে যাবার পরিকল্পনা করছিল সে। তুবার সাথে যোগাযোগ করে আজ হঠাৎই কলেজ ছুটির সময়ে ওকে তুলে নিয়েছে গাড়িতে। এরপর ওরা পুরান ঢাকার ওদিকে ঘুরতে গিয়েছিল। বিষয়টা দিবা নিজেও জানত না। তুবার ফেরার সময় হতেই ওরা বুঝতে পারল, রাস্তাঘাটের যানজটের কারণে ফিরতে বেশ দেরি হয়ে যাবে। তুবা খুব ভয় পাচ্ছিল ভেবে, বাসায় জানলে বকাবকি করবে। এজন্য দিবাকে কল করে জানিয়েছে।
স্বভাবতই দিবার কথা বিশ্বাস হয়নি কারও। কথা বলার সময় তার গলা কাঁপছিল। নার্ভাস ফিল করছিল সে। যদিও এটার পেছনে হাঁপিয়ে যাবার অজুহাত দিয়েছে। তুবার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না শুনে এক কাপড়ে, কোনোরকম প্রস্তুতি ছাড়াই বাসা থেকে বের হয়ে গেছে সে। যত দ্রুত সম্ভব, এখানে আসার চেষ্টা করছিল। এর মধ্যেই সাইফুল কল করেছিল। শেফালির জেরার মুখে, মোবাইলের স্ক্রিণে সাইফুলের কল লগটাও বের করে দেখাল। তবু সবার মন বলল, এখানে ঘাপলা আছে কোনো। খটকা তো অবশ্যই আছে। সাইফুল কেন এভাবে হুট করে তুবাকে নিয়ে ঘুরতে যাবে। দিবা বলল, আগে থেকেই পরিকল্পনা করছিল। তাহলে আজ কেন যাবার আগে দিবাকে কল করে জানাল না?
শেফালি নির্বোধ নন। তার উপর ছেলেমেয়েদের মুখের ভাষা পড়ে ফেলতে তার খুব একটা সময় লাগে না। খানিক চুপ করে ছিলেন তিনি। ভাবখানা এমন যেন, দিবার কথা বিশ্বাস করেছেন। তুবা সাইফুলের সাথে আছে শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। এরপর কথাচ্ছলে দিবাকে শোবার ঘরে ডেকে নিলেন। দরজা আটকে আসল কথা জিজ্ঞেস করলেন। দিবা মিথ্যে বলতে পারেনি। সাইফুলের সাথে তার যা যা কথা হয়েছে, সবটাই মাকে বলেছে। এরপর শেফালি আর হৈ-চৈ করেননি। আগের মতোই স্বাভাবিক রয়েছেন। দিবা বলেছিল, সাইফুল নিজেই বাসায় এসে তুবাকে পৌঁছে দিয়ে যাবে। তখন ওর সাথে বাসায় ফিরবে দিবা। মেয়ের জামাই আসবে, এই উপলক্ষে তিনি রান্নাবান্নার আয়োজন করতে লাগলেন। এমন নয়, দুশ্চিন্তা হচ্ছে না। তবে সাইফুলকে ভরসা করেন। সাইফুল নিশ্চয়ই তুবাকে সহিসালামতে বাড়ি পৌঁছে দেবে। দিবা এরপর অন্য ঘরে গিয়ে দিদারুল সাহেবকে বলেছে। শুনে তার কপালে ভাঁজ পড়লেও তিনি আর রা কাড়েননি। বিষয়টা আদৃতাসহ অন্যদের মনেও খটকা লাগানোর মতো। তবে কেউ আর কথা বাড়ায়নি। যে-যার বাসায় চলে গেছে। দিনার-আদৃতা শোবার ঘরের দরজা আটকে নিজেদের ভেতর আলোচনা করছিল। দিনার বিশ্বাস করেনি দিবার কথা। তবে বাবা-মাকে নিশ্চিন্ত দেখে তার মনে হচ্ছে, এর মধ্যে কিছু কথাবার্তা হয়েছে, যার কারণে পরিস্থিতি হুট করে স্বাভাবিক হয়ে গেছে। আদৃতা খোঁচা দিল স্বামীকে,
– তোমার বাবা-মা নিশ্চয়ই তোমাকে রাস্তা থেকে টুকিয়ে এনেছে।
– এই কথা বলছ কেন?
– কেন বলব না? উনারা দিবার সাথে কীসব ঘুটুর-ঘুটুর করলেন। কই, তোমাকে তো একবার ডাকলেন না।
– কী আশ্চর্য! আমাকে কেন ডাকবে?
– কেন ডাকবে না? তুমি এই বাড়ির একমাত্র ছেলে। দিবা-তুবার বড় ভাই। তোমার কি কোনো অধিকার নেই ওদের উপর? ওরা কী করছে, কোথায় যাচ্ছে, কী চলছে, এসব জানতে মানা?
– মানা হবে না? আমি কোন কথাটা জানি না আমার বোনদের?
– তাহলে আজ কেন আম্মা দরজা আটকে দিবার সাথে ফুসুর-ফাসুর করল? বাবাকেও দেখলাম দিবার সাথে কথা বলতে নিচু গলায়। আমাকে দেখেই চুপ হয়ে গেল। আচ্ছা, আমাকে কিছু বলতে না চায়। না বলুক। কিন্তু তোমাকে কেন বলল না?
– সেটা আমি কী করে জানব? আর সব কথা আমাকেই কেন বলতে হবে? আমি কি সবকিছু দায়িত্ব মাথায় তুলে নিয়েছি?
– তুমি…
– শোন আদৃতা, আমি এই বাড়ির বড় এবং একমাত্র ছেলে। শুনে অনেকেরই মনে হতে পারে, আমার বোনদের, আমার বাবা-মায়ের সমস্ত দায়িত্ব আমার ঘাড়ে। বিষয়টা সেরকম না। আমার বাবা বুড়া হলেও এখনো অনেক শক্ত-সামর্থ। সেলফ ডিপেন্ডেন্ট। এখনো আর্ন করেন। আমার মাও এখন পর্যন্ত এই সংসারটাকে শক্ত হাতে ধরে রেখেছেন। আমার দায়িত্ব, আমার বোনদের দায়িত্বও নিজেরা পালন করেছেন। এখন আমি বিয়ে করেছি। জব করছি। এজন্য আমাকে আমার মতো ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু আমার বোনদের দায়িত্ব এখনো পালন করে যাচ্ছেন। একারণেই তুবার সব ব্যাপারে তারাই মাথা ঘামান। এখানে আমার কিছু বলার নেই। আমি বলতেও চাই না।
আদৃতা আর কথা বাড়াল না। দিনার এমনিতে রাগারাগি করে না। কিন্তু একবার ক্ষেপে গেলে তাকে সহজে মানানো যায় না। খানিকটা একগুঁয়ে স্বভাবেরও। আর প্রচন্ড পরিবার ন্যাওটা। তার জীবনে বাবা-মা আর বোনদের প্রায়োরিটি সবথেকে বেশি। বিয়ের পর থেকে আদৃতার সাথে এই নিয়ে অনেক বাদানুবাদ হয়েছে। কিন্তু দিনারকে তার মনোভাব থেকে টলানো যায়নি। তার একটাই কথা, আমি মানুষটা এমনই। এটা মেনে নিয়েই তোমাকে আমার সাথে আজীবন থাকতে হবে। আদৃতা এরপর বুঝে গেছে, তার স্বামীকে এমনিতে যেমন-তেমন করে চালানো গেলেও পরিবার নিয়ে কোনো বিরুপ কথা বলা যাবে না। আজও বলতে চায়নি। দিবার সাথে বাবা-মায়ের ফিসফাঁস কথাবার্তা দেখে ব্যাপারটা চোখে পড়ল। বিশেষ করে, মা-মেয়েরা দিনারকে পাত্তাই দেয় না যেন।
খানিকবাদে সাইফুল আবার কল করে দিবাকে জানাল, সে তুবাকে নিয়ে সরাসরি নিজ বাসায় যাচ্ছে। কেন, এত বৃত্তান্ত বলল না। দিবাকে তাড়াতাড়ি বাসায় চলে যেতে বলল। বাসায় পৌঁছেই কথা বলবে। তবে এটুকু বলেই পার পায়নি সে। এই যাত্রায় শেফালির সাথেও কথা বলতে হয়েছে। তিনি নানান প্রশ্ন করছিলেন। উত্তরে সে কেবল এতটুকু বলেছে,
– আম্মা, তুবা ভালো আছে। ওর কোনো বিপদ হয়নি। কোনো সমস্যা নেই। আমি ওকে নিয়ে আমাদের বাসায় যাচ্ছি। কারণ সঙ্গে আমার ফুপা আছেন। উনার গাড়িতে যাওয়া হচ্ছে। ফুপা আপনাদের ওদিকে যাবেন না মনে হয়। উনাকে বাসায় ফিরতে হবে।
– কী হয়েছে, সাইফুল? আমাকে একটু খুলে বলো তো। তোমার ফুপাত ভাই কেন তুবাকে নিয়ে যাবে রেস্টুরেন্টে?
– আম্মা, প্লিজ। সারাদিনে অনেক ধৈর্য ধরেছেন জানি। আপনি চিন্তায় অস্থির হয়ে আছেন এটাও বুঝতে পারছি। কিন্তু আমার হাতে সময় নেই। এখনই গাড়িতে উঠব। ফুপার সামনে কথা বলতে চাচ্ছি না। ফুপা আগেই আমাকে মানা করেছেন কাউকে কিছু না বলতে। তবু আমি দিবাকে জানিয়েছি, নয়তো আপনারা টেনশন করতেন। প্লিজ আন্টি। আমি ফ্রি হয়েই আপনাকে কল দিব। সবটা জানাব তখন। দরকার পড়লে যত রাতই হোক, বাসায় এসে সামনাসামনি কথা বলব। আপনি জাস্ট রিল্যাক্সড থাকেন। তুবা আমার সাথেই আছে। ভালো আছে।
– তুমি একটু তুবাকে ফোনটা দাও। আমি কথা বলতে চাই ওর সাথে।
– আম্মা, তুবা এখন আমার সাথে নাই। মানে আমি ফোনে কথা বলার জন্য একটু দূরে সরে এসেছি। তুবা ফুপার গাড়িতে উঠে বসেছে। ফুপাও এখন গাড়িতে উঠবেন। এই মুহূর্তে ওকে ফোনটা দিতে পারব না।
– তাহলে ওকে বলো মোবাইল অন করতে। মোবাইল অফ করে রাখছে কেন?
– আম্মা, চার্জ নাই। আপনি প্লিজ একটু শান্ত হন। আর দিবাকে বাসায় পাঠিয়ে দেন। তুবা বাসায় পৌঁছে সবার আগে দিবাকেই খুঁজবে। না পেলে নার্ভাস ফিল করতে পারে।
এরপর দিবা শ্বশুরবাড়িতে ফিরে এসেছে। এরপর অপেক্ষা করছিল সাইফুলের জন্য। বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। মিনিট কয়েক পরেই গাড়িসমেত সাইফুল চলে এসেছে। সে যখন দোতলায় উঠে এলো, দিবা ভেবেছিল, সঙ্গে তুবাকেও দেখবে। কিন্তু তুবা আসেনি। প্রশ্ন করতে হলো না। সাইফুল আগেই ইশারা করল, এখন কোনো কথা বলা যাবে না। শোবার ঘরে গিয়ে যা বলার বলবে।
দিবার ধৈর্য শেষ প্রায়। তবু মন শক্ত করে ঘরে গেল। এরপর সাইফুলকে জিজ্ঞেস করল,
– কী হয়েছে বলো?
সাইফুল ধীরেসুস্থে দিবাকে সবটুকু বলল। দিবা কোনো প্রশ্ন করল না। একটানে সবটা শুনে গেল। তারপর জিজ্ঞেস করল,
– তুবা এখন কোথায়?
– ফুপির বাসায়।
– ওখানে নিয়ে গেছে কেন ওকে?
– ওই বাড়ির বউ তুবা। ওকে তো ওখানেই নিয়ে যাবে।
– তা নেবে। কিন্তু এখনই কেন? এভাবে এত বড় কাহিনি ঘটানোর পর বিয়েটাই ছিল একমাত্র সলিউশন, মানলাম। শারারের সাথে বিয়ে হওয়াতে আমার আপত্তি নেই। বরং ভালো হয়েছে। আমার বোন আমার চোখের সামনে থাকবে। কিন্তু সাইফুল, ফ্যামিলির দিকটাও দেখতে হবে। আমার বাসায় এখনো কেউ কিছু জানে না। তাদের জানাতে হবে। এরপর দুই ফ্যামিলি মিলে কথাবার্তা বলার পর…
– সেজন্যই ফুপা তোমাকে ডেকেছেন। আমাকে বলেছেন, তোমাকে নিয়ে যেন উনার বাসায় যাই। সম্ভবত তুবার গার্ডিয়ান হিসেবে তোমার সাথে উনি ডিসকাস করতে চান।
– আমার সাথে কেন? আমার বাবা-মা আছে। তাদেরকে খবর দেই…
– এখন না। এখন আমার সাথে চলো। আগে ফুপাজানের সাথে আমরা কথা বলি। এরপর নাহয় আব্বা-আম্মাকে জানাব।
(চলবে)
ভাগিস! আগেই লিখে রাখছিলাম গল্পটা। নাইলে এখন আর পোস্ট করতে পারতাম না। পারিবারিক ব্যস্ততা আবার বেড়েছে হুট করে। স্বস্তির কথা একটাই, গল্প জাস্ট পোস্ট করে দেয়াটা বাকি।
আমি গতকাল স্ক্যাজুল করতে পারি নাই। মোবাইল থেকে ট্রাই করছিলাম। হচ্ছিল না। বারবার সামথিং গোজ রঙ দেখাচ্ছিল। এজন্য আর ট্রাই করি নাই। রাতে ঘুমানোর আগে অর্থাৎ ভোরে পোস্ট করার কথা। আমি তার আগেই ঘুমিয়ে পড়ছি। খুব টায়ার্ড ছিলাম।
এজন্য পোস্ট করতে দেরি হলো। পরের পর্ব আগামীকাল দিব।
স্ক্যাজুল প্রবলেম এখনো সলভ হয় নাই। তাই সময়টা আগেভাগে বলে লাভ নাই। তবে একটা টাইম দিয়ে রাখছি। দেখা যাক, ওই সময়ে পোস্ট হয় নাকি। না হলে আগামীকাল যখনই সময় পাই, পোস্ট দিয়ে দিব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here