#বালিকা_বউ 🥰
#পার্টঃ১
লেখক.মারিয়া
আজ আমার বিয়ে হলো। রাত ১২ টার পর মায়ের জোরাজুরিতে নিজের রুমে ঢুকলাম। ভিতরে গিয়ে দেখলাম আমার বিয়ে করা পিচ্চি বউ গুটিশুটি মেরে শুয়ে আছে। লাইট জ্বালাতেই একটু নড়েচড়ে ওপাশ ফিরে ঘুমালো। আমিও আস্তে ফ্রেশ হয়ে লাইট অফ করে ওর পাশে শুয়ে পড়লাম।
কপালে এক হাত রেখে ভাবছি কি থেকে কি হয়ে গেলো। আমি আদিত্য দেবরায়। এই শহরে আমাদের অনেক নামডাক। সেটা আমার দাদুর আমল থেকেই। এবার অর্নাস থার্ড ইয়ারে পড়ছি। আমরা ২ ভাইবোন আমি আর আমার বোন ঈশিতা। ও এবার কলেজে উঠেছে।
আর আমার পাশে যিনি শুয়ে আছেন। শুনেছি নাম রোশনি। বয়স ১৩ একদম বাচ্চা একটা মেয়ে। ওর ছোট একটা বোন আছে রোহিনি। সেতো আরও পিচ্চি ভাবতেই হাসি পায়। আমার বউ আমার থেকে ১২ বছরের ছোট। গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে খুব জ্বর হলো। এত ডক্টর মেডিসিন কিছুতেই কমছে না। তাই মা আর ঠাম্মি এক সাধুবাবার কাছে গেলেন। তিনি আমার কুষ্ঠি বিচার করে নাকি বললেন সামনে আমার বড় কোনো বিপদ হবে। এটা নাকি তারই সংকেত। কোনো বাচ্চা মেয়েকে দিয়ে মারনব্রত করালেই ঠিক হবো। কিন্তু,,,, সেই মেয়েকে আমার স্ত্রী হতে হবে। এগুলো আমি কখনোই বিশ্বাস করতাম না।
কিন্তু ঠাম্মি আর মায়ের জন্য রাজি হতেই হলো। তারপর অনেক খুঁজে এক সপ্তাহের মধ্যে আমার বিয়েটা দিয়েই দিল।
সকালে,,,, পাশ ফিরেই দেখলাম রোশনি সেভাবেই ঘুমিয়ে আছে। আমি যতদূর জানি গ্রামের মেয়েরা খুব তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠে। কিন্তু এতো সম্পুর্ন উল্টো। ওকে ডিস্টার্ব না করে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। তারপর বের হয়ে হালকা করে হাত ঝাকিয়ে বলছি রোশনি ওঠো দেখো সকাল হয়ে গেছে।
ও আড়মোড়া ভেঙে পিটপিট করে তাকিয়ে উঠলো। তারপর বলল আদিত্য বাবু উঠে গেছেন।
ওর মুখে আমার নাম শুনে পুরো চমকে গেলাম। তারপর বললাম তুমি আমার নাম জানলে কি করে??
কেন আমাকে তো আমার মা বলেছে।
ওহহ আচ্ছা। যাও ফ্রেশ হয়ে নাও।
কি হবো??
ফ্রেশ মানে হাতমুখ ধুয়ে নাও।
আচ্ছা সরুন সামনে থেকে।
ওর কথামতো সরে গেলাম সাইডে। ওয়াশরুমে গিয়ে বলল আদিত্য বাবু কোথায় আপনি। আমি দ্রুত গিয়ে বললাম কি হয়েছে??
এটা কোথায় এনেছেন। হাতমুখ কিভাবে ধোবো। কল কোথায়।
আরে বাবা শহরে কল থাকে না। এই যে ট্যাপ এটা ঘুরালেই পানি পড়ে। ও বিষ্ময়চোখে তাকিয়ে দেখছে। তারপর হাততালি দিয়ে বলল বাহ খুব মজার জিনিস তো।
হুমম। তাড়াতাড়ি করো।
বাইরে বেরিয়ে ভাবছি এই মেয়েকে কি এখন আমারই বড় করা লাগবে উফ।
রোশনি বের হলে আমি চুল আচরাচ্ছি। এমন সময় ঈশিতা এসে বলল দাদাভাই আসবো।
আমি চিরুনিটা নামিয়ে বললাম আরে ইশু ভিতরে আয়।।
ও রোশনির কাছে গিয়ে বলল বৌদি কি করছো।
মুখ ফুলিয়ে বলল আমার নাম বৌদি না। রোশনি।
না মানে আসলে,,,
এর মধ্যে আমি বললাম ইশু বুঝিসই তো। তুই বরং রোশনি বলেই ডাক।
ইশু একটা শ্বাস ছেড়ে বলল হুমম ঠিক আছে। তারপর বলল বৌদি থুরি রোশনি এই নাও তোমার শাড়ি। চলো শাড়ি পড়িয়ে দেই।
আমি তো শাড়ি পড়তে পারি।
হ্যা তা পারো। কিন্তু আজ তো একটা বিশেষ দিন। তাই আমিই পড়িয়ে দেই।
কেন,, আজ কি??
আজ তো তোমাদের বৌভাত।
রোশনি কিছু বুঝলো না তাই আর কিছু বললও না। ইশু শাড়ি খুলতে যাবে রোশনি বলল এই এই দাড়াও।
কেন কি হলো আবার??
আমাকে দেখিয়ে বলল তুমি কোনো ছেলের সামনে আমার শাড়ি খুলছো কেন??
আরে ওতো তোমার স্বামী তাই।
সে যাই হোক। আমি ওনার সামনে কাপড় পড়তে পারবো না।
কিন্তু,,,
আমি বললাম আচ্ছা সমস্যা নেই। আমি নিচে যাচ্ছি। ইশু এদিকটা একটু ম্যানেজ করে নিস।
আচ্ছা দাদা।
সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে ডাইনিংএ বসলাম। এমন ব্যাবহার অন্য কেউ করলে রাগই হতো। কিন্তু ছোট মেয়ে বলে কিছু বললাম না। কিন্তু একদিন তো বড় হবেই তখন সুদে আসলে সব উসুল করবো।
মা বলল কিরে আদিত্য রেগে আছিস নাকি।
নাহ আমি রাগ করবো কেন। ঘাড়ের উপর একজনকে ঝুলিয়ে দিয়ে,,,
ঠাম্মি বলল আচ্ছা বাচ্চা মানুষ। কয়েকটা বছর মানিয়ে নাও। আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে। আর তোমার ভালোর জন্যই ওকে তোমার ঘাড়ে ঝুলিয়েছি। এখন হাজার চেষ্টা করলেও তো নামানো যাবে না।
মা ঠাম্মিকে ইশারায় চুপ করতে বলল। ঠাম্মিও থেমে গেলো।
তারপর মা আমাকে খেতে দিলো। আর বলল আজকের পোশাকটা পড়ে তৈরী হয়ে নিস। আমি আর কিছু না বলে খাওয়ায় মন দিলাম।
একটু পর ইশু এসে বলল দেখোতো মা তোমার বৌমাকে কেমন লাগছে। সবাই তাকিয়ে পড়লো। আমি ঘাড় ঘুরিয়ে আবার সামনে ফিরে আবার তাকালাম। রোশনিকে খুব মিষ্টি লাগছে দেখতে। আর ওর মুখের সরল হাসি সবসময় ওর মুখে লেগেই থাকে।
মা এগিয়ে গিয়ে বলল খুব সুন্দর লাগছে মা তোকে। ঠাম্মিও বলল লাগতে তো হবেই। ৭ গ্রাম খুজে তারপর এনেছি। রোশনি একবার মায়ের মুখের দিকে তাকাচ্ছে আরেকবার ঠাম্মির মুখের দিকে।
এভাবে তাকিয়ে থাকলে সবাই কি না কি ভাববে তাই খাবারে মনোযোগ দিলাম। তারপর রুমে গিয়ে আলমারি থেকে পাঞ্জাবি টা বের করে পড়ে রেডি হয়ে নিচে গেলাম। ঠাকুর ঘরে পুজোর পরে বৌভাতের অনুষ্ঠান শুরু হলো। খুব সিম্পিলি ভাবে হচ্ছে সব। নিজেদের খুব কাছের রিলেটিভদের শুধু বলা হয়েছে। আমি আমার কোনো ফ্রেন্ডকেও ইনভাইট করিনি। ওরা জানলে না জানি কতভাবে লেকফুল করবে।
রাতে নিজের রুমে গেলাম। দেখি রোশনি একটা প্রবন্ধ বই বানান করে করে পড়ছে। আমাকে রুমে দেখেই বলল,,,,,
চলবে,,,,,