#পাগল_প্রেমিকা
#sharmin_akter_borsha
#পর্ব_১৪
________
বৃষ্টি তোকে ছাঁদ থেকে কেনো ফেলে দিবে?
রিমা মুখ ফসকে বলেই দিচ্ছিল কাব্য কে সবটা রিমা কাব্যর কথা শুনে অন্য মনস্ক হয়ে বলল.
ভাইয়া ওই বৃষ্টি ওর হ… আর কিছু বলার আগেই বৃষ্টি রিমার পিঠে ঘুসি দিয়ে বলে। একদম চুপ কর তুই আমি বলছি কথাটা বলে বর্ষা কাব্যর দিকে তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল, আসলে ভাইয়া আমাদের সাথে রাগ করে ছাঁদে চলে গেছে আমরা দু’জনে দুজনের হাত ধরে ছাদেই যাচ্ছিলাম। আর তুই সামনে এসে পরলি এখন সামনে থেকে সর..! কথাটা বলেই সাইড কেটে রিমার হাত ধরে টানতে টানতে বর্ষা চলে গেলো। ভ্রু কুঁচকে সন্দেহের চোখে কাব্য বর্ষার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। বর্ষা রিমা যেতেই কাব্য বৃষ্টির আম্মুর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে বৃষ্টি অদ্ভুত আচরণ করছে কেনো কি হয়েছে? হুদ্দাই প্রশ্ন করে আর বৃষ্টির আম্মু গজগজ করে সব বলে দেয় ওর যে হাতে ব্যান্ডেজ কেটে গেছে সেটাও বলে কিন্তু রিমার উপরে পরায় বৃষ্টি হাত কেটেছে কথাটা কাব্যর হজম হচ্ছিল না।
এভাবে গায়ের উপর পরলেই হাত কাটে না ছুড়ি তে কি অত ধার ছিলো যে হাত কেটে যাবে কি ভাবছে কাব্য, কাব্য কে অন্য মনস্ক দেখে বৃষ্টির আম্মু ভ্রু নাচিয়ে কাব্যর দিকে প্রশ্ন ছু্ড়ে মারে কি ভাবছিস কাব্য?
কাব্যর চাচির ধ্যান ভাঙে আর বলে.. কিছু ভাবছি না বড় আম্মু আসছি আমি..! বলেই হনহনিয়ে বেরিয়ে গেলো। সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠছে৷ ওইদিকে রিমা বর্ষা বৃষ্টি কে পেছন থেকে জরিয়ে ধরেছে.!
কাব্য ছাঁদে এসে বৃষ্টি কে জিজ্ঞেস করে হাত কেটেছে কিভাবে, বৃষ্টি জাস্ট ইগনোর করে চলে গেলো বর্ষা রিমাও পেছন পেছন চলে গেলো।
কারণ এখানে থাকলেই কাব্যর জেরা করা শুরু হতো!
এদিকে সারাদিন সবাইকে বলতে বলতে বর্ষা রিমা শান্ত মানে (ক্লান্ত) হয়ে গেছে!
এদিকে এক দিন না যেতেই বৃষ্টি ওর অন্য আইডি দিয়ে রিকুয়েষ্ট পাঠিয়ে দেয় রিমনকে আর বর্ষা রিমাকে বলে না। কয়েকটা এসএমএস দিয়ে রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট করতে বলে। সেও এক্সেপ্ট করে তারপর কয়েকটা বাজে কথা বলে যা এখানে লিখা আমার পক্ষে অন্তত সম্ভব না।
তারপর সেই আগের মতো পায়ে পড়ে বৃষ্টি রিমন এর সাথে কথা বলে। রিমন যথাসম্ভব দুরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করে বৃষ্টির থেকে। আগের থেকে অনেক পরিবর্তন রিমনের মধ্যে বৃষ্টি লক্ষ্য করে কিন্তু কিছুই করার নেই তত দিনে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল বৃষ্টি রিমন এর প্রতি দূর্বল হয়ে গেছে রিমন ছাড়া বাঁচবে না এমন টাইপের ভালোবাসায় পরিনত হয়েছিল বৃষ্টির ভালোবাসা যে বৃষ্টি আগে হাসি খুশি থাকতো পুরো বাড়ি হাসি ঠাট্টায় মাতিয়ে রাখতো সে একটা ছেলেকে অন্ধের মতো ভালোবেসে ফুলের কলির মতো চুপসে গেলো। বৃষ্টি চাইলেও রিমন কে ভুলতে পারছিল না বারবার নিজের মনের কাছে হেরে গিয়ে রিমনের কাছে ফিরে যায়। রিমনের অবশ্য আগে বৃষ্টি কে ভালো লাগতো ওর সাথে কথা বলার আগ্রহ ছিলো কিন্তু যখন রিমন বুঝতে পারে বৃষ্টি ওর প্রতি দূর্বল তখন থেকেই শুরু হয় রিমনের অবহেলা বৃষ্টির প্রতি যার ফলে বৃষ্টি অন্তরে অন্তরে গুমড়ে মরছিলো। বৃষ্টি আসতে আসতে সবার থেকে নিজেকে আলাদা করে নিলো একলা থাকতে শুরু করল হাসা বন্ধ করে দিলো। কারো সাথে মিশতো না সারাদিন শুধু ফোন হাতে নিয়ে রুমের এক কোনায় বসে থাকতো। বর্ষা রিমার ব্যাপারটা স্বাভাবিক লাগেনি তাই ওরা দু’জন ঠিক করে সব কিছু কাব্য নাহিদ অপূর্ব কে বলবে। যেমন ভাবনা তেমনই কাজ ওরা দু’জন কাব্যর রুমে যায় কাব্য তখন একা ছিলো না ওর সাথে নাহিদ আর অপূর্ব ও ছিলো, বর্ষা রিমা দু’জন কে এক সাথে দেখে নাহিদ অপূর্ব ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল।
” তোরা দু’জন একসাথে এখন এই রুমে কেন যা তোদের রুমে যা ”
নাহিদ অপূর্বর কথা শুনে বর্ষা মুখ ফুলিয়ে চলে যেতে নিলে রিমা বর্ষার হাত ধরে নেয়। ওদের দু’জনকে খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কাব্য ভ্রু নাচিয়ে রিমার দিকে প্রশ্ন ছুড়ে মারে।
” তোরা দু’জন কি কিছু বলবি নাকি শুধু শুধু চেহারা দেখাতে আসছিস? ”
কাব্যর কথা শুনে রিমা রাগে দাঁতে দাঁত চেপে বলে।
“চেহারা দেখানোর মানুষের অভাব নাই তোদের কে দেখানোর কোনো ইচ্ছাও নাই একটা ইমপোর্টেন্ট কথা ছিলো সেটাই বলতে আসছি..”
রিমার কথা শুনে অপূর্ব বিছানার উপর আরাম করে বসে হাতে চুটকি বাজিয়ে বলল।
“তা এতো ইমপোর্টেন্ট কথা তোরা দু’জন একা বলতে আসছিস তোদের দলের লিডার আফা কোই তাকে তেমন দেখছি ও কয়েকদিন যাবৎ ঘটনা কি.”
অপূর্বর কথা শুনে বর্ষা চোখ বড়বড় করে ওদের তিনজনের দিকে তাকায়। বর্ষার তাকানো দেখে ওদের আর বুঝতে বাকি থাকে না সত্যিই ঘটনা জটিল হয়তো জরুরি কথাই হবে আর নয়তো ডাইনি গুলা ওদের কাছে আসতো না। নাহিদ বর্ষার দিকে তাকিয়ে বলে।
“যা বলবি তারাতাড়ি বল আর বলে বিদায় হো আমাদের অনেক কাজ আছে”
নাহিদের কথায় ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে রিমা বল।
“জানি জানি কি কাজ করিস তোরা তিনজনে একসাথে”
রিমার কথায় অপূর্ব চোখ ছোটো-ছোটো করে বলল।
“কি জানিস তুই আমরা কি করি..”
অপূর্বর কথায় বিরক্ত হয়ে কাব্য ওদের সবাইকে চুপ হতে বলল আর বর্ষা রিমাকে রুমের মধ্যে আসতে বলল আর কি বলার জন্য আসছে সেটা বলতে বলল।
বর্ষা কাব্যর কথা শুনে রুমে ঢুকে দরজা আটকে দেয়। দরজা আটকাতে দেখে ওদের তিন জনের চোখ কপালে উঠে যায় আর ভ্রু কুঁচকে ওদের দু’জনের দিকে তাকিয়ে থাকে। বর্ষা রিমা হেঁটে দু’জনে সোফায় বসে ওদের ১০মিনিট ধরে চুপ করে বসে থাকতে দেখে কাব্য একটা ধমক দিলো।
কাব্যর কাছে ধমক খেয়ে রিমা ভয়ে মিশ্রিত কণ্ঠে বর্ষাকে বলল..
“তুই বল না মানে শুরু কর”
বর্ষা একবার রিমার দিকে তাকালো আরেকবার কাব্য, নাহিদ, অপূর্বর দিকে তাকিয়ে জিহ্বা বের করে ঠোঁট ভিজিয়ে নিলো তারপর এক দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলতে শুরু করল সব শুরু থেকে এই পর্যন্ত যা যা হয়েছে কি কি করেছে বৃষ্টি সব কিছু (নেগেটিভ কথা বাধে সব)
বর্ষার কথা শেষ হলে কাব্য নাহিদ অপূর্ব তিনজনেই বর্ষা রিমাকে তিনটা জোরে ধমক দেয় ধমক খেয়ে বর্ষার চোখে পানি টলমল করতে লাগল। আর রিমা তো কেঁদেই দিলো। সাথে অপূর্ব তো বর্ষা রিমা কে মারার প্লেম করে বিছানা থেকেও নেমেছিল কাব্য নাহিদ অপূর্ব কে মাথা দিয়ে ইশারা করতেই পাশে ডেসিনটেবিলের সামনে থাকা টি টেবিল টায় লাথি মেরে বারান্দায় চলে যায়। এই সবের কারণ.. কাব্য নাহিদ অপূর্ব যতই বৃষ্টি বর্ষা রিমার পেছনে লেগে থাকুক না কেনো যতই জ্বালাক না কেনো বর্ষা রিমা বৃষ্টি ওদের তিনজনের কলিজা অনেক আদরের ছোট বোন আর এত কিছু হয়েগেছে ওরা এতদিন ওদের কিছুই বলেনি আর আজ এসে বলছে তাই অপূর্ব একটু বেশিই রেগে গেছে নাহিদ দুইচোখ ফেলফেল করে তাকিয়ে আছে বর্ষা রিমার দিকে আর ওরা দু’জনেই দুই হাত দিয়ে ওড়না শক্ত করে মুঠি বন্ধ করে ধরে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে ওই হাল্কা শীতেও বর্ষা রিমার ঘাম জড়ছে। কাব্য সিঙ্গেল সোফায় বসে ছিলো দুই পা ছড়িয়ে দুি হাটুর উপর দুই হাতের কনুই রেখে দুই হাতের প্রত্যেক টি আঙ্গুল এক একটা আঙ্গুলের ভাজে ঢুকিয়ে হাত মুঠি বন্ধ করে থুতনির সাথে মিশিয়ে রেখে চোখ দু’টো ছোটো-ছোটো করে ভ্রু কুঁচকে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে কিছু একটা ভাবছে যে কেউ দেখেই বলে দেবে। কিছুক্ষণ পর কাব্য মাথা তুলে বর্ষা রিমার দিকে তাকালো আর বলল।
“আমরা ওইদিন পিকনিক থেকে ফিরে আসার পর আমি সব কিছুই শুনেছি মাহিম আর নীরভের কাছে তসি তোদের ওইদিন বারবার জিজ্ঞেস করছিলাম হাত কিভাবে কাটলো তোরা তো বললি না যাই হোক এখনো দেরি হয়নি আমরা সবাই মিলে সাপোর্ট করলে নিশ্চয়ই বৃষ্টি আগের মতো হয়ে যাবে আর সারাদিন মোবাইল নিয়ে বসে থাকে যখন তোরা দু’জন নজর রাখ দেখ ও আবার ওই ছেলের সাথে কথা বলছে বা যোগাযোগ করেছে নাকি যোগাযোগ করলে আমাকে জানাবি বুঝেছিস তারপর আমরা কিছু একটা করবো এখন যা তোরা। ”
কাব্য কথা শেষ হলে বর্ষা রিমা মাথা নাড়িয়ে সোফা থেকে উঠে দরজার সামনে আসে দরজা খুলতে যাবে তখনই পেছন থেকে কাব্য আবারও ডাক দেয় রিমা, বর্ষা পেছনে ঘুরে তাকাতেই কাব্য বলল..
চলবে….?