#পুলিশ_গার্লফ্রেন্ড
#Himant_Himu
…
প্রথম পর্ব
…
একেতো গরমকাল,তার ওপর চলে করোনার লকডাউন।সেখানে আবার পুলিশের অত্যাচার।ঘরে বসে থাকতে থাকতে আর ভালো লাগছিলো না।এই সময়টাতে করোনা একটু কম তাই পুলিশের অত্যাচারও একটু কম।হয়তো কয়েকদিন পর আবারো লকডাউনে ফেলে দিবে।
…
যাইহোক,আমি হিমু,ইন্টার ২য় বর্ষের ছাত্র।যদিও ইচ্ছে হচ্ছিলো না তবুও মায়ের বকুনিতে প্রাইভেটে যেতে হচ্ছে।সামনে ইন্টার পরিক্ষা বলে কথা। অনিচ্ছা সত্বেও কাঁদে কলেজের ব্যাগটা নিয়ে প্রাইভেটের উদ্দেশ্য বেড়িয়ে পরলাম। এই কয়েকমাসে শহরে কিছু পরিবর্তন এসেছে। রাস্তাঘাটে মানুষ তেমন একটা দেখা যায় না। শুধু কর্মজীবীরা কর্মস্থলে যাচ্ছে,আর আমার মতো স্টুডেন্টরা প্রাইভেটে।
…
রিকশায় করে যাচ্ছি আর ভাবছি, ছোটবেলায় যখন প্রাইমারি / হাইস্কুলে পড়তাম,তখন শুধু আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতাম এমন কিছু হোক যেন স্কুল সারাজীবন বন্ধ থাকে। এটাই হইত হয়েছে। মাকে এইযে বোঝাই যে পরিক্ষা হবে না,তবুও মা শুনে না।বাবাই ভালো,একটু বললেই বুঝে যায়।
…
প্রাইভেটে এসে দেখি আমার বাকি ৪ জন ক্লাসমেট আগেই চলে এসেছে। আমরা ৫ জনি এখানে প্রাইভেট পরি।৩ জন মেয়ে ২ জন ছেলে। পুরো যেন কোচিং সেন্টার…
…
~হাই ফ্রেন্ডস…(আমি)
~হ্যালো…তোকে আর কত বলবো যে সময়ের একটু আগে আসবি,একটু আড্ডা দেওয়া যাবে।(সিফাত)
~একসাথে আড্ডা দিলে করোনা ধরবে।না মানে পুলিশ ধরবে।(আমি)
~ওই একটাই হলো, আজকাল পুলিশই এক ধরনের করোনা।(রিতা)
~শালার মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে লেখাপড়া ছেরে দিয়ে একটা মেয়ে পুলিশকে বিয়ে করে ঘরে আটকে রাখি। অন্তত একটা পুলিশতো কমবে!(আমি)
~তো যা না! দেখি কত পাওয়ার!(রুহি)
~থামতো! আমরা ছেলেরা ইচ্ছা করলেই মহিলা পুলিশকে বিয়ে করে বাড়িতে থালাবাসন ধোয়াতে ব্যস্ত রাখতে পারবো।কিন্তু তোরা এটা করতে গেলে নিজেরাই থালাবাসন মাঝায় ব্যাস্ত হয়ে পরবি।(বলেই হাসতে শুরু করলাম।)
~মানতে কষ্ট হলেও এটাই সত্যি…(রিমি বলেই হাসতে লাগলো।)
…
সবাই একটু হেসে নেওয়ার পর স্যার আসলে পড়তে শুরু করে দিলাম।
পড়াশোনা শেষ করে সবাই বাইরে ৫ জনে রাস্তায় এসে দাঁড়িয়ে রইলাম। তাদের সবার মুখে মাস্ক আছে। শুধু আমার মুখেই মাস্ক নেই।মাস্ক পরতে পরতে আর ভালো লাগে না।
…
~কিরে রুহি চল! বাসায় যাবি না নাকি?(রিমি)
~হুম তোরা যা আমি আসছি।(বলেই রুহি রিতা আর রুমিকে পাঠিয়ে দিল।)
~কিরে হিমু! তোর না আজকে একটু তারাতারি যেতে হবে?(সিফাত)
~কার আমার? আজব তো! কখন বলল…(পুরোটা বলার আগেই সিফাত আমাকে চোখ মেরে থামিয়ে মাফ চেয়ে নিল।)
~সিফাত ভাই একটু এদিকে আয়তো! কানেকানে কথা আছে।(আমি)
~হুম বল।
~ভাই যা ইচ্ছা কর,শুধু সাবধানে ঠিক আছে! লকডাউন চলছে কিন্তু!(বলেই সিফাতের কানের নিচে বসিয়ে দিলাম একটা।)
~যাইরে বান্ধুপি রুহি!(রুহির মাথায় একটা ঠোকা দিয়ে চলে আসলাম ওদের মাঝখান থেকে।)
…
আসলে ওরা দুজন দুজনকে মনে মনে ভালোবাসে।কিন্তু কেও কাওকে বলে না। দুজনই বুঝতেও পারে। আবার যাই হোক না কেন আমাকে এসে বলে।
রাস্তা দিয়ে একা একা হাঠছিলাম। পিঠে কলেজের ব্যাগটা নিয়ে আনমনে একাএকা হাঠছিলাম। হঠাৎ শুনলাম পুলিশের গাড়ি এদিকেই আসছে হর্ণ বাজিয়ে। তারাহুরো করে পকেটে হাত দিয়ে দেখি মাস্কটাও নেই। মনে হয় ভুল করে বাসায় ফেলে আসছি। পুলিশ ধরতে পারলে নির্ঘাত পিঠে দুটো লাগাবে।সাথে জরিমানাও দিতে হবে। এসব ভাবতে ভাবতেই পুলিশের গাড়ি আমার কাছে এসে দাড়িয়ে পরলো। মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছি। গাড়ি থেকে একজন নেমে আমার সামনে এসেই পায়ে বসিয়ে দিল এক ডান্ডার বাড়ি।
…
~উফফ স্যার মারছেন কেন?(আমি)
~মাস্ক কই?(পুলিশ)
~স্যার একটু আগে একটা চিন্তাকারী নিয়ে পালিয়ে গেছে।বিশ্বাস করুন।(আমি)
~ ধরা পরলে সবাই এক কথাই বলে।চল জেলের ভিতর ভরলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।(পুলিশ)
~স্যার কি করছেন দেখেন আমি স্টুডেন্ট। ব্যাগ চ্যাক করে দেখতে পারেন বই ছারা আর কিছুই পাবেন না।আর একজন স্টুডেন্ট কে আপনি বিনা অপরাধে জেলে ভরতে পারেন না।(আমি)
~তবেরে! বেশি পাকনামো হচ্ছে? চল গাড়িতে ম্যাম আছে কথা বলবি।(পুলিশ)
~ওয়াও! যায় হোক, শুনেছি মেয়েদের মন নরম থাকে।যাই যদি পঠাতে পারি!(আমি)
~যা তাহলেই বুঝতে পারবি।(পুলিশ আমাকে নিয়ে গাড়ির কাছেই যাচ্ছে।)
~স্যার একটা কথা বলবো!
~ হুম বল।
~আপনাকে না! পুলিশের থেকে জোকার বেশি মনে হয়।(আমি)
~তবেরে! (বলেই দিল পিছনে এক ডান্ডার বাড়ি। মোবাইলটা মনে হয় শেষ।)
~ম্যাম এই ছেলেটা মাস্ক ছারা প্রকাশ্যে ঘুরছে।(পুলিশ)
~কিরে! মাস্ক কই তোর!(ম্যাম)
…
ম্যাম এর বর্ণনাটা দিয়ে নেই।দেখতে মাশাল্লাহ, চেহারায় মায়াবী মায়াবী ভাব আছে।বয়স তেমন হবে না।আমার থেকে তিন-চার বছরের বড় হবে।এমনিতেও ছোট থেকে আমার ইচ্ছা ছিল সিনিয়র মেয়েকে বিয়ে করবো। এই মেয়েটা সব দিক থেকেই পারফেক্ট। প্রথম দেখাতেই ক্রাশ খেয়ে ফেললাম।
…
~কিরে কথা কানে যায় না?কি বলতেছি আমি? মাস্ক কই?(ম্যাম গাড়ির ভেতর থেকে বলছেন আর আমি পাশেই দাড়িয়ে আছি।)
~না মানে ম্যাম ভুল করে বাসায় ফেলে আসছি।আমি স্টুডেন্ট। দেখেন কলেজ ব্যাগ কাদে।(আমার কথা শুনে ম্যাম আমাকে ওপর থেকে নিচ ভালো করে দেখে নিল।)
~কেন স্টুডেন্টদেরকে কি পুলিশ ধরতে পারে না নাকি?(ম্যাম এর কন্ঠে মিষ্টি একটা ভাব আছে)
~পারে তবে সে যদি হয় অপরাধী। (আমি)
~যদি কোন মিথ্যা মামলা দিয়ে দিই।(ম্যাম আমার চোখের দিকে থাকিয়েই কথাগুলো বলছেন।)
~না সেটা কেন করবেন? আমি কি আপনার শত্রু নাকি? আর আমাকে দেখে তেমন অপরাধী মনেও হয় না।(আমি)
~অপরাধীরা দেখতে তোর মতোই ইনোসেন্ট হয় কিন্তু!(ম্যাম)
~………(ম্যাম এর কথা শুনে কিছুক্ষণ হেসে নিলাম।)
~কিরে হাসছিস কেন?(ম্যাম)
~অপরাধী বলেন আর যাই বলেন। প্রথমবার কেও আমাকে ইনোসেন্ট বললো এতেই আমি খুশি।(আমার কথা শুনে ম্যাম নিজেও হেসে দিলেন। হাসিটা আরো ক্রাশ খাওয়ার মতো।)
~আচ্ছা নাম কি তোর?(ম্যাম)
~হিমু, হিমান্ত হিমু।(ম্যাম এর নাম জিজ্ঞেস করিনি।বেয়াদব হয়ে যাব তাই।)
~আমি হিমাদ্রি।এই রফিক, ওকে একটা মাস্ক দিয়ে দাও। যাও ওর কাছ থেকে নিয়ে নে।পরের বার থেকে ভুল হলে কিন্তু মাফ নেই।(হিমাদ্রি ম্যাম)
~আপনি তল আছেনই!(আমি)
~গেলি!(হিমাদ্রি ম্যাম)
…
হিমাদ্রি ম্যাম এর কাছ থেকে চলে এলাম সেই রফিক নামের পুলিশ এর কাছে। রফিক স্যার একটা মাস্ক দিয়ে বলতে লাগলো…
…
~দে এবার ৫০০ টাকা।(রফিক)
~কিহ! ৫ টাকার মাস্ক এর দাম ৫০০ টাকা? ম্যা…(পুরোটা বলার আগেই রফিক আমার মুখ চেপে ধরলো।)
~লাগবে না টাকা ভাই। তুই যা। (রফিক)
…
একটা রাজ্য জয়ের হাসি দিয়ে চলে এলাম সেখান থেকে। হিমাদ্রি ম্যামকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে দেখতেই বাড়ি চলে এলাম…
…
চলবে…