💗 বান্ধবীর ভাই যখন বর 💗
Part – 33
_______________________________
,,,,,,
এতো খাবার খেতে খেতে নীলের অবস্থা খারাপ।
বাপের জন্মে এতো খাবার এক সাথে খেয়েছে বলে নীলের মনে পড়ছে না।
নীলদের বনানী তে পৌছাতে পৌঁছাতে বিকেল হয়ে গিয়েছিল।
সকালে নাস্তা করার পর আর খাওয়া হয় নি ওদের।
তাই ক্ষিদে টা বেশ ভালো ই পেয়েছিল কিন্তু আটত্রিশ ভোজন খাওয়ার মতো রাক্ষুসে ক্ষিদে নীলের পায় নি বোধহয়।
লোকে বলে শশুর বাড়িতে নাকি জামাই আদর করা হয়।
কিন্তু এই মুহূর্তে জামাই আদর কে নীলের কাছে রাক্ষুসে আদর বলে মনে হচ্ছে।
পরিদের বংশের নিয়ম নতুন জামাই কে আটত্রিশ ভোজন করাতে হবে।
নীল মনে প্রানে ভাবছে কে এই আটত্রিশ ভোজন করার মতো রাক্ষুসে নিয়ম করন করেছিলো। সেই লোকটি কে
কয়েক শ রকমের গালি দেওয়া হলে ও কম হয়ে যাবে।
কেন রে তুই রাক্ষস বলে কি আমি ও রাক্ষস নাকি। তুই না হয় রাক্ষুসে খাবার খেতে পারিস কিন্তু আমার মতো অবলা প্রানীর কথা টা ও তো ভাবা উচিত ছিলো তাই না।
নীল মনে মনে ঐ ব্যাক্তি কে কয়েক রকমের গালি ও দিয়ে দিলো।
নীল পরির দিকে অসহায় দৃষ্টি তে চেয়ে আছে।
কিন্তু পরি নীল কে পাত্তাই দিচ্ছে না।
উল্টো মায়ের সাথে মিলে আটত্রিশ ভোজন সম্পূর্ণ করানোর জোড়ালো চেষ্টা করছে।
নীল এই প্রথম এতোটা অসহায় বোধ করছে।
নীলের পেটে আর একটু জায়গা আছে কি না সন্দেহ।
কিন্তু এখনো আট পদ খাওয়া বাকি।
নীলের মাথা ঘুরছে ,,,,,,, খাবার গলা অব্দি এসে পড়েছে।
আরে এতো খাবার একসাথে খাওয়া যায় নাকি।
নীলের এমন করুন কান্ডে আমান খিলখিল করে হাসছে।
নীল ভ্রু কুঁচকে বলল
– শালা বাবু চিন্তা করো না।
তোমরা তো আটত্রিশ ভোজন করাচ্ছো ।
তোমাকে এমন জায়গায় বিয়ে দিবে যেখানে আটান্ন ভোজন করানো হবে।
আমান হাসতে হাসতে বলল
– আরে ভাইয়া আগে নিজে তো এই আটত্রিশ ভোজন এর থেকে বাচুন।
নীল অসহায় হয়ে ভাবছে,,, তুলে নিয়ে বিয়ে করার জন্য এতো বড় শাস্তি।
পরি নীলের কান্ডে এবার না হেসে পাড়লো না ।
এতোক্ষন হাসি চেপে রাখতে পারলে ও এখন আর তা সম্ভব হয় নি।
পরি রুম কাঁপিয়ে হাসছে ,,,, নীলের এই রাক্ষুসে ভোজনের অসহায়ত্ব ছাপিয়ে ও ঠোটের কোনে প্রশস্ত এক হাসি চলে এলো।
পরি কতো দিন পর মন খুলে হাসছে।
বেশ কিছুক্ষণ নীল পরির হাসি উপভোগ করলো।
পরি হাসতে হাসতে চেয়ারে বসে পড়লো।
নীল ভ্রু কুঁচকে বলল
– এভাবে না হেসে পারলে আমায় সাহায্য করো।
পরি হাসি থামিয়ে মুখ গোমড়া করে বলল
– আমি কি করে করবো ?
আর আমার ইচ্ছে ও নেই আপনাকে সাহায্য করার।
পরির কথাতে নীল আহত হলো।
পরক্ষণেই বাঁকা হেসে মৃদু স্বরে বলল
– ওকে সাহায্য করা লাগবে না।
তবে আমি ও আজ ছাড়বো না কিন্তু,,,,,,
পুরো মাস খানেক জালিয়ে খাবো ,,,, পরে বলো না আমি তোমাকে বলি নি কিংবা ছাড় দেই নি।
নীলের কথাতে পরি থতমত খেয়ে গেল।
এই নীলের মাথাতেই এই রকম ফাজলামি বুদ্ধি ঘুরঘুর করে।
পরি শুকনো ঢোক গিলে তুতলিয়ে বলল
– নাহ নাহহহ আমি এখন ই আপনাকে সাহায্য করছি।
নীল মৃদু হেসে বলল
– ভালো কথা শুনতে চাও না তুমি তাই আমাকে এই রকম পরিস্থিতি কিরেট করতে হয়।
পরি বিরক্তি মাখা দৃষ্টি তে তাকিয়ে বলল
– যত্তসব।
নীল মৃদু হেসে বলল
– উহুমমম আমি নীল।
পরি চোখ রাঙিয়ে বলল
– আজববব তোহহ
নীল হাসতে হাসতে বলল
– আজবের বউ তুমি।
নীলের কথাতে পরি ভ্যাবলার মতো চেয়ে রইলো।
নীল আজকাল বেশ দুষ্টু হয়ে গেছে।
আগে তো পরি দুষ্টুমি করতো আর এখন নীল তা শুদে আসলে পুষিয়ে নিচ্ছে।
পরি চটজলদি বুদ্ধি আটতে লাগলো।
মূহুর্তে ই ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটিয়ে বলল
– নিয়ম রক্ষার্থে আপনি একট চামচ করে চেকে নিন তাহলেই তো হয়।
পরির কথাতে নীল স্বস্তি পেল।
নীল দীর্ঘশ্বাস টেনে বলল
– উফফ বাঁচালে।
এই আটত্রিশ ভোজনের চক্করে সাধারন বুদ্ধি ও হারিয়ে ফেলেছিলাম ।
এর জন্য কালকে ট্রিট দিবো তোমায় ওকে ।
পরি চকচকে চোখ নিয়ে বলল
– সত্যি?
নীল মুচকি হেসে বলল
-100% সত্যি।
পরি অতিরিক্ত খুশিতে নীলের গলা জড়িয়ে ধরলো।
ঘটনা টা এতো তাড়াতাড়ি ঘটলো যে নীল সহ নিশা আর আমান ও থতমত খেয়ে গেল।
যখন পরি বুঝতে পারলো কি করেছে তখন লজ্জায় মাথা নিচু করে নিলো।
ইসস ছোট ভাই বোনদের সামনে এ কি কাজ করে বসলো পরি।
পরি কে আরো ও লজ্জা দেওয়ার জন্য নীল গলা ঝেরে বলল
– পরি তুমি এটা ,,,,,
এই টুকু বলতেই পরি বলে উঠলো
– আম্মু আমাকে ডাকছে আমি যাই ।
কয়েক সেকেন্ড এর মধ্যে পরি স্থান ত্যাগ করে নিলো।
পরির যাওয়ার দিকে নীল , নিশা আর আমান চেয়ে রইলো।
পরি চলে যেতেই নীল সহ আমান আর নিশা অট্টহাসি তে ফেটে পড়লো।
নীল ভাবছে বউ এর সাথে সাথে শ্যালক আর শ্যালিকা দুটো ও সেই রকমের ফাজিল।
_______________________
গত দু ঘন্টা ধরে নীল আর পরি কে গেস্ট রুমে বসিয়ে রেখেছে আমান আর নিশা।
দু ঘন্টা ধরে ঘর বন্দি ওরা ,,,,, নীল পকেট থেকে ফোন বের করে দেখে নিলো এগারোটা বাজে।
নিশা আর আমানের উপর পরি বেশ বিরক্ত হচ্ছে।
একে তো এই রুমটাতে ব্যালকনি ও নেই।
জানালা টা ও খোলা মুশকিল কারন উপর পাশের বিল্ডিংয়ের জানালা টা একদম বরাবর।
জানালা খুলে বাইরে তাকানোর ও কোনো স্কোপ নেই।
পরি ফোন বের করে ফেসবুক লগ ইন করে নিলো।
গত দশদিনে ফেসবুক নামক আইডি তো দূরে থাক হোয়াটস আপ, ইমো , টুইটার, ইনস্ট্রাগ্রাম কোনো কিছুই ইউস করে নি।
ফেসবুক ওপেন করতেই কয়েক শ ম্যাসেজ ভেসে উঠলো।
পরির চোখ ছানাবড়া হয়ে গেছে,,,,
নীল সোফাতে বসেই ফোন স্ক্রল করছিলো।
পরি কে এমন হা হয়ে তাকাতে দেখে নীল পরির কাছে এগিয়ে আসে।
নীল পরির কাছে এসে পরিকে হালকা ঝাঁকিয়ে বলল
– পরি আর ইউ ওকে ?
পরি কিছু না বলে ফোন টা নীলের কাছে এগিয়ে দিলো।
নীল ভ্রু কুঁচকে ফোন টা হাতে নিলো।
ম্যাসেজ অপশনে শত ম্যাসেজর লাইন দেখে নীল ও বেশ চমকালো।
নীল একে একে ম্যাসেজ গুলো ওপেন করলো।
ম্যাসেজ গুলো পড়তে পড়তে নীল হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেতে লাগলো।
এতো হেসেছে যে নীলের পেট ব্যাথা হয়ে গেছে।
এক চতুর্থাংশ ম্যাসেজ ই পরির বান্ধবীদের ম্যাসেজ।
ম্যাসেজ গুলো এমন
– এই পরি বিয়ে করে নিলি জানালি ও না।
এটা কিন্তু ঠিক নাহহ ইয়ার ,,,,
হানিমুনে একাই মজা নিচ্ছিস ,,,,আমাদের কথা ভাবলিও না।
– জানু দুলাভাই কে নিয়ে একাই ঘুরে বেড়াচ্ছো।
আমাদের ও তো একটা হক আছে তাই না ?
– বইন খালামনি কবে হমু খবর দিস।
তোর বিয়ে আর খালামনি হওয়ার ট্রিট এক সাথেই নিমু।
– দোষ্ট এমনটা কেমনে করলি জিজুর পকেট খালি করার একটা সুযোগ ও দিলি না ।
– বাসর রাতের ফুটেজ পাঠাইস বইন আমাদের ও কাজে লাগবে।
– সুখে থেকো ভালো থেকো ,,, সারা বছর নিরামিষ ভাব ধইরা তুই ই দেখি কেল্লাফতে করে দিলি।
– ঐ তোর বরের কোনো ভাই নাই ?
ভাই নাহহ থাকলে বিয়ে ক্যানসেল।
আমাদের দাবি মানতে হবে,,, মানতে হবে।
– জীবনটা পুরাই তেজপাতা ভাবলাম আমি আমার বাচ্চা কাচ্চা নিয়া তোর বিয়ে তে আসুম ।
আর তুই আমার স্বপ্নে পানি ঢেলে দিলি।
– কিরে হানিমুন ও কমপ্লিট নাকি ?
জামাই তোর হইলে ও জিজু কিন্তু আমাদের।
– আমারে একটু বুদ্ধি দিস তো ।
পুরো সিনেমার মতো পালাবো ।
যদি ঐ বেটা না পালায় তো ওরে ফালায় ওর ভাইরে নিয়া পালামো।
– মিস পরি আমাদের সাথে অন্যায় করেছেন আপনি।
এতো বড় শুভ কার্য সম্পূর্ণ করে ফেললি আমাদের জানালি ও না ।
– ঐ বাসর রাতের গল্প শুনাবি।
নইলে তোর বরের কাছ থেকে শুনবো কিন্তু।
তখন দোষ দিতে পারবি নাহহ
– আমার সারা জীবনের একটাই স্বপ্ন ছিলো তোর বিয়ের দিন তোর বর রে নিয়ে পালামো আর তুই এটা কি করলি।
সমস্যা নাই তোর মাইয়ার সাথে আমার পোলার প্রেম করায় দিমু ।
তারপর তরে না জানাইয়া ছেলে ছেলের বউ নিয়ে চলে আসুম।
তখন দেখবি আর জ্বলবি লুচির মতো ফুলবি ।
এমন শত ম্যাসেজ দেখার পর নীলের অবস্থা বেহাল।
পরি ও যে কি রকমের ফাজিল তা পরির রিপলে দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
নীল হাসি থামিয়ে বলল
– তুমি যেমন তোমার বান্ধবীরা ও তেমন।
পরি চোখ রাঙিয়ে বলল
– এই একদম আমার বান্ধবীদের নিয়ে কথা বলবেন না।
নীল হাসি চেপে বলল
– ওকে ওকে মিসেস নীল আপনার আঙ্গা শিরোধার্য।
পরি ভেঙ্চি কাটতেই নীল বলল
– মিসেস নীল আমার শ্যালিকাদের ম্যাসেজ এ বলে দিন কালকে ওনাদের ও ট্রিট দিবো।
পরি উজ্জ্বল চোখে তাকিয়ে বলল
– রিয়েলি ?
নীল চোখ মেরে বলল
– ইয়াহহ বেবি।
পরি মুখ কুঁচকে বলল
– অসভ্য।
নীল পরির কাছে এসে এক হাতে কোমর জড়িয়ে ধরে বলল
– হুম তোমারি জন্য।
পরি নীল কে ছাড়াতে ছাড়াতে বলল
– কি করছেন কি?
ছাড়ুন।
নীল পরির ঘাড়ে চুমু দিয়ে বলল
– উহুম আমার প্রেম করতে ইচ্ছে হচ্ছে তো আমি ছাড়বো না।
ঘাড়ে নীলের ঠোঁটের ছোঁয়া পেতেই পরি জমে গেল।
পরির পা দুটো অষার হয়ে গেল।
হঠাৎ ই দরজা খুলে গেল।
নীল আর পরি ছিটকে দূরে সরে গেল।
আমান আর নিশা মুখ চেপে হাসছে।
পরি নীলের দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে আর নীল বোকা হাসি দিচ্ছে।
🙃বোনাস পার্ট🙃
নীল কে পরির রুমের বাইরে দাড় করিয়ে রেখেছে নিশা আর আমান।
তাদের হাজারো দাবি মানতে মানতে ক্লান্ত নীল।
প্রথম শর্ত লডুতে হাড়াতে হবে নিশা আর আমান কে না হলে নো এন্ট্রি ।
নীল বেশ সফল ভাবেই ওদের কে হাড়িয়ে দেয়।
কিন্তু দ্বিতীয় শর্ত ছিলো একটা ধাঁধা।
নীল এই ধাঁধার উত্তর দিতে ব্যর্থ হয় যার ফলে গেইম ড্র হয়ে যায়।
তাই নিশা আর আমান শর্ত রাখে একদিন ওদের ফ্রেন্ড সার্কেল দের সহ ট্রিট দিতে হবে।
নীল মুচকি হেসে রাজি হয়ে যায়।
তারপর ও আরো ও কয়েকটা শর্ত রাখে ওরা নীল সেগুলে তে ও রাজি হয়ে যায়।
কিন্তু তবু ও পরির রুমে ঢোকার অনুমতি দেয় নি ওরা।
নীল আহত দৃষ্টিতে ওদের দিকে তাকাতেই ওরা দুজন বা হাত চুলকোতে থাকে।
নীল ওদের দিকে তাকিয়ে ভ্যবলা হয়ে যায় ।
আজকালকের ছেলেমেয়েরা ও এতো টা তীক্ষ্ম বুদ্ধিসম্পূর্ন তা নীলের জানা ছিলো না।
মানতেই হবে যেমন বোন তেমন তার ভাই বোন।
নীল দীর্ঘশ্বাস টেনে বলল
– বলুন শ্যালক শ্যালিকা আপনাদের দাবি কতো।
আমান আর নিশা ডিসকাস করতে থাকে।
কিন্তু দুজনের কেউ ই সঠিক সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারছিলো না।
নীল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বুঝলো 12:36 বাজে এরা আজ রাত দুটো বাজলে ও যেতে দিবে কি না সন্দেহ।
নীল হতাশ হয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে রইলো।
আর ও দশ মিনিট ডিসকাস করার পর ও ওরা উত্তর জানাতে পারলো না।
নীল দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল
– শ্যালক শ্যালিকা আপনারা দুজন আজ সারারাত ডিসকাস করে কাল জানাবেন প্লিজ।
আর আমার পকেটে ক্যাশ দশ হাজার টাকাই পড়ে আছে।
এর থেকে বেশি দিতে হলে কাবাড থেকে বের করে দিতে হবে।
এতো ভেজালের থেকে আজ দশ হাজার টাকা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকুন।
কাল তোমাদের ডিমান্ড পূরন করবো ওকে।
আমান আর নিশা খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়লো।
এতো ভালো জিজু বাহহ পুরো এটিএম কার্ড।
অবশেষে নীল পরির রুমে ঢুকতে সক্ষম হলো।
রুমে ঢুকে দরজা লক করে দিলো নীল।
বেডের এক পাশে বসে আছে পরি।
চারিদিকের নানা রঙের ফুলের মাঝে পরি ই যেন এক মাত্র নীল পদ্মফুল।
নীল রঙের পাতলা একটা শাড়ি পড়েছে পরি।
মুখে কোনো প্রসাধনী নেই নরমালি সাদা কাজল দেওয়া।
চুল গুলো হাত খোঁপা করা।
লাল নীল আলোতে পরিকে মায়াবতী এক রাজকন্যা লাগছে।
নীলের চোখ জোড়া বার বার পরি কে স্ক্যান করে যাচ্ছে।
আর পরি লজ্জায় রঙিন হয়ে যাচ্ছে।
নীল পরির কাছে গিয়ে পাশ ঘেঁষে বসলো।
পরির শরীরের সাথে নীলের স্পর্শ লাগতেই পরি কেঁপে উঠলো।
নীল পরির কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল
– জানো পরি আজ তোমাকে বেশ আবেদন ময়ী লাগছে।
আমি তো সামলাতে পারছি না পরি।
নীলের শান্ত স্বরে বলা অশান্ত বাক্য উচ্চারণ শুনে পরির শরীর কেঁপে উঠলো।
নীল পরির কোমর জড়িয়ে ধরে পরির হাত খোঁপা করা চুল গুলো মেলে দিলো।
পরির কোমরের অব্দি চুল গুলো ঝড়নার মতো বেয়ে পড়লো।
নীলের চোখে অদ্ভুত ঘোর,,, পরি নীলের সেই চোখে হাড়িয়ে যাচ্ছে বারংবার।
নীল ঘোর লাগানো কন্ঠে আর নেশাক্ত চোখে তাকিয়ে পরির নাকে চুমু খেয়ে বলল
– ইউ নো পরি আজ আমাদের দ্বিতীয় বাসর রাত।
কিন্তু আজ ও আমরা নিজেদের সংযত রাখবো।
সকলের মতামত নিয়ে ধর্মমতে বিয়ে করে আমরা আমাদের পরিপূর্ণ করবো।
নীলের কথাতে পরির ধ্যান ভাঙ্গলো।
এই মানুষটি এতো টা তীক্ষ্ম অনুভূতি বুনতে পারে যা ধারনার বাইরে।
ক জন স্বামী পারে স্ত্রীর প্রতি এমন অমায়িক অনুভূতি বিরাজ করাতে।
নীল মুচকি হেসে বলল
– তুমি স্নিগ্ধ পরি,, তোমাতে মুগ্ধ আমি।
জানি না কোন মায়াতে পড়েছি আমি,,,
তবে জানি হাজার বছর পর ও বলবো এ মায়াবতী শুধু আমারি।
নীলের অবাধ্য হাত জোড়া আলতো হাতে পরির পেট ছুঁইয়ে দিলো।
সঙ্গে সঙ্গে নীলের পাঞ্জাবি খিচে ধরলো পরি।
নীলের হাতের ছোঁয়া পেতেই পরি আত্মহারা হয়ে পড়ছে।
নীল পরির চুল গুলো আলতো হাতে সরিয়ে কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলল
– এই টুকু ছোয়াতেই বিলীন তুমি পরি।
আমার ভালোবাসার স্বাদ কি করে গ্রহন করবে তুমি।
পরি নীলের পাঞ্জাবি আরো শক্ত করে খামচে ধরে বলল
– থামুন প্লিজ।
আমি এখনি মরে যাবো,,,,
এই অনুভূতি যে মারাত্মক।
নীল মুচকি হেসে বলল
– রোজ আমার ভালোবাসার নতুন নতুন অনুভূতির সাথে সাক্ষাৎ করাবো তোমায়।
তুমি সে সাক্ষাৎ গ্রহন করবে তো পরি।
পরি নীলের বুকে মাথা রেখেই বলল
– আপনার সমস্ত অনুভূতির সাথে পরিচিত হওয়ার জন্য আমি রাজি নীল।
শুধু আমার হাতে হাত রেখে পথ চলিয়ে দিবেন প্লিজ।
নীল শান্ত কন্ঠে বলল
– আমার অস্তিত্ব তুমি পরি।
আমরা একে ওপর কে ছাড়া অসম্পূর্ণ,,,,আমরা অনন্তকাল এক সাথে পথ চলবো পরি।
পরি নীলের বুকে মাথা রেখে নীলের অনুভূতি গুলো অনুভব করতে লাগলো।
নীল হঠাৎ ই পরি কে কোলে নিয়ে ব্যালকনিতে চলে আসলো।
ব্যালকনির বিশাল দোলনাটাতে পরি কে বসিয়ে দিয়ে নীল ও পাশে বসে পড়লো।
নীল আলতো হাতে পরির থুতনি উঁচু করতেই পরি চোখ বন্ধ করে নিলো।
পরি এতো টা লজ্জাবতী তা নীল জানতো নাহ।
নীল মুচকি হেসে পরির ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয়।
নীলের উষ্ণ ঠোঁটের সাথে পরির উষ্ণ ঠোঁটের স্পর্শ হতেই দুজনে ই কেপে উঠে।
একে ওপর কে জড়িয়ে নেয়।
এই ভালোবাসার অনুভূতি সত্যি ই মারাত্মক।
নীল পরি কে দু হাতে জড়িয়ে বুকে টেনে নেয়।
নীল আর পরি শীতের রাতের কুয়াশা বিলাশ করতে করতে ঘুমের রাজ্যে হাড়িয়ে যায়।
⛔ আজকে বোনাস পার্ট দিয়েছি।
আশা করি ভালো লেগেছে। রোমান্টিকতা এমন একটা শব্দ যেটা দেখাতে গেলে কিছুটা অশ্লীলতা এসেই পড়ে।
আমি যথা সম্ভব অশ্লীলতা পরিহার করার চেষ্টা করি।
( আসসালামুআলাই রির্ডাস। গল্প কেমন হচ্ছে জানাবেন প্লিজ ।
আমার লেখা গল্প পেতে পেজ এ লাইক ফলো আর বন্ধুদের ইনভাইট দিয়ে পাশে থাকুন )
বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাপ করবেন ।
💙 হ্যাপি রিডিং 💙
চলবে
ফাতেমা তুজ