ফেরারি প্রেম পর্ব -২৩

#ফেরারি_প্রেম
#পর্ব_২৩
#নিশাত_জাহান_নিশি

“আচ্ছা ঠিক আছে টাচ করব না। আপনি বরং আপনার ডান হাতটা দিয়ে আপনার পিঠটাতে হালকা মাসাজ করুন। দেখবেন রিলাক্স লাগবে।”

এই মুহূর্তে নীহারিকার ছোঁয়া সহ্য করতে না পারলেও নীহারিকার উপদেশ ঠিকই মেনে নিলো রূপল! গড়গড়িয়ে বমি করার এক পর্যায়ে এসে সে তার ডান হাত দ্বারা আলতোভাবে পিঠটিতে বেসেব ভাবে মাসাজ করতে লাগল। এতে যেন তার বমির বেগ আরও বেড়ে গেল! ভেতর থেকে সব বের হয়ে আসতে লাগল! ব্যাপারটায় রীতিমত শঙ্কিত হয়ে উঠল রূপল। মুখে বমি রেখেই সে মাথা ঘুরিয়ে তার পেছনে উতলা ভঙ্গিতে দাড়িয়ে থাকা নীহারিকার দিকে তাকালো। খিটখিটে মেজাজে সে অস্ফুটে সুরে বলল,

“এটা কী এডভাইজ দিলেন হুম? বমি তো আরও বেড়ে গেল।”

বলেই রূপল আবারও মুখ ভরে বমি করতে লাগল। বমির সেই ছটা এসে নীহারিকার গাঁ ভিজিয়ে দিলো! নীহারিকার গাঁ থেকেও এবার বমির বিদঘুটে গন্ধ ভেসে আসছিল। ঘিন ঘিন পেয়ে বসল নীহারিকার! নাক টিপে ধরে সে ঘিঞ্জি গলায় বলল,

“আরে রে রে এটা কী করলেন? আমাকেও নোংরা করে দিলেন? এই হলো উপকারের পরিণাম হুম? এখন আমার কী হবে? এই নোংরা ড্রেস আমি কীভাবে চেঞ্জ করব? আর চেঞ্জ করেই বা কী পড়ব? এই হবে জানলে তো কারো হেল্পই করতে আসতাম না আমি।”

বলেই নীহারিকা ছিচকাঁদুনে মেয়েদের মত কান্না জুড়ে দিলো! একই সাথে কপালও চাপড়াতে লাগল। অমনি রূপল খেয়াল করল তার বমির বেগ হুট করেই কমে গেছে। এতক্ষণ ভেতরে যে অস্বস্তি হচ্ছিল সেই অস্বস্তিটাও স্বাভাবিকভাবে দমে গেছে! রিলাক্স লাগছে তার! শরীরের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠে সে এবার সূক্ষ্ম দৃষ্টি মেলে নীহারিকার দিকে তাকালো। নীহারিকার লাফালাফি এবং কান্নাকাটি দেখে কেন যেন হঠাৎ তার হাসি পেয়ে গেল! জনাজীর্ণ শরীর নিয়েও সে নীহারিকার অগোচরে ফিক করে হেসে দিলো! মাথা নুইয়েই শ্লেষাত্মক গলায় নীহারিকাকে উদ্দেশ্য করে বলল,

“দেখো কীভাবে বাঁদরের মত লাফাচ্ছে! অথচ এখানে আমি লাফানোর মত কিছুই দেখলাম না। সামান্য বমি-ই তো ভাই। পটি তো করে দিইনি!”

অমনি তেলেবেগুনে জ্বলে উঠল নীহারিকা। রূপলের থেকে দূরত্ব বজায় রেখেই সে রূঢ় গলায় বলল,

“লাফানোর মত কিছু দেখলেন না মানে? বমি করলেন কেন আমার গাঁয়ে? এখন যদি আমি কোনোভাবে আপনার গাঁয়ে বমি করে ভাসিয়ে দিতাম তাহলে নিশ্চয়ই আজ আপনি আমাকে আস্ত রাখতেন না? বারোটা বাজিয়ে দিতেন আমার! সেই জায়গায় তো আমি আপনাকে কিছুই করলাম না। এখন আমি লাফালেই যত দোষ না? বাঁদর হয়ে গেলাম আমি?”

মুহূর্তেই রূপলের শরীরটা আবারও খারাপ হয়ে গেল। শরীরটা ম্যাচম্যাচিয়ে উঠল। মাথাটাও কেমন যেন ঝিম ধরে এলো। শরীরে শক্তি নেই তার দেখেই বুঝা যাচ্ছে। এই কয়েকদিনের খাওয়াদাওয়া এবং ঘুম নিদ্রার অনিয়মের কারণে তার শরীরের ওজন প্রায় ৩ থেকে ৪ কেজি কমে গেছে! দেখতেও রোগা সোগা হয়ে গেছে। না খেতে খেতে যেন খাবার জিনিসটাই এখন তার কাছে অসহ্য হয়ে উঠেছে। শেষ মুহূর্তে এসে মাথাটা অতিরিক্ত ঘুরে যেতেই রূপল দুর্বল গলায় নীহারিকাকে বলল,

“দেখি সরুন। মাথাটা ঘুরছে আমার। বাই দ্যা ওয়ে, আমি এতক্ষণ আপনার সাথে দুষ্টুমি করছিলাম। প্লিজ ডোন্ট টেক ইট সিরিয়াসলি। পারলে ড্রেসটা চেঞ্জ করে নিবেন।”

নীহারিকাকে উপেক্ষা করে রূপল যেইনা খাটের উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো অমনি রূপল দিশাহারা হয়ে মাথা ঘুরে পরে যাওয়ার ঠিক পূর্ব মুহূর্তেই শঙ্কিত হয়ে নীহারিকা শক্ত করে রূপলের দু-বাহু চেপে ধরল! নিমিষেই শরীরের সমস্ত শক্তি ছেড়ে দিলো রূপল। বেশিক্ষণ রূপলের সুঠাম দেহের ভার বইতে পারলনা নীহারিকা। অপ্রত্যাশিতভাবেই ধপাস করে দুজন মেঝেতে পড়ে গেল! বুকে আংশিক ব্যথা পেয়ে রূপল সাথে সাথেই অজ্ঞান হয়ে গেল! ভাগ্যিস নীহারিকার শুকনো দেহের উপর রূপলের শক্তিশালী দেহ এসে পরেনি! যদি পরত তবে আজ নীহারিকার মাজা কোমড়ের বারোটা বেজে যেত! এমনিতেও নীহারিকার পিঠটা প্রচণ্ড ব্যথা করছে।

ঘটনার আকস্মিকতায় তাজ্জব হয়ে গেল নীহারিকা। মুখ থেকে কথা বের হচ্ছিলনা তার। কেবল গোল গোল চোখ দ্বারা তার পাশেই ছিটকে পরা রূপলের দিকে তাকিয়ে রইল! কী থেকে কী হয়ে গেল? এই অসময়ে কী এটাও হওয়ার ছিল? রূপলের না আবার খারাপ কিছু হয়ে গেল সেই ভয়ে মুর্ছে উঠল নীহারিকা। হুট করে মাথা ঘুরিয়ে পরে যাওয়াটা তো ভালো লক্ষ্মণ নয়! ব্যাকুল হয়ে নীহারিকা রূপলকে মেঝে থেকে উঠানোর চেষ্টা করল। তবে কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছিলনা। দেহের ওজন কমে গেলে কী হবে দেহের শক্তি মোটেও কমেনি রূপলের! উপায় বুদ্ধি খুঁজে না পেয়ে নীহারিকা বেসিন থেকে পানি এনে রূপলের চোখে-মুখে পানি ছিটাতে লাগল। নির্জীব গলায় রূপলকে ডেকে বলল,

“রূপল উঠুন। চোখ খুলুন।”

অনেকক্ষণ পানি ছিটানোর পরেও রূপলের কোনো রেসপন্স না পেয়ে নীহারিকার গলা শুকিয়ে গেল। আর এক মুহূর্তও সময় অপচয় করা যাবেনা ভেবে সে দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে চিৎকার চ্যাচাম্যাচি জুড়ে দিলো। গলা উঁচিয়ে সবাইকে ডেকে বলল,

“আরে কোথায় তোমরা? মিস্টার রূপলের যেন কী হয়েছে। প্লিজ তোমরা এবার ওঠে এসো। দেখে যাও কী হলো।”

নীহারিকার চিৎকারের আওয়াজ শুনে বাড়ি শুদ্ধ সবাই ঘুম থেকে ওঠে গেল। পেরেশান হয়ে সবাই নীহারিকার চিৎকারের উৎস খুঁজে রূপলের রুমের দিকে এগিয়ে এলো। আঙুল দিয়ে ইশারা করে নীহারিকা সবাইকে রূপলের রুমে যেতে বলল। ভীতসন্ত্রস্ত মুখে একত্রিত হয়ে সবাই রূপলের রুমে ঢুকে পড়ল। জ্ঞানশূণ্য অবস্থায় রূপলকে মেঝেতে পরে থাকতে দেখে অমনি নাজনীন বেগম এবং পিয়াসা চিৎকার করে উঠল! নীহারিকা রুমের ভেতর ঢুকতেই আফজাল হক এবং নিহাল উদ্বিগ্ন গলায় নীহারিকার দিকে সমস্বরে প্রশ্ন ছুড়ল,

“কী হয়েছে রূপলের?”

অস্থির গলায় নীহারিকা বলল,

“জানিনা কী হয়েছে। হঠাৎ মাথা ঘুরে পরে গেছে। এর আগে গড়গড়িয়ে বমিও করেছে। চোখেমুখে অনেক পানি ছিটালাম কোনো কাজ হলোনা এতে। আমার মনে হয় এবার ডক্টরকে ডাকা উচিৎ।”

আফজাল হক ব্যস্ত হয়ে পড়লেন ডক্টরকে কল করতে। নিহাল এসে রূপলকে কষে ধরে মেঝে থেকে তুলে সোজা করে তাকে খাটের উপর শুইয়ে দিলো। পার্লস রেট চেক করে দেখল সব ঠিক আছে। চিন্তার কোনো কারণ নেই এতে। শরীরের দুর্বলতার কারণে মাথা ঘুরে পরে গেছে। পিয়াসার ম/রা কান্নাকাটি দেখে নিহালের মাথায় যেন রক্ত ওঠে গেল। ধমকের স্বরে সে পিয়াসাকে শাসিয়ে বলল,

“আরে থামো তো তুমি। কিছু হতে না হতেই শুধু কান্নাকাটি শুরু করো! এত নাককাঁদুনে কেন তুমি হ্যাঁ? সামান্য সেন্সলেসই তো হয়েছে। শরীরের দুর্বলতার জন্য হয়েছে। এতে এত ভেঙে পরার কী আছে?”

উপস্থিত সবার সামনে লজ্জা পেয়ে পিয়াসা রাগী দৃষ্টিতে নিহালের দিকে তাকালো! এমনিতেই নিহালকে সে তেমন সহ্য করতে পারেনা! তার উপর এমন অপমানজনক কথাবার্তা! পিয়াসার রাগী চাহনি দেখে অমনি নিহাল ধরাশায়ী গলায় বলল,

“হইছে হইছে ভয় পাইছি! এবার চোখ নিচে নামাও!”

উপস্থিত সবার নজর নিহাল এবং পিয়াসার দিকে না থাকলেও নীহারিকার নজর ছিল তাদের দিকে। দুঃখের মাঝেও মুখ চেপে হেসে দিলো নীহারিকা! পিয়াসার রাগী মুখের দিকে তাকাতেই তার হাসির বেগ যেন আরও বেড়ে গেল! সঙ্গে সঙ্গেই সে রুম থেকে বের হয়ে গেল। রুমের ভেতরে থাকলেই কেন যেন অতিরিক্ত হাসি পেয়ে বসছিল। একটু আগে রূপল এবং তার ধপাস করে মেঝেতে পরে যাওয়ার চিত্রটিও চোখে ভেসে উঠছিল! সব মিলিয়ে তার পেটে খিল ধরানোর মত হাসি আসছিল।

রুম থেকে বের হতেই নীহারিকা দেখল সবিতা আর হৃদি ছুটে আসছে রূপলের রুমের দিকে। তাদের দেখে নীহারিকা মুখ খুলে হাসল! হৃদিকে জড়িয়ে ধরে সে হেসে কুটিকুটি। হৃদি কিছু না বুঝেই অবুঝ গলায় হেসে হেসে বলল,

“কী হলো আন্টি? তুমি হাসছ কেন?”

“হইছে হইছে ভয় পাইছি। এবার চোখ নিচে নামাও!”

বলেই নীহারিকা আরও বেশী হাসতে লাগল! নির্বোধ দৃষ্টিতে হৃদি নীহারিকার দিকে তাকিয়ে রইল। নীহারিকার হাসি দেখে সবিতা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দাড়িয়ে রইল। উজবুক গলায় নীহারিকার দিকে প্রশ্ন ছুড়ল,

“এই তুমি হাসছ কেন? আর ভিতরেই বা হচ্ছেটা কী? একটু আগে না তুমি খুব চ্যাচাম্যাচি করছিলে?”

“ওহ্ হ্যাঁ। মিস্টার রূপল সেন্সলেস হয়ে পরে গেছেন। গিয়ে দেখে আসুন।”

“এটা কী কোনো খুশির খবর হলো নীহারিকা? তুমি এভাবে হেসে হেসে খবরটা দিচ্ছ কেন?”

“আরে আমার এমন হয়! সিরিয়াস মোমেন্টেও কেমন হাসি পেয়ে যায়! আপনি ভেতরে যান আপু। দেখে আসুন মিস্টার রূপলকে।”

বেকুব হয়ে সবিতা রূপলের রুমে ঢুকল। ভেতরে সবার দুঃখী দুঃখী ভাব। রূপলের নেই হুশ জ্ঞান। সবার চিন্তা এখন রূপলকে ঘিরে। রূপলের এই করুন দশা দেখে সবিতার মনটাও খারাপ হয়ে গেল। সেও মনমরা হয়ে দাড়িয়ে রইল। হাসি থামার মিনিট কয়েক পরে নীহারিকা অপরাধীর মত মুখ করে হৃদিকে নিয়ে রূপলের রুমে ঢুকল। এর কিছুক্ষণ পরই ডক্টর চলে এলেন। ডক্টর এসে রূপলকে চেক আপ করে ঔষধপাতি দিয়ে গেলেন। সাথে একটা স্যালাইনও লাগিয়ে দিয়ে গেলেন।

_________________________________

সন্ধ্যার দিকে রূপলের শরীরের অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে এলো। পর্যাপ্ত ঘুম হওয়ার দরুন তার শরীরের দুর্বলতাও খানিকটা কমে গেল। শরীরটা পূর্বের তুলনায় অনেকটাই ফুরফুরা হলো। চাঙা মন নিয়ে রূপল কাঁধে টাওয়াল ঝুলিয়ে ওয়াশরুমে গেল শাওয়ার নিতে। রূপলের রুমে বসে হৃদি অনেকক্ষণ যাবত খেলা করছিল। পিয়াসার রুম থেকে দুটো পুতুল এনে সে বউ বউ খেলছিল! নানান দুষ্টুমি ভরা কথা বলছিল। রূপলও হৃদির সাথে এতক্ষণ ধরে টুকিটাকি কথা বলছিল এমনকি হৃদির পাকা পাকা কথা শুনে একটু আধটু হাসছিলও!

ঘণ্টাখানিক পর হৃদিকে খুঁজতে খুঁজতে নীহারিকা রূপলের রুমের দিকে হেঁটে এলো। রুমের দরজায় দাড়াতেই সে রূপলের বিছানার উপর হৃদিকে দেখতে পেল। স্বস্তির শ্বাস ফেলে সে ব্যস্ত গলায় হৃদিকে ডেকে বলল,

“এই হৃদি এদিকে ওঠে এসো। তোমার মা তোমাকে ডাকছে।”

নীহারিকার গলার আওয়াজ পাওয়া মাত্রই রূপল বেলকনি থেকে দ্রুত পায়ে হেঁটে রুমের ভেতর ঢুকে গেল! রূপলের দিকে একবার তাকাতেই লজ্জায় নীহারিকার মাথা নুইয়ে এলো। এ কী অবস্থা তার? পরনে একটি টাওয়াল ছাড়া বাদ বাকী আর কোনো কাপড়ই তার শরীরে অবশিষ্ট নেই! চুল এবং সমস্ত গাঁ থেকে টপটপ করে জল গড়িয়ে পরছে। বেশ সতেজ এবং পরিচ্ছন্ন দেখাচ্ছে তাকে। চোখ সরানো মুশকিল হয়ে পরেছে। অমনি রূপল রাগে ফোঁস ফোঁস করে এগিয়ে এলো নীহারিকার দিকে। খরতর গলায় বলল,

“এই এদিকে আসুন। আপনার সাথে আমার কথা আছে।”

অমনি টাশকি খেয়ে গেল নীহারিকা। রূপলের অর্ধ উলুঙ্গ দেহের দিকে আর তাকিয়ে থাকার সাহস পেলো না সে! মাথাটা নুইয়ে সে হটকারি গলায় শুধালো,

“কী কথা?”

“আমি সেন্সলেস হয়ে যাওয়াতে আপনি না-কী খুব হাসছিলেন?”

অমনি নীহারিকা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে চোখ তুলে রূপলের দিকে তাকালো। অপ্রস্তুত গলায় বলল,

“আপনাকে এসব কে বলল?”

রেগেমেগে নীহারিকার দিকে আরও দু’পা এগিয়ে এলো রূপল! নীহারিকার মুখোমুখি দাড়িয়ে সে আঙুল উঁচিয়ে তটস্থ গলায় বলল,

“যেই বলুক। ঘটনা তো সত্যি না-কী?”

মুখের উপর সত্যিটা অস্বীকার করা ছাড়া আর কোনো উপায় খুঁজে পেলনা নীহারিকা! গলায় বল এনে সে বলল,

“কই না তো! আমিতো হাসিনি। আমিতো হেসেছি অন্য কারণে!”

তৎক্ষণাৎ হৃদি পুতুল কোলে নিয়ে বিছানা ছেড়ে নিচে নেমে এলো। তেড়ে এসে সে ঝাঁজালো গলায় নীহারিকাকে বলল,

“এই আন্টি তুমি মিথ্যা বলছ কেন? আমিতো দেখেছি তুমি হাসছিলে!”

চোখ লাল করে নীহারিকা এবার হৃদির দিকে তাকালো। তাহলে এখানেই সর্ষের ভূত লুকিয়ে ছিল? এই পিচ্চি মেয়ে এত পাঁজি? যখন তখন মানুষকে কেইস খাইয়ে দিতে পারে? কোমরে হাত গুজে নীহারিকা খরখরে গলায় বলল,

“তবে রে দুষ্টু। তুমিই তাহলে প্যাঁচটা লাগিয়েছ তাইনা?”

নীহারিকার তর্জনে গর্জনে বিচলিত হয়ে হৃদি রূপলের পেছনে এসে লুকালো! রূপলের উপর ভরসা রেখে সে সাহসী গলায় বলল,

“তুমি আমার কিচ্ছু করতে পারবেনা বুঝছ? যতক্ষণ রূপল বাবা আমার পাশে আছে তুমি আমার কিচ্ছু করতে পারবেনা!”

মুখ ভেঙিয়ে নীহারিকা বলল,

“এহ্ আইছে। আমি তোমার রূপল বাবাকে ভয় পাই না-কী?”

বলেই নীহারিকা যেইনা রাগে গজগজ করে হৃদিকে ধরার জন্য এগিয়ে এলো অমনি রূপল তেজী শ্বাস ফেলে নীহারিকার দিকে তাকালো! চোখ দুটিতে জংলী বাঘের ন্যায় হিংস্রতা ফুটিয়ে সে নীহারিকার পথ রুদ্ধ করে দাড়ালো। চোয়াল উঁচিয়ে বলল,

“হোয়াট ডিড ইউ সে? ইউ ডোন্ট বি এফ্রেইড অফ মি?”

অমনি নীহারিকা শুকনো ঢোঁক গিলে রূপলের দিকে তাকালো। চোখ দুটিতে ভয়ার্ত ভাব এনে ধরাশায়ী গলায় বলল,

“আরে হইছে হইছে ভয় পাইছি। এবার তো চোখ দুইটা নিচে নামান!”

#চলবে…?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here