#ইসলামিক_গল্প #ISLAMIC_STORY
===========================
❝ ফিরে_আসা ❞
———————-
লেখিকা– Umma Hurayra Jahan
পর্ব-৪৭
এবার বিদায়ের পালা।
রিয়াকে এবার বিদায় নিতে হবে।
আজ রায়হান সাহেব খুবি লজ্জিত।কারন ঐদিনের এতো খারাপ ব্যবহারের পরেও ফাতেমার পরিবার এই বিপদের দিনে পাশে এসে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করেছে।
রায়হান সাহেব- আজ অতি সত্যি লজ্জিত।আমার অহংকার আর লোভের জন্য আজ আমার মেয়ের জীবনটা প্রায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিলো।কিন্তু আপনাদের জন্য আমার মেয়েটা ধ্বংসের হাত থেকে বেচে গেলো।
রফিক- এটা আপনি কি বলছেন??আমাদের জন্য না ।আমাদেরকে যিনি সৃষ্টি করেছেন সেই মহান আল্লাহর লীলা খেলা সব। উনি যা ভালো মনে করেন তার বান্দার জন্য তিনি তাই করেন।
রায়হান- সত্যিই আপনাদের মতো পরিবার এ সমাজে খুব কমি আছে।সবাই যদি সবার বিপদে এভাবে এগিয়ে আসে তাহলে বড় বড় সমস্যা সমাধান হয়ে যায়।
রায়হান সাহেব হাসানের কাছে গেলো।
-বাবা হাসান আমি তোমাকে অনেক ভালো মন্দ বলে ফেলেছি।তুমি আমাকে মাফ করে দিয়ো।তুমি আমার মেয়েটাকে দেখে রেখো।
হাসান রায়হান সাহেবের হাতে ধরে বললো–এটা আপনি কি করছেন?আমি আপনার ছেলের মতো।আর বাবা কোন দিন ছেলের কাছে মাফ চায় না।আর আপনার মেয়ে এখন থেকে আমার স্ত্রী।ওকে দেখে রাখা আমার দায়িত্ব।আপনি শুধু আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
ওদিকে রিয়া তার মাকে ধরে কান্না করছে।তার মাও কান্নাকাটি করছে।
খাদিজা- তুমি কান্না করো না রিয়া।তোমার বাবার বাড়ি থেকে তো আমাদের বাড়ি বেশি দূরে না।তোমার যখন ইচ্ছা তখন বাবার বাড়ি যেতে পারবে।
ফাতেমা – কিরে তুই না বলেছিলি আমার ভাইয়ের সাথে বিয়ে হলে নাচতে নাচতে বিয়ে করবি তো এখন কাদছিস কেন রে পাগলি।হিহিহি
রিয়া- তোর যেদিন বিয়ে হয়েছিলো সেদিন কেদেছিলি কেন??তোর কষ্ট হয় আমার কষ্ট হয় না??অ্যা অ্যা অ্যা
ফাতেমা – হিহিহি।হয়েছে আর কাদতে হবে না।এবার চলুন ভাবি সাহেবা।আপনার তো আসরের নামায পড়া হয় নি। বাসায় গিয়ে তো আগে নামাযটা পড়তে হবে তাই না??
আন্টি আর দেরি করবেন না।এবার তাড়াতাড়ি বিদায় দিলে ভালো হয়।
কান্নাকাটির পালা শেষ করে।রিয়াকে ফাতেমাদের বাসায় নিয়ে আসা হলো।
আসার আগে রিয়া টনির দেওয়া সব গয়না খুলে রেখে এসেছে।
রিয়াকে নিয়ে ফাতেমা হাসানের রুমে নিয়ে বসালো।
ফাতেমা – এবার বোরকাটা খুল।বোরকা খুলে ফ্রেশ হয়ে নামায পড়ে নে।তোর মা আসার সময় তোর সব জামা কাপড় আর জিনিস পত্র এই ব্যাগে দিয়ে দিয়েছে।তোর যেটা লাগে তুই নিয়ে নে।
রিয়া বোরকা খুলে বসলো।
রিয়া- দেখ আমার মুখে আটা ময়দা মেরে কি অবস্থাটাই না করেছে।একদম বুড়ির মতো লাগছে আমাকে।এখন এগুলো ঘষে ঘষে তুলতে হবে।
ফাতেমা – হিহিহি।আটা ময়দা??হিহিহি।
রিয়া- তো বলবো বল??৩০ হাজার টাকার আটা ময়দা শুধু মুখেই লাগিয়েছে ২ ঘন্টা ধরে।কি যে অহস্য লাগছিলো তোকে কি বলবো??
ফাতেমা – আচ্ছা এখন থেকে তো তুই আমার ভাবি।তাহলে তোকে কি তুই করে ডাকা যাবে??কারন তুই তো এখন পদে আমার থেকে বড়।যদি রাগ করিস??
রিয়া ফাতেমার হাতে ধরে বললো -তুই ভাবলি কি করে আমি রাগ করবো??তুই আমার কলিজার বান্ধবি।আমরা বান্ধবি ছিলাম ,আছি আর সারা জীবন থাকবো।তোর জন্য আমি আজ নিজেকে পরিবর্তন করতে পেরেছি।তোর জন্য অন্ধকার ভরা জীবনে আলোর সন্ধান পয়েছি।তাহলে তুই ভাবলি কি করে আমি তোর উপর রাগ করবো।এই তোর বন্ধুত্ব??
ফাতেমা – না না না আমার কলিজা বান্ধবি মুই আফনেরে মেলা বিশ্বাস করি।হিহিহি
রিয়াও ফাতেমার কথায় হেসে দিলো।
ফাতেমা – নে এবার তোর মুখের আটা ময়দা তুলে ফ্রেশ হয়ে নামায পড়ে নে।আমি গেলাম।
রিয়া- একটা কথা ..ইয়ে না মানে..তোর ভাই কোথায়??
ফাতেমা — ভাইয়া মনে হয় ড্রয়িং রুমে আছে।কেন কিছু দরকার??
রিয়া- না না এমনিতেই বলছিলাম।ও তো ঘরে আসে নি তাই।
ফাতেমা – তাই ভাইয়াকে চোখে হারাচ্ছিস তাই তো??হিহিহি
রিয়া- যা কি যে বলিস??মুর লইজ্জা লাগে।
এই বলে রিয়া দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
ফাতেমা – আমার পাগলি বান্ধবি একটা।
ফাতেমা রুম থেকে চলে গেলো।
হাসান ড্রয়িং রুমে ছিলো খাদিজা বেগম আর রফিক সাহেবও সেখানেই ছিলো।ফাতেমা ড্রয়িং রুমে গেলো।
হাসান রফিক সাহেবকে বললো -বাবা এখনো তো রিয়ার মোহরানা দেওয়া হয় নি।সব কিছু তো হুট করেই হয়ে গেলো।এখন তো মোহরানা আদায় করতে হবে।
ফাতেমা – ঠিক বলেছিস ভাইয়া।এটা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন একটি বিষয়।সেটার দিকে সবার খেয়াল রাখা উচিত।কারন মোহরানা আদায় ছাড়া কোন স্ত্রী তার স্বামীর জন্য বৈধ না।কিন্তু আমাদের সমাজের অনেকেই এটা জানে না।যার কারনে মস্ত বড় ভুল হয়ে যায় তাদের দ্বারা।আর স্ত্রী নিজের ইচ্ছায় যদি মোহরানা মাফ করে দেয় তাহলে তাকে আর দেনমোহর দিতে হয় না।এক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামীর জন্য বৈধ হবে।
রফিক- তাহলে তো আজকেই দেনমোহর দিয়ে দিতে হবে।
খাদিজা- হুম ঠিক বলেছো।তাহলে রিয়াকে আজকেই দেনমোহর দিয়ে দেওয়াই ভালো হবে।
সবাই আলাপ করতে করতে মাগরিবের আযান পড়ে গেলো।
হাসান আর রফিক সাহেব মসজিদে চলে গেলেন।এদিকে ফাতেমা ,রিয়া আর খাদিজা বেগমও নামায পড়ে নিলেন।
মসজিদ থেকে আসার সময় হাসান রিয়ার জন্য কিছু গিফট কিনে নিয়ে এলো।
রিয়া রুমেই বসে আছে।রিয়ার সাথে ফাতেমাও ছিলো।ফাতেমা রিয়াকে মোহরানা নিয়ে কথা বলছিলো।রিয়া এক পর্যায়ে বললো তার দেনমোহর দরকার নেই।যেহেতু স্ত্রী দেনমোহর মাফ করে দিতে পারে সেহেতু রিয়াও দেনমোহর মাফ করে দিলো।তার দেনমোহর লাগবে না।
হাসান রুমে এলো সালাম দিয়ে।রিয়া আর ফাতেমা সালামের জবাব দিলো।
ফাতেমা – আচ্ছা আমি এখন এখান থেকে কেটে পরি।তোরা কথা বল। হিহিহি
রিয়া- কোথায় যাচ্ছিস তুই??
ফাতেমা – আমার রুমে।
হাসান- আরে যেতে হবে না।থাক এখানে।
ফাতেমা – আমি গেলাম।এই বলে ফাতেমা ছুটে চলে গেলো।
হাসান এখনো নিচের দিকে চেয়ে আছে।
রিয়া- কি ব্যাপার এখন নিচের দিকে চেয়ে আছো কেন?এখন তো আমার দিকে তাকালে পাপ হবে না।এখন তো আমি তোমার স্ত্রী।এখন তাকালে নেকি লাভ করবে।
হাসান মুখ তুলে রিয়ার দিকে চেয়ে একগাল হাসি দিলো।
হাসান– চলো বসো এখানে।
এই বলে হাসান রিয়াকে হাসান বিছানায় বসতে বললো।
দেখো তোমার সাথে একটা কথা বলতে চাই দেনমোহর বিষয়ে ।
রিয়া – কিছু বলতে হবে না।ফাতেমা আমাকে সব বলেছে।আর আমার দেনমোহর লাগবে না।আমি এটা নিজ ইচ্ছায় মাফ করে দিলাম।
হাসান- কিন্তু …
রিয়া – কোন কিন্তু না।আমি নিজের ইচ্ছায় এটা মাফ করে দিয়েছি।
হাসান- তাহলে তো আর কোন সমস্যা রইলো না।চলো ড্রয়িং রুমে যাই।সবাই মনে হয় ওখানেই আছে।
রিয়া – হুম ঠিক আছে।
রিয়া আর হাসান ড্রয়িং রুমে গেলো।
হাসান এখনো রিয়াকে গিফ্টগুলো দেয় নি।রাতে দিবে বলে ভেবে রেখেছে।
রিয়া সেখানে গিয়ে তার শ্বশুড় শ্বাশুড়ির সাথে অনেক্ষন কথা বললো।
ফাতেমা নিজের রুমেই আছে।
মহিমা ফাতেমাকে ফোন দিলো।দিয়ে খোজ খবর নিলো।
মহিমা- জানো ভাবি তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
ফাতেমা – কি সেটা???
মহিমা- সেটা এখনি বলা যাবে না।সেই সারপ্রাইজটার জন্য তোমাকে একটু ধৈর্য ধরতে হবে।কিন্তু আমি সিউর সেটা হবে তোমার জীবনের সবচেয়ে সেরা সারপ্রাইজ।
ফাতেমা – বাড়ির সবাই কেমন আছে??
মহিমা- বাবা ,মা, আমি ,নুরি আমরা সবাই ভালো আছি।
ফাতেমা – আর বাকি জন??
মহিমা- তুমি আর কার কথা বলছো?
ফাতেমা – তোমার ভাইয়া..
মহিমা- তুমি এখনো ভাইয়ার কথা ভাবো??যে তোমাকে এতো কষ্ট দিয়েছে তুমি তার কথা ভাবছো??
ফাতেমা – এটা তুমি কি বলছো??উনি আমার স্বামী।জানি সে আমাকে ভালোবাসে না ।কিন্তু আমি তো বাসি।আর আমার বিশ্বাস একদিন না একদিন ঠিক উনি উনার ভুল বুঝতে পারবে।হয়তো সেদিন আমি আর থাকবো না।
মহিমা – এমন কথা বলো না ভাবি।নিশ্চই আল্লাহ তোমার মনের আশা পুরন করবেন ইনশাআল্লাহ।
আচ্ছা আমি এখন রাখি।পরে আবার ফোন করবো।
মহিমা সালাম দিয়ে ফোন রেখে দিলো।
এশার নামায পড়ে সবাই খাবার খেয়ে নিলো।
হাসান আর রিয়া নিজেদের রুমে গেলো।
হাসান- তুমি ওযু করে আসো ঘুমানোর আগে দুজনে দু রাকাত নফল নামায পড়বো।
রিয়া- আচ্ছা ঠিক আছে।আমি ফাতেমার কাছে শুনেছিলাম এটা নাকি সুন্নত।আরেকটা দুয়াও তো মাথায় হাত রেখে পড়তে হয়।
হাসান- হুম ।আগে নামায পড়ে নিই তারপর ।
হাসান আর রিয়া নামায পড়ে নিলো।নামায শেষে হাসান রিয়ার মাথায় হাত রেখে সেই দোয়াটাও পড়ে নিলো।
হাসান – রিয়া তোমাকে একটা জরুরি কথা বলার ছিলো।
রিয়া- হুম বলো।
হাসান- তোমার এই নামটা মানে রিয়া নামটা ভালো না।মানে এর অর্থটা ভালো না।
রিয়া- কেন??এই নামের মানে কি??
হাসান– রিয়া শব্দের মানে ,দেখানো,অবলোকন করানো বা দৃশমান করা।
শরীয়তের মতে রিয়া অর্থ হলো রবের সন্তুষ্টির জন্য লোক দেখানো ইবাদত করা বা আমল করার অভিনয় করা।এতে অাল্লার সন্তুষ্টির জন্য নিয়ত থাকে না ।নিয়ত থাকে লোকের সন্তুষ্টি অর্জন করা।এটা একটা ছোট শিরক।
মহানবি সাঃ বলেছেন “আমার উম্মতের জন্য এটি আমি সবচেয়ে ভয় করি তা হলো ছোট শিরকঃ রিয়া।
{মুসনাদে আহমাদ,ইমাম বুখারি হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন}
রিয়া– হে আল্লাহ !!!আমি এটা জানতাম না।
হাসান- বিয়ের সার্টিফিকেটে তোমার নাম দেখেছি আবিদা জান্নাত রিয়া ।তাহলে আমি আজ থেকে আবিদা বলেই ডাকবো।
আর আবিদা নাম অত্যন্ত সুন্দর অর্থ সম্পন্ন।
রিয়া- আবিদা মানে কি?
হাসান- আবিদা অর্থ ভক্ত,আল্লাহর ইবাদতকারিনী।
আবিদা- তাহলে এই নামেই ডেকো।আর আমি বাকিদেরকেও এই নামেই ডাকতে বলবো।
হাসান- এইতো আমার বউটা বুদ্ধিমতি।
আবিদা- আর আমার জামাইটাও অনেক জ্ঞানি লোক।হিহিহি
হাসান- ও তোমার জন্য কিছু গিফট এনেছিলাম।দিতেই ভুলে গেছি।
হাসান গিফট গুলো এনে আবিদাকে দিলো।
গিফ্ট বক্সে কুরআন ,হাদিসি বই, আরো অনেক কিছুই ছিলো।
সাথে একটা সুন্দর ডায়েরি ছিলো।
হাসান ডায়েরিটা আবিদাকে দিয়ে বললো “এই ডায়েরিটা কেন দিয়েছি তোমাকে জানো??
-আবিদা বললো-কেন আবার লিখার জন্য।
হাসান- হুম লিখার জন্য।কিন্তু তুমি এতে কি লিখবে জানো??
আবিদা- কী??
হাসান- তুমি এই ডায়েরিতে সারাদিনে কত আমল করলে আর কি গুনাহ করলে সেটা লিখে রাখবে।তাহলে তুমি বুঝতে পারবে তোমার সারাদিনে কতটুকু আমল করা হয়েছে আর কতটুকু গুনাহ হয়েছে।আর সেটা দেখে তুমি আমল আর গুনাহর অনুপাত করতে পারবে।আর সেটা দেখে গুনাহর অনুপাত আস্তে আস্তে কমানোর চেষ্টা করতে পারবে।
আবিদা- মাশাআল্লাহ দারুন আইডিয়া তো।
হাসান- হুম ।সে জন্যই তো এটা তোমার জন্য এনেছি।যাতে তুমি তোমার ভুলগুলো নিজে নিজেই ধরতে পারো।আমার নিজেরও এমন একটি ডায়েরি আছে।যেটাতে আমি প্রতিদিন কি কি করি তা লিখে রাখি।এবং পরে যখন তা পড়ি তখন বুঝতে পারি আমি কতগুলো কাজ ভালো করেছি আর কতগুলো খারাপ।
আবিদা- তোমার মতো একজনকে আল্লাহ আমার ভাগ্যে দিয়েছেন।এর জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে শেষ করা যাবে না।
হাসান আর আবিদা দুজন দুজনকে পেয়ে খুব সুখি।
এভাবেই দিন কাটতে লাগবো।আর. ওদিকে মাহিন নিজেকে পরিবর্তন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।মাহিন কোরআন শিখার জন্য অনলাইন কোর্সও শুরু করে দিয়েছে।প্রাণ পণ চেষ্টা করছে নিজেকে পরির্তন করার।তবুও শয়তান মাঝে মাঝে মাথার কাছে এসে কু বদ্ধি দেয়।মাঝে মাঝে শয়তানের ধোকায় পড়ে যায়।কিন্তু মাহিন পুরোপুরি চেষ্টা করছে শয়তানের চক্র থেকে বেচে থাকতে।
মাহিন এখন বাজে বন্ধুদের সাথে মেলামেশা বন্ধ করে দিয়েছে।অবসরে সবে ইসলামিক ওয়াজ শুনে আর সে প্রচুর ইসলামিক কই কিনেছে সেগুলো পড়ে।
মহিমা আর মেহেঘ বেগমকেও পরিপুর্ন পর্দার বেপারে তাগিদ দেয়।আর আরমান সাহেবের ব্যবসার কাজেও সাহায্য করে।কিন্তু মাহিন এখনো পুরোপুরি ভাবে ফাতেমার সামনে যাওয়ার জন্য যোগ্য মনে করছে না নিজেকে।নিজেকে সে আরো পরিবর্তন করতে চায়।পরিপুর্ন দ্বীনদার হতে চায় সে।
মাহিনের ধীরে ধীরে এমন উন্নতি দেখে বাসার সবাই অনেক খুশি।বাসার সবাই এখন সুন্নত অনুযায়ী চেষ্টা করে।সবাই নিজেদেরকে শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
এদিকে ফাতেমা সবসময় সবার সাথে হাসি খুশি থাকলেও ভিতরে ভিতরে সে শেষ হয়ে যাচ্ছে।টেনশনে বেচারির শরীরও দুর্বল হয়ে গেছে।চেহারা আগের থেকে মলিন হয়ে গেছে।
হাসান আর আবিদার হাসি খুশি সংসার থেকে ফাতেমার চোখে আনন্দে পানি এসে পড়ে।
কবে যে সে এভাবে মাহিনের সাথে হেসে খেলে সংসার করবে তা একমাত্র আল্লাহ ভালো জানেন।আস্তে আস্তে সে সবার কাছে ধৈর্যের এক দৃষ্টান্ত হয়ে উঠছে।
এক দৃষ্টান্ত হয়ে উঠছে।
বুক ভরা কষ্ট নিয়েও সে সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলে।
মাঝে মাঝে আবিদার সাথে দুঃখের কথা বলে বেচারি হাউমাউ করে কান্না করে।
বান্ধবির এমন অবস্থা দেখে আবিদা নিজেও কান্না করে আল্লাহর কাছে দোয়া করে।
রফিক সাহেব তো আর সহ্য করতে পারছে না মেয়ের কষ্ট।
একদিন রফিক সাহেব সবাইকে একসাথে ডাকলেন ফাতেমার বিষয়ে কথা বলার জন্য।
রফিক- দেখো তোমাদেরকে আমি একটা কথা বলার জন্য ডেকেছি।আমি ফাতেমার কষ্ট আর সহ্য করতে পারছি না।মেয়েটার চেহারাটাও দিন দিন মলিন হয়ে যাচ্ছে।আমাদেরকে মুখ ফুটে কিছু বলে না।কিন্তু আমি তো বাবা আমি তো সব বুঝি।
আর ঐ বাড়ির কেউ যেহেতু এখনো ফাতেমাকে নিতে আসে না তাই আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আমি মাহিনের সাথে ফাতেমার ডিভোর্স করিয়ে আবার বিয়ে দেবো।
এ কথা শুনে সবাই চমকে উঠলো।
ফাততেমার মাথায় মনে হয় বাজ পড়লো।
খাদিজা- এটা তুমি কি বলছো??
রফিক- হুম ঠিকি বলছি।আমি একজন ছেলের সন্ধান পেয়েছি।আর এবারে আমি আগের ভূল করবো না।এবারে যে ছেলের সন্ধান পেয়েছি সে ছেলে হাফেজ.মাওলানা ,মুফতি।ছেলেটা অনেক ভালো।আমি খোজ নিয়েছি।আরো খোজ নিবো।
হাসান- কিন্তু বাবা……
রফিক- কোন কিন্তু না।আমি যা বলেছি তাই।
চলবে ইনশাআল্লাহ………
দুঃখিত আজকে এতো লেট করে দেওয়ার জন্য ।।।।।