#পবিত্র_ভালোবাসা ❣️
#লেখিকা_ইসরাত_জাহান_মাওয়া
#পর্ব_২
ইসরাত: আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ ওয়া বারকাতুহু…..
এই শুন এমনেই মাথা গরম হয়ে আছে আর রাগ তুলবি না (বলেই ইসরাতের ব্যাগ টা নিচে ফেলে দিলো)
ইসরাত কোনো কিছু না বলে ব্যাগ টা তুলে অন্য জায়গায় বসে পড়লো আর বললো….
ইসরাত: এই পৃথিবীতে বান্দা বুঝে কিংবা না বুঝে অনেক ভুল করে থাকে। আল্লাহ ওদের জ্ঞান দাও ওরা তো অবুঝ(বলেই বোরকার আড়ালে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললো আর মেয়েটার কাছে গেলো যে ওর সাথে খারাপ ব্যাবহার করেছে)…. আমি একটা কথা বলবো তুমি কি শুনবে….(খুব আস্তে কথা টা বললো যেনো মেয়েটা শুনতে পায়)
হুম বল ,কি বলবি….
ইসরাত: তার আগে দয়া করে আমার সালামের জবাব টা দাও….
ইসসসসসস ওলাইকুম আসসালাম (সালামের ভুল জবাব)
(কিছুটা বিরক্ত হয়ে)
ইসরাত: এইভাবে না ভালো করে দাও….
এমনেই মাথা গরম হয়ে আছে, তুই আর গরম করিস না (রাগে)
ইসরাত: জবাব না দেওয়া পর্যন্ত আমি এই জায়গা থেকে যাবো না।
মেয়েটার কণ্ঠ টা খুব সুন্দর (মেয়ে টি ভাবলো) ওকে ওকে বলছি, ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু,
হইছে? এবার শান্তি তুই?
ইসরাত: আলহামদুলিল্লাহ, তোমার নাম কি?
আমার নাম জান্নাত, তোর?
ইসরাত: মাশাআল্লাহ খুব সুন্দর নাম। আমার নাম ইসরাত জাহান মাওয়া। সবাই ইসরাত বলেই ডাকে…..
জান্নাত: এত বড় নাম তোর ! শুনে তো আমার দাঁত ভেঙ্গে যাচ্ছে।
ইসরাত: আচ্ছা আমি এখন আসি ,স্যার, এসে পড়বে(মিষ্টি হাসি দিয়ে)
জান্নাত: এইখানেই বসে পড় । আয় তোর ব্যাগ নিয়ে….
ইসরাত: শুকরিয়া….
ঐদিন জান্নাত ইসরাতের কিছুটা বন্ধুত্ব হয়ে গেলো….
জান্নাত: শুন তোকে যে আমি অনেক খারাপ কথা বলেছি তুই কষ্ট বা রাগ না করে আমার সাথে ঝগড়া না করে আমার সাথে এসেছিস কথা বলতে ,কেনো?
ইসরাত: হুম কষ্ট আমি পেয়েছি ,কিন্তু নিজের জন্য না কষ্ট পেয়েছি তোমার জন্য। কারন তুমি আমার বা মেয়েদের পর্দা কে অসম্মান করেছো ,তুমি একটা মেয়ে হয়ে। এই জন্য তোমার এই পাপ কাজ টা থেকে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি।
জান্নাত: তোকে যত দেখছি ততই অবাক হচ্ছি….তোর মন কি বড় , কত সহজে আমায় ক্ষমা করে দিয়েছিস।
ইসরাত: এই পৃথিবীতে বান্দা বুঝে কিংবা না বুঝে অনেক ভুল করে থাকে। সেসব ভুল বুঝতে পারলে আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। মহান আল্লাহ্ তায়ালা ক্ষমাশীল। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এই দোয়া পাঠ করবে, দিনে পাঠ করে রাতে মারা গেলে কিংবা রাতে পাঠ করে দিনে মারা গেলে, সে জান্নাতি হবে’।
দোয়াটি হলো…
আল্লা-হুম্মা আনতা রববী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খালাক্বতানী, ওয়া আনা ‘আবদুকা ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রি মা ছানা‘তু। আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবূউ বিযাম্বী ফাগফিরলী ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা।
এখন তুমি যদি নিজের ভুল বুঝতে পারো তাহলে ক্ষমা চাও আল্লাহ তায়ালার নিকটে। আর আমি তো ক্ষমা করার কেউ না আমিও তোমার মতো একজন মানুষ(বলেই ইসরাত চলে যেতে লাগলো)
তখন জান্নাত পিছনে ডাক দিলো…
জান্নাত: ইসরাত শুন…
ইসরাত: হুম বলো…
জান্নাত: আমরা কি বন্ধু হতে পারি…?
ইসরাত: বন্ধুত্ব হলো সমাজ জীবনের সুসম্পর্কের চুড়ান্ত পর্যায়। বন্ধুত্বের মর্যাদা রক্ষা করাও অনেক মর্যাদার। বন্ধুত্ব ও সৎ সঙ্গীদের মর্যাদা গ্রহণ করা এবং বন্ধুত্ব রক্ষার বিষয়ে কুরআন এবং হাদিসে অনেক গুরুত্ব উল্লেখ করা হয়েছে।
না জেনে কাউকে যেমন বন্ধু রূপে গ্রহণ করা যায় না। তেমনি সত্যবাদী, নামাজি, দ্বীনদার ও পরোপকারী ব্যক্তিকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ না করারও কোনো উপায় নেই।
বন্ধু নির্বাচনে সতর্কতাবন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ নিয়ে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘মানুষ তার বন্ধু স্বভাবী হয়, তাই তাকে লক্ষ্য করা উচিত, সে কার সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে।’ (তিরমিজি)
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বন্ধুত্বের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘সৎ সঙ্গী এবং অসৎ সঙ্গীর উদাহরণ হচ্ছে আতর বিক্রয়কারী এবং কামারের হাপরের ন্যায়। আতর ওয়ালা তোমাকে নিরাশ করবে না; হয় তুমি তার কাছ থেকে ক্রয় করবে কিংবা তার কাছে সুঘ্রাণ পাবে। আর কামারের হাপর, হয় তোমার বাড়ি জ্বালিয়ে দেবে, নচেৎ তোমার কাপড় পুড়িয়ে দেবে আর না হলে দুর্গন্ধ পাবে।’ (বুখারি)
কোনো মানুষকে বন্ধু হিসেবে নির্বাচন করতে হলে যে গুণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে তা বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হও।’ (সুরা তাওবা : আয়াত ১১৯)
তো তুমি বুঝতে পেরেছো আমি কি বলতে চাচ্ছি…
জান্নাত: হুম অবাক হয়ে।
ইসরাত: আল্লাহ হাফেজ
জান্নাত: আল্লাহ হাফেজ….
অন্যদিকে….
অর্নীল: মামু দেখ একটা মেয়ে…
ঈশান: কিসের মেয়ে(ড্রিংক করে)
অর্নিল: মনে হয় মেয়ে টা আজ নতুন আসছে । দেখতে কিন্তু পুরাই ঝাক্কাস….(আস্তাগফিরুল্লাহ)
ঈশান: আব্বে ,,তোর নজর ভালা কর, (বলেই মেয়েটার দিকে তাকাতেই আমি পুরাই শকড)
অর্নিল: কি মামু মুখে কোনো কথা নেই তাই তো(আরেকটা ড্রিঙ্কস এর গ্লাস হাতে দিয়ে)
ঈশান: একই তো আমি মনে মনে কতো খুঁজেছি মামু(একসাথে পুরোটা ড্রিঙ্কস মুখে দিয়ে)
তিয়াস: মামু এই কথা তো তুমি সব সময়ই বলো পরে কইদিন ঘুরাঘুরি করে বদলাও আর তোমার জন্য আমরা আর পাই না।
ঈশান: আরেহ চুপ যা ,এখন থেকে তোদের যাকে পছন্দ তার সাথেই ডেইট করিস বাট এই পিছ টা আমার(ওই মেয়েটার দিকে তাকিয়ে)
তিয়াস: আরে ,,, দেখি এখন ডাইলগ মারবার লাগছে।
অর্নিল: ঈশান তুই যেভাবে বলছিস ,ওই রকম যদি না হয় বা মেয়েটার যদি কোনো বয়ফ্রেন্ড থাকে তখন কি করবি?
ঈশান: ঈশান যাকে একবার পছন্দ করে তাকে সে নিজের করেই নেয়, আর এই মেয়ে তো আমার লাইফের তাই ওকে তো আমার বানিয়েই নিবো…..
তিয়াস: তাহলে গিয়ে মেয়েটার সাথে কথা বল…আর আমরাও ড্যান্স করি আমাদের শিলা প্রিয়া রাই তিশা নীলা সোনালী মিম মুন্নী রুমা যুমা আর যেনো কি কি (ভাবতে লাগলো (
অর্নিল: দোস্ত তুই কোনোদিন ঠিক হবি না (তিয়াসের পিঠে চড় মেরে)
ঈশান: ও এখন একলা আমি আসছি…
অর্ণিল ও তিয়াস: যা মামা অল দ্যা বেস্ট….
ঈশান মেয়েটার কাছে যেয়ে….
ঈশান: হাই এই অ্যাম ঈশান(হাত বাড়িয়ে দিয়ে)
মেয়েটি: হেই আই অ্যাম….
চলবে….
বানান ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
শিক্ষণীয় কথা: আমাদের ভেবেচিন্তে বন্ধুত্ব করা উচিত। কেননা একটা প্রবাদ বাক্য আছে,” সৎ সঙ্গে সর্গবাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ” আমরা যদি ভালো কারো সাথে বন্ধুত্ব করি তাহলে আমরা তারমত হবার চেষ্টা করবো যদি ভালো মন থাকে । তাই আমাদের সবার উচিত ভেবেচিন্তে বন্ধুত্ব বানানো ।
#হেদায়েতের_গল্প