পাহাড়ে মেঘের ছায়া পর্ব-৫০

0
501

উপন্যাসঃ পাহাড়ে মেঘের ছায়া
পর্ব – ৫০
(নূর নাফিসা)
.
.
ভেবে ভেবে খুব কান্না করছে বৃষ্টি! এখান থেকে বের হবে কিভাবে! কেউই যে নেই তাকে সাহায্য করার! কোথায় নিয়ে এসেছে তাকে! কার বাসা এটা!
বেশ কিছুক্ষণ পর বৃষ্টির কান্নার শব্দ কমে এলে আকাশ উঠে দাড়ালো। ধীর পায়ে এগিয়ে এলো বাথরুমের দরজার দিকে। দরজায় হালকা শব্দ করে বললো,
– বৃষ্টি বেরিয়ে এসো। বৃষ্টি, আমি স্বাভাবিক আছি। কাম আউট।
বৃষ্টির কোনো সাড়া পাচ্ছে না আরও দুইবার দরজায় টোকা দিয়ে বেরিয়ে আসতে বললো তবুও বৃষ্টি শুনছে না! এবার রেগে দরজার লাথি দিয়ে বললো,
– আমাকে না রাগালে তোমার ভালো লাগে না! বেরিয়ে এসো! না হয়, দরজা ভেঙে ফেলবো!
বৃষ্টি ভয় পেয়ে এবার দরজা খুললো। দৃষ্টি তার মেঝের দিকে, গায়ে ওড়না নেই বিধায় দু’হাতে নিজেকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করছে। আকাশ তার হাত ধরে টেনে বাথরুম থেকে রুমে নিয়ে এলো। তখন ফ্লোরে ফেলে দেওয়ায় ব্যাথা পেয়ে এখন ঠিকমতো হাটতেও পারছে না! মেঝে থেকে ওড়না তুলে বৃষ্টির গায়ে জড়িয়ে দিলো আকাশ। বৃষ্টি এখনো কান্না করে যাচ্ছে কিন্তু কান্নার কোনো শব্দ হচ্ছে না। শুধু নাক টানার শব্দ হচ্ছে আর চোখ থেকে টুপটাপ পানি ঝরছে। আকাশ কাছে দাড়িয়ে দু’হাতে মুখখানা ধরে বৃদ্ধা আঙুলে চোখের পানি মুছে দিয়ে কপালে আলতো ঠোঁটের ছোয়া দিলো। অত:পর বললো,
– সরি। আমি তোমার সাথে কিছুই করতাম না। শুধু ভয় দেখানোর জন্য এমন করেছি।
বৃষ্টি নিচের দিকে দৃষ্টি রেখেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে আমতা আমতা করে বললো,
– আমি বাসায় যাবো। আমাদের বাসায় যাবো! বাবা মায়ের কাছে যাবো!
আকাশের ভেতরটা চিনচিন ব্যাথা করছে! বৃষ্টি এতোটা ভয় পাবে ভাবতেও পারেনি! অবশ্য তখন রেগে ছিলো অনেক, তাই হয়তো ডোজটা বেশি হয়ে গেছে! কিন্তু এখন কিভাবে বৃষ্টিকে স্বাভাবিক করবে!
– বৃষ্টি, সরি। আমি সত্যি বলছি, তুমি আমাকে ইগনোর করছিলে তাই শুধুমাত্র ভয় দেখানোর জন্য এমনটা করেছি! আর কাল বিয়ে নিয়ে মজা করছিলে তাই একটু রেগে গিয়েছি! প্লিজ বুঝার চেষ্টা করো! সবসময় সবকিছু নিয়ে মজা সহ্য হয় না, বৃষ্টি! আমি তোমার সাথে বেশি মিশতে চাই না কারণ, তুমি বেশি আবেগী হয়ে যাবে! আর আবেগ জিনিসটা খুব খারাপ! তোমার ক্যারিয়ারে ব্যাঘাত সৃষ্টি করবে সেটা! সবকিছু ভুলে তুমি আমার প্রতি ঝুকে পড়বে। বলেছিলে না, তোমার বাবার স্বপ্ন তুমি ডক্টর হবে! আবেগ জিনিসটা তোমাকে ঘেরাও করে ফেললে সেটা কখনো সম্ভব হবে না! তাই ভালোবাসি তবুও নিজেকে তোমার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখি। আমার কাজের তেমন কোনোই চাপ নেই আর না আছে কোনো ব্যস্ততা! তবুও তোমাকে ইগনোর করার একটাই কারণ সেটা তোমার ভবিষ্যৎ, তোমাকে নিয়ে তোমার বাবা মায়ের স্বপ্ন! আমি তো অন্য কারো সাথে নিজেকে জড়াচ্ছি না, তোমার ক্যারিয়ার গঠন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তুমি বারবার কোনো না কোনোভাবে আমাকে তোমার দিকে ঝুকতে বাধ্য করো! সময় হলে তো আমিই যেতাম! তোমাকে সবসময় চোখে চোখে রাখি সেটা কি জানো তুমি! যখন কোচিং করেছো, প্রতিদিনই কোনো না কোনো ভাবে খবর রেখেছি তোমার। কোচিংএ এসেছো কি-না, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়েছো কোথায়, কোচিং শেষে বাসায় গিয়েছো কি-না সব খবর রেখেছি! তবুও নিজেকে দমিয়ে তোমার কাছ থেকে দূরে থেকেছি! এতো প্রপোজাল এসেছে আমার লাইফে সেখান থেকে শ্রেষ্ঠ ছিলে তুমি! হয়তো এটাই নিয়তি ছিলো! পাই আর না পাই, তোমাকে ভেবেই জীবন পাড় করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সিলেট থেকে ফেরার পরই নিয়ে ফেলেছি!
বৃষ্টি অবাক হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে! চোখদুটো ছলছল করছে তার! ভয় দূর হয়ে সমস্ত রাগ অভিমান এবার কান্না হয়ে বেরিয়ে এলো! সাথে সাথে আকাশের বুকে ঝাপিয়ে পড়লো! আকাশ দু’হাতে তাকে বেধে রেখেছে নিজের সাথে! এখন কাদতে বাধা দিচ্ছে না বৃষ্টিকে! কারণ সে জানে এটা দুখের নয়! এটা শুধুমাত্র অভিমান মুছে নেওয়ার কান্না! যত ইচ্ছে কাদতে থাকুক, সুখ এবং ভালোবাসা বর্ষনে কোনো বাধা দিবে না আকাশ! বৃষ্টির অশ্রুপাতে বুক ভেসে যাচ্ছে তাই তার মুখেও লেগে আছে সুখের ছায়া! ফুটে আছে প্রশান্তির হাসি!
৪৭.
কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি নিজেই নিজেকে শান্ত করে বললো,
– আমার বিয়ে ঠিক হয়নি। তোমার অবহেলা সহ্য করতে না পেরে মিথ্যে বলেছিলাম তোমাকে!
– জানি আমি সেটা। কেননা তোমার বাবা মা এখন তোমাকে বিয়ে দিবে না।
বৃষ্টি সোজা হয়ে বললো,
– কিভাবে জানো?
– ভালোবাসি তাই!
– ফাজলামো রাখো, সত্যিটা বলো!
– বললামই তো! ভালোবাসি তাই, তোমার সব খবর রেখে যাই!
– বুঝলাম আমার খবর রাখো, কিন্তু আমার বাবা মায়ের সিদ্ধান্ত জানো কিভাবে! আনুমানিক বলছো না?
– না। কিভাবে জানি সেটা বলবো না। তবে এটা জেনে রাখো তোমার সম্পর্কে সব জানা আমার! বিশ্বাস না হলে মিলিয়ে না। আমার হবু মিসেস রুবাইয়া চৌধুরী বৃষ্টি – স্টুডেন্ট অফ ইন্টারমিডিয়েট , বাবা রায়হান চৌধুরী একজন ব্যবসায়ী, মা মোহিনী চৌধুরী একজন গৃহিণী, ভাই মেঘ চৌধুরী বাবার সহকর্মী। বিয়ে করেছে সিলেটি মেয়ে। বাসায় এখন ননদ ভাবি সমবয়সী!
আকাশ থামতেই বৃষ্টি হিহি করে হেসে উঠলো। এবং বললো,
– আরেকজন বাকি আছে। জানো তুমি!
– আবার কে!
– পিচ্চি মেঘ কিংবা নাফিসা!
– মিষ্টি কোথায়!
– দোকানে!
বৃষ্টি আবার হিহি করে হেসে উঠলো! আকাশ বৃষ্টির হাসিমাখা মুখখানা ধরে উপরে তুললো আর একহাতের বৃদ্ধা আঙুলে ঠোঁটে স্লাইড করলো। সাথে সাথে বৃষ্টির মুখ মলিন হয়ে গেলো! মনে হচ্ছে আকাশ তার কাছে চলে আসছে! বৃষ্টি এক হাতে আকাশের মুখ ধরে ফেললো, ভয়ার্ত কন্ঠে বললো,
– আকাশ, এটা ঠিক না!
আকাশ বৃষ্টির হাত সরিয়ে দিয়ে মুচকি একটা হাসি দিলো। অত:পর কপালে আরেকবার ঠোঁটের ছোয়া দিয়ে বললো,
– এখনই এতো কাছে যাবো নাকি! আস্তে আস্তে হবে সবটা!
– আকাশ, বিয়ে ছাড়া একটা ছেলে একটা মেয়ে কাছে আসতে পারে না! এসব পাপ!
– বাহ! একটা ছেলেকে দেখেই ভালো লেগে যায় আর ভালোবেসে ফেলো সেটা পাপ হয় না আর কাছে এলে পাপ!
বৃষ্টি দৃষ্টি নিচের দিকে নামিয়ে বললো,
– সেটাও পাপ তবে হয়তোবা তার চেয়ে সীমিত! জানো, আমি কোনো ছেলের প্রতি ইন্টারেস্টেড হইনি কখনো। কেন জানি, না চাইতেও তোমার প্রতি সেটা হয়ে গেছে!
– ভয় পেয়ো না, বিয়ের পর না হয় সম্পূর্ণ অধিকার নিয়েই যাবো।
এক আঙুল দিয়ে কপাল স্পর্শ করে বললো “এখন এ পর্যন্তই” আঙুল আস্তে আস্তে নিচের দিকে নামিয়ে নাকে এনে বললো “তারপর এখানে” আঙুল আরও নিচে নামিয়ে ঠোঁটে এনে বললো “তারপর এখানে”! বৃষ্টি ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে। আকাশ হুট করেই তাকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় এনে নামিয়ে দিলো। বৃষ্টি তাড়াহুড়ো করে উঠতে গেলে আকাশ বাধা দিলো। নিজেও শুয়ে পড়লো বৃষ্টির সাথে। বৃষ্টি ভয় পেয়ে বললো,
– আকাশ কি করছো তুমি! যেতে দাও আমাকে! আমার এখন যাওয়া প্রয়োজন!
আকাশ তার মাথাটা টেনে বুকে চেপে ধরে বললো,
– হুশ! এতো ভয় পাচ্ছো কেন তুমি! ভালোবাসায় তো ভয় থাকে না! থাকবে শুধুই জয়! একটু চুপচাপ থাকো না এখানে! কেন জানি এই দিকটা খুব অশান্ত হয়ে আছে! একটু শান্ত করে দাও তো। সিলেট থেকে তো কতোবার বলেছিলে একটা রাত আমার বুকে কাটাবে! এখন আমি বলছি, তোমার যত রাত আর যত দিন ইচ্ছে হয় কাটাতে পারো এখানে। একটুও নিষেধ করবো না। সারাজীবন কাটাও!
– এখন এক মুহুর্তও সম্ভব না! প্লিজ আকাশ, আমার অসস্তি লাগছে!
– তোমার ভয় কাটেনি এখনো?
বৃষ্টি কোন জবাব দিলো না! আকাশ আবার বললো,
– বৃষ্টি বিশ্বাস করো, ভালোবাসি! আর আজ যেটা হয়েছে তোমাকে একটু ভয় দেখানোর জন্য, যাতে যখন তখন আমাকে কাছে না চাও!
– ভালোবাসো! আমি কি খুব বেশি সময় চাই তোমার কাছে? প্রতিদিন দেখা করতে বলি! প্রতি মুহূর্তে কল করে বিরক্ত করি! এতো অবহেলা কেন! একটু আধটু কথাবার্তা, দেখা সাক্ষাৎ করলে কি আমার ক্যারিয়ারের মহামারি ক্ষতি হয়ে যাবে! তুমিই বলো, এ দুমাসে আমার সাথে কতবার দেখা করেছো আর কতটা সময় দিয়েছো আমাকে! বলো!
– বৃষ্টি, বুঝতে পারছো না কেন! একবার কোনোকিছুতে ভালো লেগে গেলে মানুষ লোভী হয়ে যায় এবং বারবার তা পেতে চায়! আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারবো না ভেবে তোমার ডাকে সাড়া কম দিয়েছি!
– জানো আকাশ! সেদিন খুব কষ্ট লেগেছে আমার। তোমার জন্য নিজের হাতে রান্না করে নিয়ে এসেছিলাম। এতো করে বললাম তবুও তুমি এলে না রেস্টুরেন্ট! কেন? দশ পনেরো মিনিটের জন্যও কি আসা যেতো না! ইম্পর্ট্যান্ট কাজও তো হতে পারতো! একটু দেখা করে চলে আসতে পারতে! আমি একা একা গিয়ে বসেছিলাম! অপেক্ষা করেছি তোমার, কল করেছি বারবার। রিসিভও করলে না একবার!
– গিয়েছিলাম আমি সেদিন।
– মিথ্যে বলছো কেন! আমি অনেক্ক্ষণ অপেক্ষা করেছি সেখানে!
– মিথ্যে বলছি না। যথাসময়ে আমি গিয়েছি এবং তোমাকে দেখেছিও কিন্তু সামনে যাইনি! কেননা তুমি সেদিন শাড়ি পড়েছিলে!
বৃষ্টি চমকে উঠে মাথা তুলে আকাশের মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,
– হোয়াট! এজন্য তুমি সামনে যাওনি! আমি তো তোমার জন্যই শাড়ি পড়েছি!
– আমার জন্য পড়েছো বলেই তো যাইনি! কিছু কিছু মুহুর্তে নিজেকে সামলে রাখা দায়! তাছাড়া সেদিন আমি তোমার কাছে গেলে অন্যদিন আবার দেখা করতে চাইতে, আবার আমার জন্য খাবার রান্না করতে, আবার শাড়ি পড়ে আসতে!
বৃষ্টির নাক টেনে আবার বললো,
– কিন্তু ভেঙে ফেলেছো আমার ধৈর্য শক্তির বাধ! এবার রক্ষা নেই তোমার! বলেছো না ষোলো তারিখ তোমার বিয়ে! বাসায় যাও, ষোলো তারিখই তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে!
বৃষ্টি উঠে বসে বিছানা থেকে নামতে নামতে বললো,
– কিসের সারপ্রাইজ দিবে! বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবে এইতো!
আকাশ শোয়া থেকে উঠে বসে বললো,
– এই, তুমি আগেই বুঝে ফেলেছো! সারপ্রাইজড হওনি!
– না। অযথা প্রস্তাব পাঠিয়ে কোনো লাভ নেই! কেননা কোনমতেই বাবা মা এখন বিয়ে দিবে না! আগে মেডিক্যালে চান্স পেয়ে পড়াশোনা শেষ করবো তারপর বিয়ের চিন্তাভাবনা!
আকাশ হেসে বললো,
– তা না হয় না দিক! কিন্তু সারপ্রাইজ তোমাকে দেবোই!
– আচ্ছা, দেখা যাবে! আমি এখন কোথায় আছি?
– শ্বশুর বাড়ি।
– মানে!
– মানে আবার কি! বরের বাপের বাড়ি!
– হোয়াট! এটা তোমাদের বাসা!
– হ্যাঁ, আর এটা আমাদের বেডরুম। বিয়ের পর এখানেই তোমার আমার বাসর হবে।
– আকাশ তুমি এতোটা পাগল কিভাবে হতে পারো! বিয়ের আগে শ্বশুর বাড়িতে তাও আবার বেডরুম পর্যন্ত নিয়ে এসেছো! বাসার বাকি লোকজন কোথায়! তুমি আমাকে ধরে বেধে নিয়ে এসেছো কেউই দেখলো না কেন!
– দেখার মতো কেউ নেই বেগম সাহেবা! এ রাজ্যের রাজা আমি আর রানী তুমি! প্রজাহীন রাজ্য ও রাজত্ব এখন আমাদের!
বৃষ্টি মেঝে থেকে আকাশের শার্ট উঠিয়ে তার দিকে আসতে আসতে বললো,
– তোমার আচরণগুলো সব আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে আজ! মেন্টাল হসপিটালে যাও। তোমার চিকিৎসা দরকার। ধরো শার্ট পড়ো।
আকাশ বিছানা ছেড়ে নামতে নামতে বললো,
– ঠিক বলেছো, চিকিৎসা করাতে হবে! রোগীর সেবা করার জন্য তোমাকেও প্রয়োজন। চলো হসপিটালে যাই!
কথা বলেই আকাশ হেসে উঠলো। বৃষ্টি শার্ট নিয়ে দাড়িয়ে আছে। আকাশ তার কাছে এসে হাত বাড়িয়ে বললো,
– পড়িয়ে দাও।
বৃষ্টি পড়িয়ে দিতে লাগলো আর আকাশ বললো,
– ক্ষুধা লেগেছে প্রচুর। কোথায় যাবে ব্রেকফাস্টের জন্য?
– আমার কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই! বাসা থেকে খেয়ে বেরিয়েছি। তুমি খাও গিয়ে!
– এক কাজ করো তাহলে, কিচেনে গিয়ে তুমি রান্না করো তারপর দুজন মিলে খাই!
– আকাশ তুমি আসলেই পাগল হয়ে গেছো! আমি চিন্তা করছি কখন এ বাড়ি থেকে বের হবো আর তুমি বলছো রান্না করতে! বিয়ের পরবর্তী কাজ আগেই করিয়ে ফেলতে চাইছো! পরে কিন্তু এসবে আর মজা পাবে না!
– ওকে, করতে হবে না রান্না। পরেই করো কিন্তু আমার মায়ের মতো জীবনযাপন করার চেষ্টা করো না! তাহলে আমার কাছে কোনো মর্যাদা পাবে না।
– যথা আজ্ঞে মহারাজ! চুল ঠিক করো।
– তুমি করে দাও।
বৃষ্টি ড্রেসিং টেবিলের কাছে এসে চিরুনি নিয়ে আবার আকাশের কাছে এলো। আকাশ খাটে বসলো বৃষ্টি তার কাজ শুরু করতেই আকাশ থামিয়ে দিয়ে বললো,
– এই তুমি সত্যিই বাসা থেকে খেয়ে এসেছো?
– হুম।
– তাহলে আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করো আমি গোসল সেড়ে আসি।
– কিহ! এখন আবার গোসল!
– গাজীপুর থেকে এসেছি সকালে! গোসল না করা পর্যন্ত ফ্রেশ লাগবে না!
বৃষ্টি ধপাস করে খাটে বসে পড়লো! অত:পর বললো,
– ওকে যাও!
আকাশ শার্ট খুলে জামাকাপড় নিচ্ছে আলমারি থেকে। বৃষ্টি জিজ্ঞেস করলো,
– কতোক্ষন লাগবে?
– এই ধরো ত্রিশ মিনিট!
– আকাশ তুমি মেয়ে না! একজন ছেলের গোসলের জন্য পাচ থেকে সাত মিনিটই যথেষ্ট!
– দুদিন গাজীপুর থেকেছি! গোসলটা ভালোভাবে করা হয়নি! আজ তিনদিনের গোসল একসাথে করবো। চাইলে আসতে পারো আমার সাথে! কাপল বাথ উইল বি মোর ইন্টারেস্টিং!

বৃষ্টি করুণ দৃষ্টিতে তাকালো আর আকাশ হাসতে হাসতে বাথরুমে চলে গেলো। আর যাই হোক, মুগ্ধ হয়ে আকাশের হাসিটা দেখা মিস করে না বৃষ্টি! আকাশ বাথরুম থেকেই বললো, “বৃষ্টি, রুমের বাইরে বের হবে না। আর বাথরুমের দরজা খোলা আছে ইচ্ছে হলে চলে এসো!”
বৃষ্টি মুখে মৃদু হাসি ফুটিয়ে মৃদু স্বরে বললো “ইডিয়ট!”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here