#প্রেমাসক্তি
#ফাতেমা_তুজ
#part – 19
এয়ারপোর্ট এ এসে দাড়িয়ে আছে তন্ময়, রবিন , ইথিনা।
তাদের ফ্যামিলির ফ্লাইট ল্যান্ড করে নিয়েছে বেশ কিছুক্ষণ আগে।
ইথিনা বার বার ঘড়ি দেখছে, তন্ময় কিছু ভাবছে আর হাসছে।
রবিন তন্ময়ের দিকে তাকিয়ে বলল
– এই হাসছিস কেন ?
তন্ময় চমকে গিয়ে বলল
– নাহহহ এমনি।
রবিন কিছু বলল না , সামনে তাকাতেই টিম ইউ এস এ 3 কে দেখতে পেলো।
অথার্ৎ তন্ময়, রবিন আর ইথিনার ফ্যামেলি।
রবিন আর ইথিনা ছুটে গেলো সবার দিকে।
তন্ময় মৃদু হেসে ধীর গতিতে আগালো,,
তন্ময়ের বাবা , মা , রবিনের বাবা মা , আর ইথিনার মা বাবা , আর ছোট দুই বোন সবাই এসেছে।
সবাই গল্প জুড়ে দিয়েছে , তন্ময় মৃদু হেসে দেখছে সবাই কে।
সবাই তন্ময় কে দূরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে হামলে পরলো।
তন্ময় কতোটা সুস্থ হয়েছে সব জেনেই তাদের শান্তি।
তন্ময় কান চেপে ধরে বলল
– আরে আমি ঠিক আছি।
পুরো সুস্থ, সবাই তো দেখছি এয়ারপোর্ট এ এসে ও ডাক্তারি শুরু করে দিয়োছো।
ডাক্তার ফ্যামিলি হলে যায় হয় আর কি ।
সবাই হাসতে হাসতে গাড়ির দিকে পা বাড়ালো।
তন্ময় গাড়ি ড্রাইভ করছে , পাশে বসে আছে রবিন।
আর পেছনে বসে আছে ইথিনা ও তার দু বোন।
সবাই গল্পের ঝুলি নিয়ে বসেছে।
সিনথি মুখ গোমড়া করে বলল
– কি জিজু আমাকে তো ভুলেই গেছো।
আজকাল শ্যালিকা কে মনে পরে না তাই নাহহ ?
তন্ময় গাড়ি ড্রাইভ করতে করতে বলল
– কেন মনে পরবে না সিনথু , তোমাদের সবাই কে মিস করেছি আমি।
মহুয়া কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল
– সিনথু আপি কে মনে করলে ও আমায় মনে করো না তুমি।
তন্ময় মৃদু হেসে বলল
– মহু আমি তো সব থেকে বেশি তোমায় মিস করি।
মহু হাসি হাসি মুখ করে বলল
– আচ্ছা তো প্রুফ দিতে হবে। পারবে তো প্রুফ দিতে ?
– আচ্ছা বলো কি ভাবে প্রুফ দিবো।
– আমি যতো বার বি ডি তে এসেছি আমাকে একবার ও ঢাকার স্ট্রিট ফুড খেতে দেয় নি এরা।
আজ আমাকে স্ট্রিট ফুড খাওয়াবে।
রবিন দাতে দাতে চেপে বলল
– ঐ তোর নাহহহ স্ট্রিট ফুড খেলে পেট ব্যথা শুরু হয়ে যায়।
– শোনো রবু ভাই, আমার পেট ব্যথা ট্যথা হয় না।
ঐ সব ফাউল কথা সবাই আমার খাওয়ার দিকে নজর দেয় । সব গুলোর পেট খারাপ হবে।
ইথিনা মহুয়ার মাথায় গাট্টা মেরে বলল
– যদি পেট ব্যথা হয় তো কোনো ঔষধ দিবো না তোকে।
মহুয়া ভেঙ্চি কেটে বলল
– রবিন ভাইয়া বলো তো এখান কার সব থেকে মজার স্ট্রিট ফুড কোনটা ?
– অবশ্যই ফুচকা।
মহুয়া হাসি হাসি মুখ করে বলল
– তন্ময় ভাইয়া প্লিজজজ।
তন্ময় হাসতে হাসতে গাড়ি রাস্তার সাইটে পার্ক করালো।
সবাই গাড়ি থেকে নেমে ফুচকা খেতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
তন্ময় কে বললে ও তন্ময় খেলো নাহহ।
তন্ময় গাড়ি তে পিঠ ঠেকিয়ে ব্যস্ত রাস্তার দিকে চেয়ে রইলো ।
এ রাস্তা খুব পরিচিত তার , নীলিমার হাত ধরে কতো ঘুরেছে সে।
মেয়েটার ছোট ছোট বায়না, বৃষ্টির পানি তে হাত ভেজানো সব কিছু খুব প্রিয় ওর কাছে।
তন্ময় মলিন হেসে রাস্তার অপজিটে তাকাতেই চোখ যায় ব্লু জিন্স আর হাঁটু অব্দি ঠিলে ঢালা টপস পরে নীলিমা পাবে ঢুকছে।
তন্ময়ের ভ্রু যুগল কুঁচকে যায়।
তন্ময় রাস্তা পেরিয়ে পাবে ঢুকে পরে , পাবের চারদিকে চোখ মেলে নীলিমা কে খুঁজতে লাগলো।
নীলিমা বিয়ার হাতে সোফায় বসে আছে ,,,।
তন্ময় রিসিপশন এ গিয়ে বলল
– এখানে বিয়ার কি নন এলকোহল?
– নো স্যার ,, আমরা নন এলকোহল বিয়ার সার্ভ করি না।
অল আর উইথ এলকোহল
তন্ময় ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো।
মাথা টা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তার।
মেয়েটা পুরো পাগল হয়ে যাচ্ছে। এলকোহল খাচ্ছে, রবিনের কথা গুলোই সত্যি ।
তন্ময়ের ইচ্ছে হচ্ছে নীলিমার সামনে গিয়ে নীলিমা কে ঠাস ঠাস করে কষিয়ে থাপ্পর লাগিয়ে দিতে।
এ কেমন ভালোবাসা যে ভালোবাসা শক্তি না হয়ে দূর্বলতা হয়ে যাচ্ছে।
তন্ময় রিসিপশন থেকে ফুল ফেস মাস্ক নিয়ে নীলিমার দিকে যেতে লাগলো।
কিন্তু পরক্ষণেই তন্ময়ের ফোন বেজে উঠলো।
তন্ময় ফোন রিসিপ করে বলল
– রবিন তুই ওদের নিয়ে বাসায় যাহহহ আমি একটা কাজে এসেছি।
এই টুকু বলেই ফোন কেঁটে দিলো।
নীলিমা একের পর এক গ্লাস বিয়ার খেয়েই যাচ্ছে।
তন্ময় নীলিমার পাশে গিয়ে বসতেই নীলিমা একবার ভ্রু কুঁচকে তাকালো।
তন্ময় কোনো প্রতিক্রিয়া না করে বোতল থেকে গ্লাসে বিয়ার ঢেলে নিয়ে মুখ ঘুরিয়ে এক ঢোকে খেয়ে নিলো।
নীলিমা ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো,, এই শহরে সবাই নীলিমা কে বাঘিনীর মতো ভয় পায়।
সবাই জানে নীলিমার দিকে তাকালে ও নীলিমা তাকে শেষ করে দিবে অথচ এই ছেলেটা তার পাশে এসে বসেছে।
নীলিমা অবাকের ওপর অবাক হচ্ছে।
ম্যানেজার ছুটে এসে নীলিমার দিকে তাকিয়ে বললেন
– সরি ম্যাম । আমি দেখছি , প্লিজ ম্যাম রাগ করবেন নাহ।
নীলিমা কোনো উত্তর দিলো না।
ম্যানেজার তন্ময় কে মিনতি করে বললেন
– স্যার এখানে বসতে পারবেন না আপনি ।
অন্য কোথাও গিয়ে বসুন প্লিজ ।
তন্ময় কোনো প্রতিক্রিয়া করলো না দেখে নীলিমা ম্যানেজার কে ইশারায় চলে যেতে বললো।
তন্ময় ফেস মাস্ক এর ভেতর দিয়েই মৃদু হাসলো।
নীলিমা বিয়ার ঢেলে নিয়ে বলল
– এতো সাহস হয় কি রে ?
তন্ময় এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া করলো না।
নীলিমা তাচ্ছিল্যর হাসি দিয়ে বলল
– ইউ নো হু আই এম ?
তন্ময় মাথা ঝাকালো অথার্ৎ সে জানে না।
নীলিমা দাঁতে দাঁত চেপে বলল
– আম নীলিমা , ওয়াইফ ওফ আরিফুল আরিয়ান।
এই টুকু বলেই নীলিমা বিয়ারের বোতল টা টেবিলে বারি মারলো।
সঙ্গে সঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে বিছিয়ে গেল পুরো মেঝেতে।
তন্ময় কোনো প্রতিক্রিয়া না করে অন্য বিয়ারের বোতল থেকে বিয়ার ঢেলে নিয়ে এক ঢোকে খেয়ে বিয়ারের বোতল দেয়ালে সর্বশক্তি দিয়ে বারি মারলো।
শব্দ টা এতো টাই বিকট ছিলো যে আশে পাশের সবাই থমকে দাঁড়িয়ে গেল।
নীলিমা চমকে গিয়ে তন্ময়ের দিকে তাকালো।
তন্ময় দু আঙুল দিয়ে নিজের চোখের দিকে দেখিয়ে নীলিমার দিকে দেখালো।
যার অর্থ আমার নজর সর্বক্ষণ তোমার দিকে থাকবে।
নীলিমা থম মেরে দাঁড়িয়ে রইলো।
তন্ময় সমস্ত বিল পে করে পাব থেকে বের হয়ে গেল।
রাগে গা কাঁপছে তার, মেয়েটা নিজের কি হাল করেছে।
তন্ময়ের ইচ্ছে হচ্ছে নিজের চুল নিজেই ছিড়তে।
পরিস্থিতির জন্যে নীলিমার সামনে ও যেতে পারছে নাহহ।
যে করেই হোক সব কিছু ঠিক করতেই হবে।
তন্ময় চোখের কোন থেকে পানি মুছে নিয়ে বাসার দিকে পা বাড়ালো।
আপাতত সবাই ঢাকাতে তরিকুল আবরার অথার্ৎ তন্ময়ের বাবার বাসাতেই থাকবেন।
তন্ময় নিজেদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
কষ্ট হচ্ছে খুব, নীলিমা কে বুকে টেনে নিতে ইচ্ছে হচ্ছে।
মেয়েটার ছোয়া পেতে ইচ্ছে হচ্ছে , কিন্তু পরিস্থিতি এতোই খারাপ যে সামনে অব্দি যেতে পারছে না।
বাসায় পৌছাতেই রবিন তন্ময়ের বরাবর দাঁড়ালো।
রবিন অভিজ্ঞদের মতো তন্ময় কে দেখতে লাগলো।
কারন একটু আগে নীলিমা কে ফোন করেছিলো সে।
নীলিমা তাকে বলেছে একটা ছেলে ফেস মাস্ক পরে এসে পাবে কি কি করেছে।
রবিন তন্ময়ের কাছে গিয়েই বুঝে গেল তন্ময় ই ছিলো পাবে। কিন্তু তন্ময় কেন নীলিমার কাছে যাবে?
রবিন কে এভাবে তাকাতে দেখে তন্ময় বলল
– এমন করে তাকাচ্ছিস কেন ?
রবিন মুচকি হেসে বলল
– এমনি , কি এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিলো যার জন্য আমাদের ফেলেই চলে যেতে হলো তোকে ?
তন্ময় মাথা নিচু করে বলল
– এমনি একটা জায়গায় গিয়েছিলাম।
রবিন দীর্ঘশ্বাস টেনে বলল
– আচ্ছা চল ,,
রবিন চলে যেতে নীলেই তন্ময় রবিনের হাত ধরে বাঁধা দিলো।
রবিন কৌতুহল নিয়ে তাকাতেই তন্ময় ছলছল চোখে তাকিয়ে বলল
– দোস্ত একটা কথা বলার ছিলো।
রবিন দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল
– ফ্রেস হয়ে ছাদে আয় ।
তন্ময় মাথা ঝাকিয়ে উপরে উঠে গেল।
রবিন জানে আজ তন্ময় কিছু না কিছু বলবে যা নীলিমা কে নিয়ে।
কিন্তু তন্ময়ের স্মৃতি ফিরে এলে তন্ময় সবাই কে জানাচ্ছে না কেন ?
নাকি অন্য কিছু?
রবিন এক পা দু পা করে ছাদে এসে দাঁড়ালো।
পরিস্থিতি কি হবে তা বুঝতে পারছে না সে।
তন্ময় দ্রুত ফ্রেস হয়ে এসে ছাঁদে চলে আসে।
ছাঁদে এসে দরজা লক করে দেয় যাতে কেউ এসে না পরে।
রবিন একটা স্প্রাইড এর বোতল এগিয়ে দিয়ে বলল
– বল কি বলবি,,,
তন্ময় এক নিশ্বাসে স্প্রাইড শেষ করে মাথা চেপে ধরে বলল
– আমি পারছি না আর।
সহ্য হচ্ছে না আমার , বিশ্বাস কর আমি অসহ্য হয়ে পরেছি।
কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না আমি।
রবিন ভ্রু কুঁচকে বলল
– হেয়ালি না করে সোজাসুজি বল।
তন্ময় আকাশের দিকে তাকিয়ে বুক ভরে শ্বাস নিয়ে বলল
– লাস্ট মান্থ এ আমার যে এক্সিডেন হয়েছিলো মাথায় আঘাত লাগাতে আমি পুরনো সব স্মৃতি ফিরে পাই।
শরীর অসুস্থ থাকায় বিডি তে আসতে পারি নি।
কিন্তু একটু সুস্থ হওয়ার পর ই আমি নিজে কে ধরে রাখতে পারি নি।
ছুটে আসি বি ডি তে শুধু মাত্র আমার নীলির কাছে।
রবিন কিছু বলল না কারন এর পরের ঘটনা সব ই জানে সে।
তন্ময় ছলছল নয়নে তাকিয়ে বলল
– জানিস সেদিন যখন আমি ঢাকাতে আসছিলাম তখন ই নীলি কে পাই।
পরের সমস্ত টা তো তুই জানিস, সেদিন আমি বলি নি ওওহহহ আমার নীলি।
কারন সবাই তো জানে আমি তন্ময়, আর তন্ময় ইথিনার।
আমি কি করতাম বল , আমি আমার নিজের ভালোবাসা কে ছাড়তে পারি নি।
এই কয়েক টা দিনে আমি শেষ হয়ে গেছি।
বিশ্বাস কর ভাই আমি ইথিনা কে ও ঠকাই নি।
আমি কখনো ওকে ভালোবাসি ই নি।
ওওও আমাকে বাঁচিয়ে ছে সেই কৃতজ্ঞতা থেকে আমি ওকে বিয়ে করার জন্য রাজি হয়েছিলাম।
কিন্তু যেখানে আমার অতীত , আমার সুখ, আমার ভালোবাসা, সব থেকে বড় বিষয় নীলি আমার স্ত্রী।
সব কিছু মনে পরে যাওয়ার পর ও আমি কি করে ওর কাছে ফিরে না আসতে পারি।
আর এতে কি ইথিনা কে ও ঠকানো হবে না ?
আমার মন মস্তিষ্ক দুটোই নীলি কে চায়।
কিন্তু আমি স্বার্থপর কি করে হই , যেখানে ইথিনা আমার মুখ চেয়ে আছে।
যেখানে হুট করে মেয়েটাকে কি করে কষ্ট দিই ?
অন্য দিকে আমার নীলি , ও তো শেষ হয়ে যাচ্ছে।
বিশ্বাস কর ভাই এখন আমি আর পারছি না রে।
আমার তো মনে হয় সেদিন মরে গেলেই ভালো হতো।
আমি বেঁচে থেকে ও আমার ভালোবাসা কে কাছে টেনে নিতে পারছি নাহ।
ধুকে ধুকে শেষ হয়ে যাচ্ছি, নীলি আমার জন্য শেষ হয়ে যাচ্ছে আমি কি করে সহ্য করবো?
আমি এতো অসহায় যে না নীলির সামনে যেতে পারছি আর না ইথিনা কে বুঝাতে পারছি।
কিন্তু তুই ই বল আমি আমার ভালোবাসার সাথে কি করে বেইমানি করবো ?
আর আমি ইথিনা কে কখনো কথা ও দেই নি।
শুধু সবার মতামতের সাথে সম্মতি জানিয়েছি সেটা ও নিজের অগোচরে।
আমার অতীত মনে না পরলে হয়তো আমি ইথিনা কে বিয়ে ও করে নিতাম।
কিন্তু আমার অতীত মনে পরার পর আমি আমার ভালোবাসা কে কি করে কুরবানি দেই বল ?
আমি কিছু বুঝে উঠতে পারছি নাহহহ।
বিশ্বাস কর আমি আমার জীবনের সব টুকু দিয়ে নীলি কে ভালোবাসি।
লোকে বলে পৃথিবীতে সবার আগে ভালোবাসতে হয় মা বাবা কে , যদি তাই হয় তো আমি বলবো আমার পৃথিবী তে আমি সবার আগে মা বাবা কেই ভালোবাসি।
কিন্তু আমার এই মনের পৃথিবী থেকে আমি নীলি কে ভালোবাসি।
বাইশ বছরের তিক্ততা ভালোবাসার রূপ নিয়েছিলো নীলির জন্য।
আমি কি করে কষ্ট দিবো ওকে ?
আমি বেঁচে থেকে ও ওর জন্য নাই হয়ে আছি।
আমি পাগল হয়ে যাবো , আমি পারছি না আর।
রবিন চোখের পানি আড়াল করে বলল
– তন্ময় এমন করে পাগলামি করলে চলবে না।
পরিস্থিতি ঠিক করতে হবে, যে যাই বলুক ঠিক ভুল যাই হোক মনের উপর জোড় খাটানো যায় না ।
আর এখানে তো তোর দোষ নেই , পরিস্থিতে তোকে এমন করেছে।
তুই শান্ত হও, তোর নীলি তোর ই হবে।
কিন্তু তার জন্য ওর থেকে দূরে থাকতে হবে তোকে।
আগে ইথিনার মুখোমুখি হতে হবে , পুরো পরিবারের মুখোমুখি হতে হবে।
এভাবে শেষ হওয়ার মানেই হয় নাহহহ।
তন্ময়ের কাঁধে হাত রেখে রবিন আবার বলল
– মেয়েটা খুব ভালোবাসে রে তোকে , হ্যাঁ ইথিনা ও বাসে কিন্তু ইথিনার থেকে নীলিমার ভালোবাসা প্রখর রে।
ওরর হাসবেন্ড তুই, যে যাই বলুক ওর ভালোবাসা ই সবার আগে ।
তন্ময় মলিন হেসে তন্ময়ের হাতে হাত রাখলো।
গত কয়েক দিন ধরে যে যন্ত্রণা একা সহ্য করছিলো ওহহহ আজ একটু হলে ও শান্তি লাগছে।
*
👇
আরিয়ানের দিক থেকে আরিয়ান সঠিক । সে নিরুপায়, পরিস্থিতি আজ বাধ্য করেছে তাকে।
তবে দেখা যাক শেষ সিদ্ধান্ত কি হয়। সবার গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি । আগের মতো সাড়া পাই নাহহহ গল্পে রিয়েক্ট একদম কম।
বোধহয় গল্প ভালো হচ্ছে না ?
নীলিমা ভাবলেশহীন ভাবে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।
দেহে প্রান আছে বোঝা ই যায় নাহহ।
আকাশে তারা রা খেলছে ,,, বড় থালার মতো উজ্জ্বল একটা চাঁদ ও আছে ।
সবাই কতো আনন্দে আছে , রাত প্রায় দুটো ,, এই ব্যস্ত নগরীতে এখনো প্রায় অর্ধেক মানুষ জেগে আছে।
কেউ প্রিয় মানুষের বুকে মাথা গুঁজে, কেউ কাজের তাড়নায় , কেউ বা রোগাক্রান্ত যন্ত্রণায় আর কেউ বা প্রিয় মানুষের সাথে ফোনআলাপে ।
আর কেউ কেউ প্রেমাসক্তি তে জ্বলে যাওয়া হৃদয় নিয়ে।
নীলিমা তাঁদের ই একজন , ভালোবাসার মানুষ টিকে ছোঁয়ার নেই কোনো স্বাধ্য।
আকাশে মেঘের দেখা নেই ,আজকাল মেঘ ও বুঝি নীলিমার সাথে অভিমান করেছে।
কতো দিন হয়ে গেছে চিৎকার করে কাঁদা হয় না তার।
মেঘ ডাকলে তখন চিৎকার করে কাঁদা যেতো।
মেঘেরা ও আজকাল সুখি হয়ে গেছে, শুধু সুখ নামক পাখি ধরা দিলো না নীলিমার কাছে।
নীলিমা মলিন হেসে ব্যলকনি থেকে রুমে পা বাড়ালো।
শুনেছে মিহির বাচ্চা হবে, পরিবারের সবাই খুব খুশি।
দুজন ভালোবাসার মানুষ কে মিলিয়ে দিয়েছে তারা।
শুধু নীলিমার বাবা ই পারে নি মেয়ের ভালোবাসা কে মিলিয়ে দিতে।
খুন করে দিয়েছেন মেয়ের সুখ শান্তি কে।
নীলিমা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আরিয়ানের দেওয়া ডাইরিটা পড়তে লাগলো।
লেখা গুলো এখনো জ্বলজ্বল করে , মনেই হয় না এই মানুষ টি মৃত।
চার বছর পেরেছি গেলো,,, ঠিক ই কিন্তু সুখ শান্তি এলো নাহহ।
কি করে আসবে ?
যে মানুষ টা কে ঘিরে তার পৃথিবী সে মানুষটাই তো নেই।
অভাগী কাকে বলে জানেন?
নীলিমার মতো স্ত্রী দের অভাগী বলে ।
স্বামীর ভালোবাসা পাওয়া হয় নি তার আর না স্বামী কে শেষ দেখা হয়েছে।
স্বামীর অস্তিত্ব কোথায় হাড়িয়ে গেছে সে জানে না।
হয়তো ক্ষুধার্ত শকুনেরা খুবলে খুবলে খেয়েছে তার স্বামী কে।
নয়তো চাপা পরে গেছে কোথাও ,
এই সব ভাবতেই নীলিমার গায়ের লোম জেগে উঠলো।
নীলিমার বুকের ভেতর যন্ত্রণা হতে লাগলো।
আরিয়ানের খুব কষ্ট হয়েছে নাহহ ?
নীলিমা কিচ্ছু টি করতে পারে নি , এ কেমন স্ত্রী সে যেখানে স্বামীর কষ্ট নিবারন করার স্বাধ্য ছিলো না তার।
পরবর্তী পার্ট পেতে পেইজ এ ফলো দিয়ে রাখুন
https://www.facebook.com/Fatema-tuz-ফাতেমা-তুজ-110123584545542/
বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাফ করবেন ।
চলবে