#বদ্ধ_হৃদয়ের_অনুভূতি
#পর্বঃ৪৪
লিখাঃতাজরিয়ান খান তানভি
দরজার বাইরে দাঁড়াতেই ঝনাৎ করে উঠে মাহাদ এর দেহপিঞ্জর।ত্রস্ত পায়ে ঘরে ঢুকেই বিস্ফোরিত চোখে তাকায় সে।ঘরের ভেতর অল্প কিছু আসবাবপত্র।সব কিছুই নিজের জায়গায় স্থির।কিন্তু দরজার লক কেন ভাঙা!
পুরো ঘর খুঁজে বেড়ায় মাহাদ আম্বের কে।পুরো ঘরে শূন্যতার নিস্তব্ধতা।মাহাদ এর হৃদস্পন্দন বাড়তে থাকে।তাহলে তার স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে।সত্যিই কী হারিয়ে যাবে তার প্রজাপতি!
শান্ত হয়ে কাউচে বসে মাহাদ।অবশ শরীরে বিবশ চাহনি তার।কিছুক্ষন পরেই ঝনঝনিয়ে উঠে তার শরীর।থরথর করে কাঁপছে মাহাদ।মস্তিষ্কের স্নায়ুর বেপরোয়া চলাচল।যন্ত্রণার সৃষ্টি করছে সেখানে।ক্রমশ ঝাপসা হয়ে আসছে তার চোখ।অস্পষ্ট চোখে সামনে বসা অর্ধ বয়সি নারীর দিকে ক্রোধিত চোখে তাকায় মাহাদ।
রিং বেজে উঠে মোবাইলের।চট করেই তা রিসিভ করে মাহাদ।কোনো কিছু ভাববার প্রয়োজন বোধ করলো না সে।ওপাশ থেকে মাহতাব খান শান্ত গলায় বললেন–
“আজ আর জিঙ্গেস করবো না কেমন আছো।জানি ভালো নেই।থাকার কথাও না।তো কেমন লাগছে মাহাদ আবইয়াজ?
মাহাদ দাঁতে দাঁত নিষ্পেষন করতে থাকে।তার মস্তিষ্কের রগগুলো হঠাৎই দপদপ করতে লাগলো।ফোঁস ফোঁস করতে থাকে তার ঘ্রাণেন্দ্রিয়।নিজের নিঃশ্বাস আটকে চোখ বুজে থাকে মাহাদ।তার অগ্নিকুন্ডের মতো গনগনে রাগকে অবদমন করে নিজেকে শান্ত করছে সে।ধীরে ধীরে মাহাদ এর নিঃশ্বাস সচল হতে থাকে।অধর ছড়িয়ে বাতাস ছাড়ে সে।অতি স্বাভাবিক গলায় বললো–
“মোবাইলটা একটু আম্বের এর কাছে নিন।”
মাহতাব খান মৃদু হাসলেন।মৃত্যুর আগে আসামীর শেষ ইচ্ছা পূরণ করার নিয়ম রয়েছে।তার আলিশান বসার জায়গা থেকে উঠে ধীরস্থিরভাবে আম্বের এর কাছে গিয়ে দাঁড়ায়।মেয়েটাকে দেখে বড্ড মায়া হচ্ছে তার।আম্বের এর সন্তানসম্ভবা উদর দেখে এক মুহুর্তে নিজেকে অপরাধি মনে হলো তার।কিন্তু পরক্ষনেই মাহাদ এর উপর চড়া রাগ ঝেঁকে বসলো তাকে।আম্বের প্রস্তরমূর্তি মতো বসে আছে।কোনো শব্দ করলো না সে।মাহতাব খান আম্বের এর কানে মোবাইল ধরতেই নিজেকে আর স্থির রাখতে পারলো না সে। ঝমঝমিয়ে কেঁদে ফেলে আম্বের।ওপাশ থেকে মাহাদ এর নিঃশ্বাস শুনতে পাচ্ছে আম্বের।আর্দ্র গলায় বললো–
“মাহাদ,মাহাদ।প্লিজ আমাকে নিয়ে যান এখান থেকে।এরা আমাদের বাবাইসোনা কে মেরে ফেলবে।নিয়ে যান আমাকে।”
মাহাদ নির্বিকার গলায় বললো—
“আই এম সরি প্রজাপতি।আপনাকে দেওয়া কথা আমি রাখতে পারিনি।ক্ষমা করে দিন আমাকে।”
বেগতিক হারে কেঁদে মাহাদ এর নাম ধরে ডেকে উঠে আম্বের।
“মাহাদ,মাহাদ।কী বলছেন এইসব আপনি!প্লিজ নিয়ে যান আমাকে।আমার কষ্ট হচ্ছে মাহাদ।”
মাহাদ তার চোখ বুজলো।গড়িয়ে পড়লো স্মিত ধারায় অশ্রু।আম্বের বার কয়েক ডাকলেও কথা বললো না মাহাদ।শুধু শুনলো।মাহতাব খান নিজের কানে নিলেন মোবাইল।ক্ষুব্ধ গলায় বললেন—
“কী হলো মাহাদ।ভয় পাচ্ছো!আমিও পেয়েছিলাম।মায়া হচ্ছে তাই না!আমারও মায়া হয়েছিলো।যেদিন তোমার কারণে আমার আদ্রিতা আমাকে ছেড়ে চলেগেছে।সাথে ছিলো তার অনাগত সন্তান।
তুমি ভাবতেও পারবেনা আমি তোমার সন্তানের সাথে কী করবো!ওই মেয়ে তোমাকে ভালোবাসার অপরাধে শাস্তি পাবে।”
মাহাদ দুম ধরে বসে থাকলো।কোনো প্রত্যুত্তর সে করলো না।মাহতাব খান হিংস্রাত্মকভাবে হাসতে লাগলেন।অঝোরে কাঁদছে আম্বের।তার সামনে এসে দাঁড়ায় ফাহাদ।আম্বের এর কান্না দেখে ঠোঁট বাকিয়ে হাসে।ফিসফিসিয়ে বললো—-
“বলেছিলাম না,তুই আমার না হলে তোকে আমি অন্য কারো হতে দিবো না।এই যে পেটটা নিয়ে ঘুরছিস।একটু পর দেখ মাহতাব খান কী করে তোর সাথে!
ফাহাদ নোংরাভাবে মুখ দিয়ে আওয়াজ করে শয়তানি গলায় বললো—
“তোকে কিন্তু আমি এখনো ভালোবাসি।অবশ্য এখন আর তুই আগের মতো নেই।সব মজা শেষ।ইচ্ছে করলে তোকে আমি বাঁচাতে পারতাম।ওই রিমেল এর ঠিকানাতো আমিই মাহতাব খানকে দিয়েছে।কী মার টা মারলো!
ইশশশ!বড় প্রভুভক্ত প্রাণী রিমেল।তোদের ঠিকানা বলতে চাইছিলো না।পরে ওর বোনকে খুঁজে বের করলাম।গাধাটা তখন মুখ খুলেছে।”
আম্বের তার কান্নার ফোয়ারা বন্ধ করে বিস্ময়ভরে দেখছে ফাহাদ কে।নিজের ভাইয়ের সাথে কেউ এমন কী করে করতে পারে!ফাহাদ তার ডান হাতের তর্জনী দিয়ে আম্বের এর গাল নাক ঠোঁট ছুঁতে থাকে।আম্বের তখনই ফাহাদ এর আঙ্গুল কামড়ে ধরে।ফাহাদ চিৎকার দিতেই মাহতাব খান সরব হয়ে তাকান।কিড়মিড় করতে করতে ফাহাদ বললো—
“বিয়ের আগেই পেটে বাচ্চা নিয়ে ঘুরিস।আবার এতো তেজ তোর শরীরে!তুই তো একটা স্লাট রে।”
আম্বের ক্ষীপ্ত গলায় বললো—
“একদম চুপ।আরেকটা বাজে কথা বলবি না।মাহাদ আমাকে বিয়ে করেছে।আর সে আসবে আমাকে নিতে।আর তুই নিজেকে কী ভাবিস।!তুই,তোর মা এই মাহতাব খান মিলে মাহাদ এর জীবনটা জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছিস।”
মাহাদ সব শুনে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে।হাসির বেগ কমিয়ে দাম্ভিক গলায় বললো—
“দেখলেন স্যার,কতোটা ভালোবাসে মেয়েটা আমাকে।তার বিশ্বাস আমি তাকে নিতে আসবো।কিন্তু আসলে তা নয়।”
মাহতাব খান তপ্ত গলায় বললেন—
“কী বলতে চাও তুমি?
বিগলিত হাসলো মাহাদ।শান্ত ও দৃঢ় গলায় বললো—
“রক্ত কখনো রক্ত কে মারতে পারে!
মাহতাব খান দারাজ গলায় বললেন—
“ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কথা বলা আমি একদম পছন্দ করি না।”
“জানি স্যার।কিন্তু আপনি অনেক কিছুই জানেন না।জানেন না আদ্রিতার গর্ভজাত সন্তান আমার নয় আপনার বন্ধুর ছেলে আরশের ।ধোঁকা আমি নই আরশ আদ্রিতাকে আমাকে দিয়েছে।”
মাহতাব খান তপ্ত গলায় বললেন—
“মাহাদ!
আমার মেয়ের নামে আরেকটা অযাচিত কথা বলবে না।”
মাহাদ মৃদু স্বরে বললো—
“আপনি জানেন আমি মিথ্যে বলি না।পরিস্থিতির স্বীকার ছিলাম আমি।
আম্বের কে দেখেন।ভালো করে দেখেন।তার উপরের ঠোঁটের ঠিক বা’দিকে একটা লাল ছোট্ট তিল আছে।যেমনটা আদ্রিতার ছিলো আর যেমনটা আপনার আছে।”
“তো?
“আম্বের কে জানেন?
আম্বের আপনার আর মিসেস খান এর মেয়ে।আই মিন আদ্রিতার সৎ বোন।”
“মাহাদ তুমি তোমার সীমা লংঘন করছো?
মাহাদ স্বশব্দে হাসে।ফিকে গলায় বললো—
“আপনার মনে আছে মি.সিং এর স্ক্যান্ডালে আপনি এক বছর ইটালিতে পালিয়ে ছিলেন!মিসেস খান তখন সন্তানসম্ভাবা ছিলো।কিন্তু দু দু’বার এবোর্শন এর ভয়ে তৃতীয় বার আপনাকে জানানোর সাহস তার হয় নি।কিন্তু নিয়তি দেখেন!আম্বের এর জন্মই ছিলো আপনার নিয়তি।
সেই এক বছর তিনি তার ভাইয়ের কাছে ছিলো।আম্বের জন্ম নেওয়ার পর যখন জানতে পারে আপনি ফিরে আসবেন বাধ্য হয়ে নিজের মেয়েকে ভাইয়ের আশ্রয়ে রেখে আসে।
আপনি নিশ্চয়ই শুনেছেন আদ্রিতা তার ছোট্ট বোনের কথা বলতো!
তা তার মামার মেয়ে নয় আম্বের ছিলো।মিলা তারই বয়সি।”
দাঁতে দাঁত চেপে ধরে মাহতাব খান।এক ভয়ংকর চাহনি নিক্ষেপ করে আম্বের এর দিকে।মাহাদ বিগলিত গলায় বললো—
“গত দেড় বছর কাটিয়েছি তার সাথে আমি।আমার আর কিছুই চাওয়ার নেই।এখন আপনার যা ইচ্ছে আপনি করতে পারেন তার সাথে।আই ডোন্ট কেয়ার।বাট আফসোস,আপনার দুই মেয়েকেই আমার পাল্লায়ই পড়তে হলো!
ইটস কলড ডেসটিনি মি.মাহতাব খান।”
কল কটে দেয় মাহাদ।থরথর করে মাহতাব খানের পুরো শরীর।মাহাদ এর বলা প্রতিটি বাক্য,প্রতিটি শব্দ যেনো সূঁচ হয়ে বিঁধে যাচ্ছে তার শরীরে।চকিতে আম্বের এর গগনবিদারী চিৎকারে তার দিকে তাকায় মাহতাব খান।আঁতকে উঠে নিজের শ্বাস আটকে বিস্ফোরিত চোখে দেখে আম্বের কে।আম্বের এর পায়ের নিচ টা রক্তে ভেজা।
,
,
,
সামনে নিরুত্তাপ হয়ে বসা নারীর দিকে হিংস্র চোখে তাকায় মাহাদ।ক্ষুব্ধ গলায় বললো—
“সব কিছু যেনেও কেন চুপ করে ছিলেন আপনি?কেন বলেন নি আম্বের আপনার আর স্যার এর মেয়ে?কেন বলেন নি আমাদের বিয়ের রেজিস্ট্রি পেপার আপনার কাছে?কেন করলেন এইসব?
চোয়াল শক্ত করে উঠে দাঁড়ায় মাহাদ।তার চোখ দিয়ে লাভা নির্গত হচ্ছে।অতি স্বাভাবিকভাবে উঠে দাঁড়ায় আসমীরা।শীতল গলায় বললেন—
“শান্ত হও মাহাদ।যত গর্জে তত বর্ষে না।চাঁদ অনেক সময় মেঘের আড়ালে লুকায়।তাই বলে চাঁদ হারিয়ে যায় না।”
“আমার চাঁদ হারিয়ে যাবে মা।”
ধপ করে কাউচে বসে মাহাদ।দু হাতে নিজের চুল টেনে ধরে।ঠোঁট কামড়ে ধরে নিজের।বড্ড রাগ হচ্ছে নিজের উপর।দিকভ্রান্ত মাহাদ কী করবে কিছুই ভেবে পাচ্ছে না।নাক,মুখ কুঁচকে সামনে থাকা কাঁচের জার এ জোড়ে চাপড় মারে মাহাদ।হাত কেটে গলগলিয়ে রক্ত ঝড়তে থাকে।আসমীরা ত্রস্ত হয়ে উঠে আসে।নিজের শাড়ির আঁচল দিয়ে চেপে ধরে মাহাদ এর হাত।কিন্তু কোনোমতেই থামছে না রক্ত।মাহাদ নির্বিকার হয়ে বসে আছে।তার কোনো কিছুর অনুভূতি হচ্ছে না।
আসমীরা ব্যস্ত গলায় বললো–
“পাগল হলে নাকি!এমন করছো কেন?
মাহাদ ঝাঁটকা মেরে হাত সরিয়ে নেয়।তার চোখ মুখ রক্তবর্ণ।আসমীরা সেইসবের তোয়াক্কা না করে কাউচের পাশে রাখা ছোট্ট টেবিলের উপর থেকে টেবিল ক্লথ নিয়ে মাহাদ এর হাত বেঁধে দেয়।
মাহাদ অসহায় গলায় বললো—
“আমার প্রজাপতি আমাকে ক্ষমা করবে না মা।”
আসমীরা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন—
“তোমার মুখে মা ডাক শুনে আদ্রিতার কথা মনে পড়লো।মেয়েটার মুখে মা ডাক শুনি না কতোদিন!
মাহাদ দূর্বল গলায় বললো—
“আপনি ইচ্ছে করলে সব ঠিক করতে পারতেন।কেন করলেন না!শুধু নিজের স্বামীর উপর বদলা নিতে আমার এতো বড় ক্ষতি করলেন!
আসমীরা নিঃশব্দে চোখের পানি ফেললেন।শান্ত গলায় বললেন—
“আমার মেয়েটা জন্ম থেকেই কষ্ট পেয়েছে।আদ্রিতাকে আমি কোনোদিন সৎ মেয়ে ভাবিনি।আচ্ছা তুমিই বলো যদি আদ্রিতার মা বেঁচে থাকতেন তাহলে কী তিনি দ্বিতীয় বার মা হওয়ার সুযোগ পেতেন না!তবে আমাকে কেন সে অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলো!কেন সৎ মায়ের তকমা লাগানো হলো?
মাহাদ ভেজা গলায় বললো—
“এতে আমার আম্বের এর কী দোষ!
“নেই।তবে সন্তান হারানোর যন্ত্রণা মাহতাব খানকে কুঁড়ে খাচ্ছে।আমি তাই ই চেয়েছি।”
“যদি স্যার আম্বের এর সাথে কিছু করে ফেলে?
আসমীরা নিরুদ্বেগ গলায় বললেন—
“নাহ।তুমি দেখোনি।আমি দেখেছি।নিজের মেয়েকে হারিয়ে মি.খান এক রাতও ঘুমাতে পারেনি।আদ্রিতার ঘরে বসে তার ছবি বুকে নিয়ে শুধু কেঁদেছে।মি.খান অগণিত টাকার পাহাড় গড়েছে কিন্তু ভালোবাসার তাজমহল একটাই গড়েছে আর তা হলো আদ্রিতা।মেয়েকে হারিয়ে এক আহত বাঘ এ পরিণত হয়েছে সে।আমাকে মা হতে দেয়নি সে।তাহলে তাকে কী করে বাবা হওয়ার খুশি দেই আমি!
মাহাদ নিরুত্তাপ।তার কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে না।তার চোখের সামনে শুধু আম্বের এর হাস্যোজ্জ্বল চেহারা ভাসছে।
আসমীরা কোমল গলায় বললেন—
“আমি শুধু দেখতে চেয়েছিলাম আমার আম্বের কে তুমি কতটুকু ভালোবাসো।কতটুকু আগলে রাখতে পারো তাকে।তুমি পেরেছো মাহাদ।আমার শূন্য আম্বের কে তোমার ভালোবাসায় পূর্ন করেছো।”
মাহাদ হেয়ালিভাবে হাসলো।নিজেকে তুচ্ছ মনে হচ্ছে তার।উপহাসমিশ্রিত গলায় বললো—
“ভালোবাসা!
স্যার তার মেয়ের জন্য ব্যবহার করেছে আমাকে,আদ্রিতা তার জেদ পূরণ করতে,আপনি আপনার স্বামীকে সাজা দিতে।বলতে পারেন কেন আমাকেই আপনারা বেছে নিলেন!আমি তো কোনো ক্ষতি করিনি আপনাদের।
ওই একটা মানুষই তো ছিলো যে বিনা স্বার্থে শুধু ভালোবেসেছে আমাকে।আজ তাকেও কেড়ে নিচ্ছেন আমার কাছ থেকে।”
আসমীরা শব্দহীন শ্বাস ফেললেন।নিরীহ গলায় বললেন—
“আমিও তো মা।কেন এতো ভালোবাসার পরও সৎ মায়ের তকমা লাগানো হলো আমাকে!কেন আমার আম্বের এর মুখ থেকে মা ডাক শোনার সৌভাগ্য হলো না আমার!কী দোষ ছিলো আমার?
“জানি না।আমি কিছু ভাবতে পারছি না।”
“আমরা সবাই আমাদের কর্মের ফল পেয়েছি মাহাদ।মাঝখানে শুধু আমার মেয়েটা কষ্ট পেলো।ও তো কারো ক্ষতি করেনি।ও তো এক সুগন্ধি ফুল যে শুধু সৌরভ ছড়িয়েছে।”
মাহাদ কথা বললো না।সে নির্বিকারভাবে চেয়ে রইলো।তার।আসমীরা কোমল গলায় বললেন—
“তুমি ফিরে আসার পর আমি ভাইয়ার কাছে গিয়েছিলাম।জানতে চেয়েছি তার কাছে।কিন্তু কোনো উত্তর পাইনি।আমি তাকে অভিশাপ দেয়নি।কিন্তু রূহেরও একটা হায় আছে।শিলার বিয়ের দিন ফেরার সময় গাড়ি অ্যাকসিডেন্টে ওর বর মারা যায়।শিলা আর কখনো হাঁটতে পারবে না।জানালার কাঁচ ভেঙে ওর গলায় গেঁথে যায়।আর কখনো সে ভাইয়াকে বাবা বলে ডাকতে পারবে না।এর চেয়ে বড় শাস্তি আর কি হতে পারে একজন বাবার জন্য!
মাহাদ শূন্যে তাকিয়ে রইলো।তার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে নোনতা শীতল জল।হাওয়ায় সে আম্বের কে দেখতে পেলো।যেনো ডেকে বলছে–
“বোকা পুরুষ!
কাঁদছন কেন?
চলবে,,,
(বিঃদ্রঃ
এই একটা পার্ট আমি তিনবার লিখছি।দুই বার ডিলেট হয়ে গেছে।আমার ঘাড় আর চোখ অসম্ভব ব্যথা করতেছে।অনেকটা এলোমেলো হইছে।অনেক ছোটও হইছে।একবার লিখলে দ্বিতীয় তা আর মাথায় আসে না।আর আমি তিনবার😔😔)
One of the HAGUest story………I had ever read..🤣