নীড়
রেশমী রফিক
৫।।
কর্ণফুলী গার্ডেন সিটির চারতলার একপাশ কাচে ঘেরা। ওদিকেই ফুড কোর্টের টেবিল-চেয়ার সাজিয়ে রাখা আছে। এই ভরদুপুরে সে তিল ধারণ করার জায়গা পর্যন্ত নেই। এক্সিলেটর বেয়ে সেখানে পা রাখতেই হতাশ হলো তুবা। মানুষজনে গিজগিজ করছে চারপাশে। শপিং মলের ভেতর এসি চালু থাকলেও এখানে মানুষের গরমে এসির বালাই নেই। সাথে খাবারের গরম তো আছেই। ভ্যাপসা গরমের হলকা নাকে লেপ্টে আছে চিটচিটে আঠার মতো। অন্য কোনো সময় হলে তুবা আবার নিচতলায় নেমে যেত। এই ভীড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলি করার মতো মেয়ে নয় সে। কোলাহল এড়িয়ে চলতে পছন্দ করে। কিন্তু আজ ভীড় ঠেলেই সামনে এগোল। শারার ভাইয়ের সাথে দেখা করার মোক্ষম জায়গা এটাই। এত মানুষের ভীড়ে পরিচিত কেউ ওকে দেখবেই না। দেখলেও চিনবে না।
একপাশে খাবারের দোকানগুলো ফেলে চেয়ার-টেবিলের দিকে এগোল তুবা। খাবার এখনই কিনবে না। আগে টেবিল দখল করা জরুরি। শারার ভাই আসলে তো দাঁড়িয়ে কথা বলা যাবে না। যে করে হোক, বসার জায়গা খুঁজে বের করতে হবে। একটা টেবিলে দুইটা চেয়ার পেলেই চলবে। একটায় সে নিজে বসবে। অন্যটায় কলেজ ব্যাগ রাখবে। অর্থাৎ এই চেয়ারটা বুকড। খাবার পরেও অর্ডার করা যাবে। তাছাড়া এখানে সে খেতে আসেনি। শারার ভাই ফোনে বলল দেখা করতে চায়। কী একটা ব্যাপারে যেন কথা বলবে। সেজন্যই আসা হলো। যদি খাওয়া হয়, খরচ অবশ্যই শারার ভাইয়ের। সে এক পয়সাও বের করবে না বিল বাবদ। সত্যি বলতে তার কাছে রিকশা ভাড়া ছাড়া আর টাকাও নেই। আজ তাড়াহুড়ো করে বাসা থেকে বের হবার সময় গোপন ওয়ালেট ব্যাগে ভরতে ভুলে গেছে। এই ওয়ালেটের খবর কেউ জানে না। এটা সে শোবার বিছানায় জাজিমের নিচে লুকিয়ে রাখে।
বাসা থেকে কোনো হাতখরচ দেয়া হয় না ওকে। যা কিছু লাগবে, বাবা-মাকে বললেই কিনে দেয়। ক্যাশ বলতে কেবল রিকশা ভাড়াটাই। একদম মেপে-মেপে টাকা দেন শেফালি। সেখান থেকে যতটা সম্ভব, জমানোর চেষ্টা করে সে। যেমন, কলেজ ছুটির পর সে আর সুলতানা বেইলী রোড ধরে হাঁটে। শান্তিনগর মোড়ে পৌঁছে হাত ধরাধরি করে রাস্তা পার হয় দুই বান্ধবী। বেইলী রোডের ঠিক বিপরীত দিকের রাস্তায়ই সুলতানাদের বাসা। আর মেইন রোডের উপর ওদের কোচিং সেন্টার। এই পথটুকু রিকশায় যাবার জন্য ওকে বাড়তি টাকা দেন শেফালি। সে পায়ে হেঁটে টাকাটা জমায়। এরপর কোচিং শেষ হলে বেইলী রোড ধরেই ফিরতি পথে হাঁটা ধরে। কলেজের সামনে এসে রিকশায় চড়ে। সেই রিকশা মগবাজার মেইন রোড পর্যন্ত আসতেই ছেড়ে দেয়। তারপর রাস্তা পার হয়ে ওয়্যারলেস রেলগেট পর্যন্ত পায়ে হাঁটে। সেখান থেকে আবার রিকশা। তুবা লক্ষ করেছে, এভাবে ভেঙ্গে ভেঙ্গে আসলে যথেষ্ট পরিমাণে টাকা জমাতে পারে সে। মাঝেমধ্যে অবশ্য খুব বেশি ক্লান্ত থাকলে পুরোটা পথ রিকশাতেই আসে। আর শারার ভাইয়ের সাথে দেখা করলে তো কেল্লাফতে। ফিরতি ভাড়ার প্রায় পুরোটাই পকেটে পুরে ফেলতে পারে। কারণ উনার গাড়ি আছে। ফেরার সময় উনি ওয়্যারলেস মেইন রোডে নামিয়ে দেন ওকে। সেখান থেকে রিকশা নিয়ে সোজা বাসায় পৌঁছে যায় সে। এর মধ্যেও সে কেরামতি করে এতটুকু পথের ভাড়া পকেটে ভরার পাঁয়তারা করে। প্রায়দিনই রিকশা বাসার সামনে দাঁড় করিয়ে মায়ের কাছে টাকা চায়,
– ভাঙ্গতি লাগবে, মা। রিকশাওয়ালা মামা বলতেছে উনার কাছে ভাঙ্গতি নাই।
শেফালি যাচাই করতে যান না মেয়ের রিকশা ভাড়া আসলে কত। তিনি সরল মনে টাকা দেন। প্রতিদিন এই কাজ করতে পারলে খুব ভালো হতো। কিন্তু তুবা সেই ঝুঁকি নেয় না। বেশি খেতে গেলে দেখা যাবে আম-ছালা সবই যাবে। কী দরকার, বাপু?
আশপাশে তাকিয়ে কোনো টেবিল খালি দেখা গেল না। উলটো প্রতিটা টেবিলের আশপাশে অনেকেই দাঁড়ানো। অর্থাৎ টেবিল খালি হবার সাথে সাথেই দখল করা হবে। হুড়মুড় করে যে আগে চেয়ারে বসতে পারবে, টেবিল তার। এদের সাথে সে পেরে উঠবে কী করে?
তুবার হতাশ লাগছে খুব। একে তো তার ক্লান্ত লাগছে, আজ ক্লাসে ইলেকট্রিসিটি চলে গিয়েছিল। শেষ দুই পিরিয়ডে মাথার উপর ফ্যান ঘোরেনি। জানালা দিয়ে ঠান্ডা বাতাসও বয়নি। উলটো বাইরের দাবদাহ ভেতরে ঢুকে পড়ে পারলে। ক্লাস থেকে বের হয়ে কলেজের বাইরে পা রাখতেই মনে হয়েছিল জ্বলন্ত আগুনের উপর চলে এসেছে ভুল করে। আর এখন এই ফুড কোর্টে এসে মনে হচ্ছে সাক্ষাৎ নরকের আগুন। ইতোমধ্যেই ঘেমেনেয়ে জবজবে অবস্থা ওর। এই অবস্থায় শারার ভাইয়ের সাথে দেখা করার মানে হয় কোনো? কিন্তু উপায় নেই। দেখা করতে হবে। উনি বলেছেন, বিশেষ দরকার আছে। কথা হচ্ছে, উনি কিছুদিন ধরেই এই বিশেষ দরকারের বাহানায় দেখা করছেন। কিন্তু আসল কথাটাই বলছেন না। জিজ্ঞেস করলে হেঁয়ালি করে উত্তর দিচ্ছেন। যেমন, পরশু দেখা হবার পর যখন বলল,
– এখন বলেন, কেন দেখা করতে ডাকছেন?
– কেন ডাকছি মানে কী? তুমি-আমি নিউ রিলেটিভ। আমরা দেখা করতে পারি না?
তুবা একটু অপ্রতিভ হয়ে উত্তর দিয়েছে,
– হ্যাঁ পারি। কিন্তু…
– কিন্তু কী?
– আমার বাসায় জানলে সমস্যা হবে।
– কী সমস্যা?
– আপনি তো জানেন আমার মায়ের কীরকম মেজাজ। আর আপনাকে বড়াপুর কাহিনিও বলছি।
ওর মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে শারার বলল,
– তোমার বড়াপুর অ্যাফেয়ার ছিল। কিন্তু এখন তো আর সমস্যা নাই। তুমি তো বললা তোমার ফ্যামিলি মেনে নিয়েছে।
– হ্যাঁ নিয়েছে কিন্তু আব্বা-আম্মা যে কষ্ট পাইছিল, সেটা এখনো পুরোপুরি ভুলতে পারেনি। এখন রেগুলার যাওয়া-আসা থাকলেও বড়াপার সাথে আমাদের অতটা মাখামাখি নাই।
– ওহ। কিন্তু এর সাথে আমাদের দেখা হবার কী সম্পর্ক?
– মানে, আপনি বুঝতেছেন না আপনাকে আর আমাকে যদি পরিচিত কেউ পাবলিক প্লেসে দেখে একসাথে, তাহলে আম্মার কানে যাবে ডেফিনিটলি।
– হ্যাঁ যাবে। তাতে কী?
– উফফ ভাইয়া, আপনি এত্ত টিউবলাইট কেন? একটা কথা বললে বুঝতেই পারেন না, নাকি বুঝতে চান না। আল্লাহ জানে। আপনাকে এই একটা কথাই ভেঙ্গেচুরে বলা লাগে।
এই পর্যায়ে শারার বোকা-বোকা হাসি মুখে টেনে বলল,
– তোমার ফ্যামিলির মধ্যে যেই প্যাঁচ, বাপরে বাপ। এত্ত প্যাঁচ আমি জীবনেও দেখি নাই। আমার ফ্যামিলি খুবই সিম্পল। তারা আমাকে সবকিছু সিমপ্লি বুঝিয়েছে সবসময়। এজন্য ভেঙ্গেচুরে না বললে আমি ঠিক বুঝতে পারি না।
তুবা মনে মনে বলল,
– বলদ একটা! এ নাকি আবার প্রেমে পড়ছে? আল্লাহ জানে, কোন মেয়ের কপাল পুড়ানোর ফন্দি করছে এই গাধা ছেলে। এইরকম বলদা মার্কা প্রেমিক যার কপালে জুটবে, তার ইহকাল-পরকাল ওখানেই শেষ।
মুখে বলল,
– আচ্ছা, আমি বুঝিয়ে বলতেছি। আমার বড়াপুর কাহিনির পর আমরা ভাইবোনদের উপর অলিখিত একটা নিয়ম জারি হয়েছে। তা হলো, আমরা বাবা-মায়ের পছন্দে বিয়ে করব। কখনো বড়াপুর মতো পালাব না। মানে আমরা কেউ প্রেম করব না।
– কিন্তু দিবা ভাবি তো ঠিকই প্রেম করছে সাইফুলের সাথে।
– আপনি ভুল জানেন, ভাইয়া। মেজপু প্রেম করে নাই। সাইফুল ভাই নিজেই ফিদা হইছিল আপুকে দেখে। আপু পাত্তা দেয় নাই। এরপর আমাদেরে বাসায় গিয়ে হাজির হইছে। আব্বা-আম্মার সাথে কথা বলছে।
– ওহ। এটা জানা ছিল না। আমাদের মধ্যে তো সবাই জানে ওদের লাভ ম্যারেজ।
– সাইফুল ভাইয়ের তো লাভ ম্যারেজই। মানে যে মেয়েকে ভালোবাসছে, তাকেই বিয়ে করছে। আমাদের দিক থেকে ব্যাপারটা পারিবারিক।
– বুঝলাম।
– তো, এর মানে আমরা কেউ প্রেম করব না। এইজন্য ভাইয়ার নিজের পছন্দ থাকার পরেও সে কখনো মুখ ফুটে প্রপোজ করে নাই। ভালো লাগা মনের মধ্যে লুকায় রাখছে। কারণ, আব্বা-আম্মা সেই মেয়েকে কখনো মেনে নিত না। এরপর আম্মা নিজে পছন্দ করে নিয়ে আসছে ভাবিকে।
– ওহ, বেচারা প্রেমিক!
– উহু, বেচারা না। ভাইয়ার আসলে ওই মেয়ের জন্য ডিপ ফিলিংস ছিল না। জাস্ট ভালো লাগছিল। পাত্তা দেয় নাই বলে ভালোবাসা হয় নাই। পরে ভাবির সাথে ভাব হয়েছে অনেক। ভাইয়া এখন ভাবি বলতে অজ্ঞান।
– ভালো। কিন্তু আমার কী হবে? আমি এখনো প্রপোজই করতে পারলাম না। বিয়েশাদি করে বউ পাগল হওয়া তো দূরে থাক।
– আরে, আপনি এখনই হাল ছেড়ে দিচ্ছেন কেন? সময় তো চলে যাইতেছে না। প্রপোজ করেন। এরপর প্রেম চলুক। তারপর বিয়ে করে বউ পাগল হবেন।
শারার খানিক ঝুঁকে এলো তুবার দিকে। গলা নামিয়ে বলল,
– সময় চলে যাচ্ছে, তুবা। আমাদের লাইফটা খুব ছোট। এতই যে, আজ এই মুহূর্তে আমি গ্যারান্টি দিতে পারব না আর আধঘন্টা পর বেঁচে থাকব নাকি মরে যাব।
তুবা ঢোক গিলল। শারারের কথা শুনে নয়; শারার যা বলেছে, তার মর্মার্থ সে বুঝলেও এর গভীরতা উপলব্ধি করার মতো মানসিকতা তার হয়নি। সে ঢোক গিলেছে চোখের সামনে সুদর্শন যুবা পুরুষকে দেখে। বিয়েবাড়িতে এই ছেলেকেই সবগুলো মেয়ের মাথা খেয়ে ফেলেছিল। তখন ছেলেটাকে দেখে মনে হয়নি, বিশেষ কারও প্রতি আগ্রহী। অন্য ছেলেদের মতো ভাব না ধরে সবার সাথেই হেসে-হেসে কথা বলেছে। একারণে মুরব্বিরাও ছেলেটার প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল।
এই ছেলে এখন তার সামনে বসা। ভাবা যায়? ভাবতেই তুবার হাত-পা পেটের ভেতর ঢুকে যাচ্ছে। বুকের মধ্যে চিনচিনে ব্যাথা হচ্ছে। কারণ, এই ছেলেকে সে কখনোই নিজের করে পাবে না। তাকে ভালো লাগলেও সে কথা বলার উপায় নেই। আম্মা কাঁচা চিবিয়ে খাবে। তাছাড়া, এই ছেলে হচ্ছে আকাশের চাঁদ। তাকে আপন করে পাওয়ার আশা করা মানেই বামুন হয়ে চাঁদের দিকে হাত বাড়ানো। সাইফুল ভাইদের বংশ মোটামুটি সচ্ছ্বল ধরনের। কিন্তু তার ফুপুর বিয়ে হয়েছে আরও এক ধাপ উপরের স্তরে। তাদের রাশভারী আভিজাত্য মানুষ ঘুরে-ঘুরে দেখে। শারার সেই বংশের ছেলে। তার পাশে তুবাকে মানাবে? উহু, একদম না। আর এই ছেলে তো নিজেই অন্য কাউকে পছন্দ করে বসে আছে। ওর দিকে তাকাবেই না সেভাবে।
ধ্যাত, আজগুবি কীসব ভাবছে! তুবা তার চিন্তার রাশ টেনে ধরল। স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বলল,
– এটা অবশ্য ঠিক বলছেন। লাইফের আসলেই গ্যারান্টি নাই।
– এক্সাক্টলি।
– তো, যা বলতেছিলাম। আমাকে আর আপনাকে একসাথে পাবলিক প্লেসে দেখলে আমার আম্মার কানে যাবেই। তারপর আম্মা আমাকে ধোলাই দিবে। কী লেভেলের তুফান চলবে আমার উপর, সেটা আপনি কল্পনাতেও ভাবতে পারবেন না।
– তুমিও কল্পনা করতে পারবা না, আমার আব্বু যদি জানে আমি অফিস বাদ দিয়ে এখানে বসে পছন্দের মেয়েকে প্রপোজ করার প্ল্যান করেছি, তখন আমার কী হবে।
– ওই-ই। আপনার আব্বা আর আমার আম্মা। প্রত্যেকটা ফ্যামিলিতে দেখবেন এইরকম দুই-একটা দজ্জাল থাকবেই।
– আব্বু দজ্জাল না। সে আসলে খুব ডিসিপ্লিনড। মানে কাজের টাইমে কাজ বাদে অন্য কিছু করা একদম পছন্দ করে না। তার কথা হচ্ছে, কাজের সময় অন্যদিকে মনোযোগ দিলে লাইফে উন্নতি করা পসিবল না। কাজ শেষ হোক। অফিস আওয়ারের পর যার ইচ্ছা তার সাথে, যা খুশি তাই করো, নো অবজেকশন। কিন্তু তোমার তো আবার ওই সময়ে দেখা করা সম্ভব না।
– হুম। বুঝলাম।
– এইবার বলেন আপনার পছন্দের মেয়েটা কে। স্বর্ণাপু তো না।
– একচুয়ালি আমি কনফিউজড। আমি মেয়েটার নামধাম জানি না। জাস্ট দেখছি দূর থেকে। গায়ে হলুদের দিন থেকেই আমি তার প্রেমে পড়ে গেছি। মানে, লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট। কিন্তু তখন কেন জানি মাথায় আসেনি মেয়েটার সাথে কথা বলতে হবে, পরিচিত হতে হবে। আমি শুধু দূর থেকে দেখছি…
তুবা মনে মনে বলল,
– লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট আমারও হয়েছে, যখন আপনাকে প্রথম দেখেছিলাম। কিন্তু আমার কপাল খারাপ। পছন্দের মানুষকে দুলাভাই ডাকা লাগবে। কী আর করার!
বুক চিরে বেরিয়ে আসা দীর্ঘশ্বাস গোপন করল সে। ওদিকে শারার বলে যাচ্ছে,
– বিলিভ মি! বিয়ের আগে আমার একবারও মনে হয় নাই মেয়েটার নাম জানতে হবে। পরিচয় জানতে হবে। বিয়ের দিন মনে পড়ছে, পরের দিন দেখা হবে কি না তার গ্যারান্টি নাই। মানে মেয়েটা আসলে তোমাদের পরিচিত কোনো রিলেটিভ নাকি কোনো নেইবার, আবার হতে পারে দিবা ভাবির বান্ধবী-টান্ধবী কেউ। কাছের কেউ না হলে তো একদিন পর বৌভাতে দেখা হবে না।
– হুম।
– এটা মনে হবার সাথে সাথেই আমার মাথায় ওই মূহূর্তে যা আসছে, আমি তাই করছি। তখন এগিয়ে গিয়ে তার সাথে কথা বলার উপায় ছিল না। কারণ বরযাত্রী আরেকটু পরেই রওনা হবে বউ নিয়ে। হাতের কাছে কাগজ-কলম কিচ্ছু ছিল না। গিফটের টেবিল থেকে নিয়ে তাড়াহুড়ো করে লিখছি। চিঠিতে যে কী লিখছি, আই হ্যাভ নো আইডিয়া।
তুবা হতভম্ব। বলল,
– তার মানে আপনি জানেন না মেয়েটা কে! মানে আমাদের ক্লোজ কেউ না? হলুদ আর বিয়ের দিন তো অনেকেই আসছিল।
– তোমার স্বর্ণাপু না, এটা শিউর। ও এত্ত বেশি ফ্লার্ট করছে, ওর নামের সাথে সাথে ওর বাপ-দাদার পরিচয়ও জানা হয়ে গেছে।
(চলবে)
পরের পর্ব রাত নয়টায়।