ফিরে আসা পর্ব-৯ ১০

0
608

#ইসলামিক_গল্প #ISLAMIC_STORY
===========================

❝ ফিরে_আসা ❞
———————-

লেখিকা : Umma Hurayra Jahan

পর্ব: ৯/১০

রিয়া : এই ফাতেমা শুনো ,একটা কথা বলবো??

ফাতেমা : আসসালামুআলাইকুম রিয়া ,কেমন আছো, ?? আর কি কথা বলবে? ?

রিয়া : আচ্ছা তুমি সবাইকে সালাম দাও কেন ,আমরা তো তোমার বয়সি,
আচ্ছা বাদ দাও আরেকটা কথা ছিলো।

ফাতেমা : সালামের মধ্যে কোন বয়সের সীমা নেই,আমাদের নবীজি ছোট বড় সকলকে সালাম দিতে শিক্ষা দিয়েছেন।
আর যে আগে সালাম দেয় ,সে ব্যক্তি অহংকার মুক্ত

রিয়া : বাহ্ কত্ত কিছু জানো তুমি

ফাতেমা : কি না বলবে বলছিলে ,বলো ।

রিয়া : আচ্ছা আমরা তোমাকে তোমার পর্দা করা নিয়ে এতো মজা করি তোমার খারাপ লাগে না???
আর এই বয়সে কেন পর্দা করতে হবে, ? সারা জীবন তো পরেই রয়েছে পর্দা করার জন্য ,তাহলে তুমি এই বয়সে কেন এভাবে নিজেকে ঢেকে রাখো ?এখন তো life টা enjoy করার সময় ।

ফাতেমা : রিয়ার এই কথা শুনে ফাতেমা মৃদু হেসে বলে,
ও একথা ,আচ্ছা চলো আমরা কেন্টিনে বসে কথা বলি, /
ক্লাসের তো আরো আধা ঘন্টা বাকি

রিয়া : আচ্ছা ঠিক আছে চলো

ফাতেমা আর রিয়া কেন্টিনে গিয়ে বসলো

ফাতেমা : তোমার প্রথম প্রশ্ন ছিলো তোমরা আমাকে খেপাও তবুও আমার খারাপ লাগে না কেন? রিয়া শুনো আমি আমার আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পর্দা করি এতে যে যাই বলুক না কেন তাতে আমার খারাপ লাগে না, কারন এটা আমার রবের বিধান।
আর তুমি বলেছো আমি এ বয়সেই কেনো পর্দা করি?
রিয়া পর্দা হলো আল্লাহ প্রদত্ত ফরজ বিধান ,প্রত্যেক মুমিনে উপর অন্যান্য ফরজ ইবাদতের মতো পর্দাও একটি ফরজ ইবাদত
। প্রত্যেক সাবালিকার উপর পর্দা ফরজ
একটা মেয়ে সাবালিকা হওয়ার পর থেকে তার উপর পর্দা ফরজ হয়ে যায় । তুমি নামায কাযা পড়তে পারবে কিন্তু পর্দার কোন কাযা নেই । তুমি যতক্ষন বেপর্দা থাকতে ততক্ষন তোমার বাবা ,স্বামি ও বড় ভাইয়ের উপর কবিরা গুনা হতে থাকবে .একজন বেপর্দা নারী তার বাবা,ভাই ,স্বামীর জন্য জাহান্নাম বয়ে আনে

কথাটা যেন রিয়ার মনে তীরের মতো আঘাত করলো

ফাতেমাে: আমাদের সমাজের মানুষের একটাই ধারনা ,যৌবন কালে কিসের পর্দা ,পর্দা তো করবো বুড়ো হয়ে গেলে ।
কিন্তু এটি একটি চরম ভুল ধারনা ,যা মানুষের আমলনামায় পাপ দ্বারা পূর্ন করছে
আরেকটি কথা তুমি বলেছো সেটা হলো, এখন সময়টা হলো ইনজয় করার সময় কিন্তু তুমি হয়তো জানো না যৌবনকালের ইবাদত আল্লাহ বেশি পছন্দ করেন । তাই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যদি আমরা আমাদের যৌবন কালটা হেলায় না কাটিয়ে আল্লাহর ইবাদতে কাটাই তাহলে হয়তো হাশরের ময়দানে আমরা আল্লাহর কাছ থেকে সুউচ্চ মাকাম জান্নাতুল ফেরদৌস পুরস্কার হিসেবে পাবো ।
আর হ্যা, আমাদের কার মৃত্যু আল্লাহ কখন কোথায় লিখে রেখেছেন তা আমরা কেউ বলতে পারবো না ।
হয়তো অনেকেই ভাবছে এখন এতো ইবাদত করে কি হবে, সারাটা জীবন তো পরেই আছে ।
কিন্তু যখন আজরাইল আসবে তখন তিনি কাউকে আর সময় দিবেন না ইবাদত করার ,রবের নিকট ক্ষমা চাওয়ার
তখন হয়তো আর সময় থাকবে না। কিন্তু এই কথা গুলোই আমরা কেউ চিন্তা করি না
আমরা দুনিয়া নিয়েই মেতে থাকি ।
একবারো কবরের জীবনের কথা চিন্তা করি না ।

কথা গুলো শুনে রিয়া আর চোখের পানি আটকে রাখতে পারলো না
সাথে সাথে ফাতেমাকে জড়িয়ে কান্না করতে শুরু করে দিলো

রিয়া: আমি এতো দিন ভুলের সাগরে ,পাপের সাগরে ভাসছিলাম ফাতেমা ।
তুমি আমাকে আলোর পথ দেখালে । কোন দিন কেউ আমাকে এমন করে বুঝায় নি ।মাও বলতো নামায পড়তে, শালিন ভাবে চলতে, কিন্তু কোন দিন তার কথা শুনি নি ।
কিন্তু এতো দিনে তো আমার পাপের বুঝা অনেক হয়ে গেছে ,এখন আমি কি করবো ?
আল্লাহ তো কোন দিন আমাকে ক্ষমা করবে না । আমি এখন কি করবো? ?

ফাতেমা : {কান্না ভেজা গলায়} আরে পাগলি কে বলেছে আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করবে না? ?
নিশ্চই আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করবেন । তুমি যদি মন থেকে মহান রবের নিকট ক্ষমা চাও আর আগে যে গুনাহ করেছো যা যদি আর কোন দিন না করার ওয়াদা করো ,মন থেকে আল্লাহ ইবাদত করো নিশ্চই আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করবেন । কারন আল্লাহু গাফুরুন অর্থাত আল্লাহ ক্ষমাশীল । আল্লাহর রাগের তুলনায় ক্ষামার গুন অনেক বেশি ।
আর আল কুরআনে বলা হয়েছে
নিশ্চই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করেন যারা ভুল বশত মন্দ কাজ করে অত:পর অভিলম্বে তওবা করে । এরাই হলো সফল লোক যাদের আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞনী সর্বজ্ঞাত
[সুরা নিসা : আয়াত :১৭]
আর হে আজ থেকে ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করবে ও পর্দা করার চেস্ট করবে ।
আল্লাহ অবশ্যই তোমাকে হেদায়েত দান করবে ইনশাল্লাহ

আর হে একটা দোয়া শিখিয়ে দিচ্ছি এটি বেশি বেশি পড়বে

রিয়া : কোন দোয়া??

ফাতেমা : ইয়া মুকাল্লিবাল কুলুব
সাব্বিত ক্বালবি আলা
দ্বীনিক
[ তিরমিযি ,ইবনু মাজাহ,মিশকাত-১০২]

রিয়া : আচ্ছা ঠিক আছে কিন্তু এর অর্থ কি??

ফাতেমা: এর অর্থ. “ হে অন্তরের পরিবর্তনকারী আপনি আমার অন্তরকে আপনার দ্বীনের উপর স্থির রাখুন””

রিয়া : ইনশাল্লাহ পড়বো । জাজাকাল্লাহু খয়রান ফাতেমা

ফাতেমা : ওয়া ইয়্যাকি । কিন্তু তুমি এটা কোথা থেকে শিখলে???

রিয়া : মনে নেই তুমি একদিন স্যারকে এটা শিখিয়েছিলে ???তখনি শিখেছি

ফাতেমা : আলহামদুলিল্লাহ ।

টংটংটংটং

ফাতেমা : ঐ যে ক্লাসের ঘন্টা পড়েছে চলো ক্লাসে যাই ।

রিয়া : হুম চলো

ফাতেমা আর রিয়া একসাথে ক্লাসে ঢুকলো ।
সবাই দেখে তো অবাক ।
যে রিয়া ফাতেমাকে দুচোখে দেখতে পারতো না আজ তারা একি বেঞ্চে বসেছে । ??
সবাই এটি নিয়ে বলাবলি করছে

হেন্সি: কি রে ফাতেমা ,রিয়ার আজ আমাদের সাথে কেন বসেছে রে? ??

ফাতেমা : ক্লাস শেষ হোক তোকে সব বুঝিয়ে বলবো

কলেজ ছুটির পর ফাতেমা হেন্সিকে সব খুলে বললো ।

হেন্সি :: সত্যি রে ফাতেমা তোর কথায় জাদু আছে রে। তুই কত সুন্দর করে সবাইকে দ্বীনের কথা বুঝাস কতো সুন্দর করে দ্বীনের পথে দাওয়াত দিস
আজ তোর জন্যই তো আমারো দ্বীনের পথে আসা ।

হেন্সিও এখন ফাতেমার মতো পরিপুর্ন পর্দা করা শুরু করেছে

””””””””””

মিমি : হ্যালো বেবি আর কত দেরি হবে তোমার???সবাই তো তোমার জন্যwait করছে। আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি, এখনো কেক কাটি নি, তাড়াতাড়ি আসো

মাহিন : হুম এইতো এসে পড়েছি ,আর ১০ মিনিট অপেক্ষা করো আমি আসছি

মিমি : হুম তাড়াতাড়ি আসো । রাখছি .
তোরা একটু ওয়েট কর মাহিন আসছে । ও আজকে আমাকে সবচেয়ে দামি গিফ্ট দিবে তোরা দেখে নিস

সানা : হুম রে মিমি । তুই যে কতো lucky এরকম একটা বড়লোক BF পেয়েছিস ।
তোকে দেখে মাঝে মাঝে হিংসা হয়

মিমি: আরে কি যে বলিস । আমি কি কম নাকি । দেখতে হবে তো আমি কে । আমি মিমি মিস বিউটি কুয়িন মিমি

হাসি : হয়েছে হয়েছে এতো ভাব নিতে হবে না ,কতক্ষন ধরে wait করছি কোথায় তোর BF

মিমি : আরে ঐ তো মাহিন এসে গেছে

মাহিন : Happy birthday মিমি .

মিমি : হুম Thank you.কই আমার গিফ্ট কই? ??

মাহিন : দাড়াও মিমি ,এতো ধৈর্য হারা হচ্ছ কেন ,এনেছি তো গিফ্ট

মিমি : what, ?????আমি ধৈর্য্য হারা………..

চলবে…..

#ফিরে_আসা
লেখিকা : Umma Hurayra Jahan
পর্ব: ১০
মিমি: what
আমি ধৈর্য্য হারা হচ্ছি ???

মাহিন: না মানে আমি এভাবে বলতে চাই নি, প্লিজ রাগ করো না প্লিজ ….

মিমি: যাও তোমার গিফ্ট আমার লাগবে না।

মাহিন : আরে বাবা সরি বললাম তো, এই দেখো কান ধরছি । আর এমন বলবো না

সানা : মিমি মাফ করে দে বেচারা কে । দেখ ও তো মাফ চাইলো তোর কাছে ।

হাসি : হে রে মিমি মাফ করে দে

সবাই একসাথে মিমি কে বলছে মাহিন কে মাফ করে দেওয়ার জন্য

মিমি: আচ্ছা ঠিক আছে। মাফ করে দিলাম । আর কিন্তু এমন করবে না আমার সাথে

মাহিন : আচ্ছা বেবি ,আর এমন হবে না

এই বলে মাহিন মিমিকে জড়িয়ে দরলো

মিমি: চলো এবার কেক কাটি

মাহিন : হুম চলো

Happy Birthday to you.Happy Birthday to you, Happy birthday, happy Biryhday,happy birthday Mimi

সবাই জন্মদিনের গান গাইতে লাগলো
মাহিন: এই নাও মিমি তোমার গিফ্ট ।

মিমি: thankyou baby.
তোদের বলেছিলাম না মাহিন আমাকে সবচেয়ে দামি গিফ্ট টা দিবে । দেখলি তো ।

সবাই বলে উঠলো হুম হুম দেখেছি ,সত্যি তুই অনেক lucky

তারপর শুরু হলো নাচ গান । জোরে জোরে শব্দ করে সবাই গান বাজিয়ে নাচানাচি শুরু করলো ।
পার্টি চললো রাতের ১টা পর্যন্ত ।

এদিকে মাহিন ভুলেই গেছে যে,কালকে তাদের সবাইকে ফাতেমাকে দেখতে যেতে হবে ।

আরমান : কি ব্যাপার তোমার ছেলে এখনো বাড়ি ফিরেনি কেনো???কোথায় আছে সে??

মেহেঘ: আজ ওর এক বন্ধুর জন্মদিন সেখানেই গেছে ।

আরমান: তা তোমার নবাবজাদা কি ভুলে গেছে কালকে ফাতেমাকে দেখতে যাওয়ার কথা? ??তোমার আশকারা পেয়ে পেয়ে ছেলেটা আমার বিপথে গেছে । কিন্তু আমি এমনটা আর হতে দিবো না ।
তাই ফাতেমার মতো একটা মেয়েকে আনছি ওর বউ বানিয়ে ,একেবারে টাইট করে দিবে তোমার ছেলে কে

মেহেঘ: ও এখন তো সব দোষ আমারি হবে । আর তুমি তো কিছুই করো নি ।
আর কি বললে, ঐ ফাতেমা না কে, সে আমার ছেলেকে টাইট করে দিবে তাই না??
আগে বিয়েটা হোক

আরমান : আগে বিয়েটা হোক মানে??কি বলতে চাইছো ??

মেহেঘ: না কিছু না । যাও তুমি ঘুমাতে যাও ।

আরমান: হুম যাচ্ছি ,ছেলেকে বলে দিয়ো আমরা সকাল সকাল রওনা হবো । তুমি মহিমাকেও বলে দিয়ো তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে থাকতে ।

মেহেঘ: হুম ঠিক আছে, বলে দিবো ।

আরমান : আর হে কালকে আমাদের সাথে ,ভাইজান আর উনার ছোট ছেলে ইমন যাবে আমাদের সাথে

ইমন মাহিনের ছোট চাচাতো ভাই । মাহিনের থেকে ১ বছরের ছোট ।
ইমন ছেলেটা যথেষ্ট ধার্মিক মনোভাবের ছেলে । বাংলা লাইনে পড়লেও তাকে দেখে মনেই হয় না সে বাংলা লাইনে পড়েছে । ৫ ওয়াক্ত নামায পড়ে সুন্নত লেবাসী ও যথেষ্ট ভদ্র একটা ছেলে । ইচ্ছা করে কোন মেয়ের দিকে তাকায় নি কোনদিন।মাহিন ইমনের একদম উল্টো প্রকৃতির ।

মেহেঘ : আচ্ছা ঠিক আছে । good night। তুমি গিয়ে ঘুমাও আমি মাহিন আসলে ঘুমাবো
আরমান : আচ্ছা ঠিক আছে ।

রাত দেড় টি বাজে

টিংটিং ……………কলিংবেল বাজলো

মেহেঘ : দরজা খুলে দিলেন ।
কিরে মাহিন এখন তোর আসার সময় হলো? ?দেখেছিস কয়টা বাজে ??তুই কি ভুলে গেছিস কালকে মেয়ে দেখতে যাওয়ার কথা ??

মাহিনের এ কথা শুনে মাথায় বারি পড়লো ।

মাহিন : আমাকে কেন যেতে হবে মা? তোমরা যাও না । আমি গিয়ে কি করবো??

মেহেঘ: আরে বাবা just formality এর জন্য । আর শোন তোর বাবা বলেছে সকাল সকাল রেডি হতে । যা তাড়াতাড়ি গিয়ে শুয়ে পড় ।
মাহিন: মা তোমার ওয়াদা মনে আছে তো?

মেহেঘ : হ্যা মনে আছে, আমি এ বিয়ে কিছুতেই হতে দিবো না । তুই চিন্তা করিস না।
আর শোন কালকে আমাদের সাথে তোর বড় চাচা আর ইমনও যাবে ।

মাহিন: তাই নাকি । এক কাজ করবো ইমনের সাথেই ঐ ফাতেমা না কি ওকে বিয়ে দিয়ে চলে আসবো । কারন দুটো একি কোয়ালিটির । হাহাহিহাহাহিহা

এই বলে মাহিন জোরে জোরে হাসতে লাগলো ।

মেহেঘ : হয়েছে হয়েছে এতো হাসি ভালো না, পরে কাদতে হবে ।
এখন যা ঘুমিয়ে পড়

এদিকে রফিক সাহেবের চোখে ঘুম নেই । কালকে তার মেয়েকে দেখতে আসবে, কোন আয়োজন যাতে কমতি না হয় ।

রফিক : এই খাদিজা শুনছো ??

খাদিজা: ;হুম বলো ।

রফিক : কালকে যেন আয়োজনের কোন কমতি না থাকে । না হলে কিন্তু আমার সম্মান থাকবে না ।

খাদিজা : আরে এতো চিন্তা করো না । সব আমি গুছিয়ে রেখেছি । কোন কমতি হবে না ।

রফিক: কালকে আবার তোমার মেয়ে কোন ঝামেলা করবে নাতো ???
?
খাদিজা: না কোন চিন্তা করো না,। তুমি তো ফাতেমাকে চিনোই ,বাবা মায়ের সম্মানের জন্য ও সব করতে পারে ।
তোমার সম্মানের কথা চিন্তা করেই তো বিয়েতে রাজি হয়েছে ।

রফিক : আসলেই মেয়েটা আমার বড্ড ভালো । কিন্তু এতো ধার্মিক হওয়ার কি দরকার এতো পর্দা করার কি দরকার ,শালীন ভাবে চললেই তো হয় ।
আর মনের পর্দাই বড় পর্দা । নিজে ভালো থাকলে ,চরিত্র ভালো থাকলে এতো পর্দা করতে হয় না ।

খাদিজা : তুমি এখনো মেয়েটাকে বুঝলে না । একদিন ঠিক এসব বুঝবে হয়তো সেদিন আর সময় থাকবে না ।
মেয়েটা তোমাকে এতো করে বুঝায় তাও তুমি বুঝ না

রফিক : আচ্ছা হয়েছে ,এতো জ্ঞান দিতে হবে না,। ঘুমাও

এদিকে রাত সাড়ে ৩টা বাজে ।ফাতেমা তাহাজ্জুতের নামায পড়তে বসেছে । ফাতেমা প্রায় প্রতিদিন তাহাজ্জুতের নামায পড়ে । কারন তাহাজ্জুতের নামায হলো সবচেয়ে বড় নফল নামায । তাহাজ্জুত নামাযে করা দোয়া কোন দিন বিফলে যায় না । তাহাজ্জুত নামায আদায়কারীর সকল নেক ইচ্ছা আল্লাহ পূরন করে দেন ।
তাই প্রতিদিন ফাতেমা তাহাজ্জুতের নামায আদায় করে ।

নামাযের মুনাজাতে ফাতেমা বলছে “ হে মহান আল্লাহ ,রহমানুর রাহিম তুমিই তো উত্তম পরিকল্পনাকারী , তুমি যা ঠিক করবে তা আমার জন্য উত্তম হবে । হে আল্লাহ তুমি আমার একটি মনের আশা তুমি পূরন করে দিয়ো রব্বুল আলামিন ।হে আল্লাহ বিয়েটা যেন নবীজির সুন্নত অনুসারে হয় আমার পর্দা আর নামায যেন কাযা না হয় । আর আল্লাহ আমি যেন উনাকে উনার পরিবার কে দ্বীনের পথে আনতে পারি । আল্লাহুমা আমিন ।

তারপর ফাতেমা ফজরের নামায পড়ে, কুরআন তিলাওয়াত কে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লো । কারন সকাল সকাল তাকে উঠতে হবে ।

সকাল বেলা

আরমান : কি গো মেহেঘ সবাই কে বলো তাড়াতাড়ি রেডি হতে । অনেকটা দুরে তো যেতে হবে । ভাইজান ফোন করেছিলো ।তারা কিছুক্ষনের মধ্যে চলে আসবে । তাড়াতাড়ি রেডি হও ।

মেহেঘ : হে আল্লাহ ,এখন কি করি? ?? মাহিন ,মাহিমা কেউ তো ঘুম থেকে উঠে নি । দেরি হলে তো ওদের বাবা রাগারাগি করবে ।
এ নুরি ….

নুরি : জ্বী খালাম্মা

মেহেঘ : যা মাহিমা আর মাহিন কে ডাক দে । গিয়ে বল ওদের বাবা ওদেরকে রেডি হতে বলেছে ।

নুরি: খালাম্মা আমি মাহিমা আফারে গিয়া ডাকতাছি ,কিন্তু মাহিন ভাইরে ডাকতে পারুম না গো ।

মেহেঘ : কেন রে মাহিন কে ডাকবি না কেন ? ও কি তোকে খেয়ে ফেলবে???

নুরি : আমি পারতাম না খালাম্মা ,এতো সহালে যদি ডাহি আমারে মাইরালবো ভাইজান ।

মেহেঘ : হাহহাহাহ। আচ্ছা তোকে ডাকতে হবে না । তুই মহিমাকে গিয়ে ডাক দে । আমি মাহিন কে ডাকছি ।

নুরি : আইচ্চা খালাম্মা

নুরি: মহিমা আফা ও আফা উডেন । খালু আপনেরে রেডি হইতে কইছে । আজ তো নতুন ভাবি দেখতে যাইবেন ,জলদি উডেন । আমি গেলাম ।

মহিমা : তুই যা আমি উঠছি ।

নুরি : আইচ্চা

মহিমা তাড়াতাড়ি উঠে পড়লো । কারন সে তার বাবাকে খুব ভয় পায় । যদি দেড়ি করে ওঠে তাহলে তার বাবা তাকে বকা দিবে । মহিমা রেডি হচ্ছে ।

মেহেঘ: মাহিন এই মাহিন ওঠ বাবা তাড়াতাড়ি ওঠ ।
দেরি হলে তোর বাবা রাগারাগি করবে কিন্তু ,ঘরে কিন্তু অশান্তি হবে । তাড়াতাড়ি উঠ ।

মাহিন : মা Distrubকরো না তো ঘুমাতে দাও । এমনি তে অনেক রাত করে ঘুমিয়েছি । ঘুমাতে দাও

মেহেঘ: এখন কিন্তু মার খাবি । তোর বড় চাচা আর ইমন একটু পরেই এসে পড়বে তাড়াতাড়ি উঠ । তোর বাবা এমনিতেই তাড়া দিচ্ছে রেডি হওয়ার জন্য ।

মাহিন : ধুর ভাল্লাগে না । যাও উঠছি ।

মেহেঘ: good boy

তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিচে আয় । আমরা নাস্তা করেই বেড়বো ।

একটু পড়েই মাহিনের বড় চাচা আর ইমন চলে এলো ।

ইমন: নিচ দিকে তাকিয়ে ,আসসালামুআলাইকুম চাচি । কেমন আছেন?

মেহেঘ: ওয়ালাইকুমআসসালাম বাবা। ভালো আছি ।

ভাইজান আসসালামুআলাইকুম
কেমন আছেন ??

হিরন সাহেব : ওয়ালাইকুম আসসালাম বৌমা । আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
মাহিন ,মহিমা ওরা কই? ?

মহিমা ;: এই তো চাচ্চু আমি এখানে ।

হিরন সাহেব: কেমন আছিস মা? ??মাহিন কই?

মহিমা : ভালো । ভাইয়া উপরে রেডি হচ্ছে ।
আরে ইমন ভাই কেমন আছো? ?

ইমন নিচ দিকে তাকিয়ে বললো আলহামদুলিল্লাহ ভালো ।

মহিমা : আচ্ছা ইমন ভাই তুমি আমাকে যখনি দেখো শুধু নিচ দিকে কেন তিকিয়ে থাকো ???

মেহেঘ : হয়েছে হয়েছে এতো সময় নষ্ট করা যাবে না,। মহিমা দেখ মাহিন রেডি হয়েছে কিনা ???

মহিমা : আচ্ছা যাচ্ছি ।
ভাইয়া এই ভাইয়া রেডি হয়েছিস???

মাহিন: হুম হয়েছি ।

মহিমা : মাহিনকে দেখে হাসতে হাসতে শেষ মহিমা ।
এই ভাইয়া তুই এগুলো কি পড়েছিস।?? হাহাহাহাহা

মাহিন : কেন কি হয়েছে ………

চলবে ইনশাল্লাহ

💬
কমেন্ট করে জানাবেন কেমন হয়েছে ???🥰🥰

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here