#প্রেমমানিশা(২৮)
‘ মামা ইচ্ছে মত কাচা মরিচ,শুকনা মরিচ দিয়ে ঝাল ঝাল করে ফুচকা দিন তো। ‘
সানাহ্ ফুচকাওয়ালাকে তার ফুচকার অর্ডার দিয়ে এসে একটা খালি চেয়ার টেবিলে বসলো। সময়টা এখন শেষ বিকেল। গৌধুলি লগ্নের শেষ সোনালী আবরণ সানার চোখে মুখে আছড়ে পড়ছে। সানাহ্কে দিচ্ছে অপার আনন্দ। সানাহ্ শুধু চোখ দুটো বন্ধ করে অনুভব করছে চোখ মুখের উপর আছড়ে পড়া সোনালী উষ্ণ রোদ। হঠাৎ সানার মনে হলো ক্যামেরা নিয়ে আসলে ভালো হতো। যখন ক্যামেরার সবথেকে বেশি প্রয়োজন থাকে তখনই সানার মনে থাকে না আনার কথা।
মিনিট দশেক পর ফুচকাওয়ালা সানার দেওয়া স্পেশাল ফুচকার অর্ডার দিতে এসে টেবিলে প্লেট রেখেই সানাহ্কে দেখে চমকে গেলেন। অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন ‘ আফা আপনি আইজও এখানে আইসেন ? ‘
‘ কেন আমার কি এখানে আসা মানা ? ‘ সানাহ্ তীব্র ঝাল দেওয়া ফুচকা একটা মুখে তুলে বললো। ইতিমধ্যে অত্যাধিক ঝালে সানার চোখ মুখ লাল হয়ে আসছে তবে সানাহ্ নির্বিকার। সানার রাগ কমানো আর মন খারাপ মিটানোর দুইমাত্র উপায় তো এটাই। কাজেই ঝাল লাগলেও সানাহ্কে খেতে হবে।
‘ না মানে..… হ্যাঁ আফা আপনি আর আইয়েন না এখানে। আপনি দয়া কইরা আমার কাছে আর খাইবার আইয়েন না। ‘ ফুচকাওয়ালা মামা বিনীত সুরে বললেন।
‘ কেন ? আমি কি দোষ করলাম ? দুনিয়া শুদ্ধ মানুষ আপনার কাছে খেতে আসতে পারবে আর আমিই পারবো না। আমার মত একলা নারীর সঙ্গে এই অন্যায় কেন ? ‘ খোশ মেজাজে বললো সানাহ্। তার নাক, চোখ, মুখ দিয়ে গড়িয়ে পড়া পানি তার মন খারাপ আস্তে আস্তে মিটিয়ে দিচ্ছে।
‘ আপনি প্রত্যেকবার আইয়েন আর আমার এখান থেইকা ইচ্ছামত ঝাল দিয়া ফুচকা খাইয়া যান। ঝালে আপনার নাক,চোখ মুখ দিয়ে পানি পরে তবুও আপনি খান। আপনার লাল মুখখানা দেখলে আমার ডর করে। আপনি আর আমার এখান থেইকা খাইয়েন না। আপনার যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে আমি নিজেরে মুখ দেখামু কেমনে ? ‘ ফুচকাওয়ালা ভীত গলায় বললেন।
‘ হ্যাঁ আমি তো ঝাল দিয়ে খাওয়ার জন্যই আপনার এখানে আসি। ঝাল দিয়ে আপনার বানানো ফুচকা খেতে আমার দারুন লাগে। আর ভয় পাওয়ার কি আছে ? আমি আপনাকে টাকা দেই আর আপনি আমাকে ফুচকা বানিয়ে দেন। এখন সেই ঝাল ফুচকা খেয়ে যদি আমার কিছু হয় তাহলে তার সম্পূর্ণ দায়ভার আমার। ‘
ফুচকাওয়ালা বুঝলেন সানার সঙ্গে কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। এই মেয়ে তার অনুরোধ রাখবে না । বরং এখন এখান থেকে সরে পড়াই বুদ্ধিমানের কাজ। কথায় কথা বাড়ে। দরকার কি কথা বাড়ানোর ? ফুচকাওয়ালা সানার কাছ থেকে ফুচকার দাম নিয়ে নিজের জায়গায় ফিরে গেলেন।
আঁধার ঘনিয়ে এসেছে কিছুক্ষণ আগেই। সানাহ্ রিক্সায় উঠে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছে। তার মেজাজ এখন ফুরফুরে। ঝাল ঝাল ফুচকা তার ভিতরের সব রাগ জেদকে টেনে হিচড়ে বের করে এনেছে। মনে হচ্ছে বাড়ি গিয়ে ওর মায়ের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
ইতিমধ্যে চোখ মুখ লাল টমেটোর মতো হয়ে গেছে তবে বিকেলে প্যারাসিটামল খাওয়ায় জ্বর নেমে গেছে। সানার আবার জ্বর নেমে গেলেই মাথায় চেপে থাকা ভুতও নেমে যায়। তাইতো সে এখন অনুতপ্ত নিজের কাজে। সকালে মুখে যা এসেছে তাই শুনিয়ে দিয়েছে মাকে। অথচ একবারও ভাবেনি এই মাই তাকে কত ভালোবেসে, আদর দিয়ে বড় করেছে। আসলে সে সন্তান নামের কলঙ্ক। তার মতো সন্তান থাকলে সব মায়েরাই কষ্টে থাকবে।
‘ সানাহ্ তুই কি তোর মায়ের সঙ্গে আবার কোনো দাঙ্গা বাঁধিয়েছিস ? ‘
বাড়িতে পা রাখতে না রাখতেই প্রশ্নের মুখে সানাহ্। হঠাৎ আচমকা ওর বাবাকে এই ভোর সন্ধ্যায় বাড়িতে দেখে চমকে গেলো। ওর বাবা সচরাচর এই সময় বাড়িতে থাকে না। সে ব্যস্ত থাকে তার ব্যবসায়ের কাজে ‘ Flora ‘ তে । মাঝে মাঝে বাবার সঙ্গে মাও অফিসে যায় কিন্তু সেটা হঠাৎ হঠাৎ। মা বেশিরভাগ সময় মেয়েদের সময় দিবে বলে বাড়ি থেকেই কাজ করে।
‘ কেন বাবা ? ‘ নিজেকে সামলে দ্রুত বাবার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দিল সানাহ্।
মেয়ের এহেন বোকামিতে মিস্টার কবির বিরক্ত হলেন। ভ্রু কুচকে বললেন ‘ তোমাকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম কিন্তু তুমি উত্তর না দিয়ে উল্টো আমাকেই প্রশ্ন করছো। তুমি কি জানো তোমার মা বিকাল বেলা কাউকে না বলে হুট করে লাগেজ নিয়ে বেরিয়ে গেছে ? যাওয়ার সময় বলে গেছে সে আর ফিরবে না।
বাড়িতে অতসী ছিল। ও আমাকে ফোন করে জানানোর পর আমি আশাকে ফোন করলাম। আশা বললো কায়নাত ওর বাড়িতেই আছে আর কান্নাকাটি করছে। উল্টাপাল্টা কি বিলাপ বকছে সেটা আশা নিজেই বুঝতে পারছে না। তুমি আবার কি ঝামেলা করেছো যে কায়নাত এভাবে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে ? ও কিন্তু বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার মানুষ না। ‘
এবার সানার মুখটা দেখার মত ছিল। মিস্টার কবিরের কথা শুনা মাত্র ওর মুখটা চুপসে গেলো। অপরাধী সুরে বললো ‘ সকালে মায়ের সঙ্গে আমার ঝগড়া হয়েছিল আর আমি অনেক বাজে..… ‘
সানাহ্কে বাকি কথাটুকু আর বলতে দিলেন না মিস্টার কবির। তার আগেই সানাহ্কে মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে বললেন ‘ আমি আর কিছু শুনতে চাচ্ছি না। আমি জানিনা তোমাদের মা মেয়ের মধ্যে কি ঝামেলা হয়েছে আর আমি জানতে চাইছিও না। আই থিঙ্ক তুমি জানো তোমার এখন কি করা উচিত । ‘
মিস্টার কবিরের কথা শুনে সানাহ্ এবার মুখ উঠিয়ে তার দিকে তাকালো। ধীর গলায় বললো ‘ আমি জানি আমার এখন কি করা উচিৎ বাবা। আমি যাচ্ছি মাকে আনতে। ‘
‘ বাবা আমি কি আপাইয়ের সঙ্গে যাবো ? ‘ সানাহ্ যখন তার কথা বলেই সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে যেতে উদ্যত হলো তখন অতসী মিস্টার কবিরের উদ্দেশ্যে কথাটা বললো।
‘ নাহ্ যার সমস্যা তাকেই মিটাতে দাও। তোমার আমার মাঝখানে বেগড়া দেওয়ার দরকার নেই। ‘ বরফ শীতল কন্ঠে বললেন মিস্টার কবির। উনার কথার বিপরীতে কেউ আর কিছু বলার সাহস পেলো না। সানাহ্ নিঃশব্দে বেরিয়ে গেলো। মেইন রাস্তায় উঠে ফারহানের বাড়ির উদ্দেশ্যে রিকশা নিলো।
‘ আর কত কান্নাকাটি করবি কায়নাত ? আমাকে বল কি হয়েছে। সেই থেকে তো কান্নাকাটিই করে যাচ্ছিস। কি হয়েছে জিজ্ঞেস করলে কান্না করিস। কেন হয়েছে জিজ্ঞেস করলে কান্না করিস। তোকে তো এভাবে কান্না করতে আগে কখনও দেখিনি। সানার সঙ্গে কি আবার ঝামেলা হয়েছে ? ‘ মিসেস কায়নাতের কান্নাকাটি দেখে এবার এক প্রকার বিরক্ত হয়েই কথাগুলো বললেন মিসেস আশা। প্রিয় বান্ধবীর মুখের দিকে তাকাতে পারছেন না উনি। বান্ধবীকে আগে কখনো এভাবে কাদতে দেখেননি।
মিসেস আশার কথা শুনেও কিছুই বললেন না। বরং মুখে হাত চেপে নিজের কান্না সংবরণ করার চেষ্টা করলেন। মিসেস কায়নাতের ব্যর্থ চেষ্টা দেখে তপ্ত নিশ্বাস ফেললেন মিসেস আশা। প্রিয় বান্ধবীর চোখ থেকে এক ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়তে দেখলেও মিসেস আশার দম বন্ধকর অনুভূতি হয়। মনে হয় এই কান্না নিজ চোখে সহ্য করার ক্ষমতা তার নেই।
হঠাৎ মিসেস আশার চোখে পড়লো বাড়ির মেইন গেটের বাহিরে কেউ রিকশা থেকে তাকে হাত নেড়ে নেড়ে ডাকছে। মানুষটা কে নিকষ কালো অন্ধকারেও চিনতে ভুল হলো না মিসেস আশার। উনি হাত উঠিয়ে মিসেস কায়নাতের নজর এড়িয়ে দাড়িয়ে থাকার ইশারা করে মিসেস কায়নাতকে বললেন ‘ তুই এখানেই বস… আমি নীচ থেকে আসছি। কেঁদেকেটে তো গলা শুকিয়ে ফেলেছিস। আমি তোর জন্য পানি নিয়ে আসি যাতে পানি খেয়ে আবারও কাদতে পারিস। ‘
মিসেস আশার কথার জবাবে কিছুই বললেন না মিসেস কায়নাত। শুধু এক দৃষ্টিতে বাড়ির মেইন গেটের বাহিরে দাড়িয়ে থাকা অন্ধকারাচ্ছন্ন ছায়ার দিকে তাকিয়ে রইলেন। উনার বান্ধবী মনে করেছেন মানুষটাকে মিসেস কায়নাত খেয়াল করেননি। কিন্তু আসলে তো উনিই সবার আগে খেয়াল করেছেন। তবে নিজে থেকে কিছু বলার ইচ্ছা হলো না বলে নীরব রইলেন।
মিসেস কায়নাতকে নীরব দেখে মিসেস আশা আর কিছু বললেন না। ধীর পায়ে নিচে চলে এলেন। নিচে এসে আগে সদর দরজা খুলে দিলেন। দরজা খুলতেই হুড়মুড় করে ঢুকলো সানাহ্। সানাহ্ মিসেস আশাকে দেখে বললেন ‘ মা কোথায় ? কি অবস্থা ? ‘
‘ ভালো হয়েছে তুমি এসেছ। এসে থেকে আমার ঘরের বারান্দায় বসে কান্নাকাটি করছে। জিজ্ঞেস করছি কান্না কেন করছে কিন্তু কিছুই বলছে না। তুমি জিজ্ঞেস করলে যদি কিছু বলে। ‘
‘ আচ্ছা আমি দেখছি ‘ বলে সানাহ্ আর মিসেস আশার উত্তরের অপেক্ষা করল না। দ্রুত পায়ে সিড়ি দিয়ে উঠে গেলো। মিসেস আশা সানার যাওয়ার পথে এক পলক তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। দুই দিন পরপর এরা মা মেয়ে ঝগড়া করে আর মাঝে উনি ফেঁসে যান। এইদিকে দুই মা মেয়েকে সামলানো অন্যদিকে বান্ধবীর অভিমান। অনুভূতির যাঁতাকলে পড়ে উনার চ্যাপ্টা হওয়ার জোগাড়।
তবে এই প্রথম এরকম হলো যে ঝগড়া করে কায়নাত তার বাড়ি ছেড়েই চলে এসেছে। এর আগে কখনো এমন হয়নি। কায়নাত বরাবর অন্তর্মুখী স্বভাবের। নিজেদের বাড়ির ঝামেলা বাহিরে যেতে দেয় না।
বারান্দায় বসে বসে সন্ধ্যা বিলাস করছেন মিসেস কায়নাত। মনে পড়ছে পুরনো স্মৃতি। যখন উনার দিদি বেচেঁ ছিলেন তখন এভাবেই দুই বোন সন্ধ্যা বিলাস করতেন। সঙ্গে দুই কাপ ধোঁয়া উঠা চা যেন সন্ধ্যার আড্ডা জমিয়ে দিত। এই আড্ডা চলতো রাত বারোটা পর্যন্ত। এর মাঝে মিস্টার আফজাল আর মিস্টার কবিরও এসে যোগ দিতেন। আনন্দের ছিল সেই দিনগুলি।
আচমকা মনে হলো নরম একটা বিড়ালছানা এসে মিসেস কায়নাতের কোলে গুটিসুটি মেরে তার হালকা মেদবহুল পেট জড়িয়ে ধরে জাপটে ধরে বসেছে। মিসেস কায়নাত নীরবে বিড়ালছানা রুপি সানার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। মায়ের স্পর্শে অভিমানী সানাহ্ ডুকরে কেঁদে উঠলো। হেচকি তুলে কাদতে কাদতে বললো ‘ আই অ্যাম সরি মা…আমাকে মাফ করে দাও। এরকম ভুল আর করবো না। ওই সর্বনাশা জ্বর বরাবরই আমার সর্বনাশ করেছে।। আজও করলো… তোমার সঙ্গে আমাকে খারাপ ব্যবহার করতে বাধ্য করলো।
কিন্তু বিশ্বাস করো মা আমি অতগুলো টাকা কোনো খারাপ কাজে ব্যবহার করেনি। এমন কিছু করিনি যেটা তোমার আর বাবার সম্মান ডুবাবে। আমি যদি কারণ বলতে পারতাম তাহলে অবশ্যই বলতাম। কিন্তু আই প্রমিজ মা, আর এরকম রাগারাগি করবো না। তোমাকে বাজে কথা বলবো না। আই সয়ের মা… ‘
‘ তোর জ্বর এসেছে আর আমাকে বললি না ? একবার বললে কি আজ এত বড় ঝামেলা হতো ? তোর আর আমার মধ্যে এত বড় দাঙ্গা হতই না। ‘ সানার পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললেন মিসেস কায়নাত।
‘ তুমি সবসময়ই আমাকে নিয়ে টেনশনে থাকো। এখন আবার নতুন করে আমার বিয়ের টেনশন। কয়েকদিনের মধ্যেই মামা মামী ওরা আসবে। ওদের সবাইকে দেখাশুনা করার টেনশন। তাই আর নতুন করে জ্বরের কথা বলে তোমাকে টেনশনে ফেলতে চাইনি। আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি মা… অনেক। ইউ ক্যান্ট ইভেন ইমাজিন হাউ মাচ আই লাভ ইউ। ‘ সানাহ্ মিসেস কায়নাতকে আরও নিবিড় ভাবে জড়িয়ে ধরে বললো।
‘ সবসময় জন্ম দিলেই মা হওয়া যায় না সানাহ্। মা এমন একজন মানুষ যে সন্তানকে জন্ম দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বহু কষ্টে সন্তানকে বড়ও করে। দিদি তোর জন্মদাত্রী মা কিন্তু আমি তোর পালনকর্তা মা। দিদি তোকে জন্ম দিলেও আমি কিন্তু তোকে বড় করেছি। আবার আমি তোকে বড় করলেও দিদি তোকে জন্ম দিয়েছে। তাই তোর জীবনে আমাদের দুজনেরই মূল্য সমান হওয়া উচিত। দিদি তোর জন্মদাত্রী মা বলে আমাকে তোর মাসী বলে মা হওয়ার অধিকার থেকে অবহেলা করতে পারিস না।
দিদি তোর কাছে যেরকম মা হওয়ার দাবিদার তেমনই আমিও। আর মায়ের কাছেও সন্তানের থেকে বড় কেউ না।।আমার মাথায় যতই অন্য কিছু নিয়ে টেনশন থাকুক না কেন আমার ফার্স্ট প্রায়ওরিটি সবসময় তুই আর অতসী। তোরা দুজনেই আমার সন্তান। কিন্তু তুই আমার বড় সন্তান…আমার বড় মেয়ে। কাজেই তোর কাছে আমার এক্সপেক্টেশন বেশি। তোর প্রতি আমার ভালবাসার প্রকাশও বেশি। আমি কোনোদিনই চাইবো না আমার কোনো সন্তান তাদের ভুলে বিপদে পড়ুক। ‘ এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলে যেন নিজেকে ভারমুক্ত মনে করলেন মিসেস কায়নাত। অনেক দিনের বোঝা নেমে গেছে উনার বুক থেকে।
‘ আই নো মা। আই অ্যাম ভেরি ভেরি সরি ফর হার্টিং ইউ। প্লিজ ফর্গিভ মি ফর দিস টাইম,প্লিজ। আই উইল নট হার্ট ইউ নেক্সট টাইম। আই সয়ের মা। প্লিজ বাড়ি চলো মা…… বাবা তোমার জন্য অপেক্ষা করছে, অতসী অপেক্ষা করছে আর……আর আমি অপেক্ষা করছি মা। ‘ শেষের কথাগুলো খানিকটা থেমেই বললো সানাহ্।
সানার কথা শুনে মুচকি হাসলেন মিসেস কায়নাত। মুখ নত করে সানার আলগোছে বেধে থাকা চুলে ঠোঁট বুলিয়ে দিলেন। তারপর আবার সানার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন।এবার উনি নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরবেন..…নিজের বাড়িতে।
~ চলবে ইনশাআল্লাহ্….
ছবিয়াল: পিন্টারেস্ট