#ইসলামিক_গল্প #ISLAMIC_STORY
===========================
❝ ফিরে_আসা ❞
———————-
লেখিকা:Umma Hurayra Jahan
পর্ব:০২
স্যার: তা মা এতো গরমের মধ্যে এরকম পোষাক পরেছো গরম লাগে না??
ফাতেমা :গরম তো একটু লাগেই কিন্তু ,স্যার এই দুনিয়ার এই
সামান্য গরম যদি সহ্য করতে না পারি তাহলে জাহান্নামের আগুন সহ্য কি করে??? স্যার পর্দা তো প্রত্যেক মুসলিম নর নারীর জন্য ফরজ বিধান । আল্লাহ আমাদের জন্য এটা ফরজ করে দিয়েছে ।
কি করে একজন মুসলিম হয়ে আল্লাহর বিধান অমান্য করি????
স্যার: মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর কথা বলেছো মা ।
ফাতেমা : জাযাকাল্লাহু খয়রান স্যার।
স্যার : এর মানে কি মা?
ফাতেমা : এর মানে আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুক
স্যার : ও আচ্ছা । এখন আমাকে এর জবাবে কি বলতে হবে? ??
ফাতেমা : আপনি বলবেন ওয়া ইয়্যাকি । এর মানে আপনাকেও আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দান করুক
স্যার : ওয়া ইয়্যাকি
ক্লাসের বাকিরা স্যার আর ফাতেমার কথা অবাক হয়ে শুনছিলো
আজ কলেজের ১ম দিনটা ফাতেমার বেশ অদ্ভুত অভিজ্ঞতার সাথে কেটেছে
ফাতেমা : আসসালামুআলাইকুম মা । এসে পরেছি
খদিজা বেগম: ওয়াআলাইকুমুসসালাম । কেমন ছিলো রে মা আজ কলেজের ১ম দিন টা ।??
ফাতেমা : মা আজ দারুন অভিজ্ঞতা হয়েছে
খাদিজা বেগম: তাই নাকি ??? কি হলো শুনি???
ফাতেমা : মা জানো আজ না…….
রফিক : কি কথা হচ্ছে মা বেটিতে হুম????
ফাতেমা : আসসালামুআলাইকুম আব্বু । কখন এলে????
রফিক সাহেব : এই তো রে মা এইমাত্রই। তা মা বেটিতে কি কথা হচ্ছে শুনি???
খাদিজা বেগম: আর কি হবে, ঐ তো আজ তোমার মেয়ে কলেজে কি কি করেছে সেটাই আরকি।
রফিক সাহেব : ও আচ্ছা ।
শুন ফাতেমার মা আজ সন্ধায় আমার ছোট বেলার বন্ধু আরমান আসবে ।
অনেক দিন পর ওর সাথে দেখা হবে । তুমি নাস্তা রেডি রেখো । আর রাতের খাবারের ভালোমন্দ আয়োজন করো । যাতে কোন কমতি না থাকে
খাদিজা বেগম : আচ্ছা ঠিক আছে তুমি চিন্তা করো না ।আমি সব রেডি রাখবো
ফাতেমা : বাবা আমি কিন্তু তোমার বন্ধুর সামনে যেতে পারবো না???
রফিক সাহেব: কেন রে কি সমস্যার???ও এতো দিন পরে আসবে আর তুই ওর সামনে যাবি না? ???কি ভাববে ও বলতো? ?
ফাতেমা : বাবা তুমি কি ভুলে গেছো ইসলামে গায়রেরমাহারাম দের সামনে বেপর্দা হয়ে যাওয়া নিষেধ।আর ওনি তো আমার গায়রে মাহারাম । আমি বেপর্দা হয়ে যেতে পারবো না ।
রফিক সাহেব :আমি কোন কথা শুনতে চাই না । আমি ডাকলে তুমি আসবে বেছ
ফাতেমা : বুঝার চেষ্টা করো বাবা
রফিক সাহেব: ফাতেমা তুই কিন্তু দিন দিন বেশি করছিস। এই বয়সে কিসের পর্দা????
ফাতেমা : বাবা পর্দাটা হলো ফরজ ইবাদত। আর এর কোন বয়স হয় না । আর যৌবন কালের ইবাদত আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয় । আমি তো তোমাকে এর আগেও অনেক বুঝিয়েছি
রফিক সাহেব : আমাকে হাদিস শুনাতে আসিস না ।আমি তোর থেকে কম জানি না । যা, কলেজ থেকে এসেছিস ফ্রেস হয়ে নে
ফাতেমা : আচ্ছা ঠিক আছে বাবা ।
এই বলে ফাতেমা নিজের রুমে চলে গেল
রফিক সাহেব :মেয়েটা দিন দিন বড্ড বার বেরে যাচ্ছে । কে ডুকাচ্ছে এসব ওর মাথায়
ফাতেমা গোসল করে যোহরের নামায আদায় করতে বসেছে
ফাতেমা : {মোনাজাতের সময় } হে আল্লাহ তুমি আমার পরিবারের সদস্যদেরকে হেদায়েত দান করো । তারা অবুঝ,তাদেরকে তুমি বুঝ দান করো আমিন
হাসান : নক নক. …. আসসালামুআলাইকুম কিরে ফাতেমা ভিতরে আসবো ???
ফাতেমা : আরে ভাইয়া !! ভিতরে এসো । বাহ ভাইয়া যেটা শিখিয়েছিলাম তা দেখছি তোর মনে আছে । মুচকি হাসে ফাতেমা
হাসান: হুম রে পুচকি আমার মনে আছে । তুই বলেছিলি কারো ঘরে প্রবেশ করার আগে সালাম দিতে হবে আর অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে হবে ।
ফাতেমা :হুম । আচ্ছা ভাইয়া যোহরের নামাযটা পড়েছো???
হাসান: {কিছুটা সংকুচ নিয়ে} না রে পুচকি পড়ি নি।
ফাতেমা : কেন ভাইয়া ???তুমি কি চাও না আমরা সবাই এক সাথে জান্নাতে থাকি ???তুমি কি চাও জাহান্নামে যেতে???বাবা কে কত বার বলেছি ,“বাবা এতো দিন যা করেছো ,করেছো .এখনো সময় আছে রবের নিকট তওবা করে ক্ষমা চেয়ে তার ইবাদত করো । কিন্তু না বাবা করবো করবো বলে পরে আবার ভুলে যায়
ভাই তোমাকেও তো কত বুঝিয়েছি
হাসান : সরি রে পুচকি । আর ভুল হবে না । এই কান ধরছি । কাল থেকে নামায পড়বো ।
ফাতেমা : কাল থেকে কেন ??? এখনো যোহর এর সময় আছে ।যাও যোহর এর নামায টা ঘরে পড়ে ফেলো । কিন্তু আসর এর থেকে বাকি নামায মসজিদে গিয়ে পড়বে কিন্তু বলে দিলাম
হাসান : মসজিদে কেন ঘরে পড়লে কি হয়?
ফাতেমা:একা ঘরে নামায পড়ার থেকে মসজিদে জামাতের সাথে নামায পড়লে ২৭ গুন সওয়াব পাবে
হাসান : আচ্ছা ঠিক আছে পুচকি
ফাতেমার বাবা রফিক সাহেব ফাতেমার পর্দা করা বিভিন্ন হাদিস বর্ননা করা এগুলো পছন্দ করেন না । তাই তিনি ফাতেমার অনেক ইসলামিক কাজে বাধা হয়ে দাড়ান অনেক সময়
সন্ধার সময় ফাতেমা নামায পড়ে কোরআন পড়ছিলো । ফাতেমার কুরআন তেলাওয়া অসাধারন । যেমন তার রুপ তেমন তার মধুর কন্ঠের তেলাওয়াত ।
সন্ধায় আরমান সাহেব ফাতেমাদের বাসায় আসেন । ফাতেমাদের বাসা ময়মনসিংহে । আর আরমান সাহেবের বাড়ি ঢাকা।
কলিং বেলের শব্দের দরজা খুললো বাসার কাজের মেয়ে রহিমা
রহিমা : আসসালামুআলাইকুম । আপনে কারে চান ???
আরমান সাহেব: আমি আরমান চৌধুরি । রফিক সাহেব কোথায় । ও কি বাসায় আছে? ??
রহিমা : ও আপনে । আসেন আসেন ভেতরে আসেন । খালু আমারে আগেই কইয়া দিছিলো আপনি আইবেন । আসেন ভেতরে আসেন
আপনি ড্রয়িং রুমে বসেন আমি খালুরে ডাকতাছি
আরমান সাহেব: ড্রিয়ং রুমে বসে মনে মনে বলেছেন বাহ্ রফিক তো বাসা খুব সুন্দর করে বানিয়েছে । কি সুন্দর গোছানো গাছানো
রফিক সাহেব:আরে দুস্ত । কেমন আছিস??? কত দিন পর তোর সাথে দেখা । তোর ছেলে মেয়ে কেমন আছে??? ভাবি কেমন আছে????
আরমান : আলহামদুলিল্লাহ সবাই ৃভালো আছে । তুই কেমন আছিস ?? বাকিরা কই? ?
রফিক সাহেব : কই. হাসানের মা কই তুমি ??দেখো কে এসেছে ??
বাবা হাসান দেখ কে এসেছে ??
খাদিজা বেগম : আরে আরমান ভাই যে । আসসালামুআলাইকুম । কেমন আছেন???
আরমান সাহেব : জি আছি ভালো । এই যে বাবা হাসান কেমন আছো? কাজ কেমন চলছে তোমার
হাসান: জ্বি চাচা ভালোই চলছে
আরমান সাহেব : কিরে রহমান সবাই তো এখানে but তোর মেয়ে কই? ??তাকে তো দেখছি না ।
রফিক সাহেব : ইয়ে মানে ও আছে ওর ঘরেই .তুই আগে বোস আরাম কর ওকে আমি ডেকে দিচ্ছি ।
রফিক সাহেব খাদিজা বেগমকে বলছেন :: তোমার মেয়েকে না বলেছি আরমান আসলে ওর সাথে দেখা করে যেতে???কই সেই মহারানী???
খাদিজা বেগম:: আহা্ তুমি তো জানো ওকে ও কি রকম ।ও তো আরমান ভাইয়ের সামনে আসবে না ।
রফিক সাহেব : যাও ওকে ডেকে দাও
খাদিজা বেগম::
আচ্ছা। আরমান ভাই আপনি ফ্রেস হয়ে নিন আমি নাস্তা দিচ্ছি
আরমান সাহেব :
আরে ভাবি ব্যাস্ত হবেন না । এতো দিন পর বন্ধুর সাথে দেখা ,আগে তো প্রান ভরে কথা বলে নিই । হাহহা
সবাই একসাথে হাসছে হাহহাহা….
আর অপর দিকে ফাতেমা আল্লাহর নিকট দোয়া করছে যাতে তাকে বেপর্দা হয়ে আরমান সাহেবের নিকট না যেতে হয়
রহিমা সবাইকে নাস্তা দিয়েছে ।
আজ সব নাস্তা ফাতেমা নিজ হাতে বানিয়েছে
আরমান সাহেব: নাস্তা খেয়ে বলে ওঠলেন “ বাহ্ নাস্তা গুলো তো ভাবি অনেক ভালো বানিয়েছেন.খুব ভালো
খাদিজা বেগম::না না ভাই আমি না আমার মেয়ে ফাতেমা আজ সব বানিয়েছে …
আরমান সাহেব :তাহলে তো ফাতেমা মাকে একবার দেখতেই হয় । ডাকুন ওকে
রফিক সাহেব : যাও ওকে ডেকে নিয়ে এসো
চলবে ইনশাআল্লাহ……..
💬_ইসলামিক গল্প টি,
💓,কেমন লেগেছে
আপনার মতামত অবশ্যই জানাবেন💬 ।
,,,,