প্রতিশোধ পর্ব_১৭

প্রতিশোধ পর্ব_১৭
💘

#লেখিকা_সুপ্রিয়া_নস্কর

ধ্রুব ফোন কেটে দেয়।আয়ান আয়ুসীর দিকে তাকিয়ে দেখে সে তার দিকেই তাকিয়ে আছে।যেন কিছু শোনার জন্য।

ধ্রুব আসলে এদেরকে প্যাঁচে ফেলতে চাইছে।ওর মন থেকে এখনও সন্দেহ যায়নি।

এদিকে আয়ুসীকে আয়ান কিছু বলে না।সে খেতে থাকে।আয়ুসী আয়ানের দিক থেকে কোনো উত্তর না পেয়ে প্লেটের দিকে চেয়ে থাকে।চামচ দিয়ে খাবারটা নাড়া চাড়া করতে থাকে।আয়ান লক্ষ্য করে।কিন্তু কিছু বলে না।খেতে খেতে হেডফোনটাকে কানে দেয়।আয়ান এদিকে খাচ্ছে কিন্তু মাঝেই মাঝেই আয়ুসীর দিকে তাকাচ্ছে।

আয়ুসী খাচ্ছে তো না।তার উপর বারবার হাঁচছে আর নাক টানছে ।আয়ানের খাওয়া হয়ে যায়।সে উঠে যেতে যেতে বলে-খেয়ে নাও।খাবার নষ্ট করা আমার একদম পছন্দ নয়।

আয়ুসী আয়ানের দিকে একবার তাকিয়ে মাথা নীচু করে নেয়।কিন্তু সে খায় না।এদিকে হাত ধুয়ে রেডি হয়ে বাইরে বেড়িয়ে যায়।আয়ুসী এতক্ষণ লক্ষ্য করে নি।কিন্তু দরজা লকের শব্দে বুঝতে পারে।দরজার দিকে ছুটে যায়।

আপনি কোথায় যাচ্ছেন?-আয়ুসী দরজার গায়ে ধাক্কা দিতে দিতে বলে।

আয়ান তো চলে গেছে।আয়ুসী দরজার কাছে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে চলে আসে।কান্না পায়।এদিকে ভয়ও হতে থাকে।চুপ করে গুটিসুটি মেরে বসে থাকে।

অনেক ক্ষণ বসে থাকার পর তার মনে পরে একবার ফোন করবে।এই ভেবে সে আয়ানকে ফোন করে।কিন্তু আয়ান ধরে না।আরো ভয় পেয়ে যায়।এদিকে আয়ানও ফিরে আসে।দরজা খুলতেই আয়ুসী আয়ানকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে।

আয়ুসী এরকম করবে আয়ান বুঝতেই পারেনি।সে হতভম্ব হয়ে যায়।

এদিকে আয়ুসী কাঁদতে কাঁদতে বলেই চলেছে-আপনি কোথায় গিয়েছিলেন আমার খুব ভয় করছিল।

আয়ুসীর চোখের জলে আয়ানের জ্যাকেট অল্প অল্প ভিজে যায়।আয়ুসী কেঁদেই চলেছে।আয়ানের মুখে কথা নেই।সে কী বলবে ভেবে পাচ্ছে না।

আয়ুসী এবার মুখটা তুলে কাঁদতে কাঁদতে আয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে-সত্যিই আপনি খুব খারাপ।খুব,খুব

এই বলে আয়ুসী গিয়ে বসে পরে।কিন্তু চোখ দিয়ে তার টপটপ করে জল পরতে থাকে।

আয়ান আয়ুসীর কাছে এগিয়ে বলে-তোমার ওষুধ খাবার পর খেয়ে নাও।

আয়ুসী জলভরা চোখে আয়ানের দিকে তাকায়।আয়ান আয়ুসীর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারে না।ওষুধটা পাশে রেখে দিয়ে চলে যায়।

আয়ুসী তখন চীৎকার করে বলে-আমি খাব না।খাবার ও না আর ওষুধও না।

আয়ুসীর কথায় আয়ান দাঁড়িয়ে পরে।আয়ুসীর কাছে এসে বলে-কী বললে?

আয়ুসী তখনও জোর গলায় বলে-আমি কিছু খাব না।

আয়ান আয়ুসীর দিকে ঝুঁকে বলে-তোমার প্রবলেমটা কীসে বলতো।এদিকে নাক টানছ,তাই ওষুধটা এনে দেওয়া।

আয়ুসী-দরকার নেই,আমার কিছুতে দরকার নেই।

এই বলে সে ওষুধটা ছুড়ে ফেলে দেয়।

আয়ান রেগে যায়।

তুমি কিন্তু বেশি বারাবারি করছ।অসুস্থ হলে তখন কী হবে।সব দোষ তো আমার উপর আসবে।-আয়ান

আয়ুসী চোখ মুঝে নিয়ে বলে-ভালো তো।আমি মরে যাব।আপনার প্রতিশোধ নেওয়া পুর্ণ হবে।

আয়ুসীর কথাতে আয়ান আয়ান আর দাঁড়াতে পারে না।সে চুপচাপ গিয়ে ওষুধটা এনে আয়ুসীর কাছে দেয়।আয়ুসী আবার ছুঁড়ে ফেলতে যাবে তখন আয়ান আয়ুসীর হাতটা ধরে নেয়।আয়ুসী থেকে ওষুধটা কেড়ে নিয়ে আয়ুসীর পাশে বসে।

খেয়ে নাও খাবারটা-আয়ান

আয়ানের কথা শুনেও আয়ুসী না শোনার ভান করে চলে যেতে চাইলে আয়ান আয়ুসীর হাত ধরে টানে।আয়ুসী আয়ানের কাছাকাছি এসে পরে।আয়ুসী আয়ানের দিকে তাকিয়ে থাকে।আয়ানও।দুজনের চোখ যেন কিছু বলতে চাইছে।

আয়ুসীর হুঁশ ফিরলে আয়ুসী আয়ানের থেকে নিজেকে ছাড়াবার চেষ্টা করে।

আয়ান এদিকে খাবার প্লেট থেকে খাবার নিয়ে আয়ুসীর মুখের সামনে ধরে।আয়ুসী না,না করতে থাকে।কিন্তু আয়ান এক হাতে গালটা টিপে আয়ুসীর মুখে খাবারটা ঢুকিয়ে দেয়।আয়ুসীর চোখ থেকে জল গড়িয়ে পরে।

আয়ান কিছু বলে না।চুপচাপ খাবার প্লেট থেকে খাবার নিয়ে আয়ুসীকে খাইয়ে দিতে থাকে।

আয়ানের খাওয়ানো হয়ে গেলে ওষুধটা আয়ুসীর হাতে দিয়ে বলে-খেয়ে নাও।

আয়ুসী-খাব না।

আয়ান-এটা বিষ না।যে তুমি খেলে মরে যাবে।

আয়ুসী হেসে বলে-আমি জানি আপনি আমার জন্য বিষ আনতে পারবেন না।

আয়ুসীর চোখের শান্ত দৃষ্টিতে আয়ান যেন হারিয়ে যেতে থাকে।

তাই তো-আয়ুসী

কে বলল আমি তোমার জন্য বিষ আনতে পারব না।-আয়ান

তা,আনলেন না কেন?তাহলে আজই তো ঝামেলা চুকে যেত।-আয়ুসী

আয়ান চুপ করে থাকে।কী বলবে সে বুঝতে পারছে না।

শেষে বলে-তোমাকে তিলে তিলে কষ্ট দেব।তাই আনিনি।

এই বলে সে চলে যায়।আয়ুসী চুপ করে যায়।

আয়ান এদিকে নীচে শোবে বলে বিছানা করতে থাকে।

আয়ুসী দেখে বলে-এই কী করছেন আপনার ঠান্ডা লেগে যাবে।আমি নীচে শুয়ে পরব।

আয়ান-দেখ,নীচে শুয়ে আরো শরীর খারাপ হবে।তখন কী করব।তোমার পিছনে সময় নষ্ট করার মতো ইচ্ছা আমার নেই।

আয়ুসী-আপনিও নীচে শোবেন না।আপনার কিছু হলে আমিও দেখব না।

আয়ান আয়ুসীর দিকে রাগী চোখে তাকায়।

দেখুন,ওরকম ভাবে তাকাবেন না।এই অচেনা জায়গাতে আমি কিছু করতে পারব না।-আয়ুসী

তাহলে কী করব,এখানে সোফাও নেই।-আয়ান

আয়ুসী একটু ভেবে নিয়ে বলে-দুজনেই খাটে শুয়ে পরি।

কী!-আয়ান

আয়ুসী আমতা আমতা করে বলে-চেঁচাচ্ছেন কেন?কিছুদিনের তো ব্যাপার।তাছাড়া মাঝে ফাঁক রাখা হবে।

আয়ান-কিন্তু—-

আয়ুসী-দেখুন ভালোয় ভালোয় বাড়ি ফিরতে গেলে আমাদের এরকম করতে হবে।

আয়ান চুপ করে থেকে বলে-ঠিক আছে।

আয়ুসী গিয়ে বিছানা ঠিক করে দেয়।আয়ান শুয়ে পরে।আয়ুসী বলে তো ফেলেছে।কিন্তু তাও কেমন যেন হতে থাকে।

আয়ান-কী হল,প্ল্যান তো তোমার ছিল।তাহলে তুমি দাঁড়িয়ে

আয়ুসী-কোথায়,এই বলে সেও শুয়ে পরে।

আয়ানেরও অস্বস্তি হতে থাকে।আয়ুসী অন্য দিকে ফিরে থাকে।আর আয়ান একবার এপাশ ওপাশ করতে থাকে।

কিছুক্ষণের মধ্যে দুজন ঘুমিয়ে পরে।সকাল হয়ে আসে।আয়ুসীর ঘুম ভেঙ্গে গেলে সে ফ্রেশ হতে চলে যায়।আর আয়ান তখনও ঘুমিয়ে।আয়ুসী ফ্রেশ হয়ে চলে আসে।কিন্তু আয়ান তখনও ওঠেনি।৯ টা বাজতে যায়।আয়ুসী ডাকবে কিনা ভাবতে থাকে।অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর সে ডাকতে যায়।

শুনছেন,৯ টা বাজে তো-আয়ুসী

আয়ানের কোনো সাড়া নেই।

শুনতে পাচ্ছেন-আয়ুসী আয়ানকে ভয়ে ভয়ে গায়ে হাত দিয়ে ডাকে।

আয়ান তখন আয়ুসীর হাতটা নিজের কাছে টেনে বলে-ধ্রুব তুই সকাল সকাল এরকম করবি না।হাত মুচকে দেব।

আসলে ধ্রুব আর আয়ান মাঝে মাঝে একসাথে থাকত।আর ধ্রুব আয়ানকে ডাকত।ধ্রুব ছাড়া কেউ আয়ানকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেনি।

আয়ুসী ভয় পেয়ে যায়।আয়ুসী হাত ছাড়বার চেষ্টা করে।কিন্তু পারে না।এদিকে আয়ান ঘুমের ঘোরে বলে-আজ অফিস যেতে হবে না।আমার সাথে ঘুমাবি আয়।

এই বলে সে আয়ুসীকে টান মারে।আয়ুসী গিয়ে আয়ানের বুকের উপর পরে।আয়ুসীর ভেজা চুল থেকে জল আয়ানের মুখের উপর এক দু ফোঁটা পরে।

আয়ানের ঘুম ভেঙ্গে যায়।চোখ খুলতে খুলতে বলে-কী রে তুই

কিন্তু চোখ খুলে আয়ুসীকে দেখে সব মনে পরে যায়।যে সে তো বাড়িতে নেই।

আয়ুসী আয়ানের থেকে নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করে।কিন্তু আয়ানের হাতের বাঁধন শক্ত হয়ে যায়।তা আয়ান ও বুঝতে পারে না।

আয়ান আয়ুসীর দিকে তাকিয়ে থাকে।

বলছি,ছাড়ুন-আয়ুসী

আয়ান তখন আয়ুসীকে বিছানার উপর ফেলে হাত দুটোকে বিছানাতে শক্ত করে ধরে বলে-তুমি কী করছিলে?

আমি আবার কী করলাম-আয়ুসী

এই যে,তুমি আমার কাছে আসার চেষ্টা করছ।-আয়ান

কী,মোটেও না।বেলা হয়ে গেছে আমি তাই ডাকছিলাম-আয়ুসী

মিথ্যা বল না।তুমি আমাকে পেতে চাইছ তাই তো-আয়ান

না,এরকম কোনো ব্যাপার নেই-আয়ুসী

ওরকম কোনো চিন্তা করো না।মাথাতে আসলে বার করে দাও।-আয়ান

আয়ান এই বলে চলে যায় ওয়াশরুমে।আয়ুসী উঠে পরে আয়ানের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।

সারাদিন রুমে থাকে দুজনে।কিন্তু কেউ কারোর সাথে কথা বলে না।খাবার অর্ডার দেয়।রুমে তা দিয়ে যায়।

বিকালের আয়ান রেডি হয়ে বলে-চল,ঘুরে আসি,আবার ছবিও তুলতে হবে।কী ফ্যাসাদে পড়লাম।

প্রথম দিন দুজনে এম জি মার্গ যায়।কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে দুজন ফিরে আসে।

পর দিন দুজনেই বেড়িয়ে পরে ছাঙ্গু লেক,বাবা মন্দির আর নাথুলা পাস যাওয়ার জন্য।

প্রথমে যায় নাথুলা পাস,বাবা মন্দির তারপর যায় ছাঙ্গু লেক।সকাল বেলা বার হওয়ার জন্য কিছু খাওয়া হয় নি।তাই আয়ান ম্যাগি কিনে আনে।আয়ুসীর দিকে এক বোল এগিয়ে দেয়।আর নিজে খেতে খেতে চারিপাশ দেখতে থাকে।খাওয়া শেষে দুজনে মিলে হাঁটতে থাকে।আর আয়ান নিজের মোবাইলে ছবি তুলতে থাকে।আয়ুসী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চারিদিক দেখতে থাকে।একদিকে ঠান্ডা আবার অল্প বৃষ্টি পরছে আয়ুসীর খুব ভালো লাগে।

আয়ান আয়ুসীর কাছে এসে বলে-ধ্রুব ছবি তুলতে বলেছে তাই—-

এই বলে সে আয়ুসীর দিকে তাকায়।

আয়ান দুজনের সেলফি নিতে থাকে।

আয়ান বলে-একটু তো হাস,না হলে—-

এদিকে আয়ান আয়ুসীর কাঁধে হাত রাখে আয়ুসী অবাক হয়ে চাইলে আয়ান বলে-ছবির জন্য।

আয়ান এপাশ ওপাশ দেখতে দেখতে হঠাৎ দেখে ইয়াক।আয়ানের ইচ্ছা হয় চড়বার।তাই সে উঠে পরে।কিন্তু উঠে তো পরে কিন্তু ভয় করতে থাকে।এদিকে আয়ুসী আয়ানকে দেখে হাসতে থাকে।আয়ানের ওই অবস্থা দেখে আয়ুসী আয়ানের কয়েকটা ছবি তোলে।আয়ানকে রাগবার জন্য।আয়ান তা দেখতে পায়।

সে নেমে এসে বলে-খুব হাসা হচ্ছে।তোমার যেন খুব সাহস।আর তুমি ছবি তুলছিলে?

আয়ুসী বলে-না,আমি ছবি তুলিনি।আর হ্যাঁ,আমার সাহস আছে।

আয়ান-তাহলে,চল।

আয়ুসী বুঝতে পারেনি আয়ান এরকম বলবে।আয়ুসী আমতা আমতা করতে থাকে।

কী হল চল-আয়ান

আয়ুসী ভয়ে ভয়ে যায়।

উঠে তো পরে।কিন্তু হঠাৎ সে চোখ বন্ধ করে নেয়।পাশে আয়ান দাঁড়িয়ে ছিল।আয়ানের হাতটা নিজের হাতের মধ্যে নেয়।আয়ান দেখে হাসতে থাকে।এদিকে আয়ানও আয়ুসীর ছবি তুলে নেয়।আয়ুসী তা দেখতে পায়নি।

আমি নামব-আয়ুসী

আয়ুসী তাড়াহুড়ো করে নেমে পরে।এদিকে আয়ান হেসেই চলেছে।

ভীতুর ডিম-আয়ান

আয়ুসী ভীষণ রেগে যায়।কিন্তু কিছু বলে না।

তারপর দুজনে খাওয়া দাওয়া সেরে আবার হোটেলে ফিরে আসে।

দুদিন দুজনে হোটেল থেকে আর বার হয়নি।এদিকে মাঝে মাঝে ধ্রুব ফোন করে জ্বালাতে থাকে।কিন্তু ধ্রুবকে বলেনি যে ঘর থেকে বার হয় নি।

তারপর আয়ান ঠিক করে লাচুং দেখে ফিরে যাবে।তাই পরদিন বেড়িয়ে পরে।আয়ুসী গাড়ি থেকে মুখ বাড়িয়ে দেখতে থাকে দুদিকে পাহাড় আর বরফ।আর পাহাড়ের উপর সোনালি রোদ এসে পড়েছে তা দেখে আয়ুসীর চোখ মুখ উজ্বল হয়ে ওঠে।

আয়ান লাচুং গিয়ে হোটেল বুকিং করে।এক রাত ওখানেই থাকবে।আয়ুসীর রুমে গিয়ে দেখে পাশেই তিস্তা নদী বয়ে যাচ্ছে।তার রুমের জানলা থেকে দেখা যায়।আয়ুসীর দেখে খুব ভালো লাগে।

একটু বিকাল হলে দুজন বেড়িয়ে পরে।তিস্তা নদী দূর থেকে দেখে আয়ুসীর চোখ জুড়িয়ে যায়।আয়ান বুঝতে পারে আয়ুসী খুব খুশি।হোটেলে ফিরে আসতে যাবে তখন আয়ান বলে-তুমি এখানে বস,আমি একটু চা নিয়ে আসি।

আয়ুসী একটু ফাঁকা জায়গায় ঢিবির বসে।লোকজন তেমন নেই।আয়ান চা নিয়ে আসে।আয়ুসীকে দেয়।কিন্তু এদিকে আয়ুসীর খুব শীত করতে থাকে।আয়ান বুঝতে পারে।এদিকে আয়ান ঠান্ডাকে খুব ভয় পায়।তাই সে দুটো জামা একটা সোয়েটার তার উপর জ্যাকেট পরে বেরিয়েছে।আয়ান জ্যাকেটটা খুলে আয়ুসীর দিকে এগিয়ে দেয়।

আমার অসুবিধা হচ্ছে না-আয়ুসী

পড়ে নাও-আয়ান

কিন্তু আপনার-আয়ুসী

আমি ঠিক আছি-আয়ান

আয়ুসী জ্যাকেটা নিয়ে পরে নেয়।কিন্তু জ্যাকেটের চেনটা আটকাতে পারে না।জ্যাকেটের চেনটা আটকিয়ে গেছে।আয়ুসী টানাটানি করতে থাকে।আয়ান দেখতে পেয়ে বলে-হাত সরাও,একটাও কাজ পারে না।

আয়ান চেনটা ঠিক করতে থাকে।সত্যি জ্যাকেটের চেনটা টানা যাচ্ছে না।মাঝ পথে আটকিয়ে গেছে।এদিকে আয়ানের হাত মাঝে মাঝে আয়ুসীর পেটকে স্পর্শ করতে থাকে।কারন জ্যাকেটের চেনটা আয়ুসী অতো অবধি টানতে পেরেছিল।আয়ান ইচ্ছা করে করছে না।এদিকে আয়ানের স্পর্শে আয়ুসীর শরীর শিহরিত হয়ে ওঠে।

আয়ান চেনটা ঠিক করে টেনে দিয়েছে কিন্তু আর এক বিপদ আয়ুসীর গলায় থাকা হারে চেনটা আটকে যায়।আয়ানের মুখ আয়ুসীর মুখের কাছে।দুজনের নিশ্বাস দুজনে শুনতে পাচ্ছে।আয়ান একদিকে হারটা ছাড়াছে
অন্যদিকে আয়ুসীকে দেখেই চলেছে।আয়ুসী দেখে আয়ান তার দিকে তাকিয়ে।আয়ুসী মাথা নীচু করে নেয়।

আয়ান হার টা কে ছাড়িয়ে দিলে আয়ানের হাত আয়ুসীর গলায় লাগে।হঠাৎ আয়ুসী আয়ানকে ঠেলে দিয়ে দূরে সরে যায়।আয়ান অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।আয়ান দেখে আয়ুসী তার শাড়িটা কে শক্ত ভাবে মুঠোতে ধরে।

আয়ান আয়ুসীকে দেখতে থাকে।নীল রংয়ের শাড়িতে আয়ুসীকে খুব সুন্দর লাগছে।আয়ান আয়ুসীর কাছে গিয়ে বলে-তুমি এখানে দাঁড়াও।আমি আবার চা আনছি।ওটা ঠান্ডা হয়ে গেছে।

আয়ান চলে যায়।

এদিকে এই,আপনি এখানে?-

আয়ুসী পিছন ফিরে দেখে কুনাল দাঁড়িয়ে।

আরে,আপনি-আয়ুসী

হ্যাঁ,তাই তো দেখছি।আমাদের দেখা তো হয়েই চলেছে।-কুনাল

হ্যাঁ-আয়ুসী

আপনি কী এখনও বলবেন পৃথিবী গোল তাই দেখা হচ্ছে-কুনাল

আয়ুসী হাসে।

আমি কিন্তু তা বলব না।-কুনাল

তা কী বলবেন-আয়ুসী হাসতে হাসতে বলে।

কুনাল হঠাৎ আয়ুসীর হাতটা ধরে বলে-আয়ুসী আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি।

আয়ুসীর শুনে পায়ের তলায় মাটি যেন সরে যায়।আয়ুসী হাত ছাড়বার চেষ্টা করতে থাকে।

আপনি কী বলছেন এসব।আমি বিবাহিত।আর আপনার কী করে সাহস হয় এরকম বলার-আয়ুসী

ভুল কোথায়।আমার মনে হয়েছে আপনার বর আপনার খেয়াল রাখে না।তাছাড়া ওনার থেকে আমি আপনার বেশি খেয়াল রাখব।বেশি ভালোবাসব।-কুনাল

কী সব বলছেন।হাতটা ছাড়ুন।আর ওনার নামে এসব বলবেন না।-আয়ুসী

আয়ুসী হাতটা ছাড়াতে পারে না।এদিকে আয়ুসী হঠাৎ দেখে আয়ান কিছুটা দূরেই দাঁড়িয়ে।তাদের দিকেই তাকিয়ে আছে।

কুনালও আয়ানকে দেখতে পায়।সে সেখান থেকে চলে যায়।

চলবে—-

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here