পার্থক্য
১৩ পর্ব।
#রিফাত_হোসেন।
কয়েকটা ম্যাসেজ পরতেই রিফাতের মাথা চক্কর দিতে শুরু করলো। অতঃপর ধপাস করে বিছানায় বসে পড়লো। পাশ থেকে আরিয়ান বলল – ‘কী রে কী হলো তোর! এভাবে বসে পড়লি কেন?’
রিফাত একটা ঘোরের মধ্যে থেকে বলল – ‘আগে একটু পানি দে।
রানা টেবিলের উপর থেকে পনির গ্লাস নিয়ে রিফাতের হাতে দিলো। পানি পেয়ে রিফাত আবার ফোনের দিকে তাকালো।
আরিয়ান বলল – ‘এবার বল কী হয়েছে?’
রিফাত কোন কথা না বলে ফোনটা আরিয়ানের হাতে দিলো। আরিয়ান ফোন হাতে নিয়ে ঘাটাঘাটি করলো। তারপর চোখ বড় ও ফোনের দিকে তাকিয়ে রইলো । সবাই মনে কৌতূহল নিয়ে বসে আছে। রিফাত আর আরিয়ান ছাড়া কেউ জানেনা, এই ফোনে কী আছে৷
হঠাৎ আরিয়ান বলে উঠলো – ‘এটা মেয়ে নাকি ধানিলঙ্কা।
পাশ থেকে রাফি বলল – ‘কী আছে ফোনে?’ আর কোন মেয়ে ধানিলঙ্কা?’
– ‘কাল যে মেয়ে দু’টোর সাথে নদীর পাড়ে দেখা হলো, তাদের মধ্যে তারিন নামে মেয়েটা।’
– ‘তিনি কী এমন করলো যে ধানিলঙ্কা বলছিস?’
প্রথমত একসাথে ৫০বার ফোন করেছে। যখন রিফাত ফোন ধরেনি, তারপর এক সাথে অনেকগুলো ম্যাসেজ দিছে। আর ম্যাসেজ গুলোও হেব্বি সাংঘাতিক।
– ‘কী লেখা আছে ম্যাসেজে?’
– ‘প্রথম ম্যাসেজ ছিল “এই যে মিঃ লুচ্চা, এত্তবার করে ফোন দিলাম ধরছেন না কেন?”
– “আমি তারিন, এটা আমার বাবার মোবাইল নম্বর ”
– “এবার যদি ফোন না ধরেন তাইলে আপনার নাক আর নাকের জায়গায় থাকবে না।’
– ” আমার কিন্তু খুব রাগ হচ্ছে এবার।
– “কুত্তা, বিড়াল, শয়তান ফোন ধরেন তাড়াতাড়ি।”
এগুলো বলেই আরিয়াম থেমে গেল। রানা জিজ্ঞেস করলো – ‘থেমে গেলি কেন?’
– ‘এর পরেরটা আরো ভয়ংকর।’
– ‘আগে বল তারপর দেখি।’
– “আপনাকে একবার সামনে পেলে হা, পা সব ভেঙে দিবো। তারপর আপনার মাথা দু’ই ভাগ করে মগজধোলাই করবো। আর সেই মগজ ভাজি করে আপনার সাথে প্যাকিং করে ঢাকা পাঠিয়ে দিবো।
রাফি – ‘থাম ভাই থাম, আর বলতে হবে না। খুব ভালো করেই বুঝতে পারছি এর পরের ম্যাসেজগুলো কী হতে পারে।
আরিয়ান রিফাত কে একটু মজা করে বলল – ‘রিফাত তুই এটাকে হ্যান্ডেল করবি কীভাবে?’
– ‘জানিনা। কিন্তু এখন যদি আমি এই নম্বরে ফোন না দেই। বিকেলে আমার হাত-পা কিচ্ছু থাকবে না।
আরিনানের হাত থেকে ফোন নিয়ে রিফাত বারান্দায় চলে এলো। তারপর এই নম্বরে আবার ফোন দিলো। প্রথমবার ফোন দেওয়ার সাথে সাথেই রিসিভ করে ফেললো। রিফাত হাসি মুখে “হ্যালো” বলবে, কিন্তু তার আগেই ওপাশ থেকে শুরু হয়ে গেলো। রিফাত কিছু বলার সাহস পাচ্ছেনা। তাই চুপ করেই তারিনের দেওয়া উপহারগুলো গ্রহণ করে নিচ্ছে।
অনেক গালিগালাজ করার পর তারিন একটু শান্ত হলো। রিফাত বড় বড় ঢোক গিলছে আর মনে মনে বলছে – ‘এ আমি কাকে
ভালো বাসলাম, ইনি তো আমাকে দু’দিনেই শেষ করে ফেলবে।’
তারিন একটু শান্ত হয়ে বলল – ‘এখন চুপ করে আছেন কেন?’
– ‘ভাবছি।’
– ‘কী ভাবছেন?’
– ‘আশিক এতদিন আপনাকে কীভাবে সহ্য করেছে।’
– ‘ভালো করে বলে দিচ্ছি ওই পশুটার নাম আমার সামনে উচ্চারণ ও করবেন না।’
– ‘আবার রেগে যাচ্ছেন কেন, আমি তো এমনি মজা করছিলাম।’
– ‘মজা করেন আর যাই করেন। ওর নাম আর বলবেন না।’
– ‘আচ্ছা ঠিক আছে। আর বলবো না।’
– ‘হু, গুড।
– ‘কিন্ত এত সকালে হঠাৎ আপনি ফোন দিলেন যে।
– ‘এমনি একা একা ভালো লাগছিলো না। তাই ভাবলাম আপনার সাথে একটু গল্প করি। কিন্তু আপনি তো ফোনটাই ধরলেন না।’
– ‘আসলে ফোনটা রেখে বাহিরে হাঁটতে বের হইছিলাম।’
– ‘আপনার আবার হাঁটার অভ্যাস আছে নাকি?’
– ‘হ্যাঁ, তবে এর পিছনে উদ্দেশ্য আছে?
তারিন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো – ‘কী উদ্দেশ্য?’
– ‘সেটা এখন বলবো না, বিয়ের পর দেখতে পারবেন।’
– ‘মানে।’
– ‘না, কিছুনা।’
তারিন কিছুটা অনুমান করতে পেরেছে রিফাত কী বলতে চাচ্ছে। তারিনের ঠোঁটের কোণে হাসি এসে গেল। কিন্তু সেই হাসির কারণ তারিনের অজানা। তাহলে কী তারিন ও চায় রিফাত যা বলছে সেটা সত্যি হোক। রিফাতের কথায় তারিনের ভাবনার ছেদ পড়লো।
– ‘কী হলো চুপ হয়ে গেলেন কেন?’
– ‘না কিছুনা, বাবা ডাকছে এখন রাখি আবার পরে ফোন দিবো।’
– ‘আচ্ছা ঠিক আছে।’
ফোন কেটে দিয়ে তারিন আস্তে আস্তে আফজাল সাহেবের ঘরে গেল। তিনি তখন বাহিরে ছিলো। তারিন চুপিচুপি টেবিলের উপর মোবাইল টা রেখেই দৌড়ে আবার নিজের ঘরে চলে এলো।
২৪.
সবাই মিলে গল্প করছিল, তখন আরিফ সাহেব ঘরে এসে বলল – ‘আপনারা সবাই উঠে পড়েছেন।’
আরিয়ান বলল – ‘হ্যাঁ, অনেকক্ষন আগেই উঠেছি।’
– ‘তাহলে সবাই রেডি হয়ে নিচে আসুন। খাবার টেবিলে বাবা ডাকছেন।’
– ‘ওহ্, আচ্ছা আমরা আসছি।’
আরিফ সাহেব নিচে চলে গেল। সবাই ফ্রেশ হয়ে নিচে নামলো ।
চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে রিফাত এখনও কথা বলেননি। কারণ তিনি বাড়িতে ছিলেন না।
আরিফ সাহেব সবাইকে টেবিলে বসতে বলল। রিফাত চেয়ারম্যান সাহেব কে সালাম দিলো। টেবিলে বসতে বসতে চেয়ারম্যান সাহেবের দিকে ভালো করে একবার তাকালো। রিফাত মনে মনে ভাবছে লোকটা একটু শান্ত স্বভাবের।
হঠাৎ চেয়ারম্যান সাহেব বলল – ‘ সবাই কেমন আছো।’
আরিয়ান একটু হাসি দিয়ে বলল – ‘ আলহামদুলিল্লাহ, আমরা সবাই ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?’
– ‘আমিও ভালো আছি।
এর পর তিনি রিফাত কে উদ্দেশ্য করে বলল – ‘তোমার এখানে আসতে কোন অসুবিধা হয়নি তো।’
– ‘না, কোন অসুবিধা হয়নি।’
– ‘আসলে এখানে কিছু সমস্যা হওয়ার কারণে গানের পোগ্রামের তারিখটা পিছিয়ে দিয়েছি।’
– ‘হ্যাঁ, ওরা বলেছে কালকে।’
– ‘তোমাদের খুব সমস্যায় ফেলেছি, তাই না।’
– ‘না, আমাদের কোন সমস্যা হয়নি। তাছাড়া অনেকদিন ধরে কোথায় ঘুরতে যাওয়া হয়না। এই সু্যোগে তাও একটু ঘুরা হয়ে যাবে আমাদের।
চেয়ারম্যান সাহেব ও সবাই একসাথে হেসে দিলেন। তারপর সবাই খেতে শুরু করলো। খাওয়ার সময় কিছু কথা হলো সবার মাঝে। খাওয়া শেষ করে সবাই ঘরে চলে এলো। একটু রেস্ট নিয়ে কিছুক্ষন গান প্র্যাক্টিজ করলো।
দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করে সবাই মিলে ঘুম দিলো।
২৫.
তিশা বাড়িতে এসে মা কে বলল আজও তারিনদের বাড়িতে থাকবে। তিশার মা ও না করেননি। কারণ তিনি তারিনের বিপদের কথাটা জানে। আর এটাও জানে এখন তারিনের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিশা কে প্রয়োজন। তাই তিনি তিশা কে যেতে দিলেন। হাতের কিছু কাজ সেরে তিশা তাড়াতাড়ি করে তারিনদের বাড়িতে যেতে শুরু করলো। রাস্তায় এসে ভয়ে ভয়ে হাঁটতে লাগলো। আর ভাবছে তখন আরিফ আর রিফাত ভাইয়া ছিলো বলে বাবা কিছু বলেননি। না জানি বাড়িতে যেয়ে আমাকে কী করবে। তার থেকে ভালো দু’দিন তারিনের বাড়িতে থেকে যাবো। তিশা তারিনদের বাড়িতে গিয়ে আবার দু’জনে আড্ডায় মেতে উঠলো।
তিশা তারিন কে বলল – ‘না জানি। বাবা আমাকে সামনে পেলে কী করবে?’
তারিন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো – ‘কেন কী হয়েছে আবার?’
– ‘সকালে যখন এখান থেকে আমাদের বাড়িতে যাচ্ছিলাম। রাস্তায় আরিফ আর রিফাত ভাইয়া দাঁড়িয়ে ছিলো। আরিফ কে আমিই আসতে বলেছিলাম। তবে ওই নদীর পাড়ে না পুকুর পাড়ে। কিন্তু সে আর রিফাত ভাইয়া নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে ছিলো।
ঠিক সেই সময় বাবা হাটে যাচ্ছিলো।
তারিন বেশ কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞেস করলো – ‘তারপর কী বলল।’
– ‘কী আর বলবে, গম্ভীরমুখে বলল “তোমরা বাড়িতে যাও আমি চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে কথা বলবো”
তিশার কথা শুনে তারিন হাসতে শুরু করলো।
তারিনের হাসি দেখে তিশা তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠলো। তারপর বলল – ‘একদম হাসবি না। এদিকে টেনশনে আমি মরে যাচ্ছি আর তুই হাসছিস।’
– ‘আরে এত টেনশনে নিস না। দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে।’
– ‘কী ঠিক হয়ে যাবে?’
– ‘কাকা তোর আর আরিফ ভাইয়ার বিয়ের কথা বলতেই চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে কথা বলতে যাবে।’
নিজের বিয়ের কথা শুনে যে কেউ লজ্জা পায়। তিশা ও তার ব্যতিক্রম নিয়।
(লেখক কখনও নিজের বিয়ে কথা শুনতে বা বলতে লজ্জা পায় না। কারণ লেখক “বৌ পাগল” কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো, লেখকের বিয়ের বয়স হয়নি এখনও)
তিশার মুখে কিছুটা হাসি ফিরে আসলেও চেয়ারম্যান সাহেবের কথা ভেবে আবার মন খারাপ হয়ে গেল।
তারিন জিজ্ঞেস করলো – ‘কী হলো আবার।’
– ‘ আরিফের বাবা যদি মেনে না নেয়।’
– ‘মেনে নেবে না কেন? তোদের কী কিছু কম আছে নাকি।’
– ‘তবুও তিনি এই গ্রামের চেয়ারম্যান।’
– ‘আমার মনে হয় না তিনি এইরকম কিছু করবেন। কারণ আমরা সবাই জানি, তিনি অত্যন্ত ভালো একজন মানুষ।’
– ‘হু,।
– ‘এইসব ভেবে আর মন খারাপ করবি না।’
– ‘ঠিক আছে।’
তারিন হাসতে হাসতে বলল – ‘আজ উনাকে ইচ্ছে মতো ধোলাই করছি।’
– ‘কাকে?’
– ‘কাকে আবার মিঃ লুচ্চা কে।’.
তিশা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো – ‘কেন তুই আবার কী করেছিস।’
– ‘সকালে তুই যাওয়ার পর আমি উনাকে ফোন দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই আমি অনেকেগুলো ম্যাসেজ দিয়েছি। তার কিছুক্ষন পর তিনি নিজেই আমাকে ফোন দিয়েছি। আর আমি তাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ভিতরে যত রাগ ছিলো তার উপর ঢালছি।’
তারিনের কথা শুনে তিশা হেসে উঠলো। দু’জনে আবারও গল্প শুরু করে দিলো। পাশের ঘর থেকে আমেনা বেগম বলছে দু’জনে একসাথে হলে যেন আর গল্পের শেষ হয়না। সব সময় কী নিয়ে যে এত কথা বলে। এটা ভেবে পায় না আমেনা বেগম।
২৬.
ফোনের শব্দে ঘুম ভেঙে যায় রিফাতের। আশেপাশে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই। ঘুম জড়ানো চোখে ফোন স্কিনে তাকিয়ে দেখে কালকের রাতের সেই নম্বরটা। কালকে এই নম্বর থেকেই তারিন ফোন দিয়েছে।
রিফাত ফোন রিসিভ করে “হ্যালো” বলল।
ওপাশ থেকে তারিন বলল – ‘এখনো আসছেন না কেন?’
– ‘এখন কেন যাবো।’
তারিন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো – ‘তাহলে কখন আসবেন।’
– ‘বিকেলে আসবো।’
– ‘একবার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখেন তো।’
রিফাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেল। কারণ ঘড়িতে বিকেল ৪টা
বাজে। রিফাত ভেবে পায়না এতটা সময় কীভাবে ঘুমিয়ে ছিলো। সাধারণ রিফাত দিনে খুব কম সময় ঘুমায়। কিন্তু আজকে এত সময় ঘুমিয়ে ছিলো তা টেরই পায়নি।
তারিন বলল – ‘কী হলো চুপ হয়ে গেলেন কেন?’
– ‘আসলে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম তো, তাই টের পাইনি।’
– ‘ঠিক আছে তাড়াতাড়ি করে চলে আসুন। আর সাথে আপনার বন্ধুদেরও আনবেন।’
– ‘আচ্ছা ঠিক আছে।’
ফোন রেখে রিফাত ফ্রেশ হয়ে নিলো। এখনও কেউ রুমে আসেনি। রিফাত রেডি হয়ে নিচে গেল। একজন কে জিজ্ঞেস করাতে বলল সবাই মাঠে আছে।
রিফাত ও সেখানে চলে গেল। তারপর আরিয়ান কে বলল – ‘কী রে এখনো রেডি হসনি কেন?’
– ‘রেডি হবো মানে।’
– ‘আমাদের সবাইকে তারিনদের বাড়িতে যেতে বলেছে।’
– ‘কিন্তু এখানে কিছু কাজ আছে।’
– ‘তাহলে আমি একা যাবো নাকি।’
– ‘হ্যাঁ, তুই একাই যা। স্টেজ সাজানো হবে, তাই আমাদের এখানে থাকতে হবে।’.
– ‘আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে আমি গেলাম।
রিফাত তারিনদের বাড়ির দিকে হাঁটতে শুরু করলো। নদীর পাড়ে সেই চায়ের দোকানের সামনে গিয়ে তারিন কে ফোন দিলো। কিছুক্ষন পর তারিন আর তিশা আসলো। তারপর রিফাত কে বাড়িতে নিয়ে গেল।
ঘরে গিয়ে দেখে একটা লোক বসে আছে। রিফাত মনে মনে ভাবছে এটাই হয়ত তারিনের বাবা।
তারিন বলল – ‘বাবা উনিই সেই রিফাত। যে আমাকে সাহায্য করেছেন।’
লোকটি রিফাতের দিকে তাকালো।
রিফাত তাকে সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করলো – ‘কেমন আছেন’
তিনি সালামের উত্তর দিয়ে বলল – ‘আমি ভালো আছি। তুমি কেমন আছো।’
যেহেতু রিফাত তার মেয়ের বয়সী। তাই আপনি করে না বলে ডিরেক্ট তুমি করে বলেছেন।
রিফাত বলল – ‘জ্বী আমিও ভালো আছি।’
– ‘তোমাকে যে বাবা কী বলে ধন্যবাদ দিবো বুঝতে পারছি না। সেদিন তুমি না থালকে হয়ত আমার মেয়েটা আর বেঁচে ফিরতো না।’
রিফাত স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে আফজাল সাহেবের চোখে জল টলমল করছে। তাই রিফাত বলল – ‘প্লিজ আপনি কাঁদবেন না। আমি তেমন কিছুই করিনি। উনি নিজের চেষ্টায় নিজেকে রক্ষা করেছে। তাই ধন্যবাদ দেওয়ার হলে ওনাকেই দিন।’
আফজাল সাহেব চোখের জল মুছে রিফাতের এবং পরিবার সম্পর্কে জানতে চাইলো।
– ‘আমার বাবা ছোটখাটো একটা ব্যবসা করে আর মা গৃহিণী। আমার একটা ছোট ভাই আছে। ও ক্লাস ৬ এ পড়ে। আর আমি পড়াশোনা শেষ করেছি । বাবার ইচ্ছে ছিলো আমি পড়াশোনা শেষ করে তার ব্যবসা দেখাশোনা করবো। কিন্তু আমি গান ভালোবাসি তাই ব্যবসার মধ্যে নিজেকে না জড়িয়ে গানের পোগ্রাম করি। এখানে ও এসেছি একটা গানের পোগ্রামে।’
– ‘বাহ্, খুব ভালো।
আরো কিছু কথা বলার পর আমেনা বেগম খাবার নিয়ে এলো। রিফাত বলল দুপুরে খেয়েছে। এখন কিছু খাবে না। কিন্তু তারা কিছুতেই রিফাতের কথা মানতে পারছে না। সামান্য কিছু খেলেও খেতে হবে। শেষে কোন উপায় না পেয়ে রিফাত কে কিছুটা খেতে হয়েছে। খাওয়া শেষ করে সবাইকে সালাম জানিয়ে রিফাত, তারিন আর তিশার সাথে ঘর থেকে বের হলো। পাশেই আফজাল সাহেব আর আমেনা বেগম ছিলো বলে তারিনের সাথে কথা বলার সুযোগ পায়নি। কিন্তু চলে আসার আগে তারিন কে ইশারা দিয়ে বলল রাতে ফোন দিতে। তারপর রিফাত বাড়ির দিকে যেতে শুরু করলো।
চলবে…………….?
বিঃদ্রঃ ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।