ফেরারি প্রেম পর্ব -২২

#ফেরারি_প্রেম
#পর্ব_২২
#নিশাত_জাহান_নিশি

“তবে কী সত্যিই মেয়েরা ছলনাময়ী হয়? অভিনয় বিদ্যায় তারা এতটাই পারদর্শী হয় যে একটা মানুষকে ভেতর থেকে ভেঙেচূড়ে চুরমার করে দেয়?”

কান্না থামিয়ে সবিতা নিশ্চল দৃষ্টিতে রূপলের দিকে তাকালো। এতক্ষণ যাবত তাকে সন্তপর্ণে সামলাতে থাকা নীহারিকাকে উপেক্ষা করে সে এক পা দু’পা করে হতাশায় কাতর রূপলের দিকে এগিয়ে এলো। আচমকাই সে মাটিতে বসে রূপলের পা দুটো জড়িয়ে ধরল! অপরাধী গলায় সে হেঁচকি তুলে কেঁদে বলল,

“আমার ম/রা বোনটাকে মাফ করে দিও রূপল! আমি জানি আমার বোন খুবই নিকৃৃষ্টতম কাজ করেছে। খুবই জঘন্যতম অন্যায় করেছে। কিন্তু এখন তো সে মা/রা গেছে তাইনা? খুব লানত ভোগ করে মরেছে! ইহকালেই তার কৃতকর্মের সাজা সে পেয়ে গেছে রূপল। দয়া করে তাকে আর বদদোয়া দিও না! তাহলে যে সে পরকালেও শান্তি পাবেনা। একটা মাত্র বোন আমার। আপন বোন হয়ে আমি কী করে চাইব বলো? তোমার অভিশাপ মাথায় নিয়ে সে পরকালেও শাস্তি ভোগ করুক?”

তাড়াহুড়ো করে রূপল তার পা থেকে সবিতার হাত দুটো ছাড়িয়ে নিলো। সবিতার দুই বাহুতে হাত রেখে সবিতাকে নিয়ে সে বসা থেকে সোজা দাড়িয়ে পড়ল। চোখে টইটম্বুর জল নিয়ে রূপল সবিতার গ্লানি ভরা দু’চোখে তাকালো। স্পষ্ট গলায় বলল,

“তোমার বোনের প্রতি আমার কোনো দোয়াও নেই। এমনকি কোনো বদদোয়াও নেই সবিতা! আমি তাকে ভালোও বাসতে পারছিনা এমনকি ঘৃণাও করতে পারছিনা! সে আমার যে পরিমাণ ক্ষতি করেছে এই পরিমাণ ক্ষতি যেন পৃথিবীতে আমার কোনো শত্রুদেরও না হয়। তবে হৃদির দায়িত্ব আমি বা আমরা অস্বীকার করতে পারছিনা! যেহেতু হৃদি আমাদের বংশেরই সন্তান, আমাদের রক্ত তার শরীরে বইছে। তাই তার সমস্ত দায় দায়িত্ব এখন থেকে আমাদের।”

অমনি সবিতার কান্নার ঢল বেড়ে গেল। হারানোর ভয় তাকে গ্রাস করে তুলল। ফুপিয়ে কেঁদে সে বিচলিত গলায় রূপলকে বলল,

“প্লিজ রূপল। তোমরা আমার মেয়েটাকে কেড়ে নিওনা! বেঁচে থাকার জন্য আমার যে আর কোনো সম্বল অবশিষ্ট নেই। কী পোঁড়া কপাল আমার দেখো? একদিনেই নিজের বোনকে হারালাম এমনকি আমার স্বামীকেও। এখন যদি তোমরা আমার মেয়েটাকেও নিয়ে যাও, আমি কী নিয়ে বাঁচব বলো?”

সবিতার কাতর মুখের দিকে তাকিয়ে মায়া জন্মালো রূপলের। দু’হাত দ্বারা চোখের জল মুছে সে সবিতার দিকে স্বাভাবিক দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। সবিতার কাছে প্রস্তাব রেখে বলল,,

“তুমি চাইলে তুমিও হৃদির সাথে আমাদের বাড়িতে থাকতে পারো সবিতা! এক্ষেত্রে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।”

রূপলের প্রস্তাবে সবিতা দোমনায় ভুগলেও নীহারিকা বেশ খুশি হয়ে গেল! দ্রুত পায়ে হেঁটে সে সবিতার দিকে এগিয়ে এলো। রূপলের কথায় তাল মিলিয়ে সে সবিতাকে বলল,

“হ্যাঁ আপু। আপনি আপত্তি করবেন না প্লিজ। আপনার বোন বা স্বামী নেই তো কী হয়েছে? আমরা আছি তো। আমরা আপনার দায়িত্ব নিব! আপনি চাইলে সবকিছু নতুন করে শুরু করতে পারেন আপু। এখন তো আপনার আর কোনো পিছুটানও নেই। স্বামী তো থেকেও না থাকার মতই ছিল! সত্যি বলতে গেলে আপনি যেমন সুন্দরী, স্মার্ট, বুদ্ধিমতী তেমনি শিক্ষিতও আপু। আপনার কোথাও কোনো ঠেকা হবেনা।”

রূপল এবং নীহারিকার প্রস্তাবে ইতস্ততবোধ করল সবিতা। অসম্মতি জানাতে সে যেইনা বলল,

“কিন্তু…

সবিতাকে আর কিছু বলার সুযোগ দিলোনা নীহারিকা। সবিতার হাত দুটো চেপে ধরে সে এক প্রকার জোর খাঁটিয়ে বলল,

“আর কোনো কথা নয় আপু। আমরা যা বলেছি তাই হবে। আপনি হৃদির সাথে মিস্টার রূপলদের বাড়িতে থাকবেন মানে থাকবেন। আর কোনো কথা শুনতে চাইছিনা আমরা।”

বলেই নীহারিকা নীরব দর্শক হয়ে দাড়িয়ে থাকা রূপলের দিকে তাকালো। উৎসাহী গলায় রূপলের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বলল,

“কী মিস্টার রূপল? আমি ঠিক বলছি না?”

অবিচল গলায় রূপল বলল,

“হুম। আপনি বরং সবিতাকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে যান। মা-বাবা, পিয়াসা খুব ভেঙে পড়েছে। তাদের গিয়ে সামলান। আমি এই দিকটা সামলে বাড়ি ফিরছি।”

“আচ্ছা৷ কিন্তু আপনি পারবেন তো একা এই দিকটা সামলাতে? শরীরের যা অবস্থা আপনার। মনের অবস্থাও তো ভালো নেই। যদি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তো?”

হেয়ো হাসল রূপল! বিদ্রুপের স্বরে বলল,

“আর শরীর। মনের কথা না হয় বাদই দিলাম। তা তো আরও আগেই মারা গেছে! কিছু হবেনা আমার। যা শক্ত প্রাণ আমার! আপনি ঐ দিকটা সামলান। আমি এদিকটা সামলে নিচ্ছে। অনেক তো হেল্প করলেন আমার।”

নীহারিকা এবং সবিতাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে রূপল বাড়িতে পাঠিয়ে দিলো। রাতুল এবং মিস চারুলতা সেনকে তিনদিন পর কোটে তোলা হবে। পুলিশের সাথে এই নিয়ে প্রয়োজনীয় কথাবার্তা সেরে রূপল যেইনা হাজুতের ভেতর থেকে বের হতে যাবে অমনি মিস চারুলতা সেন ভরাট গলায় পেছন থেকে রূপলকে ডাকলেন। বললেন,

“শেষবারের মত একটা কথা শুনবে রূপল?”

হঠাৎ ডাকে রূপল পিছু ফিরে তাকালো। সঙ্গে সঙ্গেই মিস চারুলতা সেন খোলসা গলায় বললেন,

“এটা সত্যি যে সুহাসিনী শেষের দিকে এসে তোমার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছিল! সত্যিটাও অনেকবার স্বীকার করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি তাকে অনেক হুমকি দিয়েছি! মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে আর কোনো মিথ্যে বলতে চাইছিনা আমি।তাই সত্যিটা তোমাকে বললাম। এই সত্যিটা স্বীকার করা আমার জন্য ফরজ ছিল!”

অট্ট হেসে রূপল পেছন থেকেই মিস চারুলতা সেনকে উদ্দেশ্য করে বলল,

“সে যদি সত্যিই আমাকে ভালোবাসত না? তাহলে আপনার হুমকিকে উপেক্ষা করে হলেও আমার কাছে সব সত্যিটা স্বীকার করত। সত্যিটা জানার পর আমি নিশ্চয়ই তাকে মে/রে ফেলতাম না? কিংবা আমাদের সম্পর্কটাও শেষ করে দিতাম না। উল্টো এই ভেবে খুশি হতাম যে, আমাকে হারানোর ভয়ে সে সত্যিটা স্বীকার করেছে। আমাকে হয়ত সে সত্যিই ভালোবাসে!”

একরাশ ঘৃণা নিয়ে রূপল মুখটা ঘুরিয়ে নিলো! জেল থেকে বের হয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো। এই মুহূর্তে বাড়ি ফিরতে যদিও তার ইচ্ছে শক্তিতে কুলুচ্ছেনা তবুও পরিবারের সমসাময়িক অবস্থার কথা ভেবে সে বাধ্য হয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো। পকেট থেকে আস্ত একটি সিগারেটের প্যাকেট বের করে সে সিগারেট ফুকতে ফুকতে দুঃখ বিলাস করতে লাগল! এতে করে বুকের অসুখটা আরও বাড়তে লাগল। শরীরের দিকে মনোযোগ দেওয়ার সময় আছে না-কী তার? মনটাই যে তার মনের জায়গায় নেই! জীবিত আছে বলেও মনে হচ্ছেনা! জং ধরা অনুভূতি নিয়ে সে খালি রাস্তায় এলোমেলো পায়ে হাঁটতে লাগল। মনে ভরপুর দুঃখ নিয়ে বাড়ির দিকে হাঁটা ধরল।

_______________________________

নীহারিকাকে জড়িয়ে ধরে কান্না জুড়ে দিয়েছেন নাজনীন বেগম! রাতুল তার সৎ ছেলে হলেও আদর, যত্নে, ভালোবাসায় কোনোদিক থেকে তিনি রূপল কিংবা পিয়াসার থেকে কোনো অংশে কমতি রাখেননি। তিনি তার ব্যবহার আচরণে কাউকে কোনোদিনও বুঝতে দেননি রাতুল তার সৎ ছেলে। অসুস্থ শরীর নিয়ে পিয়াসাও তার মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। হাজার হলেও ভাই তো। কষ্ট তো লাগবেই। নিহালও পিয়াসাকে শান্তনা দিয়ে বুঝিয়ে শুনিয়ে রাখতে পারছেনা। নিহালের পুরো পরিবার আজ এই বাড়িতে উপস্থিত। সবার মুখে কষ্টের ছাপ। রাতুলের বাবা আফজাল হকের মুখের দিকে তো তাকানোই যাচ্ছেনা৷ কারো সাথে তিনি টু শব্দটিও করছেন না। পরিশেষে তিনি মুখ খুলে হাপিত্যেশ করে বললেন,

“ভাবতে পারিনি মা ম/রা ছেলেটা আমার এত ডেঞ্জারাস হবে! একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করবে এমনকি দুই দুইটা খু/নও করতে পারবে। এমন নিকৃষ্ট ছেলের বাবা আমি? ভাবতেও কেমন যেন ঘিন ঘিন লাগছে। এই দিন দেখার জন্যই কী উপর ওয়ালা আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন? কাল ছেলে বিদেশে চলে যাবে বলে কত খুশি নিয়ে তার মা আর আমি মিলে শপিংমলে গেলাম তার জন্য শপিং করতে! ভাবলাম ছেলেটাকে একটু সারপ্রাইজ দিই। আর সেই সুযোগে আমার ছেলে কী-না ফ্লাইট ধরার প্ল্যানিং করছিল? ভেতরে ভেতরে এত বড়ো ষড়যন্ত্র তার?”

আফজাল হকের দুঃখ ভারাক্রান্ত কথা শুনে সবার মুখ থমথমে হয়ে গেল। নীহারিকার কাঁধ থেকে মাথা তুলে সোজা হয়ে বসলেন নাজনীন বেগম। চোখের জল নাকের জল মুছে তিনি বললেন,

“আমিও ভাবতে পারিনি রাতুলের বাবা, রাতুল এতটা জঘন্য হবে। আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছেনা রাতুল এত নিকৃষ্ট পাপ কাজ করতে পারে। কিন্তু কী আর করব বলো? সত্যিটা তো প্রমাণিত হয়েই গেল।”

সবার থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে সবিতা ওড়নার আঁচল চেপে ধরে কেঁদে মরছিল! বোন এবং স্বামী হারানোর শোক কাটিয়ে উঠতে পারছেনা সে। ছোট্টো হৃদি সবিতার পেছনে লুকিয়ে থেকে সবার হায় হুতাশ দেখছিল! তবে সাহস সঞ্চার করতে পারছিলনা সবার সামনে এসে দাড়ানোর। অমনি নীহারিকার নজর গেল হৃদির দিকে। হৃদির ভয় ভাঙানোর জন্য নীহারিকা মিটিমিটি হাসল। নীহারিকার হাসি দেখে হৃদিও মুচকি হেসে উঠল! হৃদির ভয় কেটে যেতেই নীহারিকা ইশারায় হৃদিকে কাছে ডাকল। অভয় পেয়ে হৃদি হাসতে হাসতে দৌড়ে এলো নীহারিকার দিকে। হৃদির হাত ধরে নীহারিকা উপস্থিত সবার সামনে এসে দাড়ালো। নাজনীন বেগম এবং আফজাল খানকে উদ্দেশ্য করে নীহারিকা খানিকটা জড়তাগ্রস্ত গলায় বলল,

“এই মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে কী সব ভুলে যাওয়া যায়না আঙ্কেল-আন্টি? এই মেয়েটা যে আপনাদের দায়িত্ব! আপনাদের একমাত্র আদরের নাতনী। দেখুন না কত নিষ্পাপ মেয়েটার মুখ! এই মুখের কোথাও কী তার বাবার করা কোনো পাপের ছাপ লেগে আছে?”

হৃদির মায়াবী মুখের দিকে তাকিয়েও কেন যেন নাজনীন বেগম এবং আফজল হকের দয়ামায়া কাজ করছিলনা! তারা সোজা বসা থেকে ওঠে গেলেন। হৃদিকে উপেক্ষা করে নিজেদের ঘরে চলে গেলেন! বিষয়টায় বেশ অবাক হলো উপস্থিত সবাই। পিয়াসা নিজেও কষ্ট পেল তার বাবা-মায়ের আচরণে! অমনি সবিতা দ্রুত পায়ে হেঁটে এসে হৃদিকে জড়িয়ে ধরল। কান্না জড়িত গলায় নীহারিকাকে বলল,

“আমি বুঝে গেছি নীহারিকা। এই বাড়িতে আমার মেয়ের কোনো ঠায় হবেনা। তুমি প্লিজ আমার মেয়েকে নিয়ে এই বাড়ি ছাড়তে আমাকে অনুমতি দাও!”

ইতোমধ্যেই রূপলের আবির্ভাব ঘটল বাড়ির ড্রয়িং রুমে। উপস্থিত সবাইকে চমকে দিয়ে রূপল দায়িত্ব পরায়ণ গলায় সবিতাকে উদ্দেশ্য করে বলল,

“আজ থেকে হৃদির সব দায়িত্ব আমার সবিতা। বাড়ির কে হৃদির দায়িত্ব নিলো বা না নিলো তাকে কে গ্রহণ করল বা না করল এসব দিকে আমার মাথা ঘামানোর কোনো প্রয়োজন নেই। শুধু হৃদি নয় তুমিও আজ থেকে এই বাড়িতে থাকবে সবিতা। হোপ সো, তুমি এই বিষয় নিয়ে আর কোনো কথা বাড়াবেনা। আমার মতামতকে গুরুত্ব দিবে।”

কথা শেষ হতেই নিজের রুমের দিকে হাঁটা ধরল রূপল। নীহারিকা খুশি হয়ে মনে মনে রূপলকে ধন্যবাদ দিলো! তবে তা মুখে প্রকাশ করলনা। রূপল তার রুমে যেতেই নাজনীন বেগম তার রুম থেকে বের হয়ে এলেন! পরিস্থিতি শিথিল করার জন্য তিনি সবাইকে খাবার টেবিলে বসতে বললেন। বাড়ির মেহমানদেরকে তো আর অভুক্ত রাখা যাবেন! মাঝরাতে সবাই বাধ্য হলো খাওয়াদাওয়া করতে। তবে রূপল বাদে বাড়ির সবাই খাবার খেলো! রূপলের মনের অবস্থা ভালো নয় বিধায় কেউ তাকে জোর করে ডাকল না। বরং খাবার খেয়ে সবাই ক্লান্ত শরীর নিয়ে ঘুমুতে চলে গেল।

পরদিন দিনের এগারোটা পর্যন্ত সবাই নাক টেনে ঘুমোলো! অনেক রাত করে ঘুমিয়েছে বিধায় কারোর তেমন কোনো হুশ নেই। তবে নীহারিকার ঘুমটা একটু জলদিই ভেঙে গেল। পাশ ফিরে তাকাতেই দেখল সবিতাকে জড়িয়ে ধরে হৃদি বেঘোরে ঘুমু্চ্ছে! সবিতাও গভীর ঘুমে মগ্ন। তাই তাদের আর না ডেকে নীহারিকা ওয়াশরুমে গেল ফ্রেশ হতে। মিনিট কয়েকের মধ্যে ভেজা মুখেই সে রুম থেকে বের হয়ে রান্নাঘরের দিকে রওনা হলো গরম চা করতে। ভোর থেকেই মাথাটা কেমন যেন ধরে আছে তার। ধোঁয়া ওঠা গরম গরম চা খেলে ব্যথাটা হয়ত কিছুটা কমতে পারে।

রূপলের ঘর পেরিয়ে নীহারিকা যেইনা সামনের দিকে পা বাড়ালো অমনি মনে হলো রূপলের ঘর থেকে কারো বমি করার শব্দ তার কানে বাজছে! আঁতকে ওঠে নীহারিকা এক ছুটে রুমের অর্ধখোলা দরজা খুলে রূপলের রুমে ঢুকে পড়ল। রুমের বেসিনের দিকে নজর দিতেই দেখল রূপল গাঁ ভাসিয়ে বমি করছে! অস্থির হয়ে নীহারিকা দ্রুত পা চালিয়ে হেঁটে গেল রূপলের দিকে। চিন্তিত গলায় বলল,

“কী হয়েছে মিস্টার রূপল? আপনি বমি করছেন?”

নিজের সীমা ভুলে নীহারিকা যেইনা পেছন থেকে অসুস্থ এবং দুর্বল রূপলকে আঁকড়ে ধরতে গেল অমনি রূপল রোগা শরীর নিয়ে ষাঁড়ের মত চ্যাঁচিয়ে উঠল! নীহারিকাকে থামিয়ে বলল,

“এই ডোন্ট টাচ মি! একদম ছোঁবেন না আমায়।”

সঙ্গে সঙ্গেই নীহারিকা থেমে গেল। নিজের অধিকারের জায়গাটুকুন বুঝে সে নিজেকে সামলে নিলো। অস্থিরতা ভাব নিয়ে সে ধীর গলায় রূপলকে বলল,

“আচ্ছা ঠিক আছে টাচ করব না। আপনি বরং আপনার ডান হাতটা দিয়ে আপনার পিঠটাতে মাসাজ করুন। দেখবেন রিলাক্স লাগবে।”

#চলবে…?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here