প্রজাপতি উৎসব পর্ব-১৫

0
431

প্রজাপতি উৎসব
#প্রেমের_গল্প #প্রজাপতি_উৎসব
পর্ব ১৫
রায়হান ভাই মিতিকে দেখতে হাসপাতালে যাননি।
রাজশাহী থেকে ঢাকা হয়ে আজ সকালে রায়হান ভাই এডিনবরা রওনা হয়ে গেছেন। অতন্দ্রিলা রায়হান ভাইকে ফোন করে মিতির পক্ষ নিয়ে যা তা বলেছে। কিন্তু রায়হান ভাইয়ের চামড়া অনেক পুরু। রায়হান ভাই ঠান্ডা মাথায় জবাব দিয়েছেন,
-বিয়ের আগে যেই মেয়ে সব বিলিয়ে দিয়ে দেউলিয়া হয়ে যায়, তুমি কি মনে করো আমার ফ্যামিলি তাকে ঘরের বউ হিসেবে মেনে নেবে?
-আপনার মত নোংরা করে ভাবলে আমি বলবো আপনি নিজেও তো সব বিলিয়ে দিয়ে দেউলিয়া হয়েছেন। আপনার কোন লজ্জা নেই?
-উফ, কীসের সাথে কীসের তুলনা। কোথায় ফুটপাত, কোথায় সদরঘাট। ফার্স্টলি, আমি একটা ছেলে। ছেলেদের এসবে কিছু হয় না। সেকেন্ডলি, আমার মত কমনওয়েলথ স্কলারশিপ পাওয়া ভার্সিটির শিক্ষকের কি মেয়ের অভাব হবে?
-কেউ তো আর জ্ঞানগরিমার আড়ালে লুকিয়ে থাকা আপনার আসল চেহারাটা দেখেনি।
-ঠিক আছে, তুমি ঘন্টা হিসেবে রিক্সা ভাড়া করে গলিতে গলিতে মাইক দিয়ে বলে বেড়াও রায়হান ভাই কত খারাপ, মিতির সাথে রায়হান ভাইয়ের শারীরিক সম্পর্ক ছিল। দরকার হলে তিনদিন ধরে বলো। তারপরও দেখবে কত মেয়ে আর তার বাবা আমাকে পাত্র হিসেবে পাবার জন্য দরজার বাইরে তাবু খাটিয়ে বসে থাকে।
-আপনি ব্রিলিয়্যান্ট হতেই পারেন। আপনার ভালো ক্যারিয়ারও থাকতে পারে। কিন্তু আপনি একটা বিকৃত মনের পিশাচ। আপনার কোন আত্মা নাই। আপনার মানসিক চিকিৎসা প্রয়োজন রায়হান ভাই। শক থেরাপি টাইপের কিছু।
-হা হ হা, তুমি আমাকে রাগানোর চেষ্টা করছো। কিন্তু আমার মাথা বরফের মত ঠান্ডা। যা মন চায় বলো, আমি একটুও রাগবো না। আমি জানি আমি কী করেছি। মিতিকে আমি অ্যাবরশন করতে বলেছিলাম। ও করে নাই। এটা ওর ব্যক্তিগত সমস্যা। নাও শি ইজ অন হার ওন। ফালতু আমাকে দোষ দিয়া লাভ নাই।
-আপনি মিতিকে অ্যাবরশন করতে বলেছেন কারণ আপনি চাননি আপনার শয়তানির কোন প্রমাণ থাকুক। আপনি মিতিকে ছেড়ে গেলে ও যেন আপনাকে ফাঁসিয়ে দিতে না পারে। কিন্তু মিতু অ্যাবরশন করতে রাজি হয়নি অন্য কারণে। মিতি ভেবেছেে এই প্রেগন্যান্সি আপনাদের গভীর ভালোবাসার ফসল। রায়হান ভাই, মিতির মত সরল একটা মেয়েকে আপনি এভাবে ছেড়ে যেতে পারেন না। এটা ভয়ংকর অন্যায়।
-তো কী সাজেস্ট করছো তুমি? মিতির মত একটা ব্যবহৃত মেয়েকে আদর করে বাদ্য বাজিয়ে বিয়ের সাজে ঘরে তুলবো? আমার ঘরে?
-আপনি কী বলছেন এসব? ব্যবহৃত মানে? সম্পর্ক তো আপনার সঙ্গেই ছিল।
-মিতি একটা ড্যামেজড গুডস। আমার সঙ্গে হয়ে থাকলে আরও কতজনের সাথে হয়েছে কে জানে। আমার কী কোন মান সম্মান নাই? কোন মোরাল ভ্যালুজ নাই? আমি কি রাস্তার ফ্যালনা ছেলে? আমি একজন সম্মানিত লেকচারার। তাছাড়া, আমরা কেউ দুধের শিশু না। ইউ হ্যাভ টু টেক রেসপন্সিবিলিটি ফর ইউর অ্যাকশনস। ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না।
-আপনি নিজে কি আপনার অ্যাকশনের রেসপন্সিবিলিটি নিচ্ছেন? আপনি ভেবে কাজ করলেন না কেন? একটা মেয়েকে গর্ভবতী করে চোরের মত পালিয়ে যাচ্ছেন। কী ভেবেছেন? এভাবে এক্সপ্লয়েট করে পার পেয়ে যাবেন?
-উফ, তোমার সস্তা নারীবাদ আমার উপর চাপিয়ে দিও না। একটা অ্যাডভাইস দিই। মিতিকে নিয়ে না ভেবে একটু নিজেকে নিয়ে ভাবো।
-মানে?
-তোমার নিজের রেপুটেশন তো আরও খারাপ। ছেলেরা তোমাকে নিয়ে কী বলে জানো? শুঁড়ির সাক্ষী মাতাল আসছে কথা বলতে।
-আপনি একটা সুবিধাবাদী লম্পট…
– যা মন চায় বলো। উত্তরমেরুর বরফ গলে যাবে কিন্তু আমার মাথা গরম করতে পারবা না। আমি এডিনবরা গেলাম। ভালো থেকো তোমরা সবাই। বাই,বাই।
রায়হান ভাই ফোন রাখার পর অতন্দ্রিলা জোরে চিৎকার করে বাজে একটা গাল দিলো।
আমি আর অতন্দ্রিলা সকালে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। মিতি এখন কথা বলতে পারছে কিন্তু কেমন হতবিহবল হয়ে আছে। কিছু জিগেস করলে দেয়ালের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। মুখ দিয়ে একটা দুটো শব্দ করে থেমে যায়। ডাক্তার বললেন মিতির মাইল্ড নার্ভাস ব্রেকডাউন হয়েছে। কয়েকদিন সময় লাগবে নিজের মাঝে নিজেকে ফিরে পেতে। ওর প্রেগন্যান্সির কথা জানাবার পর ওরা মিতিকে পরীক্ষা করেছে। মিতির গর্ভে কোন সমস্যা হয়নি। ভ্রূণ ঠিক আছে।
মিতির দুর্ঘটনার কারণে কাল নিজেকে নিয়ে একটুও ভাবতে পারিনি। অথচ আমিও ক্রাইসিসের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। মিতি ধীরে ধীরে সেরে উঠবে জেনে এবার নিজের দিকে তাকালাম। কালো মেঘের মত কিছু অশুভ ভাবনা আমার মনের কোণে ভিড় জমাচ্ছে। রঞ্জনকে নিয়ে ইন্সপেক্টর লাবণি এটা কী বললেন? ওর টিনের ট্রাংকে ধর্ষিতা মেয়েদের আন্ডার গার্মেন্টস পাওয়া গেছে? রঞ্জন কি এসব নোংরামো করতে পারে? রঞ্জন ওর বন্ধুর জন্মদিনে গেছে, আজ রাতে ফেরার কথা ছিল কিন্তু টেক্সট করে জানিয়েছে কাল ফিরবে। ইন্সপেক্টর লাবণি বলেছে রঞ্জন ফিরলেই ওরা রঞ্জনের সাথে কথা বলবে।
আমি এসব চাপ আর একা নিতে পারছিলাম না। অতন্দ্রিলাকে সব খুলে বলেছি। অতন্দ্রিলা আমাকে হাত ধরে টেনে দোতালার টেরাসে এসেছে। শরতের আকাশে এখন কার্পাশ তুলোর মত সাদা মেঘ ভাসছে। এই মুহুরে এরাই পৃথিবীর একমাত্র হাল্কা জিনিস। অতন্দ্রিলা একটা বেনসন লাইট ধরিয়ে দুটো টান দিলো। তারপর আমার দিকে সিগারেটটা এগিয়ে দিয়ে বললো,
-টান দে। টেনশনের সময় সিগারেট টান দিলে দেখবি মাথা কেমন ফকফকা পরিষ্কার।
যতই শান্ত থাকার চেষ্টা করি না কেন আমার মনের ভেতর ঝড় বয়ে যাচ্ছে। ইন্সপেক্টর লাবণি যখন রঞ্জনের রুমে টিনের ট্রাঙ্কে মেয়েদের আন্ডারগার্মেন্টস পাওয়ার কথা বলছিলেন আমি শান্ত থাকার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু মনে হচ্ছিল কে যেন আমার কানে গরম সিসা ঢেলে দিচ্ছে। আমি অতন্দ্রিলার হাত থেকে সিগারেট নিয়ে জোরে টান দিলাম। ফুসফুসের কাছে ধোঁয়া যেতেই গলা কাঁপিয়ে কাশি চলে এলো। অতন্দ্রিলা রেলিং ধরে নীচের দিকে তাকিয়ে বললো,
-ছেলেরা যে কত খারাপ তোর কোন ধারণাই নেই রূপা। তুই এখনও একটা নাবালিকা।
আমাই রূপার কাছে গিয়ে বললাম,
-কেন? তোর ধারণা আছে? তুই তো দেখি উল্টো নিজেই ছেলেদের ধোঁকা দিয়ে বেড়াস।
অতন্দ্রিলা হঠাৎ কেমন করুনভাবে হাসলো। তারপর বললো,
-আমি যখন ক্লাস এইটে পড়ি, একজনের গভীর প্রেমে পড়ি। আকাশপাতাল, জোয়ারভাটা প্রেম। মানে ওই প্রেম ছাড়া জগতের আর সব কিছু তখন মিথ্যা।
-ক্লাসমেটের সঙ্গে?
-উফ না। আমার বয়স তখন চোদ্দ, ওনার বয়স কম করে হলেও ছাব্বিশ।
-কী বলছিস? এতো দেখি সিরিয়াস লেভেলের অসম প্রেম।
-হুম, আমি তো খুব ছোট ছিলাম, কিছুই বুঝতাম না। মনের ভেতর শুধু ফুটন্ত পানির মত আবেগ বল্কাচ্ছে। উনি এটার সুযোগ নিলেন। মধুমাখা কথা বলে আমাকে সিডিউস করলেন।
-তারপর?
-তারপর কী, ওনার বয়স অনেক বেশী ছিল, হি ওয়াজ ইন কন্ট্রোল অফ দা হোল রিলেশনশিপ। আমি বুঝতে পারিনি, প্রবল প্রেমে ভেসে গিয়েছিলাম। কী শরীর, কী মন, সব সীমারেখা অবলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
-মানে? শুনে তো মনে হচ্ছে ওই লোক তোকে অ্যাবিউজ করেছে।
-হুম। দিনের পর দিন ভালোবাসার নাম করে উনি আমাকে অ্যাবিউজ করেছেন। ইচ্ছেমত শরীর ছেনেছেন। কিন্তু আমি মোহান্ধ ছিলাম। ভালোবাসার তীব্র তমসায় তলিয়ে গিয়েছিলাম। ওনার সব স্পর্শ আর অনুপ্রবেশকে ভালোবাসার আদর ভেবে ভুল করেছি।
-তারপর?
-আমাকে ইচ্ছেমত ব্যবহার করে একসময় মনে হয় ওনার ক্লান্তি এলো। আমাকে অবহেলা করা শুরু করলেন। আমি কাঁদতাম, একা একা বালিশে মুখ ঢেকে অনেক কাঁদতাম। মা বোধহয় ব্যাপারটা তখন বুঝতে পেরেছিল। আমার দিকে কেমন করুন চোখে তাকাতো। উনি আসলে ওনাকে নজরের আড়ালে যেতে দিতো না।
-তারপর? তোর মা কী করলেন?
-কিছু না, আমাদের বনেদি পরিবার। পারিবারিক সম্মানের কথা ভেবে মা মুখ বুজেছিল।
-তাই বলে ওই লোককে কিছু বলবে না? বয়স্ক একটা লোক বাচ্চা একটা মেয়েকে এভাবে ঠকিয়ে গেলো? আর এই সুযোগই বা পেলো কীভাবে?
– মা তার নিজের আপন ছোট ভাইকে কী বলবে? আর ভাই তো বোনের বাড়িতে আসবেই। মাঝে মাঝে আমার পাশের ঘরেই ছোট মামা রাত কাটাতেন।
আমি একই সঙ্গে আহত এবং বিস্মিত হয়ে বললাম,
-কী বলছিস? তোর আপন মামা? এটা তো ইন্সেস্ট?
-হুম। আমাকে ড্যামেজ করে উনি এক সময় বাসায় আসা বন্ধ করে দিলেন। ব্যাংকে চাকুরী নিয়ে খুলনা চলে গেলেন। আমি ওনার ঠিকানা জোগাড় করে পাগলের মত পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা চিঠি লিখতাম। ছোট মানুষ তো, আবেগটা কাটাতে পারছিলাম না। উনি কোন উত্তর দিতেন না।
-এখন কোথায় উনি?
– বিয়েথা করে খুলনা নাকি চট্টগ্রামে আছেন। মামী পরীর মত সুন্দরী। ওনাদের ফুটফুটে দুটো বাচ্চা। কী যে সুখের সংসার। যে দেখে সেই নাকি প্রশংসা করে।
অতন্দ্রিলার কাহিনী শুনে আমার মন খারাপ হলো। বললাম,
-বুঝেছি, এরকম বাজে অভিজ্ঞতার কারণেই তুই ছেলেদের সঙ্গে বেশীদিন সম্পর্ক রাখতে পারিস না।
– একদম। যেই মুহূর্তে ছেলেগুলো ভাবে আমাকে বাগে আনতে পেরেছে, এবার আমার গা ছুঁয়েছেনে দেখবে, তখুনি আমি ওদের ছেড়ে দিই।
-কৈশোরের প্রতিশোধ?
-ওদের চোখেমুখে অল্পের জন্য শিকার ধরতে না পারার হতাশা দেখতে কী যে ভালো লাগে। মনটা জুড়িয়ে যায়।
-সব ছেলেরাই খারাপ না আবার সব মেয়েরাই ধোয়া তুলসি পাতা না রে তন্দ্রা। আমি অনেক আজেবাজে মেয়ে নিজেই দেখেছি।
-হুম। কিন্তু বেশীর ভাগ ছেলে খারাপ, অল্প ছেলে ভালো। আবার বেশীর ভাগ মেয়ে ভালো, অল্প মেয়ে খারাপ।
-তা হতে পারে।
-তোর রঞ্জন যদি আসলেই খুব খারাপ একটা ছেলে হয়, আমি মোটেও অবাক হবো না। বেশীরভাগ ছেলেই খবিশ।।
-দেখা যাক, দু একদিনের ভেতরই বোঝা যাবে। তুই কি তাহলে কোনদিন বিয়েটিয়ে করবি না?
-নো ওয়ে। এ জীবনে আমার কোন ছেলের সঙ্গে লংটার্ম রিলেশনশিপ হবে না। আমার ভেতরের ওই অংশটা মরে ভুত হয়ে গেছে।
অতন্দ্রিলা সিগারেট টানা শেষে ওর রুমে চলে গেলো, আমিও আমার ঘরে ফিরে এলাম। একদিকে মিতির দুর্ঘটনা, অন্যদিকে রঞ্জনকে নিয়ে পুলিশের সন্দেহের কারণে আমার মন পাথরের মত ভারী হয়ে আছে। রঞ্জন ঢাকায় গিয়ে আবার সপ্তর্ষির সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছে না তো? ছি, আমি এসব কী ভাবছি? না জেনে কারো উপর বিশ্বাস হারানো অন্যায়। অন্যকে নিয়ে বাজে চিন্তা করলে নিজের মন ছোট হয়ে যায়। এসব প্যাঁচঘোঁচ নিয়ে আমি আর ভাবতে চাই না। নিজেকে নিজের ভাবনার হাত থেকে বাঁচাতে আমি কম্পিউটার খুললাম। টিটু ভাইকে চিঠি লেখার মাঝে শুশ্রূষা খুঁজলাম,
টিটু ভাই,
আপনার ভ্রমণকাহিনী পরে হরিনীর মত চঞ্চলা হলাম। আপনার সঙ্গে আমিও রুশদেশের রূপকথার রাজ্যে ঘুরে বেড়ালাম। কিন্তু শুধু ঘুরে বেড়ালে তো চলবে না টিটু ভাই, পড়ালেখাও করতে হবে। আশা করি মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটিতে আপনার পিএইচডি ঠিকঠাক এগোচ্ছে। ফাঁকিবাজি করবেন না যেন। আমি পড়া ধরবো কিন্তু।
কাল ল্যাপটপে পুরনো অ্যালবাম দেখছিলাম। গত দু বছরের কালচারাল প্রোগ্রামগুলোর ছবি আমি একটা ফোল্ডারে সেভ করে রেখেছি। ফোল্ডার খুলে ছবিসমগ্রে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ একটা অদ্ভুত ব্যাপার চোখে পড়লো। প্রায় সবগুলো ছবিতে আমার পেছনে কে দাঁড়িয়ে আছে জানেন? জি মহাশয়, আপনি। দাঁড়ানোর ভঙ্গিমা দেখে মনে হচ্ছে হঠাৎ কিছু হলে আপনি ঝাঁপিয়ে পড়ে আমাকে রক্ষা করবেন। আমার যে এমন একজন বিমুগ্ধ বডিগার্ড ছিল, এতদিন খেয়াল করিনি কেন?
আপনি প্রেম এবং প্রত্যাখ্যানের কথা বলেছেন। আজ বিশেষ কারণে আমার মন খুব খারাপ। এই তমসাঘন মুহূর্তে আমি যে আপনাকেই চিঠি লিখছি, সে নিশ্চয় আপনাকে কাছের মানুষ ভাবি বলেই লিখছি? আর কাছের মানুষ মানেই তো প্রিয় মানুষ। প্রিয় থেকে আবার প্রেম শব্দট এসেছে। তাই না টিটু ভাই?
এই মুহূর্তে আমার মন, মেধা আর সমস্ত অন্তঃকরণ আমি এই চিঠিতে ঢেলে দিচ্ছি। এর মানে কি? এর মানে হলো আগামী ত্রিশটি মিনিট আমার মন প্রাণ আপনাতে সমর্পিত। এই নিবেদনের সময়টা কি প্রেমময় নয়?
আমি যে আপনার সঙ্গে সম্পর্কিত আছি সেটাই সবচেয়ে আনন্দের ঘটনা। এই সম্পর্কে কখনো প্রেম, কখনো প্রত্যাখ্যান আসবে। প্রেম এবং প্রত্যাখ্যান সম্পর্কের প্রবাহমানতার অংশ। প্লিজ ভুলেও কখনো মন খারাপ করে বলবেন না যে আমি আপনাকে প্রত্যাখ্যান করে পত্র লিখেছি। ওভাবে বাঁধ বেঁধে সম্পর্ককে ডিফাইন করার দকার নেই। যে অনুভূতি অধরা,অনির্বচনীয়, তাকে প্রেম আর প্রত্যাখানের মত মামুলি শব্দের ছাঁচে ফেলে অবমূল্যায়ন করা কি ঠিক?
তাছাড়া, আপনাকে প্রত্যাখ্যান করবার আমি কে টিটু ভাই? সময়ের ঢেউ এসে কখন কাকে কার দিকে আছড়ে ফেলবে, তার কতটুকু আমরা জানি?
ইতি,
রূপা
(চলবে)

পর্ব ১৪
https://www.facebook.com/groups/Anyaprokash/permalink/1356707304844293

পর্ব ১৬ https://www.facebook.com/groups/Anyaprokash/permalink/1359349257913431/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here