পাহাড়ে মেঘের ছায়া পর্ব- ১৯

0
953

উপন্যাসঃ পাহাড়ে মেঘের ছায়া
পর্ব – ১৯
(নূর নাফিসা)
.
.
২০.
প্রতিদিনের মতো আজ সকালেও ঘুম থেকে উঠে বৃষ্টি তাবুর আশেপাশে হাটাহাটি করছে। কিন্তু আজ সবাই খুব তাড়াতাড়ি জেগে গেছে। হয়তো কাল রাতে তারাতাড়ি ঘুমানোর ফলেই জেগে গেছে আজ। সকালটা ভালোভাবেই কাটালো তাদের সাথে কিন্তু আকাশের সাথে কথা বলেনি বৃষ্টি।
খাওয়ার সময়ও অল্প খেয়ে উঠে পড়লো। সবাই যেন টুকটাক গোছগাছ শুরু করেছে। চলে যাবে নাকি! বৃষ্টি সিমির কাছেই গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
– আপু, তোমাদের শুটিং কি শেষ? তোমরা কি চলে যাবে নাকি?
– আরে না। আরও দু তিনদিন লাগবে।
– তাহলে গোছগাছ করছে যে সবাই!
– অপ্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে রাখছে। ঝামেলা কম থাকাই ভালো।
– হুম।
বেলা প্রায় অনেকটাই পেরিয়ে গেছে। অর্থাৎ সকাল কেটে দুপুর এসে পড়েছে। বৃষ্টি গাছের শিকরে বসে মাটিতে আঁকিবুঁকি করছে। আকাশ এসে পাশে বসলো। বৃষ্টি দেখেও না দেখার ভান করে নিজের কাজ করতে লাগলো।
– এগুলো কি আকছো?
– মার্ডার প্যাটার্ন আকছি।
– মানে?
– আপনাকে আগে মারবো নাকি আপনার বউকে আগে মারবো সেই নকশা আঁকছি!
বৃষ্টির কথা শুনে আকাশ হাহাহোহো করে হেসে উঠলো। আর যাই হোক, বৃষ্টি আকাশের হাসি দেখা মিস করে না।
– আমাকে খুন করতে সহজ হবে তোমার। আমি কাছে আছি আর আমার বউ তো অনেক দূরে! যেতে যেতে অনেক সময় লাগবে।
বৃষ্টি তার দিকে তাকালো শুধু কিন্তু কোন প্রতিক্রিয়া জানালো না! আকাশ একটা কাঠি নিয়ে মাটিতে খাচার মতো কিছু একে বললো,
– দেখোতো এই প্যাটার্নটা বুঝতে পারছো কিনা!
– কি এটা?
– এটা কারাগার। আমাকে অথবা আমার বউকে খুন করার আগেই তুমি কারাগারে বন্দী হয়ে যাবে।
– হুহ্! বাচ্চাকাচ্চা আছে নাকি আপনার?
– কেন! বাচ্চাদেরও মেরে ফেলবে নাকি!
– না, বাচ্চাদের আমি ভালোবাসি খুব। তারা নিষ্পাপ!
– বাহ! দরদী খুনী!
– বেশি কথা না বলে যেটা প্রশ্ন করেছি সেটার উত্তর দিন।
– হুম, আছে।
– ছেলে না মেয়ে?
– ছেলে ও মেয়ে।
– দুইজন?
– হুম।
– ছেলেমেয়ে কি বিজনেস নিয়ে ব্যস্ত থাকে, আর বাবাকে সময় দেয় না?
আকাশ অবাক দৃষ্টিতে তাকালো! কারণ সে যেটা উদ্দেশ্য করে উত্তর দিয়ে যাচ্ছে, বৃষ্টি সেটা সহজেই ধরে ফেলেছে! এটা কিভাবে সম্ভব! বৃষ্টি আড়চোখে তাকিয়ে আবার বললো,
– বউ কি অসুস্থ? দেখাশোনার মানুষ নেই তার কাছে!
– কে বলেছে তোমাকে এসব?
– কেন, সঠিক বলে দিয়েছি নাকি!
– সিমি বলেছে না? এক মিনিট! তার মানে দাদু তোমার কথা বলছিলো সকালে! তুমি দাদুকে বলেছো আমি বিয়ে করেছি আর তুমি আমার বউ!
– আমি এসব কিছু বলিনি।
– তাহলে দাদু নাতবউয়ের সাথে কথা বলতে চাইলো কেন!
– আমি কি জানি!
– আমি তো ভেবেছিলাম দাদু দুষ্টুমি করছিলো! এদিকে তুমি খিচুড়ি পাকিয়ে রেখেছো!
– উল্টাপাল্টা বলবেন না। আমি দাদুর সাথে কথা বলেছি ঠিকই কিন্তু কারো সম্পর্কে মিথ্যে বানিয়ে কিছু বলিনি। আমি আমার কথা বলেছি শুধু, আপনার তরফে কিছু বলিনি।
– ফোন নম্বর কোথায় পেলে?
– আপনার ফোন থেকেই তো কল করলাম।
– আমার ফোন থেকে! কখন?
– কাল রাতে।
– তুমি তাহলে দাদুর সাথে কথা বলার জন্য ফোন নিয়েছো! বুঝলে কিভাবে এটা দাদুর নম্বর! আমি তো কোন নাম দিয়ে সেইভ করিনি!
– বউয়ের সাথে প্রেমালাপ করছিলেন রাতে তাই ডায়াল লিস্টের প্রথম নম্বরে ডায়াল করে দেখেছি সেটা কোন বউ!
আকাশ নিরবে তাকিয়ে থাকলো বৃষ্টির দিকে। মেয়েটির উপর রাগও হচ্ছে আবার বুদ্ধির প্রশংসাও করছে মনে মনে। বৃষ্টি আবার মাটিতে আঁকিবুঁকি করছে।
– ঘুরতে যাবে?
বৃষ্টি ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো আকাশের দিকে। আকাশ আবার বললো,
– যাবে না?
– কোথায়?
– বললেই চিনবে নাকি! চলো..
– যাবো না।
– শুধু তুমি আর আমি যাবো। আর একবার জিজ্ঞেস করবো। যাবে?
আকাশের সাথে ঘুরতে যাওয়ার সুযোগটা কেন শুধু শুধু মিস করতে যাবে! মুচকি হেসে হাত ঝেড়ে বৃষ্টি উঠে দাড়ালো।
– চলুন।
– এই বেশে না। তোমার ড্রেস পড়ে এসো। আমি জঙ্গলে ঘুরবো না, অন্যদিকে যাবো।
– ওকে।
বৃষ্টি তাবুতে চলে গেলো। সিমির জামাটা পাল্টে নিজের জামা পড়ে নিলো। বাইরে বের হতেই সিমি বৃষ্টিকে জড়িয়ে ধরলো। বৃষ্টি অবাক হয়ে বললো,
– কি হলো আপু?
সিমি মুচকি হেসে বললো,
– কিছু না।
আকাশের সাথে সামনে হাটতে লাগলে পেছন থেকে রিজভী বললো,
– বায়, বায়, ঝড়বৃষ্টি। আশা করি, আবার দেখা হবে।
বৃষ্টি পেছনে তাকিয়ে হেসে কিছু না বলে আবার আকাশের সাথে হাটতে লাগলো। জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আকাশ তাকে একটা পাহাড় ঘুরিয়ে, লেকের পাড় ঘুরিয়ে অটোতে উঠলো। আকাশের সাথে ঘুরতে ভালোই লাগছে বৃষ্টির। গাড়িতে থেকেও প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে লাগলো। বেশ কিছুক্ষণ পর গাড়ি এসে একটা রিসোর্টের সামনে থামলো। রিসোর্ট দেখে বৃষ্টি একটু অবাক হলো। এটাতে তো সে তার বন্ধুদের সাথে উঠেছিলো!
– নামো।
– এখানে?
– হ্যাঁ।
আকাশ গাড়ি থেকে নেমে ভাড়া দিচ্ছে, বৃষ্টিও নেমে পড়লো। রিসোর্টের গেইট দেখিয়ে আকাশ বললো,
– ভেতরে চলো।
– রিসোর্টে কেন?
– সারাদিন কি এভাবেই ঘুরবো! একটু রেস্ট নেওয়া প্রয়োজন নয় কি? আমার ক্ষুধাও লেগেছে।
বৃষ্টি মুচকি হেসে নির্ভয়ে রিসোর্টে যেতে লাগলো। কারণ, তার বন্ধুদের আরও দুএকদিন আগেই ঢাকা ফেরার কথা। সে নিশ্চিত, তারা ঢাকা পৌছে গেছে।
আকাশ বৃষ্টিকে একটা রুমের সামনে এনে কলিং বেল বাজালো। কেউ দরজা খুলতেই বৃষ্টি অবাক! তার বন্ধুরা এখানে! তারা এখনো ঢাকা ফিরেনি! আর আকাশই তাকে এখানে নিয়ে এলো কিভাবে! সে কি তাদের চিনে! চোখে হাজারো প্রশ্ন নিয়ে বৃষ্টি আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে! আকাশ হয়তো তার চোখের ভাষা বুঝতে পেরেছে! তাই বললো,
– দাড়িয়ে আছো কেন! ভেতরে যাও। আজ তাদের ট্রেন ছিলো, আমি ফোন করে বলাতে তোমার জন্য তারা ট্রেন মিস করেছে। আগামীকাল সকালের ট্রেনে একসাথে ঢাকা ফিরে যাবে।
বৃষ্টির চোখ ছলছল করছে। এই বুঝি অশ্রু গড়িয়ে পড়বে! এখানে রেখে যাওয়ার জন্য তাকে মিথ্যে বলে এনেছে! সিমি আপু এজন্যই তাকে জড়িয়ে ধরেছিলো! রিজভী ভাইয়া এজন্যই এভাবে বিদায় জানাচ্ছিলো! বৃষ্টি মনের ভেতর খুব কষ্ট নিয়ে একটা প্রশ্ন করলো,
– তুমি তাদের ফোন নম্বর কোথায় পেলে?
– তুমি তো আর নম্বর দিতে না, তাই অনেক কষ্টে আমার কললিস্ট খুজে বের করেছি। জঙ্গলে প্রথমদিন যে নম্বরে তুমি কল করেছিলে সেটাই খুঁজে বের করেছি। ভেতরে যাও। আল্লাহ হাফেজ।
বৃষ্টি আকাশের হাত ধরে আকাশকে থামিয়ে দিলো,
– আকাশ, আমি যাবো তোমার সাথে।
– পাগলামো করো না, বৃষ্টি। ভেতরে যাও।
– না, আমি তোমার সাথে যাবো।
আকাশকে রেখেই বৃষ্টি সিড়ি দিয়ে নামতে যাচ্ছিলো, আকাশ হাত ধরে টেনে রুমে নিয়ে এলো। খটে বসে বললো,
– কি শুরু করেছো এসব!
– কিছুই না।
– বাচ্চাদের আচরণ ছেড়ে নিজের অবস্থান বুঝতে চেষ্টা করো। আর আলতু ফালতু বিষয়ে সময় নষ্ট না করে ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবো।
– আমি বর্তমান নিয়ে ভাবি। কেননা, বর্তমানকে ঘিরেই ভবিষ্যৎ।
আকাশ উঠে ওয়াশরুমের দিকে গেলো। এদিকে তার বন্ধুবান্ধব আকাশকে নিয়ে নানান প্রশ্ন করে যাচ্ছে! বৃষ্টি শুধু একটাই উত্তর দিলো, “তোরা চিনবি না!” চোখে মুখে পানি দিয়ে আকাশ রুমে এসে বৃষ্টির বন্ধুর উদ্দেশ্যে বললো,
– খাবারের ব্যবস্থা আছে?
– নিচে যেতে হবে ভাই।
– যাবে একটু আমার সাথে?
– চলুন।
বৃষ্টি বসা থেকে উঠে বললো,
– আমিও যাবো।
– আশ্চর্য! খাবার আনতেও এখন তোমাকে সাথে নিতে হবে!
আকাশ একটু কড়া কন্ঠে বলায় বৃষ্টি চুপ হয়ে গেলো। আকাশ আর বৃষ্টির এক বন্ধু বেরিয়ে গেলো। বৃষ্টি ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে রুমে এলো। একটু পর বৃষ্টির বন্ধু একা এলো, আকাশ সাথে নেই!
– আকাশ কোথায়?
– আকাশ উপরে।
– ফাজলামো রাখ। তোর সাথে যিনি গেছেন তিনি কোথায়?
– চলে গেছে। তুই নাকি দুপুরে খাসনি, তাই খাবার কিনে দিয়ে গেছে।
– ওফ্ফ! শীট!
বৃষ্টি দ্রুত বেরিয়ে যাচ্ছিলো, তার বন্ধুরা বললো,
– আরে তুই কোথায় যাচ্ছিস! খাবার কে খাবে?
– খাবার তোরা খা ইচ্ছে মতো। রূপা, আমার ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছিলি না? কোথায়?
– ব্যাগ দিয়ে কি করবি! কোথাও যাবি না তুই।
– কথা কম বল। ব্যাগ দে আমার।
– বৃষ্টি, একসাথে এসেছি আর কাল সকালে একসাথে ঢাকা ফিরবো। কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
– ব্যাগ দিতে বলেছি!
বৃষ্টি রেগে ধমক দেয়ায় রূপা ব্যাগ দেখিয়ে দিলো। বৃষ্টি ব্যাগ নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে পড়লো। যেতে যেতে বললো,
– আমার জন্য আর অপেক্ষা করবি না। তোরা যথাসময়ে ঢাকা ফিরে যা।
বৃষ্টি রিসোর্ট থেকে বেরিয়ে আকাশকে দেখতে পেল না! কান্না করতে ইচ্ছে করছে তার! মানুষটা এতো খারাপ কেন! ছোট বাচ্চার মতো বোকা বানিয়ে চলে গেলো। যাক সে চলে, আসার সময় পথ চিনে ফেলেছে। সুতরাং একাই যাবে! এখন তার কাছে কাপড়চোপড়, টাকা, ফোন সবই আছে। কিন্তু গাড়ি যে পাচ্ছে না! হাটতে হাটতে একসময় সে গাড়ি পেয়ে গেলো এবং সেই পথে রওনা দিলো, যে পথে আকাশ তাকে নিয়ে এসেছে! যেতে যেতে একসময় জঙ্গলের পাশে চলে এলো। বিকেল হয়ে গেছে। সূর্য প্রায় অস্ত যাওয়ার পথে! যতই সাহস দেখাক না কেন, মনের ভেতর ভয় আকুপাকু করছে! তবুও সে একা একা জঙ্গলের ভেতর প্রবেশ করছে। তাবুর জায়গায় চলে এসে বৃষ্টি থমকে গেলো! এখানে তাবুটাবু কিছুই নেই! তারা কোথায় গেছে! এখানেই তো ছিলো তারা, সেটা তার স্পষ্ট মনে আছে! এজন্যই কি সকাল থেকে গোছগাছ করছিলো তারা! একবারও বলেনি কেন এখান থেকে চলে যাবে! খুব ভয় লাগছে বৃষ্টির! নির্জন এই জঙ্গলে একা সে! পাখিদের কিচিরমিচির অন্যদিন মধুর মনে হলেও আজ এই নির্জন জঙ্গলে সেটা ভয়ানক মনে হচ্ছে!
এদিকে সিমিরা সবাই মৌলভীবাজার এসে এক রিসোর্ট ভাড়া করেছে। আকাশ বৃষ্টিকে সেখানে রেখে সোজা মৌলভীবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। তাদের ভাড়া করা রিসোর্টের প্রায় কাছাকাছি পৌছতেই আকাশের ফোনটা বেজে উঠলো। বৃষ্টির বান্ধবী রূপা কল করেছে!
– হ্যালো?
– হ্যালো, ভাইয়া বৃষ্টির ফোনটা চালু রাখতে বলুন। ওর সাথে কথা বলবো।
– মানে!
– বৃষ্টির ফোনটা অফ আছে, ওকে অন করতে বলুন। আর না হয় আপনি ফোনটা ওর কাছে দিন।
– কি বলছো! আমি তো চলে এসেছি। বৃষ্টিকে না তোমাদের কাছে রেখে এলাম!
– মানে! বৃষ্টি আপনার সাথে নেই!
– আমার সাথে হবে কেন!
– ও তো আপনার পিছু পিছু বেরিয়ে গেছে!
– হোয়াট! কখন?
– আপনি যাওয়ার পাচ মিনিটের মধ্যেই।
– আমি তো সাথে সাথেই চলে এসেছি! ওর সাথে তো দেখা হয়নি!
– তাহলে কোথায় সে! সে তো আমাদের কাছে নেই!
– আমি এসেছি প্রায় বিশ মিনিটের বেশি হয়ে গেছে আর এখন জানাচ্ছো আমাকে, বৃষ্টি আমার পিছু পিছু বেরিয়ে গেছে!
– আমি তো ভেবেছি আপনার সাথে চলে গেছে, তাই আর ইনফর্ম করিনি! এখন কি হবে ভাইয়া!
– ফোন রাখো। দেখছি আমি।
“এই মেয়েকে নিয়ে আর পারলাম না! ওফ্ফ! এখন কোথায় খুজি আমি! জঙ্গলের দিকে চলে যায়নি তো আবার! আল্লাহ তুমিই জানো কোন পরিস্থিতিতে আছে!”
আকাশ গাড়ি থেকে নেমে আবার অন্য গাড়িতে বিছানাকান্দির দিকে রওনা দিলো।
বৃষ্টি জঙ্গল থেকে তারাতাড়ি বের হয়ে আসছিলো। হঠাৎই তার সামনে দুজন লোক এসে তাকে ঘিরে ধরলো! হাতে তীর আকৃতির লম্বা যন্ত্র! হঠাৎ করে সামনে আসায় বৃষ্টি খুব ভয় পেয়েছে! পরক্ষনে পর্যবেক্ষণ করে দেখলো লোক দুটোর গায়ে জংলী পোশাক, যেমনটা আকাশদের গায়ে ছিলো। কিন্তু এরা তাদের মধ্যে কেউ না, তা খুব ভালো করেই চিনতে পারছে বৃষ্টি। এদের দেখতে আরও বেশি ভয়ানক লাগছে! তবে বৃষ্টি তাদের সাজসজ্জা দেখে মনে মনে প্রশংসা করলো, আকাশদের চেয়ে বেশি সুন্দর হবে তাদের শুটিং! এরা তাদের মতোই আরেক দল হবে। আকাশরা তো ঢাকা থেকে এসেছিলো, কিন্তু এই দল কোথা থেকে এসেছে! প্রথমে অনেক ভয় পেলেও এখন আগের চেয়ে কিছুটা কমে গেছে। জোরপূর্বক মুখে হাসি ফুটিয়ে ভয়ে ভয়ে বৃষ্টি বললো,
– আপনারা কোথা থেকে এসেছেন?
লোক দুটো কেমন যেন বানরের মতো শব্দ করে বৃষ্টির কাছে চলে এলো। অদ্ভুত শব্দ করে বৃষ্টিকে সামনে হাটতে ইশারা করছে! বৃষ্টি ভয়ে এক জায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছে! বৃষ্টি যাচ্ছে না বলে তাদের মধ্যে একজন তীরের মাথা দিয়ে খোচা দিলো বৃষ্টিকে।
– আহ! খোচান কেন!
তারা আরও বিকট শব্দ করে ইশারা করতেই বৃষ্টি তাদের দেখানো পথে হাটতে লাগলো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here