প্রেমের_ভেলা অন্তিম পর্ব

0
2734

প্রেমের_ভেলা
অন্তিম পর্ব
লেখায়- #Anjum_Tuli
.
.
আমার কান্নায় ত্রয়ী ভাবী দৌড়ে এসে আমায় জড়িয়ে ধরেছে। কান্না কোনোমতে সংবরন করলেও কোনো ভাবেই হেচকি আটকাতে পারছি না। রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দাড়ালাম। শুদ্ধ ভাই কি কি বললো এটা!

সবে মাত্র বাবা বসার ঘরে ঢুকেছিলো। শুদ্ধ ভাই সাথে সাথেই দাঁড়িয়ে বাবাকে বলে দিলো, ‘আংকেল আমি সিয়াকে বিয়ে করতে চাই’

বজ্জাত হার্টলেস শুদ্ধভাই আমার সাথে দিশার পরিচয় করিয়ে দিলো ফিয়ন্সে। আর লাজ লজ্জার মাথা খেয়ে কিনা ডাইরেক্ট বাবাকে বলে দিলো, আমি সিয়াকে বিয়ে করতে চাই!

করবো না বিয়ে। করবো না। তুমি আমায় অনেক জালিয়েছো শুদ্ধ ভাই। গুণে গুণে শুধ তুলবো সব কিছুর। আমাকে পেয়েছে টা কি?

ত্রয়ী ভাবী হালকা কেশে তার জানান দিলে। চোখের পানি মুছে ঠিক হয়ে দাড়ালাম। ভাবী আমাকে টেনে নিয়ে বিছানায় বসালেন। তারপর আমার হাতে হাত রেখে বললেন, ‘আমার দেবরটা এত লাকি! এমনিতেও তো লালটুকটুকে বউ পাচ্ছে আবার যে কি না পাগলের মত ভালোবাসে’ বলেই হাসতে থাকলো।

আমি মুখটাকে বাংলার পাচ বানিয়ে বললাম, ‘ভাবী..’

ভাবী সিরিয়াস ভংগিমায় বললেন, ‘শুদ্ধ তোর জন্যই ফিরে এসেছে সিয়া। পাগলটা নিজের ভালবাসার কথা সবার কাছ থেকে গোপন করে পালিয়ে গিয়েছিলো’

তারপর একটা দম নিয়ে বলল, ‘শুদ্ধকে আমি খুব ভালো করেই চিনি। প্রচন্ড চাপা স্বভাবের একটা ছেলে। ওকে আর কষ্ট দিস না লক্ষিটি। আর নিজেও কষ্ট পাস না।’

তারপর মুখ চেপে হেসে বলল, ‘আজকের সবকিছু কিন্তু প্রি প্লেন্ড’

আমি চোখ বড় বড় করে বললাম, ‘মানে?’

তারপর যা বললেন তাতে আমার বিস্ময়ে মুখ হা হয়ে গেলো।

‘হ্যা আর সব কিছুর প্লেনই ছিলো আংকেলের। উনি ভেবেছেন তোকে সারপ্রাইজ দিবে শুদ্ধকে এনে। কিন্তু শুদ্ধটা একটু বাড়িয়ে দিশাকে নিয়ে এসেছে তোকে আরেকটু জ্বালাতে। আর অবাক করা বিষয় হলো আংকেলের সাথে মায়ের আগে থেকেই তোর বিয়ে নিয়ে কথা হয়েছে। কিন্তু শুদ্ধ তা জানতো না। আর তাই তো সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে দিলো তোর সাহসী প্রেমিক’

ভাবীর কথা শুনে মুখটা ফুলিয়ে বললাম, ‘এই দিশা ফিশা নাকি উনার ফিয়ন্সে! ‘

ভাবী আমার কথা শুনে হাসতে হাসতে অবস্থা খারাপ। দিশার নাকি বিয়ে হয়ে গেছে আরো আগেই। পাচ বছরের একটা ছেলেও আছে। উফ! এই শুদ্ধটা আমায় এত জালায় কেনো!

মা ঢোল পিটিয়ে আমায় ডাকছেন সবার সাথে খেতে বসার জন্য। আমি কোন মুখে সবার সামনে যাবো। ছি! কি কান্ডটাই না করলাম। এবার লজ্জায় মুখ লুকালে বাচি। টিয়াকে দিয়ে মা’কে খবর দিলাম খুদা নেই। রুম ছেড়ে বারান্দায় এসে দাড়ালাম। বেশ ঠান্ডা হাওয়া বইছে। আচ্ছা প্রকৃতিরও বুঝি আমার মত মন ভালো হয়ে গেছে। এই শীতল হাওয়ায় হালকা কেপে কেপে উঠছি কেমন।

অনেক্ষন পরে মনে হলো পাশে এসে কেউ দাড়িয়েছে। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখতেই ঢুক গিললাম।

কোনোমতে তুতলিয়ে বললাম, ‘শুদ….দ্ধ ভা…ই’

শুদ্ধ ভাই আমার কাছে, খুব কাছে এসে বললেন, ‘এখনো ভাই?’

উনার শ্বাস গুলো আছরে পরছে আমার চোখে মুখে। আবেশে চোখ বুজে নিলে শুদ্ধ ভাই দূরে সরে গেলেন। উনার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ গুলো ভুলে গেলাম। মনে হলো এইত আমার আপন মানুষ। আমার খুব আপন কেউ আমার কাছে, আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। চোখে পানি চলে এলো। সেই কিশোরী বয়সের প্রেম এত গভীরে কখন চলে গেলো যে আমি এই ভালোবাসার জন্য এত পাগলামি করলাম?

আমার চোখে পানি দেখে শুদ্ধ ভাই দুকদম এগিয়ে এলেন। ডান হাত উচিয়ে সযত্নে আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে বললেন, ‘নো মোর ক্রায়িং সিয়া। আর না অনেক কেদেছ। আর কষ্ট পেতে দেবো না।’

আমার ইগু, লাজ-লজ্জা, অভিযোগ, অভিমান সব ভুলে দুহাতে শুদ্ধভাইকে জড়িয়ে ধরলাম। উনি পরম যত্নে উনার বুকে আমাকে আগলে নিয়ে এক হাত মাথায় রাখলেন। এভাবে বেশ কয়েক মিনিট চলে গেলে মাথা তুলে তাকালাম।

শুদ্ধভাইয়ের চোখের কোণে অশ্রু। মুছে দিলাম। চোখের ইশারায় ব্রু উচিয়ে কারণ জিজ্ঞাসা করলে উনি দুদিকে মাথা নাড়ালেন। আবারো এক টানে আমায় বুকে নিয়ে বললেন, ‘ আরেকটু থাকো সিয়া’

উনার বুকে মাথা রেখেই বললাম, ‘আপনি এত পাষাণ কেনো শুদ্ধ ভাই?’

উনি নিজের থেকে আমাকে আলগা করে বললেন, ‘এই আপনিটা আবার কোত্থেকে এলো?’

আমি মাথা নিচু করে বললাম, ‘আপনার ফিয়ন্সের কি হবে?’

উনি ঠোট চেপে হেসে বললেন, ‘সে তো আমার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে’

দুহাতে উনার বুকে কিল বসিয়ে দিলাম। বজ্জাত ছেলে আমাকে কেবল জালিয়েই গেলো। উনি আমার দুহাত নিজের মুঠয় ভরে বললেন, ‘সরি সিয়া, আমি কখনো চাই নি আমার কারণে আমার মা ভাই কষ্ট পাক। যেদিন মা ভাইয়ের জন্য তুমার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলো। এর পর থেকেই আমি তুমার প্রতি সৃষ্টি হওয়া সব অনুভূতি গুলোকে চাপা দিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ভুল আমার সিয়া, আমি তুমাকে কখনো বুঝতে চেষ্টা করি নি। আমি কখনো বুঝি নি যে পিচ্চি সিয়াটা এতটা ভালোবাসতে পারে। যেদিন মুগ্ধ ভাই এংগেইজমেন্টের ঘটনা আমাকে বলে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। মাত্র সেমিনারে আমার সব কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম সেদিন। ফিরে আসার কোনো পথ ছিলো না। মনে মনে শপথ নেই তুমাকে আমার করেই ছাড়বো। ত্রয়ীকে দিয়ে আংকেল আন্টির সাথে কথা বলি। উনারা তুমার সুখের জন্য আমার প্রস্তাবে রাজি হয়। তবে আংকেল শর্ত দিয়েছিলেন আমি ফিরে আসার আগ অবদি তুমার সাথে কোনো রকমের যোগাযোগ রাখা যাবে না। যদি কোনো কারণে আমাদের বিয়ে না হয়! উনি তুমাকে নিয়ে সংকিত ছিলো। তুমি যে বড্ড আবেগী সিয়া। না পেয়ে কষ্ট পাওয়া থেকে পেয়ে হারানোর যন্ত্রনা যে আরো বেশি। তুমি অনেক ভাগ্যবতী সিয়া। আংকেল আন্টি ওয়ার্ল্ড বেস্ট প্যারেন্টস।’

হু আমি জানি আমার বাবা মা বেস্ট বাবা মা। কিন্তু আমি যে তাদের অনেক কষ্ট দিয়েছি। আমি মাথা নিচু করে চোখের জল ছাড়লাম। শুদ্ধ ভাই আলতো হাতে তা মুছে দিয়ে আমার কপালে উনার প্রথম ভালোবাসার স্পর্শ একে দিলেন। আবেশে চোখ বুজে ফেললাম।

তারপরে চোখের পলকে আমাদের বিয়ে হয়ে গেলো। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করলাম। শুদ্ধ ভাই উনার প্রফেশনে বিজি। ত্রয়ী ভাবী আর মুগ্ধ ভাইয়ের পরীর মত একটা মেয়ে হয়েছে। মাত্র দুমাস হয়েছে। কি সুন্দর চোখ। পিটপিট করে তাকিয়ে থাকে। কোলে নিলে খিলখিলিয়ে হাসে। আমি তাকিয়ে থাকি। নাকের ডগায় চুমু খাই। এমনি একটা খেলনা পুতুলের বায়না করতাম বাবার কাছে এক সময়। আর এখন করি শুদ্ধর কাছে। কিন্তু তার এক কথা, ‘ তুমি নিজেই তো এখনো বাচ্চা সিয়া। আরেকটু বড় হয়ে নাও’

আজ আমাদের প্রথম বিবাহ বার্ষিকী। এমনি এক দিনে আমি আর আমার প্রেমিক পুরুষ পবিত্র এক বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলাম। ভাবতেই অবাক লাগে। এইত সেদিনও আমি শুদ্ধ ভাইয়ের অপেক্ষার প্রহর গুনতাম। আর এখন আমি তার বউ।

ফাজিলটা আগেও অপেক্ষায় রাখতো এখনো রাখে। সারাদিন ডিউটি শেষে রাতে ফিরে। আবার মাঝে মাঝে রাতেও ডিউটি থাকে। অপেক্ষা করতে করতে মাঝে মাঝে আমি টেবিলেই ঘুমিয়ে যাই। শুদ্ধ সযত্নে আমাকে কোলে নিয়ে বিছানায় শুয়িয়ে দেয়। সকালে ঘুম থেকে উঠতেই নিজেকে তার বাহুবন্ধনে আবদ্ধ পাই। নিজেকে তখন সবচেয়ে সুখী হিসেবে মনে হয়।

বিয়ের পর থেকে আজ পর্যন্ত শুদ্ধর পাগলামি দেখেছি। আমার ভেতর ছিলো শুদ্ধকে না পাওয়ার পাগলামি। আর শুদ্ধ করে পেয়ে আগলে রাখার পাগলামি। আমরা কখনো পড়ন্ত বিকালে নদীর পাড়ে একসাথে হাটি। কখনো গোলাপ বাগানে গিয়ে গোলাপের ভিড়ে নিজেদের রাঙ্গিয়ে সুন্দর মুহুর্ত ক্যাপচার করি। আবার কখনো রাতের আধারে নিজেদের সুখ দুঃখের বুলি আওরাই। বিয়ের পর থেকে এই এক বছরে আমরা প্রতি মাসে ঘুরতে গেছি। আর এবারে তো আমাদের পুতুল সোনাকে নিয়ে কক্সবাজার ঘুরে এলাম। মুগ্ধ ভাই আর ত্রয়ী ভাবীর মেয়েকে নিয়ে।
আমি কখনো কল্পনাও করি নি জীবন আমাকে এত সুখ এনে দিবে। শুদ্ধ জীবনে না আসলে প্রেম ভালোবাসা ভালো থাকা সুখে থাকার সংজ্ঞাটাই অজানা থাকতো।

শুদ্ধ বাবা মাকেও আমাদের সাথে থাকার জন্য বলেছিলো। কিন্তু মেয়ের শশুরবাড়িতে থাকতে বাবা নাড়াজ। তাই আবারো আমরা প্রতিবেশী হয়ে গেলাম। শুদ্ধদের পাশের ফ্ল্যাটে বাবা মা চলে এলেন। এখন আমি এক দৌড়ে বাপের বাড়ি যেতে পারি। আবার চলে আসতে পারি।

ত্রয়ী ভাবী জোড় করে আমাকে সাজিয়ে দিলেন। লাল রঙয়ে মুড়িয়ে দিলেন আমায়। একদম বউ বউ লাগছে।

ছাদে যেতেই এক গুচ্ছ আলোকরশ্মি এসে শুদ্ধর উপর পড়লো। আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলাম। ধীর পায়ে এগিয়ে গেলাম। শুদ্ধ হাটু গেড়ে বসে গেলো। ডান হাতে এক গুচ্ছ গোলাপ নিয়ে বললো, ‘সিয়া ভালোবাসিত’

এই একটা শব্দ আমার বুকে কম্পনের সৃষ্টি করে ঠিক যতবারই এই ব্যাক্তিটির মুখে শুনি। শুদ্ধ ভাই ডাকা নিষেধ বিয়ের পর থেকে। এখন সে কেবলি আমার শুদ্ধ। আমার ব্যাক্তিগত সম্পদ। আমার ভালোবাসা। শুদ্ধ উঠে আমাকে জড়িয়ে নিলেন। সাথে সাথেই বাকি বাতি গুলো জ্বলে উঠলো। খানিক লজ্জা পেলাম।

আন্টি এসে আমার কপালে চুমু একে দিয়ে বললেন, ‘আজ আমি সবচেয়ে খুশি সিয়া। আমার মেয়েটাকে শেষমেষ আমার কাছে আনতে তো পেরেছি’

আমি অবাক দৃষ্টিতে এই মহিলার পানে তাকিয়ে আছি। শুদ্ধর বয়স যখন দশ। তখন ওর বাবা মারা যায়। আন্টি এক হাতে দুটো ছেলেকে মানুষ করেছেন। নিজের একলা জীবনের সঙ্গী কাউকে করেন নি। ভালোবাসা তো এটাই। স্মৃতির পাতা সংগে নিয়ে দুই ছেলেকে নিয়েই জীবন কাটিয়ে দিলেন। উনি আমার শাশুড়ী কম মা বেশি। আমি মায়ের কাছে যে আবদার টুকু করতে পারি নি কখনো আন্টির কাছে করেছি। আমার দেখা সংগ্রামী মহিলাদের মধ্যে একজন। যে ভালোবাসতে জানেন। আগলে রাখতে জানেন। কঠিন মুহুর্তে নিজেকে সামলাতে জানেন। শুদ্ধ আমাকে আর মাকে দুহাতে জড়িয়ে ধরেছে। বাবা মাও হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে। মুগ্ধ ভাই ত্রয়ী ভাবীর কোলের বাচ্চার সাথে খেলায় ব্যাস্ত। চারিদিকে কেবল সুখ। এই শুদ্ধটা আমার জীবনে না আসলে আমি কখনো এই ভালোবাসার ভেলায় নিজেকে ভাসাতে পারতাম না।

শুদ্ধ আমার জীবনের এমন একটা চ্যাপ্টার যাকে ভালোবেসে আমাকে কখনো আফসোস করতে হয়নি। আমাদের বিয়ের পাচ বছর রানিং। ঠিক প্রথম বছরের মতই কাটছে। আমাদের একটা দুষ্টু ছেলে হয়েছে। শুদ্ধর মত শান্তশিষ্ট একটা মানুষের ছেলে এতটা অশান্ত কি করে হয় আমি ভেবে পাই না।

এই তো সেদিন, মায়ের সাথে বিকেলে হাটতে বেড়িয়েছিলো রিদ্ধ। ও হ্যা আমাদের ছেলের নাম রিদ্ধ। বাসায় ফিরেই বায়না ধরলো, ‘বাবা যাবো’ কোনো বাহানাই শুনলো না। নিয়ে গেলাম। শুদ্ধ মাত্রই অপারেশন থেকে বেড়িয়েছে। আমাদের দেখেই এগিয়ে এলো। শুদ্ধ আসতেই রিদ্ধ বাবার কোলে ঝাপিয়ে পরলো। কোলে উঠেই শুদ্ধ সহ নিজেকে ভিজিয়ে দিলো। এই কাজ কেনো করেছে জিজ্ঞেস করতেই এক আঙুল উচিয়ে শাশিয়ে বললো, ‘তুমি দুপিরে বাসা যাও নি কেন! তাই হিসু করে দিয়েছি’

আমি কপাল চাপরালাম। কিন্তু শুদ্ধ ঘর কাপিয়ে হেসে আমার কানে কানে এসে বললো, ‘দেখলে ছেলে আমাদের প্রেম করার সুযোগ করে দিলো। এখন তো আমাকে বাসায় যেতেই হবে। এখন স্যারও আমায় ছুটি দিতে বাধ্য। ‘ ছেলেটে কোলে নিয়েই শুদ্ধ ছুটি নিয়ে এসে বাসায় ফিরে এলো।

ছেলেটা সবার আদরে বাদর তৈরী হচ্ছে। আমার পুতুল সোনাটাকেও কাদায়। যতবারই একসাথে হয় পুতুলটার চুল টেনে ছিড়ে দেয়। আর আমাদের আদরের ত্রয়ী ভাবীর মেয়ে পুতুল গলা কাপিয়ে কান্না করে।

রিদ্ধকে বহু কষ্টে ঘুম পাড়িয়ে বারান্দায় এসে দাড়ালাম। শুদ্ধ মাত্রই ফিরেছে। ঘরে এসে ফ্রেশ হয়েই বারান্দায় দাড়ালো। আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে চুলে মুখ ডুবালো। আমি একটা রা ও করলাম না। এই স্পর্শটাকে মনের অন্তস্থল থেকে অনুভূত করলাম। শুদ্ধ আমাকে ঘুড়িয়ে নাকে নাক লাগিয়ে বললো, ‘সিয়া ভালোবাসিত।’

এই একটা শব্দ আমাকে প্রতি মুহুর্তে ঘায়েল করে। আমরা প্রতি রাতে গল্প করি। প্রেমের গল্প। যেনো মনে হয় সদ্য প্রেম করা কপোত কপোতি। শুদ্ধ তার প্রেমের ভেলায় ভাসিয়ে আমাকে রাঙ্গিয়ে দিয়েছে। আমি এ ভেলায় ভাসতে চাই, আজীবন ভাসতে চাই। এই তো আমার জীবন। আমার শুদ্ধ, রিদ্ধ। আমার পরিবার পরিজন সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে চাই। ভালো আছি। সুখে আছি। দূরের চাদটাও আমায় দেখে হিংসায় জ্বলে। তবুও তাকে বুড়ি আঙুল দেখিয়ে আমি হাসি। খিলখিলিয়ে হাসি। প্রাণোচ্ছল হাসি। শুদ্ধ তাকিয়ে থাকে। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে আর মুগ্ধ হয়ে বলে, ‘এই তো আমার কিশোরী সিয়া।’
কাছে আসে। আবার বলে, সিয়া ভালোবাসিত।’

সমাপ্ত।

[এই গল্পটা কোনো বিশেষ প্লটে সাজাই নি। আমি অনেক দিন থেকেই লেখালেখি থেকে দূরে থাকায় গল্পটার মাধ্যমে হাতটাকে সচল করলাম। জানি না আপনাদের কাছে গল্পটা কেমন লেগেছে। এটা কেবলি একটা সাকসেসফুল প্রেমের গল্প। তবে সামনে ভালো কোনো এক গল্প নিয়ে আসবো আপনাদের জন্য। আমার জন্য দোয়া করবেন। আর অনেক অনেক ভালোবাসা। গল্পটা কেমন লেগেছে অবশ্যই জানাবেন। আপনাদের কমেন্ট আমি সব পড়ি। আমার ভালো লাগে। আনন্দিত হই। উৎসাহ পাই লেখার। এভাবেই পাশে থাকবেন। ভালোবাসা অবিরাম]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here