#ফেইরিটেল
#Arishan_Nur (ছদ্মনাম)
Part–16
বসন্তকে ঋতুর রাণী বলে সম্মোধন করা হয়। কারন এসময় প্রকৃতি হরেক রঙে রঙ্গিন হয়ে মেতে উঠে। এবারের বসন্তে যেন রঙিনের ছাপ দ্বিগুণ। ফুল ফুটেছে মিরাদের বাসার সামনের গাছ দুটোয়। তবে বেজায় গরম পড়ে গেছে। সাধারণত বসন্তে এতো প্রখর তাপ হয় না৷ কিন্তু এবারে সময়ের আগেই যেন গ্রীষ্ম নেমে গেছে। মিরা নিজের রুমে গুটিসুটি মেরে বসে আছে। দরদর করে ঘামছে সে।নাকের ডগায় ঘামের কণা ঝিলিক মেরে উঠছে৷ সিলিং ফ্যানের হাওয়াও যেন তপ্ত, ভ্যাপসা ভাবটা কমাতে পারছে না৷ দাদী তার পাশে বসে আছেন। একটা সময় তিনি মিরার হাত নিজের হাতে চেপে ধরেন। পুরোরুম জুড়ে আত্মীয়-স্বজনের সমাগম। পা রাখারও জায়গা নেই। কেউ রুম থেকে বের হচ্ছে তো কেউ রুমে প্রবেশ করে তার সঙ্গে দেখা করছে। আজ সে সবার মধ্যমণি। সবাই যেঁচে এসে তার সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছে। অথচ অন্যসময় কাজ ছাড়া তাকে কেউ মনেও রাখে না৷ মিরার হাত ঘামছে। এবার অস্থিরতা এবং ভয়-নার্ভাসনেসে সে কাহিল হয়ে পড়ল। মনে হচ্ছে বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লে ভালো হয়৷
মিনিট পাঁচ পর তার মা সুপ্তি বেগম আসলেন। কনের মায়ের গুরুত্ব প্রতিটা বিয়ে বাড়িতে অত্যধিক। এজন্য অন্যান্যরা তাকে আলাদা জায়গা করে দিল৷ তিনি মিরার বাম পাশে বসে পড়েন৷ মিরা মায়ের দিকে তাকিয়ে হাল্কা হাসার চেষ্টা করল। এতেই সুপ্তি বেগমের বুক হুহু করে উঠে। যতোই শক্ত আবরণ ধরে রাখুক না কেন তিনি, কিন্তু ভেতরটা তার একদম কাদার মতো নরম। সে মেয়ের সামনেই কেঁদে ফেললেন। মাকে কাঁদতে দেখে মিরা নিজেকে ধরে রাখতে পারল না। সেও হুহু করে কেঁদে ফেলে। মা-মেয়ের বেদনা ভরা কান্নার দৃশ্য দৃষ্টি সম্মুখে আসামাত্র উপস্থিত সকলে নীরব হয়ে যায়। তখন রুমের পরিবেশ ছিল একদম শান্ত৷
পরবর্তীতে সুপ্তি বেগমের শ্বাশুড়ি তথা মিরার দাদী বলে উঠে, “বউমা শান্ত হও তো৷ মেয়ের মা হইছো তুমি। তোমাকে তো শক্ত হইতেই হইব। আমাদের মা আমাকে বিদায় দিল,আমরা সংসার করলাম। এরপর আমি আমার মেয়ে অন্য ঘরে পাঠাইলাম। এখন তোমার পালা বউমা। মেয়েরা পর হয় না। দূরে যাবে কিন্তু পর হবে না। তুমি কাদিও না৷ তুমি ভেঙে গেলে বুবু কষ্ট পাবে আরো।”
সুপ্তি বেগম যথাসম্ভব কান্না থামানোর চেষ্টা করছেন। সে ক্রন্দনরত অবস্থায় মিরাকে বুকের মধ্যে চেপে ধরে বলে, “তুই সবার আগে আমার মেয়ে। এরপর অন্যকারো ঘরের বউ। আমার মেয়ের জন্য এ বাসার দরজা সবসময় খোলা।”
মিরার কান্নার বেগ আরো বেড়ে গেল। দাদী সুপ্তি বেগমকে নিয়ে প্রস্থান করে। রুমে চুপটি করে বসে সে চোখের পানি মুছতে লাগল। বুকের মধ্যে অজস্র কষ্ট-বেদনাকে মাটিচাপা দিয়ে চলেছে।
আচমকা খেয়াল হলো তার হাতের মেহেদী আরো গাঢ় হয়েছে৷ এবং হাতের তালুতে নকশার মধ্যে ইংলিশ এলফাবেট “আই” শব্দটা জ্বলজ্বল করছে।একটু আগেও সে এই বিষয়টা খেয়াল করেনি। ব্রাইডাল মেহেদী ভরা হাত এবং ইমানের নামের প্রথম অক্ষর বিয়ের বেশে একদম খাপে খাপে মিলে ষোল আনা পূর্ণ করে দিচ্ছে। আচ্ছা সোনালী আপুর বিয়ের দিন কী ইমানই মেহেদী আর্টিস্টকে বলিয়ে তার হাতে ব্রাইডাল মেহেদী পড়িয়ে নিয়েছিল? কে জানে? তার এতো সময় আছে মিরার হাতের মেহেদী পড়া নিয়ে ভাবার? সেই কখন তার সঙ্গে মাত্র একবার কথা বলতে চেয়েছিল কিন্তু জনাব এখনো তার কাছে আসেনি। একটা কলও করেনি। এতো কীসের ব্যস্ততা? সে তার ফোন বের করল। ফোনটা বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। ফোঁস করে একটা দম ফেলে সামনে তাকায়। বাসায় অনেক বাচ্চা-কাচ্চা এসেছে। বাচ্চাদের দল গুলো ছুটাছুটি করছে।কয়েকজন তার ড্রেসিং টেবিলের সরঞ্জাম বের করে সেগুলো নিয়ে খেলছে। দুটো লিপস্টিক এরিমধ্য নষ্ট করা শেষ। অন্যদিন হলে মিরা তার মেক আপ গুলো ওদের কাছ থেকে ছোঁ মেরে নিত৷ কিন্তু আজকে তা সম্ভব হচ্ছে না৷
বারান্দার দরজা খোলা ছিল বিধায় হুট করে আরম্ভ হওয়া ঝড়ো বাতাসের আগামন টের পেল সে। বারান্দার দিকে তাকিয়ে অবাক হলো। বাইরে যেন বৃষ্টি নামার সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে৷ শীতল, নরম, আরামদায়ক বাতাসে গা জুড়িয়ে গেল। গরম ভাব কমে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ গর্জে উঠছে মৃদ্যু শব্দ তুলে। বজ্রপাতের আওয়াজে তার মনে অশনি হুক্কাহুয়ার মতো ডেকে উঠে। মেঘে মেঘ ঘর্ষণের ফলে ক্ষণেই বেশ জোরে, বসুন্ধরা কাঁপিয়ে অবেলায় বর্ষা নেমে এলো ধরিত্রীতে৷ ঝমঝম আওয়াজে চারিদিকে যেন হারমোনিয়ামে সুর তোলা হচ্ছে। বৃষ্টি পড়ার শব্দটাও আজ অন্যরকম যেন। বারান্দার দরজা খোলা থাকায় হুহু বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টির গন্ধও রুমে প্রবেশ করছে৷ স্থীর, নড়চড়হীন দেহ নিয়ে বসে থাকে মিরা। সবার মধ্যে একটা চাপা উত্তেজনা খেলে যাচ্ছে। বাইরে থেকে বড় আব্বু আর তার বাবার কথা কাটাকাটির মিহি শব্দ তার অন্তর কাঁপিয়ে দেয়৷ বাবা আচমকা এমন শুভ দিনে তর্কে কেন জড়াচ্ছে৷ মন ক্রমশ অস্থির হতে লাগে। চঞ্চল চোখে আশেপাশে তাকিয়ে সে উঠে দাঁড়াতে চাইলে তার এক আত্মীয় তাকে যেতে বারন করে৷
উনি বলে উঠে, ও কিছু নারে, মা। বিয়ের সময় এমন আধ-একটু ঝামেলা হবেই। তুমি শান্ত হয়ে বস।
সে থমকে যায়। বাইরে ড্রয়িংরুম থেকে এক সময় ঝগড়ার আওয়াজ হারিয়ে যায়। এদিকে প্রকৃতি যেন তাণ্ডবে তুমুল ব্যস্ত। সারা বসুন্ধরা কাঁপিয়ে বৃষ্টি পড়ছে৷ পুরান ঢাকার অপরিকল্পিত এবং সরু-চিকন রাস্তাগুলো পানিতে টইটুম্বুর। ঁহাটুজল না হলেও হাঁটুর কাছাকাছি পা ডুবে যাবে এই মূহুর্তে রাস্তায় নামলে৷ আস্তে আস্তে পরিবেশ আবারো উৎসব মুখর হতে লাগে। বড়রা তাদের সাংসারিক আলাপ জুড়ে দিল। ছোটরা খেলায় মেতে উঠে। রান্নাঘর থেকে খাবারের গন্ধও ভেসে আসছে। অপরিচিত কয়েকজন পুরুষের কণ্ঠও আসছে। ভারী জিনিস তুলা-নামার শব্দ কানে আসছে৷ নিশ্চয়ই বাসায় অনেককিছুই হচ্ছে৷ কিন্তু রুমের ভেতর থেকে কোনকিছু ঠাওর করার জো নেই৷ রুমটাকে সুরঙ্গ মনে হচ্ছে তার। যে সুরঙ্গের সঙ্গে রাজ্যের কোন যোগাযোগ নেই৷
বৃষ্টি পড়ার মাত্রা মেঘের কান্নার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়লো আরো। মোটা মোটা বৃষ্টির ফোটায় সমস্ত কিছু ভিজে একাকার। এমনই এক সময় সোনালী আপু ফিরে আসল। তার ভ্রু কুচকে আছে। বোঝাই যাচ্ছে সে ভীষণ ব্যস্ত। কাজ ফেলে এসেছে জন্য বিরক্তও বটে৷
আপু বলে উঠে, “বহু কষ্টে তোর দুলাভাই গিয়ে কাজীকে বাসা থেকে তুলে এনেছে। এই বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় পানি জমে খুব খারাপ অবস্থা। গাড়ির ইঞ্জিনে পানি ঢুকে গেছে। রাত দশটার মধ্যে কাজীকে বিদাই করতে হবে। আব্বু চাচ্ছে বিয়েটা এখনি পড়িয়ে ফেলা হোক। যেহেতু কাজীর তাড়া আছে৷”
মিরা চকিতে উঠে প্রশ্ন করে, “কিন্তু ওর সাথে তো কথাই হয়নি আমার৷”
সোনালী আপুর কিছু মনে পড়ে গেল যেন। সে আফসোস করে বলে, “ইমানের তো নিশ্বাস নেওয়ারও টাইম নাই। ও আর কী কথা বলবে? সব কাজ তো ও একা সামলাচ্ছে৷ আজকে এতো গেস্ট এসেছে যে, চাচী একা রান্না করে কুলাতে পারবে জন্য ইমান বার্বুচি আর ক্যাটারিং হায়ার করে আনলো। বাগানে রান্না বসানো হলো৷ ওমনি বৃষ্টি নামলো। সমস্ত রান্নার জিনিসপত্র আমাদের রান্নাঘরে নিয়ে এসে পুনরায় রান্না বসাতে অনেক সময় লেগেছে। আমরা এতো ব্যস্ত ছিলাম যে তোর কাছে যে ইমানকে পাঠাব মনেই ছিল না। সর্যি রে।”
–ইটস ওকে আপু৷
— “ইমান তো শেরওয়ানী পড়ে ড্রয়িংরুমে বসে গেছে। ওকে ডেকে আনছি৷”
মিরা কী যেন ভেবে বলে, “থাক দরকার নাই৷”
–” সত্যি তো? তোর মত আছে? কোন জরুরি কথা থাকলে সেড়ে নে। লজ্জা পেতে হবে নাহ। ”
মিরা লজ্জায় মাথা নুইয়ে ফেলে। আপু মিটমিট করে হাসে শুধু।
বড় আব্বুর বড় কন্যা সায়েমা আপু এতোক্ষণ পর আসল। বৃষ্টির জন্য আটকা পড়ে গিয়েছিল। উনি সঙ্গে করে একটা লাল নেটের ঘোমটা এনেছেন। সে সেট করে দিল মিরার মাথায়। এখন তাকে পরিপূর্ণ কনে লাগছে যেন৷
সায়েমা আপু বলে, ” আমাদের বাসায় আজকে চাঁদ উঠেছে৷”
মিরা মৃদ্যু হাসে। তাকে সায়েমা আপু আস্তে ধীরে ড্রয়িংরুমে নিয়ে এসে, ইমানের বিপরীতে বসায়৷ তাদের দুজনের মধ্যে দৃষ্টিবিলাস হলেও ইমান এমন ভান ধরে যেন তার সামনে সবকিছু অদৃশ্য। মিরাকে সে দেখেইনি। মিরা মনে মনে ভেংচি কাটে৷
সে বাবার দিকে তাকালো। তার বাবা পাঞ্জাবি পড়ে দাঁড়িয়ে এক আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলছে। তার পাশে কাজী সাহেব বসে আছে। সোনালী আপু এসে ইমানকে অন্য রুমে নিয়ে গেল৷
কাজী সাহেব হাতে খাতা-কলম নিয়ে কী কী সব যেন করলেন। এই মূহুর্তটা মিরার কাছে খুব খুব অদ্ভুত লাগলো। ভয়ে সে একদম মিইয়ে গেল। শুকনো ঢোক গিলে৷ পাত্র হিসেবে নিজের একসময় কার ঝগড়া-পাটনার যে কেমন হবে? –সে জানে না। সে স্থীর দৃষ্টিতে বসে থাকে৷ তার অবস্থা এই পলে রুদ্বদ্বার। একসময় কাজী সাহেব কীসব বলা আরম্ভ করে যেগুলো একটাও তার কান অব্দি যায় না, মস্তিষ্ক কিছুই বুঝতে পারছে না। কেবল স্নায়ুগুলো মারাত্মক রকমের শিহরিত হচ্ছে। একসময় উনি বলে উঠে, “মা আপনি এই বিবাহে রাজী থাকলে কবুল বলেন।”
মিরা ঘাবড়ে গেল। নির্বাক হয়ে পড়ে। মাথা ভোভো করতে লাগে। হাত-পা ইতিমধ্যে কাঁপছে তার। ঠোঁট তিরতির করে কাঁপছে। মুখে কোন জবান নাই।
কাজী পুনরায় আগের কথা বলে উঠে। সে অসহায় হয়ে মায়ের দিকে তাকালো। সুপ্তি বেগম তার কাছে এসে তাকে আগলে নিয়ে বলে, “কথা বলো মামনি।”
মিরা খুবই আস্তে বলে উঠে, “কবুল।”
মুহুর্তে তার চোখে অশ্রুর ঢল নামতে শুরু করে। সে তার মাকে জড়িয়ে ধরে আরেকদফা কেঁদে নিল৷ সামান্য পুতুল হারিয়ে গেলেই সে ছোটবেলায় কেঁদে ভাসাত। আজ তাহলে তার বিয়ের দিন কেঁদে এই বাসায় বন্যার জোয়ার নামার কথা! তালুকদার সাহেব সঙ্গে সঙ্গে নিজের মেয়ের পাশে দাঁড়িয়ে তাকে সান্ত্বনা দিতে লাগে। ইরা এসে বোনের পাশে গোমড়া ও ছলছল চোখে তাকায়। সে ইরাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
কাজী সাহেব উঠে পাশের রুমে চলে যান৷ মিনিট পনের পর ফিরে আসে উনি। প্রান্ত ভাইয়া খেজুরের প্যাকেট নিয়ে সব আত্মীয়ের মধ্যে বিলিয়ে দিতে লাগে। মাঝে মোনাজাত করাও হয়েছিল। বিয়ের কাজ সম্পন্ন করতে মিরার স্বাক্ষরের দরকার। রেজিষ্ট্রেশনের জন্য। কাজী কাবিননামার পেপার এগিয়ে দেয় তার দিকে। সে এক ঝলক পেপারটায় চোখ বুলিয়ে দেয়৷ পাত্রের জায়গায় ইমানের সিংনেচার দেওয়া। গুটি গুটি অক্ষরে ইংলিশে “ইমান খান” নামটা তার সারা শরীরে প্রচন্ডরকমের শিহরিত করে দিয়ে যায়। জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে সে নিজের নাম লিখে দেয় কাবিন নামায়৷
কাজীকে খাওয়ানোর জন্য ডাইনিংরুমে পাঠানো হয়। আরো দশ মিনিট পর একটা আয়না নিয়ে আসে সায়েমা আপু। আয়নাটা খুব সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজানো৷
মিরা মাথা নিচু করে ফেলে। ইমান আরো দশ মিনিট পর আসে ওই রুম থেকে। তাকে মিরার পাশে বসার সুযোগ দেওয়া হয়। মেরুন রঙের শেরয়ানীতে তাকে একদম হিরো লাগছে। সে লজ্জার মাথা খেয়ে একপলক সময় নিয়ে ইমানকে দেখে নেয়।
ইমান এসে বসা মাত্রই সোনালী আপু এংগেল করে আয়নাটা ধরলো। যেই এংগেল দিয়ে ইমান মিরার প্রতিবিম্ব দেখবে পাবে। এরপর তাকে জিজ্ঞেস করে, “আয়নায় কী দেখতে পাচ্ছিস ইমান? ”
ইমান ভাবলেশহীন ভাবে বলে, “কিছুই তো দেখি না।”
মিরা বড্ড আশা নিয়ে ছিল তার উত্তর শোনার জন্য। কিন্তু এমন উত্তর শুনে সে রাগবে নাকী কাঁদবে বুঝতে পারছে না৷
সোনালী আপু তার কাঁধে কিল মেরে বলে, “দেখিস না ক্যান রে? তোর চোখে কী সমস্যা? তাইলে চশমা নিয়ে আয় যা।”
সে পুনরায় বলে, “সত্যি কিছু দেখছি না।”
মিরার যেন খুব অভিমান হলো। সে নিজের প্রতিবিম্ব ক্লিয়ারলি দেখতে পারছে৷ অথচ উনি নাকি চোখে দেখে না। তাকে অবহেলা করা হচ্ছে না তো?
সবার মধ্যে হৈচৈ পড়ে গেল৷ হাসাহাসি করতে লাগলো সবাই৷ আপু আবারো আয়না ইমানের দিকে ধরে বলে, “এবার বল কাকে দেখতে পারছিস? ঠিকঠাক জবাব দিবি। ”
এবারে ইমান একটু ঘার কুচো করে আয়নার দিকে তাকালো, এবং হেসে দিয়ে বলে, “আসলে অতিরিক্ত সুন্দর কিছু দেখলে মানুষের ব্রেইন সেটা নিতে পারেনা। চোখে তখন আঁধার দেখে। আমার অবস্থাও তাই৷ অতিমাত্রায় সুন্দরী রমনীকে দেখে আমার চোখ সব ব্লাংক দেখছে। এখানে আমার দোষ কোথায়? বল? ”
ইমানের দ্বিতীয় উত্তর শুনে মিরা অবাক হয়ে গেল৷
চোখ রসগোল্লার মতো গোল হয়ে যায় তার। ভাইরাসের মুখে নিজের প্রশংসা শুনে সে দারুণ পুলকিত অনুভব কিরে। সেই সাথে এটাই বুঝি তার স্বামীর মুখে নিজের প্রথম প্রশংসা বাক্য।
চলবে।