পবিত্র ভালোবাসা❣️পর্ব-২৬

0
1148

#পবিত্র_ভালোবাসা ❣️
#Writer_ইসরাত_জাহান_মাওয়া
#পর্ব_২৬

ইসরাত: কোন কথা…

ঈশান: মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের এত নিয়ম এত কিছু কেনো দিলো। এইটা তো অন্যায় না আমাদের উপর একটু বেশি বেশীই হয়ে গেছে।

ইসরাত: এইসব কি বলেন? মহান আল্লাহ তায়ালা যেহেতু আমাদের সৃষ্টি করেছেন তাই আমাদের উচিত ওনার আদেশ নির্দেশ মেনে চলা । ধরুন…আপনার আগামীকাল পরীক্ষা এখন তো আপনি আজ কি করবেন অবশ্যই বই নিয়ে বসবেন তাই না…..

ঈশান: অবশ্যই । যদি ভালো রেজাল্ট করতে হয় তাহলে তো অবশ্যই বই নিয়ে বসে থাকতে হবে আর মন দিয়ে পড়তে হবে।

ইসরাত: হুম ঠিক বলছেন। ঠিক তেমনি আপনার বা আমার মৃত্যু কখন না কখন ডাক দেয় আমরা জানি না তাই আমাদের উচিত আগে থেকেই ভালো কাজ করা যেনো পরকালে জান্নাত লাভ করতে পারি। আর মহান আল্লাহ তায়ালা কিন্তু বেশি কিছু আমাদের দেয় নি দেখুন আমাদের হাতে সময় কত ঘণ্টা..?

ঈশান: ২৪ ঘণ্টা…

ইসরাত: তো এই ২৪ ঘণ্টা থেকে আমরা কি ২ বা তারচেয়ে ও কম সময় আল্লাহ তায়ালার জন্য ব্যায় করতে পারি না। আর বাকি সময় কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের দিয়েছে আর পর্দার কথা বললে বলবো পর্দা করলে কেউ খারাপ নজরে তাকাবে না এতে কিন্তু আমাদের মেয়েদের ভালো আর বাবা মাকে নিয়ে বলতে আমাদের উচিত কিন্তু তাদের সম্মান যত্ন করা কারণ ওনারা আমাদের এই পৃথিবীর আলো দেখিয়েছেন আর আমাদের বড় করেছেন । এখন বলুন এইগুলো সত্যিই বেশি বেশি হয়ে গেছে?

ঈশান: তোমার সাথে কথায় আমি পারবো না। একদম মাথায় মনে হয় হাদীসের সব বই মুখস্ত.. এখন শুনো তোমার আর সোফায় ঘুমাতে হবে না।

ইসরাত: তো কোথায় ঘুমাবো?

ঈশান: আমার খাট কিন্তু ছোটো না তুমি এই পাশে আর আমি অন্য পাশে আর আমাদের মাঝে থাকবে বাংলাদেশ আর ভারতের বর্ডার হিসেবে এই কোলবালিশ (কোলবালিশ দেখিয়ে)

ইসরাত: আচ্ছা হিহিহিহি….

ঈশান: ওই তোমার ওই পেত্নী মার্কা হাসি দিও না তো(মুখ চেপে হেঁসে)

ইসরাত: ভালো হইছে । আর বাঁকা দাঁত ওয়ালা মেয়েরা খুব কিউট হয়।

ঈশান: নিজের সুনাম নিজেই বলে হায়রে দুনিয়া….

ইসরাত: আপনি হলেন একটি…জান্নাত যেনো কি কি বলে 🤔

ঈশান: জিরাপ বজ্জাত অ্যানাকোন্ডা (ফোন আসলো) হেলো মেরি ডার্লিং জানু পাখি বাবু কি হয়েছে…..

ইসরাত মেরির নাম শুনে কিছু আর বললো না কিন্তু চোখ বেয়ে দু ফোঁটা পানি চলে আসলো….

ঈশান বেলকুনিতে গিয়ে মেরির সাথে কথা বলছে….

মেরি: তোমার বোনের সাথে নাকি অর্নিলের বিয়ে?

ঈশান: হুম।

মেরি: অর্নিল আমার সাথে এমন করেছে তাও তুমি ওর সাথে বন্ধুত্ব রেখেছো শুধু বন্ধুত্ব না এখন বোন কে বিয়ে ও দিচ্ছো ।

ঈশান: মেরি তুমি হইতো অর্নিল কে ভুল ভাবছো। আর বিয়েটা ডেড ঠিক করেছে।

মেরি: তুমি না করতে পারলে না (দাঁতে দাঁত চেপে)

ঈশান: আমি না করবো কেনো? অর্ণিল তো খারাপ ছেলে না ওকে আমি সেই ছোটো বেলা থেকে চিনি।

মেরি: তারমানে তুমি বলতে চাচ্ছো আমি খারাপ মেয়ে(ন্যাকা কান্না করে)

ঈশান: তুমি একটু বেশি বুঝো মেরি। আমি কি বলেছি যে তুমি খারাপ। এইসব আজাইরা কথা কিভাবে বলো তুমি?

মেরি: ও ও এখন আমি আজাইরা কথা বলি আর তোমার বউয়ের কথা এখন মিষ্টি তাই না। এখন তো অনেক খারাপ লাগবেই । আচ্ছা তোমার বউ কি আমার থেকেই বেশি সুন্দরী যে এখন আর আমার কথা ভালো লাগে না।

ঈশান: সত্যিই যদি বলি ইসরাতের নকের যোগ্য ও তুমি না।

মেরি: শাট আপ ঈশান। আমার মতো সুন্দরী আর দুইটা নেই। আর তুমি বলছো ওই ইসরাত না ফিশ্রত আমার থেকেও সুন্দরী। আজ থেকে আমাদের রিলেশন শেষ। ব্রেকআপ। আর তোমাকে আমি দেখিয়ে দিবো যে এই মেরির পিছনে কত কত ছেলে ঘুরে তোমার থেকেও হাজার গুণ বড়োলোক আর হ্যান্ডসাম।

ঈশান: সরি মেরি বাট আমি সত্যি টাই বলছি।

মেরি: তুমি আর আমাকে ফোন দিবে না।

ঈশান: মেরি আমার কথাটা শুনো একটু

মেরি: কোনো কথায় নাই (বলেই ফোন কেটে দিলো)

ঈশান দেখলো মেরি ফোন কেটে দিছে তাই সে আর ফোন না দিয়ে ওর রুমে চলে গেলো আর দেখলো…

কি নিষ্পাপ মুখ আর ঘুমাচ্ছে মনে হচ্ছে কোনো ছোটো বাচ্চা ঘোমাচ্ছে । ঘুমানোর সময় মাথায় ওরনা হায়রে কপাল 🤦🏼‍♂️ এমন মেয়ে ও নাকি দুনিয়াতে আছে। আর এখন তো মেয়েরা রাস্তাঘাটে জিন্স শার্ট পরে ঘুরে ভেরায়। অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে ঈশান ইসরাতের দিকে….

সকালে……..

ইসরাত: মনে হচ্ছে নড়তে চড়তে পারছি না। কেউ জাপটে ধরে আছে। আর নিঃশ্বাস নিতেও তো পারছি না আমি কি মারা গেছি(চোখ না মেলেই ভাবতে লাগলো) চোখ খুলে না আমি তো জীবিত আছি তাহলে কি আমায় জীনে ধরেছে কিন্তু আমি তো ঘুমানোর সময় সব দোয়া পড়ে ঘুমাই তাহলে কি হলো আমার(বলতে না বলতেই চোখ গেলো ঈশানের দিকে) আরেহ ওনি আমায় এইভাবে জড়িয়ে ধরে আছে কেনো। এই যে এই যে শুনছেন

ঈশান: ওই বিরক্ত করবে না তো(ঘুমিয়ে)

ইসরাত: আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে একটু সরেন প্লিজ….

ঈশান: আমি তো কোলবালিশ জড়িয়ে আছি তোমার প্রবলেম কি?

ইসরাত:এএএএএএএএবিইইইইইই আমি কোলবালিশ না আমি মানুষ।

ঈশান: চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি ইসরাত কে জড়িয়ে ধরে আছি তাই ওকে ছেড়ে ….সরি সরি আমি বুঝতে পারি নাই….

ওকে দেখতে দেখতে কখন যে ওকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম বুঝতেই পারি নাই….

ওই ইসরাত (চিল্লিয়ে)

ইসরাত: খাট থেকে নামতে চাইছিলাম তখনই ওনি চিৎকার দিলো ভয়ে আবারো বসে পড়লাম….

কি হয়েছে (কাঁদো গলায় বলল)

ঈশান: তুমি আজ নামাজ পড়ো নাই কেনো?

ইসরাত: আমার….

ঈশান: বুঝতে পেরেছি আর তুমি এই অবস্থায় কিভাবে কলেজ যাবে?

ইসরাত: যেতে পারবো আমি

ঈশান: যেতে হবে না একদম জান্নাতের বিয়ের পর যাবে…

ইসরাত: কিন্তু?

ঈশান: কোনো কিন্তু না। যা বলেছি তাই শুনবে কজ ইসলামে স্বামীর কথা মানতে বলা হয়েছে।

ইসরাত কিছু বললো না আর চুপচাপ ওয়াশরুমে চলে গেলো….

ওয়াশরুম থেকে বের হতেই দেখলো….

চলবে…

বানান ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here