পবিত্র ভালোবাসা❣️পর্ব-২৯

0
1611

#পবিত্র_ভালোবাসা ❣️
#Writer_ইসরাত_জাহান_মাওয়া
#পর্ব_২৯

ভাই তুমি আমার একটি কাজ করবে আমি যখন মৃত্যু বরণ করবো আর আমাকে গোসল করার সময় যখন কবর দেওয়া হবে তখন কবরের উপর লিখে দিবে..

“পার্থিব বা দৈনন্দিনের জীবনে কি কোনো কাজে আসতে পারে।নামাজ ব্যাতিত পৃথিবীর সফলতা আখিরাতের কোনো কাজে আসবে না। কারণ আল্লাহ তায়ালা ইহকাল এবং পরকালে পৃথিবীর সকল কাজের হিসাব নিবেন। যদি ভালো কর্ম করে থাকেন তাহলে ফল পাবেন।আর যদি খারাপ কর্ম করে থাকেন তাহলে খারাপ ফল পাবেন।”

আর এই কথা গুলো লিখে দেওয়ার পর ,পরপর তিনদিন আমার কবরের কাছে যাবে,,,,,

কিছুদিন পর ওই ঈমানদার ব্যাক্তির মৃত্যু হয়। ওনার মৃত্যুর পর ব্যাবসায়ী ভাই প্রতিদিন তার কবরের পাশে গেলেন। এবং সর্ব শেষ দিনে তিনি যখন তার ভাইয়ের কবরের কাছ থেকে চলে আসতে লাগলেন,,,,,তখন জোড়ে একটু আওয়াজ শুনতে পেলেন, এবং সেই আওয়াজ শুনে তিনি ভয়ে আটকে যান আর সেইখান থেকে দৌড়ে চলে আসেন। ঘরে পৌঁছানোর পর তিনি যখন রাতে ঘুমিয়েছিলেন তখন তিনি স্বপ্নে দেখলেন যে, তখন তার ভাই বলছে আমি মানুষকে দান করতাম না তার কারণে আমি কবরে শাস্তি ভোগ করছি এই স্বপ্ন দেখার পর ওই ব্যাক্তি তার সমস্ত সম্পদ বিলিয়ে দিয়ে সব আরাম আয়েস ত্যাগ করে দিয়ে আল্লাহ তায়ালার ইবাদতে নিজেকে নিয়োজিত করলেন আর মুসাফিরদের সাথে চলতে লাগলেন। তিনি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় সফর করে বেড়াতেন। আল্লাহ তায়ালার পথে ইবাদত করতে করতে যখন তিনি তার শেষ নিঃশ্বাস গুনছিলেন তখন তার ভাই কে খবর দেওয়া হলো , তার ভাই আসার পর সে তার ভাই কে শুধু বললো,আমার একটি শখ তুমি পূরণ করবে যখন আমি মৃত্যু বরণ করবো আর যখন আমাকে গোসল করিয়ে কবর দেওয়া হবে তখন আমার কবরের উপর এই কথা টুকু লিখে দিবে,,,

প্রকৃতি পক্ষে আসল মানুষ তো সে যে চিন্তা করে যেকোনো সময় তার মৃত্যু হয়ে যেতে পারে যেকোনো সময় তার ক্ষণিকের বসবাসের স্থান এই পৃথিবীর মায়া ছেরে তার আখিরাতের যাত্রার সাথে তার কবরে শাহিত হতে হবে।

আর আমার মৃত্যুর তিনদিন পর্যন্ত তুমি আমার কবরে সাক্ষাৎ করতে যাবে,

ভাইয়ের মৃত্যুর পর তার কথা মতো তার ভাই তিনদিন তার কবরে গেলো। এবং শেষদিন তার কবরে একটি শব্দ শুনতে পেলো। সেই শব্দ শোনার পর তিনি ভয়ে সেইখান থেকে চলে গেলেন।

যখন তিনি রাতে ঘুমালেন আর তখন স্বপ্ন দেখলেন তার ভাই তাকে বলছে,
এই পৃথিবীর মায়া বেশিদিন করো না ভাইয়ের এই কথা শুনে সে স্বপ্ন থেকে জেগে উঠলো, সে তার সন্তানদের সকল সম্পত্তি বণ্টন করে আল্লাহর কাছে নিজের জীবন সমর্থন করে দিয়ে তার ধ্যানে মশগুল হয়ে গেলেন।

এইভাবে কিছুদিন কেটে যাবার পর,,,,,
যখন তার জিবনে প্রদীব নিবে যাবার পথে তখন তিনি তার ছেলেদের ডাকলেন,,,

আমি তিনি তার ছেলেদের বললো,,,

আমি আমার দায়িত্ব পালন করছি বর্তমানে আমার কাছে আর কিছুই নেই যা তোমাদের দিতে পারবো।বাবা হিসেবে আমার শেষ ইচ্ছা,তোমরা আমার কবরে লিখে দিবে ,,,

ভয় হয় না কেনো সেইসব মানুষদের যারা বুঝতে চায় না কিছুদিন পরেই তার যৌবন বৃদ্ধে পরিণীত হবে। শরীলের সকল সুন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে এবং চামড়া কস্কে যাবে।

বাবার কথা মতো ওরা ওদের বাবার কবরে এইটা লিখে দিলো।

এই গল্প দ্বারা বুঝানো হয়েছে, পৃথিবীতে তুমি তোমার কাজ কর্ম সেরে ফেলো ইবাদত করো দান করো কখন যে তোমার বা আমাদের সবার জীবন শেষ হয়ে যাবে আমরা বলতেও পারবো না। তাই নামাজ কুরআন আর অন্যান্য ইবাদতের পাশাপাশি দান করা উত্তম। কারণ আমরা হইতো ভালো আছি কিন্তু আমাদের আসে পাশে থাকা অনেক মানুষই আছে যে তারা ভালো নেই তাই ওদের সাহায্য করা আমাদের দায়িত্ব।

জান্নাত: ঠিক বলছিস ইসু পাখি।

মিশু: সত্যিই ইসরাত তোমাকে যদি দেখি ততো অবাক হই। আর ঠিক কথাই বলেছো শুধু নামাজ না সাথে আমাদের গরীব মানুষদের দান করা উচিত।

মিশু ও খুব সহজে ইসরাতের সাথে মিশে গেলো…..

রাতে….

ওই শুনেন আপনি আমাদের বিয়ের কথা নিয়ে পাপার সাথে কথা বলবেন।

তিয়াস: আমি কি ভুল শুনছি নাকি স্বপ্ন দেখছি

মিশু: স্বপ্ন না সত্যি আর শুনেন আমি আর কথা বলবো না একদম বিয়ের পর কথা বলবো সো যত তাড়াতাড়ি পারেন কথা বলেন। আল্লাহ হাফেজ (বলেই ফোন কেটে দিলো)

কি মেয়েরে বাবা কথা শেষ না হতেই রেখে দিলো। কিন্তু আজ এত ভালো কিভাবে হলো। (ভাবতে লাগলো)

এইভাবে চলতে চলতে জান্নাতের বিয়ের তারিখ চলে আসলো আর এই মাঝে মেরির সাথে ঈশানের আর কোনো কথা হয় নি।

বিয়ের দিন…..

ঈশান: ওই তুমি আজ কি পড়বে?

ইসরাত: শাড়ি তো পড়বো আর আমরা মেয়েরা মিলে ঠিক করেছি কি কি করবো আজ।

ঈশান: তোমার জন্য এই শাড়িটা এনেছি আজ এইটা পড়বে।

ইসরাত: কিন্তু…

ঈশান: কোনো কিন্তু না।

ইসরাত শাড়িটা খুলে দেখলো কলা পাতা রঙের একটা শাড়ি আর কিছু কসমেটিক।

ইসরাত তাই শাড়ি পড়ে রেডি হয়ে চলে গেলো জান্নাতের সাথে….

মিশু: মাশাআল্লাহ ইসরাত খুব ভালো লাগছে তোমাকে বাই দা ওয়ে ঈশান দিয়েছে বুঝি(মুচকি হেসে).

ইসরাত: হুম।

জান্নাতের বিয়ের সব কাজ শেষ এখন বিদায়ের পালা…

জান্নাত আর ইসরাত তো কান্না করেই যাচ্ছে যাকে বলে কোনো সাগর বানিয়ে ফেলা।

ঈশান: ওই এইভাবে কান্নার কি আছে(নিজেকে কন্ট্রোল করে)

জান্নাত: ভাইয়া(কান্না করে)

ঈশান আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না সেও কান্না করে দিলো,,,, নিজের একটা মাত্র বোন কলিজার টুকরো কত খুনসুটি কত ঝগড়া করেছে দুই ভাই বোন তো একে উপর কে ধরে কান্না করেই যাচ্ছে ঠিক এমন সময় কেউ বলে উঠলো….

বাহ ভালোই তো এখন কে বোন জড়িয়ে কান্না করা হচ্ছে আর এইদিকে আমার এত বড় সর্বনাশ করে।

রুমের ভিতর ইসরাতের আব্বু আম্মু ঈশানের আম্মু আব্বু আর কিছু মহিলা আত্মীয় স্বজন ছিলো সবাই এই কথাটা শুনে পিছনে তাকিয়ে মেরি কে দেখতে পেলো।

ঈশান তো রীতিমত চমকে গেলো মেরি দেখে….

মেরির দৌড়ে এসে সবার সামনে ঈশান কে জড়িয়ে ধরলো…..

চলবে….

বানান ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here