প্রেমাসক্তি’ পর্ব – ১১

0
5161

#প্রেমাসক্তি
#ফাতেমা_তুজ
#part – 11

ক্যাফের শেষ প্রান্তের টেবিলে বসে আছে নীলিমা আর আরিয়ান।
দুজনের সামনেই এক কাপ করে কফি রাখা।
মনে হচ্ছে হট কফি কোল্ড কফি তে পরিনত হয়েছে।
দুজনেই নীরবতা পালনে ব্যস্ত,,,,, কফি কাপ দুটো যেন খেলার সঙ্গি।
দুজনেই কফি কাপ নাড়া চাড়া করে যাচ্ছে কিন্তু খাচ্ছে নাহহহ।
আরিয়ান নীলিমার অগোচরে নীলিমা কে আড়চোখে বার বার দেখে যাচ্ছে।
ফর্সা মুখ টা একদম শুকনো দেখাচ্ছে,,,, চোখের নিচ খানিকটা ফুলে লাল হয়ে গেছে।
কয়েক দিন যাবত অনড়গল কান্না করেছে যে তা মুখ দেখেই অতি সহজে বোঝা যাচ্ছে।
নীলিমা বাইরের পরিবেশ দেখতে ব্যস্ত। যেন সে বহু দিন বহু তিতিক্ষার পর প্রকৃতি ভ্রমন এ এসেছে।
তার বরাবর সামনে যে জলজ্যান্ত একজন মানুষ বসে আছে তার খেয়াল ই নেই।
নীরবতা ভেঙে আরিয়ান বলল
– মিস কিছু বলার জন্য ডেকেছিলেন ?

আরিয়ানের কথাতে নীলিমার ভাবনার সুতো ছিড়লো।
আরিয়ানের মুখের দিকে নাক কুঁচকে তাকালো নীলিমা।
নীলিমা খেয়াল করে দেখলো সেই প্রথম দিন থেকে আজ এখন অব্দি আরিয়ান তাকে মিস বলেই ডেকেছে।
কখনো নাম ধরে ডাকে নি ,,,,,
নীলিমাকে এভাবে নাক কুঁচকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আরিয়ান খ্যাক করে কেশে উঠলো।
আরিয়ানের এমন কান্ডে নীলিমা অপ্রস্তুত হয়ে গেল।
নীলিমা মাথা নিচু করে কফি কাপ নাড়া চাড়া করতে লাগলো ।
আরিয়ান দীর্ঘশ্বাস টেনে বসে রইলো।
নীলিমা কে কিছু বলার মতো শক্তি তার মাঝে নেই।
তবু ও কিছু করার নেই,,, আরিয়ান নিজেকে সামলে নিয়ে মৃদু হেসে বলল
– কিছু বলবেন ?

নীলিমা আরিয়ানের দিকে তাকালো,,,,, চোখ গুলো অসম্ভব লাল হয়ে গেছে।
নাকের পাটা টাও রক্তিম হয়ে গেছে।
চোখ গুলো তে পানি চিক চিক করছে ,,,,,, ঠোঁট দুটো থর থর করে কাঁপছে।
নীলিমার এমন অবস্থা দেখে আরিয়ানের বুক টা ফেটে যাচ্ছে ।
আরিয়ান কথা বলতে পারছে না ,,,, গলা ধরে আসছে।
আরিয়ান বহু চেষ্টার ফলে মুখ দিয়ে দুটো শব্দ উচ্চারণ করলো
– আর ইউ ওকে,,,,,,মিস ?

এবার আর নিজেকে সামলাতে পারলো না
নীলিমা।
এতোক্ষনের চাঁপা কষ্ট টা চোখ দিয়ে ঝরঝর করে পরতে লাগলো।
আরিয়ান চোখ খিচে বন্ধ করে নিল,,,, ঠোঁট কামড়ে নিজেকে সামলে নিয়ে বলল
– প্লিজ কাঁদবেন না মিস,,,,,।

নীলিমা কেঁদেই যাচ্ছে,,,,, আরিয়ান টেবিলে রাখা টিসু বক্স থেকে দুটো টিসু এগিয়ে দিলো।
নীলিমা টিসু নিয়ে চোখের পানি মুছে নিলো।
কাঁপা কাঁপা স্বরে বলল
– আপনি আমাকে ইগনোর করছেন আরিয়ান ?

আরিয়ান মাথা নিচু করে আছে।
শুনেছিল প্রিয় মানুষদের চোখের দিকে তাকিয়ে মিথ্যে বলা যায় না।
তাই নীলিমার চোখে চোখ রেখে কথা বলতে চাচ্ছে না আরিয়ান।
যদি ধরা পরে গেল ,,,, তো নীলিমা কে সান্ত্বনা দিবে কি করে?
আরিয়ান নিচের দিকে তাকিয়েই বলল
– তেমন কিছুই না,,,,,

নীলিমা টেবিলে হালকা করে বারি মেরে বলল
– কিহহহ তেমন নাহহহহ আপনি আমাকে ইগনোর করছেন।
কিন্তু কেন আরিয়ান ?
আমার অন্যায় টাহহহ কিহহহ?

আরিয়ান চোখ খিচে বন্ধ করে আছে।
সারা রাত ভেবে রেখেছে কিভাবে নীলিমা কে বোঝাবে।
কিন্তু সামনা সামনি একটা অক্ষর ও বলতে পারছে না সে।
বার বার গলা ধরে আসছে তার,,,,,,,
আরিয়ান কিছু বলছে না দেখে নীলিমা ঠোঁট কামড়ে কান্না করতে লাগলো।
কিছু মানুষ ওদের দিকে তাকিয়ে আছে ,,,,,,, কিন্তু দুজোনের কারোই যায় আসে না এতে।
আরিয়ান কিছুটা তীক্ষ্ম গলা তে বলল
– পাবলিক প্লেস এ এভাবে সিনসিক্রেট করবেন না।
এতে আপনার ই সম্মান নষ্ট হবে ,,,,,,,,

নীলিমা চুপ করে আছে।
আরিয়ান দীর্ঘশ্বাস টেনে বলল
– দেখুন মিস,,,,,,

আরিয়ান কে আর কিছু বলতে না দিয়ে নীলিমা আরিয়ানের হাত দুটো দু হাতে জড়িয়ে বলল
– আরিয়ান আমি আপনাকে ভালোবাসি।
প্লিজ আমাকে ছেড়ে যাবেন নাহহহহহ ,,,,, প্লিজ।

নীলিমার কাঁপা হাতের প্রেমময় স্পর্শ গভীর ভাবে অনুভব করলো আরিয়ান।
কিছুক্ষণের জন্য ডুবে গেল প্রিয়তমার স্পর্শে,,,,, কিন্তু পরক্ষণেই মাথায় চরাও করে বসলো নানান ভাবনা।

আরিয়ান নীলিমার হাত ছাড়িয়ে বলল
– এটা সম্ভব নয় ,,,,,

নীলিমা উদ্বিগ্ন কন্ঠে বলল
– কেন সম্ভব নয় আরিয়ান ?
আপনি চাইলেই সম্ভব ,,,,,,

– সব কিছু সবার দারা হয় না। আর সব কিছু এতো সহজ ও নয়।

– কেন হবে নাহ ,,,, আপনি চেষ্টা করুন।
আপনি ভালো লাগা অব্দি তো আসুন,,,,, আমি ভালোবাসা তে নিয়ে যাবো।
কিন্তু ইগনোর করছেন কেন আপনি ?

আরিয়ান অন্য দিকে ফিরে আকাশের দিকে তাকিয়ে বার কয়েক শ্বাস নিয়ে নিলো।
মুখে দীর্ঘশ্বাসের ছায়া ,,,,, নিয়ে ভাবতে লাগলো
,,,, ভালো লাগা অব্দি নয় নীলি আমি তোমাকে অলরেডি ভালোবেসে ফেলেছি।
কিন্তু তোমার আমার গল্প আদৌ কি সম্ভব?
সম্ভব নয় নীলি,,,,,
তাই তোমাকে একটু একটু করে শেষ হয়ে যেতে দিতে পারি না আমি।

আরিয়ান কে কিছু বলতে না দেখে নীলিমা উঠে দাড়িয়ে ধীর পায়ে আরিয়ানের দিকে এগিয়ে গেল।
একবার কাঁধে হাত রাখতে গিয়ে ও রাখলো নাহহ।
খানিকটা দুরুত্ব বজায় রেখেই বলল
– আরিয়ান পারবেন না আমায় ভালোবাসতে?

– সম্ভব নয় এটা।

– কেন সম্ভব নয়,,,, লোকে বলে চাঁদ তারা ও নাকি আনা সম্ভব।
তাহলে আমাকে ভালোবাসা কেন সম্ভব নয় ?
আচ্ছা বলুন আমাকে কি করতে হবে ,,,, আপনার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কোন যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।
আমি সব কিছু করতে রাজি ,,,, তবু দূরে ঠেলে দিবেন না প্লিজ।

আরিয়ান ভেবে পাচ্ছে না কি করবে সে।
আরিয়ান দীর্ঘশ্বাস টেনে উঁচু গলাতে বলল
– আমি চাই না এই সম্পর্ক,,,, তাই সম্ভব নয়।
এগারোটা বেজে গেছে ,,,,, একটু পর ই অফিস এ যেতে হবে।
প্লিজ এই বিষয় নিয়ে আর বলবেন না।
কোনো মতে ই এই সম্পর্ক সম্ভব নয়,,,

আরিয়ানের দিকে ফ্যালফ্যাল দৃষ্টি তে চেয়ে আছে নীলিমা।
আরিয়ান কে ছুঁতে গিয়ে ও বার বার হাত নামিয়ে ফেলছে নীলিমা।
চোখ বেয়ে নেমে যাচ্ছে তুমুল বর্ষন,,,,,,

আরিয়ান পেছন ঘুরে তাকাতেই আরিয়ানের বুক ফেটে যাচ্ছে।
হাত দুটো মুষ্টিবদ্ধ করে নিলো।
সে ও নিজেকে সামলাতে পারছে না ,,,,,

নীলিমার কন্ঠে গভীর অভিমান, কষ্ট , আর বেদনা।
নীলিমা ভেজা কন্ঠে বলল
– প্লিজ আরিয়ান ফিরিয়ে দিবেন না আমায়,,,,,

নীলিমার আকুলতা, ছটফটানি পাগল করে দিচ্ছে আরিয়ান কে।
প্রিয় মানুষটার চোখের পানি,, যখন কারন হিসেবে নিজেকেই হতে হয়।
তখন কি রকম অনুভূতি তে পড়তে হয় পরিস্থিতি ছাড়া বলা দায়।
আরিয়ান ঠোঁট কামড়ে দাড়িয়ে রইলো ,,,, নাহহহ সে আর পাড়ছে না।
তার শক্ত পোক্ত মন টা ও তুলোর মতো নরম হয়ে যাচ্ছে।
এখানে থাকা সম্ভব নয় ,,,,, আরিয়ান কাঁপা স্বরে প্লিজ বলে স্থান ত্যাগ করলো।
নীলিমা পেছন থেকে বারংবার ডেকে যাচ্ছে,,,,, অঝোরে কেঁদে যাচ্ছে।

কিন্তু না আরিয়ান ফিরে তাকাচ্ছে নাহহহ।
আরিয়ান যথাসম্ভব দ্রুত গতিতে ক্যাফ থেকে বেরিয়ে পড়লো।
এই মেয়েটার কান্না ওপেক্ষা করে ঐ খানে বসে থাকার মতো শক্তি আরিয়ানের নেই।
আরিয়ানের বুক টা মোচর দিয়ে উঠছে।
বার বার চোখের সামনে ভেসে উঠছে নীলিমার কান্নারত মুখ।
কানে হুংকার দিয়ে বেজে চলেছে নীলিমার আকুতি ভরা কন্ঠস্বর।
আরিয়ান ক্যাফ থেকে বের হয়ে দ্রুত পায়ে হাঁটতে লাগলো।
নাহহহহ এখানে আর দাঁড়াবে না সে ,,,,,, কিছু দূর যেতেই এক টা সি এন জি পেয়ে গেল আরিয়ান।
যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি আরিয়ান সিএনজি তে বসে পড়লো।
পেছন ফিরে তাকানোর মতো অবস্থা তে নেই সে ,,,

নীলিমা ক্যাফের কোনে দাঁড়িয়ে এক দৃষ্টি তে তাকিয়ে কাঁদতে লাগলো।
আরিয়ানের কন্ঠস্বর বলে দিয়েছে,,,, কোন এক বাঁধা আরিয়ান কে বাধ্য করেছে।
নীলিমার কষ্ট হচ্ছে খুব ,, কেন আরিয়ান তাকে বুঝলো না।
একটু কি ভালোবাসা যায় না?
নীলিমার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে সবাই।
কারো মুখে বিরক্তি তো কারো মুখে মৃদু হাসি , কারো মুখে কৌতুহল, কারো ঠোটের কোনে আফসোস এর রেখা।
নীলিমা চারদিকে চোখ বুলিয়ে দু হাতে চোখ মুছে নিলো।
টেবিল থেকে পার্স নিয়ে হাজার টাকার নোট মেনু কার্ড এর মধ্যে রেখে দিয়ে প্রস্থান করলো।
চেন্সজ নেওয়ার মতো ইচ্ছে কিংবা পরিস্থিতি কোনো টাই নেই তার।
নীলিমা ধীর গতিতে ক্যাফ থেকে বের হয়ে আসলো।
______________________

তিন ঘন্টা ধরে নীলিমা ফোন দিয়ে যাচ্ছে।
আরিয়ান চেয়ারে মাথা হেলান দিয়ে শুয়ে আছে ।
মাঝে মাঝে ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে নিচ্ছে কতো গুলো মিস কল হলো।
নীলিমা ও ধৈর্য ধারণ করে কল করেই যাচ্ছে।
আরিয়ান এবার কল টা রিসিপ করে নিলো।
মৃদু হেসে বলল
– ব্যস্ত হবেন না মিস,,,
এই টুকু নি তেই আপনার নাজেহাল অবস্থা।
তো আসক্তি হয়ে গেলে যে কোনে ধাক্কাই সামলাতে পারবেন না আপনি।

নীলিমা দু হাতে চোখ মুছে বলল
– কেন এমন করছেন ,,,, আমি আপনার চোখ দেখেছি ,,,, চোখ কখনো মিথ্যে বলে না।

আরিয়ান সামান্য ভয়ার্ত কন্ঠে বলল
– কি দেখেছেন আপনি?

নীলিমা হো হো করে হেসে উঠলো তারপর কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলল
– প্রেম,,,, আসক্তি ,,,,, আমি আপনার চোখে প্রেমাসক্তি দেখেছি ।
আমার চোখের পানি সহ্য হচ্ছিলো না আপনার।
কিন্তু কি আশ্চর্য এক নিমিষেই এই চোখের পানি ছাপিয়ে আমার মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলতে পারেন আপনি।

আরিয়ানের নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে।
নীলিমার প্রেম ভয়ঙ্কর আসক্তি তে পরিনত হয়েছে।
আরিয়ান ও যেমন কিছুদিনে ভয়ঙ্কর প্রেমাসক্তি নামক বেড়াজালে আটকে পড়েছে ,, ঠিক তেমনি নীলিমা ও আটকে পড়েছে।
কিন্তু আরিয়ান নিজেকে সামলাতে সক্ষম আর নীলিমা নিজেকে সামলাতে অক্ষম।

নীলিমা কে আর কিছু বলতে না দিয়েই আরিয়ান ফোন কেঁটে দিলো।
দুজনের কারোই লান্স করা হলো না,,,,, দুজন ই বেড়াজালে বাঁধা পড়েছে।
এই প্রেমাসক্তি থেকে বের হওয়ার কোনো না কোনো উপায় তো আছেই।

আরিয়ান ভাবতে লাগলো কি করা যায়।
আরিয়ানের ভাবনা তে আসে নি নীলিমা এতো ফাস্ট আসক্তি তে পড়ে যাবে।
আরিয়ান এর ইচ্ছে হচ্ছে নিজের গালে ঠাস ঠাস চড় বসিয়ে দিতে।
কেন নীলিমার সামনে তাকে পড়তে হলো।
তাহলে তো এতো কষ্ট সইতে হতো নাহহ।
আরিয়ানের বুক দ্রুত গতিতে উঠা নামা করছে ,,,,, আরিয়ান ছুটে ওয়াসরুমে চলে আসলো।
সাওয়ার ছেড়ে দিয়ে বসে পড়লো আরিয়ান।
মাথায় ও যন্ত্রণা হচ্ছে তার,,,, পৃথিবী তে কাউকে ভালোবাসা হয় নি তার।
কয়েক দিনের মাঝে নীলিমা কেই ভালোবেসে ফেলেছে সে ।
কিন্তু কি আশ্চর্য এ প্রেম আদৌ কি সম্ভব?
______________________

👇
আসসালামুআলাই রির্ডাস,,,,,
মনের সংকীর্ণতার কারনে কমেন্ট এর রিপলে দেই নাহহ।
গল্পের রেসপন্স দেখে আশাহত আমি।
সাইলেন্ট রিডার্স দের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। বেশি বেশি গঠনমূলক কমেন্ট করুন।
আর গল্প পড়ে রিয়াক্ত দিতে ভুলবেন না কিন্তু। আপনাদের রিয়াক্ত এর উপর ডিপেন্ট করে পরবর্তী রিডার্স দের গল্প পড়ার আকর্ষণ ।
সকলের সুস্থতা কামনা করছি,,, ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন।
বেশি বেশি আল্লাহর ইবাদত করুন।

সকালের কোমল রশ্মি জানালা ভেদ করে নীলিমার গা কে স্পর্শ করতেই নীলিমা আদৌ আদৌ চোখে জানালার দিকে তাকালো।
সারা রাত মেঝে তে হাঁটু গেড়ে বসেই পাড় করে দিয়েছে সে।
ফজরের আযান কানে এসেছিল কিছুক্ষণ আগে।
নীলিমা চারদিকে তাকিয়ে দেখে নিলো সূর্যদয় হয়ে গেছে কি না।
নাহহহ হয়নি শুধু ভোরের মৃদু আলো ছড়াচ্ছে।
নীলিমা দ্রুত পায়ে ওয়াসরুমে গিয়ে অযু করে নিলো।
সচরাচর ফজরের নামাজ পড়া হয় না তার।
রাত জেগে থাকার আজ সুযোগ হলো তাই মিস করলো না আর।
মাথায় ওড়না পেঁচিয়ে জায়নামাজ বিছিয়ে নামায পড়ে নিলো নীলিমা।
মাঝে চেয়ে নিলো আসক্তি তে পরিনত হওয়া মানুষটি কে।
নামায শেষ করে উঠে দাঁড়ালো নীলিমা,,,,, সারা রাত বসে থাকায় পিঠের দিক টা ব্যথা হয়ে গেছে।
নীলিমা হালকা করে পিঠ নাড়িয়ে ব্যলকনিতে চলে গেল।
পূর্ন সূর্যোদয় ঘটলেই রুমে চলে আসলো।

সকাল সাড়ে আটটার দিকে রেডি হয়ে গলায় ভারসিটি কার্ড ঝুলিয়ে নিচে নেমে আসলো নীলিমা।
গন্তব্য ভারসিটি চত্বর,,,, কিন্তু বাসা থেকে বের হওয়ার আগেই বাঁধ সাজলেন মিসেস চৌধুরী।
নীলিমা কাল খায় নি ,,,, বলেছে দুপুরে লান্স করে এসেছে।
রাতে খিদে নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে,,, মেয়েটার মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে কিছু খায় নি।
তাই জোড় করে নীলিমা কে ডাইনিং এ বসিয়ে দিলেন।
দুটো রুটি প্লেট এ দিলে ও নীলিমা একটা রুটি আর ফলের জুস খেয়ে বেরিয়ে পড়লো।
ভারসিটি চত্বরে এসে দাড়িয়ে আছে নীলিমা,,,,, দৃষ্টি নিবদ্ধ আছে ভারসিটি গেটে।
প্রায় বিশ মিনিট পর আরিয়ান কে ভারসিটির দিকে আসতে দেখলো নীলিমা।
চোখ দুটো যেন শান্তি পেল,,,, প্রেমাসক্তির তৃষ্ণা খানিক ক্ষনের জন্য নিবারণ হলো।
আরিয়ান নীলিমা কে দেখে দ্রুত পায়ে ভারসিটির দিকে আগাতে লাগলো।
নীলিমা দৌড়ে আরিয়ানের কাছে আসলো।
আরিয়ান নীলিমার দিকে বিরক্তিকর দৃষ্টি রাখতে পারলো না।
মেয়েটাল মুখ দেখেই বুক ধুকপুকানি শুরু হয়ে গেল।
কিন্তু এমন প্রকাশভঙ্গি যেন নীলিমা কে চেনেই নাহহহ।
গার্ড ভারসিটি কার্ড চেইক করে ভেতরে ঢুকতে দিলো।
আরিয়ান দ্রুত পায়ে হাঁটতে লাগলো ,,,,, নীলিমা দৌড়ে এসে আরিয়ানের হাত ধরে ফেলল।
আরিয়ান স্থির হয়ে দাড়িয়ে পড়লো,,,,, এই মেয়েটা তাকে ঠিক থাকতে দিবে না।
এই আসক্তি থেকে দুজোন এর কেউ ই মুক্তি পাবে না।
আরিয়ান বা হাত দিয়ে নীলিমার হাত ছাড়িয়ে নিলো।

নীলিমা ছলছল চোখে তাকিয়ে বলল
– আরিয়ান প্লিজ ,,, ইগনোর করবেন নাহহহ।
আমার দোষ কি ?

আরিয়ান চরা গলা তে বলল
– দেখুন মিসস,,,, আপনার কোনো দোষ নেই ।
এখন আমি সত্যি বিরক্ত হচ্ছি,,, আর আমাকে যখন তখন স্পর্শ করা পছন্দ নয়।
দয়া করে এমনটা আর করবেন নাহহহ।
আর আমার থেকে দূরে থাকুন ,,,,

এই টুকু বলেই আরিয়ান হাঁটা লাগালো।
নীলিমা ক্যাম্পাসের ঘাসের উপর বসে পড়লো।
অঝোরে কাঁদতে লাগলো,,,,, আরিয়ান ফিরে ও তাকালো নাহহহহ।

পরবর্তী পার্ট পেতে পেইজ এ ফলো দিয়ে রাখুন

https://www.facebook.com/Fatema-tuz-ফাতেমা-তুজ-110123584545542/

বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাপ করবেন ।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here