পুনম পর্বঃ১৮

0
1259

#পুনম
#আয়েশা_সিদ্দিকা
পর্বঃ১৮

কলিং বেলের শব্দে তারিনের ঘুম ছুটে যায়….দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সকাল দশটা বেজে গেছে। উফফ! এতবেলা পর্যন্ত কখনো ঘুমায় না তারিন। তবে আজ কেন?
চোখে হাত দিয়ে উঠে পড়ে মিতু পরক্ষনেই আবার উপর হয়ে বুকে ভর দিয়ে শুয়ে পড়ে।উফফ! এই মেয়েটা পুরো বাবার স্বভাব পেয়েছে।রাশেদেও বুকে ভর দিয়ে ঘুমায়। ওয়াশরুম থেকে পানির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। তার মানে রাশেদ ফ্রেশ হচ্ছে। মিতু কে উঠতে বলে তারিন এলোমেলো চুলে হাত খোপা করে নেয়।দু’পার্টের স্লিপিং স্যুটটা ঠিক করে স্কার্ফটা গায়ে জরিয়ে দরজা খুলতে যায়। তখন থেকেই অনবরত কলিং বেলটা বেজে যাচ্ছে। এত অধৈর্য্য! আসছি বলে… একটানে দরজা খুলে যাকে দেখতে পায় তাকে তারিন আশা করে নি এই মুহুর্তে! মুহুর্তেই দু-চোখ ছাপিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে। স্তব্ধ তারিন দরজার পাল্লাটা শক্ত করে চেপে ধরে।দরজার ওপাশে শায়লা হক ও ছলছল চোখে তাকিয়ে থাকে। তার একমাত্র মেয়ে, বড় আদরের সন্তান। কতটা বছর হলো দেখেনা এই মুখ। তৃষ্ণার্ত হরিণের মত ঝাপিয়ে পড়ে তারিন মায়ের বুকে। হু হু করে কেঁদে ওঠে। মা.. মা.. করে চিৎকার করে ওঠে তারিন। মায়ের মুখে পরম যত্নে হাত বুলিয়ে দেয়।মায়ের বুকে মুখ লুকিয়ে চুমু খায় ঠিক ছোটবেলার মতন।শায়লা হাসে! সুখের হাসি!
শাহেদ ও মিতু তারিনের কান্নার শব্দে রুম থেকে দৌড়িয়ে আসে।অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে তারিন তার মায়ের বুকে মুখ লুকিয়ে কাঁদছে আর পাশে তানভীর অশ্রুসিক্ত নেত্রে দাঁড়িয়ে আছে।রাশেদের তার শাশুড়ীর মুখটা চিনতে ভুল হয় না।যেদিন ঐ বাড়ি থেকে বের হয়ে এসেছিল সেদিন শশুড়ের মুখ রাগে ক্রোধান্বিত থাকলেও শাশুড়ীর মুখে ছিল স্বস্তির হাসি।
রাশেদ শাশুড়ীকে সালাম করে জরিয়ে ধরে বলে ওঠে,
—এতদিন পর মায়ের মনে হলো আমাদের?
শায়লার খুব ভালো লাগলো রাশেদের ব্যবহার।রাশেদ একহাত দিয়ে জরিয়ে ধরে মা কে নিয়ে রুমে প্রবেশ করে।তারিন ভাইয়ের হাত শক্ত করে ধরে বলে, বাবা?
—-কিচ্ছু হবে না বুবু……..বলে বোনকে আশ্বস্ত করে তানভীর।
সোফায় বসে এতক্ষণ মিতু চুুপচাপ দেখছিল মায়ের কান্না। সদ্য ঘুম থেকে ওঠা চোখে চরম কৌতুহল!
রাশেদ বলে ওঠে —দেখুন তো মা চিনতে পারেন কিনা?

শায়লা মমতা ভরা চোখে চেয়ে দেখেন নিজ সন্তানের আত্মজাকে।মিতু আধো আধো স্বরে বলে ওঠে,
—-তুমি কি আমার নানুমনি?
উত্তরে শায়লা হক নাতিকে কোলে নিয়ে অসংখ্য চুমুতে ভরিয়ে দেন।তারিনের মুখে লেপ্টে রয়েছে এক অনাবিল স্নিগ্ধ হাসি!
তানভীর বিড়বিড় করে বলে ওঠে,
—-পুনমি, আমার পুনমি… এবার তোমার মুখের হাসির কারণ হবো আমি!
******************
পুনম অনেকক্ষণ ধরে বল্টুকে কল করে যাচ্ছে ছেলেটা রিসিভই করছে না। বিরক্তি তে কপাল কুঁচকে আসে পুনমের।ধুঁত! এই ছেলেটাকে জরুরী মুহুর্তে কখনো পাওয়া যায় না।তখনই বল্টু কল ব্যাক করে।
পুনম কল রিসিভ করে বলে ওঠে, —হ্যালো!হ্যালো! এই বল্টু শুনতে পাচ্ছিস…হ্যালো!
—- এত হ্যালো হ্যালো কেন করছিস।আমি কি কানা নাকি তোর মত…কি হয়েছে বল?
বল্টুর কন্ঠে মেজাজের ধাঁচ।
—-আরে এত রেগে আছিস কেন?
—বলতেছি, আগে বল তুই এত কল দিলি কে?
—-তোর কি কোন জানা শুনা মানে পরিচিত আইনজীবী সম্পর্কে জানা আছে?
—নেই তবে, খোঁজ নিয়ে দেখতে পারি।
পুনম ফিসফিসিয়ে অনুরোধের কন্ঠে বলে,
—দেখিস দোস্ত, খুব আর্জেন্ট! এখন বল বোম হয়ে আছিস কেন?
—–আরে ঈদের পর সব বন্ধুরা মিলে ট্যুরে যাওয়ার প্লান করছি,সব ঠিক ঠাক।এখন রিমি জেদ ধরেছে তাকে সাথে নিয়ে যেতে হবে। আরে এত বললাম পসিবল না।তারপরও গ্যাজাইতে আছে…সে নাকি যাবে। আমরা বন্ধুরা যাব আমাদের ভার্সিটি লাইফ শেষ হওয়ার আগে সবাই একসাথে সময় কাটাতে আর সেখানে গার্লফ্রেন্ড নিয়ে আমি লুতুপুতু করবো।বল তুই? কারো সাথে মজা করতে পারবো ঐ চিপকুর সাথে লেগে থাকতে হবে অলটাইম।এই নিয়ে ঝগড়া বাঁধছে।
—–ও তা কোথায় যাচ্ছিস?
—-কক্সবাজার। ঈদের পরপরই। ও হ্যা ভালো কথা। তুই কিন্তু যাচ্ছিস।
—–আমি যাবো না বল্টু।
—–দেখ পুনম রিমির মত গ্যাজাবিনা।সাকিব, শিমুল, বর্ষা, নাহিদ শশী সবাই যাবে আর তুই যাবি না তা হবে না।আর বড় কথা আংকেলের কাছ থেকে পারমিশন নিছি, ডিপার্টমেন্টে টাকা জমা দিয়ে দিছি।এখন তুই না গেলে তোর ঘার যাবে।
পুনম অবাক হয়।বাবা পারমিশন দিয়ে দিলো।কই আমায় তো জিজ্ঞেস করলো না একবারও।আর টাকা দিলো কে?
—-টাকা কে দিয়েছে বল্টু? আমার কাছে আগে কেন বললি না।
—-তোর বরের শশুড়ে দিয়েছে। হয়েছে বুঝেছিস?আর আমায় পাগল কুত্তায় কামরায় নায় যে আগে তোরে বলি আর তুই সবসময়ের মত সব ভেস্তে দে…..

পুনম পুরোপুরি হতাশ হয়!এই ছেলেটা পারেও বটে। বাবার উপরও রাগ হয়,ওকে না জানিয়ে টাকা দিয়ে দিলো।বাবা এত টাকা কোথায় পেলো?
—–আমার জায়গায় রিমিকে নিয়ে যা বল্টু…আমার যেতে মন চাইছে না।
—-তানভীর ভাইয়ের মত আমারো মাঝে মাঝে মনে হয় তোর ভিতরে আসলে মন নামক কোন শব্দ আছে কিনা? তুই না যেতে চাইলেও এবার আমরা তোকে উঠিয়ে নিয়ে যাবো, বুঝেছিস? তো ঘাউড়ামি বন্ধ কর এবার।

পুনম বুঝতে পারে কিছু বলে আর লাভ হবে না। তাই প্রসঙ্গ পাল্টে বলে,
—-শুনলাম রিমির চাচাতো ভাই নাকি বেড়াতে আসবে ঈদের পর।চিনছিস তো কে? তোর গার্লফ্রেন্ডের উপর ফিদা যে।এখন তার কাছে ছেড়ে যাবি রিমিকে যদি…..
বল্টুর মেজাজ খারাপ হয়।কই ও তো জানে না।রিমি কেন ওকে বললো না? ঐ ছেলেটাকে একদম সহ্য করতে পারে না বল্টু তাই পুনম এই কথা বললো।এখন রিমিকে আর রেখে যাবে না।
বল্টু রাখছি বলে কল কেটে দেয়। পুনম হেসে ফেলে।বুঝুক মজা এবার।আমাকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়…. এবার নিজের প্রেম সামলা। হুহ!
বল্টু অনবরত কল দিতে থাকে রিমিকে কিন্তু সে রিসিব করে না। কেন করবে একটু আগে কতগুলো ঝাড়ি দিয়েছে বল্টু। বল্টু নিজের চুল খামছে ধরে।মনে মনে প্রেমের চৌদ্দ গুষ্টিকে গালি দিয়ে হোন্ডার চাবি নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে, উদ্দেশ্য রিমির বাসা…..

****************
রাজু থরথর করে কাঁপছে। তার সামনে হায়দার হোসন বসে আছে।এয়ারপোর্ট থেকে সোজা বাসায় এসেছেন সে।আর এসেই শায়লাকে বাসায় না দেখতে পেয়ে তার মেজাজ গরম হয়ে রয়েছ। রাজু এখন এক এক করে সব খবর বলে যাচ্ছে তানভীরের। এতদিন যা করেছে সব শুনে হায়দার হোসেনের রাগে চোখ মুখ লাল হয়ে আসে। এত বড় স্পর্ধা! তারই ছেলে একটা ফকিন্নির জন্য জানে মরে যাচ্ছে! এর জবাব এবং শাস্তি দুটোই তানভীরের কাছ থেকে নিবে এবং দিবে!
কাজের মেয়েটি ঠান্ডা পানি এগিয়ে দিলো অসহনীয় রাগে হায়দার হোসেন ট্রেসহ গ্লাস ফ্লোরে ছুরে মারেন।চিৎকার করে বলে উঠেন,….এ বাড়িতে কোন অনিয়ম চলবে না রাজু।আমার মুখোমুখি হওয়ার জন্য তোমার তানভীর স্যার কে প্রস্তুত থাকতে বলো!
কাজের মেয়েটি ভয়ে উল্টো ঘুরে দৌড় দেয়…..রান্নাঘরের দিকে।

রাজু কয়েক ঢোক গিলে, তোতলাতে থাকে কথার উত্তরে সে কিছুই বলতে পারে না।রাজু টের পায় ওর হাটু কাঁপছে! ভীষণ ভয় পায় রাজু বড় স্যার কে। সে জানে তার বড় স্যার নিজ সন্তুষ্টির জন্য সব করতে পারে, সব!

পরক্ষণেই রাজু অবাক হয়ে দেখে তার বড় স্যারের রাগি মুখ হাসি মুখে পরিনত হয়েছে।কুঞ্চিত কপালের বিন্দু বিন্দু ঘাম হটাৎ করে উধাও হয়ে গেছে।
সদর দরজা দিয়ে তারুণ স্যারকে প্রবেশ করতে দেখে তার কারণ স্পষ্ট হলো। তারুণ এগিয়ে এসে বাবাকে জরিয়ে ধরে।হায়দার হোসেনও আনন্দের সাথে তারুণকে বুকে আগলে ধরেন। রাজু শুনতে পায় তারুণ বাবার কাছে অভিযোগ করছে, কেন পনের দিনের কথা বলে এত বেশি দিন থাকলো?আর বড় স্যারও ছেলের অভিযোগে কান ধরে স্যরি বলছেন! রাজু অবাক হতে গিয়েও অবাক হয় না।সে তার বড় স্যারকে বুঝতে পারে না।কেন সবসময় সে তানভীর স্যারের দোষ ধরেন আর তারুণ স্যারকে পশ্রয় দেন? দুইজনই তো তার সন্তান অথচ হায়দার হোসেনের আচরণে বুঝায় দুইজন দুই মায়ের সন্তান!

****************
এখন বাজে দুপুর তিনটা, লাবণ্য ঘুম ঘুম চোখে বাসার সামনের রাস্তায় এসে দাঁড়ালো। লাবণ্য কেবল ঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছিল এর মধ্যে তারুণ কল করে বের হতে বললো।লাবণ্য বুঝতে পারছে না এই ভর দুপুরে তারুণের মত পড়ুয়া ছেলের ওর কাছে কি কাজ? এই ছেলের এখন থাকা উচিত পড়ার টেবিলে।লাবণ্যের মাঝে মাঝে সন্দেহ হয়, এই ছেলে নিশ্চিত ভাতের বদলে তিনবেলা পড়া খায়! কে জানে? বড়লোকের ছেলে ভাত আদোও খায় নাকি?
তারুণকে গাড়ি থেকে নামতে দেখে লাবন্য হেঁটে রাস্তার অপজিটে যায়। তারুণ ওকে দেখে হাসে।যাকে বলে ইনোসেন্ট হাসি।লাবণ্যের মনে হয় এই ছেলে সাত খুন করার পর যদি এরকম ইনোসেন্ট মার্কা হাসি দেয় তবে বিচারক কাঁত হয়ে যাবে কনফিউশানে!
—-কেমন আছো লাবণ্য?
—–ভালো, তা ব্রো তুমি হটাৎ? মিস করছিলে বুঝি?
তারুণ এখন আর লাবণ্যের আচরণে হতাশ হয় না।কই কেমন আছোর বিপরীতে তো ওর জিজ্ঞেস করা উচিত ছিলো আমি কেমন আছি? তা জানতে না চেয়ে যত উদ্ভট রকমের কথা! তারুণ রাগ করে, তবে মনে মনে।গাড়ি গেট খুলে একটা বক্স বের করে লাবণ্যর হাতে তুলে দেয় তারুণ। লাবণ্য জিজ্ঞাসা দৃষ্টিতে তাকালে তারুণ বলে,
—–তোমার জন্য, মেকাপ সামগ্রী!বাবা বাহির থেকে এনেছে।
লাবণ্যের মুখে হাসি ফুটে ওঠে আবার হাসি বন্ধ করে সন্দেহের চোখে বলে, —-কেন দিচ্ছো?
—–বন্ধু বলে……
লাবণ্য আবার মুচকি হাসে। আবার হাসি মিলিয়ে যায়।
তারুণ তা দেখে জানতে চায়,—-কি হলো?
—-আমি তো তোমায় কিছু দেয়নি তবে তোমার গিফট কি করে নেই?
তারুণ কিছু বলতে চায় কিন্তু তা পারে না।লাবণ্য ওর হাতে মেকাপ বক্স ধরিয়ে দিয়ে বাসার দিকে দৌড় দেয়। তারুণ চিৎকার করে বলে,—আশ্চর্য!
একটু পরেই লাবণ্য হাতে একটা লাল গোলাপ নিয়ে আসে তারুণের কাছে।লাবণ্যের তারুণের এলোমেলো কোঁকড়া চুলগুলো খুব পছন্দের! ঝাকড়া কোঁকড়া চুলগুলো সবসময় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে কাঁধ ও মুখের উপর। লাবণ্য দু পা এগিয়ে আরো সামনে এসে দাঁড়ায়। তারুণের এলোমেলো চুলে হাত দিয়ে আরো এলোমেলো করে দিয়ে গোলাপটা কানের পাশে গুঁজে দেয়। তারুণ চরম অবাক হয়!মেয়েদের মত ওর কানে এই বদমায়েশ মেয়েটা ফুল গুঁজে দিয়েছে। অসহ্য! তারুণ চোখ গরম করে তাকায়
লাবণ্য খিলখিল করে হেসে বলে,
—-ও তারু….তুমি মেয়ে হলে না কেন বলতো? আমরা দুজন তাহলে বেস্টি হয়ে যেতাম আর অলটাইম তোমায় সাজাতাম। আরে আরে রাগ করো না….আমার তো তোমায় দেয়ার মত কিছু নেই তাই আমার গাছের ফুল দিলাম।তোমার দু হাত তো আটকা তাই কানে গুঁজে দিয়েছি ফুল। বুঝেছো?
তারুণ রাগ করতে গিয়েও হেসে দেয়।এই মেয়েটা এত দুষ্টু!লাবণ্য হেলে দুলে হেঁটে তার মেকাপ নিয়ে বাসায় যায়।সে আজ ভীষণ খুশি।যাকে বলে ঈদের মত খুশি!

*****************
সুমনের শরীর ম্যাজ ম্যাজ করছে।একেতো সবে জ্বর থেকে উঠেছে তার উপর রাত জেগে কাজ করা।কম ঝক্কির?সুমন রাতে একটা বড় গাড়ির গ্যারেজে কাজ করে।বড়লোকেরা সারাদিন যে গাড়ি চালায় তা রাত হলে ওয়াশ করে সুমন। বেতন মোটামুটি তবে সারা রাত ভিজে কাজ করতে হয়।এই কাজটা ও নিত না কিন্তু বড় ভাইজানের কাছে টাকা চাইতে গেলে বড় ভাইজান ইদানিং আজেবাজে কথা বলে।চাকরির তো চেষ্টা করছে তা তো হচ্ছে না।তাই পকেট খরচার জন্য হলেও এই কাজ করা আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছিল।মাঝে মাঝে নিজের বাবার প্রতি রাগ হয়, কেন ওর জন্য অল্প হলেও একটু সম্পত্তি রেখে গেলো না? একই বংশের ছেলে ওরা তারপরও বড় ভাইজানের কত টাকা পয়সা ওর কিচ্ছু নেই।মাঝে মাঝে জানতে মনে চায় বাবা কি এমন সমস্যায় পড়েছিল যে সব বিক্রি করে দিতে হলো?

এসব ভাবতে ভাবতে সুমন মার্কেটে প্রবেশ করে উদ্দেশ্য পাবনীর জন্য কিছু কিনবে।কি কিনবে তাই ভেবে উঠতে পারলো না? কখনো তো কারো জন্য কেনা হয়নি। পাবনীর জন্য না কিনে সুমন পাবনীর আম্মা আব্বার জন্য পাঞ্জাবি আর কাপড় কিনে ফেলে।এই কাপড় দুটো কিনে খুব স্বস্তি পায় সুমন,মনে হচ্ছে নিজের বাবা মার জন্য কিনলো। বুকের ভিতরটা জ্বলে ওঠে, বাবা মা বেঁচে থাকলে তাদের জন্য তো সুমন কিনতো! এরমধ্যেই পুনম কল করে,
—-সুমন ভাই আপনি কোথায়?
—-এই তো মার্কেটে।
—-কেনা কাটা করছেন বুঝি।তা টাকা পেলেন কোথায়? গাড়ি ঘসাঘসির টাকা বুঝি।
—তুমি জানলে কি করে পুনম?
—-আপনার নাড়ী নক্ষত্র সব জানি আমি। পাবনী মানে আমার সেজো আপা কাচের চুড়ি খুব পছন্দ করে, বুঝেছেন সুমন ভাই?….বলে কল কেটে দেয় পুনম।

উফফ!এই মেয়েটা এত ঠোঁট কাটা।এর মুখে কিছু আটকায় না।

**************

শেষ বিকেলে পুনম ঘুমিয়ে ছিলো।ঘুম থেকে উঠে দেখে ড্রয়িং রুমে বল্টু বসা বাবার সামনে।এই ছেলে হটাৎ তার বাসায় কেনো? সকালেই তো কথা হলো।চিন্তিত মুখে ড্রয়িং রুমে প্রবেশ করে দেখতে পায়, টি টেবিলের উপর নতুন একটা এন্ড্রয়েড ফোন রাখা। আশ্চর্য হয়ে পুনম জানতে চায়, —-ফোন কোথা থেকে এলো বাবা?

চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here