পবিত্র ভালোবাসা❣️পর্ব-২৭

0
1466

#পবিত্র_ভালোবাসা ❣️
#Writer_ইসরাত_জাহান_মাওয়া
#পর্ব_২৭

ওয়াশরুম থেকে বের হতেই দেখলো ঈশান গরম পানি নিয়ে বসে আছে

ইসরাত: এইসব কি

ঈশান: দেখতেই তো পাচ্ছো । শোনো বেশি কথা না বলে নিজের যত্ন নেও আর আমি আসছি

ইসরাত: কোথায় যাচ্ছেন?..

ঈশান: তোমার কি ইচ্ছা আমি এইখানে বসে থাকি আর তুমি আমার সামনে..

ইসরাত: এই না না কি বলছেন আপনি, আপনার মুখে তো দেখছি কিছু আটকায় না

ঈশান: আমি তো তোমার স্বামীই(চোখ টিপ দিয়ে)

ইসরাত: স্বামীর দায়িত্ব কি পালন করেন।

ঈশান: ওই আমি কিন্তু মজা করছি আর তুমি সিরিয়াসলি ভাবছো । আচ্ছা আমি আসছি তুমি তোমার কাজ করো

ইসরাত: হুম….

ঈশান চলে যায়….

অন্যদিকে….

অর্ণিল: জান্নাত আমি হইতো ভুল কিছু করে ফেলেছি তোমার অনুমতি ছাড়াই তোমার বাড়িতে বিয়ের কথা বলেছি তার জন্য আমি ক্ষমা চাচ্ছি প্লিজ ক্ষমা করে দিও। আর আমি তোমার পোষ্ট গুলো পড়ে বুঝতে পারছি জীবন মানে কি। দুনিয়া তো হলো পরীক্ষার হল আর তার রেজাল্ট হবে পরকালে। আমি তোমাকে সত্যিই খুব ভালোবাসি আজ ৪ বছর ধরে এই কথাটা মনে গোপন রেখেছি। তাই ভাবলাম তোমাকে বৈধ করেই ইসলামের দৃষ্টিতে নিজের করে নেই। (এই লেখাটা জান্নাতের ফোন সেন্ড করলো অর্নিল)

এইদিকে…

ওই ইসু পাখি তুই নাকি কলেজ যাবি না ভাইয়া বলেছে। আর আজ তুই সকালে উঠে নামাজ আর কুরআন তেলাওয়াত করলি না কেনো(রেগে)

ইসরাত: হুম। আল্লাহ তায়ালা আমাকে কিছুদিনের ছুটি দিয়েছে তাই(হাসি দিয়ে)

জান্নাত: ওহ আচ্ছা (ফোন হালকা ভেজে উঠলো) এই সিম কোম্পানির খেয়ে দেয়ে কোনো কাজ নাই সারাদিন মেসেজ দেওয়া লাগে। এদের কোন গর্দবে যে জব দেয় কে জানে। (মেসেজের দিকে তাকিয়ে তার চোখ কপালে উঠে গেলো) ইসু পাখিইইইইই

ইসরাত: আমি এইখানে এত জোড়ে ডাকতে হবে না

জান্নাত: এই দেখ অর্নিল ভাইয়া কি লিখছে….

ইসরাত লিখাটা পড়ে…

ইসরাত: মাশাআল্লাহ…. এইটাতো ভালো। দেখছিস অর্নিল ভাইয়া কতটা বদলে গেছে তুই আমাকে যেমন বলেছিস এখন তার উল্টো। এইটাই হলো #পবিত্র_ভালোবাসা আর আমার কি মনে হয় জানিস ?

জান্নাত: কি

ইসরাত: তোর ভালবাসা থেকে অর্নিল ভাইয়ার ভালোবাসার প্রভাব বেশি তাই হইতো আল্লাহ তায়ালা ওনার কথা শুনেছে আর মহান আল্লাহ তায়ালা যা চাইবে ভালোর জন্যই।

জান্নাত: হুম

ইসরাত: আমার মনে হয় তিয়াস ভাইয়ার প্রতি তোর ভালোবাসা না ভালোলাগা ছিলো

জান্নাত: কিভাবে বুঝলি?

ইসরাত: তুই যদি ওনাকে সত্যিই ভালোবাসতি তাহলে তোর চোখ থেকে এক ফোঁটা হলেও পানি আসতো যেদিন তুই জানলি তোর বিয়ে তিয়াস ভাইয়া না অর্নিল ভাইয়ার সাথে। ওইদিন আমি তোর চোখে হারানোর কোনো কষ্ট দেখি নি

জান্নাত: হুম তুই ঠিকই বলেছিস এইটা নিয়ে আমি ও গতকাল খুব ভাবছি আর অনেক চিন্তা করেছি পরে বুঝতে পেরেছি এইটা ভালোবাসা না এইটা ছিলো মহো….

ইসরাত: আল্লাহ তায়ালার দরবারে লাখ লাখ কোটি কোটি শুকরিয়া ওনি তোকে তোর মনের কথাটা বুঝতে সাহায্য করেছে।

জান্নাত: হুম হিহিহি উম্মাহ ইসু পাখি (গালে কিস করে)

ইসরাত: কি হলো এইটা

জান্নাত: তুই হলি আমার জিবনে এমন একজন ব্যাক্তি যার জন্য আমি আমাকে চিন্তে পেরেছি।

কি হচ্ছে এইখানে…

ইসরাত আর ঈশান তাকিয়ে দেখে ঈশান দাড়িয়ে আছে সাথে ট্রে তে গরম দুধ, ডিম আর কিছু ফল….

জান্নাত: ভাইয়া তুই কোনোদিন ও ঠিক হবি না

ইসরাত: কেনো কি হয়েছে?

জান্নাত: কি হয়েছে এখন বুঝবি

ঈশান: এইযে জাহান…

ইসরাত: আমায় ডাকছেন?

ঈশান: জাহান কার এইখানে😒

ইসরাত: আমারই তো

ঈশান: তাহলে আপনাকেই ডাকছি

ইসরাত: হুম বলেন?

ঈশান: এইগুলা সব খাবেন।

ইসরাত: আপনার কি আমায় পেটুক মনে হয়

ঈশান: বেশি কথা না বলে খান বলছি(ধমক দিয়ে)

ইসরাত: আমি খেতে পারবো না

ঈশান: আমার রাগ তুলবে না বলছি, যেহেতু বলছি খেতে তারমানে খাবে…

ইসরাত ঈশানের কথা শুনে ভয় পেয়ে যায় আর একটু একটু করে খেতে লাগলো….

কিছু খাবার পর…

ইসরাত: আমি আর পারবো না

ঈশান: আচ্ছা শুধু দুধ টুকু খাও আর খেতে হবে না

ইসরাত দুধ টুকু খেয়ে বললো….

আমি কতো ভালো মেয়ে দেখছেন বলতে না বলতেই খেয়ে ফেলেছি

জান্নাত আর ঈশান ইসরাতের মুখ দেখে হেসে দেয়…

ইসরাত: হাসার কি হলো

ঈশান হাসতে হাসতে ইসরাতের মুখে লেগে থাকা দুধ হাত দিয়ে মুছে বললো

তোমাকে একদম মিনি বিড়ালের মতো লাগছিলো (বলেই দুই ভাইবোন হাসতে লাগলো)

ইসরাত ওদের কথা শুনে মুখ গোমড়া করে বসে রইলো….

প্লিজ বেবি ট্রাস্ট করো আমি তোমাকে কোনো ধোঁকা দেয় নি আমি সত্যি তোমাকে খুব ভালোবাসি মিশু….

মিশু: তোমার ভালোবাসা তোমার মাথায় রাখো(কান্না করে)

তিয়াস: বেবি তুমি কান্না করছো যেনো?

মিশু: তো আমার কি এখন নাচা উচিত।

তিয়াস: হুম বুঝতে পেরেছি যে তুমি ঈশান কে লাভ করতে দেখো ও কিন্তু এখন ম্যারিড ওর কথা ভুলে যাও প্লিজ

মিশু: ঈশান আমি অর্নিল আর তুমি সেই কতো বছর ধরে বন্ধত্ব ওকে আমি ফাস্ট দেখাতে পছন্দ করতে শুরু করি।তাই তো তোমার সাথে মিশে তোমাদের দলে যোগ হই। কিছুদিন আগে কাটা হয়ে আসে মেরি আর এখন ওর স্ত্রী

তিয়াস: মিশু দেখো যা হবার হয়ে গেছে এখন তুমি আমার প্রস্তাব টা মেনে নাই প্লিজ

মিশু: ওই তুমি ফোন রাখো তো কখন থেকে ঘেনঘেন করে যাচ্ছো (বলেই ফোন কেটে দিলো)

বিকাল বেলা সবাই বিয়ে নিয়ে কথা বলছে যেহেতু তিনদিন পর বিয়ে…..

ঈশানের মা: যেহেতু বিয়েটা ঘোরুয়া ভাবেই হবে তাহলে আমাদের আত্মীয় আর ইসরাতের বাবা মা কেই তো আগামীকাল চলে আসতে হবে আমাদের বাসায়।

ঈশান: ডেড আমার বিয়ে টা হইতো লুকোচুরি ভাবে দিয়ে দিছো কিন্তু জান্নাত আমার একটা মাত্র বোন ওর বিয়েটা আমি ধুমধাম করে দিবো

জান্নাত: না আব্বু আমার বিয়েতে কোনো ধুমধাম করবে না

ঈশান: কেনো?

জান্নাত: বিয়ে আমাদের জীবনের একটি স্বাভাবিক ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কিন্তু বিয়ের ক্ষেত্রে আমাদের সমাজে বিভিন্ন প্রকার প্রথা ও রীতি প্রচলিত আছে যা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম এবং বিদ’আত। বিয়ের সময় গায়ে হলুদ, যৌতুক বা গান বাজনা করা ইত্যাদি হারাম তা আমরা সবাই জানি। এগুলো ছাড়াও আরো কিছু কুপ্রথা সমাজে প্রচলিত আছে। যে বিয়েতে কোনো ধুমধাম হবে না কেউ জানতে পারবে না সেই বিয়ে উত্তম তাই আমি চাই আমার বিয়ে ঘরুয়া ভাবে হোক।

ঈশান: আজকাল তো দেখছি আমার কথার দামেই নাই কারো কাছে। এইসব মূল মাথা হলো তো এই মেয়ে তাই না(ইসরাত কে দেখিয়ে) আচ্ছা যাও এখন যত পারো এই মেয়ে কে নিয়ে নাচানাচি করো জাস্ট ছয় মাস এর পরেই সব শেষ। তোমরা যেহেতু আমার কথা রাখো না আমি ও তোমাদের কোনো কথা রাখবো না বলেই বাহিরে চলে গেলো….

ওনাকে ঠিক বুঝতে পারছি না এই ভালো আচরণ করে এই আবার ভিলেনের মতো। ওনার মন মনে হচ্ছে এখন আকাশের রঙের মতো এই নীল এই সাদা এই মেঘলা এই আবার লালচে একটা মানুষ কিভাবে এত মন পাল্টায় কু ভাবে (মনে মনে বলছে ইসরাত)

কবে যাবে ঈশানের বাড়িতে…..

জান্নাতের বিয়ের দিন

আহ্ বিয়েতে দেখছি ডবল মজা হবে

অবশ্যই

চলবে….

বানান ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

(আরেকটা ভিলেন এসে হাজির কি হবে এখন আবার 😦 মিশু তো ইসরাতের জন্মগত ভাবে শত্রু সবাই তো জানেন আর কি হবে বিয়েতে 🤯 কি চলে এইসব 🤔 সব কিছু জানতে হলে থাকতে হবে #পবিত্র_ভালোবাসার শেষ পার্ট পর্যন্ত 😁)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here