পাহাড়ে মেঘের ছায়া পর্ব-২২

0
832

উপন্যাসঃ পাহাড়ে মেঘের ছায়া
পর্ব – ২২
(নূর নাফিসা)
.
.
২৩.
আজকের নতুন সকালটা খুবই আনন্দময় লাগছে বৃষ্টির কাছে। চোখ খুলেই সে আকাশকে দেখেছে। হাত পা সবকিছু তার দখলে নিয়ে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে আকাশ! আকাশকে খুব কাছ থেকে দেখছে বৃষ্টি। কপালে ভাজ ফেলে, মুখে সিরিয়াস ভাব এনে ঘুমায় সে। হাসিখুশির ছিটাফোঁটা নেই! বৃষ্টি মনে মনে ব্যাঙ্গ করে বললো, “হুহ্! ইউনিক লাইফ এনজয় করবে! করাচ্ছি তোমাকে ইউনিক লাইফ এনজয়! বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বোকা লোক! সমাজবিহীন মানব, একা থাকবে বললেই হলো!”
সারারাত এক কম্বলের নিচে সরু সোফায় দুজন ব্যাক্তি থেকেছে! বৃষ্টি লক্ষ্য করলো রাতে সে আকাশের উপর শুয়েছিলো, কিন্তু এখন সে আকাশের হাতে মাথা রেখে বুকের সাথে মিশে সোফায় শুয়ে আছে। পাতলা কম্বল দিয়ে আকাশ তাকে একেবারে আগলে রেখেছে।
একটু পরেই আকাশের ঘুম ভাঙলো। বৃষ্টিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে চমকে উঠলো! পরক্ষনেই মনে হলো বৃষ্টি পাচ মিনিটের কথা বলে সারারাত কাটিয়েছে তার সাথে! চোখমুখ কুচকে বললো,
– শেষ হয়নি তোমার পাচ মিনিট?
বৃষ্টি মুচকি হেসে জবাব দিলো,
– না।
– সারারাত কেটে গেছে এখনো পাচ মিনিট শেষ হয়নি! উঠো!
আকাশ ধমক দেয়ায় বৃষ্টি বিড়বিড় করে বললো,
– হুহ্! সারারাত আমাকে কোলবালিশ ন্যায় ব্যাবহার করেছে, প্রয়োজন শেষ এখন আবার দুর্ব্যবহার করছে!
আকাশ খেয়াল করে দেখলো সত্যিই সে বৃষ্টির উপর হাত পা তুলে কোলবালিশ ন্যায় রেখে শুয়ে আছে! সাথে সাথে হাতপা সরিয়ে নিলো। হঠাৎ তাকে ছেড়ে দেয়ায় বৃষ্টি সোফা থেকে পড়ে যেতে নিলো আর খপ করে আকাশের গেঞ্জি ধরে ঝুলে রইলো।
– কি করছো! পড়ে যাচ্ছি তো, ধরো!
– আমার কি! গেঞ্জি ছাড়ো।
– আশ্চর্য! আমি পড়ে যাচ্ছি তো!
আকাশ খপ করে বৃষ্টিকে দু’হাতে ধরে তার উপরে তুলে সে বৃষ্টির নিচে পড়ে রইলো! এবার মৃদু স্বরে বললো,
– উঠো।
বৃষ্টি মুচকি হেসে কম্বল সরিয়ে উঠে পড়লো। ফ্রেশ হয়ে তারা সকালেই রিসোর্ট ছেড়ে বেরিয়ে পড়লো। রেস্টুরেন্টে ব্রেকফাস্ট করে নিলো। বিল বৃষ্টিই দিলো। আকাশ মৌলভীবাজার যাওয়ার জন্য গাড়ি ঠিক করতে গেলেও বৃষ্টি বাধা দিয়ে জোর করে তাকে এ অঞ্চল ঘুরানোর জন্য রাজি করালো। দুপুরের দিকে শ্রীমঙ্গলের উদ্দেশ্যে রওনা দিলো। সেখানে চা বাগান ঘুরেছে, কলাবন ঘুরেছে, পানবন ঘুরেছে। হামহাম ঝর্ণার ধারে ঘুরেছে। সারাদিন এদিক সেদিক ঘুরেছে। ভালোই লাগছে আকাশের সাথে ঘুরাফেরা করতে! দুপুরে টংয়ে পাতানো হোটেলে লাঞ্চ করেছে। পাহাড়ি অঞ্চলের খাবারের স্বাদ সম্পূর্ণ ভিন্ন! বিকেল হয়ে গেছে। পান বনের ভেতর দিয়ে হাটার সময় কোন শব্দ পেয়ে বৃষ্টি চমকে উঠলো! ঢাকঢোলের শব্দ ভেসে আসছে! আকাশকে থামিয়ে দিয়ে বললো,
– আকাশ, এটা কিসের শব্দ? এখানেও কি জংলী আছে?
– এই ছোট ছোট বনে জংলীরা ঘুরে না। উপজাতিদের কোন প্রোগ্রাম হবে হয়তো।
– চলো না যাই…
– সারাদিন ঘুরে এখন আবার প্রোগ্রামে! চুপচাপ চলো, না হয় আমি চলে যাই তুমি থাকো।
– ওকে যাও, আমি দেখবোই সেখানে কি হচ্ছে!
বৃষ্টি আর অপেক্ষা না করে শব্দের অনুসন্ধানে সেদিকে দৌড় দিলো। তার বিশ্বাস আকাশ তাকে ফেলে যাবে না। একা ছেড়ে যাওয়ার হলে কাল তাকে খুজতে আসতো না! আকাশ না চাইতেও বৃষ্টির পিছু পিছু সেখানে গেলো। দেখলো বটবৃক্ষের নিচে গান, যাত্রাপালা আর মেলা বসেছে! উপজাতিদের কোন উৎসব আর দেখেনি বৃষ্টি! উল্লাসিত হয়ে সে আকাশের সাথে হাটছে। হাটতে হাটতে একসময় থমকে দাড়ালো সে! তার দৃষ্টিকে লক্ষ্য করে আকাশও তাকিয়ে দেখলো বৃষ্টি স্তব্ধ হয়ে কারো দিকে তাকিয়ে আছে! সামনে একটা ছেলে তার সাথে একটা মেয়ে দাঁড়ানো! ছেলেটাও তার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে! বৃষ্টির চেহারায় রাগ অভিমান স্পষ্ট! আকাশের হাত ছেড়ে বৃষ্টি দৌড়ে গিয়ে মেঘকে জড়িয়ে ধরলো! মেঘও অবাক ও খুশি হয়ে বৃষ্টিকে জড়িয়ে ধরেছে! এদিকে আকাশ আর মেঘের পাশে দাড়িয়ে থাকা নাফিসা কিছুই বুঝতে পারছে না, শুধু হতবাক হয়ে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে! বৃষ্টি মেঘকে ছেড়ে দিয়ে দু’হাতে তাকে ইচ্ছে মতো মারতে লাগলো। বৃষ্টির মুখে হাসি আর চোখে কান্না! এদিকে মেঘ হাসতে হাসতে তাকে থামানোর চেষ্টা করছে!
– শয়তান, ইতর, বান্দর! তুই আমাকে রেখে পালিয়ে এলি কেন! বলেছিলাম না এবার আমাকে সাথে নিয়ে ট্যুরে যেতে!
– আরে থাম থাম, তুই এখানে কিভাবে?
– তুমি এখানে কিভাবে?
– আমি তো জানিয়েছিই সিলেট এসেছি। কিন্তু তুই না কুমিল্লা ছিলি!
– তুমি সিলেট ঘুরবা আর আমি কুমিল্লা গিয়ে ঘোড়ার ঘাস কাটবো! বাবা এতোদূর আসতে দিতো না, তাই মিথ্যে বলেছি।
– সাহস কতো বড়! কার সাথে এসেছিস?
– ফ্রেন্ডদের সাথে।
– দাড়া এক্ষুনি বাবাকে জানাচ্ছি।
– মেরে ফেলবো একদম! ও কে? গার্লফ্রেন্ড নাকি?
– তোর ভাবি।
– হোয়াট! তুমি বিয়ে করে ফেলছো!
– হুম।
– ভাইয়া, সিরিয়াসলি!
– হুম।
– কবে?
– গতসপ্তাহে।
– ওএমজি! বাবা মা জানে?
– না। বিয়েটা এক্সিডেন্টলি হয়েছে, বাবা মা কে জানাই নি এখনো। ঢাকা ফিরে জানাতে হবে।
– এক্সিডেন্টলি মানে!
– লম্বা ঘটনা। পরে বলি। মেঘা, ও আমার ছোট বোন বৃষ্টি চৌধুরী।
– আসসালামু আলাইকুম ভাবি।
নাফিসা এতোক্ষণ শুধু তাদের কথা শুনছিলো। এখন বৃষ্টি সালাম দেওয়ায় জবাব দিলো,
– ওয়ালাইকুম আসসালাম।
– তোমার নাম তো ভালোই মিলেছে ভাইয়ার সাথে! মেঘ আর মেঘা!
মেঘ হালকা কেশে জবাব দিলো,
– এহেম, এটা আমার দেওয়া নাম। ওর নাম, নূর নাফিসা।
– ওরে বাবা! নতুন নামও দিয়ে দিছো! তবে নূর নাফিসা নামটাই কিন্তু বেশি সুন্দর! যাইহোক ভাবি কিন্তু মাশাল্লাহ অনেক সুন্দরী! স্থানীয়?
– হুম।
– ওয়াও! একটু একটু পাহাড়ি মনে হয়, আবার একটু একটু ঢাকাইয়া! যাইহোক, বছরে বছরে বেড়াতে আসতে পারবো!
বৃষ্টি কথা বলে নিজেই হাসতে লাগলো। মেঘ বললো,
– ঢাকা ফিরবি কবে?
– অতি শীঘ্রই।
– কোথায় উঠেছিস?
– ভাসমান!
– মানে?
– মানে অনেক কিছু! আজ এখানে তো কাল ওখানে। আগে পরিচয় হও, ও হচ্ছে..!
বৃষ্টি পেছনে ফিরে দেখলো আকাশ নেই!
– এ কি! আকাশ কোথায় গেলো!
– আকাশ কে?
– এখন আমার সাথে একটা ছেলে দাড়িয়ে ছিলো না? ও কোথায় গেছে?
– ও তো এই মাত্র চলে গেলো।
– ওফ্ফ শীট! কোন দিকে গেছে?
– এদিকে। ছেলেটি কে?
– ভাইয়া, পরে বলবো সব। আমি যাই এখন। পরে কল করবো তোমাকে!
বৃষ্টি দৌড়ে ছুট দিলো। মেঘ পেছন থেকে বললো,
– বৃষ্টি, বিয়ের কথা বাবা মা কে বলিস না কিছু। আমি ঢাকা ফিরে বলবো।
– ওকে, আমি সিলেট এসেছি সেটাও জেনো না জানে।
– ওকে!
বৃষ্টি দৌড়ে মেলা থেকে বেরিয়ে এলো। মেঘের বলা কথা অনুযায়ী সে পান বনের দিকে এসে দেখলো আকাশকে অনেকটা দূরে দেখা যাচ্ছে! সে চেচিয়ে আকাশকে ডেকে দৌড় দিলো। আকাশ পেছনে তাকিয়ে দেখলো বৃষ্টি সোজা দৌড়ে আসছে! সে চমকে গেলো! সে যেদিকে দৌড়ে আসছে, এখানে তো বড় ফাদ আছে! না জানি পড়ে যায়! আকাশ সেখান থেকেই বৃষ্টিকে থামতে বলছে কিন্তু বৃষ্টি না থেমে সোজা দৌড় দিচ্ছে! হঠাৎ করেই সে ফাদে পড়ে গেলো!
এদিকে মাটি ধসে পড়ে বড় ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে! বন পাতালতায় আচ্ছাদিত হওয়ায় দূর থেকে তেমন একটা দেখা যায় না! আর বৃষ্টিতো নিচে না তাকিয়ে সোজা দৌড়ে আসছিলো, সে দেখবে কিভাবে!
বৃষ্টিকে পড়ে যেতে দেখে আকাশ ভয় পেয়ে চিৎকার করে দৌড়ে এলো! এসে দেখলো বৃষ্টি মোটা গাছটার শিকড় ধরে ঝুলে আছে! নিচে পড়লে এখান থেকে উদ্ধার করা দায়! নিচে পানি জমে ময়লা পড়ে স্তুপ হয়ে আছে। কতটুকু গর্ত কে জানে! আকাশকে আসতে দেখে বৃষ্টি অশ্রুসিক্ত নয়নে তার দিকে তাকিয়ে শিকড় ধরে ঝুলে আছে। একটা পায়ে মাটি আঁকড়ে ধরেছে। আকাশ বসে নিচু হয়ে ভয়ার্ত কন্ঠে বললো,
– হাত ধরো আমার। সাবধানে উঠার চেষ্টা করো।
বৃষ্টি তার কথায় পাত্তা না দিয়ে বললো,
– ভালোবাসো আমাকে?
– বৃষ্টি, ফাজলামো করার সময় না। হাত বাড়াও।
– মরে গেলে তোমার কি! তুমি তো আরও বাচো। তোমার পিছু পিছু কেউ ঘুরবে না, তোমাকে কেউ আর বিরক্ত করবে না!
– বৃষ্টি, পড়ে যাবে। হাত বাড়াও।
বৃষ্টি আকাশের থেকে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে চুপচাপ আগের ন্যায় ঝুলে আছে। তার শরীর কাপছে আকাশ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে। এদিকে সে নিজেও কিছু করতে পারছে না! এই মেয়ে তো তার কথা শুনছে না একটুও! এবার মায়াবী কন্ঠে বললো,
– এই পাগলী, ভালোবাসি তো হাত বাড়িয়ে দে!
বৃষ্টি মুগ্ধ হয়ে তাকালো! আকাশ আবার বললো,
– ভালো না বাসলে কি তোকে নিয়ে সারাদিন এভাবে ঘুরে বেড়াই! ভালোবাসি তো। উঠে আয় আমার কাছে!
বৃষ্টির মনে উৎফুল্লতা জেগে উঠলো। সে খুব সাবধানে পায়ে মাটিতে ভর দিয়ে একটু উপরে উঠে আকাশের দিকে একটা হাত বাড়িয়ে দিলো। আকাশ হাত শক্ত করে ধরে খুব সাবধানে বৃষ্টিকে টেনে উপরে তুললো। হাত ধরে দুতিন কদম এগিয়ে বৃষ্টিকে সজোরে একটা থাপ্পড় মারলো! বৃষ্টি গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে! আকাশ চিৎকার করে বলছে,
– মাথা খারাপ হয়ে গেছে তোর! এখন নিচে পড়ে গেলে কি হতো! কিভাবে উদ্ধার করতাম আমি! এই তোর পরিবার না তোকে খুব ভালোবাসে! তাদের কথা তোর মাথায় আসেনি! পড়ে মরে যাওয়ার কথা চিন্তা করলি কিভাবে! কিসের প্রেম নিয়ে পাগল হয়ে আছিস!
বৃষ্টি কাদো কাদো গলায় বললো,
– লাইফে এতো জোরে তিনটা থাপ্পড় খেয়েছি! প্রথমটা তুমি দিয়েছো জঙ্গলে। দ্বিতীয়টাও তুমি দিয়েছো রাস্তায়! এখন তৃতীয়টাও তুমি দিয়েছো এই পান বনে! তবুও তোমাকে ভালোবাসি!
আকাশ কষ্টের মাঝে মুখে হাসি ফুটিয়ে এক টানে বৃষ্টিকে তার সাথে মিশিয়ে নিলো! মাথায় চুমু দিয়ে বললো,
– ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি! বিশ্বাস হয়েছে?
বৃষ্টি অতি সুখে কান্না করে যাচ্ছে আকাশকে জড়িয়ে ধরে। আকাশও খুব শক্ত করে জড়িয়ে রেখেছে তাকে! আজ বৃষ্টির সার্থকতা প্রকাশ পেয়েছে। আকাশ মুখ ফুটে বলেছে তাকে! আকাশের বুকে মুখ লুকিয়ে বৃষ্টি বললো,
– জানি আমি, তুমি আমাকে ভালোবাসো। তা না হলে কি আর জঙ্গলে আমাকে জোর করে খেতে বাধ্য করো, আমাকে মাছ ধরতে দাও, এভাবে একা ছুটে আসো আমাকে খুজতে, নিজের টাকা খরচ করে জংলীদের কাছ থেকে আমাকে উদ্ধার করো! এভাবে আমার জোড়াজুড়িতে সারাদিন ঘুরে বেড়াও!
– জানো যখন এতো পাগলামি করো কেন?
– তুমি প্রকাশ করো না বলে!
– হয়েছে তো এবার, চলো।
– না হয়নি। চলে এলে কেন তুমি আমাকে ফেলে? ও আমার ভাইয়া ছিলো!
– ভাইয়া ভাবির কাছেই তো দিয়ে এসেছিলাম। তো ফিরে এলে কেন!
– আমি তো ভাইয়ার সাথে আসিনি!
– আমার সাথেও তো আসোনি।
– এসেছি ফ্রেন্ডের সাথে, তোমার সাথে যাবো। কতদিন থাকবে?
– কালকেই চলে যাচ্ছি, চলো।
– আমার পা ব্যাথা করছে, একটু জিড়িয়ে নেই।
– সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে, এখন সময় নষ্ট করা যাবে না। ওইদিকে রাস্তা, গাড়িতে উঠে যাবো।
পায়ে ব্যাথা নিয়েই আকাশের হাত ধরে হাটতে লাগলো! পান বন থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এসে পড়েছে কিন্তু গাড়ি পাচ্ছে না! হাটার গতি আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। ফাকা রাস্তা, দু একটা বাস যাচ্ছে কিন্তু সিগনাল দিলেও থামছে না! এই জুতা পড়ে আর হাটতে পারছে না তাই জুতা খুলে হাতে নিয়ে নিলো বৃষ্টি। পড়নে প্যান্ট আর কটি, গলায় পেচানো ওড়না, কাধে ব্যাগ হাতে জুতা। ভালোই লাগছে দেখতে। আকাশ তার দিকে তাকিয়ে তাকে দাড়াতে বললো। সে একটু এগিয়ে গিয়ে বৃষ্টির ছবি তুলে নিলো। বৃষ্টি আকাশের দুষ্টুমি বুঝতে পেরে দৌড়ে তাকে তাড়া করলো! আকাশও দৌড়ে যাচ্ছে! বৃষ্টি হঠাৎ করেই রাস্তায় বসে পড়লো, আর হাটতে পারছে না! আকাশ পেছনে ফিরে বসে থাকতে দেখে তার কাছে এলো।
– কি হলো?
– আর পারছি না। পা ব্যাথা করছে খুব। এখানেই দাড়িয়ে অপেক্ষা করো।
– গাড়ি কম আসছে, দেখছো না!
– তাহলে দাড়াও, একটু জিড়িয়ে নেই।
হঠাৎ করেই আকাশ তাকে কোলে তুলে নিলো। বৃষ্টি চরম অবাক! হা করে তাকিয়ে আছে আকাশের মুখের দিকে!
– এভাবে তাকিয়ে আছো কেন? এভাবে তাকালে আমি হাটতে পারবো না।
বৃষ্টি লজ্জা পেয়ে এক হাতে গলা জড়িয়ে ধরে গলায় মুখ লুকিয়ে রেখেছে। আকাশ তাকে নিয়ে হেটে যাচ্ছে! অনেকটা পথ এসে থেমে গেলো,
– নামো এবার। আর পারবো না।
– কেন, আমি না এইটুকু একটা মেয়ে! এতটুকুতেই হাপিয়ে গেলে!
– পাচ কেজি আর দশ কেজি তো না!
বৃষ্টি হিহি করে হেসে বললো,
– নামাও।
আকাশ তাকে নামিয়ে বললো,
– জুতা পায়ে দাও। না হয় কাটা ফুটবে আবার!
বৃষ্টি তার কথায় জুতা পড়ে নিলো। একটা অটো আসছে দেখে সিগনাল দিলো কিন্তু অটোতে জায়গা নেই! ড্রাইভার তাদের বলে গেলো এখানে গাড়ি পাবে না, সামনে স্টেশন আছে সেখান থেকে গাড়ি নিতে। তারা হাটতে হাটতে স্টেশন থেকেই গাড়িতে উঠলো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here