#_ফাগুন_প্রেম
পর্ব: ৫১
লেখনীতে: Bornali Suhana
💛
💛
যদিও সে জানে রুমুর এই হাসি শুধু উপরে উপরেই। কিন্তু আসলে তার মনের আঙিনায় ধরেছে কষ্টের ঘুণপোকা। বেড়েছে যন্ত্রণার উপদ্রব। ক্ষয়ে যাচ্ছে ভেতরটায় লুকানো বাসিন্দা। ক্ষণেক্ষণে ঝরে পড়ছে অনুভূতিটাগুলো। যে অনুভূতির বিপক্ষে সে যেতে পারেনি আর হয়তো তার ঠাঁই নেই। বর্ণালী জানেনা ওদের জীবনের কি হবে কিন্তু সে এই পদক্ষেপ না নিলে হতো না। বান্ধবীর জন্য আজ একটু না হয় স্বার্থপর হলোই। কিন্তু রুমু কি রাজী হবে? হতে তো ওকে হবেই। আমার জন্য হলেও ওকে রাজী হতে হবে। এসব ভাবনা তাকে ভেতর থেকে ভাবাচ্ছে। গল্পের মাঝে ফোনের রিংটোন বেজে উঠে বর্ণালীর। স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখে সেই ভালোবাসার নাম “বসন্ত পথিক”। ইভান ফোন করেছে। সবার মাঝ থেকে উঠে নিজের রুমে যেতে যেতে কল রিসিভ করে সে। ফোনের ওপাশে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে সে নিজেই বলে,
-” ইভান….”
বর্ণালীর মুখে এভাবে নিজের নাম শুনে ইভানের কলিজাটায় যেনো পানি আসে৷ সিক্ত হয়ে যায় প্রাণ। মনে জেগে উঠে হাজারো প্রদিপ আর আলোকিত করে দেয় তার ভুবন। ইভানের ঘন নিঃশ্বাসের শব্দ বর্ণালী চোখ বন্ধ করে অনুভব করছে। মনে হচ্ছে যেনো ইভানের মুখটা ঠিক ওর মুখের সামনে। আর তার সম্পূর্ণ নিঃশ্বাস এসে ওর মুখের উপর লুটিয়ে পড়ছে৷ আয়নায় হাত দিয়ে ইভানের মুখটা স্পর্শ করার বৃথা চেষ্টা করছে।
-“কেন এমন করো আমার সাথে বাসন্তী?”
এই কণ্ঠে এতো নেশা কেন! কেমন মাতোয়ারা করে দেয়। এই বাসন্তী ডাকটা ওর মুখ থেকে বারবার শুনতে মন চায় ওর। কিন্তু বাস্তবতার সবকিছু যে ধুলোপড়া। ইভানের সাথে কেন ওর ভালোবাসা পূর্ণতা পাবে না? ভালোই তো বেসেছে। কেন ইভান? কেন আমায় তোমার প্রতি পাগল করলে? না পারছি এই দূরত্ব সইতে আর না পারছি তোমায় কাছে টেনে নিতে। বন্ধ চোখ দিয়েই গালের পাশ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে। চোখ বন্ধ থাকলেও কেন এই জল বাঁধা মানেনা? সে কেন থমকে যায় না? এই অনর্থক প্রশ্নের কোন উত্তর নেই। তবুও মনের মাঝে তো আসতে বাঁধা মানেনা।
-“আমার বাসন্তী এখন কাঁদছে জানি।”
-“মিথ্যা।”
-“উহু সত্যি। যতই বলো না কেন আমি তোমার মুখের কথা বিশ্বাস করি না। আমি তোমার চোখে দেখতে পাই তোমার মুখ পড়তে পারি। তোমার চোখেমুখে স্পষ্ট দেখা যায় যে তুমি আমায় ভালোবাসো, আমায় তোমার করে চাও। কিন্তু তোমাকে আমার কাছে আসতে কিছু একটা বাঁধা দিচ্ছে। আর এই বাঁধাটা হয়তো আমাদের বয়সের পার্থক্য। যা আমাদের পরিবার ও সমাজ মেনে নিবে না ভাবছো। আমি সমাজের কথা বলবো না বাসন্তী কিন্তু তোমার আমার পরিবার ঠিকই রাজী করতে পারবো। একটা সুযোগ দাও না তোমার বসন্ত পথিককে।”
বর্ণালী নিজের কান্না আটকানোর চেষ্টা করে বলে,
-“আমাকে তুমি এভাবে আর কোন কল দিও না ইভান। নাহলে আমি তোমায় ব্লক দিতে বাধ্য হবো।”
কথাটা বলেই কল কেটে দেয়। কান্নাটা বেরিয়ে আসতেই চেয়েছিলো তখনই দরজায় কারো উপস্তিতি অনুভব করে। কেউ দরজা ধাক্কাচ্ছে। কয়েকটা লম্বা নিঃশ্বাস নিয়ে হাসিমুখে দরজা খুলতেই দেখে জেনি, নিধি আর রুমু। সবাই একসাথে বলে উঠে,
-“আজকে আমরা এখানে ঘুমাবো।”
-“হ্যাঁ এসো।”
-“সবার কি জায়গা হবে?”
-“ফ্লোরে বিছানা করে নিলে অনেক ভালো হয় তাই না?”
নিধির প্রশ্ন শুনে জেনি কথাটা বলেই ফ্লোরে বিছানা করতে লেগে যায়। বর্ণালীর কলেজ ব্যাগ ওখানেই ছিলো৷ বিছানার চাদর টান দেয়ার সাথে ব্যাগটা ঠাস করে ফ্লোরে পড়ে যায়। ভয়ে বিছানার চাদর রেখে ব্যাগের জিনিস তুলতে লেগে যায়। একটা বক্সের ভেতর থেকে নোজ পিন বেরিয়ে আসে। নোজ পিনটা দেখেই জেনির ভালো লেগে যায়। হাতে নিয়ে বলে,
-“আপু এটা আমায় দিয়ে দে না। এতো সুন্দর নোজ পিন!”
নোজ পিনের কথা শুনেই বর্ণালী দৌড়ে গিয়ে ওর হাত থেকে নেয়। এভাবে কেড়ে নেয়ায় জেনির চোখ বড়বড় হয়ে যায়।
-“এভাবে কেড়ে নেয়ার কী আছে? না দিলে বলেই দিতে আমি কী নিয়ে নিতাম?”
বর্ণালীর ওর কথায় কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। নোজ পিনটা হাতে নিয়ে দেখতেই মনে হয় সেদিনের কথা যেদিন পার্কে ইভান ওকে এটা গিফট করেছিলো। কিন্তু ও তো পার্কেই ইভানকে ফেরত দেয়ার পর সে তা ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলো।
-“এটা এখানে কীভাবে এলো!”
নিজের অজান্তেই কথাটা মুখ দিয়ে বের হয়ে গেলো ওর। রুমু পেছন থেকে বলে,
-“এটা তুই আজ দেখলি?”
-“মানে?”
-“সেদিন এটা আমি কুড়িয়ে নিয়ে তোর ব্যাগে রেখে দিয়েছিলাম। আর তুই এতোদিন খেয়ালই করিস নি?”
-“আরে আমি ব্যাগ ভালো করে চেকই করিনি।”
ওদের কথাবার্তা শুনে জেনি আর নিধি একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে। কথাগুলোর আগামাথা কিছুই বুঝতে পারছেনা তারা। তবে বুঝতে পারছে এটা কারো দেয়া গিফট হবে হয়তো। নিধি তো জিজ্ঞেস করেই বসে।
-“আচ্ছা এটা কী কেউ গিফট করেছে?”
-“ওই ইভ……”
-“রুমু…”
রুমু এক ধ্যানে ইভানের কথা বলে দিতে লেগেছিলো। বর্ণালী বাঁধা না দিলে তো বলেই ফেলতো।
-“কি হলো কিছু একটা বলছিলে রুমু আপু বলো।”
জেনির মনে কথাটা খটকা লাগে। রুমু যে কিছু একটা বলতেই চাচ্ছিলো আর বর্ণালী তাতে বাঁধা দিয়েছে তা সে বেশ বুঝতে পারছে। “ইভ” দিয়ে কি হতে পারে? ইভ….ইভান? মনের ভেতর কথাটা ভাবতেই উত্তর পেয়ে যায় জেনি। এটা ইভানের দেয়া গিফট। রুমু আপু কুড়িয়ে এনেছে মানে বর্ণালী আপু ফেলে দিয়েছিলো। বাহ সব ক্লিয়ার এখন। তার মানে ইভান ভাইয়া বর্ণপুকে ভালোবাসে কিন্তু সে বাসে না। না না সেও বাসে তবে স্বীকার করছে না। এই ব্যাপার দাঁড়াও বিচ্ছু দুটোকে মজা দেখাবো এবার।
জেনি একা একাই হাসছে। ওর মাথায় যে চরম দুষ্টুমি চেপেছে। ফ্লোরে বিছানা করে সবাই শুয়ে পড়লো।
.
.
আজকে সজিবের, ঈশার গায়ে হলুদ ও মেহেদী অনুষ্ঠান। সজিব পুরো রাত ঘুমায় নি। এই একটা ব্যাপার ওকে ঘুমাতে দেয়নি। কাল রাত থেকে ঈশাকে কতটা যে কল দিয়েছে তার কোন হিসেব নেই। কিন্তু একটাও রিসিভ হয়নি। সকালেই কিছুটা চোখ লেগে এসেছিলো তখনই ঈশার কলে ঘুম থেকে ধরফরিয়ে উঠে। কীভাবে কথা বলবে ভাবতে ভাবতেই কেটে যায়। সে যখনই ব্যাক করবে তখন আবারো কল আসে। রিসিভ করে হ্যালো বলতেই,
-“সজিব ঠিক আছো তুমি? কিছু হয়নি তো তোমার? কাল রাত থেকে এতো কল কেন দিয়েছো? কিছু কি হয়েছে? কী হলো? বলছো না কেন? সজিব প্লিজ কথা বলো আমার প্রাণ বেরিয়ে যাচ্ছে।”
-“আমার সাথে একটু দেখা করতে পারবে?”
-“আজকে? কিন্তু আজকে কীভাবে করবো সজীব? কী হয়েছে ফোনেই বলো না।”
-“প্লিজ বেশি সময় নিবো না এসব কথা আমি ফোনে বলতে পারবো না।”
-“ঠিকাছে আমি বিকেলে পার্লারে যাবো তখন তুমি ওখানে এসো দেখা হয়ে যাবে।”
-“এর আগে পারবে না?”
-“না সজীব এর আগে বের হতেই দিবে না আম্মু। পার্লার থেকে মানুষ বাড়িতে আনাতো কিন্তু তুমি দেখা করতে বলছো তাই আমি নিজে যাবো ভাবছি।”
-“আচ্ছা ঠিকাছে।”
-“তুমি ঠিকাছো কোন কিছু হয়নি তো?”
-“নারে পাগলী কিছুই হয়নি। আচ্ছা শুনো না।”
-“হ্যাঁ বলো সজীব।”
-“আই লাভ ইউ।”
-“আই লাভ ইউ টু মি. সবজিওয়ালা। হাহা সরি আসলে এটা রুমু অনেক সুন্দর করে বলে তো তাই আমিও বললাম আজকে।”
রুমুর কথা শুনতেই সজবের বুকটা ধুক করে ধরে আসে। কেমন অসহনীয় ব্যাথা হচ্ছে। যতক্ষণ না রুমু ওকে ক্ষমা করছে ততক্ষণ ও শান্তি পাবেনা। কিন্তু রুমু ক্ষমা করলেই কি এই ব্যাথা সারবে? ঈশা সব শুনে কী বলবে? তাকে কি বিশ্বাস করবে? আগে রুমুর সাথে কথা বলাটা প্রয়োজন ওর। কিন্তু রুমু কি কথা বলবে? আর বর্ণালী যা বললো তার কি করবে ও? নাহ কিচ্ছু বুঝতে পারছেনা। মাথার চুল খামছে ধরতেই হাতের মাঝে ব্যাথা অনুভব করে। কাল রাত্রে কেটেছিলো এটা তার ব্যাথা। কোন রকম উঠে ফ্রেশ হয়ে বাইরে আসে৷ ক্ষুধা লেগেছে অনেক। রান্নাঘরে আসতেই রুমুর সামনে পড়ে। সবার সাথে কাজ করছে মেয়েটা কি সুন্দর। যেনো ওর পরিবার এটা।
-“মা কিছু খেতে দাও।”
সজিবের কথা শুনতেই শারমিন বেগম নাস্তার ট্রে রুমুর হাতে ধরিয়ে দেন। রুমু চোখ বন্ধ করে খালি গলায় ঢোক গিলে। কেটে যাওয়া ঠোঁটের কোণে হাসি ঝুলিয়ে সজিবের রুমে আসে নাস্তা নিয়ে। হয়তো সে পারতো অন্য কাউকে দিয়ে নাস্তা পাঠাতে কিন্তু এই মুহুর্তে তার সজিবের সামনাসামনি হওয়াটা জরুরী।
-“হেই সবজিওয়ালা তোর নাস্তা।”
রুমুর এমন স্বাভাবিক ব্যাবহার দেখে সজিব হা হয়ে তাকায়। এই কি কাল রাতের রুমু? না না আমার ওকে চিনতে কোথাও ভুল হচ্ছে।
-“কিরে হাবলার মতো তাকিয়ে আছিস কেন? আজকে তোর বিয়ে এভাবে চেহারা করলে কিন্তু ঈশা আসবে না হাহাহা।”
-“তুই ঠিক আছিস?”
-“কেন আমার কি হবে? আমি একদম ফিট এন্ড ফাইন।”
-“এভাবে কথা বলছিস কেন? আসলে কাল রাত্রের জন্য সরি।”
-“সরি? কাল রাত্রের জন্য? কাল রাতে কি কিছু হয়েছিলো?”
-“রুমু তুই এভাবে আচরণ করছিস কেন?”
-“এভাবেই করা উচিত সজিব। এটাই স্বাভাবিক আচরণ আমার। আমি সব ভুলে গেছি তুইও ভুলে যা এটাই তোর, আমার ও ঈশার জন্য ভালো।”
-“বর্ণ বলছিলো যে আমি যেনো এই বিয়েটা ভেঙে তোকে বিয়ে করি।”
-“ও পাগল হয়েছে আমার কথা ভেবে। তুইও কি পাগল হয়েছিস? আমার মত কি নিয়েছে সে? নেয়নি তো না? আমি তোকে কখনোই বিয়ে করবো না। তুই ঈশার জন্যই পারফেক্ট। তোদের দুজনকে আল্লাহ দুজনার জন্যই বরাদ্দ করে রেখেছেন। এখানে অন্য কারো কোন জায়গা নেই। তাছাড়া আমি অন্য একজনকে ভালোবাসি।”
-“তুই কি আমায় ক্ষমা করে দিবি প্লিজ?”
মানুষ মাত্রই তো ভুল। আর রাগের মাথায়ই মানুষ ভুল বেশি করে। তুই যেহেতু ইচ্ছে করে করিস নি আর নিজের ভুলের জন্যও অনুতপ্ত সেহেতু আমি কেন এসব কথা মনে রাখবো? আমি তো কাল রাতেই এসব ঝেড়ে ফেলেছি। তুইও এসব মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দে। নিজের নতুন জীবনে এগিয়ে যা। আসি আমি।”
রুমু আর দাঁড়ায় না। রুম থেকে বেরিয়ে যায়। বেরুতেই একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে চোখের জল মুছে নেয়। বর্ণালী আড়াল থেকে দেখছিলো সবকিছু। সেও চোখের জল মুছে ভাইয়ের রুমে আসে। সজিবকে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে বলে,
-“রুমুর ব্যাবহারে অবাক হচ্ছো না? এটাই আমার কলিজা রুমু। দেখলে তো তোমায় এতো বড় ভুলের পরেও ক্ষমা করে দিলো।”
-“আমায় ক্ষমা করে দে না বাচ্চা।”
-“রুমু ক্ষমা করলেও আমি তোমায় ক্ষমা করবো না ভাইয়া। আর হ্যাঁ ঈশাকে কি কথাগুলো বলেছো? অন্তত ওর ভালোবাসা নিয়ে খেলা করো না। ওকে আগে বলে দাও সব নাহলে আমি বলতে বাধ্য হবো। কেননা আমি চাই না আমার বান্ধবী কোন অন্ধকারে থাকুক। সত্যি জানার পর যদি ও তোমায় বিয়ে করতে রাজি হয় তাহলেই এই বিয়ে হবে না-হয় হবে না।”
সজিবকে আর একটা কথা বলারও সুযোগ দেয়না বর্ণালী। রান্নাঘরে এসে কাজে লেগে পড়ে। ফোনে টুং করে রিং বেজে উঠতেই লক খুলে স্ক্রিনে দেখে হোয়াটসঅ্যাপে ইভানের মেসেজ আসছে। ঢুকতেই দেখে ইভান পাঞ্জাবী ট্রাই করে করে ছবি দিচ্ছে। একের পর এক ছবি আসতেছে। তার মানে সে চায় ও পছন্দ করে দিতে। কোন কিছু না বলেই ফোন রেখে চলে যায়। ইভানের ফোনে টুং করে মেসেজ আসার সাথেসাথেই দেখে বর্ণালী সরষে ফুলের মতো হলুদ রঙের পাঞ্জাবীটা সিলেক্ট করে মেসেজ পাঠিয়েছে। ইভান মেসেজ দেখে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। এতো জোরে চিৎকার করে সাথে সাথে দোকানে আশেপাশের সবাই এসে জড়ো হয়। হিহি করে হেসে চুপচাপ পাঞ্জাবীটা কিনে নেয়। বাসন্তীর জন্য কি কিছু না নিলে হয়! তার পাঞ্জাবীর সাথে মিলিয়ে ওর জন্য শাড়ি কিনে নেয়। বাসায় যাবার আগেই তো ওদের বাড়ি যাবার সময় না হয় দিয়ে গেলো।
বাড়ির সামনে এসে রুমুকে কল দেয় ইভান৷ কল পেয়ে রুমু বের হয়ে প্যাকেট নিয়ে চলে যায় সোজা বর্ণালীর রুমে। বর্ণালী ওর হাতে প্যাকেট দেখে জিজ্ঞেস করে,
-“এটাতে কী? কোথায় পেলি?”
-“এটা আপনার নেন।”
-“আমার মানে?”
-“ইভান দিয়ে গেছে না?”
-“এইতো বুদ্ধি বেড়েছে তাহলে তোর।”
-“তুই কেন আনতে গেলি আমায় না বলে?”
-“হইছে ভাব দেখিও না জান আমার সামনে। তাকে যে পাঞ্জাবি পছন্দ করে দিয়েছিস তা তো বললি না?”
-“মানে কী? আমি কখন দিলাম? পাগল হয়েছিস?”
-“শেষ পর্যন্ত তুই আমার সাথে মিথ্যা বলতে পারলি?”
-“আই সোয়ার রুমু আমি দেই নি পছন্দ করে।”
-“আচ্ছা! তাহলে ইভান কেন বললো তুই ওকে সরষে ফুলের মতো রঙের পাঞ্জাবী পছন্দ করে দিয়েছিস তাই সে তোর জন্য সেই রঙেরই শাড়ি এনেছে। আচ্ছা তোর হোয়াটসঅ্যাপের ইনবক্স চেক করতো।”
বর্ণালী ইনবক্স চেক করে কোন মেসেজ পায় না। রুমুকেও দেখায়। তাহলে কি ইভান মিথ্যা বললো নাকি মজা করলো? হ্যাঁ তাই হবে। হয়তো মজাই করেছে। দরজার ওপাশ থেকে জেনি কথাগুলো শুনে হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। পাশে নিধিও হাসছে ওদের এমন কনফিউশান দেখে।
-“আচ্ছা জেনি এসব করতে তো মজাই লাগছে৷ পরে যদি কোন সমস্যা হয়?”
-“আরে কোন সমস্যা হবে না। জেনি যেখানে সমস্যা নেই সেখানে। সো চিল বেইবস৷ আর তাছাড়া ওরা দু’জনই দু’জনকে ভালোবাসে। আমরা যদি মিলিয়ে দেই তাদের তাহলে সওয়াব ও পাবো।”
-“এসবে আল্লাহ আরো নারাজ হোন। পাপ হয় পাপ।”
-“হইছে হুজুরাইন সাহেব থামেন। চলেন নেক্সট প্যান করি।”
.
.
সজিব ঈশার পাঠানো এড্রেসে সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছে। এদিকে সন্ধ্যাও হয়ে আসছে। এতো সময় লাগে নাকি পার্লারে? দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে ওর পায়ে ব্যাথা হয়ে গেছে। হঠাৎ করে দেখতে পেলো পার্লার থেকে কেউ একজন লেহেঙ্গা দু’হাতে ধরে তুলে তার দিকেই এগিয়ে আসছে। যত কাছে আসছে চোখে ততোই স্পষ্ট দেখছে সে৷ না এ কোন সাধারণ মেয়ে নয়, হলুদ কোন পরী আসছে। কাছে এসেই ভুবন ভুলানো হাসি দিলো ঈশা। একদম বাচ্চাদের মতো ওর হাসি। ওকে দেখেই মনে হচ্ছে আজকে ও কতটা খুশি। একটুও সাজ নেই ওর মুখে। মাত্র মনে হয় লেহেঙ্গাটা পড়েছে। সাজলে না জানি কত সুন্দর দেখায়। সজিব চোখ ছোট ছোট করে ওর পানে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। যেনো অনেকদিন পর দেখছে সে তাকে।
💛
💛
#______চলবে…………
Previous
https://www.facebook.com/103632171307142/posts/130617201941972/