গল্প- পিচ্চি মামাতো বোন
পর্ব- ১০
লেখক- ফররুখ আহমেদ শুভ
” সেতুকে জ্বালানোর জন্য ….
মেয়েদের বলতে কাছের মানুষকে জ্বালানোর সহজ উপায় হলো কাছের মানুষের সামনে অন্য মেয়েদের সাথে কথা বলা।
শ্বশুরবাড়ির তে যাওয়ার পর সেতুদের সব আত্মীয় রা ছিল। গিয়ে দেখি আফরিন ওহ আছেই। মেয়েটার মনটা অনেক খারাপ। কপালে যা থাকে তাই তো হয়।
আমাদের যে থাকার রূম দেওয়া হয়েছে ঐ রুমে আগে থেকেই সেতু ছিল। পরে গেলাম গিয়ে দেখি সেতুর সব সেতুর বোন গুলো একসাথে বসে আছে।
আমিও তাদের সাথে যোগ দিলাম। ওদের ভিতর থেকেই একটা মেয়ে দোলাভাই কত হ্যানসাম
আমি :ওমা তাই নাকি । তুমিও অনেক কিউট। সেতুর সাথে বিয়ে না হলে তোমাকেই বিয়ে করতাম।
সবাই হেসে দিল। তখন আরেকটা মেয়ে দোলাভাই সেতুকে হানিমনে কই নিয়ে যাবেন
আমি : সেতুকে নিয়ে হানিমনে যায়া কী হব। হানিমন তো সালিদের নিয়া যাইতে হয় তাহলে মজা বেশি হয়। আমি তো ভাবছি সেতুকে রেখে তোমাদের সবাইকে নিয়ে হানি মনে যাব।
মেয়ে গুলো :আহারে সেতুকে রাইখা গেলে সেতু কষ্ট পাইবো
আমি :সেতু আন রোমান্টিক একটা মেয়ে। সেতুকে নিয়ে হানিমনে গেলে টাকাটাই নষ্ট। তা না তোমরা অনেক রোমান্টিক মনে হয়তাছে
সেতু এর দিকে তাকিয়ে দেখি সেতু সাপের মতো ফস ফস করতেছে।
সেতু :যা তোরা সবাই যা,,ঘর থেকে বের হো। আমি ঘুমাবো অনেক ঘুম ধরছে
একটা মেয়ে :হুম চলে যাচ্ছি তোর স্বামী এর ভাগ আমি নিব না।
এই বলে সবাই চলে গেল। সেতু ধরজা আটকিয়ে দিল। আর আমার কাছে এসে বলতে লাগল ছি ছি অন্য মেয়েকে হানিমনে যেতে চাও সরম করে না
আমি : বুঝলাম না আমি তো ওদের সাথে মজা করে বলছি।
পরে সেতু সুয়ে পরল আমিও সূয়ে থেকে গেম খেলতেছি ফুল সাউন্ড দিয়ে যেন সেতু ঘুমাতে না পারে।
সেতু : বাইরে গিয়ে গেইম খেলুন আমার ঘুমের সমস্যা হচ্ছে।
আমি :সমস্যা হলে অন্য ঘরে গিয়ে ঘুমাও।
সেতু পরে ফোনটা নিয়ে রেখে দিল। আমিও বাচ্চাদের মতো সুয়ে রইলাম ।
এভাবেই ঝগরা সেতুর অপমান আমি কোনো দিন বাবা হতে পারব না। সে ডিফোর্স ওহ চাই প্রতিদিন আমি কিছুই বলি না। 7 দিন শুনলাম এসব।
এখন রংপুর চলে যাচ্ছি অফিসে সেতু কে রেখে যাচ্ছি। পরে সবকিছু ঠিক করে সেতূকেও নিয়ে যাব।
সবার কাছে থেকে বিদায় নিয়ে নিলাম। এখন সেতুর কাছে গেলাম
আমি : ভালোভাবে থেকো। আর দোয়া করিও আমার জন্য।
সেতু : দোয়া করে কী হবে..তুমি মরলেই আমি খুশি হবো।
আমি :তুমী এটা বলতে পারলে
সেতু :যেটা শততি ওটাই বললাম
আমি আর কিছু না বলে চলে আসলাম। বের হাসি মুখে আব্বু আম্মু এর কাছে থেকে বিদায় নিলাম। কিন্তু ঐ সময় আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল মনে হইতেছিল যে আমি কান্না করি।
আমি এত বিরক্ত কর হয়ে গেছি যে কেউ একজন আমাকে মরার কথা বলছে। ভিতরে কষ্ট আর বাইরে হাসি নিয়ে চলে গেলাম চাকরি করতে।
সকালের গাড়িতে গেছি তারাতারি পৌছায়ছি। রাতে আম্মুর ঐ যায়গায় কল দিছিলাম আম্মুকেই জিগ্যেস করছি সেতুর কথা । সেতুকেঊ ফোন দিছিলাম কিন্ত রিসিভ করে নি। কেটে দিছে।
পরের দিন সকালে উঠে অফিসের জন্য রেডি হয়ে অফিসে গেলাম। যাওয়ার পরেই পিয়ন এসে বলল ম্যাডাম আপনাকে ডাকল।
আমি ভাবতে লাগলাম আগে তো স্যার ছিল এখন ম্যাডাম কই থেকে আসল।
ভাবাভাবি বাদ দিয়া গেলাম ম্যাডাম এর রুমের সামনে গিয়ে
আমি :মেডাম আসতে পারি
ম্যাডাম :হুম আসেন
আমি ভিতরে গিয়ে ম্যাডামকে দেখে তো অভাক। কারন ম্যাডাম আর কেউ নই বিয়ে বাড়ির সেই আফরিন । আফরিন দেখে ভয় পেয়ে গেলাম বিয়ে বাড়িতে যা কিছু করছি। চাকরি থেক্র বের করেই দেই নাকি আবার। ভয়ে ভয়ে কাছে গিয়ে
আমি : আপনি আমাকে ডেকেছেন ম্যাডাম
আফরিন : হুম। তা কেমন আছেন আর আপনার বউ কেমন আছে
আমি : আমি ভালো আছি আর আমার বউ ওহ ভালো আছে।
আফরিন :ভালো থাকলেই ভালো।
আমি :ম্যাডাম সেদিনের ভুলগুলো এর জন্য দুঃখিত। মাপ করে দিবেন
আফরিন : ওসব আমি ভুলে গেছি । আপনার বউকে সাথে নিয়ে এসেছেন
আমি : না। কিছুদিন পরে নিয়ে আসব
আফরিন : নিয়া আসলে আমাদের বাড়িতে নিয়ে যায়েন সময় করে
আমি : আপনি বসের কী হন
আফরিন : আপনার বস আমার বাবা হয়। এমনেই আপনার সাথে দেখা এবং অফিস টা ঘুরে দেখতে এসেছি
আমি :ম্যাডাম তাহলে আসি। অনেক কাজ করতে হবে অনেক দিন পর আসলাম দেখতেই তো পারছেন ।
আফরিন :এর পর কোনো দিন দেখা হলে ম্যাডাম বলবা না। নাম ধরে বলব এবং তুমি করে বলবা
আমি : জ্বী
পরে আসলাম কেবিনে। কেবিনে বস কাজ করা শুরু করলাম।।
কাজ শেষ করে ম্যাচ এর দিকে রওনা দিলাম । আজকে অফিস ছুটির আগেই বের হয়েছি। কারন হলো একটা বাসা খুজে বের করতে হবে। ম্যাচে তো আর বউ নিয়ে থাকা যাবে নাহ।
বাসা খুজেও পেলাম। বাসা ঠিক করে ম্যাচে ফিরলাম পরেরদিন বাসায় সিফট হবো। পরে বাসায় সিফট হলাম এখন বাসায় থেকে অফিসে যাওয়া আসা করি। আমি রংপুর এসেছি ৭ দিন হয়ে গেছে। এই সাত দিনে সেতূকে কল মেছেজ দিছি কিন্তু কোনো রিপলে পাইনি।
একদিন সেতু আব্বু আম্মূ এবং সেতুর আব্বূ আম্মু সবাই একখানে বসে থেকে গল্প করছিল তখন সেতু সবাইকৈ একটা প্রশ্ন করে
সেতু : আমমু ওর কী কোনোদিন বড়সর এক্সিডেন্ট হয়েছিল
আম্মু :না। শুভ খুব সাবধানে চলাচল করে
সবাই নাই করল কারন আমার তো এক্সিডেন্ট হয় নি।
সেতু : কিন্তু ওত বলল ওর একটা বড় এক্সিডেন্ট হয়েছিল তারপর থেকে ওহ বাবা হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে
আম্মু : তোমার সাথে মজা করার জন্য বলেছে এসব ওতো কোনো ডাক্তার দেখানোর জন্য হাসপাতালেও যাইনি।
সেতু :আমি তো অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি
মামা-মামি, আব্বু-আম্মু : কী ভুল?
সেতু :………………………………….
(চলবে)